সময়ের অপেক্ষা
গল্প
কলমে,,,অনাদি মুখার্জি
প্রেমের পড়ার কোনো দিনক্ষণ
ঠিক হয়না ! কে বা কাকে কখোন ভালো লেগে যাবে তা বলা যাই না ! সেই রকমই মালা আর সমুর প্রেম ,তারা একে অপরের প্রতি কথা ও চোখের ইশারায় কথা হয় কিন্তু মুখে কিছুই বলতে পারছে না !
মালার এক বন্ধু সুজাতা জন্ম দিনের পার্টি তে সুজাতার মামাতো দাদা সমুর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয় সুজাতা ! বেশ হ্যান্ডসাম ছেলে চোখে সুন্দর ফ্রেমের চশমা পরে আছে ! প্রথম দেখাতে ভালো লেগেছে মালার ! সেই দিন সুজাতা জন্ম দিনে অনেক রাত হয়ে গেসলো ,তাই সেই দিন মালা সুজাতা কে বললো এই অনেক রাত হলো ,আমি তো একা যেতে পারবো না ! সুজাতা বললো নো প্রবলেম আমার দাদা আছে তো তোকে বাড়ি পৌঁছে দেবে এই বলে সমু কে ডেকে এনে পরিচয় করিয়ে বলে যা তুই আমার দাদার সাথে ! মালা বাড়ি কাছে এসে নেমে পড়ে আর বলে থ্যাংক ! সমু বলে আমাকে থ্যাংকস বলে লাভ নেই কারন তোমাকে আমি চিনি না ! মালা তখন বলে তবে তোমার গাড়িটা কে ধন্যবাদ বলি যে আমাকে এত রাতে বাড়ি পৌঁছে দিল ! সমু বলে তোমার বন্ধু বলে মনে করো আমাকে তা হলে চলবে বলে সমু চলে গেল ! মালা অনেকক্ষণ তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে বনধু আমার তুমি ভালো থেকো ! ঠিক কিছু দিন পর সুজাতা ও তার বন্ধুরা প্ল্যান করলো অনেক দিন হলো বাংলা সিনেমা দেখতে যাবে ,জীত ও প্রিয়াঙ্কা সাথী ছবি নাকি খুব ভালো ছবি তাই তারা দেখতে যাবে ,মালাও রাজি কিন্তু সিনেমা হলের সামনে দাঁড়িয়ে দেখে হাউসফুল টিকিট শেষ হয়ে গেছে কি আর করা যাবে ! সুজাতা বললো দ্বারা আমি সমু দা কে বলে কোনো ব্যাবস্থা করতে পারি কি না ! এই বলে সমু কে ফোনে বলতে সমু সাথেই সাথেই টিকিট নিয়ে হাজির ! মালা বললো আরে বেশ তো হাউস ফুলের মধ্যেই টিকিট পেয়ে গেলে ! সমু বললো আরে ওসব হাতের ময়লা যতই হাউস ফুল থাক ! মালা হাসতে হাসতে বলে খুব বাহাদুর তো তুমি ! বলে টিকিট নিয়ে হলেই ঢুকে পড়লো ! এই ভাবে মালার সাথে সমু কত কথা আদান প্রদান হতে লাগলো ,মাঝে মাঝেই সমু মালা কে নিয়ে ফুচকা ,বিরিয়ানী খেতো আর গল্প করতো ! দুজনের মধ্যেই এমন ভাব হলো যে দুজনেই দুজনকে ছাড়া থাকতে পারতো না ! একদিন সুজাতা বললো মালাকে তুই তো ভালোই প্রেম করছিস কিন্তু আমার দাদা কে ঘোল খাইয়ে ছেড়ে দিস না ! মালা বললো আরে সমু তো কিছু বলে না এমন ভাব করে বলেদিলে তো হয় ! সুজাতা বলে তুই বল আগে সমু তোর জন্য ই পাগল আমার কাছে তোর কত নাম করে ! মালা বলে কি বলবো শুনি ! সুজাতা বলে উঠে কেনো আই এল ইউ বলে দিলে হয় ! সমু আবার আই এল ইউ মানে বুঝে না !
একদিন সুজাতা ও তার বনধু রা ঠিক করলো আজ তো ৮ ই ফেব্রুয়ারি নাকি পোপজ ডে এই উপলক্ষে মালা ও সমু কে কাছে এনে তাদের সম্পর্ক টা পরিস্কার করে দিতে চাই !
মালা ও ভাবে আজ একটা খোলামেলা আলোচনা করে আসবো সমুর সাথে ,কিন্তু যখনই সমুর সামনে আসে তখনই সব ভুলে যায় সমুর মুখে মিষ্টি হাসি দেখে ! তারা কতবার দুই জনে একটা ফাঁকা জায়গা বসে কত গল্প হয় মাঝে মাঝেই সমুর হাত মালার শরীরের ছোঁয়া লেগে যায় তবুও সমু বলে না মালা আমি তোমাকে ভালোবাসি ! শুধু এই কথাটা শোনার জন্যে ই মালা অপেক্ষা করছে ! একদিন মালা বলেছিল আচছা সমু তোমার আমার কথা তুমি ভাবো ? সমু বললো হুম ভাবি বলে তো তোমাকে ডাকি আমি ! মালা বলেছিল কেনো ভাবো ? সমু সপাটে জবাব দিল ভালো লাগে তাই ভাবি ! সেই দিন খুব ইচছে করছিল মালার সমু কে বলে ফেলি আমি ও তোমাকে চাই তোমার বুকে আমাকে জড়িয়ে রাখো ! কিন্তু মালা নিজেকে সংযতো রেখেছে !
এইসব ভাবতেই ভাবতেই সুজাতা র ফোন এলো ! সুজাতা কথা মতোন মালা সেই দিন বিকেলে ওদের সাথে গঙ্গার ঘাটের কাছে দেখা করলো ! সেই খানে সমু ও আছে ,সমু কে দেখে মালা মন অস্থির হয়ে উঠলো কিছু কথা বলার জন্য ,দুই জন পরস্পরের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো ! যে সময় টা এতদিন ধরে অপেক্ষা করছিল সেই সময়টা বোধহয় আজ এসেছে বলার ,কিন্তু কখোন বলবে সেই কথা ! মালা ও সমু কাছে আসতে সুজাতা ও তার বন্ধুরা সব দূরে সরে গেল ! মালা বললো তুমি কখোন এলে কিছু কি বলবে ! সমু তখন পিছন থেকে হাতে রাখা লাল গোলাপ ফুল দিয়ে মাটিতে হাঁটু গেড়ে বললো এই ফুল তোমার জন্য ই , আমি তোমাকে ভালোবাসি মালা ,তুমি আমার ! মালার কানে তখন মধু বর্ষণ করছিল ,বার বার তার কানে
আওয়াজ শুনতে পাচছে একটাই আমি তোমাকে ভালোবাসি ! যে কথাটা শোনার জন্য ই এতদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে ,আজ শোনার পর মালার মুখখানি রক্তিম আভা হয়ে উঠেছে লজ্জায় ! তবুও সেই সমুর হাত থেকে লাল গোলাপ নিয়ে বললো আমি যে শুধু তোমার !
তোমার প্রপোজ আমি নিলাম ! দূর থেকে সুজাতা হাততালি দিয়ে বললো হ্যাপি প্রপোজ ডে ভালো থাকিস তোরা দুই জনে !