রবিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/12/2020


 Upokontha sahitya patrika -20/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 20/12/2020, রবিবার
               সময় :- রাত 08 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


জীবনের প্রলাপ
   অমিত মজুমদার

সীমার প্রাচীর গেঁথেছো চেনা মুখে,
তবুও প্রশান্তির ছাপ পাওনি খুঁজে তুমি।
প্রহর গুনেছি অনেক, আগুনকে সাক্ষী রেখে।
জীবনকে ঠিক মিলিয়ে দেয় মৃত্যু অভিমানী।

বেঁচে আছি, এসবই তো জীবনের প্রলাপ!
জীবনে নিরন্তর অভিনয়ের পাঠ শেখা, ক্ষতি কি তাতে?
স্মৃতি সুধায় ফুটে ওঠে হারানো সংলাপ...
মুহুর্তরা শুধু বেঁচে থাক, অসময়ে ওরাই তো ফুল হয়ে ফোটে!

বন্ধ জানালায় উপেক্ষিত হয়ে আছে রোদ,
তবুও অন্ধকারে মুছে যায়না কোনো কালো।
জীবন প্রবাহের কাছে ঢাকা পড়ে সমস্ত প্রতিশোধ।
কারণ, কিছু হেরে যাওয়া জেতার থেকেও বড়!

নামুক সন্ধে, আছড়ে পড়ুক বিষাদের কান্না।
কিছু দাগ থেকে যাক মনেরই গভীরে...
হারিয়েছি মনের মাস্তুলে বাঁধা শেষ ঠিকানা,
আছে কজন মানুষ যারা সময় কে বেঁধে রাখে?
               
          



বিপ্লব গোস্বামীর এক গুচ্ছ ছড়া

১৷
        সংখ‍্যার ছড়া

  এক দুই তিন চার
এসো গুণি বার বার।

     পাঁচ ছয় সাত
এসো গুণি একসাথ।

     আট নয় দশ
   গুণবি যদি বস।

২৷
ছয় ঋতুর ছড়া

বৈশাখ জ‍্যৈষ্ঠ গ্ৰীষ্ম ঋতু
বর্ষা আষাঢ় শ্রাবণ।

ভাদ্র আশ্বিন শরৎ ঋতু
হেমন্তে নবান্ন পার্বণ।

কার্তিক অগ্ৰহায়ণ হেমন্ত ঋতু
পৌষ মাঘ শীত।

ফাল্গুন চৈত্র বসন্ত ঋতু
কোকিল গায় গীত।

৩৷
সাত বারের ছড়া

শনিবারে অর্ধ ছুটি
রবিবারে সব বন্ধ।

সোমবারে বিদ‍্যালয় শুরু
মঙ্গলের পর বুধ আসে
বজায় রেখে তার ছন্দ।

বুধের পর বৃহস্পতি আসে
বৃহস্পতির পর শুক্র,
বারের পরে বার আসে যায়
ধারাবাহিক তার চক্র।

৪৷
দশ দিকের ছড়া

পূর্ব দিকে সূর্য উঠে
পশ্চিমে যায় অস্ত।
উত্তরেতে হিমালয় পর্বত
দক্ষিণে সাগর মস্ত।

উত্তর-পূর্ব কোণ মিলে
ঋশাণ দিক হয়
দক্ষিণ-পূর্ব কোণ অগ্নি দিক
সর্ব লোকে কয়।
দক্ষিণ-পশ্চিম কোণ নৈঋত দিক
কম্পাস মতে হয়,
উত্তর-পশ্চিম কোণ বায়ু দিক
জানিও নিশ্চয়।

উদ্ধ মানে আকাশ আর
অধঃ মানে পাতাল,
জেনে নিলাম দশ দিকের নাম
এবার হবো আনন্দে উত্তাল।

৫৷
আ-কারের ছড়া

মা বাবা ভাই
যার আপন নাই
তার নাই ঠাঁই।

মায়া-মমতা
মান-সম্মান
করা যায় না দান।

মাঠ ভরা ধান
চাষা গায় গান।

রাখাল বালক যায়
বাউল গান গায়।

বাউল গান গায়
টাকা পয়সা পায়।

৬৷
কার চিহৃ হীন ছড়া

সৎ যত জন
সরল হয় মন।
দশজন কয়
অসৎ কপট হয়।

অলস অধম হয়
সব জন কয়।

সৎ পথ সরল নয়
সব জন এমন কয়।

৭৷
গৃহপালিত ও বন‍্যপ্রাণীর ছড়া

বাঘ সিংহ মাংস খায়
লোকে বলে বন‍্য।
বিড়াল কুকুর গৃহপালিত
ওরা খায় অন্ন।

গরু ছাগল গৃহপালিত
ওরা খায় ঘাস।
হরিণ গণ্ডার তৃণভোজী
বনে করে বাস।

৮৷
স্মরণে রেখো

কখনো বলো না
মিথ‍্যা কথা,
কখনো মেনো না
কু-প্রথা।

সৎ সঙ্গ হয় যেথা
প্রতি দিন যেও সেথা।

৯৷
কার কি কাজ

নানা অংশে অবয়ব
জানি আমরা সব,
কার কি কাজ বলে যাই।

দুই চোখেতে দর্শন
দুই কানেতে শ্রবণ।
এক নাকেতে গন্ধ পাই।

১০৷
মনে রেখো

শরীর শুদ্ধ হয় স্নানে
মন শান্ত হয় ধ‍্যানে।
চিন্তা দূর হয় গানে
ধন-সম্পদ বাড়ে দানে।






ক্ষুধার জ্বালা
   আব্দুল রাহাজ

ক্ষুধার জ্বালা
রে ভাই রে ক্ষুধার জ্বালা
ক্ষুধার কাতর হয়ে চিৎকার করছে ওরা।
ওরা যে মারন কাতর
ওই ক্ষুধার জ্বালায়
আহা কেউ কি নেই
ওদের এ জ্বালা মেটাতে পারে
ওরা যে ক্ষুধার জ্বালায়
মারন‌ কাতর ।





বিষয়ঃপ্রবন্ধ
উপেন্দ্রকিশোরের রচনা ও ছাপাখানা
ডঃ রমলা মুখার্জী(ব্যানার্জী)

বাংলার বুকে সবুজের সুখে
বয়ে যায় বহুনদী
ছোটদের নিয়ে মন রঙ দিয়ে
ভাবেন প্রথম যদি
তিনি আমাদের শিশু জগতের
উপেন্দ্রকিশোর চৌধুরী
শিশু-কিশোর মজায় বিভোর
গল্প-জাদুর বাহাদুরি।

কিশোর সাহিত্য রচনার পথিকৃৎ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীকে জানাই অন্তরের গভীর শ্রদ্ধা ও প্রণাম। তাঁর শিশু সাহিত্যে অবদান অনেকেই জানি, কিন্তু তাঁর মুদ্রণ শিল্পের কথা অনেকেই হয়তো জানি না। শিশু কিশোর সাহিত্যের জন্য তাঁর অক্লান্ত প্রচেষ্টা সত্যই প্রশংসনীয় ও চিরস্মরণীয়।
    শিশু-দোসর উপেন্দ্রকিশোর তাঁর দূর সম্পর্কের কাকা হরিকিশোর রায়চৌধুরীর দত্তক পুত্র। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল কামদারঞ্জন। তাঁর যখন পাঁচ বছর বয়স তখন ঐ আত্মীয় তাঁকে দত্তক নেন এবং নাম বদলে রাখেন উপেন্দ্রকিশোর।
    উপেন্দ্রকিশোরের বাবা কালিদাস চৌধুরীর পাঁচ পুত্র ও তিন কন্যা ছিল। উপেন্দ্রকিশোর ছিলেন পিতার দ্বিতীয় পুত্র। কালিদাস চৌধুরী ছিলেন নানা শাস্ত্রে পণ্ডিত, সেই কারণে মুন্সী শ্যামসুন্দর নামে তাঁর খ্যাতি ছিল।
    ময়মনসিংহ জেলার মাসুয়া গ্রামের বিখ্যাত ছিল জমিদার চৌধুরী পরিবার। এই পরিবারে উপেন্দ্রকিশোর ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ১২ই মে জন্মগ্রহণ করেন। প্রথমে তিনি ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়াশোনা করেন ও ১৮৮০ খ্রিস্টাব্দে প্রবেশিকা পাশ করার পর প্রেসিডেন্সী কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু পরে তিনি কলেজ পরিবর্তন করেন ও ১৮৮৪ খ্রিস্টাব্দে মেট্রোপলিটন ইন্সটিটিউট থেকে বি.এ পাশ করেন। ক্রমশই শিশু সাহিত্যিকের মনের মধ্যে শিশুদের জন্য বই লেখার প্রবল ইচ্ছে ডানা মেলতে থাকল, কারণ উপেন্দ্র অনুভব করলেন বাংলাতে শিশু সাহিত্য খুবই অবহেলিত। এই ইচ্ছে ডানায় ভর দিয়ে তিনি ছোটদের নানান বিষয়ের বই একদিকে যেমন পড়তে থাকলেন, অন্যদিকে ছোটদের জন্যে লিখতেও লাগলেন। আমরা পেলাম তাঁর অসামান্য সেই সব গল্প- টুনটুনির গল্প, বাঘের গল্প, ছেলেদের রামায়ণ আরো কত কি, শিশু কিশোরের প্রবন্ধগুলিও তাঁর অনবদ্য- সেখানে আছে আকাশের কথা, পুরানো দিনের জীবজন্তুর কথা, এমন কি মুদ্রণশিল্পের কথাও তিনি লিখে গেছেন। কিন্তু শুধু লিখেই উপেন্দ্রকিশোর ক্ষান্ত হলেন না। তিনি খুব সুন্দর ছবি আঁকতে পারতেন- তাই ছোটদের লেখার সঙ্গে জুড়ে ছিলেন উপযোগী মজার মজার সব ছবি আর পরিকল্পনা করলেন ছোটদের জন্য বই প্রকাশ করার। তাঁর এই ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দেবার জন্য তিনি ছবি এনগ্রেভিং সম্বন্ধে পাঠ নিতে লাগলেন- সত্যই কি তপস্যা, কি সাধনা- ভাবতেই অবাক লাগছে তাই না? এখনও পরম আশ্চর্যের ব্যাপারটাই বাকি।
  ১৮৮৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি প্রতিষ্ঠা করলেন ‘ইউ রায় এন্ড সন্স’ নামে উন্নত এক ছাপাখানা, সেখানকার যন্ত্রপাতিগুলি তিনি বিদেশ থেকে আনিয়েছিলেন। বিপুল সম্ভারে সজ্জিত হল সেই প্রেস। এমনকি ছবি আঁকা ও ছবি তোলার স্টুডিও প্রেসে হল। হাফটোন ছবি ও ছাপার বিষয়ে নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে লাগলেন। সে এক গভীর গবেষণা। এই বিষয়ে তাঁর রচিত প্রবন্ধ প্রকাশিত হল বিলেতের ম্যাগাজিন ‘পেনরোজ অ্যানুয়ালে’ এবং প্রবন্ধটি উচ্চ প্রশংসাও পেয়েছিল। এই সূত্রেই এই পত্রিকার সম্পাদক মি.গম্বেলের সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোরের একটি সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে আর তাঁরই চিঠি নিয়ে তাঁর পুত্র সুকুমার রায় লন্ডনের এল.সি.সি স্কুল অফ ফটো এনগ্রেভিং এবং লিথোগ্রাফিতে পরে ভর্তি হতে পেরেছিলেন। ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে ডিসেম্বর এই শিশু সাহিত্যের পথিকৃতের জীবনাবসান হয়, কিন্তু আপামর বাঙালির কাছে চির অম্লান হয়ে থাকবেন শিশু সাহিত্যে তাঁর বিপুল অবদানের জন্য।

ছড়ায় মজিয়ে ছবি সাজিয়ে
উপেন রচেন রামায়ণ-
ভ্রমণ, গল্প অরূপ কল্প
হাজার তারার রূপায়ণ।
আঁকেন ছবি যুগের নবী
ক্ষান্ত এতেই নন-
শিশু-মিত্র বই সচিত্র
প্রকাশেও ব্রতী হন।
লেখায় রেখা নিউ ক্যামেরায়
নিজ তৈরী প্রেস-
শিশু-সাহিত্যের নতুনত্বের
দিগন্তের উন্মেষ।
সুকুমার-পিতা উজল সবিতা
দেখালেন আলো-পথ
জ্বেলে প্রদীপ সত্য-সন্দীপ
ওড়ালেন জয়রথ।
 






কেন এত বিভেদ
নরেন্দ্র নাথ নস্কর

ঈশ্বরের সৃষ্ট অনান্য জীবের মত মানুষের  বায়োলজিক্যাল বৈশিষ্ট সারা পৃথিবীতে এক রকম।

ভাষা ভিন্ন হতে পারে, রঙ বিভিন্ন হতে পারে, মত নানা রকম হতে পারে, খাবারের বৈচিত্র বিভিন্ন হতে পারে ,  ধর্ম বিশ্বাস ও সংস্কৃতির পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু মানুষের বায়লোজিকাল চরিত্র, যেমন শারীরিক গঠন, ফিজিওলোজিক্যাল ফাংশন, ব্লাড  গ্রুপের চারটি গ্রুপ ও অনান্য কিছু বিজ্ঞান ভিত্তিক মানুষের  বৈশিষ্ট যেমন চিন্তা করার শক্তি, ভালো মন্দ বিচার করা, ইত্যাদি প্রায় সারা পৃথিবী ব্যাপি এক রকমের দেখা গেছে।

বিজ্ঞানীদের মতে মানুষ জাতির   উৎস, অর্থাত অরিজিনও কালো, সাদা সবার সুদুর আফ্রিকায় আনুমানিক
315000 বছর আগে।

তাদের আগের নাম হোমো ইরেক্টাস ও পরে  ক্রম বিবর্তনে বর্তমান নাম হোমো স্যাফিনিস।

এরাই আফ্রিকা থেকে সারা পৃথিবীর বিভিন্ন মহাদেশ ও দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।

কেউ বা মঙ্গলয়েড আর কেউবা ককেসিয়ান রূপে বর্তমানে বিরাজিত।

পৃথিবীর বয়সের তুলনায় বা অনান্য জীব কূলের তুলনায়, মানুষ জাতি খুব নতুন, মাত্র কয়েক লক্ষ বছর।  ভাষা শিখেছে  মাত্র 50 হাজার বছর।

তবুও এরা নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে চলেছে।
সামান্য কারণে অহঙ্কারের বশবর্তী হয়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন মানুষ নিজেদের  কারণেই একদিন হয়ত ধ্বংস হয়ে যাবে।

সম্ভাব্য কারণগুলি হল বিশ্ব উষ্ণতার হেতু, পারমানবিক যুদ্ধ, কৃত্রিম বুদ্ধির অহেতুক  প্রয়োগ, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর  অপপ্রয়োগ  ও অনান্য কিছু মানুষের তৈরী  কারণ ।

ডাইনোসরের মত হয়ত মানুষ একদিন পৃথিবী থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তবু ডাইনোসর পৃথিবীতে ছিল প্রায় 16 কোটি বছর।
কিন্তু মানুষ কি অত দিন পৃথিবীতে থাকবে? সন্দেহ আছে।

আগে বলেছি পৃথিবীতে এসেছে মাত্র কয়েক লক্ষ বছর, আর কথা বলতে শিখেছে মাত্র 50 হাজার বছর।

কয়েক বছরের মাত্র আয়ু।
খুব বেশি হলে 100 বছর।

যদিও বর্তমান পৃথিবীতে মোটামুটি গড় আয়ু  দেশে দেশে সামাজিক কারনে, অর্থাৎ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, খাদ্য, স্যানিটেশন, ও অনান্য কিছু কারণে একটু ভিন্ন।
তবে  65 বছর থেকে 85 বছরের মধ্যে।
এর কমও হতে পারে আবার কোন দেশে কিছু বেশি হতে পারে।

এই কম সময়ের জন্য পৃথিবীতে এসে  নিজেদের মধ্যে এত হিংসা, ঈর্ষা, মারামারি, যুদ্ধ, ধংস,  লোভ করে শুধু নিজেদেরই ক্ষতি ডেকে আনা ছাড়া আর কি হয়?

এতে কি কিছু ভালো কোন যুগে হয়েছে?

ধর্মের নামে, দেশ অধিকারের নামে, আধিপত্য বিস্তারের নামে,  অযথা যুদ্ধ করে পৃথিবীতে নিজেদের ক্ষতি করছে কখনো কখনো।

বিজ্ঞান যে উন্নতি করছে সেগুলোর সুফল পৃথিবীর সমস্ত মানুষ ঠিক মত অনেক জায়গায় পাচ্ছে না, অনেক স্থানে পেলেও খুব অপ্রতুল।

মানুষের ভালো গুন বিকশিত না করে, জাতিতে জাতিতে যুদ্ধ ও মারামারি করে  নিজেদের বুদ্ধিকে শুধু অপচয় ছাড়া আর কিছু কোনদিন হয়নি।

বিজ্ঞানকে যদি ভালো কাজে লাগায় ভালো, নইলে এই বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগে পৃথিবীতে মানুষ ধংস হয়ে যেতে পারে।

তাই পরিশেষে বলা যায় যে, মানুষে মানুষে বিভেদ করে মানব সভ্যতার কোন উপকার হবে না, বরং ক্ষতিই হবে।

তাই ক্ষতি রুকতে যে কোন বিভেদ নিজেদের মধ্যে মিটিয়ে নেওয়া একমাত্র উপায়।

দেখা গেছে  অন্যের, অন্য দেশের ভালো করলে শেষে মানুষের ভালো হয়।

"মানুষের তরে মানুষ আমরা,
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে"।





গাঁদা ফুলের মালা
সুস্মিতা দে

যাবো আমি নাচ দেখতে বাঁদর নাচ
বিনামূল্যে দেখবো না আমি কহেছি
তো হাজার বার ।রাধিকা দোলে
কৃষ্ণ দোলে দাও কতো পয়সা ঢেলে।

ময়ূর নাচে পেখম তুলে দাও না
কোন পয়সা তাকে , উতলা বাতাসে
মুক্ত গগনে সবাই  খেলি নাচি ।
এক সাথে রাইকৃষ্ণ দোলে ফুলে
মালা গাঁথো সবাই মিলে মিশে ।

আমার মাথার চুলের খোঁপাতে
একটি মালা অবহেলার ফুলে
মা তুমি কেনো দাও  না । দাও
তুমি পড়ো নিজের  চুলে।

আনা এক দাও ,
দেখবো বাঁদর নাচ 
সবাই মিলেমিশে এক
আনাতে দেখবো। নিয়ম তাই।

তবে চলো সবাই মিলে মাথায় দিও
জড়িয়ে আমার বাগানের
গাঁদা ফুলের মালা রাঙিয়ে দাও
  আলতা পায়ে যাবো নরম
ছোঁয়ায় সাথে সবুজ ঘাসে
পা রেখে শিশিরের ভেজা
পায়ে  ধুইয়ে দেবে যত সব
  আছে মলিনতা ।
আসবো ফিরে ঘরে
সঙ্গে আনবো ভালোবাসা
কাকে বলে ? আমাদের
পূর্বপুরুষ মাগো আনন্দ
দিতে নাচ দেখিয়ে মাতিয়ে
রাখে মিলনের মধুর হাসি।
মা বলে দু আনা দে এক
আনাতে হয়? হয়না বলে
ফিরিয়ে দিল নিয়ম তো
    এক আনাই ।







হামিদুল ইসলাম এর চারটি কবিতা

              ১)  কিষানের দাবী
              

আজ জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ
ব‍্যারিকেড সমস্ত রাস্তায়
অবরুদ্ধ নগরী পরাজিত সম্রাটের কপালে
চিন্তার ভাঁজ
উত্তপ্ত তার উষ্ণীশ  ।।

দিগন্তে চিন্তার কালো কালো মেঘ
ঝাঁকে ঝাঁকে মানুষের আগমন
কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়
বিপ্লবের মন্ত্র গায়ে মাখে
শীতের শরীর  ।।

মস্তিষ্কে চিন্তার আদান প্রদান
ঝেড়ে ফেলে শাসক দল
বিকল্পের ভাবনা উপেক্ষিত
কোলের শিশু কাঁদে মায়ের বুকে
তবু দুঃসাহসে গর্জায় স্লোগান ।।

আজ অবরুদ্ধ নগরী
অবরুদ্ধ রাজপথ
এক শ চুয়াল্লিশ ধারা ভাঙে দুহাতের কব্জি
আইন তোলো, কথা বলো
কিষানের দাবী মানতে হবে আজ ।।


           ২)    জীবন অসীম
             

ইতিহাসের পাতা উল্টাই
ছায়াময় মানুষ
প্রতিদিন সংগ্রাম করে
দুমুঠো ভাতের আশায় ।।

দেখা হয় না ওদের চক্ষু মেলে
ভোরের পাতাল রেল
হাঁপিয়ে ওঠে জীবন
হঠাৎ চেতণায় বিষ্ফোরণ ।।

তাদের পাশে এসে দাঁড়াই
মৌন মিছিল পেরিয়ে যায় পদ্মপুকুর
জীবন অসীম
তবু মনে মনে ঘেন্না ধরে যায় ।।

        ৩)  জীবন, তোমার জন‍্যে
             

সম্মুখে দেখি জীবন
দাঁড়িয়ে আছে
আমার জন‍্যে  ।।

কতো ভালোবাসি
বন্ধু তোমাকে
তুমি আমার সুখের স্বপন ।।

নিশুতি রাতে জেগে উঠি
হাতড়াই জীবন
এ জীবন লড়াইয়ের পথ  ।।

লড়াই করে বাঁচতে চাই
জীবনের জন‍্যে
জীবন অজানা অরণ‍্য  ।।

অজানা অরণ‍্যে কড়োই ফল
অজানা মোহ
তবু তোমাকে পেতে চাই ।।

              ৪) বাসিফুল
            

দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছি
দূর দূরান্তের ছায়া পড়েছে তোমার চিলেকোঠায়
রামধনু জীবন
মায়ার মোহ রাত্রি বরাবর  ।।

ইতিহাস ভুলে যাই
জীবন অগাধ
তবু দাঁড়িয়ে থাকি তোমার দরজায়
কোনো এক অজানা কামনায়  ।।

ভোরের সুগন্ধ ছড়ায় বাতাসের বেগ
নিষ্পলক চিত্তে খুঁজি
বিরাজিত অরণ‍্য ভূমি
আমার ক্লান্তিরা মিশে থাকে এলোমেলো হাওয়ায় ।।

হাওয়ায় খুঁজি জীবনের অর্থ
এ জীবন অসাড়
তোমার জন‍্যে তুলে আনি ফুল
বাসিফুলে জীবনকে করি যাচাই  ।।




ডাঃ তারক মজুমদার এর এক গুচ্ছ কবিতাঃ-
         
    ছড়ায় ছড়া -(২)
 
বঞ্চনা  যখন ব্যাঞ্জনময়
নিঃশব্দে রক্ত ক্ষরণ
কৃত্রিম  মুখোশ দক্ষতায়
হৃদয় করে হরণ---- ।
      

        ছড়ায় ছড়া - (৩)
      
রক্ষক যখন ভক্ষক
ঘুণধরা সমাজে
মেরুদণ্ডহীন  মানুষগুলো
তক্ষক সময় কোলাজে---।






চন্ডীচরণ
অশোক কুমার রায়

বড় গাইয়ে চন্ডীচরণ
গান ধরিল ফাঁকা মাঠে ।
রামছাগলের হঠাৎ গুঁতোয় --
ঘরেই.এখন দিন যে.কাটে !





দুনিয়াদারী
  অঞ্জলি দে নন্দী মম

রাজনীতি রাজনীতি রাজনীতি।
ব্যাস, সব কিছুর ইতি।
রাজনীতি করছে আজ যত তরুবীথি।
রাজনীতিই এখন সৌহার্দ্য-প্রীতি।
এ ই আজকাল ভবিষ্যৎ, বর্তমান, অতীত-ই।
রাজনীতি ই সম্মানীয়/য়া অতিথি।
সমাজ, সংসারের আসল রীতিনীতি।
হৃদয়ের গীতি।
থাকতে চাও রাজনীতির বাইরে?
তাহলে তোমার এ দুনিয়ায় আর ঠাঁই নাই রে!
রাজনীতি কর!
জীবনকে পুরোপুরি ভর!
রাজনীতি ছাড়া আর কোনো গতিই নাই।
রাজনীতি কর তাই!
এর থেকে সরে থেকে হও না বেওকুব অতি!
রাজনীতিই একমাত্র গতি।
এ ছাড়া পারবে না করতে উন্নতি।
যদি রাজনীতির কাছে স্বীকার না কর নতি,
হবেই হবে তোমার অবনতি।
নিভে যাবে চিরতরে তোমার দেহাত্মার জ্যোতি।
অকালে প্রাণ হারাবার আর ভয়টি নাই।
রাজনীতি করা মানে জীবন বাঁচা।
সাফল্যের চূড়োয় পৌঁছে নাচা।
রাজনীতির বলী হওয়া থেকে
কেউই আজ যাচ্ছে না বাদ।
এ যেন শ্বাস বায়ুরূপে ধরাকে রয়েছে ঢেকে।
হায়, আজ জীবন ভুলে গেছে
খাঁটি - প্রকৃত সম্পর্কের স্বাদ।
সুবুদ্ধির হচ্ছে বরবাদ।
এ যে পৃথিবীর পরম পরমাদ।
যারা পারছে না করতে রাজনীতি
তারা আর পারছে না থাকতে বেঁচে।
অন্তরের আজ সবারই রাজনীতি-ভীতি।
রাজনীতি কাউকেই ছাড়ছে না।
কেউই এর থেকে সরে থাকতে পারছে না।
টেনে নামাচ্ছে সবাইকে রাজনীতি।
ঈশ্বরের শক্তির সামনে নয় মাথা নিচু।
সর্ব শক্তি তো আছে সব যা কিছু
রাজনীতিতেই আজ।
রাজনীতি আদর্শকে ফেলছে আপন অসৎ ফাঁদে।
রাজনীতি ছাড়া জীবন এখন অমৃত থেকে বঞ্চিত/তা।
তারা শুধু হারানোর দুঃখে কাঁদে।
রাজনীতিময় জীবনে আজ সুখানন্দ সঞ্চিত/তা।
আশেপাশে,ওপরনিচে, সামনেপিছে
অদৃশ্যে, দৃশ্যে এখন কেবল চলছে
প্রবল প্রভাবশালী রাজনীতিরই কাজ।
এ তো অদৃষ্টের ফল হয়ে ফলছে।
জানি মা এ থেকে জগৎ মুক্তি পাবে কবে!
কবে কর্ম রাজনীতিহীন হবে?
আশা আছে তবে,
যে করতে চায় না রাজনীতি
একসময় সে নিস্কৃতি পাবে এর থেকে।
আর যে করতে চায়, স্বেচ্ছায় করুক না সে।
শুধু অসহায় আঁখিতে আগামীর বার্তা যাই রেখে।
মহাকাশে যাই মুক্তালোর, স্ব-স্বাধীনতার ছবি এঁকে।
মন আজ এই ভেবেই নিজেরে ভরুক না সে,
একদিন নোংরামো করবে না রাজনীতি।
নির্লিপ্ত, সু-সম্বন্ধই হবে
চাওয়া পাওয়ার সুখ শান্তির হার-জিতই।
শীঘ্রই আসুক সেদিন আমাদের প্রিয় এ ভবে!






শান্তি দাস এর ৩টি কবিতা
কলম_যোদ্ধা

"কলম"তুমি জনম জনম থাকো যার সাথে,
সেই তো বিদ্বান,তিনি জ্ঞানী,তিনিই শ্রেষ্ঠ এই দুনিয়ায়।
অসি আর মসি যেন  দুই সহোদর,
এই অসিতে হয়, রক্ত বন্যা,কলমে চলে মসির ক্ষরণ।

কলমের জোরে জনম ধরে জ্ঞানী,বৈজ্ঞানিক,
কবি সাহিত্যিক,দার্শনিক এই শ্রষ্ঠার সৃষ্টির এই মহিমা।
মসিতে কলম চলে অসিতে হয় রক্ত ক্ষরণ,
কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়ে হয় কখনো দামী।

কলম দিবে সত্য সুন্দর আলোকময় জীবন,
জ্ঞানে গুনে ভরে উঠবে নাম যশে এই ত্রিভুবন।
কলমেরা চলছে বলেই তো ভাষায় এতো তীব্রতা,
কলম আছে তাই মুছে দিচ্ছে সভ্যতার মুর্খতা।

কলম দিয়েই আজও  চলে প্রেম, বিরহ, আলাপ,
কলমের কালিতেই চলে কবিতায় দুঃখ সংলাপ।
কলমেরা বড্ড সচেতন, তাই বলেই
কবিতার মাধ্যমে কবি কত শত অক্ষর বুনে।

কলমে আছে অনেক শক্তি,কলমেই শাস্তি দেয় বিচারক,নির্দোষ পায় মুক্তি।
কলম দিয়ে শিশু লিখে বর্ণমালা প্রাপ্ত হলেই হিসেব শিখে,
রাস্তা খুঁজে কিভাবে করবে চুরি কলমের লেখনীতে রয় ,নিরবতার বৃষ্টি,
এভাবেই চলবে কলম ,নবপ্রজন্মের হবে সৃষ্টি।।

স্বপ্নময়_জীবন

স্বপ্ন তো অচেতন মনের, ভাবনা গুলো আসে মনে,
এই বাস্তব কঠিন রূপে, স্বপ্ন জেগে উঠে জীবনে।
স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যায়, এই নিয়েই মোদের সংসার,
কামনা বাসনা ত্যাগে খুঁজে নিতে হয় সংসারের সার।

জীবনে চাওয়া পাওয়ার আকাঙ্খা গুলো নিয়ে,
আসে তো মনে সংশয় তবুও স্বপ্নের বেড়াজাল ঘিরে।
কষ্ট হয় জানি স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার যন্ত্রণা,
স্বপ্ন সফল করা মনের গভীরে জাগিয়ে তুলে শান্তনা।

কত স্বপ্ন খারাপ ভালো জীবনের বেড়াজালে,
সব স্বপ্ন তো সফল হয়না থেকে যায় মনের অন্তরালে।
স্বপ্ন সফলের চেষ্টা ভাগ্যের পরিহাস বাস্তবের লড়াই,
জীবনের সঠিক পথে চলার জন্য চড়াই উৎরাই।

সবার মনের আকাঙ্খা গুলো দেখায় স্বপ্নের মাঝে,
স্বপ্ন দেখি বাস্তবে সফল করার কি সবার সাজে!
তবুও স্বপ্ন দেখতে তো নেই মানা, প্রত্যাশা করা যায়,
তবে অপ্রত্যাশিত সব কিছুই দুঃখ ছাড়া কিছু নাই।

আশার মাঝে নিরাশা এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে মনের কোণে,
তবুও শেষ নেই সীমাহীন অপেক্ষার বেড়াজালে।
তবুও চেষ্টার ফল ব্যর্থ হয় না জীবন স্বপ্নময়,
জীবন চলার পথে স্বপ্ন ঘিরেই আমরা কাটায় সবসময়।

নবান্নের_উৎসব

বাঙালির ঘরে ঘরে লোক উৎসবের আয়োজন,
নবান্ন উৎসব এই ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত জনগন।
নতুন ধান কাটা ধানের প্রথম অন্ন খাওয়া নবান্ন উৎসব,
এই উৎসব যেন হৃদয়কে গাঢ় করার একটা অন্তরের উৎসব।

হেমন্ত এলেই দিগন্ত জুড়ে প্রকৃতি ছেয়ে যায় সোনালী ধানে,
পাকা ধানের সোনালী রঙ কৃষকের আনন্দ প্রাণে।
ঘরে ঘরে গোলা ভরা ধান বছর ঘুরে এসেছে অগ্রহায়ণ,
এমাস যে লক্ষ্মীর মাস প্রথম ফসল কাটা মায়ের দান।

বাঙালির জীবনে পয়লা অগ্রহায়ণ বার্ষিক সুদিন,
এই হেমন্তের প্রাণ নবান্ন উৎসব ঘরে ঘরে করা হয় পালন।
নবান্ন অর্থ নতুন অন্ন এই হলো ঋতু কেন্দ্রীক উৎসব,
এই  মাসটি আবহমান ধরেই বাঙালিরা মেতে থাকে সব।

নাগরিক জীবনে নবান্নের শুভক্ষণের শুভছায়া ছড়িয়ে আছে,
হিন্দু ধর্মমতে অন্ন লক্ষ্মী তুল্য সবার কাছে।
দেবীর উদ্দেশ্যে উঠোনে আল্পনা দিয়ে ভোগ আয়োজন করে,
নতুন চালের খাদ্য সামগ্রী কাককে নিবেদন করে।

নবান্ন এক অসাম্প্রদায়িক উৎসব বাঙালির ঐক্য ভ্রাতৃত্ব আত্মীয়তার বন্ধন,
নবান্নে গ্রামে বসে লোকমেলা পিঠেপুলির আয়োজন।
গ্রামের মাঠে বসে লোকনাট্য বাউল গানে মুখরিত আসরে  পালাগান।
এই লোক উৎসবের আয়োজনে মুখরিত হয় গ্রামের লোকজন।





এই  শীতে  পর্বতে...
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

এই  শীতে  হিমালয়  পর্বতের  ছবিটা  কেমন?
শীতে  থরহরি  কম্পমান  মানুষজন, পশুপাখি!
আর  আমিও  তো  এই  পূর্বর্হিমালয়  পর্বতের  খুব  কাছে  থাকি৷
প্রতিদিন  সকাল  সন্ধ্যা  রাত  এই  পর্বতমালার  বুকে  জনজীবন  খুব  কাছ  থেকে  দেখি৷
কুয়াশা  ভরা  সকাল  কখনো,বরফ  পড়া  দিন,
পৃথিবীর  কত  ঘটনা,চারদিকে  কত  রটনা,
পাশেই  বর্ডার ,সেখানে  যুদ্ধের  প্রস্তুতি  গড়ে  তুলছে  চিন৷





অভিমত
 
সংবাদপত্র ও সাহিত্য
  -  অগ্নিমিত্র

বাংলা সংবাদপত্রে বরাবর সাহিত্যের একটা স্থান ছিল, আছে ও থাকবে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ও গৌরকিশোর ঘোষের মতো নামকরা সাহিত্যিকরা সাংবাদিকতার সূত্রে সংবাদপত্রেই প্রথম গল্প লিখতে শুরু করেন । এখন বেশির ভাগ বাংলা সংবাদপত্রেই শনিবার ও রবিবার একটা আলাদা ক্রোড়পত্রে বা বিভাগে নবীন লেখকদের কবিতা ও গল্প প্রকাশিত হয়। আগেও তাই হতো। লেখার সাথে আঁকা ছবিও থাকে।.. এই লেখাগুলি পড়তে খুব ভালো লাগে । ভবিষ্যতের সাহিত্যিকরা অনেকেই এখানে লিখতে লিখতেই উঠে আসেন পাদপ্রদীপের আলোয় । তবে আজকাল দেখা যাচ্ছে যে ভালো লেখা প্রকাশ হচ্ছে না; তেমন ভালো নয় যেগুলি, সেগুলিই প্রকাশ হয়ে যায় । সংবাদপত্রের কর্ণধারদের এই সব ব্যাপার দেখতে হবে । সস্তা জনপ্রিয়তা চাই না।
  তাছাড়া অনেক বাংলা সংবাদপত্রে ভিতরের পাতাতেও প্রবন্ধ ও অভিমতের আকারে সাহিত্য ও সাহিত্যিকদের নিয়ে আলোচনা হয়। সেগুলিও খুব সুন্দর ও উঠতি লেখকদের পক্ষে বিশেষ লাভদায়ক।
  অনেক সময়ে সংবাদপত্রের কর্তারা আলাদা ভাবে প্রকাশনাও চালান । সেক্ষেত্রে সংবাদপত্রে যাদের লেখা  প্রকাশিত হয়েছে তারা একটু সুবিধা পান।
  আশা কথা যায় ভবিষ্যতেও সংবাদপত্র বাংলা সাহিত্যের ধারক ও বাহক হিসেবে তার দায়িত্ব পালন করবে।।





চিন্তা শুন্য
আব্দুল হান্নান

ভাবলে এসব অবাক লাগে
  দেখলে লাগে হাসি
বাবলা গাছে শিম ঝুলছে
  লাগেনা মোটে খুশী।

কাকের বাসায় কোকিল ছানা
   তালের পাতার ফাকে
খুশ মেজাজে ডানা মেলে
   মধুর সুরে ডাকে।

মোটা হুঁশেই.. সুখ্য চিন্তা...
   আসেনা কভু নেমে
সহনশীলের চিন্তা ছাড়াই
  করোনা যায় থেমে?

মগজ ভরা গোবর ঢেরায়
  হয় না জীবন যাত্রা
  চারি দিকে চোখ রেখে পথ
  খোঁজাই ভালো মাত্রা।।







    লাল কেল্লা
বদরুদ্দোজা শেখু


ধূমোট ধূমোট এক গুমোট সন্ধ্যায়
দর্শকের অনুধ্যান নিয়ে পৌঁছলাম লাল কেল্লায় ,
লাহোর দরজা দিয়ে ভিতরে গেলাম,
একটি মিনিবাজার পার হ'য়ে প্রধান ফটকে ঢুকলাম।


লাল কেল্লার ভিতর দেখছি দুর্ভেদ্য আবাস
দেওয়ান-ই-আম লাল পাথরের , সফেদ দেওয়ান-ই-খাস---
শ্বেতপাথরের ভিতর খচিত নক্সার কারুকাজ
রঙ-বেরঙের পাথর বসানো, ছিঁটে ফোঁটা  আছে আজ
প্রধান কক্ষে রয়েছে শূণ্য শুভ্র নিরাভরণ
মর্মর বেদী, নাই তার শোভা ময়ূর সিংহাসন;
রঙমহলের খোল-নলচে'য় নাই রঙ-বিন্যাস
সমস্ত শুনি নাদির শাহের লুঠতরাজের গ্রাস,
মোতি মসজিদ বিষণ্ণ বড়ো,নাই6 সেই হেফাজত
আজান সুরায় মুসল্লিদের সুললিত তেলাওত,
জৌলস আজ জবুথবু, তবু যতো দেখি মনে হয়--
স্থাপত্যগুলি কীর্তির এক ভৌতিক বিস্ময়,
একদা জাঁকালো জবরদস্ত্ বাদশাহী লীলাক্ষেত
চষছি হালের বল্গাবিহীন ভ্রামনিক ভূতপ্রেত
ক্ষণিক অতিথি, এবং করছি হিস্ট্রি রোমন্থন
আর চাক্ষুস করছি উদাস তার ক্রোড়ে বিচরণ,
দেখার খেয়াল ক'রে দ্যায় যেন সময়কে সংক্ষেপ
চারিধারে ঘুরে সান্ধ্য সজাগ ভূতুড়ে পদক্ষেপ,
পরিহাস-প্রিয় মোহনায় মৃত শতাব্দী স্থবির,
রোমাঞ্চ-বিহ্বল বিস্মিত শ্লথ স্নায়ুর নিবিড়
অনুভূতিগুলো থেমে যায় এসে কালের সমাধি পাশে'---
বোঝা যায়না এ কীর্তির রূপ কীর্তির ইতিহাসে ।।




কবিতা
স্মৃতির নির্যাস
রণিত বন্দ্যোপাধ্যায়

শত বেদনা, শত যন্ত্রনার মাঝে
ঘুমিয়ে রয়েছে আমার প্রাণ,
শান্ত নদীর পাড়ে পেতেছি আমার কান;
যদিও বিষণ্ণ আজ চিত্ত আমার
তবুও তোমায় ভরা অচেনা আকাশ,
ঝরে পড়ছে দু-এক ফোঁটা করুণার নির্যাস।

ভাঙা-গড়ার শূন্য ভেলা নদীতে ভাসে,
রক্ত আমার নীল হয়েছে শুধুই স্মৃতির বিষে।।



1 টি মন্তব্য: