শনিবার, ৯ জানুয়ারী, ২০২১

Upokontha Web Megazine-08/01/2021

 Upokontha Web Megazine-08/01/2021

গোলাপ
     বিপ্লব গোস্বামী

একটা বজ্র কীট গোলাপটাকে
কেটে টুকরো টুকরো করে দিলো।
তুব গোলাপ হারায়নি গৌরব
টুকরো পাপড়িতে পুষ্পের সৌরভ।
সেতো গোলাপ,ফুলের রাণী
ছন্দমাখা পদ‍্য,নবিসের বাণী।





এক লাইনের কবিতা :
( শেষের দুইটি ব্যতীত)

বিন্দু বিসর্গ
  সৌম্য ঘোষ

১) ‌ বাঁশি তার ভাষা লেখে হাওয়ায় , গোপনে..

২) কেউ তো আসে না , তবু আমি কার জন্য অপেক্ষায় থাকি....

৩) মানুষ ছদ্মবেশে ভীষণ শ্বাপদ

৪) একটি আশ্চর্য বই লিখে রাখে আমার গোপন যাপন

৫) জল রহস্যের দিকে যত দেখি, ততই ভেসেছি গভীরে

৬) তোমাকে প্রদক্ষিণ করি, আর তুমি প্রিয় হয়ে ওঠো

৭) ছায়া পড়ছে মানে জেনে রেখো রোদ্দুর রয়েছে

৮) মায়ের আঁচলের মতো শান্তি

৯) ছিঁড়ে ফেলো অন্তহীন মায়া তন্তুজাল,
     একবার তোমার কাছে আসতে চাই।।

১০) গাঢ় আঁধারের খাঁজে রয়েছি আটকে
       কোথাও তো হয় 'ভোর'
      কোথাও না কোথাও আলো থাকবে,
       কেননা অন্ধকারে ছবি আঁকা যায় না।।




রমনী জীবন
সুস্মিতা দে

পুকুর পাড়ে সেচের
জলে ফসল ফলাতে
কৃষক রমনীরা
হাঁটু জলে কতো
কাজ করে ধান বোনে
ধান ঘরে তুলে
রাখে ।

বাসনে বাসনে
ঠোকাঠুকি
করে পায়ে পা
দিয়ে ঝগড়া শুরু
করে হাসা হাসি
করে রোজ নামচা
চলে।

ছোট ছোট ছেলে
মেয়েদের ছিপে মাছ
কিছু ওঠে ।বেশি কার
কার কম এই নিয়ে
হাতাহাতি চলে জন্মের
মতো আড়ি ভাব
আদান প্রদান চলে

শান্তো হবে বাচ্ছারা
কবে রমনীরা গালগল্প
করে কেউ যদি বলে ?
ছেলে আমার ভালো ?
অপর রমনীরা গলা
বাজি করে মেয়ে
আমার  বড়ো লক্ষী
ঘরের সব কাজ সাড়ে ।

রোজ নানা কথার
খেলা চলে নামচা
শেষ হলে খুশি মনে
ঘরে ফেরে সব গাঁয়ের
বধূ ।একটি ছন্দে জীবনে
সহজ সরলতার মাঝে
স্বল্প শান্তিতে ঘরের বাঁধন

আমার মদনটি গ্রামের
সোনার টুকরো ছেলে
বলে দম্ভ করে মায়েরা
নিজেদের মধ্যে মুখে
মুখে তুমুল ঝগড়া
শুরু করে ।

এই হলো রোজ নামচা।
রমনীদের রোজ পুকুর
ঘাটে চলে। তা না
হলে সাড়া দিন মাথা ধরে।



প্রবন্ধ
শীতের ভ্রমণ, পিকনিক ও বাঙালি
  - অগ্নিমিত্র

  বাঙালি মানেই ভ্রমণ ও পিকনিক। এমনিতে আমরা  অলস; কাজেটাজে তেমন মন নেই । কোনরকমে কাজকর্ম শেষ করে বা না করে বাঙালি ছুটিছাটা নিয়ে বেরিয়ে পড়ে শীতের ভ্রমণ ও পিকনিকে । শীতে আবহাওয়া একটু শীতল বা মনোরম থাকে, তাই দিনের বেলায় কাছেপিঠে বেড়াতে বা পিকনিক করতে বাঙালি খুব পছন্দ করে । এই পিকনিকে অনেক সময়ে তারা রান্নার সরঞ্জাম নিজেরাই নিয়ে যায়, আবার অনেক সময়ে রান্না করে বেঁধেছেঁদে নিয়ে যায় ও আনন্দ সহকারে খায় । এতটাই ভ্রমণপিপাসু বাঙালি ।
  শীতের ভ্রমণ মানে আবার বকখালি বা মন্দারমণি , বা পুরুলিয়ার মতো জায়গা । বা দেওঘর, মধুপুর । অনেক দুঃসাহসী বাঙালি আবার শীতে পাহাড়ে ছোটে । তাতে দুই লাভ, বরফ দেখতে পাওয়া যেতে পারে আর ভিড়ও একটু কম থাকে ।
  এখন অতিমারী, লকডাউন ও যানবাহনের অপ্রতুলতার কারণে বাঙালির এই শীতের ভ্রমণ ও চড়ুইভাতির অভ্যাস একটু হলেও বন্ধ হয়েছে, তবে এখনও অনেকে বাইক বা নিজের গাড়ি নিয়েই এদিকে সেদিকে বেরিয়ে পড়ছেন । ক্ষীরাই, গনগনি, ব্যারাকপুরে জহরকুঞ্জ,  মুকুটমণিপুর ইত্যাদি ।
  তবে একটা কথা, কোথাও বেড়াতে বা পিকনিক করতে গিয়ে আমরা সেসব জায়গায় বর্জ্য পদার্থ ফেলি ও খুব নোংরা করি । এবিষয়ে আমাদের বিশেষ সুনাম বা বদনাম আছে । এই কাজগুলো বন্ধ করতে হবে ।  আর আগে বাড়ি বা অফিসের আবশ্যক কাজ, তার পর ভ্রমণ । এই কথা মাথায় রাখা উচিত ।।




ভাঙ্গা গড়া
শান্তি দাস

পৃথিবীর বুকে জন্মিলে মরিতে হয়,
তবুও ভাঙ্গা গড়া নিয়ে নেই কোন ভয়।
ধ্বংসের মধ্যেই নিহিত আছে সৃষ্টির বীজ ,
ধ্বংস হলেই তো সৃষ্টির জন্য প্রস্তুত নিজ নিজ।
পৃথিবীতে চলছে আবর্তন চক্রের মাধ্যমে,
সৃষ্টি কর্তার সৃষ্টি আছি আমরা আছি তার সান্নিধ্যে।
সৃষ্টি তো চিরস্থায়ী নয় ভাঙ্গা গড়ার খেলা,
একদিকে সৃষ্টি একদিকে ধ্বংস এটাই প্রকৃতির লীলা।
ধ্বংস আছে তাই তো নতুনের সৃষ্টি হয়,
একদিকে মৃত্যু অন্যদিকে জন্ম তাতে ক্ষয় নয়।
মানব জাতির এই রঙ্গমঞ্চের খেলা যুগযুগান্তর,
তাই তো এই ভাঙ্গা আর গড়া চলছে অন্তর অন্তর।
জীবন পরিচালিত পথে কত ঝড়ঝঞ্জা আসে,
বিপর্যয় মোকাবিলা করতে একে অপরের পাশে।
মানব জাতি শ্রেষ্ঠ জীব পুরাতন বিদায়ে নতুনের আহবানে,
তাই পৃথিবীর ঘুর্নাবর্তে নিত্য নুতুনের জাগরনে।





সেই রাত
আব্দুল রাহাজ

দিনটা ছিল শুরুতেই রোদ ঝলমলে সবাই যে যার কাজে চলে গেছে বেলা বাড়তেই সূর্যের উজ্জ্বল রশ্মি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল পাখিদের কুজনে সবুজের ঘনঘটায় পরিবেশ পেল এক অনন্য রূপ। গ্রামের ছেলে মেয়েরা দুটো নদী পেরিয়ে ইস্কুলে বেরিয়েছে ওদের সাথে আছে রহিম আলী শেখ মাস্টারদার মেয়ে চন্দ্রিমা গল্প করতে করতে কানু মাঝির নৌকায় উঠে ধলেশ্বরী ও চূর্ণী নদী পার হয়ে স্কুলে পৌঁছালো ওদের স্কুল বেশ ভালোভাবেই স্কুলে কাটিয়ে বাড়ি ফিরবে হাত ধরাধরি করে। ওরা সবাই নদী ঘাটে এসে দেখল আকাশে কালো মেঘ মাঝিরা কেউ নদীতে নৌকার পারাপার করছে না সেজন্য ওরা ঠিক করল পায়ে হেঁটে পলাশ বনের মধ্য দিয়ে বাড়ি চলে যাবে এখনো সন্ধ্যা হতে ঢের দেরী কিন্তু এদিকে ঝড় বাতাস বইছে ওরা বনের মধ্যে একটা পুরো বাড়িতে আশ্রয় নিল। শেখ বলল আজকে আর বাড়ি যাওয়া হবে না হয়তো এখানেই থাকতে হবে মাস্টারদার মেয়ে চন্দ্রিমা বলল এটাতো হানাবাড়ি কি হবে সবাই প্রভুর ডাকতে ডাকতে এক জায়গায় বসে পরলো। ঝমঝম করে বৃষ্টি হচ্ছে সেইসাথে ঝড়ো হাওয়া ওরা ক্ষুধায় কাতরাচ্ছে দেখলো সামনে একটি কলা গাছ আছে সেখানে বেশ একটা পাকা কলার কাঁদি গাছে ঝুলছে সেটা গাছ থেকে নামিয়ে রাতের খাবারটা শেষ করলো । তারপর দেখল একটা বিকট আওয়াজ আসছে পূর্ব দিক থেকে তারপর ওরা সবাই এক জায়গায় জড়ো হয়ে কাঁপতে লাগলো শেখ দেখল একটা মাটির সুরঙ্গ আছে চল ওখানে গিয়ে আশ্রয় নিই ওরা আস্তে আস্তে সেখানে আশ্রয় নিল। সত্যিই ওরা সেদিন ভূতের বিকট আওয়াজ শুনে ছিল ওই বাড়ি থেকে এখনো ভোর হতে ঢের দেরি ওরা সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে রহিম শুধু জেগে আছে রহিম দেখল ভুতের চেহারাটি আস্তে আস্তে সুড়ঙ্গের ভেতরে ঢুকে কাঁপতে লাগলো। এদিকে ফজরের আজান ভেসে আসে কানে রহিম তড়িঘড়ি নামাজ পড়লো তারপর ওখান থেকে ওরা বেরিয়ে পড়ল বনের ভিতর দিয়ে ভিতরে দিয়ে ওরে যে যার বাড়ি চলে গেল। ওদের বাবা-মা ওদের দেখে বেশ খুশী হয়েছিল তারপর বিকাল বেলায় ওরা নদীর পাড়ে বসে সেই সব কথা আলোচনা করছিল চন্দ্রিমা বলল ওই রাত আমাদের কাছে এক ভয়ঙ্কর রাত কি বলিস তোরা ওরা বলল হ্যাঁ হ্যাঁ।






                 কষ্ট
         হামিদুল ইসলাম
            

আমাকে কষ্ট দিতে চাইছো ?
দাও
আমি কষ্ট সইতে এসেছি
আমি তোমার কষ্টের ভাগ নিতে এসেছি
তোমার কষ্ট গলায় বেঁধে
আমি সুদূর সাগরে ডুব দিতে চাই  ।।

আমাকে কাঁদাও
আমাকে হাসাও
আমি কাঁদতে চাই সারা জীবন
তোমার জন‍্যে আকাশ ফাটিয়ে চিৎকার করতে চাই
আমি বলতে চাই
আমাকে আরো কষ্ট দাও  ।।

আমাকে আগুনে পোড়াও
আমি চিতা হতে চাই
পুড়ে যেতে চাই গভীর দুঃখে
আমার ছাইগুলো উড়ুক পৃথিবীময়
আঁধারে ঢাকুক আকাশ
আমি আকাশের সীমানা পেরিয়ে তোমার কাছে ফিরে আসবোই ।।





  পরকীয়ার মসকরা
   ডঃ রমলা মুখার্জী


পরকীয়া হল মহতি প্রেম
      যদি না পড় ধরা,
তাই তো খুব রিস্ক এই
      পরকীয়া প্রেম করা।
জেনেশুনেও অবুঝ চোখ
   পরের দ্রব্যে চায়-
পরকীয়ার কর্মে হায় রে
  নাকানি-চোবানি খায়।
তবুও উপরি পরকীয়া
     ভীষণ নাকি মিষ্টি-
যদিও লোকের দৃষ্টিতে তা
  ন্যাস্টি, অনাসৃষ্টি।
রাধাকৃষ্ণের পরকীয়ার
     অমর প্রেমের গানে-
পরকীয়ার প্রেমিক ছোটে
     ভরা কোটালের বাণে।

0 comments: