শুক্রবার, ২১ আগস্ট, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন-21/08/2020

       "উপকণ্ঠ 21 আগষ্ট সংখ্যা "

         "উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
                (ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-21/08/2020,শুক্রবার
               সময় :- দুপুর 1 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••

পূর্ণ শশী
        রঞ্জনা রায়

বর্ষার   রূপনারায়ণ ভীষন খরস্রোতা
ঈশ্বর সাঁতার কাটে তেজী একরোখা ।
ভগবতী জননী জীবনের  ধ্রুবতারা
মানব প্রেমে হৃদয়ে জাগে ঝর্ণাধারা।
ভাষা বিজ্ঞানী - তিনি যে মহান
"বর্ণপরিচয়" তার অমূল্য দান
বাংলা অক্ষরমালার বর্ণচছটায়
সরল শিশুমনে মুগ্ধতা জাগায় ।
যতিচিহ্নের সুকঠিন শাসন পথে
বাংলাভাষা  এগিয়ে  চলে বিজয় রথে
গল্প, প্রবন্ধ,  অনুবাদ আর তর্ক- বিতর্ক
বাংলাভাষা হয়ে ওঠে প্রজ্বলিত  অর্ক ।
নারীদের  জীবনে জ্বালালেন আলো
বিধবাবিবাহ মোছে সমাজের কালো
শিক্ষায় পেলো  তারা নিজস্ব অধিকার
দুর্গম জীবনপথে  এলো নব প্রতিকার ।
অন্ধ আতুর  দীন দরিদ্র সবাই  আপন
সবার জন্যে কাঁদে অতল সাগরের  মন
দয়া করুণায় মূর্ত তিনি অসীম সাহসী
বিদ্যায় জ্ঞানে সেবায় বাগ্মী  পূর্ণশশী।



মৃত‍্যু এখন দ্বারে
            বিপ্লব গোস্বামী

এখনো কি বলতে হবে ?
   থাকতে হবে ঘরে !
বলার সময় ফুরিয়ে গেছে
     মৃত‍্যু এখন দ্বারে।
মৃত‍্যু এখন নাড়ছে কারা
সারা বিশ্ব শবের কানাড়া।
করোনা নিয়ে করছ মস্করা
মৃত‍্যুকে ভাই দিচ্ছ আশকারা।
এখনো বোঝনি,বুঝবে তোরা শেষে
যম আসছে ধেয়ে,মাশুল দেবে কষে।
সম্পর্ক হীন থাকব ঘরে
সঙ্গীবিহীন, বাঁচার তরে।
দেশ জাতিকে করবনা হয়রান
বাঁচব নিজে,বাঁচাব অন‍্যের প্রাণ।



অণু কবিতা
      প্রকৃতি আমার বন্ধু
                   কনিকা রায়

মন খারাপের ডাক দিয়েছে সাগর পাহাড় নদী!
ভাবছি আমিও তোদের সঙ্গি হব!!
তোদের হাতে হাত মেলাবো!
চার জনাতে থাকবো মোরা থাকবো নির্জনে!!
পাহাড় বলে দেখ না এখন কেউ আসে না!
সাগর বলে আমার ঢেউয়ে সুর ওঠে না!!
নদী বলি নৌকা নিয়ে জানি না মাঝি কোথায় গেছে হাড়িয়ে!!
সত্যি বলছ তুমি তোমার দু-হাত দেবে আজ বাড়িয়ে।



গেঁয়ো চাষীর বাক্যালাপ
         বিমান প্রামানিক

একটো সাচ্ছা কথা কইছি বটে
এই বছর খানা কত না বিপদে কাটছে।
দ্যাশ বিদ্যাশে কত লোক কাজ কাম করতে যেত
দুটো টাকা পয়সা আনত, মাইয়া পোলা খেতে পেত।
কিন্তু দ্যাখ দেখিনি, যবে থেকে করোনা এলো
সব কিচ্ছুকে বন্দ করে দিল।
বিদ্যাশের যত লোক কাজ কাম করতে গেছিলো
সব্বাইকে পালিন আসতে হলো,
আসতে আসতে আবার না খেতে পেয়ে রাস্তায় পড়ে মইল্ল
আর বাড়িতে মাইয়া পোলা, বুড়া বাপ-মা কেঁদে কেঁদে জীবন দিলো।
কত্ত গাঁয়ের লোক বিনা কাজে না খেতে পেয়ে
ঘরের যে টুকুন যা কিছু ছিল বিকিয়ে দিল।
বিক্রর করেই বা কত্তদিন চলবে বল দেখিনি!
কারও ঘরে এতক টুকু জমানো টাকা পয়সা আছে নাকি?
কুনো রকমে খেটে কুটে দিন চলে যায়
একদিন কাম জোটেনাই তো পরের দিন হাড়ি চড়ে নাই।
ঐ পাশের পাড়ার মুকলি লাপিতের বেটা খানা
জানিস তো,  কদিন থেকে জ্বরে ভুগছে
ঐ সজল ডাক্তার নাকি বুলছে করোনা হইয়েছে।
গাঁয়ের লোকের কি বিপদ বল দেখিনি!!
হাই ভগমান, যেন ওরে রক্ষে করো,
গাঁয়ের লোকের একমাত্র  ভরসা তুমি ঠাকুর।
এ বছরখানা দেখছিস তো? মেঘও যেন ফুটে গেলছে।
যেদিন জল পড়ছে শুধু পড়েই যেছে, পড়েই যেছে।
মাঠে ধান কটা কেবল পাকতে লেগেছে,
কেটে আনবো সবাই, তা জলে ভাসিন দিলো
ঠাকুর ঠাকুর করে কি লাভ আমাদের হইল্ল?
এখুন আবার দেখ গুটা গাঁয়ের লোক কুনো রকমে বিচুন করলাম
জমি যে টুকুন আছে, ধান কটা লাগাবো এখুন
মেঘখানা আর নেমেই আসে না, নেমেই আসে না
ঐ ছিদামের বিচুন তো বুড়িন গেল রে
জমিখানা তো কাদাতেই পারিসনি ।
যদি আবহাওয়া ভালো থাকতো তাহলে দুট্যা ধান পেত্যাম বল?
তা আবার জমি গুলা শুকিন যেছে তো, নাইই তো জল।
করোনা এসে সব মাটি করে দিলে, সব শ্যাষ,
আমাদের জীবন বিকিন যাবে সব শ্যাষ।
গাঁয়ের এত এত ছেলেগুলা সব পালিন এলো
গাঁয়ে কি কাম তারা করবে বল দেখিনি।
মাঠে ধান পাকছে তো জলে ভাসিন দিছে
আবার ধান লাগাতে যাবো তা জলই নাই মাটিতে।
ভগমান তুমি এমনি করে পরিকখ্যা লিছো?
তুমিই সব, তুমিই পারো, তুমিই রকখ্যা করো।




   আ‌‍‍মরি জন্মভূমি
           সায়ন প্রামানিক

বহু দিন ধরে ,  বহু দেশ ঘুরে ,
সন্ন্যাসী বেশে পহচিনু আসি নিজ গৃহ দ্বারে ,
আপন ভিটায় আজ জ্বলেনাকো দীপ
একে একে পড়িল মনে সকল অতীত ।
এ জগৎ বড় মায়াময় মন হ‌ইয়া যায়  ভারী ,
মাতৃ স্বরুপ জন্মভূমি মোর
কী করি ভুলিতে পারি ?
            


ভুবনদের গ্রাম
        আব্দুল রাহাজ

একটা ছোট্ট বন তার পাশ দিয়ে চলে গেছে মেঠো পথ যেতে যেতে পথের ধারে খড়-মাটির দেয়ালে ঘেরা ছোট ছোট কুটির ঘর দূর থেকে দেখলে মনে হয় গ্রাম বাংলা এ কোন চেনা পরিচিত চারিদিকে গাছপালা আবৃত উত্তরের মাঠ থেকে বাতাস বইছে জোরে জোরে কদিন আগে বৃষ্টি হওয়ায় বাতাসে ঠান্ডা হাওয়া বইছে । গ্রামের কয়েকটা প্রান্তিক পরিবারের বসবাস তাদের বনের কাঠ ফলমূল আর মাঠে চাষ করে জীবিকা উপার্জন করতো তার অত্যন্ত সরল সাদাসিদে পাশাপাশি বসবাস করে প্রকৃতি মায়ের কোলে এক অন্যরকম মেলবন্ধন নিয়ে সবুজ শ্যামল এই গ্রামে বসবাস করছে ওরা। ওই গ্রামে থাকতো ভুবন গ্রাম থেকে আট কিলোমিটার দূরে একটা স্কুলে পড়তো গ্রামের মানুষের বিপদে-আপদে ভুবন সবসময় থাকত কিন্তু তার সমবয়সী কেউ নেই ছোট ছোট বাচ্চাদের সাথে খেলা করতো ভুবন কেভাবা তো তাদের ওই গ্রাম টাকে দেখে বিকাল বেলায় মোড়ল পাড়ার মাঠে বাচ্চাদের সাথে বিশাল ফুটবল খেলা হারাধনের পুকুরে স্নান করে বাড়ি আসা এসব ভুবন করে বেড়াতো। একবার ইস্কুলের এক অনুষ্ঠানে ভুবন নাম দিয়েছিল গল্প বলায় যথারীতি অনুষ্ঠানের দিন ভুবন তার গ্রামের কথা বলার জন্য উঠলো ভুবন গ্রামের কথা বলতে লাগল গ্রামের জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে প্রকৃতির মায়ের পরিবেশ কিভাবে তারা জীবন-যাপন করে সবই বললো স্কুলে সবাই মন দিয়ে শুনল সবার মনে গেঁথে গেল ভুবন দেড় গ্রাম দেখার ভুবন তারে সঠিক পথটা বলে দিলে সবাইকে।
কিছুদিন যেতে না যেতেই গ্রামের দক্ষিণ দিকে আসতে শুরু করলো পরিযায়ী পাখিরা এমনি থেকেই গ্রামটা অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক তার উপরে পরিযায়ী পাখির দল এসে আরো মন মাতানো পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছে ভুবনের ক্লাসের বন্ধুরা একবার এসেছিল ভুবন দের গ্রামে বেশ আনন্দ পেয়েছিল ওরা ওরা দেখেছিল কিভাবে ভুবনের গ্রামের লোকেরা প্রতিনিয়ত জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে ওরা দেখেছিল প্রাকৃতিক পরিবেশের অপরূপ সৌন্দর্য যে আর কোথাও পাওয়া যায়নি ওদের কাছে এটাই মনে হয়েছিল। এরপর আস্তে আস্তে ভুবন দের  গ্রাম এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৌন্দর্য এর কথা ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে ও পাড়ার খগেন রা বেশ একটা দোকান বানিয়েছে তাহলে বাইরে থেকে লোকেরা তাদের দোকানে জিনিসপত্র কিনছেন একটা অর্থ তারা সেখান থেকে পেয়ে যাচ্ছে ভুবন সেটা লক্ষ্য করে গ্রামে সবাইকে এরকম দোকান করতে বললেন যা থেকে তাদের অর্থ উপার্জন হবে থাকবে না অভাব-অনটন গ্রামের ঘরে ঘরে দু'বেলা দু'মুঠো ভাতের জোগাড় হবে ভাতের গন্ধে গ্রাম শুধু এক অপরূপ পরিবেশ সৃষ্টি হবে যা প্রকৃত মা স্বচক্ষে উপভোগ করবে। ভুবনের কথা শুনে সবাই কাজটি করলো আস্তে আস্তে গ্রামের ঘরে ঘরে ভাতের হাঁড়ি উঠলো উননে ভুবন এসব দেখে খুব শান্তিতে রইল আর প্রকৃতির সৌন্দর্য তার শোভা দ্বারা বেশ মনোরম পরিবেশ সৃষ্টি করে গ্রামবাসীকে আগলে ধরে রেখেছিল। এইভাবে ভুবন দের গ্রাম প্রকৃতির মায়ের কোলে এক অনন্য প্রতীক হিসেবে দিনের পর দিন বছরের পর বছর উজ্জ্বল রূপে লাবণ্যে মেলে ধরেছিল।




প্রবন্ধ
'মনীষীদের বাণী ও আমরা'
  - অগ্নিমিত্র

  মনীষীরা যা বলে গিয়েছেন তা করতে পারলে তো ভালোই । মনীষীরা তো অনেক ভালো কথাই বলে গিয়েছিলেন! .. তবে আমরা সেটা করি কি না তা প্রশ্নাতীত নয়। সততা, কর্মনিষ্ঠা, অন্যকে অকারণে দুঃখ না দেওয়া, এই রকম বাণীগুলি আমরা শুনি ,  মুখস্থ করি ও লোককে শেখাইও । তবে ব্যবহারিক জীবনে প্রায় সবসময়ই আমরা উল্টোটা করে থাকি! লোককে অকারণে উত্যক্ত করতে না পারলে আমাদের ভালো ঘুম হয় না। অন্যকে ছলে বলে কৌশলে টেক্কা দিতে চাই কেবল। নিজের সুনাম বৃদ্ধির জন্য আমরা অন্যকে সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে থাকি হরদম । নিজের সম্মান রক্ষার ব্যাপারে আমাদের টনটনে জ্ঞান; তবে বাকিদের সম্মানহানি করতে পারলে তো ভালোই, এমনটা মনে করি।
  মনীষীরা বলে গিয়েছেন -' আপনি আচরি ধর্ম সবেরে শেখাও।'  আমরা কিন্তু সবাইকে যা করতে বলি, নিজে ঠিক তার বিপরীত কাজ করি ! এটাই হলো  আমাদের চারিত্রিক  বৈশিষ্ট্য । শঠতা, কুটিলতা, 'চাচা আপনা জান বাঁচা' র নীতিই আমরা পালন করে চলি হামেশাই।..
তাই বলা যায়, মনীষীদের বাণী আমরা গ্রহণ করেও করি না। শেখাই , পড়াই, কিন্তু নিজেরা মানি না একেবারেই। ওগুলো আমাদের মতে শুধু কথার কথা । তবে করতে পারলে যে ভালোই হতো তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ।।






                     তুমি
              হামিদুল ইসলাম

                
বিশটা বছর কেটে গেলো আমার সৈনিক জীবন
সেই তুমি তুমিই আছো 
তোমার 'তুমি' র নেই কোনো পরিবর্তন
আমি যুদ্ধ ফেরা সৈনিক
ভেবেছিলাম মরেই যাবো
কিন্তু মরি নি এখনো
বেঁচে আছি তোমার জন‍্যে   ।।
সেদিন বিদায়ের সময় দেখেছিলাম
তোমার চোখের জল
তুমি কেঁদেছিলে আমার জন‍্যে
তাই ফিরে এসেছি
তোমার দুচোখের জল মুছে দিতে
তোমার জন‍্যে বেঁচে আছি
আমি বীরত্বের প্রতীক   ।।
তোমাকে চাই
আমার বিশ বছরের সৈনিক জীবনে
আমার হাজার চিঠি
তোমার ভালোবাসার সাক্ষ‍্য বহন করে
আমি তোমাকে ভালোবাসি   ।।




কবিতা : ভোরের রং!
                  বিশ্বজিৎ কর

ভোরের রং খুঁজি,
ভেজা ঘাসের শীতলতায়!
গৃহস্থালি চুম্বনের রেখায়,
রাতজাগা পাখি তখনও ঘুমায়!
প্রভাতভ্রমণে কলকে-টগরের কত কথা,
বৃষ্টির জল চুঁইয়ে পড়ে!
জবরদস্তি হাসি,লাফিং ক্লাবে...
এখনও ঘাস ভেজা আছে-
চলো, ভোরের রং খুঁজি!



মনের উপর সাম্প্রতিক অতিমারির প্রভাব
              ডা: নরেন্দ্র নাথ নস্কর

চিনে উদ্ভূত মহামারি সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে অতিমারির রূপ ধারণ করেছে।
অতিমারি প্রতিরোধ করতে পৃথিবীর দেশে দেশে লকডাউন বা  গৃহবন্ধী থাকতে সরকারী নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
আমাদের ভারতবর্ষেও লকডাউন জারি করা হয়েছিল।
প্রায় আড়াই মাস পরে ধাপে ধাপে  এই লকডাউন বিভিন্ন রাজ্যে থেকে তুলে নেওয়া হচ্ছে।
দুমাসেরও বেশি ফোর্স লকডাউনের প্রভাবে অনেক নর ও নারী গৃহে অন্তরিন থাকার ফলে নানা রকম মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
মানসিক চাপ কাটাতে একটা বিজ্ঞান সম্মত  উপায় হল নিজের বন্ধু বা কাছের মানুষের কাছে নিজের সুখ দুঃখের কথা ভাগ করে নেওয়া।
অনেক সময় দেখা গেছে বাড়ির সদস্যরা কারো কারো বন্ধু বা কাছের মানুষ নাও হতে পারে।
এটা অস্বাভাবিক নয়।
অনেক দিন বাহিরে যাওয়া নিষেধ থাকায়,নিজেদের বন্ধুদের কাছে অনেকে সামনা সামনি মনের সুখ দুঃখ ভাগ করে নিতে পারেনি।
আবার ফোনে অনেক মনের কথা বলতে অনেকে দ্বিধা বোধ করেন।
এর ফলে ক্রমে ক্রমে একটা মানসিক একাকীত্ব অনেকে বোধ করেছেন।
কাজের চাপ মানুষের মনকে ব্যস্ত রাখে
অনেকের ক্ষেত্রে স্কুল কলেজ অফিস থেকে দুরে থাকার জন্য একটা কর্মহীন অবস্থার ফলে একটা আকস্মিক শূন্যতার সৃষ্টি হতে পারে। একটা স্বাভাবিক রুটিন বদল হবার জন্য একাকিত্ব হতে পারে।
সেই একাকীত্ব থেকে নিদ্রাহীনতা, ভয়,অব্সাদের সৃষ্টি হয়েছে অনেকের ক্ষেত্রে।
এই গুলোর যথা যত চিকিৎসা না করালে অনেক সময় স্থায়ী বা অস্থায়ী মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
রোগীর মানসিক গঠন অনুযায়ী তার চিকিৎসা নির্ভর করে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
বাড়ির মানুষদেরও দায়িত্ব এ ক্ষেত্রে কম নয়। কোন সদস্যের অস্বাবিক আচরণ লক্ষ্য করলে সত্বর ডাক্তার বাবুর পরামর্শ নেওয়া উচিত ও প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞএর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।
এই সমস্ত ক্ষেত্রে এদের একাকীত্ব দুর করতে বাড়ির লোকেদের বন্ধুর মত আচরণ করা ভালো।
বেশি বকা ঝকা না করে ভালো ব্যাবহার অনেক সময় এই মানুষদের একাকীত্ব দুর করতে সাহায্য করে।
কিছু ক্ষেত্রে মানসিক রোগের বিশেষ্যজ্ঞ বা মানসিক রোগের চিকিৎসকের সাহায্য প্রয়োজন  হয়।
প্রকৃতির সাথে যোগাযোগ যেমন খোলা আকাশ,খোলা মাঠ , গাছ পালা,নদী পাহাড়  এই রোগের কিছুটা উপশম হয়।
তবে বন্ধুদের বা কাছের মানুষদের সাথে মনের কথা ভাগ করে নিলে এই মানসিক চাপ ডাইলুট হয়ে অনেক ক্ষেত্রে এই অব্সাদ সেরে যায়।







অনুগল্প
ভালোবাসা
          মিনতি গোস্বামী



ক'দিন ধরে খাবার ইচ্ছেটা বিনোদবাবুর চলে যাচ্ছিল।
জ্বর, হাঁচি,কাশি কিছুই​ ছিলনা। একমাত্র ছেলে কুড়ি বছর দিল্লিতে, বৌমা আর নাতিকে বছরে একবার দেখতে পান।ছেলে ডিসেম্বরে বাড়ি এসে দিন সাতেক থাকে।
কাছের মানুষ বলতে স্ত্রী রমলাই। সুখ, দুঃখ,আপদ-বিপদের  সঙ্গী দুজনে দুজনার। শহর জুড়ে সংক্রমণ বাড়ায় দুজনেই আতঙ্কে ও সাবধানে ছিলেন।
বিনোদবাবু সপ্তাহে একদিন বাজার করেন আর ঘরে ঢুকে পড়েন।গায়ে জ্বর না এলেও  অরুচির জন্য পাড়ার ডাক্তারবাবুর কাছে রমলা দেবী নিয়ে গেলেন।রোগী না ছুঁয়েই তিনি বললেন,আগে
কোভিড পরীক্ষা হোক, তারপর চিকিৎসা ।
            হাসপাতালে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে পরীক্ষা হল, তিনদিন পর রিপোর্ট পজিটিভ হল।
উপসর্গ আর অসুবিধা নেই বলে বাড়িতেই থাকার ব‍্যবস্থা স্বাস্থ‍্যদপ্তর থেকে।ফোনে তারা ওষুধ বাতিলে দেবেন।দু'কামরার ফ্ল্যাটে দুটো বাথরুম, অসুবিধার কিছু নেই,রমলাদেবীর  মনের জোর খুব।
স্বামীকে বললেন,"চিন্তা কোরোনা,সামলে নেব।"
কিন্তু খাবেন কি? পুলিশে ফোন করে ও উত্তর পেলেন না।পাশাপাশি ফ্ল্যাটের জানালা বন্ধ।
ফোন করাতে কেউ ফোন ও ধরেনা।এখন উপায়?
কাজের মাসিকে জবাব দিলেন, কিন্তু মালতী উৎকন্ঠায় বললো,"আমি তো যাবোনা, তোমরা খাবেটা কি? ভদ্দরলোকেরা তো ফিরেও তাকাবেনা।"
রমলাদেবী বললেন,"ঠিক বলেছিস। সত্যি আমি ভাবতে পারছিনা কি করবো!"
মালতী বললো,"বৌদি তুমি কিছু চিন্তা কোরোনা।
ফোনে তুমি রোজ বলে দেবে, আমি তোমাদের জিনিস পৌঁছে দেব।বাইরে একটা টুল রাখবে, আমি স‍্যানিটাইজার ঢেলে দিয়ে ওখানে প‍্যাকেট নামিয়ে দিয়ে যাবো । তোমার তো এখনো হয়নি।
তোমার হলে আমি দুবেলা রান্না খাবার দিয়ে যাবো।"
  রমলাদেবীর দুচোখ জলে ভরে গেল।কতটুকুই
বা এদের জন্য করেন! সারা বছর  ভালো ভালো রান্না করে পাশের যে সব ফ্ল্যাটে বিলিয়েছেন,তারা আজ জানালা বন্ধ করেছে, ফোন ধরছেনা।
এটাও. দেখার ছিল।অসময়েই মানুষ চেনা যায়।
         দিন পনেরো বাদে বিনোদবাবু সুস্থ হয়ে গেলেন।রমলাদেবীর রিপোর্ট তখনো নেগেটিভ।
সুস্থ হলেও প্রতিবেশীরা এখনো কথা বলেনা,
জানালা খোলেনা এদিকের। মালতী এখন ফ্ল্যাটে ঢুকেই কাজ করে।তারা যে মানুষকে ভালোবাসতে জানে।








" দ্বীন-ইসলাম "
               জুয়েল রুহানী

দ্বীন-ইসলামের বিধান মেনে
জীবন গড়ো স'বে,
হীন কাজে আঘাত হেনে-
সময় কাটাও তবে।
আল-কোরআনের আলো নিয়ে
আলোর মশাল ধরো,
আল-হাদীসের বাণী দিয়ে-
আপন জীবন গড়ো।
নামায কায়েম করো ও ভাই
যাকাত প্রদান করো,
হও যদি কেউ সামর্থবান-
কাবা তাওয়াফ করো।
রোযা রাখো উপবাসে
সেহরী খেয়ে ভোরে,
আসবে প্রভূর নাজ-নেয়ামত
নিত্য আপন ঘরে।
হকের কথা বলতে কেউই
ভয় পাবে না কভূ,
রহমতেরি চাঁদর দিয়ে-
ঢেকে দিবেন প্রভূ!
সত্যে সদা অটল রবে
জীবন চলার পথে,
মিথ্যে ঘৃনার দৃষ্টি দিবে-
চলবে এই শপথে।





কবিতা-খিদে
        সত্যজিৎ মজুমদার

জামা না হয় পরবো ছেঁড়া
বস্তা দেবো গায়ে,
রাত কাটাবো গাছের নিচে
চাই না চটি পায়ে।
পাথর চেটে মিটলে খিদে
পাতি কি বাবু হাত?
খিদের তাপে মরছি জ্বলে
চাই একটু ভাত ।
ভাত যদি না রাঁধেন ঘরে
বাসি রুটিই নেব,
সারাটা দিন বেগার খেটে
শোধ করে তা দেবো!
বাপ-মায়ে তো জন্ম দিয়ে
দেখেনি আর ফিরে,
উপরওয়ালা নেয়নি তুলে
এত লোকের ভিড়ে ।
সবাই বলে নাবালককে
কাজে নেওয়া মানা,
কাজ না করে ভাত চাইলে
বলে কুকুর ছানা।
তোমরা বাবু খাও হোটেলে
চড়ছো গাড়ি দামী,
টাকায় করে মূর্তি পুজো
হচ্ছ বড় নামী।
আমরা শিশু, অন্নহারা
কেউ দেখে না চোখে,
অবশিষ্ট ফেলছে তবু
দেয় না খেতে লোকে।
নবান্নেতে পিঠে-পুলির
চাই না নিতে স্বাদ,
সারাবছর থাকবো খুশি
পড়লে পেটে ভাত।








দুটি মানুষ 
কাশীনাথ সাহা

একটি মানুষ বিশ্বলোকে স্বপ্নকে দেয় ছুঁড়ে
একটি মানুষ আবদ্ধ সে ঘরেই থাকে পড়ে।
একটি মানুষ ভালবাসায় উজাড় করে মন
আর এক মানুষ ঘৃণা নিয়েই বাঁচছে সারাক্ষণ।

একটি মানুষ দুচোখ জুড়ে নীল আকাশের নেশা
একটি মানুষ জানেই না সে সবুজ ভালবাসা।
একটি মানুষ সবার জন্য আত্ম বলিদান
আর একজন শিল্প সৃষ্টি ভাঙছে খান্ খান্।

একটি মানুষ বৃক্ষ রোপন সবুজে মুড়ে দেশ
আর একজন কুঠার হাতে ছড়াচ্ছে বিদ্বেষ।
একটি মানুষ আলো ছড়ায় নক্ষত্রের দ্যুতি
আর একজন অন্ধকারেই নীরব সম্মতি।

একটি মানুষ বহতা স্রোত বুকের ভিতর নদী
আর একজন স্থবির প্রাণ আঁকড়ে ধরে গদী।
একটি মানুষ আত্মমগ্ন উদাস বাউল গান
আর একজন ধ্বংস করে পৃথিবীর সম্মান।

একটি মানুষ আলোছায়ায় রামধনু রঙ আঁকে
আর একজন নর্দমায় পাঁকের গন্ধ শুঁকে
একটি মানুষ পূব আকাশে সূর্যোদয়ের আলো
আর একজন অমাবস্যায় দগ্ধ মনের কালো।

দুটি মানুষ ভিন্ন রূপে এই মাটিতেই ঘর
বাস করছি দুই সত্ত্বায় বংশ পরম্পর।







তৃণা সাহা-র কবিতা 
        সন্ন্যাসী 

সন্ন্যাসী হৃদয় সুগ্রীবের
রাজা হওয়া বড্ড বেমানান রাম!
এই বাক্য আপনি ফিরিয়ে নিন মহারাজ
রামের মধুর কথন, সন্ন্যাসী যদি রাজা হয়
সে-তো অমৃত সমান।

এ না হয় ধর্ম কথা, প্রজা পালন
অত্যন্ত আবেগপ্রবণ
এবং
কাব্যময় লেখনি
কিন্তু সেই লেখনি যদি তুফান হয়?

বৃষ্টিতে পুড়ে যায় মাটির আর্তনাদ
বাতাসে বইবে লু
মহামারীতে মৃত্যু হবে
হাজার হাজার প্রাণ।
তখন  রাম কি করবেন?

অযোধ্যায় পারিজাত ফুল
সুগন্ধে দেশ বয়ে যায়..
সমুদ্র নদী আকাশ নক্ষত্র

কিন্তু কোত্থেকে কার্তুজ কামান বারুদে
জ্বলে যায়
আমাদের মাটি।

হায় মাটি তুমি অযোধ্যায় যাও
ওখানে রামকে বলো
অস্ত্র দাও, আগুন দাও , দাবানল দাও
ধুলিসাৎ হয়ে যাক কামানের নল।

রামের মধুর সম্ভাষণ - তথাস্তু।






🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥

লেখা আহ্বান
আমাদের পরবর্তী বিশেষ সংখ্যা  
           "মহরম সংখ্যা-2020"

লেখা পাঠান :- 18 Aug 2020 থেকে 29 Aug 2020 এর মধ্যে

যে ধরনের লেখা পাঠাবেন 👇👇👇👇
বিষয়:- কারবালার ঘটনা ও মহরম সম্পর্কীত 

১) হাইকু, অনুকবিতা, লিমেরিক, কবিতা
২) অনু গল্প, ছোটোগল্প, গল্প 
৩) প্রবন্ধ, জীবনী, স্মৃতি কথা, চিঠি
৪) ইংরেজি:-
        Poem, Short story, Story, Essay 
• নিদির্ষ্ট কোনো শব্দসীমা নেই
• whatsaap তে টাইপ করে পাঠান 
• 9593043577 এই নং তে 
• লেখার উপর অবশ্যই উল্লেখ করবেন "উপকণ্ঠ মহরম সংখ্যা"  
পত্রিকা প্রকাশ করা হবে- 30 Aug 2020 , বিকাল 3টা 









1 টি মন্তব্য: