শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 27/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 27/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 27/11/2020, শুক্রবার
               সময় :- রাত 7 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

               তুমি
            সৌম্য ঘোষ
      

তুমি ফুল হও আমার বাগানে
রঙিন প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াবো
তোমার চারিপাশে ।

তুমি আকাশ হও
শরতের মেঘ হয়ে ভেসে যাবো
তোমার দিগন্তে !

তুমি নদী হও
তরী ভাসিয়ে চলে যাবো কোন্ অজানা
মোহনায় ।

তুমি জ্যোৎস্না হও
তোমার মায়াজালে সঁপে দেব
স্বপ্নে বিভোর হয়ে ।

তুমি কি আমার শয্যাচিতা হবে ?
তোমার হলুদ আগুনে আবিষ্ট হবো
চিরনিদ্রার অনন্ত প্রহরে।




অনামিকা
শুভ্রাংশু কুম্ভকার

অনামিকা,
তোমার কণ্ঠ জুড়ে মালা উঠলো অন্য কারো হাতে,
যৌথ স্বপ্নেরা শেষ হয়ে গেলো বেহিসেবি এক রাতে,
আলো ভরা পথে চলেছি দুজনে, আঁধার কীভাবে এলো?
ভুল বোঝা গড়ে বিভেদ প্রাচীর,আলাদাই করে দিলো।
হাতে ধরা হাত,সেই নিশিরাত এখনো কি মনে পড়ে?
ফেস্ট এর শেষে, নাটকের ড্রেসে, পৌঁছে দিয়েছি ঘরে।
চোখে চোখ রেখে, নবরঙ মেখে, পরদিন তুমি এলে,
সাদা সালোয়ার, লাল ওড়নায় ভালোবাসি বলে গেলে।
চোখে চশমায়,বুক চমকায়, আমি হতবাকে দেখি,
নোটসে্র খাতা,চিঠি চারপাতা আজও বুকে জমা রাখি।
তারপর সেই গাছতলে বসা, সব খাওয়া একসাথে,
তুমি হেঁটে, তাই সাইকেল নিয়েও আমি পথ চলি হেঁটে।
হোষ্টেলের ফোনে শুধু ইনকামিং অপেক্ষাতেই থাকে,
কার সহচরী কখনই বা ডাক দিয়ে যায় কাকে?
বিকেল কাটতো নরম স্বপ্নে,রাত্রে কঠিন বই,
রাতের বিরহ কী কঠিন তা তুমি ভালো জানো সই।
মন দেওয়া নেওয়া পাকাপাকি কথা সবই বছর তিন,
ছেড়ে চলে গেলে কীভাবে কাটাবো আগত আগামী দিন।
দেরি হলো কিছু কাজ খুঁজে পেতে, ততদিনে তুমি পর,
শুনেছি নাকি মস্ত চাকুরে তোমার যোগ্য বর।
আমি শুধু খুঁজি,হিসাব মেলেনা, একাকী অভাগা শোকে,
সুদে মূলে ব‍্যথা বাড়তেই থাকে হৃদয়ের পাশবুকে।



অনুগল্প
পুজো
মিনতি গোস্বামী

পুজোর আর দশদিন বাকি।পুজো হবেনা হবেনা করে প‍্যান্ডেলে বাঁশ পড়েছে টুবলুদের পাড়ায় ।
সরকার  নাকি সব পুজো কমিটিকে পুজোর নির্দেশ দিয়েছে।প্রায় আটমাস স্কুল বন্ধ, বাইরে কোথাও বেরোতে না পারায় টুবলুর মনটা খারাপ ই ছিল।কিন্তু বাঁশ পড়ার পর ই তার মন আনন্দে নেচে উঠলো।পুজো,ঠাকুর দেখা,অঞ্জলি , পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা,উঃ কি আনন্দ!
টুবলু নাচতে নাচতে বাবাকে বললো,"অনেক দিন বাড়িতে আছি, এবার ঠাকুরতলায় গিয়ে খুব আনন্দ করবো।"
বাবা একরকম কড়া গলায় বললো,"হোক পুজো,আমরা কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবোনা।।
সবাই বেরোলে সংক্রমণ বেড়ে মহামারী হবে।"
টুবলু জানে, বাবার কথাই শেষ কথা।
মায়ের কাছে দরবার করেও কোন কাজ,
হবেনা।টুবলু তবুও দমেনি।দোতলার বারান্দা থেকে
প‍্যান্ডেল বাঁধা দেখে রোজ।সে দেখে পাড়ার অনেক লোক কিন্তু জড়ো হয়ে প‍্যান্ডেলের তদারকি করে।
তাদের সবার মুখে মাস্ক নেই।তারা চায়ের দোকানে ঘেঁষাঘেঁষি করে চা খায়,গল্প করে।পাড়ার অনেক ছোটরাও প‍্যান্ডেল তৈরী দেখে।শুধু টুবলু ঘরে।
মন খারাপ হলেও বাবাকে সে কিছু বলেনা।

টুবলুর ছোটপিসি ষষ্ঠীর দিন এলো সপরিবারে করোনারি নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে।
টুবলুর বাবা বললো," তুই আমার ছোটবোন, বারণ করেছি পরিস্থিতির চাপে।ভালোই করেছিস এইভাবে এসে।সবাই ঘরে থাকবো। নতুন রান্না, ছোটদের মজা,আর খাওয়া দিয়েই এবার আমাদের পুজো।"

টুবলু ষষ্ঠীর সন্ধ‍্যে থেকেই পিসির ছেলেমেয়ের সাথে ছবি দিতে লাগলো বাবার ফেসবুকে নতুন পোশাক পরে।আর দেওয়া হল মায়ের হাতের রান্না।
পাড়ার অনেকেই কিন্তু পুজো প‍্যান্ডেলে গেল, রোজ
পুজো দেখলো, মজা করলো।

লক্ষীপুজোর আগের দিন টুবলুর বাবা বললো,
"এপাড়ায় কুড়িটি পরিবারের করোনা পজিটিভ।"
টুবলু এবার বুঝলো, কেন বাবা বাইরে. বেরোতে বারণ করেছিল।
টুবলু বাবাকে জড়িয়ে বললো," তুমি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।"





সৈন্য প্রতি একরাশ  শ্রদ্ধা
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি তাঁদের মহান অবদানের জন্য একরাশ শ্রদ্ধা জানাই,
মরুভূমি থেকে  সাগরে পর্বত চূড়ায়,
বরফের  মধ্যে  থেকে
নিয়োজিত থাকেন আমাদের  দেশ রক্ষায়,
তাঁদের প্রতি এই মন ভরে ওঠে একরাশ শ্রদ্ধায়৷

কত ঝড়  সংকট বিপদ বার বার আসে,
ভারতীয় সেনার মতো আর দেশকে কারা আর  ভালোবাসে?




মনের ক্যানভাসে
অনাদি মুখার্জি

আজো মনে পড়ে সেই শৈশবের দিনগুলো,
মন ছুঁয়ে থাকে থাকে আমাদের গ্রামের শান্ত নদীর কূলে !
থাকতো সেই খানে গ্রামের দুই ধার পাড়ে পাড়ে ,
সারি সারি কত পলাশ আর কলমিলতা ছেয়ে !
সেখানে আমার বনধু ছিল কত রঙিন প্রজাপতি ,
তাদের পিছনে ছুটতাম আর খেলতাম সারাদিন !
সোনালী বিকেলে আমি কত উড়িয়েছি রঙিন ঘুড়ি,
সবার আড়ালে করেছি  তেঁতুলের আঁচার চুরি !
রিমঝিম বর্ষায় ভিজে খেলতাম ছোটবেলায় ,
মাঠের সেই জমা জলে কাগজের নৌকা করে ভাসিয়ে দিতাম !
ছোট্ট বেলায় সেই দিনগুলি পারিনা আজ ভুলিতে ,
মনের ক্যানভাসে এঁকে রাখি বিনা রঙ তুলিতে !




বিপ্লব গোস্বামী এর তিনটি অনু কবিতা

১।
ভালোবাসা কি পাপ

বিপ্লব গোস্বামী

ভালোবাসা কি দীর্ঘশ্বাস
নাকি হাহুতাশ !
নাকি চির ধরা দিল
স্বপ্নের দ্বারে খিল !

ভালোবাসা কি পাপ
নাকি কোন শাপ !
নাকি আশা ভঙ্গের বেদনা
না পাওয়ার যাতনা !
ভালোবাসার শেষ ফল,
বুকে ব‍্যাথা চোখে জল!

২।
পদচিহ্ন

বিপ্লব গোস্বামী

আমার মনের উঠোন জুড়ে
তোমার পদচিহ্ন !
সারাটা হৃদয় জুড়ে ব‍্যাথার ক্ষত চিহ্ন !
গড়তে ছিলাম স্বপ্ন বাসর
হঠাৎ করলে মানা !
এখন আমি ধুলায় ধূসর
ভেঙ্গে স্বপ্ন ডানা।

৩।
তব চুম্বন

বিপ্লব গোস্বামী

সেদিন নীরবে নির্জনে দুজন,
তৃষা-তোরা চিত্তে তাপ দাহ ভীষণ।
অপলক দৃষ্টিতে কর পরশন,
ঘন ঘন তপ্ত শ্বাস অঙ্গ শিহরণ।
লাজে রাঙ্গা মুখচন্দ্র নত মস্তক,
তপ্ত দীর্ঘ শ্বাস হৃদপিণ্ডে ধকধক।
কাঁপা কাঁপা তব শুঙ্ক অধর,
ধীরে বসিলো ওষ্ঠে কেঁপে থর থর।
নিমীলিত আঁখি তব,স্তব্ধ হলো ক্ষণ
আজো ভুলিনি তব প্রথম চুম্বন।





সাধনা
   সুস্মিতা দে

চলে গেলেন মারাদোনা আপন
         ধাম পেরিয়ে সীমানা ছেড়ে ।

চলে যায় স্মৃতি রেখে ।
স্বর্গধামে,চোখের সামনে বিশ্বজয়ী
হৃদয়টি মানুষের মনে পড়ে

অনেক কাজ অসমাপ্ত
আছে , দাদার স্বপ্ন পূরণ
করতে হবে,  ভাইবোন অন্তরে
কান্না চলে ভাঙছে হৃদয় মন প্রান মারাদোনার খেলা তে আছে আত্মবিশ্বাস সাধনা কতো শ্রম। শুধু  খেলা  না সব প্রশিক্ষণ তৈরি হবে শ্রম সাধনা  প্রেম দিয়ে ।

চোখের অশ্রুর বিসর্জন হয়ে
           ধর্ম কর্ম  সন্তানে মধ্যে থাকে
          নিবেদিত প্রাণ ।
   

         দিনে রাতে ভেবেছিলাম
        নিজেরে আত্মত্যাগের মহিমায় বিফলে যাবে না বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনার মান ।
         কেবল মিছে  কাজ না করে  নিজেকে চাবুক করে  বানাবো আশীর্বাদ দিয়েযাও





প্রবন্ধ
সাহিত্য আলোচনা ও তার গুরুত্ব
  -  অগ্নিমিত্র

  সাহিত্যের অঙ্গনে আলোচনা হতে পারে গল্প, কবিতা নিয়ে, প্রবন্ধ নিয়ে, নাটক নিয়ে । কাব্যনাট্য ও নাট্যকাব্য কী, তা নিয়ে পর্যালোচনা হতে পারে । সাহিত্যের ইতিহাস, তার রূপরেখা, এমনকি আধুনিক সময় ও সাহিত্যিকদের নানা সমস্যা, আর্থিক টানাপোড়েন  ইত্যাদি বিষয়েও কথা হতেই পারে । বাংলা সাহিত্য একটি প্রবহমান নদীর ধারার মতো। আলোচনার মাধ্যমে সেই নদীতে নতুন স্রোত আসে; নতুন দিশা পান লেখকেরা। তাই প্রতি বইমেলা বা বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাহিত্যিকরা আলোচনা করেন নিজেদের মধ্যে । আগে কোন সাহিত্যিকের বাড়ি বা মেসে বা রেস্তরাঁয় এরকম আলোচনা হতো । কফি হাউস ও কুমার্স ক্যান্টিন এরকম আলোচনার জন্য সুবিখ্যাত । তারও আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে এরকম আলোচনা হতো ' খামখেয়ালি সভা' নামে ; দিকপাল সাহিত্যিকরা সাহিত্য ও তার ধারা এবং সমসাময়িক ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা করতেন, নতুন লেখার রসদ পেতেন। মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনার গজেন্দ্রকুমার মিত্রের বাসায় এরকম আলোচনা হতো । যারা উঠতি লেখক বা লেখক হতে চান, তাঁরাও এই রকম আলোচনায় উপকৃত হতেন ও আজও হন ।
  দুঃখের বিষয়, আজকাল এরকম আলোচনা তেমন হয়না। ফলে সাহিত্যও তার গতি হারাচ্ছে । তবে অনলাইন মাধ্যমে আলোচনা করা যেতেই পারে। তাতে উপকৃত হবে বাংলা সাহিত্য ও তার অগুনতি পাঠক। তবে একটা কথা, সাহিত্যের সভায়
রাজনীতি নিয়ে আলোচনা না হওয়াই ভালো। যদিও সব কিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাও রাজনীতি ও সাহিত্য পৃথক থাকা উচিত বলে আমার মনে হয় ।।





হ্যান্ড অফ গড
   অঞ্জলি দে নন্দী, মম

মারাদোনা আছেন মারাদোনাতেই।
আঁখির কান্না-রোনাতেই...
অমৃতের সন্তানের মৃত্যু নেই।
তিনি আছেন চির অমরত্বতেই।
তাঁর জার্সী ফুটবল প্রেমীর আরশি।
হ্যান্ড অফ গড।
ফুটবলের লর্ড.....





               ছোঁয়া
         হামিদুল ইসলাম
            

পাপের প্রায়শ্চিত্ত বহন করে চলেছি
কতো যুগ
মাথার উপর সূর্য সাক্ষী
নৈঋতে ঘোর অকাল বোধন
ধীরে ধীরে পেরিয়ে যাই সবুজ মাঠ বন্দর ধানসিঁড়ি ।।

অসম্ভব সময় পেরিয়ে আসি
যুদ্ধ দিনরাত
সে যুদ্ধে জীবন জড়িয়ে পড়ে
বেছে নেয় বিভৎস আলো আঁধারি পথ
কাঞ্চনকন‍্যার পিঠ কুঁকড়ে যায় শত অত‍্যাচারের আঘাতে  ।।

পরের জন‍্যে টেনে আনি অশান্তি
পথকে চিনি রোজ
তুমি বন্ধু বিদায় নিলে পড়ে থাকে রোদ
ভগ্নদ্বারে এসে দাঁড়াই
নির্ঘুম রাত পেরিয়ে যায় অষ্টাদশীর বুকের উত্তাপে  ।।

তবু বৃথাগঞ্জ দশাননে
সূর্য ওঠে প্রতিদিন ভোরে
নৈমিত্তিকতার ছায়া ফেলে একফালি মেঘ
হারিয়ে যাই কোনো এক দূর দেশে
যেখানে মায়ার জগতের ছোঁয়া বিন্দুমাত্র নেই  ।।





জুম্মা মসজিদ
      বদরুদ্দোজা শেখু


পুরনো শহরটায়
কারফিউ লেগে আছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার
ইতস্ততঃ কানাঘুষো উত্তেজনা আর
আশঙ্কার জীবন্ত সমাধি যেন ক'দিন থেকেই
অন্তরীণ জন-জীবনের আর্তনাদ
ইট পাথর কংক্রীট আর দেয়ালের
দূরূহ আড়ালে , ইচ্ছা ছিল
ঈদের নামাজ পড়বো ঐতিহাসিক ওই
জুম্মা মসজিদে অন্ততঃ আত্মতুষ্টির
আনন্দে ,একটি বার দুর্লভ সুযোগ পাওয়ায়  ।
কিন্তু হলো না। পরিস্থিতি প্রতিকূল । অবশ্য
দিল্লীর অন্যতম দ্রস্টব্য বলেও কিছু গুরুত্ত্ব আছে ওখানে  যাওয়ার ,
ধর্মাধর্ম রাজনীতি কূটঘাত
ইত্যাদির ঊর্দ্ধে উঠে যদি যাওয়া যায় ।
বিষণ্ণ আমার মন অঘ্রানের
প্রতীক্ষিত পাকা ধান গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কাটতে না-পারা
কৃষকের মতো অসহায়, উপেক্ষিত ।
সবুরে মেওয়া ফলার কোনো ঐশ্বরিক
ইঙ্গিতের  আশায় মৌন হ'য়ে দিনকাল গুণে যাওয়া ছাড়া
অন্য গতি নাই , তাই যে-কোনো জামাতে
যথারীতি ঈদ পার ক'রেই দিলাম ।

দু'টো মাস কেটে' গেছে কবে ।
কারফিউ উঠে গেছে , ( যদিও সদাই সম্ভাবনা নতুন দাঙ্গার ),
সুযোগ হয়নি জুম্মা মসজিদে যাওয়ার । শেষ দিনে কোনোক্রমে
হন্তদন্ত হ'য়ে সময়ের দাক্ষিণ্য পাওয়ার অনুমানে  অকস্মাৎ
সেখানে গিয়েই তার  একটি ফটক খোলা পেয়ে দ্রূত
অন্দরে গেলাম । মৌন সংক্ষিপ্ত নামাজে
শুকরিয়া জ্ঞাপন করার পর শ্বেতপাথরের
মুঘল কীর্তির বিশাল মহিমা ফিরে ফিরে
দেখতে দেখতে আবিষ্ট নয়নে তুষ্ট বাইরে এলাম । তবু
খচখচে আড়ষ্টতায়
মন ছেয়ে আছে শুধু শোকাকুল
কালো বস্ত্র -আবৃত গম্বুজ
প্রতিবাদী বিষণ্ণ গম্বুজ ।





ওদের দেশ
  আব্দুল রাহাজ

একটা দেশ খুব বেশি বড় না দেশটির বেশিরভাগ অংশ সবুজের সমাদৃত এক আলাদা জগত নিয়ে এক আলাদা পরিবেশ নিয়ে এক আলাদা জীব বৈচিত্র্য নিয়ে পরিপূর্ণ হয়েছে এই দেশ। দেশটির মধ্য দিয়ে চলে গেছে শখা নদী দেশটির বেশিরভাগ মানুষ প্রান্তিক দেশটির উত্তরভাগ এ ব্যাপক বনাঞ্চল লক্ষ্য করা যায় এই বনাঞ্চলের উপরই ওই দেশের অর্থনীতি ও শখা নদীর উপর ভর করে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়। ওই দেশের একটি জনপদ ছিল  জনপদটি দেশের একেবারে শেষে সেখানে বসবাস করত ভরত নামে একটি ছেলে তার পরিবার ছিল না বাবা-মা সেই কোনকালে প্রাণ হারিয়েছে কোন এক দুর্ঘটনায় একা একা একটা বনের মধ্যে বসবাস করে তাদের দেশ নিয়ে সে খুব কৌতুহলী বনের জীব জন্তুর এর সঙ্গে তার ভালই বন্ধুত্ব হয়েছে ছোট থেকে ওদের দেশে ওর কাছে ছিল প্রাণ ছোটবেলায় ও কারোর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেনি‌ প্রকৃতির কাছ থেকেই শিক্ষা পেয়েছে প্রতি পদে পদে জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে । ও ওই বনের মধ্যে থেকে দেখতে পায় তাদের দেশের শোভা মনোরম দৃশ্য। শীতের দিনে ওই বন থেকে বেরিয়ে পড়ে আশেপাশের মানুষদের সাহায্য করে সব মিলিয়ে দেশের প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে বেশ ভাবেন ভরত সেও বনের জীব জন্তুদের নিয়ে সেই দেশে খুব ভালো ভাবে বসবাস করে তাই ওর কাছে ওর দেশ এক মনের মধ্যে প্রাণ এক মনের মনিকোঠায় কল্পিত এক  স্বর্গরাজ্য যা আজীবন আঁকড়ে ধরে আছে ও থাকবে তাদের দেশের প্রকৃতির মায়ের কোলে।





দায়ভাগ
মহীতোষ গায়েন

যদি ভাবো দায়ভাগ,তাহলে নেই...
যদি ভাবো ব‍্যবহার করে নিয়ে দাঁড়ি
টানবে,তাহলেও নেই,যদি ভাবো এই
সময়ের তুমি নিয়ন্ত্রক,মেঘ জমে বাজ।

আকাশের নীল রঙ পাল্টে দিয়ে যদি
ভাবো কালোমেঘে ছেয়ে গেছে দিক,
তাহলে বৃষ্টিরাও বুঝে যাবে,হাওয়ারা
ছুটে এসে তুলে নেবে শিকড় বাকড়।

সময়ের গতি মেপেই অবশেষে নিরালা
নিঝুম ঝরে যাবে ফল,ফুল,পাতা,উপদ্রুত
শিরায় উপশিরায় বিদ্যুৎ চমকাবে,শেষে
নটরাজের নৃত্য শুরু হলে,থামানোই দায়।







বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 26/11/2020, বৃহস্পতিবার
               সময় :- রাত 7 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

এই ঠান্ডায় খেয়ে  মজা
          চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

গরমের  দিনে খেয়ে মজা  নেই,
যতটা  ঠান্ডার দিনে  আছে,
খেতে  বসে  বার বার
মনে  পড়ে  তোমাকেই,
তুমি  আসবে  আমাদের
পাহাড়ের  কাছে৷
পিঠেপুলি,  খেজুর  গুড়ের  পায়েস,
সমান  ভালো  লাগে,
আমার  প্রিয়তমা  কণিকা  এই  কথা,
বুঝে  যায়  সবার  আগে৷

আমরা  হরেক  রকম  খাবার  কে—না ভালোবাসি?
অফিস  থেকে  হাত  মুখ  ধুয়ে  আগে  খেতে  বসি৷
বয়স  হয়েছে  বলে  সুরা পান  করতে  চায়  না  যে  মন,
খুব  সাবধানে  থাকতে  হয়,
সময়টা  যে একেবারেই  অন্য  রকম৷





শীত পড়েছে তাই
অঞ্জলি দে নন্দী,মম

শীত পড়েছে, শীত পড়েছে, শীত পড়েছে ভাই।
ঠান্ডা জলে স্নান করি না তাই।
ভর দুপুরে রোদে বসে চুল শুকাই।
ভরসা কেবল সূর্যি মামাই।
আর একই সঙ্গে কমলা লেবুও খুব খাই।
এ তো মর্তের সুধাই।
আর মটরের খোসা ছাড়াই।
সন্ধ্যের সময় ঠাম্মার সাথে পিঠে বানাই।
তখন দাদু মোবাইল ফোনে শোনে সানাই।
আর দাদুর পায়ে তেল মালিশ করে বালক কানাই।
মারা গেছে দুজনেই, ওর মা বাবাই।
ওর বাবা ছিল দাদুর দূর সম্পর্কের জামাই।
এখন তাই কানাই-এর বাড়ী আমাদের বাসাই।
রাতের বেলায় লেপের তলায় মুখ লুকাই।
মায়ের গায়ে গা লাগিয়ে ঘুমাই।
মা তো যেন দেবী শ্রী উমাই।
এমন সুখ আর দুনিয়ায় নাই।
সবার সাথে গরম দেশে বেড়াতেও যাই।
তখন তো ঘাম ঝরাই।
ঠান্ডা জলে সাঁতার কাটাও চাই।
আহা বড় তৃপ্তি পাই।





আলু
মাথুর দাস

আলু নিয়ে আলুবাজি
কার কী যে কারসাজি,
বোঝে না কি পাবলিক !

অকারণে    দাম   বাড়ে
ক্রেতা  ত্রাহি ডাক ছাড়ে,
ঝাড়ে বাড়ে  ফড়ে ঠিক ।

চড় চড়  দামে  ওই
নড়ে চড়ে বসে কই,
যারা ঠিক  নড়বার ?

পঞ্চাশ   ছুঁই   ছুঁই
হিমঘরে আলু তুই,
নেই কিছু করবার ?
         *****




বিপ্লব গোস্বামী এর চারটি অনুকবিতা

১|
রাজনীতি

রাজনীতিএক ভীষণ ব‍্যাধি
লক্ষণ বুঝা শক্ত ।
নেতা হলে সবার দেহে জন্মে
লোভের রক্ত।

২|
ঈশান বাংলার কৃষাণ

ঈশান বাংলার কৃষাণ আমরা মাঠে ফলাই ধান
কৃষাণ বলেই ভাগ‍্যে জোটে শত অপমান।
সবার মুখে অন্ন দিতে আমরা ঝরাই ঘাম
ভদ্র লোকের সভ‍্য যুগে নেইতো মোদের দাম !

৩|
বিচিত্র সমাজ

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মাঝে বিচিত্র শাসন
রাস্তায় একা লক্ষ্মী পেলে করতে চায় ধর্ষণ !
বিয়ের লক্ষ্মী কালো হলে চায় মোটা পণ
গর্ভে যদি লক্ষ্মী আসে ভ্রুণে করে নিধন !

৪|
আধুনিক নারী

অর্ধ নগ্ন নেটে মগ্ন পর ভাষায় কথন
নাইট ক্লাবে মদ‍্য পাণ পুরুষের মতন।
আধুনিক যুগের আগুয়ান নারীর এইতো চলার কায়দা
সেই সুজুগে নর পিশাচ সব লোটছে তাদের ফায়দা।





ওগো প্রিয়তমা
          অনাদি মুখার্জি

কত দিনরাত ভেবেছি তোমায় ওগো প্রিয়তমা,
কবিতা তে লিখে রাখলাম মোর  হৃদয়ে সব কথা !
যদি পারো পড়ে নিও আমার লেখা ওগো চিরসখা,
ভাবেনি গো তুমি হবে মোর জীবনের প্রথম প্রেমিকা!
বর্ণিল সাজ পোষাক অলঙ্কার রূপের বাহার তোমার,
সরু তোমার কটি দেশ উন্নত নাক আর চুলের বাহার !
টানাটানা নয়ন তোমার রেশমের মতোন নরম ঠৌট,
এই ভেবে আমি হারিয়ে যায় অতল গভীর ভেতর!
বুকের ভেতর টা জ্বলে উঠে ক্ষণিকের আলো,
হয়তো কোনো একদিন প্রিয়া আমাকে বাসবে ভালো!
লাল চেরি শাড়ি পরে যখোন এসো আমার কাছে,
আমার ষোড়শ যৌবন ছটপট মনে শিহরণ জাগে !
তাই বারে বারে বলছি তোমায় ওগো প্রিয়তমা,
আমার বুকের মধ্যেই থাকো সারাজীবন মোর চিরসখা !




মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১। শিরোনাম- ফুটবলের যাদুকর

ফুটবলের
তুমি যাদুকর
তুমি. ফুটবলের রাজপুত্র
ফুটবল শিখেছিল  তোমার কাছে
একদম নতুন একটা নাচের ছন্দ
যে ছন্দে মেতেছিল একদিন সারা পৃথিবী।

দিয়েগো মারাদোনা ছিলে ফুটবল জগতের নবী
ফুটবলকে ভালোবেসে কাটিয়েছিলে সব ধন্দ
শতাব্দীর সেরা গোলে আছে
তোমার নিজস্ব সূত্র
ঈশ্বরের বর
গর্বের।

২। শিরোনাম-তোমাকে ভালোবেসেই

মারাদোনা
তুমি বলো
একদিন তোমাকে দেখেই
পৃথিবীর দূরতম দেশ আর্জেন্টিনাকে
আপামর বাঙালি প্রিয় ফুটবলকে ভালোবাসা
তোমার ছন্দেই ফুটবলে জাগে নতুন আশা।

ফুটবল তোমার পায়ে এনেছিল নতুন ভাষা
তোমার নামেই মেসিতে জাগে আশা
তোমার বিদায় নাড়ায় অস্তিত্বকে
সবুজ মাঠ রেখেই
বন্ধ হলো
আনাগোনা।




শীতের সকাল
    আব্দুল রাহাজ

কুয়াশাময় শীতের সকাল ফুটে ওঠে
এখন অনন্য রূপে।
সূর্যের উজ্জ্বল দীপ্ত রশ্মিতে বৈচিত্র্য ফুটে ওঠে মায়াবী শীতের সকাল‌।
কেউ ছোটে নিজের কাজে ঠান্ডায় হুহু করতে করতে
আবার কেউ উলের  পোশাক পড়ে যায় পড়তে
কেউ আবার ছুটির দিনে ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে চলে যায় বনভোজনের আয়োজনে।
ছোট‌ ছোট ছেলেমেয়েরা মজা করে আগুনের তাপ নিতে যায় তেপান্তরের মাঠে।
প্রকৃতি ফুটে ওঠে তার অপরূপ সৌন্দর্যের
একরূপে লাবণ্যে সবার সামনে মেলে ধরে
ও যে শীতের সকাল।






                আস্ফালন
           হামিদুল ইসলাম
              

জীবনের জন‍্যে জীবন গড়ি
ভালোবাসার জন‍্যে
স্বপ্নের তাজমহল
তুমি আজ কতো কাছে তবু কতোদূর
তোমার ভালোবাসায় প্রতিদিন ভূগোলের পাঠ নিই  ।।

ভূগোলের শরীর গলদঘর্ম
নুন জলে ভেজা
আমি প্রতিদিন সংগ্রামে মাথা ঠুকি
ভেঙে ফেলি একবিংশ শতাব্দীর দোড়গোড়া
রাঙা চোখে তাকায় পুঁজিবাদ  ।।

নিরন্তর কাস্তে চলে মাঠে
হাতুড়ি কারখানায়
বিপ্লবীরা দখল করে আরো একটি দেশ
আজ ধর্মঘট
শত্রু মিত্রের ময়দানে দেখা হবে আজ  ।।

আমরা অথৈ জলের মাছ
মনের গভীরে স্বপ্ন দেখি বাঁচার
রাম সীতা প্রতিদিন বনবাসে যায়
খোঁজ রাখে না জনতা
কেবল ধানসিঁড়ি ভেঙে পড়ে অনর্থক আস্ফালনে  ।।




দুই ফুলে দাঙ্গার  শহর 
   বদরুদ্দোজা শেখু


শহরের সমারোহ দেখতে দেখতে  ফুল এলো চোখে
ফুলের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হ'য়ে যেতে যেতে
ফুলের মতোই এলো শহরিণী রমণীর মুখ
চোখের সুখের সাথে যাতে বাড়ে বুকের অসুখ ।

দু'য়ের রহস্য আমি পাশাপাশি দাঁড় করালাম
সবুজের অন্তরাল ছেয়ে থাকা ফুলের অনল
নিসর্গের অভিধানে যৌবনের প্রতীকী সম্ভার
মানুষের বংশ-পিপাসার সাথী ষোড়শীরা সব
অন্তরঙ্গ কামনার ফুটে-ওঠা জৈবনিক ফুল
আমার ধূসর চোখে মশগুল ভালবাসার বিকম্প্র প্রবাহ ।

রাশি রাশি পথে-দেখা ফুল আর পথে-দেখা নারী
আমাকে নাড়ায় ভারী , হঠকারী দু'য়েরই প্রকোপ ,
একদল পবিত্র আবেশে মন ভ'রে দ্যায় আর
অন্য দল অশমিত আকাঙ্ক্ষার আগুন জ্বালায়
মনে, যেন এই মন উভয়ের এক অঘোষিত
যুদ্ধক্ষেত্র , পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী নিসর্গ নিয়মে।

রক্তমাংসের ফুল-ই লাস্যময়ী উলঙ্গ রমণী
বড়ো বেশী জিতে যায় আপাততঃ বয়সের দোষে ,
বলি হয় ফুলেরা ভালবাসার বাঁধানো তোড়ায় ,
অবশেষে জৈবনিক যবনিকা নেমে এলে পরে
করুণায় কবরের ঝোপে হাসে বিজয়িনী ফুল ।
অকস্মাৎ রক্তাক্ত হৃদয় দেখি দৃশ্য পরস্পর
সুন্দরের অভিজ্ঞানে উভয়ের দাঙ্গার শহর ।






               বিভাগ ---- প্রবন্ধ
        জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিকথা
         অধ্যাপক সৌম্য ঘোষ
     

          "জয় সর্বগত দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে"।

জগদ্ধাত্রী শব্দের আভিধানিক অর্থ "জগত+ধাত্রী।
জগতের ( ত্রিভুবন) ধাত্রী ( ধারণকর্ত্রী) ।"
ব্যপ্ত অর্থে দুর্গা,কালী এবংঅন্যান্য শক্তিদেবীগণও
জগদ্ধাত্রী। তিনি জগতের পালিকা শক্তি । তিনি দেবীদুর্গার আরেকটি রূপ । তাই জগদ্ধাত্রীর প্রণাম মন্ত্র তাঁকে " দুর্গা" বলে স্তুতি করা হয় । উপনিষদের ইনি হলেন উমা হৈমবতী । বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরান গ্রন্থে এর উল্লেখ আছে । জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষতঃ বঙ্গদেশে প্রচলিত । বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর , গুপ্তিপাড়া ও নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত।  কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।  হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিক দেবী কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রী ।
                 স্বামী প্রমেয়ানন্দের মতে ,  " ধৃতিরূপিনী মহাশক্তি জগদ্ধাত্রী । সগুণ ব্রহ্মের সৃষ্টি , স্থিতি ও বিনাশ তিনগুণের যুগপৎ প্রকাশ যেমন কালীরূপের বৈশিষ্ট্য,  তাঁর ধরণী ও পোষনী গুণের যুগপৎ প্রকাশও জগদ্ধাত্রী রূপের বৈশিষ্ট্য । ...... ‌
"ধা"  ধাতুর অর্থ ধারণ করা। ভগবতী নিখিল বিশ্বকে বক্ষে ধারণ করে পরিপালন করেন বলে মুনিগণ কর্তৃক তিনি ত্রৈলোক্যজননী নামে অভিহিত । ........
সতত পরিবর্তনশীল জগত সেই মহা শক্তি দ্বারা বিবৃত .... ....
তিনি নিত্যা , শাশ্বতী ও অপরিবর্তনীয়া । দেবী জগদ্ধাত্রীই সেই ধৃতিরূপিনী মহাশক্তি ।"

                     দেবী জগদ্ধাত্রী সিংহবাহিনী, কিন্তু দশভূজা নন, চতুর্ভূজা। বিবিধ আভরণভূষিতা , অরুণকিরণবৎ  বর্ণযুক্তা এবং সর্পরূপ যজ্ঞোপবীতধারিণী । তাঁর বাম দিকে দুই হাতে থাকে শঙ্খ ও ধনু  এবং ডান দিকে দুই হাতে থাকেই চক্র ও পঞ্চবান। রক্তবর্ণের বস্ত্র তাঁর পরিধানে । তিনি সত্ত্বগুণের প্রতীক , তাই প্রথম সূর্যের মতো তাঁর গায়ের রং। অর্থাৎ কমলা। বাহন সিংহ করীন্দ্রাসুর অর্থাৎ হস্তীরূপী অসুরের পৃষ্ঠে দণ্ডায়মান। জগদ্ধাত্রী পূজা তান্ত্রিক পূজা। দুটি প্রথায় এই পূজা হয়ে থাকে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী --------  এই তিনদিন জগদ্ধাত্রী পূজা হয়ে থাকে । কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পূজার পর কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। দুর্গাপূজার  মত  জগদ্ধাত্রী পূজাতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্য নামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলী ও প্রণাম মন্ত্রসহ পূজার অনেক মন্ত্র দুর্গাপূজার অনুরূপ।


বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 25/11/2020, বুধবার
               সময় :- রাত 8 টা. 20 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

প্রবন্ধ
আদিবাসী মানুষ ও সাহিত্য
      অগ্নিমিত্র

  বাংলা আদিবাসী ও উপজাতির মানুষেরা তাদের নিজস্ব ভাষাতেই সাহিত্য রচনা করেন। আবার অনেক সময়ে তাঁরা বাংলা ভাষাতেও গল্প বা কবিতা লেখেন । তাই মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে তা বাংলা সাহিত্যের অন্তর্গত । যদিও সেই প্রান্তিক মানুষদের সাহিত্যের একটা আলাদা জগতও আছে। এবং আমরা সেই জগতে শামিল হবার তেমন চেষ্টা করি নি।
  বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর  ও পুরুলিয়ার আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষ মূলতঃ সাঁওতালি ভাষায় লেখেন। সেই ভাষার আলাদা একটা লিপি আছে, অলচিকি । কেউ কেউ হয়তো বাংলায় লেখেন। তাঁদের লেখায় সেই সব এলাকার জীবনযাত্রা, সমাজ ব্যবস্থা, রীতিনীতি উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে । আবার উত্তরবঙ্গের উপজাতীয় মানুষেরা বাংলাতেই লেখেন। কারণ তাঁদের আলাদা Script বা লিপি নেই।
  এই সব লেখা নিয়ে আমরা তেমন আলোচনা করি না। যেন আমরা তাদের বাংলা সাহিত্য বলে মনেই করি না। অথচ অপেক সাহিত্যিকরা এই অঞ্চলে ঘুরে বা থেকে এদের নিয়ে দারুণ সব লেখা লিখে গিয়েছেন । আরেকটু যদি এঁদের লেখা প্রচারিত হতো তবে আমরা বুঝতে  পারতাম, এই লেখাগুলিতে প্রকৃতি, মানুষ ও তাদের জীবন কীভাবে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে !
  আগামী দিনে এই চর্চা আরো বেশি করে হবে , আশা রাখি ।।




বিপ্লব গোস্বামী এর চারটি অনুকবিতা

১|
নাইবা হলে

বিপ্লব গোস্বামী

নাইবা হলে জীবন সঙ্গী
না হল সহবাস !
তবু কল্পনাতে তোমার আমার
নিত‍্য বসবাস।

২|
কেউ জানেনা

বিপ্লব গোস্বামী

নীল আকাশের চাঁদ আর
নীল সাগরের ঢেউ।
জানে শুধু মনের ব‍্যথা
আর জানেনা কেউ।

৩|
তোমায় ভালোবাসি

বিপ্লব গোস্বামী

তোমায় ভালোবাসার অপরাধে
হয় যদিগো ফাঁসি !
মরার আগে বলব তবু
তোমায় ভালোবাসি।

৪|
তুমি আজ আর

বিপ্লব গোস্বামী

তুমি আজ আর নেই আমার
মনের একলা ঘরে !
আছে শুধু হাজার স্মৃতি
অমর হয়ে পড়ে।




মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১।খনন

নিজেই
খুঁড়ি নিজেকে
হাতড়ে হাতড়ে আনি
আমার ভালো থাকার উপাদান
জগৎজোড়া ছড়িয়ে যে আনন্দের নিদান
আমার অন্দরেই রাখা দেখি তার বিধান।

মেকি কোলাহলে কোথাও খুঁজে পাইনা প্রাণ
এখন জেনেছি আনন্দ পঞ্ছভুতের দান
তার ভালোবাসাতেই বাড়ে মান
তাই তাকেই মানি
মাতিনা অনাবশ্যক
কিছুতেই।


২। শিরোনাম- এসো নারী এগিয়ে

এসো
নারী এগিয়ে
এবার নিজেকে ভালোবাসি
নিজের জন্য খরচ সময়
সমাজের তকমা উঠিয়ে দাঁড়াই আয়নায়
নিজেকে সাজাই নিভৃতে একেবারে নিজস্ব কায়দায়।।

নিজের অধিকার নিজেই করতে হবে আদায়
নষ্ট করবোনা জীবন বাঁধা বায়নায়
নারীর চাই নিজের পরিচয়
নারী নয় বানভাসি
নিজেকে গুছিয়ে​
বসো।





আমি আজও ভালোবাসি
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

ভোরের  সূর্য,রূপালী চাঁদ আজও  আমি ভালোবাসি,
নদী ও নারীকে সমান ভালো লাগে,
আর স্বর্গীয় আমার  মায়ের  হাসি ৷

প্রিয়তমা,পুত্র,কন্যাও আছে,সবার  সাথে  থাকি,
ভালোবাসা  দিয়ে  নিজের  মতো  করে
প্রতিদিন প্রেমের  আলপনা  আঁকি৷
এই  পৃথিবী  কত সুন্দর  মাঝে  মাঝে  তাই  দেখি৷





আমি হতে চাই মুক্ত বিহঈ
        অনাদি মুখার্জি

আমি হতে চাই এক মুক্ত বিহঈ,
উড়ে যাবো অনেক দূরে  দিক থেকে দিগন্ত !
ডানা মেলে খুঁশি আমেজ নিয়ে উড়বো আমি দ‍্যুলোকে,
মেঘদের সাথে মিশে যাবে আমার এই মন যে !
আমি আর চাই এই মানুষের দলে থাকে ,
তাই আকাশে তে উড়বো আমি ভেসে!
যেখানে নেই কোনো মায়া মমতা ও পৃথিল ভাষা ,
সমাজের নারীদের নেই কোন  স্বাধীনতা !
সমাজের মধ্যেই চলছে শুধু লিলাখেলা ,
মানুষে মানুষে লড়াই মনুষ্যত্ব আজ শূন্যের কোঠায় !
যেখানে নেই কোন বিশ্বাস নেই একতা ,
পাখিদের মধ্যেই আছে দেখেছি কত ভালোবাসা!
উপরে নেই কোন লাল নিল রঙ,
নেই কোন ভেদাভেদ নেই কোন ডং !
তাই আমি উড়ে যায় ঐ দিগন্তে,
থাকতে চাই আমি মুক্ত বিহঈ!





এসো নতুন স্বদেশ গড়ি..
     শুভ্রাংশু কুম্ভকার

জমানো ব‍্যথারা ভিড় করে করেছে শীর্ণ কলম শিসে,
একরাশ বোবা যন্ত্রণা সয়েও ম্লান মুখ তবু হাসে।
কালি শেষ তাই কলম ঘষেও পাইনা শব্দে ছবি,
প্রতিবাদ হীন নীরবতা সয়ে মূক হয়ে গেছে কবি।
কলমের কালি বাঁচার রসদ,পেটের জোগাড় ভাত,
স্তব্ধ জীবন, থমকে কলম,শরীরে ধরেছে বাত।
দোয়াতও নেই, রিফিল অমিল শব্দেরা উড়ে যায়,
চলে গেলে দিন প্রতিবাদ হীন ফিরে পাওয়া বড় দায়।

যতই নরম সভ‍্য হবে, অধিকারও তত খর্ব,
হারিয়ে তোমায়, অট্টহাস‍্যে জানাবে পেয়েছি স্বর্গ।
রুখে দেবো সব,ঘুরে দাঁড়াবো,কিন্তু শক্তি অভাবে ভুগি,
লোভ লালসার ভাইরাসে সব অনৈক্য রোগে রুগী।
পাঁচে দশে মিলি কোটি কোটি হব সময়ের পথ ধরে,
মিলিত প্রয়াসে প্রতিরোধে তুলি নতুন স্বদেশ গড়ে।





        বালির  বাঁধ
        পিনাকী  মুখার্জী
     
         সৃষ্টির বিস্ফোরণ মুহূর্ত থেকেই
            ওরা  প্রশ্ন  হয়ে জেগে !!
        কখনো  ধুমকেতু কখনো উল্কা
         হয়ে ,  ছুটে আসে তীরবেগে !!

           কখনো  যুক্তিরা  জোট বেঁধে ,
          ভাবনার আকাশ করে মেঘলা !!
              লক্ষ সূর্যের আলো , তবু
          অন্ধকার সরণীতেই সৃষ্টির পথচলা !!

              যত  গ্রহ  তারা  আকাশে ,
             সাগর  তটে  বালির  প্রাচীর !!
            ক্ষণিক আশার  ঝলক ,  উন্মত্ত
           একটা  ঢেউ পেরোলেই  আঁধার !!

                 যে  আঁধারে ডুবে আছে
             সৃষ্টি , সেখানে আলো কতখানি  !!
                     সদ্ না অসদ্ ,  সত্যি
          আলো , নাকি উল্টোদিকের হাতছানি !!




সকাল আমার বসে ভাবে...... বাড়ি চিনতে আসবে কবে..... জন্মদিনে মনরাজকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলী...... কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মরণে........

               আবেগখেকো
                    দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়

ভিতর ঘরে পাগল নাচে
দ্রিমি দ্রিমি সুর বাজে
মহুয়ার মাতালপণায়
শব্দদের গায় আবেশ গড়ায়

ন্যাংটো কলম সুর তোলে
পাঞ্জাবির পকেট গলে
পড়ে আছে কবিতার ঝুটি
চলো সবে জীবন লুটি

তুমি থাকো মাটির ঘ্রাণে
মানুষী প্রেমে এবং প্রাণে
বুকের আগুন জ্বালিয়ে বসে
জীবন সিক্ত তোমার রসে

                   লহ প্রণাম.........



আমার বাংলা
      আব্দুল রাহাজ

হে আমার বাংলা
তুমি আমার জন্মভূমি
বাংলার মাটি
বাংলার জল বাংলার ফুল বাংলার বায়ু সবই যেন আজীবন চিরন্তন।
তোমার প্রকৃতি দেখে অন্য দেশান্তরের মানুষ পায় মাধুর্য চোখ জুড়ে যায় তোমার অপরূপ শোভা দেখে তুমি সেই আমার বাংলা।
তোমার মাটিতে জন্ম নিয়েছে বিশ্ব জয় করা ব্যক্তিবর্গ তুমি সেই আমার বাংলা।
বাংলার সবুজে ভরা দৃশ্য পৃথিবীর আর কোনো প্রান্ত নেই তোমায় পৃথিবী বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বারে বারে মনে রাখে তাদের মনিকোঠায় ধরে রাখে আজীবন স্মৃতির পাতায় তুমি সেই আমার বাংলা।





                সত‍্যিই তাই
            হামিদুল ইসলাম
               

এখান থেকেই জীবন শুরু
কেটে যায় শৈশব
কৈশোর
যৌবন মানে কঠিন আবর্ত
এখন মানুষের জটিল আবর্তে বাস  ।।

কালাপাহাড় মস্ত পুরুষকার
তার বিরুদ্ধ শক্তি পৃথিবী বিরল
তবু তাকে মানতে হয়েছে
হার মানা হার
হিসেবে গরমিল এখন  ।।

মাঝ বয়সী যৌবন
দোর্দণ্ড সংগ্রামী
চিরকাল যুদ্ধ করে পরের বিরুদ্ধে
জঙগমে মিশেছে সাগর
তবু নির্মল প্রার্থনা বারবার  ।।

ইতিহাস বদলে গেছে
বদলে গেছে পৌরাণিকতার মহতী আবেগ
অযোধ‍্যা আছে ইতিহাসে
রামমের জন্ম সেখানেই
রাম সত‍্য, রাম নাম সত‍্য, সত‍্য রামের জন্মভূমি !!




  স্বরলিপি
          সৌম্য ঘোষ

ক্ষরিত স্বপ্নের ভেতর
তোমার অনুচ্চারিত শব্দের ঘ্রাণ পাই,
মোহ ধুয়ে-মুছে তোমাকে পেলাম
অনুভবে, অবিচ্ছিন্ন অনুরাগে।
মনে হয় তোমাকে ফিরে পাবো
কোন এক রাত-ভাঙ্গা তুমুল জ্যোৎস্নায়,
চাঁদের আলপনায়, দীঘির ঢেউয়ে

এক নির্গুণ বর্ণরঙ আলোদ্বীপে
আমার অগোছালো অক্ষরমালা
তোমার পায়ের কাছে এসে
আশ্চর্য স্বরলিপি হয়ে ওঠে  ।।







নারী
     নরেন্দ্র নাথ নস্কর

তুমি  এখনও অচেনা রয়ে গেলে।
এতদিন ধরে তোমাকে চিনি।
তবুও তোমার অন্তরের খুব কমই  জানি।

তোমার ভালবাসা, তোমার স্নেহ,
তোমার অনুভুতি, তোমার শাসন, তোমার বিচিত্র ভূমিকা এখনো প্রকৃতির মত রহস্যময়ী হয়ে আছে।

সংসার মঞ্চে তোমার এত রোল,  বুঝতে পারিনা কোন ভুমিকায় তোমার আসল পরিচয়।

তুমি না থেকেও আছ। আবার কখনও থেকেও অবগুনঠনে থাক। চেনা যায় না।

প্রকৃতির মত তোমার তোমার পরিচয়েরও বেশিরভাগ অজ্ঞাত।

যুগে যুগে কবি, নাট্যকার, লেখকরা তোমাকে নিয়ে লিখে যাক।
বিজ্ঞানী, সমাজ সংস্কারক ও অনান্যরা তোমার পরিচয় জানতে  সীমাহীন কাল ধরে গবেষণা করে যাক।

শেষে মনে হল, কি হবে বেশি জেনে?
না জেনেই তো বেশ চলছে, চলুক
তোমাকে প্রণাম।




কাটা হাত
        উমর ফারুক

হাতকাটা চিত্কার শুনে কে
কান্নার ভেজা চোখ বন্ধ
ক্লান্তির ঘ্রাণ নাকে ঠোঁট চেপে
কষ্টের শেষ দেখা সন্দেহ।
রাস্তার কিনারে পাথর চাপা
যা দেখা শ্রাদ্ধের খড়ি মাটি
অথৈ সাগর পারে ঘুম ধরে
হাতে পিঠে চড় খায় পরিপাটি ।
গাছে নাচ শর জমে যে জলে
গুটি পোকা বক খায় কিছুক্ষন!
থরে থরে গিট খুলে যায় যার
কেটে গিয়ে মূল হাত শত মন
এক যুগ ভিড়ে যায় হারিয়ে
কাটা দু হাত বাড়ালো হেমন্ত
আকাশের চাঁদ তুই নেমে আয়
এই হাতে রঙ ঢালে বসন্ত ।



We are looking
Anjali nandide,Mom

At lonely new moon night.
In deep darkness,
The stars are too bright.
The sky, endless.
I love it's endlessness.
We are looking to each other now,
From very far.
A star,
Now coming down towards me, very fast.
I wish at this moment,
"Hey almighty!
Gift me ever eternal enjoyment!
In it, i wish to live!"
Just in front of me, it vanishes, at last.
I cannot see it now.
I feel something is on my nighty.
Yes, on it's right-sleeve,
Here is a diamond, star shape.
It is on my dress's tape.
Just near of my right shoulder.
I take it in my palm, now.
I am it's holder.
How nice it is! How! How! How!
In untouchable darkness,
It is very beautiful, yes.
The darkness and I
We are looking it
With unknown sense.
I realize that it is gifted me by the sky.
I put it on my chest.
And say,
"Hey!
The diamond! Can you feel my heart beat?"
Then my sense,
It says, " It has no feeling,
So it can make you the richest."
I think that why it has no feeling?
Then my feeling says,
"It is nothing but a stone.
Though it is gifted as love relation,
Yet it has no feeling.''
Then the darkness says,
It is the  life's most important lesson,
That diamond has no own love, own, own, own."
Then my mind says,
"Why? It's really unknown.''
Then my brain says,
"Now you know it, know!
That love is not in materialistic wealth. No."



মঙ্গলবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 24/11/2020

 উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা 
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন-24/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 24/11/2020, মঙ্গলবার
               সময় :- রাত 7 টা. 50 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


চিন্ময়ী
     সৌম্য ঘোষ

সন্তাপশূণ্য মন্দিরের ঘণ্টাধ্বনির  মতো
রাত্রির অনন্তনীলে বসে আছি একা ....
হৃদয়ের ধ্যানে স্নাত হয় আমার হৈমন্তিক রাত।
দেখি, তোমার কল্যাণী মুখে
শত আলপনায়
জড়িয়ে রয়েছে অনন্ত সুন্দর......
চাঁদজ্যোৎস্নার  জলে
অক্ষর অক্ষর সাজিয়ে লিপিমালায়
তোমাকে চেয়েছি পুণ্যস্নানে,
কখন রোদ্দুর এসে বুনে দিয়েছে
পাতায় পাতায়
ভরা বসন্তের গান  ।।




তারপর....,
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

তারপর  যা  হবার  তাই  হলো,
বিশ্বের  অন্য আর  সব  দেশের  মতো,
আমাদের  দেশেও  করোনা  এলো৷
কত  কিছু  চোখের  সামনে  বদলে  গেল,
রাতারাতি  কেউ  ফুলে  কলাগাছ,
অনেকে  তো  ভয়ে  খাওয়া  ছেড়েছিল  মাছ,
অকালে  কতজন  গেল  চলে  হায়!
স্বজনদের  অকালে চলে  যেতে  দেখে  কার  না  বুক  ভরে  ওঠে  বেদনায়?

ট্রেন, বাস, নৌকা, লঞ্চ,
বিমান,হাট  বাজার বন্ধ  হবার  পর  এখন  সব  খোলা,
কি  আর  করা  যাবে?হংসরা  দিচ্ছে ডিম,থেমে  নেই  মানুষদের  পথ  চলা৷

যুগে  যুগে  কত  অতিমারী,  মহামারী  আসে,
লড়াকু  মানুষ  সব  তবু তো  জীবনকে  ভালোবাসে৷




শীতের ভোরে আমি
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

খেঁজুর গাছে রসের কলস।
ভোরের ঘুমে নই অলস।
সুশীতল সুধা পান করি;
মন প্রাণ ভরি।
আহা কি সুস্বাদু!
গাঁয়ের পান-যাদু।
রোজ ভোরে চোখ খুলেই বাগানে ছুটি।
শুধু এই রসের টানেই তো উঠি।
কলস যত ভরে সারা রাতেই।
যত দিনের আলো ফোটে,
বেলা বাড়ার সাথে সাথে সাথেই
ততই এই রস গেজে ওঠে।
( চন্দবিন্দু হচ্ছে না )
তাই তো শুকতারা সাক্ষী রেখে পান করা।
গাঁয়ের প্রকৃতি শুদ্ধ অমৃতে ভরা।




                প্রত‍্যাশা
          হামিদুল ইসলাম
             

তার পিঠে রক্তের কালো দাগ
খামছে খেয়েছে পিঠ
দাসত্বের শৃঙ্খলে বাঁধা এ জীবন
তবু শিরদাঁড়া মজবুত  ।।

মানুষের জন‍্যে জান কবুল লড়াই
লড়াইয়ের সম্মুখে সে
তাকে চেনে না মানুষ
তবু সে বরাবর নেতৃত্ব দেয় যুদ্ধে  ।।

জীবনের জন‍্যে জীবন
বেঁচে থাকার মানে লড়াই সংগ্রাম
সে সংগ্রামে পৃথিবী জাগর
রাতের আঁধার পেরিয়ে ভোরের সূর্য উঁকি দেয় ময়দানে ।।

মৃত‍্যুর অধ‍্যায় শেষ
মৃতরা ফিরে গেছে পুরোনো বাড়ি
ইতিহাসে ঘোর বিপদ
তবু আছে যুদ্ধের বিপদ আর হানাহানি  ।।

পথে পথে বাসা বাঁধে যাযাবর
সমগ্র আকাশ তার ক‍্যাকটাসে ছাওয়া
দালানের কার্নিসে পাখিরা বাসা বাঁধে
ভুলে যায় না কখনো সংগ্রামের কথা ।।




সে‌ এক ছেলে
আব্দুল রাহাজ

সেদিন ভোরে দেখছিল এক অন্য দেশান্তরের ছেলে
গায়ের মানুষ হা‌ করে সব দেখছিল তার দিকে।
সরেন নরেন ভুলু রা  সবাই তার দিকে দেখছিল হা করে।
সে ছিল বেশ লম্বা মাঝে মাঝে পথ দিয়ে যেতে যেতে সবাই এর কাজ করে দিচ্ছিল যে।
গ্রামের ছেলে মেয়েদের লজেন্স দিয়েছিল হাতে হাতে করে
এইভাবে সেই ছেলেটি দূর আকাশে কোথাও যেন পারি দিল সে
এক নিমেষে সূর্যের আলোয় দিগন্তরের মাঠে মিশে গেল সে।
সে ছিল সে এক ছেলে।




জগদ্ধাত্রী
মহীতোষ গায়েন

তুমি মহাশক্তি জগতের ধাত্রী
দূর করো বিপদ অশুভ রাত্রি,
তুমিই সক্রিয় অসুর বিনাশে-
তোমায় মানুষ তাই ভালোবাসে।

সংকট দূর করো,এনে দাও সুখ
সুসময় ফিরে পাক অসহায় মুখ,
দীনদুঃখী মানুষ ফিরে পাক সব
মহাবিপর্যয়ে তাই ওঠে জনরব।

মানুষ ফিরে পাক সব আশা ভাষা
বাঁচুক গরীব,দুঃখী,পরিযায়ী,চাষা;
জগতের ধাত্রী আনো মুক্তি-আলো
বিপদ মুক্ত করো সবার হোক ভালো।





মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১।শিরোনাম -প্রার্থনা

অনেকদিন
পর আজ
সান্ধ‍্য প্রার্থনায় বসলাম
প্রার্থনার জন্য মন্দিরে আসেনি
যাইনি আমি কোন ক‍্যাথলিক চার্চে
আসন পেতে বসেছি প্রার্থনায় নিজের কাছে।

বহুজনের ভিড়েও মানুষ কেমন করে বাঁচে
মানুষ কেন ছোটে লং মার্চে
নিজের কাছে কোনদিন জানিনি
তাই নিজেই এলাম
ফেলে কাজ
দূরবীন।

২। শিরোনাম-সেই ঘর

দেখি
সেই ঘর
যার খড়কুটো একদিন
সংগ্ৰহ হয়েছিল কাঁটাঝোপে বনে-বাদাড়ে
হাতের যাদুতে আজ হয়েছে বাসযোগ্য
খিদের আগুন নেভাতে এখানে জ্বলে তুলো ।

সেই আগুনে হাত সেঁকে শোকতাপ ভুলো
এদের ইমিউনিটিতে শহুরে মানুষ অযোগ্য
এঘর সন্তানকে থাকে আঁকড়ে
সভ‍্যদের জমা ঋণ
এদের বর
লিখি।




চাইল্ড !
~ রাজা দেবরায় (আগরতলা, ত্রিপুরা)

আমরা সবাই 'শিশু' ! না না পাগল হইনি । আসলে ইংরেজি শব্দ 'চাইল্ড' নিয়ে একটু দ্বিধায় পড়েছি । ছোটবেলায় পড়েছিলাম 'চাইল্ড'-এর বাংলা 'শিশু' । সেই অনুযায়ী আমরা সবাই 'শিশু' । কিন্তু আদৌ কি চাইল্ড মানে 'শিশু' ?

কারণ আমরা বলি বা বলতে পারি, "আই এম দ্য ওনলি চাইল্ড অব মাই পেরেন্টস" বা "আই এম দ্য ফার্স্ট (/সেকেন্ড/থার্ড...) চাইল্ড অব মাই পেরেন্টস" ।

সেক্ষেত্রে আমার মনে হয় 'চাইল্ড'-এর সঠিক বাংলা 'শিশু' নয় । সঠিক বাংলা হবে 'সন্তান' । যাই হোক 'শিশু' যখন বলা হয় ধরে নিতে আপত্তি কী আমরাও 'শিশু' ! আর "দিল তো বচ্চা হে জি" !!









সোমবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/11/2020

 Upokonthasahityapatrika.Com
Upokontha sahitya patrika-23/11/2020
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/11/2020

Upokontha sahitya patrika


**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 23/11/2020, সোমবার
               সময় :- রাত 9 টা. 50 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒



করোনা সচেতনতা
   বিপ্লব গোস্বামী

শোন দেশের জনগণ
করি এক নিবেদন,
ঠেকাতে হলে সংক্রমণ
হতে হবে সচেতন।

সহকর্মী, সহপাঠী
বন্ধু,বান্ধব যত,
কর মর্দন,কোলিকুলি হতে
থাকতে হবে বিরত।

বন্ধুত্ব,ভালোবাসা,সম্পর্ক
থাকুন নিজের মত,
একে অন‍্যের মধ‍্যে থাকবে
এক মিটার দূরত্ব।

হাঁচি-কাশি দিতে করো
রুমাল ব‍্যবহার,
সাবান দিয়ে হাত ধোয়ে
থাকবে পরিষ্কার।

আপন মনে আপন ধর্ম
থাকুক সবাকার,
উপাসনালয়,সভা-সমিতি
করতে হবে পরিহার।

স্বাস্থ‍্য বিশেষজ্ঞ জন
বলছেন বার বার,
নিয়ম মেনে চলতে হবে
থাকতে হবে পরিষ্কার।




কবিতা

ওষুধে সাবধান
  -  অগ্নিমিত্র

অ্যান্টিবায়োটিক বুঝে খান,
যখন তখন খাবেন না...
ঠিক ব্যবহার না করলে যে
কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না ।
নতুন ওষুধ আসছে না ভাই ;
এই কথাটি মনেতে থাক..
সামান্য সর্দি কাশিতে
এই ওষুধটি দূরেই থাক ।।







     আজ জগদ্ধাত্রী পূজা
       সুস্মিতা দে

ঢাকে কাঠি সাড়া দিন কাজ করলে
করতে হবে জগতের মা র জগতধাত্রী
পূজার আলো আজ কতো
মানুষের ঠাকুর ঘরে বারান্দায়
অথবা প্যান্ডেল ।

মর্যাদা সন্মান দিতে হবে যদি না
পারি তাহলে আমি স্বাধীনতার 
যোগ্য নহে ।

আমাকে আমি গড়ে নেবো
ভালো হতে চাইলে নিজেকে
ভালো হতে হবে।মনে বল
আনতে চাইলে আপন মনকেই
বলীয়ান করতে হবে।

এই জীবনের পাতায় আছে
যা লেখা সব ভুল।

অনেক স্মৃতি আজকে তুমি 
একাকী হয়ে কাঁদো তুমি
তো মা, স্বজনের জন্য  কাদঁ
তাতে স্মৃতি তোমার জমাট
বেঁধে আছে তোমার  দুঃখ
তোমার আনন্দ ,তো  তোমার
এই বাস্তব কে মেনে  নিতে কষ্ট
পাও?

তোমার কথা তোমার
একান্ত নিজের তা কে
ভাগভাগি করা যায়  তাই
বাস্তব কঠিন তবুও মনে থাকে
  আপন জনের মানুষ কষ্ট
পায়।  ঠিক তা হবেই
তারা হয়তো তোমার
মতো তাদের আপনজন।





মানুষ তুমি!
          অনিন্দ্য পাল
======================
মানুষ নাকি উন্নত জীব, বুদ্ধি নাকি সেরা
পৃথিবীটা তারই দখল, সমস্ত তার ডেরা
তার কথাতেই ওঠে বসে মরু মেরু সাগর
মানুষ নাকি করেছে এই পৃথিবীটা ডাগর?
গর্বে বুক খুব ফুলেছে বাড়ছে অহংকার ও
মানুষ তুমি সৃষ্টিরই জীব ভুলতে কেমন পারো!

এই যে এখন ঘরবন্দী, মরছো ভয়ে ত্রাসে
মানুষ তুমি লকডাউনে আর "করোনা" হাসে!
গাছ কেটেছ, বন মেরেছ, বানিয়েছ গ্রাম শহর
অবলাদের খুন করেছ, এতই লোভের বহর!
সুখ বেড়েছে, মন হয়েছে সভ্যভদ্র কষাই
চাই আরো চাই দাও আরো দাও
                                  হজমি আছে মশাই?
বন্ধু এখন বন্ধ তোমার লুঠতরাজের যন্ত্র
কোথায় গেল গোমুত্র, আর কোথায় তন্ত্রমন্ত্র
করোনা সেই দৈত্য এখন, মানুষখেকো বিষ
বেঁধেছে সে চারদেওয়ালে, কোরোনা নিশপিশ!

ওষুধ কিছু নেই এখনো, তৈরি হয়নি টিকা
মরছে মানুষ লাখো লাখো, ভাঙছে অহমিকা
কু-মন্ত্রনা কু-চিন্তা আর ধর্ম নিয়ে লড়াই
ঈশ্বরকে শিকেয় রেখে, নিজেই মহান বড়াই!

ভগবানতো ভগবানই, সমান সবার জন্য
মানুষ তুমি সেই পিতাকেই আজ করেছ পণ্য
সৃষ্টিতে তার তুমিও যেমন, তেমনি বাকি সবাই
কিন্তু তুমি লোভ মেটাতে সব করেছ জবাই!




      ভান
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

ভালো থাকার ভান করে ও।
ভালোবাসার অপচয় করে ও।
প্রেমের ছন্দে হৃদয়জুড়ে গান করে ও।
      মধুর স্মৃতি সঞ্চয় করে ও।
             জানো কী  -
       ওর নামটা কী?
হ্যাঁ, নামটা ওর জীবন।
         সম্পর্কের দৃঢ়তা নেই যেথা,
ও বাঁচতে চায় সেথা।
              অকারণই ও গড়তে চায়।
আপনারে ভরতে চায়।
শূণ্য এ জীবনগতীতে পথে গন্তব্য না পায়।
তবুও চির কালই সে পথেই ধায়।





তুমি হবে সফল
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

রাত ঘনায় দিনের অত‍্যাচারে
প্রভাতে গা নতুন জগতের ছোঁয়া পায়।
নিশ্বকলঙ্গ মানব জগত,সবার জন‍্য
যুগ-যুগান্তর অপেক্ষারত....
মানবের খক্ষুতে ধরা দেবার জন‍্য।
শুধু তাদের সৌন্দর্য দেখানোর জন‍্য।
এতে কেউ বলে ভালো আবার খারাপ
তাতে হয়না রাগ ধৈর্য্যক্ষীণ তার?
আমার বেলায় যত অধৈর্য‍্যহীন।
না,না,না-মানতে রাজি নই
মনে হয়............
ইচ্ছায় চাঁদ উঠে ডোবে।
চেষ্টায় সূর্য অস্ত বা উদয় হয়।
আসবে দিন বিশ্বাসে রাত লুকায়।
সবাই ধৈর্যের সাথে নিজেকে চালায়।
তাই যুগ যুগ পাচ্ছে সফলতা।
এখন.................
ইচ্ছা,চেষ্টা,বিশ্বাস,ধৈর্য‍্য হলো
তাদের সফল হওয়ার চাবিকাঠি।
চারটি সূত্রে,যদি পায় তারা সফল
আমি,আমরা করছিনা কেনো ফলো?
আর ডরাইয়োনা,একটু ভাবো
এই সূত্রকে করলে তুমি,তোমরা ফলো
সফলতা তোমার দরজায় আসবে,
আসতে বাধ্য।।




অবশেষে
অলোক রায়

ঐ পাহাড় দুটো লিখে দিবি আমার নামে,
আর ঐ নদীটাও নদী।
আমি সারাদিন দাঁড় ফেলবো।
ইচ্ছে হলে পাহাড়ে দাঁপিয়ে বেড়াবো।
যখন ক্লান্তি আসবে শরীর জুড়ে,
তখন না হয় ঝাঁপিয়ে পড়বো তোর দেয়া সেই নদীতে।
আমি না ডুবে ডুবে জল খাবো,
না হয় মরণের সন্ধিক্ষণে ভেসে যাব।
তখন না হয় আসিস তুই,
স্নেহের আবেশে বুকে জড়িয়ে নিস।
না হয় ঠোঁটের ওপর ঠোঁট রেখে,
ফুসফুসে একটু ঝড়ো বাতাস দিস।
হয়তো ফিরে আসবো আবার,
তোর কাছে
না হয় আবার পরাজিত হয়ে তোর কাছে,
মৃত্যুকে না হয় ফেলবো পিছে।
আমি বেঁচে রবো,
তবুও বেঁচে তোর অধিকারের অধীনে,
হয়তো এভাবেই আবার না হয় কল্পভ্রমে পাশে পাবো তোকে প্রতিদিনে।





ছেলে বেলার খেলার সাথী
     আব্দুল রাহাজ

কয়েকটা  বছর কেটে গেল ভুবন শহরে পড়াশোনা করে সে এখন ডাক্তার হতে চলেছে কিন্তু তার গ্রামের বাড়ির কথা সে যেন প্রায় সব ভুলে গেছে বাবা-মা তার সাথেই থাকে শহরের একটি বাড়ি আছে সেখানে। ভুবনের ছেলেবেলা কেটেছে গ্রামের বাড়িতে নারায়নপুরে সেখানে ছিল  ছেলে বেলার খেলার সাথী পবিত্র সেখানেই কেটেছে ভুবনের গ্রামের পাঠশালায় পড়াশোনা করে সে এক যেন অনন্য স্মৃতি। ভুবন সেদিন রাতে কর্মব্যস্ততা সেরে সারাদিন পর একটু ঘুমাতে যাবে ঠিক সেই সময় একটা ফোন বেজে উঠলো কল টা ধরতেই আবেগঘন গলায় পবিত্র বলে উঠলো ওই ভুবি কেমন আছিস গ্রামের সবাই ভুবনকে ভূবি বলে ডাকত তাই পবিত্র ও বলল। ভুবন বন্ধু তুমি এতদিন পর তারপর কেমন আছো ভূবন বলল পবিত্র বলল খুব ভালো আছি রে তুই কেমন আছিস খুব ভালো আছি পবিত্র বলল আমি কাল শহরে যাচ্ছি ওখানে একটা স্কুলে ইতিহাসের মাস্টার মশাই হিসেবে নিযুক্ত হয়েছি বাহ বেশ ভালো কথা তারপর পবিত্র বলল ভাবছি থাকার জায়গা পাবো কোথায় ভুবন কিছুক্ষণ চুপচাপ থাকলো তারপর ভুবন বলল ওহে আমার ছেলে বেলার খেলার সাথী আমার বাড়িতে তুই থাকবি আমার বাড়ি তুই কাল চলে আয় ঠিকানাটা দিয়ে দিল। এরপর পরের দিন সকাল বেলা মধু মাঝির নৌকা চেপে সামশেরগঞ্জ এর তীরে এসে থামল তারপর অচেনা শহরে পবিত্র এই প্রথম পা দিল তারপর ঠিকানা খুঁজতে খুঁজতে ঘুরতে ঘুরতে ভুবনের বাড়ি চলে গেল তখন প্রায় দুপুর ছুটির দিন ভুবন বাড়িতে আছে দূর থেকে পবিত্র কে দেখে ভুবন ছুটে এসে জড়িয়ে ধরল বন্ধু পবিত্র তুমি এসেছো হ্যাঁ এসেছি সত্যিই তুই আগের মতন থেকে গেলি রে ভুবন। এভাবে বিভিন্ন কথাবার্তায় হাসি-ঠাট্টা বাড়ির ভেতরে ঢুকলো পবিত্র কে দেখে ভুবনের মা-বাবা খুব খুশি হলো এরপর ওরা উপরের তলায় চলে গেল বেশ সুন্দর ঘরে পবিত্রকে থাকতে দিলো তারপর কত কথা সেই বামন-দিকে মাঠে কত খেলা হয়েছে গ্রামের ছেলে মেয়েদের সঙ্গে সেই সব কথা বলতে বলতে সন্ধ্যা হয়ে গেল কোথাও যেন ওরা ফিরে পেল সেই ছেলেবেলার দিনগুলো বিভিন্ন কথাবার্তা ছেলে বেলার খেলার সাথী কে পেয়ে ভুবন অনেকটাই চিন্তা মুক্ত হয়ে গেল সেই সব থেকে সুন্দর দিনটা ছিল ভুবন পবিত্র কাছে। ছেলে বেলার খেলার সাথী কে ফিরে ভুবন উদ্যমে কাজ করতে লাগলো ডাক্তারি করতে লাগল মানুষের সেবা করতে লাগলো আর ওদিকে পবিত্র টাউন স্কুলের শিক্ষকতা শুরু করল দেখতে দেখতে পবিত্র একটি বাড়িয়ে কিনে ফেলল শহরে বেশ সুখে শান্তিতে ছেলে বেলার খেলার সাথী কে পেয়ে ভুবন পবিত্র রাখি বন্ধন নিয়ে পাশাপাশি বসবাস করতে থাকলো।





                  ইচ্ছে নদী
            হামিদুল ইসলাম
               

ইচ্ছে করে প্রতদিন পেরিয়ে যাই পাহাড়
নদী
নদীর আঁকাবাঁকা পথে নেমে আসে শীতল জল
মনকে দুবেলা শানাই 
হাতের মুঠোয়  ।।

পৃথিবীর ময়দানে আজ কবিদের সমাবেশ
পিপাসিত গুণিজন
দুহাতের মুঠোয় অঙ্গীকার
এরা প্রতিদিন সমাজ বদলাতে চায়
বিপ্লবের কাস্তেয় শান দেয় আরণ‍্যক জীবন  ।।

নিটোল বিশ্বাসে গড়ি মায়ার সংসার
দুগ্ধবতী ধানক্ষেত
শুষে খায় রাতের হায়নারা
মৃত‍্যুভয়ে ভীত প্রতিদিন গ্রাম শহরের মানুষ
জোটবদ্ধ সবাই সবার জন‍্যে  ।।

শোষনের তরবারি খোঁজে ঘরে ঘরে
রক্তের লেলিহান শিখা
মানুষ প্রতিবাদ করে
বিপ্লবীরা দখল করে আরো একটি দেশ
যুগে যুগে পাল্টে দেয় সাম্রাজ‍্যবাদী ইতিহাস

ইচ্ছে নদী বয়ে চলে আপন ধারায় ।।




অশ্রুর মর্ম ব্যাথা
উমর ফারুক

আমার অশ্রু আর বৃষ্টির ফোঁটা
এবং আকাশের তারকা
পরস্পরে মিলিত হল মুহূর্তেই।
মিলে গিয়ে হয়ে গেলো একটি হিরক দীঘি
একটি অশ্রুর ফোঁটা রক্ত হয়ে ঝরে
আর বৃষ্টির ফোঁটা রক্ত ধুয়ে চাঁদকে ছুঁতে চায়
তারকাটি চাঁদের অন্তরায় সৃষ্টি করে।
আমি অন্ধ হলাম এবং আকাশ অন্ধ হলো
সমস্ত কিছু হল
অশ্রুর মর্মব্যথায় ,তারকার দুঃখে।






আমার কোনো তাড়া নাই 
বদরুদ্দোজা শেখু

সমাজের কোনো এক প্রতিভাবানের অকাল  প্রয়াণে আজ
চারিদিকে প'ড়ে গেছে
ছুটির হিড়িক ।  আজ আমার কোনো
তাড়া নাই , তোমরা যাবে যাও
হুড়োহুড়ি ক'রে
সিনেমা সার্কাস পার্ক প্রদর্শনী যাও
পার্টিতে দাঁড়াও , হিল্লিদিল্লী
আগ্রা সিক্রি কুতুবমিনার লাল কেল্লা
যন্তরমন্তর যত্রতত্র ঘুরে এসো ,
একদিনের উড়ুক্কু ভ্রমণে যত বেশী সম্ভব
দ্রষ্টব্য দু'চোখে  গোগ্রাসে গিলে এসো একসাথে ,
উৎসবের উত্তেজনা নিয়ে , অর্থকে বানাও ইচ্ছা , ইচ্ছাকে
অর্থের দাস আর
নারীকে বানাও বেশ্যা , বেশ্যাকে নারীর প্রেত   কিংবা
জৈবনিক ক্ষুধাকে বানাও প্রেম  ,
প্রেমকে আঁধার পার্কের বিষয় , শুধু
ফূর্তির ফোয়ারা ছড়াও 
অপ্রত্যাশিত  বেকার বিরক্তিকর সময়কে স্বপ্ন ক'রে
কাটানোর অধীর উষ্ণতা নিয়ে , যাও
ছুটির দিনের এই দুর্লভ অবসরকে তাড়াতাড়ি কোনো
ইন্দ্রিয়ের উপভোগ্য ফসল বানাও , যাবে যাও । আমি আজ
কোথাও যাবো না , আজ
আমার কোনো তাড়া নাই , আমি শুধু
জনশূণ্য দোতলার বারান্দায় ব'সে
দেখবো সামনের লনের অনবদ্য ঘাসের সবুজ আর 
সাঁঝের আকাশে  অবতরণ-প্রয়াসী বিমানের
নির্ভয় স্বচ্ছন্দ গতি । আর নিমগ্ন মনের কোণে
গ'ড়ে তুলবো ইচ্ছামতো
এক ক্লেদশূণ্য উদ্বাস্তু শহর । ক্ষণিক অবসরকে বিড়ম্বিত
তাড়া ক'রে এই জীবনের শূণ্যতার পূর্ণতা হবে না জানি ,
তাই আমার কোনো তাড়া নাই আজ , তোমরা
যেখানে খুশী যাবে যাও , আমার কোনো তাড়া নাই  তাড়া নাই আজ





মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১। শিরোনাম-রাত জেগে শুনি

রাত
জেগে শুনি
কারা যেন যায়
হেঁটে, পায়ে পায়ে এগিয়ে
হতাশা আর বঞ্চনার আগল ঠেলে
তারা জানি পৌঁছে যাবে আলোর ভোরে।

জানি আর বেশীদিন কাটাতে পারবোনা ঘুমঘোরে
ধুলোমাখা মানুষেরা ফিরবে মশাল জ্বেলে
শ্লোগানে   মুক্তির বার্তা নিয়ে
সময় পাল্টা. বায়
তাই  গুণি
হাত ।

২।  শিরোনাম. -  শহর   বর্ধমান

আমার
শহর বর্ধমানে
জানা-অজানা কত কথা
লুকিয়ে  আছে​ শহরের আনাচে-কানাচে
দানশীলতা,কীর্তিকথা, ইতিহাসে. রাজাদের অবদান
বাড়িয়েছিল বহুযুগ আগে এই শহরের  মান।

ক্রমবর্ধমান এই শহরে রাজারা আজো   অম্লান
সায়র আর মন্দিরে পাতলে কান
রাজাদের মহানুভবতায় হৃদয় নাচে
শিক্ষাঙ্গনে তাদের বার্তা
শিক্ষার্থীরা জানে
বারবার।






বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায় (Soumitra Chatterjee)

বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়

                   বিপ্লব গোস্বামী


বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়কে যদিও আমরা একজন বিখ‍্যাত  চলচ্চিত্রাভিনেতা ও আবৃত্তিকার হিসাবে চিনি।তিনি কিন্তু এসবের পরও ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি।তাছাড়া তিনি ছিলেন একাধারে  লেখক,অনুবাদক,নাট‍্যকার ও নাট‍্যনির্দেশক।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়


               এই বিখ‍্যাত কবি-অভিনেতার  জন্ম ১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারী পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর গ্ৰামে।তাঁর পিতার নাম মোহিত কুমার চট্টোপাধ‍্যায় এবং মায়ের নাম আশালতা চট্টোপাধ‍্যায়।তাঁর পিতা পেশায় এক জন আইজীবী ছিলেন।তাই তাঁর বাবার কর্মসূত্রের জন‍্য  তাঁকে ছেলেবেলা থেকেই বিভিন্ন জায়গায় কাটাতে হয়েছে।তাঁর প্রথাগত প্রাথমিক শিক্ষা শুরু নদীয়ার কৃষ্ণনগরে।তারপর হাওয়া জেলা স্কুল থেকে শিক্ষা গ্ৰহণ করেন।এরপর কলকাতা জেলা সিটি কলেজ থেকে আই.এস.সি।এরপর বাংলা সাহিত‍্য নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি।শেষে পোস্ট গ্ৰ‍্যাজুয়েট কলেজ অফ আর্টস এ পড়াশোনা করেন।

           কলেজে পড়ার সময় নাট‍্যভিনেতা শিশির কুমার ভাদুড়ীর সঙ্গে পরিচয় হয় সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়ের।ভাদুড়ীর অভিনয় সৌমিত্রকে গভীর ভাবে অনুপ্রাণিত করে।তখন থেকেই অভিনয়কে জীবনের লক্ষ‍্য করে নেন সৌমিত্র।যদিও তাঁর কর্মজীবন অল ইণ্ডিয়া রেডিও-এর ঘোষক হিসাবে শুরু হয়।তিনি কিন্তু এর সাথে সাথে থিয়েটারে অভিনয় ও ছবিতে অডিশনও দিতেন।তাঁর চলচ্চিত্র জীবনে অভিনয় শুরু জগৎ বিখ‍্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত‍্যজিৎ রায়ের পরিচালিত অপুর সংসার ছবিতে অভিনয়ের মাধ‍্যমে।এরপর থেকে তাঁকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি।সুদীর্ঘ ষাট বছরের চলচ্চিত্র জীবনে তিনশোরও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র।তিনি অভিনয় করেছেন সত‍্যজিৎ রায়ের পরিচালিত ২৭ টি চলচ্চিত্রের মধ‍্যে  ১৪ টি ছবিতে।সত‍্যজিৎ রায়ে পরিচালিত সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথ ছবিতে ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করে জন প্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।তাঁর ভক্তদের কাছে পরিচিত হন ফেলুদা নামে।

      শুধু অভিনয় জগতে নয় সাহিত‍্য জগতেও সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়ের অবদান ছিল অতুলনীয়।আবৃত্তিকার হিসাবে তাঁর খ‍্যাতি বিশ্ব জোড়া।কবি বন্ধু শক্তি চট্টোপাধ‍্যায়ের অনুপ্রেরণায় তিনি সাহিত‍্য জগতে প্রবেশ করেন।কাব‍্য জগতে পবেশ করার পর তাঁকে আর ফিরে তাকেতে হয়নি।মোট ১২-১৪ টি কাব‍্যগ্ৰন্থ রচনা করেছেন তিনি।কবিতা লিখে মন জয় করেছেন পাঠক হৃদয়ের।কবিতা লিখতে কোন দিন কোনও শর্ত রাখেননি তিনি।কোন শক্তির কাছে মাথা নত করেননি তিনি।সর্বদা তাঁর কলম থেকে বেরিয়েছে অনবদ‍্য শব্দের প্রকাশ।কলেজ জীবন থেকেই তাঁর কাব‍্য চর্চা শুরু।তাঁর প্রথম কাব‍্যগ্ৰন্থ 'জলপ্রপাতের ধারে দাঁড়াবো বলে' প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে।২০১৯ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর ৮০০ পৃষ্ঠার 'কবিতা সমগ্ৰ'।তাঁর বিখ‍্যাত কিছু কাব‍্যগ্ৰন্থের নাম হলো জন্ম যায় জন্ম যাবে,হায় চিরজল,হে সায়ংকাল,মধ‍্যরাতের সংক্ষেত,স্বেচ্ছাবন্দি,আশার কুহক ইত‍্যাদি।এ ছাড়া তিনি এক্ষণ নামে একটি পত্রিকার প্রকাশনা ও সম্পাদনা করতেন।এ ছাড়া তিনি ছিলেন একজন বিখ‍্যাত আবৃত্তিকার।তাঁর কণ্ঠে জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন কবিতা খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল।এ সবের পরও তিনি অবসর সময়ে ছবি আঁকতেন।

        অভিনয়ের জন‍্য তিনি পেয়েছেন দেশ বিদেশ থেকে অনেক পুরস্কার ও সম্মাননা।প্রথম জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন ১৯৯১ সালে‌। ২০০৪ সালে ভারত সরকার পদ্মভূষণ সম্মানে সম্মানিত করে সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়কে।২০০৬ সালে পদক্ষেপ চলচ্চিত্রের জন‍্য লাভ করেন শ্রেষ্ট অভিনেতা বিভাগের পুরস্কার।২০১২ সালে সঙ্গীন নাট‍্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার এবং ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা দাদাসাহেব পালকে পুরস্কার লাভ করেন তিনি।২০১৭ সালে ফ্রান্স সরকার কর্তৃক লিজিওন অফ অনার পুরস্কার লাভ করেন।তাছাড়া তিনি ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক বঙ্গবিভূষণ পুরস্কার লাভ করেন।

       অভিনেতা হলেও সাহিত‍্যের প্রতি তাঁর কতটা টান ছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় তাঁর নিজেরি কথায়।তিনি নিজে বলতেন,একজন অভিনেতার কল্পনা,অভিনয়,অনুভব,অভিজ্ঞতা সবই দাঁড়িয়ে থাকে ভাষা ও সাহিত‍্যের ভিতের উপর।কাজেই বাংলা ভাষার আশ্রয়ে অভিনয় করতে গেলে বাংলা ভাষা,শব্দ ও সাহিত‍্যের সঙ্গেও পরিচয়টা আবশ‍্যক।অন‍্যান‍্য সব শিল্পের মতোই অভিনয়েও মূল লক্ষ‍্য হলো জীবনের সত‍্য রূপকে ব‍্যক্ত করা।আর সেই লক্ষ‍্যের দিকে যাওয়ার জন‍্য অভিনেতা জীবনে যে অভিজ্ঞতার,কল্পনা ও অনুভবের প্রয়োজন হয় তা পাওয়া যায় সাহিত‍্য চর্চার মধ‍্য দিয়ে।কবি জয় গোস্বামীর প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন,অভিনয় করতে গেলে অভিনীত চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলাতেই মনোযোগ থাকে‌।আর নেজের মধ‍্যে সেই চরিত্রকে জাগিয়ে তুলে পরে দর্শকের দরবারে প্রকাশ।করার যে আনন্দ,তা চেয়ে অনেক বেশি আনন্দ দিতে পারে কবিতা।লিখতে বসলে কোনও আড়াল খুঁজতে হয় না‌,বরং হৃদয় নিঙড়ে অন্তর আত্মাকে উজার করে দেওয়াই কবিতার দস্তর‌।

         ২০২০ সালের ১ অক্টোবর জ্বরে আক্রান্ত হন বিখ‍্যাত অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায়।করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৫ অক্টোবর কোভিড-১৯ পজিটিভ রিজার্ট আসে।পরেদিন অর্থাৎ ৬ অক্টোবর তাঁকে বেলভিউ নার্সিং হোমে ভর্তি করা হয়। ১৪ অক্টোবর রিপর্টে করোনা নিগেটিভ আসলেও ২৪ অক্টোবর রাতে তাঁর শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটে।শেষে ১৫ নভেম্বর ২০২০ তারিখে ৮৫ বছর বয়সে কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে তিনি মৃত‍্যু বরণ করেন।

     সৌমিত্র চট্টোপাধ‍্যায় বাংলা সিনেমার ইতিহাসে একজন কিংবদন্তি অভিনেতা এবং বাংলা সাহিত‍্য জগতের একজন বিশিষ্ট কবি ও স্বনামধন‍্য আবৃত্তিকার।তাঁর বহুমুখী প্রতিভার জন‍্য তিনি সবার হৃদয় আসনে জায়গা করে আছেন আর অনন্ত কাল ধরে থাকবেনও।