সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২০

গবেষণা মুলক প্রবন্ধ কবি ও কবিতা : রফিক আজাদ: "আব্বাজান" সৌম্য ঘোষ

গবেষণা মুলক প্রবন্ধ  কবি ও কবিতা :  রফিক আজাদ:  "আব্বাজান"    সৌম্য ঘোষ

 গবেষণা মুলক প্রবন্ধ
 কবি ও কবিতা :
 রফিক আজাদ:  "আব্বাজান"
           সৌম্য ঘোষ

   



"বালক ভুল করে নেমেছে

ভুল জলে

বালক পড়েছে ভুল বই

পড়েনি ব্যাকরণ, পড়েনি মূল বই"

                       —রফিক আজাদ


ভুল জলে নেমে পড়া ভুল বালকের জন্য কি এক মর্মছেঁড়া হাহাকার নেমে আসে বুক জুড়ে! ব্যাকরণ পড়াই হলো না, মূল বইও। তবু ভুল বই ধরে ধরেই চলে গেল এতটা কাল! চলে গেল! চলে গেলেন কবিতায় জীবন পার করা নির্ভুল বালক রফিক আজাদ! বসন্তে এসেছিলেন তিনি, চলেও গেলেন বসন্তে।


বসন্তছোঁয়া জন্মের জন্যই বুঝি তাঁর কবিতা এত বসন্ত-মাখা! ভালোবাসা তাঁর কাছে এমনই এক সঞ্জীবনী—যা পেলে তিনি শুধরে নিতে চান ‘জীবনের ভুলগুলি’। কিন্তু জীবনের ‘ভুল বইগুলো’ই তো তাঁকে রফিক আজাদ করেছে। ‘ভুল বই’ থেকে পাঠ নিয়ে নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘ভালোবাসা মানে শেষ হয়ে যাওয়া কথার পরেও মুখোমুখি বসে থাকা।’ প্রেম নিয়ে এ রকম উপলব্ধি তুলনারহিত। এই উপলব্ধি এতটাই চেতনপ্রবাহী, এতটাই প্রভাবসঞ্চারী যে, কবিতার লাইন থেকে মানুষের মুখে মুখে ফিরতে ফিরতে আজ প্রায় প্রবাদের মর্যাদা পেয়েছে। কবি কতটা বিস্তারী হলে এ রকম হতে পারেন, এর উজ্জ্বল উদাহরণ কবি রফিক আজাদ।


তিনিই প্রথম ‘অপেক্ষা’ এবং ‘প্রতীক্ষা’ শব্দ দুটোকে আভিধানিক অর্থ থেকে মুক্তি দিয়েছেন। পার্থক্য গড়িয়ে দিয়েছেন। দেখিয়েছেন শব্দ দুটি কিভাবে আভিধানিকতা থেকে পৃথক হয়ে ভিন্নতর দ্যোতনা নিয়ে হাজির হয় । রফিক আজাদের হাত দিয়েই রচিত হলো ‘অপেক্ষা’ আর ‘প্রতীক্ষা’র ভিন্নার্থিকতা।


কবি রফিক আজাদের জন্ম টাঙ্গাইলে। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ ‘অসম্ভবের পায়ে’। এরপর একে-একে প্রকাশিত হয়েছে ‘সীমাবদ্ধ জলে, সীমিত সবুজে’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’, ‘প্রেমের কবিতা সমগ্র’, ‘বর্ষণে আনন্দে যাও মানুষের কাছে’, ‘বিরিশিরি পর্ব’, ‘শ্রেষ্ঠ কবিতা’, ‘কবিতা সমগ্র’, ‘হৃদয়ের কী বা দোষ’, ‘কোনো খেদ নেই’ ইত্যাদি। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৮১, লেখক শিবির পুরস্কার-১৯৭৭, আলাওল সাহিত্য পুরস্কার-১৯৮১, কবিতালাপ পুরস্কার-১৯৭৯, কবি আহসান হাবীব পুরস্কার-১৯৯১, কবি হাসান হাফিজুর রহমান পুরস্কার-১৯৯৬, একুশে পদক-২০১৩।


তিনি শুধু ভালোবাসার কথাই বলেন না। সম্মুখযোদ্ধা এই কবি ঠিকই উপলব্ধি করেন ‘দেয়ালে দেয়ালে অনিবার্য অন্ধকার,’। সেই অন্ধকারের স্বরূপ উন্মোচন করতে গিয়ে দেখেন বীভৎস সত্যের আচ্ছাদন। মানুষের মৌলিক উপলব্ধির গভীর জগতে তিনি চলে যান। পাঠ করেন নির্মল সত্য। এই সত্য তাঁকে বলতে বাধ্য করে :

 ‘ভাত দে হারাম জাদা, নইলে মানচিত্র খাবো’।


 এরকম আগ্রাসী মনোভাবের মাধ্যমেই তিনি ইঙ্গিত করেন মানুষের প্রকৃত মৌলিক স্বাধীনতার কথা। ভৌগলিক স্বাধীনতাই একমাত্র মুক্তির মাধ্যম নয়। অর্থনৈতিক মুক্তি এখানে এক গুরুত্বপুর্ণ অনুষঙ্গ।


শেষাবধি মানুষেরা হিংসা দ্বেষ ভুলে পরস্পর সৎ প্রতিবেশী হবে ।


তাঁর আরেক কালজয়ী কবিতা ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’। পনেরোই আগস্টের মর্মন্তুদ ঘটনা তাঁকে খুব তাড়িয়ে ফিরছিল। তিনি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না একটুও। তখন রাজধানী থেকে বের হয়ে তিনি চলে যান চুনিয়া গ্রামে। তারপর লেখেন—‘চুনিয়া নৈরাশ্যবাদী নয়, চুনিয়া তো মনে প্রাণে/ নিশিদিন আশার পিদিম জ্বেলে রাখে/ চুনিয়া বিশ্বাস করে/ শেষাবধি মানুষেরা হিংসা দ্বেষ ভুলে/ পরস্পর সৎ প্রতিবেশী হবে।’ কতদিন আগে লেখা কিন্তু আজও কী সম-সাময়িক! একেই বোধহয় বলা হয় কবির তৃতীয় নয়ন। যে নয়ন দিয়ে তিনি উপলব্ধি করেছিলেন দূর ভবিষ্যতের সমূহ অসম্পুর্ণতা। তাই আশার কথা শোনাতেও তিনি ভুলে যাননি। একজন প্রকৃত কবির কাজ শুধু অন্ধকারের রপ বর্ণনা করাই নয়, অন্ধকারের আচ্ছাদন আবিষ্কার করে আলোর কথা বলা, আশার কথা শোনানোও তাঁর পবিত্র কাজ। রফিক আজাদ সেই কাজটিই করেছেন আজীবন। এক জীবন তিনি ব্যয় করলেন শুধু কবিতার জন্যই। তাঁর প্রত্যাশার বাস্তব রূপ আজ বড় বেশি প্রয়োজন। আজকের এই বিভক্ত সমাজ একতায় আশাবাদী হতে চায়।


স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশকে অতিক্রম করতে হয়েছে অনেক ক্রান্তিকাল। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর যখন ‘বঙ্গবন্ধু’ শব্দটি উচ্চারণেও এক রকম নিষেধাজ্ঞা ছিল, সে-সময় তিনি লিখলেন, ‘এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে/ সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে/ বত্রিশ নম্বর থেকে/ সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে।’


এরকম সাহসী ছিলেন তিনি। 


কী ভাষা থাকতে পারে আমাদের তাঁকে শ্রদ্ধা জানানোর! আমি বাক্যরহিত । আমার অন্যতম প্রিয়কবি রফিক আজাদ , যাকে "আব্বাজান" ডাকা যায় ।।

___________________________________________


লেখক :--  অধ্যাপক সৌম্য ঘোষ। চুঁচুড়া।  হুগলী ।

                 ১৩-১২- ২০

__________________________________________



রবিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 13/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 13/12/2020, রবিবারবার
               সময় :- রাত 09 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

পবিত্র ভালোবাসা  ভালো  লাগে.....
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

পবিত্র  ভালোবাসা  আজও  আমার  সমান  ভালো  লাগে,
এই  পাহাড় ,ঝর্ণা,অরণ্য,চা বাগান,খরস্রোতা  নদী,
আমি  খুব  খুশী  হবো,এই  ভালোবাসা  দিয়ে  সুখী  করো  যদি!
ভোরের  সূর্য,কুয়াশা,বরফ ও  ঠান্ডা  বাতাস,
মায়াবী  রাতের  রূপালী  চাঁদের  কবিতা,
তোমারও  কি  ভালো  লাগে  না?বলো  মিতা,
আমি  তো  আগের  মতো  আছি,জানো,অসমের  কবি  সঞ্চিতা?
এই  করোনার  আবহে  কমে  গেছে  কাজ,
ঘরে  বসে   দূরের  ও  কাছের  কবিদের  কবিতা  পড়ছি  আজ৷
চেনা  পৃথিবীর  ছবিটা  কি  পাল্টে  যাচ্ছে দাদা?
সততার  সাথে  সবাই  বলছে  কি  আর  কালোকে  কালো?  সাদাকে  সাদা?
সবকিছু  দুপায়ে  মাড়িয়ে  পবিত্র  ভালোবাসা আরো  এগিয়ে  চলুক,
এই  পাষাণ  পৃথিবীতে  নরনারী  খোলা  মনে  আরো  ভালোবাসার  কথা  বলুক৷
——————————————————



কাজল
শান্তি দাস

নাম তার কালি কিন্তু কত সুন্দর,
চোখের রূপরেখার টানে সে কাজল।

সেই কালি মেখে দিলে হয় কলঙ্কিনী,
কি মহিমা কাজলের,মায়াবী চোখের টানে।

কৃষ্ণকলি কাজল টানে,পটল চেরা চোখে,
আকর্ষিত কত শত নরের হৃদয় চুম্বনে।

কালি হয়ে ও কলঙ্ক ঘুছাতে কাজল,
সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে শত নারীর চোখে।

কাজল কখনো হইও না কালি কারো নজরে,
তোমায় দিয়ে রূপের বাহার যৌবনের পরশ।

কাজল চোখে পড়ে সে মায়ার টান টানে,
কাজল থেকো না কালিরূপে কলঙ্কিনী হয়ে।




প্রবন্ধ
ভালো রহস্য গল্পের বৈশিষ্ট্য
   -  অগ্নিমিত্র

  সার্থক রহস্য কাহিনী হতে হবে টানটান উত্তেজনাময়। রহস্যের সাথেই যুগ্ম শব্দের মতো চলে আসে ' রোমাঞ্চ'; তাই কাহিনীর বাঁধন যেন ঢিলে না হয়  । পাঠকের আকর্ষণ যেন তা টেনে ধরে রাখতে পারে । সবসময়ই যেন পাঠকের মনে হয় - এবার কী হবে ? কী হলো ব্যাপারটা? এর পিছনে কারণটা কী? রহস্য কাহিনীর দৈর্ঘ্য হতে হবে বেশি বড় নয়, আবার বেশি ছোটও নয়। আবার এই ধরনের গল্পে গোয়েন্দা চরিত্র থাকতে পারে, আর ভূত বা অশরীরী আত্মাও থাকতে পারে। আবার এগুলো না হলেও সার্থক রহস্য গল্প সৃষ্টি হতে পারে । আবার প্রাকৃতিক কোনো ঘটনাকে রহস্যের আবরণে মুড়ে খুব ভালো  রহস্য গল্প লেখা যায়। লেখায় মুন্সিয়ানা থাকতে হবে । মোট কথা, পাঠক যেন আকৃষ্ট হয়। তবেই রহস্য গল্প সার্থক হবে।
  বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় এমন অনেক রহস্য গল্প আছে। সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে এসব রহস্য গল্প । বাংলায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমেন্দ্রকুমার রায় ও নীহাররঞ্জন গুপ্ত রহস্য গল্পের সার্থক রচয়িতা । রহস্য গল্প অনেক সময়ে কমিকসের আকারেও প্রকাশ পায়।.. ভালো রহস্য গল্প থেকে অনেক ভালো ও সর্বজনপ্রিয় ছবিও তৈরী হয়েছে ।
  আজকাল আর বাংলায় রহস্য গল্প তেমন লেখা হচ্ছে না। তবে পাঠক আজও এরকম লেখা পড়তে চায়। সেই রহস্য গল্পের দিন ফিরে আসুক ।।..




জীবন সায়াহ্নে
   সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

     কী কথা বলিব কারে হায়
     এমন ব্যাকুল দিনে কী বা যায়--
এমন প্রখর ভারে      শরীর হাহা করে
         মরণ যেন সদা কাছে চায়।।

     বেদনা বোঝাবো কারে আর
     সকলে দূরে যে চলে আমার।
বসে না কাছাকাছি    শুধায় না কেমন আছি
      আঁখি তে রুধিরধারা বয়ে যায়
        জোছনা দুয়ারে এসে ফিরে যায়।।

       পুত্র পরিজন যেন সব
       ধনাদি লয়ে করে কলরব
কেবল মুখ দিয়ে  আশার আশা নিয়ে
        মিলন সুধা পানে ছূটে হায়
        হৃদয়ে শত ব্যথা ভরে যায়।।

       ক্ষণিক দুখে ভরে মনপ্রাণ
       শয়নে বিজনে শোনে কলতান
শুধুই মিছিমিছি      কলহ নিবিড় সাজি
         আসন বিছায়ে সেথা লয় স্থান
         যে কথা বলিতে কাঁদে প্রাণ।।

          বুঝেছি এতে কারো বয়ে যায়
          ভাঙা মন বোঝেনা প্রীতি কোথায়
আঁধারে দীপ জ্বলে    বাড়ির তুলসী তলে
         প্রেম স্মৃতি অনুরাগে ফিরে তাকায়
         দিনান্তে পরাণ খানা ভেঙে যায়।।

          এখনো লাজ উপেক্ষা বারোমাস
          কত কটুক্তি নানা উপহাস---
কতজনা মোড়ে মোড়ে   শোনায় উপহারে
        যে কথা শুনিলে কান ভুলে যায়
        কী কথা কারা বলে হেথা হায়।।

       ওরে মূর্খ, এতে তোর কী বা বহে যায়
        অবনতি বসে সময় গুনে যায়
যে কথা শুনে শুনে    ব্যথা ভরে মনে
       সে কথা ভেবে কর তুচ্ছ তায়
       মরণ যদি আসে ডাকো তায়
মিলন সুখ পাবে যদি বিধি চায়।।





হায় রে হৃদয়!
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

শীতের রাত তাকে কাঁপচ্ছে।
হাঁপানিতে সে হাঁপাচ্ছে।
আমি আমার কাঁচের জানলা দিয়ে দেখলাম তাকে।
ও আমার বাড়ির সামনে ফুটপাতে থাকে।
বয়স সত্তর মত হবে।
কেউই নেই ওর এ ভবে।
ধরা গলায় কীর্তন গায়।
আর ভিক্ষা করে খায়।
আমি ওকে ঠান্ডার রাতে
দিলুম একটি গরম কম্বল নিজের হাতে।
ও নিজেকে জড়ালো তাতে।
একটু পরে তার ভেতরে ঢুকল বেশ ক'টা কুকুর ছানা।
ও ওদেরকে করল না কোনোই মানা।
ওরা ওর চেনাজানা।
একই ফুটপাতে তো থাকে।
হ্যাঁ, এবার ও ওই কম্বলটিতে ওদের গা ঢাকে।
আর কম্বল ছেড়ে নিজেকে বাইরে রাখে।
শীতে ও কাঁপতে থাকে।
আমি ওপর ঘরের বন্ধ কাঁচের জানলা দিয়ে দেখি।
হায় রে হৃদয়! এ কী?
সত্যই অশেষ প্রেমাধার নয় সে কী?
সারা দুনিয়া আজও হয়ে যায় নি মেকী!
এরপরে আমি বিছানায় বসে নিজেকে হট এয়ারে সেঁকী।






                   বাবা
           হামিদুল ইসলাম
              

বাবার হাত ধরে চলতে চলতে
এক সময় পৌঁছে যাই
স্কুল
স্কুলের গেট তখনো খোলে নি
বাবা দাঁড়িয়ে থাকতেন আমার জন‍্যে
ছুটির ঘণ্টা পড়তো
বাবা স্কুল গেটে
বাবার হাত ধরে চলতে চলতে বাড়ি ।।

মা'র সেই করুণ মুখ
পুকুরের শান বাঁধানো ঘাটে বসে
ধুয়ে নিতাম চোখ মুখ
সুর্য ঢলে পড়তো বিকেলের শেষ প্রান্তে
মা খুব ব‍্যস্ত
আমার খাওয়া দাওয়া নিয়ে
কখনো চিড়ে দই
কখনো সন্দেশ মুড়ি

এখন বাবা মা কেউ নেই
আমি অনাথ
তালগাছ
সামান‍্য হাওয়ায় বাড়িয়ে দিই হাত
হাতে বাবা মায়ের স্নেহের পরশ
হারিয়ে গেলো শৈশব কৈশোর
যৌবনের উদ্দীপ্ত প্রভায় এখনো স্বপ্ন দেখি
বাবার হাত ধরে আমি স্কুলে যাচ্ছি ।।

এ যাওয়ার শেষ নেই ।।







একাত্ম হৃদয়
নরেন্দ্রনাথ নস্কর

ফুলে যখন মৌমাছি বসে,
সে দৃশ্য কখনও হৃদয় ভরে দেখেছ?

পথ চলতে চলতে ঝিঙেফুল ভরা মাঠ দেখে মুগ্ধ হয়ে, কোনদিন তার সৌন্দর্যে বিহ্বল হয়েছ?

হাওয়ায় সবুজ ধানের ক্ষেত দুলতে দেখে মন কখনও উদাস হয়েছে?

বসন্তের সন্ধ্যায়  পলাশ, শিমূল ফুলের লাল রঙের সাথে কখনও সূর্যাস্তের রঙ মিলিয়ে একাকার হয়েছ?

গ্রীষ্মকালের দুপুরে রাস্তার পাশে বটবৃক্ষের তলায় বসে কখনও কবিতার কথা ভেবেছ?

কপোত কপোতীকে পাশাপাশি বসতে দেখে, কখনও হৃদয়ে প্রেমের কথা মনে এসেছে?

বৃষ্টির দিনে একলা ঘরে বসে, কারোর কথা ভেবে কোনদিন মন উদাস হয়েছে?

শীতের হিমেল হাওয়ায় কোন গাছের পাতা ঝরা দেখেছ?

সমুদ্র দেখে কখনও তার বিশালতায় নিজেকে  অতি ক্ষুদ্র এ কথা মনে  হয়েছে?

আকাশের নীলিমায় নিজের মন কোনদিন কিছু সময়ের জন্য হারিয়েছে?

বসন্তের সমীরণে কোন কবিতার লাইন কোনদিন মনে এসেছে?

কাহারও সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে কখনও অন্য কল্পনার  জগতে চলে গেছ?

কারো বেদনায় কখনও  ব্যথিত হয়ে চোখে জল এসেছে?

বড় হয়ে শিশুর মতো ছেলেমানুষি কখনও  মনে এসেছে ?

পথ চলার হিসাবের থেকে বহুদুরে মন কখনও চলে গেছে?

প্রকৃতির সাথে  কখনও  একাত্মতা অনুভব করেছ?







অমর জ্যোতির পাদদেশে
বদরুদ্দোজা শেখু

জুলাই মাসের জ্বলন্ত দুপুরে একদিন
হেঁটে হেঁটে  পৌঁছলাম ইন্ডিয়া  গেটের প্রচ্ছন্ন  ছায়ায়,
ধীর পায়ে ঘুরে ফিরে  স্থাপত্যকে  দেখতে  বিভোর
যথাসম্ভব সময় দিলাম ওখানে আমরা দু'জন
দূরাগত , তোরণের  পাদদেশে কতক্ষণ দাঁড়িয়েছি
ঠিক মনে নাই,আনমনা মূহুর্ত্ত কখন্ থেমে গেছে  ,
মনে হচ্ছে আমরা দেখছি নিকট ও দূর  দৃশ্যপট
আচ্ছন্ন প্রকট।


চারিপাশে সবুজ ঘাসের বিস্তীর্ণ ময়দান
তারি মাঝে ইন্ডিয়া গেট দূর থেকে দৃশ্যমান
শৌর্য বীর্য ত্যাগ  ও প্রেমের মূর্ত প্রতীক-চিহ্ন
গগনতলে সমুন্নত সৌধতে উদ্ভিন্ন
স্বাধীনতার বীর শহীদের ত্যাগ ও তিতিক্ষা
স্মরণীয় বীরগাথার আবৃত্ত অভীক্ষা
ঘুরছে বিজন বায়ুস্তরে ঘোর  প্রগতিপন্থী,      
মনে হচ্ছে কোথাও যেন নাই সময়ের গ্রণ্থি;
তোরণ-তলে প্রবহ্নিমান অমর জ্যোতি জ্বলছে
স্ফূলিঙ্গ তার অনন্ত এক চিতার কথা বলছে
তারি মূর্ত প্রতীক পাশে দণ্ডায়মান দু'জন
সশস্ত্র ধীর সান্ত্রী সেনার বলিষ্ঠ সঞ্চরণ
ভঙ্গিমাতে একাগ্রতা মনঃসন্নিবিষ্ট ;
দেওয়ালগুলোয় উৎকীর্ণ আছে নিরুদ্দিষ্ট
অপরিচিত কতো যে নাম--আড়াল কর্মনিষ্ঠা
উঠে আসছে অজ্ঞাত এক ইতিহাসের পৃষ্ঠা
পাদদেশে না দাঁড়ালে হয় না যা আয়ত্ত্ব
উপলদ্ধির বিষয় তার সে অনুচ্চার আবর্ত ।
দু'ধারে দূরে দেখছি দু'টি সমান্তরাল তোরণ
অক্ষানুরূপ , আলম্বিত ময়ূর -সিংহাসন
মনে হচ্ছে দূর থেকে তা অস্পষ্ট রেখায়
ফটকগামী  সড়ক বরাবর উলম্ব শিখায়,
আরো দূরে দেখছি কিছু, দাঁড়িয়ে আছি মৌন-
দেখছি মহৎ ত্যাগের তীর্থ, ইন্ডিয়া গেট গৌণ।
মোহাচ্ছন্ন মনটা কোথায় উধাও অন্য দৃষ্টি
অমর জ্যোতি অন্তরে, ময়দানে অগ্নিবৃষ্টি,
অস্তিত্ত্বের তুচ্ছতাকে অনুধাবন করছি
আরো একবার, আরো একবার স্মৃতি-সৌধ গড়ছি ।



কর্তব্যরত সান্ত্রীদের সন্দিগ্ধ তাগাদায়  
মাঠে মাঠে হেঁটে ক্লান্ত আমরা যখন রাষ্ট্রপতি
ভবনের উদ্দেশে চললাম, পিছনে অমর জ্যোতি নিহত  জওয়ানদের অনির্বাণ স্বদেশপ্রেমের
পবিত্র    নিদর্শন-স্বরূপ সমুন্নত এক
ঐতিহাসিক  তোরণ নয়, মনে হলো---
সমস্ত শতাব্দীর নির্ঘন্ট-ফটক বরাবর
শ্রদ্ধাবনত প্রজন্ম পরম্পরা আমরা মহান
স্বাধীনতা সংগ্রামের মৃত্যুঞ্জয় মহাদেশ পেরিয়ে এলাম।।
                   



উড়ার নেই সাধ
সুস্মিতা দে

   আজ চলবো মেঘের সাথে
ভেলায় চলবে তুমি নয়
আমার সাথে আজ এ এক
অন্য সাজে জীবনের
অজানা কোন হাসি কান্নার
মুখোশ মাঝে।আমায় কেউ
চিনবে না তখন বুক ভয়ে কাঁপে ।

অজানা অচেনা মানুষ হবো
না আমি , আকাশে উড়ার নাহি
  কোনো সাধ ইচ্ছে করে ভেসে
   যাবো ঐ দেখা যায় সূদর পানে
  পাল তোলা নৌকা কেমন করে
         নীল রঙা ঢেউ নিয়ে হেলে
          দুলে যায় ছোট্ট মেয়ে
                বেনী  দুলিয়ে যায়

  ভোরের বেলায় ফিরে দেখি
   কুয়াশার চারিধার ।আকাশের
   উড়িবার ইতিহাসে পড়ে গেছে
   যতো ছিলো সেই পুরোনো দিনের
     পরিবার সাথে স্মৃতি উড়ানের
         আনন্দের উল্লাস।

শনিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 12/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 12/12/2020, শনিবার
               সময় :- রাত 09 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


ফিরে আসি
ডাঃ তারক মজুমদার


আমার চিন্তা গুলো
গভীরে প্রবেশ করলে
আমি স্হির থাকি---- ।

বাণের জলে যায় ভেসে আমার
স্বপ্নের বাড়ি--।
ঝড় বৃষ্টির সঙ্গম  হলে শেষ
ঘোলা জলে ধরতে আসে মাছ
সুযোগসন্ধানী   মানুষ---।

আমি ফিরে আসি বারবার
মায়াবী  জাগ্রত মোহনায়-।







জীবন  এই  রকম  বটে
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি


মোমবাতির  মতো  জীবন  আমাদের,
নিজেকে  পুড়িয়ে আলো  দিতে  হয়  অন্যদের,
বেঁচে  থাকা  মানে  কিছুটা  যন্ত্রণা,
অনেক  অনেক  পথ  চলা,
হাসির  আড়ালে  থেকে  যায়  কতো  কথা  না  বলা!
পদ্মপাতার  জলবিন্দুর  মতো  সবার  জীবন  বুঝি?
দুঃখের  পরে   সুখ  লুকিয়ে  থাকে?
তবুও কি  আমরা কোথায়  যেন  সুখ  খুঁজি?
জীবনের  কত  স্বপ্ন  ছিল,
সব  পূরণ  কোথায়  হলো?
যৌবনে  যাকে  ভালোবাসা  যায়,
সবাই  কি  আর  তাঁকে এই  জীবনে  পায়,বলো?
আমি  আছি  আমার  মতো,তুমিও কি  বন্ধু  তাই?
অনেক  কিছু  পেয়ে  যেন,কার  জন্য  মনে  সেই  সুখ  আর  নাই?
—————————————————





শিশির কণা
    শান্তি দাস

শরতের আকাশ মৃদু মৃদু হালকা বাতাস,
ভোরের সূর্যে ঘাসের উপর শিশির গুলো ভাসে।
স্নিগ্ধতা ভরা সকালে বিন্দু বিন্দু শিশিরে,
নক্সীকাঁথার মাঠের ভিতর ঘাস গুলো ভিজিয়ে।

এমন করে যখন রোদ্দুর নামে মন খারাপের গায়ে,
শিশির কণা নূপুর জড়িয়ে ধরুক সবুজ পাতার পায়ে।
মাঠের ভিতর হাজার শিশিরের ভীড়ে,
ঘাসগুলো সব চুপসে আছে নয়ন ধরে ধরে।

হেমন্তের এই মশরুমে শিশির কণা ঘাসের গাঁয়ে গাঁয়ে,
সুর্য যখন উঠবে শিশির গুলো শুকিয়ে যাবে পায়ে পায়ে।
সূর্যের তাপে ছড়িয়ে যখন পড়েছে সারা মাঠে,
শিশির গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে কৃষকেরা নামছে ক্ষেতে।




বিপ্লব গোস্বামীর তিনটি কবিতা

তুমি কে

বিপ্লব গোস্বামী

তুমি কে ? জানিনা ,
দেখেছিলাম পাহাড়ী এক গাঁয়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

নীল শাড়ি ছিল গায়
পায়েল বাঁধা এক পায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

আরোও তোমার ছিল সাথী
সবার মুখে মিষ্টি হাসি।
সবার হাসি হল বাসী
তোমার হাসি মন উদাসী।

তুমি কে ? জানিনা ,
হাত ভরা বালায়
গলা ভরা গয়নায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।।

ওরা স্বার্থপর

এত দিনে বুঝিলাম
ওরা স্বার্থপর !
স্বার্থের লোভে সবই
পারে ওরা।
ভুলে যায় প্রেমের দর।

পূজার লোভে ওরা
খেলে প্রেম খেলা।
পূজা শেষে পূজারীরে ওরা হানে শত অবহেলা।

ওরা স্বার্থপর মীরজাফরের জাত
স্বার্থ ফুরালে পূজারীরে ওরা
সজোরে মারে লাথ।

ওরা লোভী , লোভী ওদের মন
এক জন থাকতে
ওরা চায় অন‍্য জন।

ওরা বিশ্বাস ঘাতক
ওরা পাষাণ !
নীলকণ্ঠ কবির অশ্রু লেখা
ওদেরই দেওয়া দান।

আমার চাওয়াগুলো

আমার চাওয়াগুলো
চাওয়া হয়ে থেকে যায় গোপনে !
পাওয়া হয়ে আসে না জীবনে।

আমার স্বপ্নগুলো
স্বপ্ন হয়ে থেকে যায় নয়নে !
স্বপ্ন ,বাস্তবে আসে না জীবনে।

আমার আশাগুলো
প্রতীক্ষায় স্বপ্ন দেখে সুখে
আশা , বাসা তবু বাঁধে না এ বুকে।

চেয়েছিলাম সুখী হতে
সুখটাকে ধরে।
সুখ কি কভু বাসা বাঁধে
চীর ধরা দিলে ?

জন্ম যার বেদনার দহে
জীবন যায় তার বেদনা সহে।






         মোহিনী
        পিনাকী  মুখার্জী
     
         তোমার  মনের  চেনা  মাধুরী
            ঘিরে , মেলা  প্রত্যাশা !!
       জাঁকিয়ে   শীতেও   শৈত্য   নাশা
          তোমার  উষ্ণ  ভালোবাসা  !!

         মোহিনী  কলস  হাতে  দাঁড়িয়েছ ,
             শীতের  আমেজ দিতে  !!
         হিমেল হাওয়ায় সেই  হাতছানি ,
               শীতের  মুঠো  হতে  !!
      
            বাতাসে  ভাসে  আমোদ , যত
                   বেলা  বেড়ে  যায়  !!
             মনের  মাধুরী  দূর  থেকেও
              বাঁধে  , এক  আত্মীয়তায়  !!

             ফল্গুধারায়  বাঁচিয়ে  রাখা , শুধু
                ভালোকে  গোপন  মনে   !!
             পেয়েছ  যেটুকু  তাকেই  গড়েছ ,
                     মিঠে  করে  পরাণে !!







             রাত্রি অগাধ
      হামিদুল ইসলাম
            
বন্ধুর জন‍্যে
ফুলশয‍্যা সাজাই
মনের গভীরে বয়ে চলে নদী
নির্দ্বিধায়  ।।

আত্মগ্লানিতে পোড়ে মন
অশান্ত পৃথিবী
মৌচাকে ঢিল ছুড়ি
মধুর আশায়  ।।

মধুতে ভরে যায় মুখ
নির্জীব পুরুষকার
বন্ধুকে প্রতিদিন ভুল বুঝি
একমুঠো যন্ত্রনায়  ।।

পথের উপর দেখা
বন্ধুর সাথে
অবহেলিত গানের আসর
তবু বন্ধুকে পেয়ে যাই  ।।

বন্ধুর জন‍্যে স্বপ্ন সাজাই
অন্তর ফাঁকা মাঠ
বন্ধু দাঁড়িয়ে থাকে
বিভৎস রাত্রি অগাধ ।।





ওদের গ্রাম
আব্দুল রাহাজ

ওই যায় ছুটে চলে ছোট ছোট পাখির দল দূর আকাশের কোলে
ওই আঁখি নদী তারপরে তিল ক্ষেত ওই রামু দের গ্রাম
সবুজ শ্যামলে ভরা চারিদিকে গাছপালায় ঢাকা
ওদের সেই গ্রাম
চারিদিকে সবুজের সঞ্চার মিলেমিশে থাকে ওরা
ছেলে মেয়ে গুলো কাটায় আনন্দে ঝিমলি নদীর তীরে খেলা করে
ওরা করেনা ঝগড়া ওরা মিলেমিশে থাকে প্রকৃতির মায়ের কোলে ওদের গ্রাম যেন মায়ের সমান হয়ে উঠেছে।





দুলছে ভারত ভূখণ্ড
  আমিরুল ইসলাম

দুলছে ভারত ভূখণ্ড,
চারিদিক লাল,
রক্তে মানুষ লন্ডভন্ড।
বিদ্রোহীরা ঘুমন্ত উপত্যকা,
বিভীষিকাময় মানব জীবন
রক্তের ঘ্রাণে মুখরিত বায়ু,
সম্প্রীতির অকাল মরণ।
গঞ্জে গঞ্জে রোজই গঞ্জিত হয়,
'তোর আইন মানি না'
মানুষ দেখি ঢের ঢের,
প্রতিবাদী তো দেখি না।
ধোঁকাদারি চলছে সবেতে--
ভারতকে করছে ছারখার
নিভে গেছে প্রতিবাদী আগুন
মধ্যদুপুরও ঘন আঁধার।
চক্ষু ফেঁটে ঝর্না ঝরে,
সারা দেহে অনাবৃষ্টি,
লেগেছে পেটে ক্ষুধার আগুন
তাই ধরেছি বজ্র মুষ্ঠি।।








   দ্বিতীয় শ্রেণী না ক্লাস টু? 

          সুস্মিতা দে



দুই মেয়ে একটি মেঘলা

 অপরটি মেখলা একটা 

উওরে গেলে অপরটি দক্ষিণে ।

মেঘলা আকাশ দেয় উঁকি ঝুঁকি 

মেখলা অর্থনীতিতে মেধাবী ।

চাহিদা  যোগান নিয়ে থাকে ।


মেঘলা ইচ্ছেমতো ঝড়ে 

সব আনাজ নষ্ট করে 

দিলে নিরামিষ খাবে না 

কি করি মা এই দুটি কে 

নিয়ে? আসলে খাবে ইলিশ

 ভাজা আর তেল তোর মতো

 দুইটি মেয়ে খালি সমস্যা 

 মানুষ কে নাজে হাল করা। 


একটি রেডিও তে চোখ দিয়ে

 মহালয়া দেখবে অপরটি টিভি

 তে কান দিয়ে মহালয়া শুনবে।

 তোর  মতো তোমার মেয়েরা যে

 মা বলে?


একটি বিদ্যালয় গেলে অপর 

টি স্কুলে যায় বলে দুই টি 

তর্কে বহুদূর পর্যন্ত যাবে, 

বিদ্যালয় বললে বলবে 

ইংরাজি মিডিয়ামে পড়ি ।

অন্যটি ইস্কুলে যাবে তাই

 বলে আমি বাংলা মিডিয়ামে

 পড়ি। অজানা অচেনা মানুষ

 কে বিভ্রান্ত করে কোনটি ঠিক

আর কোনটি ভুল?


 অচেনা মানুষ কে বাড়ি ঠিকানা

 ভুল দেখিয়ে দেবে না  

নিজেদের অঙ্গীকার রক্ষা 

করবে বোঝা পড়া আছে।

তা  বেশ বেশ সুমতির বেশ

চলবে ? চলবে চলবে চিন্তা নেই।





গল্প শুরু থেকে শেষ অনাদি মুখার্জী

 গল্প

        শুরু থেকে শেষ 

        অনাদি মুখার্জি 


আজ আকশটা আছে মেঘলা,তার সাথে শিরশিরানি হাওয়া বয়ছে ! মনে হয় হালকা বৃষ্টি হবে ,বাগানের টবে ফুলের পাপড়ি গুলো ঝড়ের হাওয়া মাটিতে লুটিয়ে আছে ! ব‍্যালকনিতে  দাঁড়িয়ে এই সব দেখছে শুভ ! সেই কাজের ছুটি পেয়ে বাড়ি এসেছে অনেক দিন পর ভালো ই লাগছে ! হঠাৎ বাদরুমে দরজা খুলার আওয়াজ পেয়ে তাকিয়ে দেখে রিয়াকে তার বিয়ে করা বউ কে ! রিয়া সবে মাত্র স্নান করে বেরিয়েছে ,লাল গামজাটা ভিজে চুলের সাথে খোঁপায় জড়িয়ে আছে ! আটপৌরে শাড়ি ,অনাবৃত পিঠে জমে থাকা জল চিকচিক করছে যেনো মনে হয়  পদ্য পাতায় জমে থাকা শিশির বিন্দু মতোন ! কিছুক্ষণ পর শুভ গেলো দেখতে রিয়া কি করছে ? রিয়া এখন চোখ বন্ধ করে ঠাকুর কে ধূপ দেখাছে ,শুভ তার পাশে গিয়ে তাকে  স্পর্শ করতে রিয়া বলে উঠলো কি হচছে এইসব ভালো লাগে না ! পূজো শেষ হয়ে গেলে রিয়া বলে যাও আগে স্নান টা করে এসো ! তখন হঠাৎ শুভ রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বলে কতদিন পর এলাম একটু আদর করি ! রিয়া তখন শুভ কে বলে ছাড়ো রান্না করতে হবে ,শুভ বলে উঠে আজ রান্না করতে হবে না ,বাইরের রেস্টুরেন্টে খেয়ে নেব ! রিয়া বলে না তোমাকে তো বাইরে থাকতে হয় আর খাবার ও বাইরে খাও আজ এতদিন পর এলে ছেলে র সাথে একসাথে বাড়িতে খাও ! বলে রিয়া চলে গেলো ! রান্না ঘরে যাবার আগে শুভকে বলে গেলো যাও আমাদের ছেলে আকাশকে টিউশনি থেকে নিয়ে এসো ওর ছুটির সময় হয়েছে ! রান্না ঘরে এসে ভাবতে লাগলো শুভ তাকে ভালোবাসে তার শুধু শরীর কে ,তার মন বোঝার চেষ্টা করেনি ! বাড়িতে এসে শুধু নিজের কথা বলে যায় ,রিয়া ভাবে তার জীবন কি শুধু রান্না আর সংসার সামলানো এর বাইরে কোন জগত নেই যেখানে একটু ভালো বাসার শান্তি আসবে ! এই শুভর সাথে তার 10 বছরের বিবাহিত জীবন ,তাদের একমাত্র ছেলে আকাশের বয়স আজ ৭ তবুও রিয়া আজোও শুভকে তার বর হিসাবে মেনে নিতে পারছে না ! তার মনে পড়ছে তার কলেজ জীবনের ছাত্র অলোক কে ,সেই তো অলোক কে খুব ভালো বাসতো তারা একসাথে কত গান করেছে কলেজের ! সবাই তাদেরকে মানিক জোড় বলতো ! রিয়া ভাবে একমাত্র অলোক জানে তার মনের কথা ,তার কিছু হলে অলোক অস্থির হয়ে উঠতো ! এইসব ভাবতে ভাবতেই আকাশ এসে হাজির ! আকাশ এসে বললো মা এইদেখো তোমার জন্য ই আইসক্রিম নিয়ে আনলাম বলে তার মায়ের মুখে খাইয়ে দিতে লাগলো ! রিয়া বললো আকাশ তোর জন্য খাবার রেডি করলাম খেয়ে নে আগে ! আকাশ বললো তুমি খাইয়ে না দিলে খাবো না ,তাই বলে রিয়া আকাশ কে খাইয়ে দিতে লাগলো আর ভাবছে ঠিক যেনো অলকের মতোন স্বভাব পেয়েছে আকাশ ! অলোক ও এমনি করতো তাকে খাইয়ে না দিলে সেও কিছুইতে খেতো না ! 

রাতের বেলায় শুতে এসে দেখে শুভ ব‍্যালকনিতে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে ,কিছু না বলে রিয়া তার বিছানায় শুয়ে চোখ বন্ধ করে থাকলো ,কিছুক্ষণ পর এসে শুভ তার পাশে তাকে জড়িয়ে ধরতে গেলো রিয়া তাকে ছাড়িয়ে বললো আর এই সব ভালো লাগে না ! কিন্তু শুভ শুনলো না সেই তাকে বলপূর্বক করে তার সুখ নিতে লাগলো ! সবকিছু হয়ে যাবার পর রিয়া কান্না এসে গেলো চোখে শুভর জন্য ! এই এক শুভর দোষ রিয়ার মন নেই তবু তাকে জোর করে কিছু করাটা একদম ভালো লাগে না ! সেই ভাবে অলোক হলো একমাত্র তার মনের মানুষ সেই ছাড়া আর কেউ তাকে সুখ দিতে পারে না !

পরের দিন সকালে শুভ দেখে রিয়া আপন মনে তার মোবাইলে কি যেন ছবি দেখছে ,শুভ এসে বললো তোমার মোবাইলে সব ছবি আমি ডিলিট করে দিয়েছি ,সরি রিয়া তোমাকে তা জানানো হয়নি আমার ! রিয়া জানে শুভ কে এই শুভ এমন একটা মানুষ তার পচছন্দের জিনিস তাকে রাখতে হবে ,রিয়া পচছন্দের জিনিস থাকবে না ,বিরাট একগুঁয়ে ছেলে শুভ ,এই টা রিয়া একদম মেনে নিতে পারেনি ,এইসবের জন্য রিয়া এখনো শুভ কে মন থেকে ভালো বাসতে পারেনি ! রিয়ার ও তো ব্যাক্তিগত ছবি রাখতে পারে কিন্তু না তা চলবে না ! 

কিছু দিন যাবার পর শুভ রিয়াকে বললো আকাশ কে তার ঠাকুমার বাড়িতে রেখে চলো আমরা একটু ঘুরতে যাওয়া যাক !  বলে শুভ রিয়া কে নিয়ে পুরুলিয়া অযোধ্যা পাহাড় দেখাতে নিয়ে গেলো ! সেই খানে গিয়ে হঠাৎ অলোকের সাথে দেখা রিয়া ! রিয়া অলোক কে দেখে বললো তুই এইখানে ! অলোক বললো শুভ আমাকে ফোন ক‍রে ডেকেছে কিসের আলোচনার জন্য ! অলোক বললো তুই এখন কেমন আছিস বল ! রিয়া বলে উঠলো না মরে  বেঁচে আছি ,কতদিন পর তোর সাথে দেখা চল ঐ পাহাড়ের ঘুরে আসি দুটো সেলফি তুলি তোর সাথে বলে রিয়া অলোকের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ! অনেক গলপ হলো ,হাসাহাসি হলো মন খুলে কথা হলো দুইজনের ! রাতে যখন হোটেলে এলো তখন শুভ বললো আয় বস অলোক অনেক দিন আমরা তিনজনে বসে খায় ,অলোক বলে উঠলো আচছা শুভ তুই আমাকে ডাকলি কেনো বলতো কিসের আলোচনা বল ! শুভ বললো বলবো আগে বল তোর কেমন লাগলো এইখানে এসে ! আসলে জানিস তো কেউ ভাবছে আমি কাউকে জোর করে বিয়ে করেছি হয়তো তার মনের কথা আমি বুঝতে পারছি না তাই তো সেই রোজ রাতে তার চোখের জল ফেলে ভাবে তার জীবনটা আমি নষ্ট করলাম ! তখন রিয়া বলে উঠলো কি বলতে চাইছো তুমি এই সব কথা এখন কেনো ! অলোক ও বলে উঠলো আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না ! তুই তো ভালো আছিস রিয়া কে সুখে রেখেছিস ! আর হুম রিয়া আমাকে শুভ সব বলেছে দেখ আমি তোকে বন্ধু মতোন ভালোবাসি ,আমার ভালোবাসাটা তুই তোর চোখে আমাকে তোর  প্রেমিক ভাবিস না ,হুম তোর দুবলতা আছে আমার উপর কিন্তু ঐ সব ভুলে যা ! কিছু কিছু জিনিস পরিবর্তন না হলে ভালো লাগে ,তুই আর আমি একই ভাবে বন্ধু হয়ে থাকবো সারাজীবন তুই শুভকে না হয় তোর  স্বামী  হয়ে থাকতে দে ! আমি বলেছিলাম শুভ কে তোকে বিয়ে করতে ! শুভ চায়নি তোকে তা কারন আমি তোকে মায়ের স্বাদ দিতে পারতাম না ! আমার কথা রাখতে গিয়ে শুভ তোকে বিয়ে করেছে সেই তোকে খুব ভালোবাসে ,হয়তো তুই জানিস না আমার সাথে শুভ রোজ কথা হয় আর আমি বলেছি তোর মোবাইল থেকে আমার ফোটো গুলো ডিলিট করতে তার কারন কি জানিস ? আমি চায় শুধু তোর মনের বন্ধু হতে ,এই সব শুনে রিয়া একবার শুভর দিকে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে যে মানুষ টা কে একবার ও বলেনি তার মনে কথা ,সেই কি করে জানলো এইসব ! তার অলোক কে ভালো লাগে তাকে মনে ভাবে তার জন্য তার মন ছটফট করে ,তবে কি আজ সকালে আলোকে র সাথে পাহাড়ের গেসলো অনেক গলপ হলো এই সব শুভ জন্য ই তাকে খুশি র করার জন্য ই এইসব ! 

রিয়া এখন একা এইসব ভাবছে ,শুভ অলোক কে ছাড়তে গেছে ,কিছুক্ষণ পরে এলো শুভ তখন রিয়া নিজের থেকে শুভকে ধরে তার বুকে মাথা রাখলো ! কারুর মুখে কথা নেই কিন্তু মনের মধ্যেই অসংখ্য অনুভূতি কথা বলে গেলো ফিসফিসিয়ে ,শুধু শুভর চোখ থেকে কয়েক ফোঁটা জল এসে পড়লো রিয়ার গালের উপর ! ঠিক যেনো পদ্মপাতায় শিশিরের ফোটা পড়ে তা কেমন যেনো চকচক করে জ্বলে ওঠে সেই রকম রিয়ার গালে ঐ জলের স্পর্শ পেয়ে আগুনে র মতোন জ্বলে উঠল আর বলে উঠলো রিয়া যেখানে শেষ করে ছিলাম আজ তা শুরু করি বলে শুভ কে জড়িয়ে ধরে বললো আমাকে ভিজিয়ে দাও তোমার ঐ সুখ দিয়ে ! আবার আমরা  শুরু করি নতুন পথ চলার জীবনের ছন্দ !




শুক্রবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 11/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 11/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 11/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 11/12/2020, শুক্রবার
               সময় :- রাত 09 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


The new Winter
Anjali De Nandi, Mom


The new winter arrivals in nature.
At dawn, the fog covers us.
On the day, the Sun is not strong.
At night the coldness is appeared.
Now I can't take bath under cool water.
I enjoy under soft sun light and heat.
Then many puppies are playing with me.
And their black mummy,
Watches them with motherly responsibility.
It's her natural hearty duty.
Mom and babies relation is great beauty.
The winter is baby now as season in nature.
My city -
It is very famous.
Here the winter will grow up.
Also the puppies.





বহু সম্পর্ক


ডাঃ তারক মজুমদার

বহু সম্পর্ক  যায় ভেঙে


দোষী  সমান সমান


বহু সম্পর্ক  পায় প্রাণ  ফিরে


আছে বহু প্রমাণ ---।

বহু সম্পর্ক  ওষ্ঠাগত প্রাণ


আপন কর্মফল


বহু সম্পর্কে  খুশির জোয়ার


বাড়ছে মন বল---।

বহু সম্পর্ক  খায় যে হোঁচট


আমরা সবাই জানি


বহু সম্পর্ক ভো কাট্টা ঘুড়ি


আমরা সবাই মানি---।

বহু সম্পর্ক  কত সুরক্ষিত


আন্তরিকতায় পূর্ণ  মন


বহু সম্পর্ক  যায় হয়ে অমর


চির সবুজ থাকে দুটি জীবন।







এ ভোরে


উমর ফারুক

এ ভোরে মোরগ ডাকা হয়


এ ভোরে উমের আমেজ নাই


এ ভোরে খেকশিয়াল ও হাঁটে


এ ভোরে ঘুম টা কে ভাঙায়?


এ ভোরে লেপের নীচে মাথা


এ ভোরে মাথার উপর বালিশ


এ ভোরে ঘ্রাণ নাকে ,ঠোঁট চেপে


সুরভী গোলাপ শ্যামল চাপার।


মৃদু বয় বাতাস সবুজ ঘাসে


শিশিরে ভিজছে বেড়াল পা


হেঁটে যায় কয়েক গুটি পায়ে


জেগেছে জনম দুখি মা।


ওমা তুই এত্ত ভোরে জাগিস?


আমি কি করব বুঝিনা তো


ভোরের আশ মেটে রঙের হল


ঊষা টা আজকেও উঠেনি তো!


ওমা তুই হাতটা কিসে রাখিস


কনকনে শীত কি লাগে নাকো


আমি তো উম ধরাতে লেপে


তবুও আমায় কেন না ডাকো?








কবিতা
রাঙামাটির পথ
শান্তি দাস

শস্য শ্যামলা সবুজে ঘেরা অপরূপ রূপে ভরা প্রকৃতি,
প্রকতি যেন হাসছে ফুঁটে উঠা মনে আঁকা ছবি।
চারিদিকে সবুজে ভরা দৃশ্য সে যেন নতুন পাওয়া,
গ্রামের দুধারে সবুজে ঘেরা মাঝে মেটো পথে আসা যাওয়া।

এই রাঙ্গামাটির পথ হারিয়ে যায় কোথায় তার শেষ,
প্রকৃতির এই সৌন্দর্য মন হারিয়ে যায় লাগে বড় বেশ।
মাঝে মাঝে দেখা দীঘির জলে শাপলা শালুকে ভরা,
চারিদিকে প্রকৃতি যেন সৌন্দর্যের রূপে ঘেরা।

সকালে রাঙ্গামাটির পথ থাকে নীরব নিস্তব্ধতায়,
কৃষকেরা গরুর পাল নিয়ে মেটো পথে দিয়ে যায়।
সকালে ধুলোবালি কম নীরবে চলছে সকলে,
সারাদিন ধরে চলে পথে আনাগোনা লোকসমাগমে।

পল্লী গায়ের বধূ কলসি কাঁখে হেলেদুলে জল আনতে যায়,
কৃষক ভাইয়েরা অশ্রু জড়ানো চোখে স্বপ্ন এঁকে বেড়ায়।
বিকেলে কৃষক গরু নিয়ে ফেরার পথে মেটো পথ ধুলায় ধূসরিত,
ব্যথা বেদনা ভুলে ফসল যখন ঘরে তুলতে মন পুলকিত।







                   পাথর
     হামিদুল ইসলাম
               

জন্ম জন্মান্তরে
তোমাকে দেখি বিকেলের দরবারে
নৈঃশব্দে ইতিহাসের পাঠ নিই
চোখের পলকে মনের মাঠ পুড়ে হয় ছারখার।।

তোমার কাছে ফিরে আসি
গোপনে ভালোবাসি
পৃথিবীর রহস‍্য উদ্ধার করি
জীবন ঝরাপাতা  ।।

তোমাকে চাই
কিন্তু কোথায় পাই
আমার মনের ভাষা বোঝে না তো কেউ
বাসি লগ্নে আমি যেনো কাঙাল  ।।

পরকে আপন করি
পাথরে শানাই তরবারি
ঘরে ঘরে বিপ্লবের মন্ত্র কারা দিয়ে যায়
এখন যুদ্ধের কাড়া নাকাড়া  ।।

ভোঁতা অস্ত্র শক্ত করি আগুনে
বিপ্লব আসুক এই ফাগুনে
এসো এই বুর্জোয়া শক্তিকে সরাই
জলে ভাসুক পাথর  ।।





নতুন দিল্লি ষ্টেশনে নেমে
     বদরুদ্দোজা শেখু

দু'ঘন্টা দেরী ক'রে দুপুর নাগাদ
পৌঁছলাম নতুন দিল্লি ষ্টেশনে, আড়ষ্ট অবসাদ
ঝেড়েঝুড়ে নামলাম ব্যাগ স্যুটকেস
নিয়ে, ধীরে সুস্থে পিছু যাওয়া পুরনো অভ্যেস ।
একনজরে দেখছি যে দিল্লি নগর---
রাজ পথে নেমে গেছে রেল -চত্বর
ব্যস্ত স্রোতের মতো মানুষের ভিড়ে
নানা যানবাহনের নকশী নিবিড়ে
যাত্রী ধরছে লাল কুর্তার কুলি
আশপাশ থেকে এলো ভিক্ষার ঝুলি ,
ছুটে এলো অটো ভ্যান ট্যাক্সি দালাল
ঠিকা দরে দিলো কতো বিপরীত চাল
এমন-কি ব্যাগ ধ'রে টেনে নিতে চায়
নবাগত যাত্রীরা বড়ো অসহায়
বোঁচকাবুঁচকি সহ কোনোক্রমে দ্রুত
অদূরের রাজপথে হন  দ্রবীভূত।
বোঝা দায় কা'র কী যে কমিশন আছে--
হোটেলের নামধাম আওড়ায় কাছে
এসে কিছু লোক , দূর থেকে কিছু লোক
জনতার প্রতি হানে ঈগলের চোখ ,
পাঞ্জাবি-পাজামায় পাগড়ি ও দাড়ি-
ওয়ালা শিখ লোক দু'টো পার্ক করা গাড়ি
ঠেস দিয়ে হাতে খৈনি ছিলিম ডলে
একমনে, ডাকাতের মতো চোখ জ্বলে ;
ড্রাইভার বুঝি কিবা সন্ত্রাসবাদী
ইমতাম দৃষ্টিতে অর্থ বিবাদী।
একটি মারুতি লাল অতি আধুনিক
এসে ছেড়ে দিয়ে গেল রূপের বণিক
মহিলাকে, ফ্যাসানের দুরন্ত তাল
তুলে হেঁটে গেল পাশ দিয়ে উত্তাল
ঢেউ-তোলা ঊর্বশী-আগুনের আঁচ
চোখ দু'টো ব'নে গেল শো-কেসের কাঁচ,
ঝলসানো দুপুরের নির্মম ধার
হীরের ছোঁয়ায় যেন হলো চুরমার
পিছু ধায় অসংখ্য পুরুষের চোখ
ক'লজে নিঙড়ে নেয় রূপের আরক
  বাতাসে বাজছে তার গমনের সুর,
এ ক্ষেত্রে কে-বা নয় পথের কুকুর ?

বিস্তৃত সীমানার বামপাশে বাস
ডান পাশে ছোট যান ছুটে হুসহাস
মাঝখানে ইটের রেলিং- ঘেরা লন
তাতে কিছু ফুলগাছ রচে আবেদন,
যানে ধায় জনস্রোত নগরীর বুকে
রৌদ্রে ধুঁকছি পোড়া পেট্রোল শুঁকে।
শব্দের ফুলঝুরি শুনি চৌদিকে
প্রধানতঃ অগম্য ভাষার নিরীখে
বুঝলাম বাঙালীর শতাংশ কম।
বন্ধুরা এগোবার নিলো উদ্যম।
আমার আকুল চোখে চলমান রীল
অগণিত দৃশ্যের ছবির মিছিল
কতোকিছু অভিনব দেখবার আছে,
দূরের পৃথিবী এলো দুয়ারের কাছে,
সাগরে অবগাহন হবে  নিশ্চয়
মনের বিকাশ হবে , খুলবে হৃদয়।
পাবো কি সাক্ষাৎ তার ? যে আমার হবে
উদার হৃদয়-রানী মনে অনুভবে ?
কর্মযোগের সাথে এই ভাগ্যযোগ
জুটবে কি আদৌ আশু নিয়তি-অমোঘ ??




বসন্ত গিয়েছে চলে
- ইউসুফ মোল্লা

মানুষ হারিয়েছে তার বিবেক,
বন্ধক দিয়েছে তার জ্ঞান,
অসহায়কে করেছে নিঃস্ব,
হারিয়েছে নিজের সন্মান।

সময়ে আসে না ফুল,
হারিয়েছে গুণ তার ফল।
বসন্ত গিয়েছে চলে,
দারুচিনি দ্বীপ হয়েছে তার সম্বল।

গলেছে বরফ এসেছে করোনা,
বন্ধ হয়েছে সকল কারখানা।
অচিন পাখি এসেছে ফিরে,
কোকিল ডেকেছে বসন্তের আনাগোনা।

              ___________




চলে যাওয়া এখন কত সহজ
       অনিন্দ্য পাল
=============================
চলে যাওয়া কত সহজ হয়ে গেছে, নবনীতা।

একের পর এক প্রিয়-অপ্রিয়, চেনা-অচেনা
মানুষগুলো হেঁটে চলে গেল, চলে যায় শব্দহীন
চলে গেছে আরও কত ভালোবাসা, তখন বুঝিনি
হলুদ পাতার স্মৃতিগন্ধে মনে পড়ে, সেই সব দিন।

সেই আলোর বেলা, সেই সব ধূসর সন্ধ্যাতলায়
যারা হেঁটেছিল পাশাপাশি, তারা পেরিয়ে চলে যায়
রাস্তাটা কি কমে এল, নবনীতা?

এখন চল বেড়েছে, সবাই বলছে "যাচ্ছি"
মন খারাপের ডিঙি দাঁড়হীন বেয়ে ভেসে গেল
কতদিন শুনিনি, " এবার তবে আসি"

চলে যাওয়া এখন বেশ সহজ, নবনীতা
সব চেনা গাছগুলো কেমন শুকিয়ে আসছে,
দেখো, কে কোথায়? কোন রোদ্দুর নেই
চাঁদের আলোতেও ক্লান্ত বিষন্নতা, তবু
লতায়-পাতায় আটকে বেঁচে আছি, নবনীতা

যতটুকু আছি, নেই আরো বেশী, সবুজ বন্ধুতা।





দুই বন্ধুর গল্প
আব্দুল রাহাজ

একটা ছোট গ্রাম নামটি তার অতুলপুর সেখানে থাকতো রাহী আর শাহী দুজনে খুব ভালো বন্ধু সেই ছোটবেলা থেকে। রাহী প্রভাবশালী খুব বড় ঘরের ছেলে আর শাহী এক গরিব চাষির ছেলে দুজনের বাড়ি একেবারে পাশাপাশি রাহীদের বাড়ি ইট পাথর দিয়ে তৈরি করা আর শাহীদের বাড়ি ঘরের বিচালি আর মাটির দেওয়াল দিয়ে ছাওয়া শাহীর বাবা-মা রাহীদের এর বাড়িতে কাজ করে সেখান থেকে বন্ধুত্ব হয়। রাহী আর শাহী তারপর গ্রামের পাঠশালায় দুজনের পড়া খেলাধুলা মধুমতি নদীর তীরে ওদের দুজনের খেলাধুলা গ্রামের আর পাঁচটা ছেলের সঙ্গে বিন্দু মাসি দের আম বাগানে গিয়ে আমপাড়া নৌকা নিয়ে ঘুরতে যাওয়া শৈশব বাল্যকাল এভাবেই কেটে যেত। ওদের দিন আস্তে আস্তে সময়ের সাথে সাথে সব যেন এলোমেলো হয়ে গেল এদিকে গ্রামের পাঠশালা শেষ হলো রাহী চলে গেল শহরে পড়তে আর গরিব চাষির ছেলে শাহী ও গ্রাম থেকে দু কিলোমিটার দূরে হাইস্কুলের পড়ল। কিছুদিনের মধ্যে সাহীর বাবা মারা গেল পড়াশোনা ইতি নেমে এলো শাহীর তারপর আস্তে আস্তে কোথাও যেন সেই সব দিনগুলো কেটে গেল অনেকটা বছর। শাহী এখন মাঠে চাষ করে বড় চাষী হয়ে গেছে অন্যদিকে রাহীর আর কোন খবর নেই একবার ওর বাবার সাথে দেখা হল শাহী বলল রাহী কেমন আছে কাকু বললো আছে ভালো শহরে আছে কবে আসবে জানিনা রাহী আর শাহিল আর কোন দিন দেখা হলো না আস্তে আস্তে কোথাও যেন বয়সটা সে জীবনে এসে গেল শাহী। শাহী ভাবতে লাগলো একবার যদি দেখতে পেতাম ওর সাথে তাহলে এ জীবনটা ধন্য হয়ে যেত কিন্ত সেটা আর হলো না সেদিন ভোররাত শাহী চলে গেল চিরঘুমের দেশে কিন্তু শাহীর আর দেখা হলো না রাহী‌র সাথে।এই ভাবে ওদের বন্ধুত্বের গল্পটা শেষ হয় সূর্যের আলোর মতো কোথাও যেন মিলিয়ে যায়।


বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 10/12/2020, বৃহস্পতিবার
               সময় :- রাত 08 টা. 10 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


যৌবন
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

হে যৌবন সুন্দর, শোনোনি কি আহবান ঝরার
দিন ফুরালে প্রয়োজন থাকবে না আর
সর্বস্ব শেষ হবে সবাই যা করেছে চয়ন
মিলাবে শৈশবের মধুর আলাপন
তবে কিসের লাগি সাজাও অঙ্গ প'রে আভরণ
তার চেয়ে ত্যাগ কর যাত্রা পথে যা ছিল আপন।।

কাননে কতফুল ফোটে অনাদরে
কত মালা গাঁথা হয় কত যে যায় ঝরে
তাই আজ সার্থক করো মানব জীবন
রামধনুর ছটায় জাগুক নিরাসক্ত মন
ভয় নয়, ক্ষেদ নয় হে সুন্দর তোমার
নিরালায় কর বসে সাধনা অপার।।

যে হৃদতন্ত্রে আছে প্রেম করুণা
তারে সাজাও ধরা মাঝে করো দেখাশোনা
সার্থক কর তোমার মাতৃবন্দনা
উচ্চশিরে করে যাও অনন্ত বন্দনা
যেখানে নিবন্ত চুল্লি নিবে যায় বাতাসে
মঙ্গল দীপ জ্বালাও সেথা নিত্য অবকাশে।।





বিস্ময়কর_জীবন
শান্তি_দাস

জন্মেছি আমরা পৃথিবীর বুকে সৃষ্টির এই সৃষ্টিতে,
বিধির বিধান সব নতুন নতুন ঘটে দৃষ্টিতে।
কয়দিনের জীবন রঙ্গমঞ্চের এই অভিনয় করে যাওয়া,
ক্ষনস্থায়ী জীবনে সুখ দুঃখ ভালোবাসা পাওয়া।

বিস্ময়কর জীবনে কতকিছু ঘটে যায় মানব সংসারে,
জন্মমৃত্যুর এই বিধান অতি বিস্ময়কর ভাবনার তরে।
কোথা থেকে এসেছি কোথায় শেষ ঠিকানা,
সবটাই বিস্ময় জাগে জীবন উৎপত্তির কোথায় সীমানা।

এই আকাআকাশ বাতাস গ্রহ নক্ষত্র তারার সমাবেশ,
কত যান্ত্রিক শক্তি এই পৃথিবীর মাঝে ভাবনার রেশ।
বিজ্ঞানের নতুন আবিষ্কার সবকিছু লাগে আশ্চর্যজনক,
মানব জীবনে জানার কত জানা অজানার বাহক।

আমাদের বেঁচে থাকা এই মাটির উপর বিস্ময়কর লাগে,
প্রকৃতির শ্বাস প্রশ্বাসের ভারসাম্য রক্ষা অবাক লাগে।
জীবনের তো একটু ও বিশ্বাস নেই বাঁচার তরে,
দাঁড়িয়ে আছি এই জগৎ সংসারে সৃষ্টির লয়ে।

পৃথিবীতে অমর কেহ নহে সবার বিদায় নিতে হয়,
যে সবচেয়ে আপন ভুলে থাকার শক্তি তাতে ও নেই ভয়।
জীবনের রঙ্গমঞ্চে নতুন নতুন আবিস্কার অতি বিস্ময়কর,
এই নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে আছে মতান্তর।






     একান্ত   আপন
        পিনাকী  মুখার্জী

               রোজ  নাড়াচাড়া হয় না ,
           পড়ে  থাকে এক কোণে  !!
           তাইতো  জমেছে  ধুলোর পরত ,
              তারে  সরানো একাকী ক্ষণে  !!

              জেতার  নেশায়  ছুটে ,  খাতায়
                  জমা  হলে  কিছু  ব্যথা  !!
               সে  ছাড়া  কাকেই  শোনাবো ,
               সেই   সুখ - দুঃখের  কথা  !!

           জীবনের  জয়গান  , ঝকঝকে শান ,
              যার  ধারালো  তেজের  প্রকাশ  !!
                 উপেক্ষিত , সেই  ধুলো মাখা
              বন্ধুর  , স্নেহেই  তার  বিকাশ  !!

                   তাই  তো  ধুলো  সরিয়ে ,
              তারেই  নিজ  প্রয়োজনে খুঁজি  !!
                   যেখানে তার  শীতল  ছায়া ,
                সেখানে  শান্তিতে  চোখ বুজি !!






  হারবি না বন্ধু 
      সুস্মিতা দে

নিজের মনে কাঁদছে তবে
অপরের মন কাঁদাতে নেই
নিজের মন না যদি বোঝে
অপরের মনে বোঝা
        বাড়াতে নেই

মন দিয়ে মন পাবে তা সে
মিছে নিছক আপন যন্ত্রণা ।
  নয়ন মেলে দেখতে কষ্ট হলে
  নয়ন অন্ধ করে নাও বলা
            সহজ তবে কঠিন ।

     হৃদয় অন্ধ করতে চাইলে
       প্রানে হা হা কার করে ।
         জগৎে ক কি ?
        কিছুর অভাব আছে?
     
      আছে বিরাট শূন্যের অভাব
      হৃদয় যদি অবসাদে ভরে।
     অবসাদকে বড়ো মানুষের ভয়।
      ভালো থেকো বন্ধু ভালো রেখো
       মানুষ মানুষের কাছে এই তো চায়।

          একটু বন্ধুত্ব , নয় অবহেলা।
         আর বেশি কিছু নয় তা না দিতে
        পারো তবে দিও না আঘাত ।
         রেখো অনুরোধ ।

   



আমার জন্ম দিনের  কবিতা
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

আজকে  আমার  জন্মদিন   ৫৮  বছর  পূর্ণ  হলো,
কাছে আর  দূরের  বন্ধুদেল  ভালোবাসা  পেয়ে এই  জীবন  ভরে  গেল৷
মায়ের  কোলে  এসে  কালক্রমে  পৃথিবী  কিছুটা  হলো  চেনা,
এখন  সংসারে  যেন  আমি  অনেকটা  পুরানো,
কর্মব্যস্ত  থাকি,তবু  মাঝে  মাঝে  যেন  মৃত্যুর  দিনগোনা,
আগে  যাঁরা  এসেছিল আজ  অনেকে  আর  নেই,
স্বর্গীয়  মা  বাবা আমার  আজ  জন্ম  দিনে বারবার  মনে  পড়ে  তোমাদেরকেই৷
স্ত্রী,পুত্র,কন্যা, সবাই  আমার  আছে,
মৃত্যুর  পরোয়ানা  আসলে  সবাইকে  রেখে  চলে  যেতে  হয়,
মহাশূণ্যতার  কাছে৷

জীবন  মানেই
অনিশ্চিত,আজ  আছি  কাল নাও  ঠাকতে  পারি,
সবার  সাথে  ভাব  করে  তাই ভালো  থাকতে  চাই,
কারো  সাথে  আর  দিব  আড়  আড়ি?








রাজধানী
      বদরুদ্দোজা শেখু

রাজধানী এক্সপ্রেস ঢুকলো রাজধানী ।
চোখ জুড়ে নগরীর নব্য হাতছানি
মন জুড়ে মোহনার মগ্ন কানাকানি ।

ছুটে এলো একদল ভাড়াটে চালক
ধরতে পেরেছে ঠিক আনকোরা লোক ,
মানুষ কী ক'রে পায় শকুনের চোখ ?

আগন্তুক হিন্দিতে বড়ো  নড়বড়া
এ শহরে হলো তার-ই প্রথম মহড়া
বাঙ্ময় হৃদয়ের হলো হাতকড়া ।

চড়া রোদ, ধরা গলা, জার্ণির ক্লেদ
সরল স্বপ্নের সাথে হলো বিচ্ছেদ,
এখানে মানতে হবে কতো কী নিষেধ !

এখানে রহস্য আছে যন্তরমন্তর 
রামলীলা ময়দান সুস্থ গণতন্ত্রর 
প্রতিবাদের মঞ্চ ,প্রপঞ্চে কুরঙ্গ  
বিরোধীদেরকে মেরে করে ছত্রভঙ্গ ,
গান্ধীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক
দিয়ে যান নেতাগুলো , নেপথ্যের ছক
নানা দর কষাকষি যুদ্ধ না শান্তি
কোনটা যে সমাধান ছড়ায় বিভ্রান্তি
কাশ্মীর কী যে প্যাঁচ গাল-ভরা দোস্তি
সীমান্তে লাগাতর বারুদের কুস্তি
উপত্যকার জনজীবন ভয়ানক স্তব্ধ
ধরপাকড় কারফিউ করবে কি জব্দ ?
সংসদে লেগে আছে কাদা ছোঁড়াছুড়ি
প্রকৃত বিতর্ক নাই ,শুধু গলাজোরি ,
অধিবেশনের দিন ক্রমসঙ্কুচিত--
এহেন গণতন্ত্র পেয়ে আমরা গর্বিত !
কমবেশি সব রাজনৈতিক দলই
ব্যবহার করে পেশীশক্তি বাহুবলী,
আইন বিচার আছে ,তবু সুবিচার
পায়না দুর্বল-শ্রেণী , জয় ক্ষমতার ।
চারিপাশে কানাঘুষো এন-আর-সি জুজু 
সংখ্যাগরিষ্ঠতায় সরকার গুজু
দ্যায় অনায়াসে সংসদে , ত্রাসে কাঁপে দেশ
নাগরিক দুর্গতির দায় দুঃখ ক্লেশ
নিজভূমে পরবাসী হওয়ার আশঙ্কা,
সমস্ত নস্যাৎ করে বিজয়ীর ডঙ্কা
লঙ্কা-কাণ্ড বাধে দেশে , দেঁতো হাসি হাসে
রাজধানী, মহতের বাণী বানে ভাসে !!





কবিতা
     জরাহীন ধরা
  ডঃ রমলা মুখার্জী

বুকের মাঝে জমাট কালো,
    ভয় ভাবনার নেই শেষ...
কান্না চেপে হেসে বলি
    ভালোই আছি এই বেশ।
জানি চাঁদের নরম জোছনা
    মুছে দেবে সব কালো,
দেখবো সেদিন জরাহীন ধরা,
    অমা শেষে শত আলো।
সেই আলোতে নাচবে অলি
     কল-তানে শত পাখি-
মানুষ আবার মানুষের হাতে
    বেঁধে দেবে ফুল-রাখি।
সুন্দর সেই বন্দরে যত
    নর নারী ভয় হারা-
ফুলের মিঠে সুগন্ধ মেখে
    ভোরে হাসে শুকতারা।





শীতের দিনে গ্রামবাংলার পরিবেশে শিয়ালের ডাক
আব্দুল রাহাজ

শেখদের গ্রামের পূর্বদিকে একটা বন ছিল চারিদিকে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ শীতের দিনে ওদের গ্রামে একটা মজার ব্যাপার হল প্রচুর শিয়ালের ডাক শোনা যেত ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা ভয়ে বাইরে বের হতো না কেউ রাত্রে আর। সেদিন শেখ ও তার বাবা মাঠের থেকে কাজ করে বাড়ি আসতে একটু রাত হয়ে গেল ঠিক সেই সময় শিয়ালের ডাক আরম্ভ হলো ওরা‌ আসছিল বনের পাশ  দিয়ে বাড়িতে আসছিল শীতের দিন আস্তে আস্তে কুয়াশা পড়লো শেখের বাবা বলল তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে  চল শীতে গা হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে রে বাবার কথা শুনে একটু জোরে জোরে হাঁটলো শিয়ালের ডাক শুনে সেক একটু সাহস করে বনের দিকে একটু ফিরে তাকালো অনেকগুলি শেয়াল একসাথে ডাকছে সেজন্য এতো জোরে নামাজের সময় হয়ে গেছে আজান শোনা যাচ্ছে তা ওদের ডাক থামেনি ওর আস্তে আস্তে বাড়ি চলে এলো ঘটনা ওর বন্ধুদের সাথে সকালবেলা উঠে বলল রহিম ভয় লাগেনি সেগুলো নানা কিসের ভয় শীতের কুয়াশা মোড়া তাদের এই গ্রামের শিয়ালের ডাক সুপ্রাচীন যা আজও চলে আসছে ‌। কোথায় যেন ওরা শিয়ালের ডাক শুনে অভ্যস্ত শীতের দিনেও ওদের কষ্টের সেখরা তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করত সাহায্য করতে গেলে নাকি কামড় খেতে হতো। একদিন বহু বছর আগে রহিমের দাদু লিয়াকৎ আলী মিয়া শিয়ালের সাহায্য করতে গিয়ে শিয়ালের কামড় খেয়ে চির বিদায় নিয়েছিল এই পৃথিবী থেকে সেই থেকে চিৎকার ওয়ালা আর কেউ সাহায্য করে না সেই কথা শুনে সবাই হা হয়ে গেল তারপর তারপর দিন যায় বছর যায় কোথাও যেন শিয়াল দের ডাক আস্তে আস্তে ওদের কানে কমতে লাগলো শেখ একদিন হঠাৎই অবাক হয়ে গেল তাহলে কি শীতের দিনে আর শেয়ালের ডাক পাবনা এই ভাবনায় ভাবুক হয়ে সে চলে গেল শহরে কিন্তু তাদের গ্রামের এইযে শিয়ালের ডাক শীতের দিনে কুয়াশায় মোড়া অদ্ভুত পরিবেশে তাদের আর্তনাদ তার মনে থাকবে আজীবন।




             পথ
   হামিদুল ইসলাম
               
হাঠাৎ ঝড় গাছের লতা পাতায়
দোদুল্যমানতা মানুষের রক্তে মজ্জায়
আতঙ্কে গুটিয়ে রাখে জমিন
কোনোদিন হয় না চাষ  ।।

সাত পুরুষের বাস এই ভিটেয়
ধানসিঁড়ি ভাঙে প্রতিদিন
নিরন্তর দাঁড়িয়ে থাকি
কেটে যায় সময়   ।।

তোমার সাথে সাক্ষাৎ এই জমিনে
শিশিরে ভেজা ঘাস
রাতের আঁধার ঘনিয়ে আসে প্রতিদিন
ভয়ে কুঁকড়ে যায় পিঠ  ।।

তবু নিরন্তর পথচলা এখনো
পথ চলি একা
রিক্ত অরণ‍্য
প্রতিদিন ধুয়ে যায় স্বর্গ মর্ত পাতাল  ।।

স্বর্গে পা রাখি আমরা দুজন
ছোট্ট একটি সেতু
পেরিয়ে যাই ভালোবাসার স্বর্গ মর্ত পাতাল
সারারাত জোছনায় ভরা আমাদের আকাশ ।।





তাই তো সবাই
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

চাষী করে চাষ।
ওরে ও বিশ্ব!
তাই তো খেতে পাস;
দেখ দেখি গিয়ে চাষীর ঘরে!
জীবন কাটায় ওরা ক্যামন করে।
কত করুন, দৈন্যের সে দৃশ্য!
সমাজে শ্রম দান করে
ওরা তো নিঃস্ব।
ওরে ও স্বার্থপর জনগণ!
এবার ওদের ভালোবাস!
উদার কর তোদের মন!
ওরাই বাঁচার আসল ধন।
ওই এক ছিলেন ত্রেতা যুগে, মহা চাষী,
নাম ছিল যাঁর শ্রী জনক, রাজর্ষী।
জীবন যাপন করতেন যিনি ক্ষেত কর্ষী।
মা শ্রী লক্ষ্মী দেবী দিলেন ধরা
যাঁর লাঙ্গলের ফলায় আসি,
কন্যারূপে করলেন তিনি পালন তাঁরে।
তাঁর চাষে হল ধন্য এ ধরা।
মাতা শ্রী জানকী নামে চিনি যাঁরে।
আবার ওই যে হলধর শ্রী বলরাম।
দ্বাপর যুগে যিনি করতেন চাষ।
এই মহান ভারতেই ছিল তাঁর বাস।
কৃষি কার্যের সাথে জোড়া তাঁর নাম।





মানুষ হওয়ার অধিকার চাই
      আমিরুল ইসলাম

মানুষের ভিড়ে মানুষ খুঁজি,
মানুষ কোথাও নাইরে ভাই
মুখের উপর মুখোশ, বুঝি -
মুখোশের তলে মানুষ নাই!
আইন আদালত সম অধিকার,
অধিকার চিনি কেমনে ভাই?
ধোনিরা পাচ্ছে ন্যায় বিচার
গরীবের ঘাড়ে চাপিয়ে অন্যায়;
আইন যদি মানুষেরই হয়..!
তবে মানুষ হওয়ার অধিকার চাই।
পৃথিবীটা যদি মানুষেরই হয়..!
তবে মানুষ হওয়ার অধিকার চাই
       
কৃষক মজুর খেটেই মরে
ঘরে দুবেলার তার অন্ন নাই,
জমি ফসলের দাম বেচলে ঝরে,
কেনার সময় আকাশ ছোয়ায়।
নিজ জিনিসের বাজার দরও
নিজেই যদি করতে না পাই,
ন্যায় অধিকার কেন ক্ষুণ্ণ কর?
অধিকার মোদের পূর্ণ চাই।
সমধিকার যদি মানুষেরই হয়
তবে মানুষ হওয়ার অধিকার চাই।
পৃথিবীটা যদি মানুষেরই হয়..!
তবে মানুষ হওয়ার অধিকার চাই   

শিক্ষা সংস্কৃতি সবার জন্য
ভুল ত্রুটি কোথাও নাই,
ডোনেশন দিলে কথা ভিন্ন--
শিক্ষার মর্যাদা নর্দমায়।
শিক্ষকতাও নিত্যদিনের কাজ
যে টাকা দেই সেই পাই;
টাকা'তেই কথা বলে আজ
গরীবের ছেলে তাই শিক্ষক নাই।
শিক্ষকতা যদি শিক্ষিত'র হয়
তবে শিক্ষিত'র তালিকায় নামটি চাই।
পৃথিবীটা যদি মানুষেরই হয়..!
তবে মানুষ হওয়ার অধিকার চাই
         ________সমাপ্ত_______




সুদুরের পথিক
নরেন্দ্রনাথ নস্কর

হেমন্তের পূর্ণিমা রাতে যখন খোলা চুলে তুমি আকাশের দিকে তাকিয়ে থাক,
তখন অবাক হয়ে দেখি আর ভাবি, কোন বিদেশিনী তুমি।
তখন ভুলে যাই যে তুমি আমার কাছের কেহ।
কোন সুদুর দেশের রাজকন্যার মত যেন এক রাজপ্রাসাদের ছাদে তুমি একা,
আমিও একা।
জোতস্না ভরা মোহময়ী সেই রাতে মনে হচ্ছিল,
চেনা দিয়েও তুমি ধরা দাও না।
তোমার কালো কেশ রাশি,
তোমার মায়াময় মুখ মণ্ডল,
তোমার অদৃশ্যপূর্ব দৃষ্টি,
তোমার নীরব ভাষার জিজ্ঞাসা,
সমস্ত যেন অচেনা কোন পথিকের।
যে পথিক পথ হারিয়ে  আমার ছোট্ট কুঠিরে আশ্রয় নিয়েছে।
যার গন্তব্য সুদুর কোন দেশে।
আমার এই কুঠির যেন তোমার পান্থনিবাস।
নেব
কিছুদিন থেকে আবার সে সুদূরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে।
সেই যাত্রায় তুমি কি আমাকে সাথে নেবে?
আমিও সেই সুদূর পথের পথিক হতে চাই।