বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২১

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/01/2021

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/01/2021

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/01/2021


   বিষয়: প্রবন্ধ
     শীতের সকাল ও ফেলুদা
      অগ্নিমিত্র ( ডাঃ সায়ন ভট্টাচার্য )

   শীতের সকালে আড়মোড়া ভেঙে উঠি । আর উঠে যদি সামনে পাই এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কফি আর ফেলুদার কোনো গল্পের বই, তবে তো আর কথাই নেই। সোনায় সোহাগা হয়ে যায় তখন একেবারে । শীতসকালের মিঠে রোদে বসে সেই বই পড়তে তখন খুব ভালো লাগে।
  বাঙালি বরাবরই গোয়েন্দা গল্পের খুব ভক্ত । আর তার হৃদয়ে তাই বিশেষ স্থান অধিকার করে আছেন ব্যোমকেশ বক্সী ও ফেলুদার মতো চরিত্র ।
সত্তরের দশকে ফেলুদার যাত্রাপথ শুরু। তার পর থেকেই মধ্যবিত্ত বাঙালির প্রিয়তম গোয়েন্দা চরিত্র এই ফেলুদা বা প্রদোষ মিত্র । বাদশাহী আংটি, নয়ন রহস্য, টিনটোরেটোর যীশু, বোসপুকুরে খুনখারাবি  প্রভৃতি ফেলুদার সব গল্পই বাঙালি পাঠকের খুব প্রিয় । তার চেহারা, তার বুদ্ধিমত্তা, আর তোপসে লেখার কায়দা, সবই বাঙালি পাঠকের মনকে খুব আকর্ষণ করে । সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট তারিণীখুড়ো বা প্রফেসর শঙ্কুও খুব জনপ্রিয়, তবে এতটা নয়। এই মুঠোফোনের জমানাতেও সেই জনপ্রিয়তায় একটুকু ভাঁটা পড়েনি।
  শীত শীত করা সকালে ফেলুদার বই ছাড়া আরো একটা জিনিস খুব প্রিয়, আর তা হলো টিভিতে ফেলুদার সিনেমা দেখা । আজও 'সোনার কেল্লা' বা 'জয় বাবা ফেলুনাথ ' টিভির পর্দায় প্রচারিত  হলে বাঙালির আর কিছু চাই না। ফেলুদা আর সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় যেন একাত্ম হয়ে গিয়েছেন বাঙালির হৃদয়ে । যতবারই দেখা হোক না কেন, এই ছবিগুলো কখনো পুরনো হয় না ।।





সুখের_স্বপ্ন
      শান্তি_দাস

নিত্য দিনের কর্মযজ্ঞ সকাল থেকে শুরু,
নতুন দিনের নতুন আশা সেই কামনা করি।
কত স্বপ্ন আজ গেল তো কাল জুটবে বেশি,
তাই তো পুরাতনের মাঝে নতুনকে আমরা খুঁজি।

ঘুমিয়ে পড়লে স্বপ্ন দেখি ভাঙলো ঘুম সেই জগতেই আছি,
স্বপ্নে আঁকা জীবন নিয়ে কতো চিত্র আঁকি।
নিত্য নতুন স্বপ্ন নিয়ে সময়ের পথে চলি,
এইভাবে চলছে ঘূর্ণাবর্তে বছর বারো মাস।

স্বপ্ন নিয়ে জীবন গড়া তাই মোদের সঙ্গী,
সেই স্বপ্ন কিন্তু দিয়ে যায় শুধু আশ্বাস।
পুরনো স্মৃতি রাখবো না মনে নতুন পথে চলবো,
স্বপ্ন নিয়ে চলবো আমরা এই করবো প্রতিজ্ঞা।

অতীতের ব্যাথা বেদনা মুঁছে দিয়ে স্বপ্ন সফল করবো,
জাগবো নতুন প্রভাতের আলোয় নতুন করে বাঁচার।
কত সুখের স্বপ্ন ভেঙ্গে যায় দুঃখের মাঝে,
সুখের স্বপ্ন তো মানুষের মনে আনন্দের প্লাবন।

মানুষের জীবনে শুধু স্বপ্নের তরী বয়ে চলে,
তাই তো জীবন বাঁচতে শেখায় চরম বাস্তবতায়।
সুখের স্বপ্নগুলি মাঝে মাঝে সুখ দিয়ে যায়,
স্বপ্ন দেখায় সফল হলে মনের কষ্টের দিন চলে যায়।





   এ এক অন্য কিছু
     তৃণা মুখার্জী

সভ্যতার মারপ্যাঁচে, ভন্ড মানুষের দল তীব্র থেকে তীব্রতর।
কোলাহলের আওয়াজে একটাও কথা স্পষ্ট নয়।
কে কি বলছে তা বোঝা দায় ।
আসল-নকল মিলেমিশে একাকার।
কঠিন বাস্তবের ভূমিতে হাস্যকর ভালো থাকার লড়াই ।
উদ্ধারের পথে ঢালু জমিতে , বিষবৃক্ষ।
এক একটা টোপ ভয়ঙ্কর, নির্মম ।
কি?
কেন?
কার?
কখন?
সময়ের নৃশংসতা।
অপেক্ষার প্রখরতা।
আবেগের বন্দিদশা।




                     ঘোর
            হামিদুল ইসলাম
               

নৈরাজ্যের পালে আগুন
আকাশ অন্ধকার
গগন জোড়া মেঘ দেখি
ভালোবাসা বিস্তার ।।

কে কার জন‍্যে
তবু বুকে রাখি ভরসা
নৈঃশব্দে ভরে ওঠে প্রাণ
জীবনের তারুণ‍্যে কেবল হতাশা ।।

জীবন গভীর সংকটে
তবু পথ চলি একা
বৃষ্টি ঝরা রাতের আকাশ
এতো কাছে তুমি তবু তোমার সাথে হয় না দেখা ।।

হে বৃষ্টি ছেড়ে যাও
ফিরে আসুক সূর্য ওঠা ভোর
ভোরের আলোয় পৃথিবী উদ্ভাসিত হোক
কেটে যাক বিদীর্ণ মনের ঘোর ।।




কাটমানি
মহীতোষ গায়েন

কাটমানি কাটমানি কাটমানি ভাই
ভালো পদ,নেতা হতে কাটমানি চাই,
কাটমানি কাটমানি কাটমানি দিন
কাটমানি ছাড়া মানুষ মর্যাদাহীন।

দাদা খায় কাটমানি দিদি কম কিসে
কাটমানি মরে সেই কাটমানি বিষে!
মামা নেয় কাটমানি মামি ধরে গান
কাটমানি বাবু খান কাটমানি পান।

চাকরিতে কাটমানি নেন বড়বাবু
কাটমানি ভাইরাসে জনগণ কাবু,
কাটমানি সিণ্ডিকেট কাটমানি বাড়ি
কাটমানি প্রেম শেষে চলে যায় ছাড়ি।

কাটমানি কাটমানি কাটমানি যাদু
কাটমানি নিয়ে ঘোরে কাটমানি দাদু,
কাটমানি ভালোবাসে কাটমানি সুখ
কাটমানি নিয়ে ঘোরে কাটমানি মুখ।

কাটমানি খেয়ে নিয়ে সুখে ধরায় জ্বালা
কাটমানি শয়তান সব তাড়াতাড়ি পালা,
কাটমানি পুড়িয়ে দিয়ে করো ছারখার
কাটমানি রাজারা সব হোক পগারপার।




    মনের যন্ত্রণা
    অনাদি মুখার্জি

সীমাহীন মনের যন্ত্রণা নিয়ে আজ বেঁচে আছি
শুধু তোমার পথ চেয়ে ,
তোমাকে না পাওয়া যে কত যন্ত্রণা তা তুমি বুঝবে না
বোঝার চেষ্টা করোনি!
মনে পড়ে তোমার সেই দিনের কথা ?
আমি কলেজের গেটে দাঁড়িয়ে ছিলাম
তুমি ও সেই দিন ছিলে দাঁড়িয়ে !
কেউ ছিল না আমাদের আশেপাশে ,
শুধুমাত্র আমরা  দাঁড়িয়ে ছিলাম দুই জনে !
আমরা একে অপরের দিকে তাকিয়ে ছিলাম ,
হঠাৎ করে মুচকি হাসি হেসে ছিলাম আমি !
মনের অজান্তেই আমার হাত দুটো ধরে বলেছিলে তুমি ,
মরত যদি না আসে তোমার সাথে ঘর পাতবো প্রিয় আমি !
আমি যে তোমায় সেই দিন জীবনের থেকেও বিশ্বাস করেছিলাম !
তখন আমি বলেছিলাম আমি কি তোমার উপযুক্ত ?
তুমি বলেছিলে, অন্য কেউ যদি আমার সঙ্গী হয় ,
সেই শুধু দেহ পাবে তোমার মন নয় !
আজ কই তুমি তো এলে না আমি তোমার আশায় রয় ,
কোথায় তোমার আজ হৃদয়ে ভালোবাসা কথা ?
যদি কখনো হারিয়ে যায় না ফেরার দেশে,
আমার মনের কথা কি পড়বে তোমার মনে ?
যদি কখনো শোনো আমার চলে যাওয়া কথা ,
তোমার হৃদয়ে জাগাবে এত টুকু ব্যাথা !                   
আমি চলে গেলে তুমি বিদায় দিও হাসি মুখে ,
আমার জন্য এক ফোঁটা অশ্রু ফেলবে তোমার চোখে !
তবে আমার বুকের যন্ত্রণা একটু শান্তি পাবে !






আজব  দুনিয়া
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

আজব দুনিয়ায়  আজব  মানুষ কিছু   আছে,
ফেসবুকে হলো  পরিচয়,
তাঁরা  এসব কি  চায় আমার  কাছে?
আমার তো  দুইকাল  চলে  গিয়েছে  কবে!
এখন  আর  প্রেম  প্রেম  খেলার  অভিনয়  কি  করে হবে?

আজব  দুনিয়ার   অনেক নরনারী  তবে কি খুশী  নয়?
যাঁর  যেমন  জীবন  কাটুক  তবু   মানবতার  হোক  জয়৷
বন্ধুরা  আমার  স্রেফ  বন্ধু  হয়ে  থাকো,
তার  চেয়ে  বেশী কিছু  দাবী  করো  নাকো৷
———————————————



তোমায় আর  দেখিনি
     সঞ্জয় গোস্বামী

তোমার একটি কথায় মনে গোলাপ ফুটে,
     তোমার নিরবতায় মনে বাদল ছুটে,
       তুমি সেই রূপকথার রাজকন্যা,
                 মনে স্বপ্ন জাগাও।
       তুমি, জানিনা কোন ফুলের সৌরভ,
                সারাক্ষন গন্ধ ছড়াও,
          তুমি পূর্ণিমার ঝলমল চাঁদনি,
                  আগে আর দেখিনি,
                       আর দেখিনি।








গ্রাম বাংলার পরিবেশের বিকালের দৃশ্য
        আব্দুল রাহাজ

সেদিন রোহিত অনিমা তনিমা শেখ সবাই ওদের গ্রামে পশ্চিম দিকে বিস্তীর্ণ মাঠ আছে সেখানে ঘুরতে বেরিয়েছে ।এমনি ওদের গ্রাম চারপাশ থেকে সবুজ গাছপালা ঢাকা আর আছে মাছ চাষের বড় বড় ভেড়ি গ্রাম বাংলার পরিবেশ সত্যি মনোরম কিন্তু বিকেলের দৃশ্য এখন অন্যরূপে সবার সামনে ফুটে উঠে চারিদিকের ঠান্ডা হাওয়া ফাঁকা জায়গায় ফুরফুরে হাওয়া অনেকে মনটাকে শান্ত করে ওরা সেদিন বিকালে এই দৃশ্য দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিল কারণ ওরা অনেক দিন বাদেই গ্রামে এসেছে শহরে পড়াশোনা করে তাই গ্রাম বাংলার পরিবেশ থেকে অনেকটাই ওরা বিচ্ছিন্ন হয়ে ছিল অনেকদিন তারপর বিকালের এই দৃশ্য দেখে ওদের মনটা ভরে উঠলো। রাখালছেলে সন্ধ্যা নামার আগেই ছাগলের পাল নিয়ে যায় বাড়িতে পাখিগুলো ভেড়ির জলের উপর কুঞ্চির গায়ে কি সুন্দর বসে আছে সত্যিই যেন এক মনোরম দৃশ্য তারপর সারা মাঠ সরিষার হলুদ গাছে চারিদিকে যেন মনোরম হয়ে উঠেছে। সন্ধ্যা নেমে আসছে সূর্যের নিস্তেজ আলো পুব আকাশে হলুদ বর্ণের মত এই দৃশ্য যেন অনন্য করে তুলছে ওদের সামনে ‌ সত্যিই প্রকৃতির সৌন্দর্য এক অনন্য এক অনন্য ওদের কাছে হয়েছিল। সেদিন ওদের মনটা বিকালের এই দৃশ্য দেখে ভরে গিয়েছিল ‌। সত্যি গ্রামবাংলার এই মনোরম দৃশ্য আর কোথাও পাওয়া যায় না এক কথায় অতুলনীয় যা জীবন চিরঞ্জিত নায়ক হয়ে থাকবে সবার মনে।





সৈকত গোস্বামী এর গুচ্ছ কবিতা

১) নিম্নচাপের আঁধার কেটে
     সূর্যসোনা রোদ
     বরফগলা বসন্তে আজ
      আমার জীবনবোধ

২)
সাঁতার কাঁটা কালো জলে
স্রোতের বিপরীত
কালো স্রোতের ওপর পারে
ধূসর অনিশ্চিত

৩)
থমকে থাকা শ্যাওলা সবুজ
প্রবহমান কাল
প্রবাহহীন পদ্ম - শালুক
নীলচে সাদা লাল




অণুগল্প
             খুনি      ||    জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়

পরিযায়ী শ্রমিক লবের মনখারাপের শেষ নেই।সদ্য কোয়ারান্টিন সেন্টার থেকে
ফিরেছে সে।কোভিড-১৯ টেস্ট রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় সবাই স্বস্তি পেলেও
তার মন ভালো নেই।সহ-শ্রমিক সত্য আসে তাকে সান্ত্বনা দেয় কিন্তু সে শান্তি পায় না।
লব বলে,'' বাড়িতে এত অভাব,কাউকে কিছু দিতে পারি না।মজুরির টাকা সব
শেষ।বাবা-মা,বৌ-মেয়ের বোঝা হয়ে গেলুম! ''
সত্য উত্তর দেয়,''কিছু তো করার নাই।ধৈর্য ধরে থাক,দেখবি সব ঠিক হয়ে যাবে।
মনখারাপ করিস না''
লব গুম হয়ে থাকে,মুখে হাসি নেই।আরও দুটো দিন এভাবেই কেটে গেল।বাবার
হাঁপানির টান বেড়েছে,ওষুধ শেষ,ডাক্তারবাবু বসছেন না,মায়ের ছানি অপারেশন
করানো হয়নি.....কী যে হবে? পরিবারের একমাত্র রোজগেরে লবের কাজ নেই,
টাকাও নেই ...... ভাবতে ভাবতে অন্ধকারে সে যেন তলিয়ে যায়।এরপর সে চূড়ান্ত
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে,ফিনাইলের বোতলে যেটুকু অবশিষ্ট ছিল সেটা গলায় ঢেলে
ঢলে পড়ে লব।তারপর হাসপাতাল,ডাক্তারবাবু,সাবানজল,ওষুধ আর কত কী
যে চলেছে তার কিছুই সে জানে না।জ্ঞান ফিরেই অশ্রুভেজা মেয়ের মুখ,তারপর
মা আর বৌয়ের মুখ দেখে দুঃখে তার বুক ফেটে যায়।এরপর যখন সে শুনলো
তার ফিনাইল খাওয়ার খবর শুনে তার বাবার  হার্ট-অ্যাটাক হয়ে গ্যাছে,বাঁচেন
কী না ঠিক নেই,তখন নিজেকে তার খুনি মনে হয়।
সে চিৎকার করে বলে,''আমি খুনি,আমি খুনি,বাবাকে আমি মেরে ফেললাম!! ''




My Heart is Inside the Cage
      By Sabir Ahmed
 
I have a cage ,the cage has bony bars.
Inside the bars there is a heart.
Inside the heart there is a governor
Who is very buoyant, very subtle,
Governs my life,
Governs my pulse of feelings,
Who governs my brain
How the sun governs the sunflowers,
How the wind governs the waves.

I have a cage,inside the cage
There is a pumping machine
Looks like a banana flower.
It has many pipes and tubes and wires
Vena cava, arteries, pulmonaries, nodes
Through which the hidden words
Flow to the brain,transfer to the tongue
And whisper with the pupils
With the tear glands, tear-ducts.



হিকনিক
মাথুর দাস

শীত এলে করে সব
দল বেঁধে পিকনিক,
মাঠে ঘাটে ময়দানে
জঙ্গলে নানা দিক ।

কেউ যায় কাছে দূরে
নদীতে বা পাহাড়ে,
বালুচরে গানে সুরে
মেতে ওঠে বাহারে ।

আর যদি রাঁধি বাড়ি
ঘরে, হোম-পিকনিক,
দল বেঁধে হই চই
হয়ে যায়  'হিকনিক' ।




কবিতা
  গোলাপ কাঁটা
সুস্মিতা দে

নতূন বছর এসেছে বন্ধু
মধুমাস নীলাকাশ।
কচি ঘাস ফড়িং মল্লার রাগে তুমি জড়ানো কন্যা সুন্দরী, চিনি তোমায় চিনি।

কবিতাতে তুই কাঁটা ভরা গোলাপ থাক ,শুভলগ্নে
মালা বদল সাড় গোলাপের মালাতে  তুই রূপে রূপাঞ্জলি ।

কন্যা কে বিদায় দিতে হবে যগুদাদা আসে বলে গোলাপি আজ শ্বশুর বাড়ি যাবে না
কেন?  ওর বয়স ষোলো 

জমিদার বাবু আসেন বলেন যগু তোর বোন  কবিতা লিখুক   আর  দুই  বছর গোলাপি লিখবে  কতো কবিতা 

গ্রামের মানুষের আবদার এখন লেখার সময় এখন কন্যা বিদায় নয়
আরো বছর তিনেক বাদে হবে ।গোলাপি কাঁটা তে নিজেকে জড়িয়ে নিলো।




তুমি ভালোবাসো তাই
বিপ্লব গোস্বামী

তুমি ভালোবাসো তাই
ছন্দগুলো খোঁজে পাই।
তুমি ভালোবাসো তাই
আজো পদ‍্য লিখে যাই‌।
তুমি ভালোবাসো তাই
কবি সভায় হ‍লো ঠাঁই।
তুমি ভালোবাসো তাই
প্রতি রাতে গান গাই।
তুমি ভালোবাসো তাই
উত্তরণের পথে ধাই।




A success fruit
©Mom
I am a complete fruit.
I love my mother-plant's root.
Because according to the nature's rule
For the root, now I am successful.
Though it is not seen from outside
Yet no plant can stay without it.
And so also I am not on it.
Yes, I can't to hide
It's contribution in my success.
Every fruit and it's plant's address
Yes, it is the root,
By which a plant can stand
On the land
And donate it's fruit.



উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক সাহিত্য পত্রিকা:

চিত্রকল্প
সৌম্য ঘোষ

এখানে আকাশ কথা বলে,
ময়ূরেরা ইচ্ছামত ঘরে ফেরে 
পেখমমেলে নাচে
দেবদত্তের তীর এখানে আসে না
বনভূমির পাতায় পাতায় ভরা থাকে
বসন্তের গান
কল্লোলিত নদীতে মাছেরা খেলা করে
শিকারির জাল এখানে পাতে না
এখনো এখানে আকাশ কথা বলে।
নীরব চৈতন্যের সুর ওঠে রূপকথার
উপভাষায়
এখনো বৃষ্টি নামে
ভরন্ত শস্যক্ষেত্রে।।





ইংরাজি নববর্ষের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা সকল বন্ধুদের......
 
                     মুজদা
                    দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়

দিনগুলো সব নুড়ি পাথর
পথ করেছে নতুনের
বিথান তার বেশবাস
বিজল্প বিমোক্ত মরণের

মুজদা আসবে রসমুন্ডির
সৌমনস্যের স্তনন
স্যন্দিত হবে আনন্দ
জড়িমার মরণ

চলবে জীবন সবুজ খামে
প্রাণের রোচ্য লীঢ়
চলুক জীবন প্রাণের বুলে
বিহান আসবেই স্থির



শনিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 26/12/2020, শনিবার
               সময় :- রাত 09 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


   শীতের সেই রাতদিন
   ডঃ রমলা মুখার্জী

শীত ক্রমশ বিলীয়মান সঙ্গে নিয়ে শীতের পিঠে-
মা বানাতেন ঝাল-নোনতা,কিছু আবার বেশ মিঠে।
পিঠে তৈরির পাঠ আজ আর রান্নাঘরে নেই-
মন চাইলে দোকানে বা মেলার মাঠে পাই।

রোদে পিঠ দিয়ে ঠাম্মি দিতেন গহনা বড়ি-
মায়ের আমলে গোল-গাল,স্বাদে আহা মরি !
কোনটা মশলা,কোনটা মুলো, কলাই-মুসুর বড়ি-
এখন বড়ি দোকানে,প্যাকেট কিনে ঘরে ফিরি।

হারিয়ে গেছে শীতের কাঁথা,যুগটা বড় আধুনিক -
রকমারি বাহারি কম্বল,আগাগোড়া সিন্থেটিক।
হাল্কা শীতে মা বানাতেন পাতলা  পাতলা সুজনি কাঁথা,
ওঃ,সে কি আরাম! মায়ের পরশ পা থেকে মাথা!
বাবার কাঁথায় ফুল,লতা,সুন্দর সে নক্সি-কাঁথা-
ঠাম্মী তুলতেন কাঁথাতে নক্সা,সে সব এখন গল্প কথা।
পুরনো কাপড়, পাড়ের সুতোয় অপরূপ শিল্প গাঁথা-
খুব শীতে ঠাম্মী নিতেন মোটা একটা লেপ-কাঁথা।
লেপ-কাঁথা লেপের মত,বেশ মোটা আকারে বড়-
আমিও ঢুকে পড়তাম তাতে ভীষণ শীতে হলেই জড়ো।
মা-ঠাম্মির গল্পগুলো কাঁথায় আছে সেঁদিয়ে-
নিখরচার কাঁথা-শিল্প কোথায় গেল  হারিয়ে!








এশিয়াড
  বদরুদ্দোজা শেখু


নাতিদূরে দেখা যায় এশিয়াড গ্রাম
ঝিলমিল আলোর লহরী জাগে আচ্ছন্ন বিভায়
মাঠময় ইতস্ততঃ , নবম এশিয়াড ক্রীড়াচক্রের অকুস্থল
আধুনিক সবরকম সুযোগ সুবিধা সমন্বিত, দেশি বিদেশী
দর্শক সমর্থক ভাষ্যকার ইত্যাকার বিশিষ্ট জনেরা
এলেন গেলেন লাখ লাখ , ভিড় সামলাতে
বাইপাস উড়ালপুলে ছেয়ে গেল রাজধানী
আর অক্লেশে উচ্ছেদ হলো হকার ভিক্ষুক উদ্বাস্তু
অবাঞ্ছিত প্রাণীকুল , রাজধানী সুন্দর হলো অসম্ভব
দ্রুততায় জরুরী ভিত্তিতে ।
যথাসাধ্য স্বচ্ছন্দ করা হলো অতিথি-কুলের  ভ্রমণ - যাপন।

চিত্ত-আলোড়ক সেই এশিয়াডে আয়োজক দলের সাফল্য
বড়োই করুণ , আশি কোটি ভারতবাসীর মাথা নত অজন্মা অনাথ।
অবশ্য বিশাল এশিয়াড আয়োজন সংগঠন
নিরাপত্তা বিধান বিলক্ষণ গৌরবের বটে ,
বিশেষতঃ জায়মান প্রচার -মাধ্যমে আর সরকারী মহলের
বিত্তদুষ্ট চালচক্রে , আত্মতুষ্ট  বেহায়াপনায় ।

এশিয়াড উপলক্ষ্যে দিল্লীর চেহারা হালফিল হলো
প্রসাধন বিনোদন সুরক্ষার সুচারু ব্যবস্থাপনায় , অসহায়
দেশবাসী অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-স্বাস্থ্যের কাঙাল,
এক পা-ও এগোলো না , ক্রীড়া জগতের উন্নয়নে
সরকারী প্রয়াস নাই , মদত নাই ,
পরিকল্পনা নাই , বাজেট বরাদ্দ নাই ,
দীর্ঘমেয়াদী কোনো লক্ষ্য নাই , পরিকাঠামো নাই,
দেখে শুনে মনে হয় এশিয়াড গ্রাম
অধুনা অকেজো । চমৎকার , চমৎকার কেন্দ্রীয় সরকার ।

আকস্মিক সন্ত্রাস রোখার অজুহাতে
আগে থেকে ছকে'-দেওয়া সফর-পঞ্জীর আনুকূল্যে
সীমিত বহরে সাজানো শহর দেখে বিদেশীরা
এদেশের প্রকৃত স্বরূপ দেখার উপায়
পেলেন না কিছু , রাজধানী থেকে অবাঞ্ছিত
উদ্বাস্তু হকার ভিক্ষুক কুলিমজুর
বিমুক্ত রাখার পরিকল্পনার ধন্য সুচারু নিষ্ঠায়, নিশ্ছিদ্র
নিরাপত্তার প্রয়োগে ।
দেশবাসী ধন্য হলো
অগ্নি-পরীক্ষার উত্তরণে , সংবাদের
সাধুবাদে , এশিয়াডের শিক্ষায় , ধন্য ,
ধন্য  গণতান্ত্রিক সরকার !!




মনকেমনের কথা
মোহর ভট্টাচার্য্য

মনকেমনের কথা রা  আজ একলা,
চেয়ে তোমার উপস্থিতি।
ওরা চায়না নিজেদের  উত্থাপন করতে।
তুমি কোথাও আছো এই বিশ্বাসে থাকে জীবিত।
আমি শুনে চলি ওদের তোমাকে চাওয়ার তাগিদের কথা।
জানতে চাওনি তুমি কোনোদিন ওদের কথা
তবুও ওরা বাঁচে তোমার উপস্থিতির অপেক্ষায়।
মনকেমনের  কথা রা আজ বড় একলা।






এক অসমাপ্ত বন্ধুত্ব
আব্দুল রাহাজ

ওরা তখন ছোট গ্রামের পাঠশালায় পড়াশোনা করত সে আজ থেকে দশ বছরের আগের কথা এখন আর তার সাথে দেখা নেই সব যেনো দিনগুলো এলোমেলো  হয়ে গেল। গ্রামটির নাম ছিল মধুপুর নদী-নালা গাছপালা আবৃত এই গ্রাম পরিবেশের সাথে তাল মিলিয়ে চলত বেশ মানুষগুলো ছিল অতি সরল সাদাসিদে সবাই একসাথে বসবাস করত‌। সেরকমই সামাদ এর জন্ম ওই গ্রামের এক প্রান্তিক দুবেলা-দুমুঠো খেতে না পাওয়া ঘরে খুব কষ্টে সামাদের ছোটবেলা কেটেছে ভাগ্যিস গ্রামের স্কুলের পাঠশালায় বৃত্তি পেয়েছিল নইলে তাদের অভাবে এখনো থাকতো। এখন সামাদ শহরে থাকে একজন মস্ত বড় ব্যবসায়ী হয়েছে তার সাথে সাথে গ্রামের ছেলে দের নিয়ে গ্রামটি কেউ উন্নতি করছে। গ্রামের পাঠশালায় পড়াকালীন পাঠশালার পন্ডিত রওশন আলী একমাত্র মেয়ের সাথে তার বন্ধুত্ব তার সাথে বাল্যকাল শৈশবকাল সখা নদীর পাড়ে কত গল্প কত খেলা সব জানো মনের মনিকোঠায় সামাদের স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে।তারপর আর দেখা হলো না এখন কে কোথায় সব যেন এলোমেলো হয়ে গেল সামাদের এখন এসব কথা মনে পড়লে কোথাও যেন অসমাপ্ত থেকে যায় তাদের এই বন্ধুত্বের মধ্যে কিন্তু যে স্মৃতি তা যেন কোথাও পূরণ করে দেয় ‌।






উমর ফারুক এর দুটি কবিতা

সর্ষেফুল
উমর ফারুক

হাঁটছি যেদিক সর্ষেফুল
দেখতে ভালো খুব রঙিন
সুরভী মাথা ঘাস ঘুমায়
হয়েছে তারা আজ প্রবীণ।
শিশির কণা জমছে বেশ
পাতায় পাতায়  বিন্দু জল
সবুজ পাতার ছত্রতে
পৌষ গড়েছে পূর্ণ দল।
শুন্য হয়ে ও গগন হে..
সুর্য কেন তাতছে কম
মিঠা রোদের ছায়া খেয়ে
সর্ষে গলে হচ্ছে মোম।

  সর্ষে ক্ষেত
উমর ফারুক

এই ক্ষেত কুয়াশার জন্য
ভিজে পা পথটা বিপন্ন
একা রব একজন এ ক্ষেতে
ভাললাগা মিশে যায় যেতে যেতে।
হেঁটে যায় মনটা উচ্ছন্ন
ফিরে চাই পিছনে অরণ্য
ফুল দিয়ে সাজানো ওই ক্ষেতে
রঙ লাগে পরনের বসনেতে ।
সবুজের পতাকাই সর্ষে
একা মন কি যে ভয় করছে!
নির্জন নিহারিকা ফাঁকা মাঠ
দেখা যাই সুন্দর দূর হতে ।
কি ভালো লাগছে কি ভালো!
পুব কোনে ডুবে যায় সূর্য
দেখা যায় প্রকৃতির ঐশ্বর্য্য
ঝিরি ঝিরি শিশিরও বর্ষে।





সত‍্যকেরে ভালোবাসিলাম
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

সত‍্য কথা কইলেরে ভাই,ঢেলা ছুঁড়ে মারে।
আঘাত লাগে,যন্ত্রনা হয়,চেতনাতিন মনে।
শাক দিয়ে মাছ যাইনা ঢাকা,বুঝবি আর কবে।
সত‍্য একদিন উঠবেই জ্বলে,ধংসের নিষান হয়ে।
মিথ্যা আর অসত পাপের,ফল ভোগকরবি সব।
সত‍্যের কাছে হারমেনে,মিথ্যা হবে বেলুন ফট।
তাইনা ভেবে,তাই আমি,করছি স্বপথ আজ।
সত্যকেরে তাই ভালোবাসিলাম।
সত‍্যকেরে ভালোবাসিলাম।।

সোমবার, ২১ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/12/2020


উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 21/12/2020, সোমবার
               সময় :- রাত 09 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


      পর্ণমোচী
         পিনাকী  মুখার্জী
 
         জাঁকিয়ে  যখন  কনকনে শীত
              বইছে   হাওয়া  উত্তুরে  !!
          কাঁপছে  হাওয়ায়  পর্নমোচী , দেখা
                 আদুড়  গায়ে  রোদ্দুরে  !!

                এসেছে  শীত ,  মর্মর  শুনি
                     তবু  আনন্দে  নাচি  !!
               নূতন  রূপে আসবে জীবন
                      সবুজ  কচি - কচি  !!

              পোশাক  বদল  নয়তো  স্বভাবে ,
                      যজ্ঞে  পূর্ণ   আহুতি  !!
                 আসতে  হবে  নব নবরূপে ,
                      যজ্ঞই   তার  নিয়তি  !!

                  সাথী  ঝরাপাতা , ঐ শুকনো
                    ডালে ,  আগুনের  ফুলকি  !!
                    লক্ষ বুকে জীবনের নামে
                         লেখা  হল  উল্কি  !!





আমি তাহাদের কবি
বিপ্লব গোস্বামী

আমি কবি ভাই ভিখারিনীর ছেলে;
আমাকে পাবি তোরা দীন জনের মেলে।
আমাকে পাবি তোরা কৃষাণের মাঠে;
আমাকে দেখবি তোরা মাঝিদের ঘাটে।
আমাকে দেখবি তোরা ঠেলতে ঠেলা গাড়ী;
আমাকে পাবি তোরা মুচীদের বাড়ী।
আমাকে পাবি তোরা রাখালের সনে;
আমাকে দেখবি তোরা ধেনু সনে বনে।
আমাকে দেখবি তোরা হাল নিয়ে মাঠে;
আমাকে পাবি তোরা কুমারের হাটে।
কামার,কুমার,ছুতর সবই আমার সাথী;
ফুঠপাতের হাটে মোরা নিত‍্য দোকান পাতি।





পবিত্র ভালোবাসা
     -শান্তি দাস

স্রষ্টার সৃষ্টি ভালোবাসা  নির্মল শাশ্বত, সুন্দর অমলিন।
এই প্রেম ভালোবাসা‌ বাহ্যিক সৌন্দর্যে নয় অন্তরের আকর্ষণ।

প্রেম ভালোবাসা জীবনের অঙ্গ এক অনন্য আবেগ,
কখন ও করে বিধ্বস্ত কখন ও আশ্বস্ত চিরন্তন সত্য।
মা বাবার ভালোবাসা স্নেহের বন্ধনে আবদ্ধ, অবিনশ্বর।

পরিণত যৌবনে বসন্তের ছোঁয়া,
প্রণয় বিরহের শাশ্বত প্রেমের নব অধ্যায়।
ভালোবাসা ত্যাগের জীবনকে করে ঐশ্বর্য্যবান
জীবনকে করে দুর্বিনীত গতিশীল।

ভালোবাসার রঙ মেঘলা আকাশে কখনো রামধনু,
কখনো সন্ধ্যার দিবাকর, অমাবস্যার রাত প্রদীপ তারা,
যামিনীর আকাশে মনোলোভা চাঁদ এটা চিরন্তন।

ভালোবাসা অন্তরের অন্তঃস্থলে অনুভব করা,
মনের গভীরে বিনে সুতোয় গাঁথা অদৃশ্য বন্ধন,
জীবনের পরিপূর্ণতার আবাস্থল,প্রাপ্তি দুর্বার প্রেমসুধা।

কর্মক্ষেত্রে পারস্পরিক প্রেরণা ভালোবাসা,
হয় কল্যাণকর, সম্পর্ক হয় নিগূঢ়।
আবহমানকালের সৃস্টি তাই রেখেছে করে মহান
শিল্প, সাহিত্য  সৃজনশীল স্থাপত্য ভাস্কর্যে।






                এই শীত
           হামিদুল ইসলাম
             
শীত শীত করে
পাগল হয়েছিলাম একদিন
এখন ঘরের দুয়ারে শীত
শীতে আমি নিদ্রাহীন  ।।

শীত আমার প্রেয়সী
শীতের জন‍্য‍ে দাঁড়িয়ে থাকি পথের বাঁকে
কুয়াশা মাখা প্রভাত
হাতছানি দিয়ে প্রতিদিন আমায় ডাকে ।।

আমি প্রেয়সীর কাছে যাই
প্রাণ খুলে সামনে দাঁড়াই
মন ভরে ওঠে
শীতের জন‍্যে হাত বাড়াই  ।।





অভিনব শো-য়ে
বদরুদ্দোজা শেখু


অভিনবত্ব-মাতাল আমি ধ্বনি-আলোকের শো-য়ে
বসেছি সন্ধ্যায় লাল কেল্লার অন্দরে, ইতিহাসের শুঁড়িপথ ব'য়ে
উঠে এলো টগবগে ছুটন্ত অশ্বের হ্রেষা, সংগীত -নৃত্য-মহলের ঝংকার
চুড়ি ও নূপুর-ধ্বনির  টুংটাং অনুরণ  থেকে ঝলসিত অস্ত্রের টংকার
ঘটনা-পরম্পরা ইমারতগুলো থেকে, এক ঘন্টার অনুপুঙ্খ মহড়ায়
উচ্চকিত হলো স্নায়ুতন্ত্র আবিষ্ট বিহ্বল , যেন চোখ রগড়ায়
আঁধারে শ্বাপদকুল, পুষ্পিত রমণীকুল হামাম-মহলে
যমুনা-বিলাস করে সোহাগে আদরে , ইশারায় ফিসফাস কথা বলে ।

মুঘলশাহীর আলেখ্য ঘটনাক্রম শেষ হলো, সময়ের গ্রন্থিগুলো থেকে
কতো কিছু ঝ'রে পড়লো পলকে পলকে, প্রত্নলোকে নিয়ে - গেলো ডেকে
রুদ্ধশ্বাস শো-য়ের ব্যঞ্জনা, আনমনা কখন্ হয়েছি মনে নাই
মোহাবিষ্ট ব'সে আছি অতীত-রচনাকারী শিল্পিত সভায়
শ্রোতারা সবাই উঠে গেছে একে একে , আমি ব'সে আছি ---
'চলিয়ে বাবুজী' -- মার্শাল ডাকলো এসে স্নায়ুচর বিস্ময়ের কাছাকাছি - - -






অনুগল্প
মাঠের সেই তেঁতুল গাছ
   আব্দুল রাহাজ

গ্রামের মধ্যে পূর্বদিকে সুবিস্তীর্ণ মাঠ সেখানে আছে বহুযুগের তেঁতুল গাছ তার সামনে কিছুটা দূর গিয়ে একটা স্কুল।স্কুলের ছেলে মেয়েদের টিফিন বেলা কাটে ওই তেঁতুল গাছ তলায়। গ্রামের বেশিরভাগ ছেলে-মেয়ের ছেলেবেলা কাটে তেঁতুল গাছের নিচে খেলা করে ‌‌। গ্রামের প্রবীণ মানুষেরা গ্রীষ্মকালে ছেলেমেয়েদের নিয়ে তেতুল গাছের গল্প করতেন। সেদিন ছিল পূর্ণিমার দিন আলী চাচা সিদ্দিক করিম রহিম আল আমিন সবাইকে নিয়ে গল্প করছে। করিম বলল দাদু আজকে তেঁতুল গাছের গল্প শুনবো ও আচ্ছা আচ্ছা শোনাবো একটু হেসে নিলেন হো হো করে ‌। আলী দাদু শুরু করলেন সেদিন মেলার দিন আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে মেলায় গিয়েছিলাম সেদিন বাড়ি আসতে রাত হয়েছিল আমাদের মধ্যে আমার এক বন্ধু মরেনি দেখতে পেলেও তেঁতুল গাছের তলায় অদ্ভুতভাবে কি একটা জ্বলছে আমরা তখন দৌড়ে ছুটে অন্য রাস্তা দিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে দৌড়ে বাড়ি ফিরলাম। তারপর আমার দাদুর কাছে ওই তেঁতুল গাছের এক অদ্ভুত গল্প শুনলাম নাকি তেঁতুল গাছ তলায় সোনার কলসি ও তার পাশে সাপ আছে একবার একটা লোক এসে ওটা নেওয়ার চেষ্টা করলে সাপের কামড়ে তার প্রায় সবাই হা করে শুনতে থাকে‌। এদিকে এশারের নামাজের আজান শোনা যাচ্ছে ওরা দৌড়ে সবাই বাড়ি চলে গেল এই তেতুল গাছের কথা শুনে আর কেউ আর তেঁতুল গাছ তলায় খেলতে যেত না তারপর থেকে তেঁতুল গাছ বড় বড় গাছের সাথে জড়িয়ে বিশাল আকার ধারণ করল ওখানে এখন সাপের বাস গ্রামের মানুষেরা আর কেউ যায় না মোটামুটি পাশে একটা পুকুর ছিল তাই ওর নাম হল মাঠপুকুরের তেঁতুল গাছ‌‌।







গদ্য কবিতা   
      উপাধি প্রাপ্ত শাল
  সুস্মিতা দে

আজ খুব শীত লাগছে
গায়ে চাদর টি মুড়িয়ে নে।
রাখা চাদর ঘরে
এই টি চাদর নহে ।
এই টি শাল বলে।
দেখি দেখি খুকি শাল কি?

এই শীতে শরীরে গরম দেয়
এই টি শাল সবাই অবাক চোখে
তাকিয়ে দেখে কি অপূর্ব শোভা
সুন্দর কারুকাজে শাল
মোলায়েম কতো?

এই খুকি কোথায়
পেলি শাল। বকবেনা
মাগো কাল  নদীর ধারে
গাছের নীচে হারিকেন
  আলোর তলায়
একজন বুড়ো মানুষ
বসেছিলতিনি আমাকে
  আমার গায়ে জড়িয়ে দেন
    আমি চাইনি মাগো ।
    তিনি কে জানো? তিনি হলেন
    স্বয়ং ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর
   মহাশয়ের কাছ থেকে পাওয়া
              এ শাল।

শাল টি কে ব্রিটিশ
সরকার সন্মানিত
করেছিলেন উপাধি সরূপ
আমি  তখন নদীর
তীরে বসে উনি দিয়েছিলেন।
গ্রামবাসী দেখে নিশ্চিত হন
বোঝেন উনি কেউ নয় তা
দয়ার  সাগর বিদ্যাসাগর
মহাশয়ের উপাধিপ্রাপ্ত শাল
খুকির শতো ছিদ্রো শাল দেখে
তিনি নিজের শাল দিলেন তবেই
তফাৎ কি? কে? 
দয়ার সাগর বিদ্যাসাগর ।
জনহিতকর কর্ম সৃষ্টি করে ধর্ম ।

রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/12/2020


 Upokontha sahitya patrika -20/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 20/12/2020, রবিবার
               সময় :- রাত 08 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


জীবনের প্রলাপ
   অমিত মজুমদার

সীমার প্রাচীর গেঁথেছো চেনা মুখে,
তবুও প্রশান্তির ছাপ পাওনি খুঁজে তুমি।
প্রহর গুনেছি অনেক, আগুনকে সাক্ষী রেখে।
জীবনকে ঠিক মিলিয়ে দেয় মৃত্যু অভিমানী।

বেঁচে আছি, এসবই তো জীবনের প্রলাপ!
জীবনে নিরন্তর অভিনয়ের পাঠ শেখা, ক্ষতি কি তাতে?
স্মৃতি সুধায় ফুটে ওঠে হারানো সংলাপ...
মুহুর্তরা শুধু বেঁচে থাক, অসময়ে ওরাই তো ফুল হয়ে ফোটে!

বন্ধ জানালায় উপেক্ষিত হয়ে আছে রোদ,
তবুও অন্ধকারে মুছে যায়না কোনো কালো।
জীবন প্রবাহের কাছে ঢাকা পড়ে সমস্ত প্রতিশোধ।
কারণ, কিছু হেরে যাওয়া জেতার থেকেও বড়!

নামুক সন্ধে, আছড়ে পড়ুক বিষাদের কান্না।
কিছু দাগ থেকে যাক মনেরই গভীরে...
হারিয়েছি মনের মাস্তুলে বাঁধা শেষ ঠিকানা,
আছে কজন মানুষ যারা সময় কে বেঁধে রাখে?
               
          



বিপ্লব গোস্বামীর এক গুচ্ছ ছড়া

১৷
        সংখ‍্যার ছড়া

  এক দুই তিন চার
এসো গুণি বার বার।

     পাঁচ ছয় সাত
এসো গুণি একসাথ।

     আট নয় দশ
   গুণবি যদি বস।

২৷
ছয় ঋতুর ছড়া

বৈশাখ জ‍্যৈষ্ঠ গ্ৰীষ্ম ঋতু
বর্ষা আষাঢ় শ্রাবণ।

ভাদ্র আশ্বিন শরৎ ঋতু
হেমন্তে নবান্ন পার্বণ।

কার্তিক অগ্ৰহায়ণ হেমন্ত ঋতু
পৌষ মাঘ শীত।

ফাল্গুন চৈত্র বসন্ত ঋতু
কোকিল গায় গীত।

৩৷
সাত বারের ছড়া

শনিবারে অর্ধ ছুটি
রবিবারে সব বন্ধ।

সোমবারে বিদ‍্যালয় শুরু
মঙ্গলের পর বুধ আসে
বজায় রেখে তার ছন্দ।

বুধের পর বৃহস্পতি আসে
বৃহস্পতির পর শুক্র,
বারের পরে বার আসে যায়
ধারাবাহিক তার চক্র।

৪৷
দশ দিকের ছড়া

পূর্ব দিকে সূর্য উঠে
পশ্চিমে যায় অস্ত।
উত্তরেতে হিমালয় পর্বত
দক্ষিণে সাগর মস্ত।

উত্তর-পূর্ব কোণ মিলে
ঋশাণ দিক হয়
দক্ষিণ-পূর্ব কোণ অগ্নি দিক
সর্ব লোকে কয়।
দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ নৈঋত দিক
কম্পাস মতে হয়,
উত্তর-পশ্চিম কোণ বায়ু দিক
জানিও নিশ্চয়।

উদ্ধ মানে আকাশ আর
অধঃ মানে পাতাল,
জেনে নিলাম দশ দিকের নাম
এবার হবো আনন্দে উত্তাল।

৫৷
আ-কারের ছড়া

মা বাবা ভাই
যার আপন নাই
তার নাই ঠাঁই।

মায়া-মমতা
মান-সম্মান
করা যায় না দান।

মাঠ ভরা ধান
চাষা গায় গান।

রাখাল বালক যায়
বাউল গান গায়।

বাউল গান গায়
টাকা পয়সা পায়।

৬৷
কার চিহৃ হীন ছড়া

সৎ যত জন
সরল হয় মন।
দশজন কয়
অসৎ কপট হয়।

অলস অধম হয়
সব জন কয়।

সৎ পথ সরল নয়
সব জন এমন কয়।

৭৷
গৃহপালিত ও বন‍্যপ্রাণীর ছড়া

বাঘ সিংহ মাংস খায়
লোকে বলে বন‍্য।
বিড়াল কুকুর গৃহপালিত
ওরা খায় অন্ন।

গরু ছাগল গৃহপালিত
ওরা খায় ঘাস।
হরিণ গণ্ডার তৃণভোজী
বনে করে বাস।

৮৷
স্মরণে রেখো

কখনো বলো না
মিথ‍্যা কথা,
কখনো মেনো না
কু-প্রথা।

সৎ সঙ্গ হয় যেথা
প্রতি দিন যেও সেথা।

৯৷
কার কি কাজ

নানা অংশে অবয়ব
জানি আমরা সব,
কার কি কাজ বলে যাই।

দুই চোখেতে দর্শন
দুই কানেতে শ্রবণ।
এক নাকেতে গন্ধ পাই।

১০৷
মনে রেখো

শরীর শুদ্ধ হয় স্নানে
মন শান্ত হয় ধ‍্যানে।
চিন্তা দূর হয় গানে
ধন-সম্পদ বাড়ে দানে।






ক্ষুধার জ্বালা
   আব্দুল রাহাজ

ক্ষুধার জ্বালা
রে ভাই রে ক্ষুধার জ্বালা
ক্ষুধার কাতর হয়ে চিৎকার করছে ওরা।
ওরা যে মারন কাতর
ওই ক্ষুধার জ্বালায়
আহা কেউ কি নেই
ওদের এ জ্বালা মেটাতে পারে
ওরা যে ক্ষুধার জ্বালায়
মারন‌ কাতর ।





বিষয়ঃপ্রবন্ধ
উপেন্দ্রকিশোরের রচনা ও ছাপাখানা
ডঃ রমলা মুখার্জী(ব্যানার্জী)

বাংলার বুকে সবুজের সুখে
বয়ে যায় বহুনদী
ছোটদের নিয়ে মন রঙ দিয়ে
ভাবেন প্রথম যদি
তিনি আমাদের শিশু জগতের
উপেন্দ্রকিশোর চৌধুরী
শিশু-কিশোর মজায় বিভোর
গল্প-জাদুর বাহাদুরি।

কিশোর সাহিত্য রচনার পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে জানাই অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা ও প্রণাম। তাঁর শিশু সাহিত্যে অবদান অনেকেই জানি, কিন্তু তাঁর মুদ্রণ শিল্পের কথা অনেকেই হয়তো জানি না। শিশু কিশোর সাহিত্যের জন্য তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা সত্যই প্রশংসনীয় ও চিরস্মরণীয়।
    শিশু-দোসর উপেন্দ্রকিশোর তাঁর দূর সম্পর্কের কাকা হরিকিশোর রায়চৌধুরীর দত্তক পুত্র। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল কামদারঞ্জন। তাঁর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন ঐ আত্মীয় তাঁকে দত্তক নেন এবং নাম বদলে রাখেন উপেন্দ্রকিশোর।
    উপেন্দ্রকিশোরের বাবা কালিদাস চৌধুরীর পাঁচ পুত্র ও তিন কন্যা ছিল। উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন পিতার দ্বিতীয় পুত্র। কালিদাস চৌধুরী ছিলেন নানা শাস্ত্রে পণ্ডিত, সেই কারণে মুন্সী শ্যামসুন্দর নামে তাঁর খ্যাতি ছিল।
    ময়মনসিংহ জেলার মাসুয়া গ্রামের বিখ্যাত ছিল জমিদার চৌধুরী পরিবার। এই পরিবারে উপেন্দ্রকিশোর ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ১২ই মে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়াশোনা করেন ও ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পাশ করার পর প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু পরে তিনি কলেজ পরিবর্তন করেন ও ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউট থেকে বি.এ পাশ করেন। ক্রমশই শিশু সাহিত্যিকের মনের মধ্যে শিশুদের জন্য বই লেখার প্রবল ইচ্ছে ডানা মেলতে থাকল, কারণ উপেন্দ্র অনুভব করলেন বাংলাতে শিশু সাহিত্য খুবই অবহেলিত। এই ইচ্ছে ডানায় ভর দিয়ে তিনি ছোটদের নানান বিষয়ের বই একদিকে যেমন পড়তে থাকলেন, অন্যদিকে ছোটদের জন্যে লিখতেও লাগলেন। আমরা পেলাম তাঁর অসামান্য সেই সব গল্প- টুনটুনির গল্প, বাঘের গল্প, ছেলেদের রামায়ণ আরো কত কি, শিশু কিশোরের প্রবন্ধগুলিও তাঁর অনবদ্য- সেখানে আছে আকাশের কথা, পুরানো দিনের জীবজন্তুর কথা, এমন কি মুদ্রণশিল্পের কথাও তিনি লিখে গেছেন। কিন্তু শুধু লিখেই উপেন্দ্রকিশোর ক্ষান্ত হলেন না। তিনি খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারতেন- তাই ছোটদের লেখার সঙ্গে জুড়ে ছিলেন উপযোগী মজার মজার সব ছবি আর পরিকল্পনা করলেন ছোটদের জন্য বই প্রকাশ করার। তাঁর এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেবার জন্য তিনি ছবি এনগ্রেভিং সম্বন্ধে পাঠ নিতে লাগলেন- সত্যই কি তপস্যা, কি সাধনা- ভাবতেই অবাক লাগছে তাই না? এখনও পরম আশ্চর্যের ব্যাপারটাই বাকি।
  ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ইউ রায় এন্ড সন্স’ নামে উন্নত এক ছাপাখানা, সেখানকার যন্ত্রপাতিগুলি তিনি বিদেশ থেকে আনিয়েছিলেন। বিপুল সম্ভারে সজ্জিত হল সেই প্রেস। এমনকি ছবি আঁকা ও ছবি তোলার স্টুডিও প্রেসে হল। হাফটোন ছবি ও ছাপার বিষয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে লাগলেন। সে এক গভীর গবেষণা। এই বিষয়ে তাঁর রচিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হল বিলেতের ম্যাগাজিন ‘পেনরোজ অ্যানুয়ালে’ এবং প্রবন্ধটি উচ্চ প্রশংসাও পেয়েছিল। এই সূত্রেই এই পত্রিকার সম্পাদক মি.গম্বেলের সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোরের একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে আর তাঁরই চিঠি নিয়ে তাঁর পুত্র সুকুমার রায় লন্ডনের এল.সি.সি স্কুল অফ ফটো এনগ্রেভিং এবং লিথোগ্রাফিতে পরে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে ডিসেম্বর এই শিশু সাহিত্যের পথিকৃতের জীবনাবসান হয়, কিন্তু আপামর বাঙালির কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবেন শিশু সাহিত্যে তাঁর বিপুল অবদানের জন্য।

ছড়ায় মজিয়ে ছবি সাজিয়ে
উপেন রচেন রামায়ণ-
ভ্রমণ, গল্প অরূপ কল্প
হাজার তারার রূপায়ণ।
আঁকেন ছবি যুগের নবী
ক্ষান্ত এতেই নন-
শিশু-মিত্র বই সচিত্র
প্রকাশেও ব্রতী হন।
লেখায় রেখা নিউ ক্যামেরায়
নিজ তৈরী প্রেস-
শিশু-সাহিত্যের নতুনত্বের
দিগন্তের উন্মেষ।
সুকুমার-পিতা উজল সবিতা
দেখালেন আলো-পথ
জ্বেলে প্রদীপ সত্য-সন্দীপ
ওড়ালেন জয়রথ।
 






কেন এত বিভেদ
নরেন্দ্র নাথ নস্কর

ঈশ্বরের সৃষ্ট অনান্য জীবের মত মানুষের  বায়োলজিক্যাল বৈশিষ্ট সারা পৃথিবীতে এক রকম।

ভাষা ভিন্ন হতে পারে, রঙ বিভিন্ন হতে পারে, মত নানা রকম হতে পারে, খাবারের বৈচিত্র বিভিন্ন হতে পারে ,  ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতির পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু মানুষের বায়লোজিকাল চরিত্র, যেমন শারীরিক গঠন, ফিজিওলোজিক্যাল ফাংশন, ব্লাড  গ্রুপের চারটি গ্রুপ ও অনান্য কিছু বিজ্ঞান ভিত্তিক মানুষের  বৈশিষ্ট যেমন চিন্তা করার শক্তি, ভালো মন্দ বিচার করা, ইত্যাদি প্রায় সারা পৃথিবী ব্যাপি এক রকমের দেখা গেছে।

বিজ্ঞানীদের মতে মানুষ জাতির   উৎস, অর্থাত অরিজিনও কালো, সাদা সবার সুদুর আফ্রিকায় আনুমানিক
315000 বছর আগে।

তাদের আগের নাম হোমো ইরেক্টাস ও পরে  ক্রম বিবর্তনে বর্তমান নাম হোমো স্যাফিনিস।

এরাই আফ্রিকা থেকে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশ ও দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

কেউ বা মঙ্গলয়েড আর কেউবা ককেসিয়ান রূপে বর্তমানে বিরাজিত।

পৃথিবীর বয়সের তুলনায় বা অনান্য জীব কূলের তুলনায়, মানুষ জাতি খুব নতুন, মাত্র কয়েক লক্ষ বছর।  ভাষা শিখেছে  মাত্র 50 হাজার বছর।

তবুও এরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে চলেছে।
সামান্য কারণে অহঙ্কারের বশবর্তী হয়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানুষ নিজেদের  কারণেই একদিন হয়ত ধ্বংস হয়ে যাবে।

সম্ভাব্য কারণগুলি হল বিশ্ব উষ্ণতার হেতু, পারমানবিক যুদ্ধ, কৃত্রিম বুদ্ধির অহেতুক  প্রয়োগ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর  অপপ্রয়োগ  ও অনান্য কিছু মানুষের তৈরী  কারণ ।

ডাইনোসরের মত হয়ত মানুষ একদিন পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবু ডাইনোসর পৃথিবীতে ছিল প্রায় 16 কোটি বছর।
কিন্তু মানুষ কি অত দিন পৃথিবীতে থাকবে? সন্দেহ আছে।

আগে বলেছি পৃথিবীতে এসেছে মাত্র কয়েক লক্ষ বছর, আর কথা বলতে শিখেছে মাত্র 50 হাজার বছর।

কয়েক বছরের মাত্র আয়ু।
খুব বেশি হলে 100 বছর।

যদিও বর্তমান পৃথিবীতে মোটামুটি গড় আয়ু  দেশে দেশে সামাজিক কারনে, অর্থাৎ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, খাদ্য, স্যানিটেশন, ও অনান্য কিছু কারণে একটু ভিন্ন।
তবে  65 বছর থেকে 85 বছরের মধ্যে।
এর কমও হতে পারে আবার কোন দেশে কিছু বেশি হতে পারে।

এই কম সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসে  নিজেদের মধ্যে এত হিংসা, ঈর্ষা, মারামারি, যুদ্ধ, ধংস,  লোভ করে শুধু নিজেদেরই ক্ষতি ডেকে আনা ছাড়া আর কি হয়?

এতে কি কিছু ভালো কোন যুগে হয়েছে?

ধর্মের নামে, দেশ অধিকারের নামে, আধিপত্য বিস্তারের নামে,  অযথা যুদ্ধ করে পৃথিবীতে নিজেদের ক্ষতি করছে কখনো কখনো।

বিজ্ঞান যে উন্নতি করছে সেগুলোর সুফল পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ঠিক মত অনেক জায়গায় পাচ্ছে না, অনেক স্থানে পেলেও খুব অপ্রতুল।

মানুষের ভালো গুন বিকশিত না করে, জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ ও মারামারি করে  নিজেদের বুদ্ধিকে শুধু অপচয় ছাড়া আর কিছু কোনদিন হয়নি।

বিজ্ঞানকে যদি ভালো কাজে লাগায় ভালো, নইলে এই বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগে পৃথিবীতে মানুষ ধংস হয়ে যেতে পারে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষে মানুষে বিভেদ করে মানব সভ্যতার কোন উপকার হবে না, বরং ক্ষতিই হবে।

তাই ক্ষতি রুকতে যে কোন বিভেদ নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়া একমাত্র উপায়।

দেখা গেছে  অন্যের, অন্য দেশের ভালো করলে শেষে মানুষের ভালো হয়।

"মানুষের তরে মানুষ আমরা,
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"।





গাঁদা ফুলের মালা
সুস্মিতা দে

যাবো আমি নাচ দেখতে বাঁদর নাচ
বিনামূল্যে দেখবো না আমি কহেছি
তো হাজার বার ।রাধিকা দোলে
কৃষ্ণ দোলে দাও কতো পয়সা ঢেলে।

ময়ূর নাচে পেখম তুলে দাও না
কোন পয়সা তাকে , উতলা বাতাসে
মুক্ত গগনে সবাই  খেলি নাচি ।
এক সাথে রাইকৃষ্ণ দোলে ফুলে
মালা গাঁথো সবাই মিলে মিশে ।

আমার মাথার চুলের খোঁপাতে
একটি মালা অবহেলার ফুলে
মা তুমি কেনো দাও  না । দাও
তুমি পড়ো নিজের  চুলে।

আনা এক দাও ,
দেখবো বাঁদর নাচ 
সবাই মিলেমিশে এক
আনাতে দেখবো। নিয়ম তাই।

তবে চলো সবাই মিলে মাথায় দিও
জড়িয়ে আমার বাগানের
গাঁদা ফুলের মালা রাঙিয়ে দাও
  আলতা পায়ে যাবো নরম
ছোঁয়ায় সাথে সবুজ ঘাসে
পা রেখে শিশিরের ভেজা
পায়ে  ধুইয়ে দেবে যত সব
  আছে মলিনতা ।
আসবো ফিরে ঘরে
সঙ্গে আনবো ভালোবাসা
কাকে বলে ? আমাদের
পূর্বপুরুষ মাগো আনন্দ
দিতে নাচ দেখিয়ে মাতিয়ে
রাখে মিলনের মধুর হাসি।
মা বলে দু আনা দে এক
আনাতে হয়? হয়না বলে
ফিরিয়ে দিল নিয়ম তো
    এক আনাই ।







হামিদুল ইসলাম এর চারটি কবিতা

              ১)  কিষানের দাবী
              

আজ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ
ব‍্যারিকেড সমস্ত রাস্তায়
অবরুদ্ধ নগরী পরাজিত সম্রাটের কপালে
চিন্তার ভাঁজ
উত্তপ্ত তার উষ্ণীশ  ।।

দিগন্তে চিন্তার কালো কালো মেঘ
ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষের আগমন
কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়
বিপ্লবের মন্ত্র গায়ে মাখে
শীতের শরীর  ।।

মস্তিষ্কে চিন্তার আদান প্রদান
ঝেড়ে ফেলে শাসক দল
বিকল্পের ভাবনা উপেক্ষিত
কোলের শিশু কাঁদে মায়ের বুকে
তবু দুঃসাহসে গর্জায় স্লোগান ।।

আজ অবরুদ্ধ নগরী
অবরুদ্ধ রাজপথ
এক শ চুয়াল্লিশ ধারা ভাঙে দুহাতের কব্জি
আইন তোলো, কথা বলো
কিষানের দাবী মানতে হবে আজ ।।


           ২)    জীবন অসীম
             

ইতিহাসের পাতা উল্টাই
ছায়াময় মানুষ
প্রতিদিন সংগ্রাম করে
দুমুঠো ভাতের আশায় ।।

দেখা হয় না ওদের চক্ষু মেলে
ভোরের পাতাল রেল
হাঁপিয়ে ওঠে জীবন
হঠাৎ চেতণায় বিষ্ফোরণ ।।

তাদের পাশে এসে দাঁড়াই
মৌন মিছিল পেরিয়ে যায় পদ্মপুকুর
জীবন অসীম
তবু মনে মনে ঘেন্না ধরে যায় ।।

        ৩)  জীবন, তোমার জন‍্যে
             

সম্মুখে দেখি জীবন
দাঁড়িয়ে আছে
আমার জন‍্যে  ।।

কতো ভালোবাসি
বন্ধু তোমাকে
তুমি আমার সুখের স্বপন ।।

নিশুতি রাতে জেগে উঠি
হাতড়াই জীবন
এ জীবন লড়াইয়ের পথ  ।।

লড়াই করে বাঁচতে চাই
জীবনের জন‍্যে
জীবন অজানা অরণ‍্য  ।।

অজানা অরণ‍্যে কড়োই ফল
অজানা মোহ
তবু তোমাকে পেতে চাই ।।

              ৪) বাসিফুল
            

দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছি
দূর দূরান্তের ছায়া পড়েছে তোমার চিলেকোঠায়
রামধনু জীবন
মায়ার মোহ রাত্রি বরাবর  ।।

ইতিহাস ভুলে যাই
জীবন অগাধ
তবু দাঁড়িয়ে থাকি তোমার দরজায়
কোনো এক অজানা কামনায়  ।।

ভোরের সুগন্ধ ছড়ায় বাতাসের বেগ
নিষ্পলক চিত্তে খুঁজি
বিরাজিত অরণ‍্য ভূমি
আমার ক্লান্তিরা মিশে থাকে এলোমেলো হাওয়ায় ।।

হাওয়ায় খুঁজি জীবনের অর্থ
এ জীবন অসাড়
তোমার জন‍্যে তুলে আনি ফুল
বাসিফুলে জীবনকে করি যাচাই  ।।




ডাঃ তারক মজুমদার এর এক গুচ্ছ কবিতাঃ-
         
    ছড়ায় ছড়া -(২)
 
বঞ্চনা  যখন ব্যাঞ্জনময়
নিঃশব্দে রক্ত ক্ষরণ
কৃত্রিম  মুখোশ দক্ষতায়
হৃদয় করে হরণ---- ।
      

        ছড়ায় ছড়া - (৩)
      
রক্ষক যখন ভক্ষক
ঘুণধরা সমাজে
মেরুদণ্ডহীন  মানুষগুলো
তক্ষক সময় কোলাজে---।






চন্ডীচরণ
অশোক কুমার রায়

বড় গাইয়ে চন্ডীচরণ
গান ধরিল ফাঁকা মাঠে ।
রামছাগলের হঠাৎ গুঁতোয় --
ঘরেই.এখন দিন যে.কাটে !





দুনিয়াদারী
  অঞ্জলি দে নন্দী মম

রাজনীতি রাজনীতি রাজনীতি।
ব্যাস, সব কিছুর ইতি।
রাজনীতি করছে আজ যত তরুবীথি।
রাজনীতিই এখন সৌহার্দ্য-প্রীতি।
এ ই আজকাল ভবিষ্যৎ, বর্তমান, অতীত-ই।
রাজনীতি ই সম্মানীয়/য়া অতিথি।
সমাজ, সংসারের আসল রীতিনীতি।
হৃদয়ের গীতি।
থাকতে চাও রাজনীতির বাইরে?
তাহলে তোমার এ দুনিয়ায় আর ঠাঁই নাই রে!
রাজনীতি কর!
জীবনকে পুরোপুরি ভর!
রাজনীতি ছাড়া আর কোনো গতিই নাই।
রাজনীতি কর তাই!
এর থেকে সরে থেকে হও না বেওকুব অতি!
রাজনীতিই একমাত্র গতি।
এ ছাড়া পারবে না করতে উন্নতি।
যদি রাজনীতির কাছে স্বীকার না কর নতি,
হবেই হবে তোমার অবনতি।
নিভে যাবে চিরতরে তোমার দেহাত্মার জ্যোতি।
অকালে প্রাণ হারাবার আর ভয়টি নাই।
রাজনীতি করা মানে জীবন বাঁচা।
সাফল্যের চূড়োয় পৌঁছে নাচা।
রাজনীতির বলী হওয়া থেকে
কেউই আজ যাচ্ছে না বাদ।
এ যেন শ্বাস বায়ুরূপে ধরাকে রয়েছে ঢেকে।
হায়, আজ জীবন ভুলে গেছে
খাঁটি - প্রকৃত সম্পর্কের স্বাদ।
সুবুদ্ধির হচ্ছে বরবাদ।
এ যে পৃথিবীর পরম পরমাদ।
যারা পারছে না করতে রাজনীতি
তারা আর পারছে না থাকতে বেঁচে।
অন্তরের আজ সবারই রাজনীতি-ভীতি।
রাজনীতি কাউকেই ছাড়ছে না।
কেউই এর থেকে সরে থাকতে পারছে না।
টেনে নামাচ্ছে সবাইকে রাজনীতি।
ঈশ্বরের শক্তির সামনে নয় মাথা নিচু।
সর্ব শক্তি তো আছে সব যা কিছু
রাজনীতিতেই আজ।
রাজনীতি আদর্শকে ফেলছে আপন অসৎ ফাঁদে।
রাজনীতি ছাড়া জীবন এখন অমৃত থেকে বঞ্চিত/তা।
তারা শুধু হারানোর দুঃখে কাঁদে।
রাজনীতিময় জীবনে আজ সুখানন্দ সঞ্চিত/তা।
আশেপাশে,ওপরনিচে, সামনেপিছে
অদৃশ্যে, দৃশ্যে এখন কেবল চলছে
প্রবল প্রভাবশালী রাজনীতিরই কাজ।
এ তো অদৃষ্টের ফল হয়ে ফলছে।
জানি মা এ থেকে জগৎ মুক্তি পাবে কবে!
কবে কর্ম রাজনীতিহীন হবে?
আশা আছে তবে,
যে করতে চায় না রাজনীতি
একসময় সে নিস্কৃতি পাবে এর থেকে।
আর যে করতে চায়, স্বেচ্ছায় করুক না সে।
শুধু অসহায় আঁখিতে আগামীর বার্তা যাই রেখে।
মহাকাশে যাই মুক্তালোর, স্ব-স্বাধীনতার ছবি এঁকে।
মন আজ এই ভেবেই নিজেরে ভরুক না সে,
একদিন নোংরামো করবে না রাজনীতি।
নির্লিপ্ত, সু-সম্বন্ধই হবে
চাওয়া পাওয়ার সুখ শান্তির হার-জিতই।
শীঘ্রই আসুক সেদিন আমাদের প্রিয় এ ভবে!






শান্তি দাস এর ৩টি কবিতা
কলম_যোদ্ধা

"কলম"তুমি জনম জনম থাকো যার সাথে,
সেই তো বিদ্বান,তিনি জ্ঞানী,তিনিই শ্রেষ্ঠ এই দুনিয়ায়।
অসি আর মসি যেন  দুই সহোদর,
এই অসিতে হয়, রক্ত বন্যা,কলমে চলে মসির ক্ষরণ।

কলমের জোরে জনম ধরে জ্ঞানী,বৈজ্ঞানিক,
কবি সাহিত্যিক,দার্শনিক এই শ্রষ্ঠার সৃষ্টির এই মহিমা।
মসিতে কলম চলে অসিতে হয় রক্ত ক্ষরণ,
কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে হয় কখনো দামী।

কলম দিবে সত্য সুন্দর আলোকময় জীবন,
জ্ঞানে গুনে ভরে উঠবে নাম যশে এই ত্রিভুবন।
কলমেরা চলছে বলেই তো ভাষায় এতো তীব্রতা,
কলম আছে তাই মুছে দিচ্ছে সভ্যতার মুর্খতা।

কলম দিয়েই আজও  চলে প্রেম, বিরহ, আলাপ,
কলমের কালিতেই চলে কবিতায় দুঃখ সংলাপ।
কলমেরা বড্ড সচেতন, তাই বলেই
কবিতার মাধ্যমে কবি কত শত অক্ষর বুনে।

কলমে আছে অনেক শক্তি,কলমেই শাস্তি দেয় বিচারক,নির্দোষ পায় মুক্তি।
কলম দিয়ে শিশু লিখে বর্ণমালা প্রাপ্ত হলেই হিসেব শিখে,
রাস্তা খুঁজে কিভাবে করবে চুরি কলমের লেখনীতে রয় ,নিরবতার বৃষ্টি,
এভাবেই চলবে কলম ,নবপ্রজন্মের হবে সৃষ্টি।।

স্বপ্নময়_জীবন

স্বপ্ন তো অচেতন মনের, ভাবনা গুলো আসে মনে,
এই বাস্তব কঠিন রূপে, স্বপ্ন জেগে উঠে জীবনে।
স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যায়, এই নিয়েই মোদের সংসার,
কামনা বাসনা ত্যাগে খুঁজে নিতে হয় সংসারের সার।

জীবনে চাওয়া পাওয়ার আকাঙ্খা গুলো নিয়ে,
আসে তো মনে সংশয় তবুও স্বপ্নের বেড়াজাল ঘিরে।
কষ্ট হয় জানি স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার যন্ত্রণা,
স্বপ্ন সফল করা মনের গভীরে জাগিয়ে তুলে শান্তনা।

কত স্বপ্ন খারাপ ভালো জীবনের বেড়াজালে,
সব স্বপ্ন তো সফল হয়না থেকে যায় মনের অন্তরালে।
স্বপ্ন সফলের চেষ্টা ভাগ্যের পরিহাস বাস্তবের লড়াই,
জীবনের সঠিক পথে চলার জন্য চড়াই উৎরাই।

সবার মনের আকাঙ্খা গুলো দেখায় স্বপ্নের মাঝে,
স্বপ্ন দেখি বাস্তবে সফল করার কি সবার সাজে!
তবুও স্বপ্ন দেখতে তো নেই মানা, প্রত্যাশা করা যায়,
তবে অপ্রত্যাশিত সব কিছুই দুঃখ ছাড়া কিছু নাই।

আশার মাঝে নিরাশা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে মনের কোণে,
তবুও শেষ নেই সীমাহীন অপেক্ষার বেড়াজালে।
তবুও চেষ্টার ফল ব্যর্থ হয় না জীবন স্বপ্নময়,
জীবন চলার পথে স্বপ্ন ঘিরেই আমরা কাটায় সবসময়।

নবান্নের_উৎসব

বাঙালির ঘরে ঘরে লোক উৎসবের আয়োজন,
নবান্ন উৎসব এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত জনগন।
নতুন ধান কাটা ধানের প্রথম অন্ন খাওয়া নবান্ন উৎসব,
এই উৎসব যেন হৃদয়কে গাঢ় করার একটা অন্তরের উৎসব।

হেমন্ত এলেই দিগন্ত জুড়ে প্রকৃতি ছেয়ে যায় সোনালী ধানে,
পাকা ধানের সোনালী রঙ কৃষকের আনন্দ প্রাণে।
ঘরে ঘরে গোলা ভরা ধান বছর ঘুরে এসেছে অগ্রহায়ণ,
এমাস যে লক্ষ্মীর মাস প্রথম ফসল কাটা মায়ের দান।

বাঙালির জীবনে পয়লা অগ্রহায়ণ বার্ষিক সুদিন,
এই হেমন্তের প্রাণ নবান্ন উৎসব ঘরে ঘরে করা হয় পালন।
নবান্ন অর্থ নতুন অন্ন এই হলো ঋতু কেন্দ্রীক উৎসব,
এই  মাসটি আবহমান ধরেই বাঙালিরা মেতে থাকে সব।

নাগরিক জীবনে নবান্নের শুভক্ষণের শুভছায়া ছড়িয়ে আছে,
হিন্দু ধর্মমতে অন্ন লক্ষ্মী তুল্য সবার কাছে।
দেবীর উদ্দেশ্যে উঠোনে আল্পনা দিয়ে ভোগ আয়োজন করে,
নতুন চালের খাদ্য সামগ্রী কাককে নিবেদন করে।

নবান্ন এক অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাঙালির ঐক্য ভ্রাতৃত্ব আত্মীয়তার বন্ধন,
নবান্নে গ্রামে বসে লোকমেলা পিঠেপুলির আয়োজন।
গ্রামের মাঠে বসে লোকনাট্য বাউল গানে মুখরিত আসরে  পালাগান।
এই লোক উৎসবের আয়োজনে মুখরিত হয় গ্রামের লোকজন।





এই  শীতে  পর্বতে...
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

এই  শীতে  হিমালয়  পর্বতের  ছবিটা  কেমন?
শীতে  থরহরি  কম্পমান  মানুষজন, পশুপাখি!
আর  আমিও  তো  এই  পূর্বর্হিমালয়  পর্বতের  খুব  কাছে  থাকি৷
প্রতিদিন  সকাল  সন্ধ্যা  রাত  এই  পর্বতমালার  বুকে  জনজীবন  খুব  কাছ  থেকে  দেখি৷
কুয়াশা  ভরা  সকাল  কখনো,বরফ  পড়া  দিন,
পৃথিবীর  কত  ঘটনা,চারদিকে  কত  রটনা,
পাশেই  বর্ডার ,সেখানে  যুদ্ধের  প্রস্তুতি  গড়ে  তুলছে  চিন৷





অভিমত
 
সংবাদপত্র ও সাহিত্য
  -  অগ্নিমিত্র

বাংলা সংবাদপত্রে বরাবর সাহিত্যের একটা স্থান ছিল, আছে ও থাকবে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও গৌরকিশোর ঘোষের মতো নামকরা সাহিত্যিকরা সাংবাদিকতার সূত্রে সংবাদপত্রেই প্রথম গল্প লিখতে শুরু করেন । এখন বেশির ভাগ বাংলা সংবাদপত্রেই শনিবার ও রবিবার একটা আলাদা ক্রোড়পত্রে বা বিভাগে নবীন লেখকদের কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়। আগেও তাই হতো। লেখার সাথে আঁকা ছবিও থাকে।.. এই লেখাগুলি পড়তে খুব ভালো লাগে । ভবিষ্যতের সাহিত্যিকরা অনেকেই এখানে লিখতে লিখতেই উঠে আসেন পাদপ্রদীপের আলোয় । তবে আজকাল দেখা যাচ্ছে যে ভালো লেখা প্রকাশ হচ্ছে না; তেমন ভালো নয় যেগুলি, সেগুলিই প্রকাশ হয়ে যায় । সংবাদপত্রের কর্ণধারদের এই সব ব্যাপার দেখতে হবে । সস্তা জনপ্রিয়তা চাই না।
  তাছাড়া অনেক বাংলা সংবাদপত্রে ভিতরের পাতাতেও প্রবন্ধ ও অভিমতের আকারে সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের নিয়ে আলোচনা হয়। সেগুলিও খুব সুন্দর ও উঠতি লেখকদের পক্ষে বিশেষ লাভদায়ক।
  অনেক সময়ে সংবাদপত্রের কর্তারা আলাদা ভাবে প্রকাশনাও চালান । সেক্ষেত্রে সংবাদপত্রে যাদের লেখা  প্রকাশিত হয়েছে তারা একটু সুবিধা পান।
  আশা কথা যায় ভবিষ্যতেও সংবাদপত্র বাংলা সাহিত্যের ধারক ও বাহক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করবে।।





চিন্তা শুন্য
আব্দুল হান্নান

ভাবলে এসব অবাক লাগে
  দেখলে লাগে হাসি
বাবলা গাছে শিম ঝুলছে
  লাগেনা মোটে খুশী।

কাকের বাসায় কোকিল ছানা
   তালের পাতার ফাকে
খুশ মেজাজে ডানা মেলে
   মধুর সুরে ডাকে।

মোটা হুঁশেই.. সুখ্য চিন্তা...
   আসেনা কভু নেমে
সহনশীলের চিন্তা ছাড়াই
  করোনা যায় থেমে?

মগজ ভরা গোবর ঢেরায়
  হয় না জীবন যাত্রা
  চারি দিকে চোখ রেখে পথ
  খোঁজাই ভালো মাত্রা।।







    লাল কেল্লা
বদরুদ্দোজা শেখু


ধূমোট ধূমোট এক গুমোট সন্ধ্যায়
দর্শকের অনুধ্যান নিয়ে পৌঁছলাম লাল কেল্লায় ,
লাহোর দরজা দিয়ে ভিতরে গেলাম,
একটি মিনিবাজার পার হ'য়ে প্রধান ফটকে ঢুকলাম।


লাল কেল্লার ভিতর দেখছি দুর্ভেদ্য আবাস
দেওয়ান-ই-আম লাল পাথরের , সফেদ দেওয়ান-ই-খাস---
শ্বেতপাথরের ভিতর খচিত নক্সার কারুকাজ
রঙ-বেরঙের পাথর বসানো, ছিঁটে ফোঁটা  আছে আজ
প্রধান কক্ষে রয়েছে শূণ্য শুভ্র নিরাভরণ
মর্মর বেদী, নাই তার শোভা ময়ূর সিংহাসন;
রঙমহলের খোল-নলচে'য় নাই রঙ-বিন্যাস
সমস্ত শুনি নাদির শাহের লুঠতরাজের গ্রাস,
মোতি মসজিদ বিষণ্ণ বড়ো,নাই6 সেই হেফাজত
আজান সুরায় মুসল্লিদের সুললিত তেলাওত,
জৌলস আজ জবুথবু, তবু যতো দেখি মনে হয়--
স্থাপত্যগুলি কীর্তির এক ভৌতিক বিস্ময়,
একদা জাঁকালো জবরদস্ত্ বাদশাহী লীলাক্ষেত
চষছি হালের বল্গাবিহীন ভ্রামনিক ভূতপ্রেত
ক্ষণিক অতিথি, এবং করছি হিস্ট্রি রোমন্থন
আর চাক্ষুস করছি উদাস তার ক্রোড়ে বিচরণ,
দেখার খেয়াল ক'রে দ্যায় যেন সময়কে সংক্ষেপ
চারিধারে ঘুরে সান্ধ্য সজাগ ভূতুড়ে পদক্ষেপ,
পরিহাস-প্রিয় মোহনায় মৃত শতাব্দী স্থবির,
রোমাঞ্চ-বিহ্বল বিস্মিত শ্লথ স্নায়ুর নিবিড়
অনুভূতিগুলো থেমে যায় এসে কালের সমাধি পাশে'---
বোঝা যায়না এ কীর্তির রূপ কীর্তির ইতিহাসে ।।




কবিতা
স্মৃতির নির্যাস
রণিত বন্দ্যোপাধ্যায়

শত বেদনা, শত যন্ত্রনার মাঝে
ঘুমিয়ে রয়েছে আমার প্রাণ,
শান্ত নদীর পাড়ে পেতেছি আমার কান;
যদিও বিষণ্ণ আজ চিত্ত আমার
তবুও তোমায় ভরা অচেনা আকাশ,
ঝরে পড়ছে দু-এক ফোঁটা করুণার নির্যাস।

ভাঙা-গড়ার শূন্য ভেলা নদীতে ভাসে,
রক্ত আমার নীল হয়েছে শুধুই স্মৃতির বিষে।।



রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 13/12/2020, রবিবারবার
               সময় :- রাত 09 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

পবিত্র ভালোবাসা  ভালো  লাগে.....
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

পবিত্র  ভালোবাসা  আজও  আমার  সমান  ভালো  লাগে,
এই  পাহাড় ,ঝর্ণা,অরণ্য,চা বাগান,খরস্রোতা  নদী,
আমি  খুব  খুশী  হবো,এই  ভালোবাসা  দিয়ে  সুখী  করো  যদি!
ভোরের  সূর্য,কুয়াশা,বরফ ও  ঠান্ডা  বাতাস,
মায়াবী  রাতের  রূপালী  চাঁদের  কবিতা,
তোমারও  কি  ভালো  লাগে  না?বলো  মিতা,
আমি  তো  আগের  মতো  আছি,জানো,অসমের  কবি  সঞ্চিতা?
এই  করোনার  আবহে  কমে  গেছে  কাজ,
ঘরে  বসে   দূরের  ও  কাছের  কবিদের  কবিতা  পড়ছি  আজ৷
চেনা  পৃথিবীর  ছবিটা  কি  পাল্টে  যাচ্ছে দাদা?
সততার  সাথে  সবাই  বলছে  কি  আর  কালোকে  কালো?  সাদাকে  সাদা?
সবকিছু  দুপায়ে  মাড়িয়ে  পবিত্র  ভালোবাসা আরো  এগিয়ে  চলুক,
এই  পাষাণ  পৃথিবীতে  নরনারী  খোলা  মনে  আরো  ভালোবাসার  কথা  বলুক৷
——————————————————



কাজল
শান্তি দাস

নাম তার কালি কিন্তু কত সুন্দর,
চোখের রূপরেখার টানে সে কাজল।

সেই কালি মেখে দিলে হয় কলঙ্কিনী,
কি মহিমা কাজলের,মায়াবী চোখের টানে।

কৃষ্ণকলি কাজল টানে,পটল চেরা চোখে,
আকর্ষিত কত শত নরের হৃদয় চুম্বনে।

কালি হয়ে ও কলঙ্ক ঘুছাতে কাজল,
সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে শত নারীর চোখে।

কাজল কখনো হইও না কালি কারো নজরে,
তোমায় দিয়ে রূপের বাহার যৌবনের পরশ।

কাজল চোখে পড়ে সে মায়ার টান টানে,
কাজল থেকো না কালিরূপে কলঙ্কিনী হয়ে।




প্রবন্ধ
ভালো রহস্য গল্পের বৈশিষ্ট্য
   -  অগ্নিমিত্র

  সার্থক রহস্য কাহিনী হতে হবে টানটান উত্তেজনাময়। রহস্যের সাথেই যুগ্ম শব্দের মতো চলে আসে ' রোমাঞ্চ'; তাই কাহিনীর বাঁধন যেন ঢিলে না হয়  । পাঠকের আকর্ষণ যেন তা টেনে ধরে রাখতে পারে । সবসময়ই যেন পাঠকের মনে হয় - এবার কী হবে ? কী হলো ব্যাপারটা? এর পিছনে কারণটা কী? রহস্য কাহিনীর দৈর্ঘ্য হতে হবে বেশি বড় নয়, আবার বেশি ছোটও নয়। আবার এই ধরনের গল্পে গোয়েন্দা চরিত্র থাকতে পারে, আর ভূত বা অশরীরী আত্মাও থাকতে পারে। আবার এগুলো না হলেও সার্থক রহস্য গল্প সৃষ্টি হতে পারে । আবার প্রাকৃতিক কোনো ঘটনাকে রহস্যের আবরণে মুড়ে খুব ভালো  রহস্য গল্প লেখা যায়। লেখায় মুন্সিয়ানা থাকতে হবে । মোট কথা, পাঠক যেন আকৃষ্ট হয়। তবেই রহস্য গল্প সার্থক হবে।
  বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় এমন অনেক রহস্য গল্প আছে। সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে এসব রহস্য গল্প । বাংলায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমেন্দ্রকুমার রায় ও নীহাররঞ্জন গুপ্ত রহস্য গল্পের সার্থক রচয়িতা । রহস্য গল্প অনেক সময়ে কমিকসের আকারেও প্রকাশ পায়।.. ভালো রহস্য গল্প থেকে অনেক ভালো ও সর্বজনপ্রিয় ছবিও তৈরী হয়েছে ।
  আজকাল আর বাংলায় রহস্য গল্প তেমন লেখা হচ্ছে না। তবে পাঠক আজও এরকম লেখা পড়তে চায়। সেই রহস্য গল্পের দিন ফিরে আসুক ।।..




জীবন সায়াহ্নে
   সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

     কী কথা বলিব কারে হায়
     এমন ব্যাকুল দিনে কী বা যায়--
এমন প্রখর ভারে      শরীর হাহা করে
         মরণ যেন সদা কাছে চায়।।

     বেদনা বোঝাবো কারে আর
     সকলে দূরে যে চলে আমার।
বসে না কাছাকাছি    শুধায় না কেমন আছি
      আঁখি তে রুধিরধারা বয়ে যায়
        জোছনা দুয়ারে এসে ফিরে যায়।।

       পুত্র পরিজন যেন সব
       ধনাদি লয়ে করে কলরব
কেবল মুখ দিয়ে  আশার আশা নিয়ে
        মিলন সুধা পানে ছূটে হায়
        হৃদয়ে শত ব্যথা ভরে যায়।।

       ক্ষণিক দুখে ভরে মনপ্রাণ
       শয়নে বিজনে শোনে কলতান
শুধুই মিছিমিছি      কলহ নিবিড় সাজি
         আসন বিছায়ে সেথা লয় স্থান
         যে কথা বলিতে কাঁদে প্রাণ।।

          বুঝেছি এতে কারো বয়ে যায়
          ভাঙা মন বোঝেনা প্রীতি কোথায়
আঁধারে দীপ জ্বলে    বাড়ির তুলসী তলে
         প্রেম স্মৃতি অনুরাগে ফিরে তাকায়
         দিনান্তে পরাণ খানা ভেঙে যায়।।

          এখনো লাজ উপেক্ষা বারোমাস
          কত কটুক্তি নানা উপহাস---
কতজনা মোড়ে মোড়ে   শোনায় উপহারে
        যে কথা শুনিলে কান ভুলে যায়
        কী কথা কারা বলে হেথা হায়।।

       ওরে মূর্খ, এতে তোর কী বা বহে যায়
        অবনতি বসে সময় গুনে যায়
যে কথা শুনে শুনে    ব্যথা ভরে মনে
       সে কথা ভেবে কর তুচ্ছ তায়
       মরণ যদি আসে ডাকো তায়
মিলন সুখ পাবে যদি বিধি চায়।।





হায় রে হৃদয়!
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

শীতের রাত তাকে কাঁপচ্ছে।
হাঁপানিতে সে হাঁপাচ্ছে।
আমি আমার কাঁচের জানলা দিয়ে দেখলাম তাকে।
ও আমার বাড়ির সামনে ফুটপাতে থাকে।
বয়স সত্তর মত হবে।
কেউই নেই ওর এ ভবে।
ধরা গলায় কীর্তন গায়।
আর ভিক্ষা করে খায়।
আমি ওকে ঠান্ডার রাতে
দিলুম একটি গরম কম্বল নিজের হাতে।
ও নিজেকে জড়ালো তাতে।
একটু পরে তার ভেতরে ঢুকল বেশ ক'টা কুকুর ছানা।
ও ওদেরকে করল না কোনোই মানা।
ওরা ওর চেনাজানা।
একই ফুটপাতে তো থাকে।
হ্যাঁ, এবার ও ওই কম্বলটিতে ওদের গা ঢাকে।
আর কম্বল ছেড়ে নিজেকে বাইরে রাখে।
শীতে ও কাঁপতে থাকে।
আমি ওপর ঘরের বন্ধ কাঁচের জানলা দিয়ে দেখি।
হায় রে হৃদয়! এ কী?
সত্যই অশেষ প্রেমাধার নয় সে কী?
সারা দুনিয়া আজও হয়ে যায় নি মেকী!
এরপরে আমি বিছানায় বসে নিজেকে হট এয়ারে সেঁকী।






                   বাবা
           হামিদুল ইসলাম
              

বাবার হাত ধরে চলতে চলতে
এক সময় পৌঁছে যাই
স্কুল
স্কুলের গেট তখনো খোলে নি
বাবা দাঁড়িয়ে থাকতেন আমার জন‍্যে
ছুটির ঘণ্টা পড়তো
বাবা স্কুল গেটে
বাবার হাত ধরে চলতে চলতে বাড়ি ।।

মা'র সেই করুণ মুখ
পুকুরের শান বাঁধানো ঘাটে বসে
ধুয়ে নিতাম চোখ মুখ
সুর্য ঢলে পড়তো বিকেলের শেষ প্রান্তে
মা খুব ব‍্যস্ত
আমার খাওয়া দাওয়া নিয়ে
কখনো চিড়ে দই
কখনো সন্দেশ মুড়ি

এখন বাবা মা কেউ নেই
আমি অনাথ
তালগাছ
সামান‍্য হাওয়ায় বাড়িয়ে দিই হাত
হাতে বাবা মায়ের স্নেহের পরশ
হারিয়ে গেলো শৈশব কৈশোর
যৌবনের উদ্দীপ্ত প্রভায় এখনো স্বপ্ন দেখি
বাবার হাত ধরে আমি স্কুলে যাচ্ছি ।।

এ যাওয়ার শেষ নেই ।।







একাত্ম হৃদয়
নরেন্দ্রনাথ নস্কর

ফুলে যখন মৌমাছি বসে,
সে দৃশ্য কখনও হৃদয় ভরে দেখেছ?

পথ চলতে চলতে ঝিঙেফুল ভরা মাঠ দেখে মুগ্ধ হয়ে, কোনদিন তার সৌন্দর্যে বিহ্বল হয়েছ?

হাওয়ায় সবুজ ধানের ক্ষেত দুলতে দেখে মন কখনও উদাস হয়েছে?

বসন্তের সন্ধ্যায়  পলাশ, শিমূল ফুলের লাল রঙের সাথে কখনও সূর্যাস্তের রঙ মিলিয়ে একাকার হয়েছ?

গ্রীষ্মকালের দুপুরে রাস্তার পাশে বটবৃক্ষের তলায় বসে কখনও কবিতার কথা ভেবেছ?

কপোত কপোতীকে পাশাপাশি বসতে দেখে, কখনও হৃদয়ে প্রেমের কথা মনে এসেছে?

বৃষ্টির দিনে একলা ঘরে বসে, কারোর কথা ভেবে কোনদিন মন উদাস হয়েছে?

শীতের হিমেল হাওয়ায় কোন গাছের পাতা ঝরা দেখেছ?

সমুদ্র দেখে কখনও তার বিশালতায় নিজেকে  অতি ক্ষুদ্র এ কথা মনে  হয়েছে?

আকাশের নীলিমায় নিজের মন কোনদিন কিছু সময়ের জন্য হারিয়েছে?

বসন্তের সমীরণে কোন কবিতার লাইন কোনদিন মনে এসেছে?

কাহারও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কখনও অন্য কল্পনার  জগতে চলে গেছ?

কারো বেদনায় কখনও  ব্যথিত হয়ে চোখে জল এসেছে?

বড় হয়ে শিশুর মতো ছেলেমানুষি কখনও  মনে এসেছে ?

পথ চলার হিসাবের থেকে বহুদুরে মন কখনও চলে গেছে?

প্রকৃতির সাথে  কখনও  একাত্মতা অনুভব করেছ?







অমর জ্যোতির পাদদেশে
বদরুদ্দোজা শেখু

জুলাই মাসের জ্বলন্ত দুপুরে একদিন
হেঁটে হেঁটে  পৌঁছলাম ইন্ডিয়া  গেটের প্রচ্ছন্ন  ছায়ায়,
ধীর পায়ে ঘুরে ফিরে  স্থাপত্যকে  দেখতে  বিভোর
যথাসম্ভব সময় দিলাম ওখানে আমরা দু'জন
দূরাগত , তোরণের  পাদদেশে কতক্ষণ দাঁড়িয়েছি
ঠিক মনে নাই,আনমনা মূহুর্ত্ত কখন্ থেমে গেছে  ,
মনে হচ্ছে আমরা দেখছি নিকট ও দূর  দৃশ্যপট
আচ্ছন্ন প্রকট।


চারিপাশে সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ ময়দান
তারি মাঝে ইন্ডিয়া গেট দূর থেকে দৃশ্যমান
শৌর্য বীর্য ত্যাগ  ও প্রেমের মূর্ত প্রতীক-চিহ্ন
গগনতলে সমুন্নত সৌধতে উদ্ভিন্ন
স্বাধীনতার বীর শহীদের ত্যাগ ও তিতিক্ষা
স্মরণীয় বীরগাথার আবৃত্ত অভীক্ষা
ঘুরছে বিজন বায়ুস্তরে ঘোর  প্রগতিপন্থী,      
মনে হচ্ছে কোথাও যেন নাই সময়ের গ্রণ্থি;
তোরণ-তলে প্রবহ্নিমান অমর জ্যোতি জ্বলছে
স্ফূলিঙ্গ তার অনন্ত এক চিতার কথা বলছে
তারি মূর্ত প্রতীক পাশে দণ্ডায়মান দু'জন
সশস্ত্র ধীর সান্ত্রী সেনার বলিষ্ঠ সঞ্চরণ
ভঙ্গিমাতে একাগ্রতা মনঃসন্নিবিষ্ট ;
দেওয়ালগুলোয় উৎকীর্ণ আছে নিরুদ্দিষ্ট
অপরিচিত কতো যে নাম--আড়াল কর্মনিষ্ঠা
উঠে আসছে অজ্ঞাত এক ইতিহাসের পৃষ্ঠা
পাদদেশে না দাঁড়ালে হয় না যা আয়ত্ত্ব
উপলদ্ধির বিষয় তার সে অনুচ্চার আবর্ত ।
দু'ধারে দূরে দেখছি দু'টি সমান্তরাল তোরণ
অক্ষানুরূপ , আলম্বিত ময়ূর -সিংহাসন
মনে হচ্ছে দূর থেকে তা অস্পষ্ট রেখায়
ফটকগামী  সড়ক বরাবর উলম্ব শিখায়,
আরো দূরে দেখছি কিছু, দাঁড়িয়ে আছি মৌন-
দেখছি মহৎ ত্যাগের তীর্থ, ইন্ডিয়া গেট গৌণ।
মোহাচ্ছন্ন মনটা কোথায় উধাও অন্য দৃষ্টি
অমর জ্যোতি অন্তরে, ময়দানে অগ্নিবৃষ্টি,
অস্তিত্ত্বের তুচ্ছতাকে অনুধাবন করছি
আরো একবার, আরো একবার স্মৃতি-সৌধ গড়ছি ।



কর্তব্যরত সান্ত্রীদের সন্দিগ্ধ তাগাদায়  
মাঠে মাঠে হেঁটে ক্লান্ত আমরা যখন রাষ্ট্রপতি
ভবনের উদ্দেশে চললাম, পিছনে অমর জ্যোতি নিহত  জওয়ানদের অনির্বাণ স্বদেশপ্রেমের
পবিত্র    নিদর্শন-স্বরূপ সমুন্নত এক
ঐতিহাসিক  তোরণ নয়, মনে হলো---
সমস্ত শতাব্দীর নির্ঘন্ট-ফটক বরাবর
শ্রদ্ধাবনত প্রজন্ম পরম্পরা আমরা মহান
স্বাধীনতা সংগ্রামের মৃত্যুঞ্জয় মহাদেশ পেরিয়ে এলাম।।
                   



উড়ার নেই সাধ
সুস্মিতা দে

   আজ চলবো মেঘের সাথে
ভেলায় চলবে তুমি নয়
আমার সাথে আজ এ এক
অন্য সাজে জীবনের
অজানা কোন হাসি কান্নার
মুখোশ মাঝে।আমায় কেউ
চিনবে না তখন বুক ভয়ে কাঁপে ।

অজানা অচেনা মানুষ হবো
না আমি , আকাশে উড়ার নাহি
  কোনো সাধ ইচ্ছে করে ভেসে
   যাবো ঐ দেখা যায় সূদর পানে
  পাল তোলা নৌকা কেমন করে
         নীল রঙা ঢেউ নিয়ে হেলে
          দুলে যায় ছোট্ট মেয়ে
                বেনী  দুলিয়ে যায়

  ভোরের বেলায় ফিরে দেখি
   কুয়াশার চারিধার ।আকাশের
   উড়িবার ইতিহাসে পড়ে গেছে
   যতো ছিলো সেই পুরোনো দিনের
     পরিবার সাথে স্মৃতি উড়ানের
         আনন্দের উল্লাস।

শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 12/12/2020, শনিবার
               সময় :- রাত 09 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


ফিরে আসি
ডাঃ তারক মজুমদার


আমার চিন্তা গুলো
গভীরে প্রবেশ করলে
আমি স্হির থাকি---- ।

বাণের জলে যায় ভেসে আমার
স্বপ্নের বাড়ি--।
ঝড় বৃষ্টির সঙ্গম  হলে শেষ
ঘোলা জলে ধরতে আসে মাছ
সুযোগসন্ধানী   মানুষ---।

আমি ফিরে আসি বারবার
মায়াবী  জাগ্রত মোহনায়-।







জীবন  এই  রকম  বটে
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি


মোমবাতির  মতো  জীবন  আমাদের,
নিজেকে  পুড়িয়ে আলো  দিতে  হয়  অন্যদের,
বেঁচে  থাকা  মানে  কিছুটা  যন্ত্রণা,
অনেক  অনেক  পথ  চলা,
হাসির  আড়ালে  থেকে  যায়  কতো  কথা  না  বলা!
পদ্মপাতার  জলবিন্দুর  মতো  সবার  জীবন  বুঝি?
দুঃখের  পরে   সুখ  লুকিয়ে  থাকে?
তবুও কি  আমরা কোথায়  যেন  সুখ  খুঁজি?
জীবনের  কত  স্বপ্ন  ছিল,
সব  পূরণ  কোথায়  হলো?
যৌবনে  যাকে  ভালোবাসা  যায়,
সবাই  কি  আর  তাঁকে এই  জীবনে  পায়,বলো?
আমি  আছি  আমার  মতো,তুমিও কি  বন্ধু  তাই?
অনেক  কিছু  পেয়ে  যেন,কার  জন্য  মনে  সেই  সুখ  আর  নাই?
—————————————————





শিশির কণা
    শান্তি দাস

শরতের আকাশ মৃদু মৃদু হালকা বাতাস,
ভোরের সূর্যে ঘাসের উপর শিশির গুলো ভাসে।
স্নিগ্ধতা ভরা সকালে বিন্দু বিন্দু শিশিরে,
নক্সীকাঁথার মাঠের ভিতর ঘাস গুলো ভিজিয়ে।

এমন করে যখন রোদ্দুর নামে মন খারাপের গায়ে,
শিশির কণা নূপুর জড়িয়ে ধরুক সবুজ পাতার পায়ে।
মাঠের ভিতর হাজার শিশিরের ভীড়ে,
ঘাসগুলো সব চুপসে আছে নয়ন ধরে ধরে।

হেমন্তের এই মশরুমে শিশির কণা ঘাসের গাঁয়ে গাঁয়ে,
সুর্য যখন উঠবে শিশির গুলো শুকিয়ে যাবে পায়ে পায়ে।
সূর্যের তাপে ছড়িয়ে যখন পড়েছে সারা মাঠে,
শিশির গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে কৃষকেরা নামছে ক্ষেতে।




বিপ্লব গোস্বামীর তিনটি কবিতা

তুমি কে

বিপ্লব গোস্বামী

তুমি কে ? জানিনা ,
দেখেছিলাম পাহাড়ী এক গাঁয়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

নীল শাড়ি ছিল গায়
পায়েল বাঁধা এক পায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

আরোও তোমার ছিল সাথী
সবার মুখে মিষ্টি হাসি।
সবার হাসি হল বাসী
তোমার হাসি মন উদাসী।

তুমি কে ? জানিনা ,
হাত ভরা বালায়
গলা ভরা গয়নায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।।

ওরা স্বার্থপর

এত দিনে বুঝিলাম
ওরা স্বার্থপর !
স্বার্থের লোভে সবই
পারে ওরা।
ভুলে যায় প্রেমের দর।

পূজার লোভে ওরা
খেলে প্রেম খেলা।
পূজা শেষে পূজারীরে ওরা হানে শত অবহেলা।

ওরা স্বার্থপর মীরজাফরের জাত
স্বার্থ ফুরালে পূজারীরে ওরা
সজোরে মারে লাথ।

ওরা লোভী , লোভী ওদের মন
এক জন থাকতে
ওরা চায় অন‍্য জন।

ওরা বিশ্বাস ঘাতক
ওরা পাষাণ !
নীলকণ্ঠ কবির অশ্রু লেখা
ওদেরই দেওয়া দান।

আমার চাওয়াগুলো

আমার চাওয়াগুলো
চাওয়া হয়ে থেকে যায় গোপনে !
পাওয়া হয়ে আসে না জীবনে।

আমার স্বপ্নগুলো
স্বপ্ন হয়ে থেকে যায় নয়নে !
স্বপ্ন ,বাস্তবে আসে না জীবনে।

আমার আশাগুলো
প্রতীক্ষায় স্বপ্ন দেখে সুখে
আশা , বাসা তবু বাঁধে না এ বুকে।

চেয়েছিলাম সুখী হতে
সুখটাকে ধরে।
সুখ কি কভু বাসা বাঁধে
চীর ধরা দিলে ?

জন্ম যার বেদনার দহে
জীবন যায় তার বেদনা সহে।






         মোহিনী
        পিনাকী  মুখার্জী
     
         তোমার  মনের  চেনা  মাধুরী
            ঘিরে , মেলা  প্রত্যাশা !!
       জাঁকিয়ে   শীতেও   শৈত্য   নাশা
          তোমার  উষ্ণ  ভালোবাসা  !!

         মোহিনী  কলস  হাতে  দাঁড়িয়েছ ,
             শীতের  আমেজ দিতে  !!
         হিমেল হাওয়ায় সেই  হাতছানি ,
               শীতের  মুঠো  হতে  !!
      
            বাতাসে  ভাসে  আমোদ , যত
                   বেলা  বেড়ে  যায়  !!
             মনের  মাধুরী  দূর  থেকেও
              বাঁধে  , এক  আত্মীয়তায়  !!

             ফল্গুধারায়  বাঁচিয়ে  রাখা , শুধু
                ভালোকে  গোপন  মনে   !!
             পেয়েছ  যেটুকু  তাকেই  গড়েছ ,
                     মিঠে  করে  পরাণে !!







             রাত্রি অগাধ
      হামিদুল ইসলাম
            
বন্ধুর জন‍্যে
ফুলশয‍্যা সাজাই
মনের গভীরে বয়ে চলে নদী
নির্দ্বিধায়  ।।

আত্মগ্লানিতে পোড়ে মন
অশান্ত পৃথিবী
মৌচাকে ঢিল ছুড়ি
মধুর আশায়  ।।

মধুতে ভরে যায় মুখ
নির্জীব পুরুষকার
বন্ধুকে প্রতিদিন ভুল বুঝি
একমুঠো যন্ত্রনায়  ।।

পথের উপর দেখা
বন্ধুর সাথে
অবহেলিত গানের আসর
তবু বন্ধুকে পেয়ে যাই  ।।

বন্ধুর জন‍্যে স্বপ্ন সাজাই
অন্তর ফাঁকা মাঠ
বন্ধু দাঁড়িয়ে থাকে
বিভৎস রাত্রি অগাধ ।।





ওদের গ্রাম
আব্দুল রাহাজ

ওই যায় ছুটে চলে ছোট ছোট পাখির দল দূর আকাশের কোলে
ওই আঁখি নদী তারপরে তিল ক্ষেত ওই রামু দের গ্রাম
সবুজ শ্যামলে ভরা চারিদিকে গাছপালায় ঢাকা
ওদের সেই গ্রাম
চারিদিকে সবুজের সঞ্চার মিলেমিশে থাকে ওরা
ছেলে মেয়ে গুলো কাটায় আনন্দে ঝিমলি নদীর তীরে খেলা করে
ওরা করেনা ঝগড়া ওরা মিলেমিশে থাকে প্রকৃতির মায়ের কোলে ওদের গ্রাম যেন মায়ের সমান হয়ে উঠেছে।





দুলছে ভারত ভূখণ্ড
  আমিরুল ইসলাম

দুলছে ভারত ভূখণ্ড,
চারিদিক লাল,
রক্তে মানুষ লন্ডভন্ড।
বিদ্রোহীরা ঘুমন্ত উপত্যকা,
বিভীষিকাময় মানব জীবন
রক্তের ঘ্রাণে মুখরিত বায়ু,
সম্প্রীতির অকাল মরণ।
গঞ্জে গঞ্জে রোজই গঞ্জিত হয়,
'তোর আইন মানি না'
মানুষ দেখি ঢের ঢের,
প্রতিবাদী তো দেখি না।
ধোঁকাদারি চলছে সবেতে--
ভারতকে করছে ছারখার
নিভে গেছে প্রতিবাদী আগুন
মধ্যদুপুরও ঘন আঁধার।
চক্ষু ফেঁটে ঝর্না ঝরে,
সারা দেহে অনাবৃষ্টি,
লেগেছে পেটে ক্ষুধার আগুন
তাই ধরেছি বজ্র মুষ্ঠি।।








   দ্বিতীয় শ্রেণী না ক্লাস টু? 

          সুস্মিতা দে



দুই মেয়ে একটি মেঘলা

 অপরটি মেখলা একটা 

উওরে গেলে অপরটি দক্ষিণে ।

মেঘলা আকাশ দেয় উঁকি ঝুঁকি 

মেখলা অর্থনীতিতে মেধাবী ।

চাহিদা  যোগান নিয়ে থাকে ।


মেঘলা ইচ্ছেমতো ঝড়ে 

সব আনাজ নষ্ট করে 

দিলে নিরামিষ খাবে না 

কি করি মা এই দুটি কে 

নিয়ে? আসলে খাবে ইলিশ

 ভাজা আর তেল তোর মতো

 দুইটি মেয়ে খালি সমস্যা 

 মানুষ কে নাজে হাল করা। 


একটি রেডিও তে চোখ দিয়ে

 মহালয়া দেখবে অপরটি টিভি

 তে কান দিয়ে মহালয়া শুনবে।

 তোর  মতো তোমার মেয়েরা যে

 মা বলে?


একটি বিদ্যালয় গেলে অপর 

টি স্কুলে যায় বলে দুই টি 

তর্কে বহুদূর পর্যন্ত যাবে, 

বিদ্যালয় বললে বলবে 

ইংরাজি মিডিয়ামে পড়ি ।

অন্যটি ইস্কুলে যাবে তাই

 বলে আমি বাংলা মিডিয়ামে

 পড়ি। অজানা অচেনা মানুষ

 কে বিভ্রান্ত করে কোনটি ঠিক

আর কোনটি ভুল?


 অচেনা মানুষ কে বাড়ি ঠিকানা

 ভুল দেখিয়ে দেবে না  

নিজেদের অঙ্গীকার রক্ষা 

করবে বোঝা পড়া আছে।

তা  বেশ বেশ সুমতির বেশ

চলবে ? চলবে চলবে চিন্তা নেই।