সোমবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন-30/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 30/11/2020


 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 30/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 30/11/2020, সোমবার
               সময় :- রাত 7 টা. 50 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒



  বনধু
অনাদি মুখার্জি

বনধু তুমি আমি এক সাথে খেলি আর পাঠশালা যায়,
তুমি যদি কষ্ট পাও আমি ও তখন যন্ত্রণা পায় !
ভোরের আলো ফুটলে মোরে বনধু তোমার কথা পড়ে মনে ,
আমরা দুই জন একিই সাথে খেলা করি আপন মনে !
গাছগাছালি শাখায় শাখায় দুলতে থাকি পরস্পরের,
বনধুর হাত ফসকে গেলে আমি তোমায় আগলে ধরি!
হঠাৎ যদি বৃষ্টি নামে খুব ঝমঝমিয়ে,
তখন আমরা ভিজতে থাকি দুই জন একই সাথে !
তোমার গায়ের জামা খুলে আমি পরি মাঝে মাঝে,
আমরা দুই জন ভালো মন্দ ভাগ করি সমানভাবে !
বড়োরা সব ফতোয়া দেয় বলতে থাকে অন্য কথা,
ওরা তো ঠিক জানে না আমাদের বন্ধুত্ব হৃদ‍্যতা ?
আমরা বনধু আছি আর থাকবো সারাজীবন ধরে,
আকাশ বাতাস বলছে যেন বনধু থাকো বনধু হয়ে !




প্রতিদিন  যেমন  যায়....
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

প্রতিদিন  যেমন  যায়,আজও  সেই  রকম  দিন  কেটে  গেছে,
ভালো  মন্দ  মিশিয়ে  নানা  ঘটনা ,নানা  রটনা ,
একরাশ  স্মৃতি  শুধু  মনে  জমে  আছে৷
এদেশের  মাটিতে  হিন্দু  মুসলমানের  কত  রকম  অবদান.....,
তাই  শতকোটি  প্রনাম  জানাই,
এই  কবিতা আমার  শ্রদ্ধা  পৌঁছে  দিবে  তাঁদের কাছে৷

পল্লী  বাংলার  মেঠো  পথ  থেকে  রাজধানীর  বুকে,
জানতে  চেষ্টা  করেছি  কখনো  কে  কেমন  আছেন  সুখে?
ঘরে  ঘরে  বিপদ  কড়া  নাড়ে,
করানা  কখন  যে  কার  প্রাণ  কাড়ে !

অনুর্বর  মাটি  পরিপাটি  করে তুলে  ফসল  ফলান  চাষী,
ডাক্তার,নার্স, শিক্ষক,পুলিশ, রিপোর্টার
আর  শ্রমজীবী  জনতার  মতো  তাঁদের
আজও  সমান  ভালোবাসি৷
যেখানেই  থাকি  আমি  রাত্রিতে  প্রিয়তমার  কাছে  ফিরে  আসি৷
——————————————————






  আজ রাসযাত্রা
   সুস্মিতা দে

চলে যাই শৈশবে রাস
যাত্রা দেখতে? চড়তাম
নাগর দোলা মাথা ঘুরে
যেতো নামিয়ে দাও
থামিয়ে দাও কাদঁতাম
আর হাসতাম। অনুভূতি ।
 
খেলনা কিনে চিনে বাদাম
খেয়ে রাসের ঘরে যেতাম।
রাধাকৃষ্ণের কতো ছবি দেখে
মনে আনন্দ  হতো আজ
তাই শৈশব মনে পড়ে
রাসের মেলা আলাদা
অনুভূতি ।।

জীবনে ছিলো প্রানের
উচ্ছলে ভরা সকলের 
শৈশব আজআমাদের
ছেলেমেয়েরা পায় না
আনন্দের সংসার ।
 

দ্বিতীয় পর্ব

বড়ো নটখট হয়েছে
কানাইয়া কি
করবে যশোদা মাইয়া?
উড়ে চলে যাবে লুকিয়ে
পড়ে ননী খেয়ে গৃহবাসীদের
পাগল করে দুষ্টুমি আর কতো
উৎপাত সখিদের পিচকারি
কেড়ে নেবে নেবে বংশী ধারী
মধুর ধ্বনির ছন্দে নাচে আনন্দে
বাঁশির স্বরে ডাক শোনে রাধা
রাধা নাম।

  মীরাবাঈ অনুরাগে ভগবানের
ভজন গায় রাধাকৃষ্ণের যুগল মূর্তি
আজ কে রাস পূর্নিমার পুজো হয়
তবে মন ছোটে রাসযাত্রা
দেখতে যাই চল চল আবার চল।





বিপ্লব গোস্বামী এর কবিতা গুচ্ছ
১৷
  স্বরবর্ণ ছড়া

বিপ্লব গোস্বামী

অ=অজগর অলস তাই পারে না তো নড়তে।
আ=আম গাছে জাম গাছে পারে না তো চড়তে।।
ই=ইন্দুরটা বড্ড দুষ্ট  করে শুধু কাটাকাটি।
ঈ=ঈগলটা ভীষণ শিকারি তীক্ষ্ণ তার চোখ দুটি।।
উ=উটেরা বোকা তাই মোট বয় সারাক্ষণ ।
ঊ=ঊষা কালে সূর্য উঠে পাখী সব করে কূজন।।
ঋ=ঋষি মুনি ধ‍্যান করেন জগতের হিতে।
এ=একতারা বাজিয়ে বাউল গান করে সুখ চিত্তে।।
ঐ=ঐক‍্যতায় থাকলে বাধা নেই কোন কাজে।
ও=ওজস্বী হতে পারি সম্ভাবনা সবার মাঝে।।
ঔ=ঔচিত‍্য কাজ করে আমরা সব হবো মহান।
জগত মাঝে রেখে যাবো নিজেদের সেরা দান।।

২৷

আমার মা

বিপ্লব গোস্বামী

মা যে আমার খুব আপন
খুব আদর করে,
কষ্ট পেলে মা যে আমায়
কোলে নেয় তুলে।

ঘুম পাড়াতে মা যে আমায়
শুনায় কত গান,
মা যে আমার সর্বংসহা
বিধির সেরা দান।

অসুখ হলে মা কাছে
সারাক্ষণ থাকে,
আদর সোহাগ দিয়ে মা
সব ভুলিয়ে রাখে।

দুঃখ কষ্ট নীরবে সয়ে
মুখে সদা হাসি,
মা যে আমার অতি প্রিয়
খুব ভালোবাসি।

৩৷

আমার উড়তে ইচ্ছে করে

বিপ্লব গোস্বামী

ইচ্ছে করে উড়ে উড়ে চাঁদের দেশে যাই
সেথায় গিয়ে স্বপ্নে দেখা পরীর দেখা পাই।
ইচ্ছে করে পরীর সনে আকাশ মাঝে উড়তে
মেঘের ভেলায় ভেসে ভেসে বাযুর সনে দুলতে।

ইচ্ছে করে উড়ে উড়ে চাঁদের দেশে যাই
সেথায় গিয়ে চড়কা কাটা বুড়ীর দেখা পাই।
ইচ্ছে করে দেখে আসি তারার ঝিকিমিকি
চাঁদের বুড়ীর কাছে গিয়ে সুতা কাটা শিখি।।

ইচ্ছে করে উড়ে উড়ে রামধনুর দেশে যাই
সেথায় গিয়ে নকশা আঁকা মেয়ের দেখা পাই।
সেই মেয়ের কাছে গিয়ে ছবি আঁকা শিখবো
ঘরে ফিরে নানা রঙ্গের কত ছবি আঁকবো।

৪৷

চাঁদ মামা

বিপ্লব গোস্বামী

চাঁদ মামা চাঁদ মামা
বলি যে তোমায় ;
হাজার নয়,লক্ষ নয়
একটি তারা দাও গো আমায়।

লক্ষ কোটি তারা
আছে তোমার কাছে,
একটি তারা দিলে
তেমন কি আর যায় আসে।

বড় কিপ্টে মামা তুমি
দান দেওয়ার তরে,
অমনি অমনি কত তারা রোজই খসে পড়ে।

আমি যদি চাই তবে
ভীষণ পিড়াপিড়ি,
আজ হতে তোমার সনে দিলাম আমি আড়ি।
-----------------




আঁখি অন্দর
   সমীরণ বেরা

মন খুলে উঁকি দেয় লোভাতুর চোখ
ভুলে গেছে সুখ স্মৃতি কিম্বা শোক
ওরা এমনই নির্ভেজাল বাস্তব।
কালো উলঙ্গ ধূলো মাখা শরীর
মুখে অমলিন হাসি পবিত্র শিশুর মত,
আদিমতার গ্রন্থি ভাঙে নি এখনো তাই
আমি ওদের মত একটা আস্ত সকাল চাই।

শীত এলে তুমি ঘুমোবে বলেছিলে
আমি তাই উঠোন পেতে রোদ পোহাই
ওরা এখনো শুকনো বিচুলিতে আগুন পোহায়
রাতের অন্ধকার নামলে নিশ্চিত ঘুমায়।
মাদল সুরে মহুয়ার মৌতাত আবেশ
তুমি আমি কত্ত দিন দেখি নি নিশ্চিন্ত ঘুমের দেশ!

আমাদের তো সব ছিল ঘর- বাড়ী- বৈভব
ভোরে উঠে আলুথালু চুলে ভৈরব,
সকালের সূর্যটা কত দিন ভালো ভাবে দেখি নি
হয়তো ঘরে  ছিল উষ্ণতার অভাব; আনকোরা জলছবি।
আমি জানি না এসব কিছুই-
শুধু জানি শীত কাল এলে তুমি ঘুমাবে বলেছিলে।

আমার কাছে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা বসন্ত আজ একাকার
ওদের কালো চোখের ভিতর বিস্ময় অপার।
ওদের চোখ লোভাতুর নয় আমার তোমার মত
অন্য ভুবন দেখি ওদের চোখের ভিতর।
তুমি আমি ওদের মত করে কি দেখতে শিখেছি?
ভেবে বোলো চোখের ভিতর - উজ্জীবিত শঙ্খধ্বনির মত।।





অভিমান
    অশোক কুমার রায়

"তুমি আমার হৃদপিন্ড !"
কথার ঢেউ খেলানো আবেগে--
উজান.বয়েছিল রক্তে !
বুকটা.ফালাফালা করে.দেখলাম--
পারমানবিক ভাবনায় ;
শূন্য হাহাকার.--- !
সেখানে.জন্মায়নি.সবুজ.ঘাস ।
মরুভূমির মত নুড়ি , বালি
বুকের মাঝে পরে আছে.!
আর.আমার ফ্যাকাশে দেহটা ---
মরীচিকা দেখে দেখে.ক্লান্ত.হচ্ছে .!






শরৎ বাঁশি...
         ইন্দ্রানী দত্ত

শরৎ এলেই  মনে হয়  তাকে লেপে মুড়ে রাখি,
প্রতিদিন ভাবি শিউলি ফুটলেই
শরত আমাকে ডেকে তুলবে খুব ভোরে ,
কিন্তু ঘাসের উপরে শিশিরে পা দিলেই
আমি শীতের গন্ধ পাই অবিরত ,
আকাশের বুক থেকে যদি
নেমে আসে সুতো বাধা ঘাস ফড়িং,
তবে নিশ্চিত সে ধরা পড়েছিল
কোন এক অবাধ্য কিশোরের হাতে !!
আমি শরতকে বলবো আরও দুটো দিন
থেকে যাও,থেকে যাও কাশের বনে !!!!

শরৎ হেসে কয় আলতো চুম্বন এঁকে গালে,
ধুর পাগলী !!আমাকে যে ফিরতে হবে,
ফিরতেই হবে পৃথিবীর আবর্তনে,
ধানসিঁড়িটির তীর ভুলে হেমন্তের আগে !

কিন্তু!,কিন্তু আমার যে মনে হয় শরৎ এলেই
তাকে আরোও কিছুদিন রেখে দি,
রেখে দি  কাশের আঁচলে শক্ত করে বেঁধে,
আলের ধার ভেঙে কৃষকের মাঠে !
তাকে রেখে দি ওই দূরের সবুজ কিনারে,
মেঠো বনের পথে পথে শাল সেগুনের কোলে,
খোয়াই এর বাঁকে বাঁকে সদ্য প্রেমে পড়া
যুবক যুবতীর যৌবনের মান অভিমানে !





               হারানো সুর
       হামিদুল ইসলাম
             
তোমার জন‍্যে
এখনো অপেক্ষা করি
শান বাধানো ঘাট  ।।

তুমি আসবে বলে
কথা দিয়েছিলে আমায়
আসলে না। মনের গভীরে এখন ধু ধু মাঠ  ।।

তোমার জন‍্যে
সুখ সাজিয়ে রাখি
আমি মৃত‍্যুকে পাহারা দিই ।।

বটের ঝুরি
নেমে আসে গভীর রাতে
নিকষ অন্ধকারে তোমাকে পেয়ে যাই  ।।

তুমি কতো কাছে
তবু কতোদূর
তোমাকে পাবো বলে বাড়িয়ে দিই হাত  ।।

পুরোনো ব‍্যথা আমাকে কাছে টানে
তোমার প্রেম আমাকে কাছে টানে
তবু আমি দাঁড়িয়ে থাকি যেনো ঠুঁটো জগন্নাথ  ।।

তোমার জন‍্যে নিজেকে হারাই
কখনো খুঁজে পাই নে আপন সত্ত্বা
তবু তুমি থেকে যাও দূরে  ।।

তুমি আমার হাত ধরলে
আমি জল কখনো ঘাম
লোনা ঘামে ভিজে তোমাকে ডাকি হারানো সুরে ।।








উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 29/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 29/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 29/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 29/11/2020, রবিবার
               সময় :- রাত 7 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


এখন ঘরেই মজা
      চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

এখন  এই  শীতের  সময়ে ঘরেই মজা,
এখন  বৃষ্টি  আর  নেই  বটে,উত্তরের শীতকাল,
খুব  ভালো  লাগে মিষ্টি  রোদ  ভরা  সকাল৷
মাছ  ভাজা,বাসিভাত সঙ্গে পিয়াঁজ,
সমান  ভালো  লাগে,
তাই খাই  আজকাল৷
পিঠেপুলি  এই সব  খাওয়া  দাওয়া  চলে,
যখন  যেমন  সময় আসে, মানিয়ে চলি  তাই,
কারো 'পরে  রাগ  করলে  কি  আর  চলে?
ঘরে  থেকে  বেশ  মজা  পাই,
এই  ঠান্ডায়  বাইরে  না  ঘুরে,ঘরে  থাকি  তাই৷





ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক
স্বরাজ পরামানিক

সময় বড়ই দামী ছিল তোমার।
তার থেকে বড় ছিল তোমার কাজ।
তাই গড়ে ওঠেনি সম্পর্ক, ছিল শুধু
লিখিত অনুমোদনপত্র।

মনের গহীন হয়নি মিলিত।
ঝাঁপ দিইনি অতল গভীরে,
দেখিয়ে গিয়েছি শুধু ভাসা-ভাসা,
তোমার আমার দাম্পত্য খাসা।

শুধু সময়টুকুর অভাব ছিল
নইলে কি আর ভাঙত?
বেস্ট ফ্রেন্ডরাও জুড়ি হয়,
সবাই তো তাই জানত।

শুধু সময়টা সাথ দিল না;
নাকি অন্য কেউ নিতো সেই সময়।
জানি না কতটা সত্যি মিথ্যে;
তোমার মুখোশ পরার বিষয়।

তবু তোমাকে ভালোবেসেছি,
নিন্দা করতে পারিনা তাই।
ভালো থাকার রসদ খুঁজি,
ভালোবাসার খবর নাই।

একাকী জানিনা কোথায় যাবো,
সঙ্গী-সাথীরা অস্ত যায়!
ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের মাঝে,
একাকী আমি, নিঃসঙ্গতায়!





রবিবারের বিষয়ে
গলপ

লাশ
ভূতের গলপ
অনাদি মুখার্জি

অনেক দিন আগের কথা ,আমি থাকতাম তখন আশাপুর বলে একটা  গ্রামে ! আশাপুর থেকে চুড়ামণ আসতে সময় লাগতো 1 ঘন্টা ! আশাপুরে তো সব জিনিস পাওয়া যেতো না ,জিনিস কিনতে এই চুড়ামণ বাজারের আসতে হতো ! আশাপুর থেকে চুড়ামণ আসতে রাস্তার মাছে একটা কালভার্ট পড়তো ! যাই হোক আমি যে কথা টা বলতে চাইছি ,আমার শোনা দেখি নি কিন্তু ,  ঐ রাস্তায় সন্ধ্যায় নামলে আর লোকজন দেখা যায় না খুব একটা ! সেই রাতে একটা কাজের জন্য কালু চুড়ামণ বাজারে গেসলো , সেই খান ফিরবে কিসের আশাপুর ,সন্ধ্যায় সময় শুধু রিক্সা ছাড়া আর কিছু গাড়ি পাওয়া যায় না ,কালু শেষ পযর্ন্ত রিক্সা ভাড়া করলো ,রিক্সাওয়ালা অতদুর যেতে চাইছিল না ,তখন কালু 200 টাকা ভাড়া দেব বলে রিকশায় চেপে আশাপুর আসতে লাগলো !  হঠাৎ ঐ কালভার্টের কাজে আসতে কালু নজরে গেলো যে একটা লাশ পড়ে আছে ! ভালো করে দেখে একবার রিক্সা চালকের শুধালো এই দেখ না ঐখানে কি পড়ে আছে ,রিকশায় ঐ লোক টা বলে উঠলো হুম এই টা একটা লাশ ! কিন্তু এত রাতে তখন ১০ টা বাজে এই সময়ের এই খানে লাশ এলো কোথা থেকে ! কালূ তখন রিক্সা থামিয়ে ঐ লাশ টা কাজে গেলো ,আর রিকসাওয়ালা কে বললো চল ভাই এই লাশ টা পুড়িয়ে দেবার ব্যাবস্থা করি ! বলে কালটু ঐ লাশ টা কাজে গিয়ে দাঁড়ালো আর ঐ রিক্সায়ালা কে বললো নে ভাই লাশ টা একটু ধর ,রিকসায়ালা বললো আগে দেখো লাশ টা কার ,কোনো বাচচা না বয়স্ক লোকের ,হুম ঠিক তো বলে কালটু ঐ লাশ টা কাপড় টা সরাতে ভয়ে চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গেলো ! রিক্সায়ালা  তো ভয় পেয়ে ঐ আশেপাশের গ্রামের খবর দিল ,সাথে সাথে অনেক লোক জন এলো ,সমস্ত কালভার্ট জুড়ে খোঁজ করা হলো ,কথায় লাশ আর ঐ কালটু কে ও পাওয়া গেলো না ! এইসব দেখে রিক্সাওলা ভয়ে পেতে লাগলো ,সেই পরিষ্কার দেখেছে ,কালটু যখন ঐ লাশ টা গায়ের চাদর সরিয়ে দেখছিল তখন রিক্সাওলা ও দেখেছে ঐ লাশ টা চোখ গুলো লাল আলো জ্বলছিল ! সেই রাতে কিছু পাওয়া গেলো না ,কিন্তু পরের দিন সকালে আবার কালভার্টের কাজে খোঁজ করতে গিয়ে দেখা গেল একটা লাশ ,কিন্তু সেই লাশ টা কালটু ! সবাই অবাক হয়ে গেলো এই কি কালটু লাশ ,আমি ও ছিলাম তখন দেখলাম আর কালটু লাশ টা গায়ে xyz লেখা আছে যা কেউ আচড়ে লিখে দিয়েছে ,ঐ দাগ দেখে কেউ আর লাশ টা কে  স্পর্শ করার সাহস করলো না ! আমি ও ভয়ে পিছিয়ে গেলাম  বুঝলাম যে ঐ  আত্মা কাজ সেই কাউকে ছাড়বে না !





বাঁশি পড়ে আছে
    সুস্মিতা দে

রাখাল বালক বাঁশি বাজায়।
নন্দলালা আসে সেথায় যশোমতী
মাইয়া আসে কাঁপছে বুকে ভয়
কার ননী চুরি করে উল্টো
ফেলে চলে আসে।মানে না
কারো কথা ছাড়বেনা সে বায়না

উড়ে যাবে মাইয়া কে বলে ?
আগে উড়ে যাবে গাড়ী না দিলে?
নন্দদুলাল খেলবে হোলি রঙ কিনে ?
না দিলে সে সখি দের গায়ে রঙ দিয়ে ?
দেবে যোশদা আসে পথে।

কানাই উড়ে গেছে অনেক বেলা
গেছে দুষ্টু কানাই বাঁশি ফেলে
গেছে জানে মা যশোদা ধুলোতে
তার জন্য এই দুষ্টু  কাজ টি করে
মা স্বস্তিতে বাঁচে। বাঁশি যখন
পড়ে আছে ।





বিপ্লব গোস্বামী এর  কবিতাগুচ্ছ
১৷

আমি গাই তাদের গান

   বিপ্লব গোস্বামী

আমি গাই তাদের গান
দেশপ্রেম সেনানীতে আছে যার মান।
জন্মভূমির ভালোবাসায় করে যে সম্মান
আমি গাই তাদের গান।

দেশ স্বাধীনতায় যারা করেছে সংগ্ৰাম
বুকের শোণিত যারা করে গেছে দান।
মাতৃত্বে এক হতে রচে যারা গান
আমি গাই তাদের গান।

যাদের তেজে দূর হলো পৌষাহিত কাণ্ড
যাদের তেজে বাষ্প হলো দুষ্কৃতির ভাণ্ড।
যারা রক্ষা করে সভ‍্যতার প্রাণ
আমি গাই তাদের গান।

যারা পথে পথে ঠেলে ঠেলা গাড়ি
যারা হাসিয়ে তুলে মুচীদের বাড়ী।
যাদের গৌরবে মাঠে ফলে ধান
আমি গাই তাদের গান।

২৷

রবি প্রণাম

ছন্দ গানের হে মহান ঋষি
তোমায় নমস্কার।
বন্দিতে তোমায় জানিনা মন্ত্র
ধ‍্যান প্রণাম তার।

বিশ্বের কবি তুমি সর্বশ্রেষ্ট
কালি বাল্মীকি সম।
হৃদয়ের কবি পরানের  কবি
বন্দনা লহ নমঃ।।

বীণা দিলা যারে বাণী
সবটুকু আশিষ দানি।
তাইতো তুমি বিশ্ব কবি
হে মহা জ্ঞানী।

লেখলে তুমি অমর লেখা
জ্ঞান অমৃত পিয়া।
ভাসালে তুমি অখিল জগত
মধু মাখা গীতি দিয়া।

হে মহা মুনি ,হে মহি কবি
হৃদয় শতদলে।
দিতে চাই অজ্ঞলী আমি
তোমার চরণ তলে।

বন্দনা লহ বন্দনা লহ
তোমার চরণে লুটি।
মনে বড় সাধ পদ্ম হয়ে
চরণ যোগলে ফুটি।

৩৷

তুমি কে

বিপ্লব গোস্বামী

তুমি কে ? জানি না,
দেখে ছিলাম পাহাড়ী এক গায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

নীল শাড়ি ছিলো গায়
পায়েল বাঁধা এক পায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

আরো তোমার ছিলো সাথী
সবার মুখে মিষ্টি হাসি।
সবার হাসি হলো বাসী
তোমার হাসি মন উদাসী।

তুমি কে ? জানি না,
হাত ভরা বালায় ,
গলা ভরা গয়নায়।
আজো তুমি ভেসে ওঠো
মনের আয়নায়।

৪৷

মাতৃ বন্দনা

  বিপ্লব গোস্বামী

আমি গাই জয় মায়েরি জয়
যার স্তন‍্যে বাঁচিয়া নর
মানব মহামানব হয়।

আমি গাই জয় মায়েরি জয়
সন্তানের কষ্টে রাত জাগে
শিয়রে যারা রয়।

আমি গাই জয় মায়েরি জয়
হাজার যাতনা হাজার লাঞ্ছনা
নীরবে যারা সয়।

আমি গাই জয় মায়েরি জয়
শত বেদনা সইয়া যারা
সন্তানের কথা কয়।

আমি গাই জয় মায়েরি জয়
যার আঁচলে থাকতে মোদের
নেইতো কোন ভয়।





   তুমি আছো আমি আছি
          হামিদুল ইসলাম

শতাব্দী একে একে পেরিয়ে যায়
আঁধারে ঘনিয়ে আসে মেঘ
অসহায় মানুষ এখন
অসার দৃষ্টি জীবনের চারদিক  ।।

হাওয়ারা বয়ে চলে নিঃশব্দে
ভয়ংকর রাত
মনের গভীরে ঘুনপোকা খেয়ে যায়
শরীরের রক্ত জল নুন  ।।

ভূগোলের পাঠাগারে বন্দি জীবন
ছুটে যায় নদী বন্দর
ঈশ্বর খোঁজে প্রতিদিন মানুষ
মানুষ খোঁজে ঈশ্বর  ।।

অষ্টাদশীর চোখে মৃত‍্যু মিছিল
ঝরে পড়ে একরাশ কান্না
বন্ধু,  সময় এগিয়ে এসেছে সময়
চলে যাবো দুদিন আগে আর পিছে  
।।

কার জন‍্যে বেঁচে থাকা
ফাঁকা ফাঁকা এ হৃদয় সংসার
তুমি আছো আমি আছি
তুমি নেই আমি নেই নৈঃশব্দে পৃথিবী একাকার  ।।





সম্প্রীতির দেশ
সাফরিদ সেখ

ভাবছি,থাক ,কিছু বলবো না।
মাথায় ভূত কেনো চাপে জানি না।
চারি দিকে উষ্ণ হিংসার স্রোত
দূর্গম বেগে ঢেকে ফেলে দেশ।

আজ ফুল গুলো বড্ড বেয়াদব
ফুলের সৌরভে গৌরব নেই, মর্যাদা নেই।
কেবলই দৌড় দৌড় ঝটিকা এক
সবুজ ভূমি খাচ্ছে গিলে তিলে তিলে।

শান্তি আজ শব্দ কেবলই ,অন্য কিছু নয়
বিশ্বাস ভাঙ্গা ঠুনকো গ্লাস এক
সম্প্রীতির বন্ধন আজ ধুলায় লুটায়
দেশ গ্রাম সর্বত্র ক্রুরতার  সর্গ রাজ্য।

আজ খুঁজি সেই চেতনা  সদা
মানবতার বর্ম পড়ে যুদ্ধ করে
বাঁচায় দেশ সমাজ গড়ে নূতন করে
হিংসা বিহীন রাষ্ট্র নিয়ে মানুষ বাঁচে যুগে যুগে।






   খোরাক 
      সৌম্য ঘোষ

ধর্ষিতাকে  কলমের  ডগায় দাঁড় করাইনি কখনও
মোমবাতি জ্বালিয়ে নীরব মিছিল--
অপরাধীকে প্রেরণা দেয় মাত্র !
পাতার পর পাতা প্রতিবাদের ভাষা !
শেষ পর্যন্ত লাভটা কি হলো !
জনচেতনা ?
ধর্ষণ কি তাতে একটুও কমলো ?
প্রভাতী সংবাদে হামলে পড়া--
" খোরাকের  খোঁজ....."
অপরাধের খোঁজে , নিত্যনতুন ধর্ষিতার খোঁজে,
নিদেন একটা বধূ নির্যাতন ;
না হলে, প্রাতঃরাশ জমি কই  ।
লেখক  পায় "বিষয়" , পাঠক পায় "খোরাক",
চায়ের আসরটা তো ঠিকই সরগরম হয়না--
একটা বধূনির্যাতন ছাড়া -
প্রতিবাদীর  বিনোদন কি সম্ভব ?

কত লেখালেখি, কত লেখকের জন্ম হয় ।।






রাশ পূর্ণিমা আজ
অঞ্জলি দে নন্দী,মম

রাশ পূর্ণিমা - হাস, ভালোবাস!
শ্রী রাই আর শ্রী কানাই।
বৃন্দাবন আজ মেলায় মন।
শশী ঐ পূর্ণ, ডেকে বলে, পূর্ণ হোক মিলনের নিশি।
আলো দূর করে তামসি কালো।
জ্বাল অন্তরে প্রেমের আলো!
ঢালো আরও ভালো!
অনন্ত প্রেম অফুরন্ত।
এসো হে অমর প্রেম, শুধু ভালোবেসো!
চঞ্চল যমুনা জল।
ছল ছল ছল - আকর্ষণ প্রবল।
টানে বয়ে চলে প্রেমের মিলন স্থল মোহনার পানে।
নিয়ম এ প্রকৃতির, সৃষ্টির মূলে, আদি প্রিয়ম।
আজ রাশে প্রেমিক ও প্রেমিকা করে প্রেমের সাজ।




অবাক জীব বৈচিত্র্য
    আব্দুল রাহাজ

চলছে ওরা তরতরিয়ে
নদীর স্রোতে অনন্য রূপে ফুটে উঠছে বিশ্বে মায়ের কোলে
সূর্যের দীপ্ত আলোয় যেন কোথাও নিজেদেরকে মেলে ধরছে
এক অনন্য রূপে।
প্রান্তিক মানুষগুলো তোমার উপর নির্ভর করে চলেছে আজীবন ধরে।

কোন দেশের আবার তোমার উপর নির্ভর করে অর্থনীতি

উন্নয়নকে সংগঠন মজবুত করে।
তুমি তো সেই অবাক করা জীব বৈচিত্র্য হে।





তবুও বাবু
       পার্থ প্রতিম হালদার

আমি চাকুরিজীবী বাবু নই ।
এমনকি সমাজের বুকে হঠাৎ
ফুলে ফেঁপে ওঠা বাবুও নই ,
আমি আমার মায়ের স্নেহের বাবু ।
গরীবের চেয়ে আরো গরীব বাবু ।
আমি এত নগণ্য যে কেউ আমাকে
তোয়াক্কাও করে না। তবুও আমি
বাবু হওয়ার অবান্তর স্বপ্ন
ছাড়তেও পারি না।

আমার না আছে টাকা, না আছে
সম্মান । না আছে বাবু সম্প্রদায়ের
মতো খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান।
তবুও আমি বাবু। খড়ের চালের
কুঁড়েঘর থেকে বেরিয়ে আসা,
ইনহেলারের অক্সিজেন মুখে নিয়ে
কোনরকমে জীবন টা কে টিকিয়ে
রাখা , রোগগ্রস্ত মায়ের বাবু।
যে বছরের পর বছর ঘরের দুয়ারে
অপেক্ষা করে চলে , কখন তার
স্নেহের বাবু যাবে 'মা', 'মা' বলে।

তবুও , এমন পরিবেশ থেকে বেরিয়ে,
ঈশ্বর নামক বাবুর লিখন কে
ভাঙার চেষ্টা করি । সমাজের উলঙ্গ
চেহারা দেখে , রাজনীতি তে দুর্নীতি দেখে
কখনও দু চার কলম লিখেও ফেলি ।
কিন্তু লাভ কিছু হয়নি। সমাজের বুকে
বাবুর সম্মান মেলেনি।
আর্থিক অবস্থারও কোনো উন্নতি
ঘটে নি। শুধু জ্ঞানের কলসিতে জল ভরেছে ,
কিন্তু সেই জল সমাজের কাজে
লাগেনি। চাকরি জোটে নি।
তবুও এখনও বাবু হওয়ার
অবান্তর স্বপ্ন , আমি ছাড়তে পারিনি।






সময় কোথায়
     নরেন্দ্র নাথ নস্কর

সেই ভোরে মৌচাক ছেড়ে বেরিয়ে  এসেছি।
সারাদিন ফুলে ফুলে ঘুরে মধু সংগ্রহ করতে হয়। 
এ ফুলে ও ফুলে পরাগ মাখাতে হয়।
কত গাছ ঘুরতে হয় বলত?
কত কাজ বাকি।

তবে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে সামান্য এই জীবনে।

কত রকম ফুলের ফলের গাছ দেখেছি।
কত বিচিত্র তাদের নাম।

যে ফুল গুলোর নাম  জানি বলি।
টগর, জুঁই, গাঁদা, গোলাপ, রঙ্গন, দোপাটি, চাঁপা, কত রঙের জবা,
চন্দ্রমল্লিকা, ক্রেশনথেমাম ইত্যাদি।
আরো কত হরেক রকম ফুল যাদের নাম উদ্ভিদ  বিজ্ঞানী চাড়া অনেকেই জানে না।

সেই সমস্ত চেনা অচেনা ফুলের থেকে  থেকে মধু নিই , কিছু নীরব কথা হয় অনেকের সঙ্গে
তারা যে আমাদের জন্য অপেক্ষা করে।
তাদের বংশ বিস্তারে সাহায্য করি।

কত রকমের যে উদ্ভিদ দেখেছি কি  বলব?
কিছু নাম জানি।
কিছু জানি না।
ফুলে ফুলে পরাগ মাখালে তবেই তাদের ফল হয় যে।
তাদের ফুলে বসতেই তারা গল্প জুড়ে দেয়।
নি:শব্দে আমি মধু নিই।

কিছু উদ্ভিদের নাম জানি,
যেমন ঝিঙে, লাউ , কুমড়ো, শশা, মুলো,সরষে , আরো কত নাম আমার অজ্ঞাত ।
তাদের সবুজ শাখায় নানা রঙের ফুলে যখন বসি কি যে ভালো লাগে।
তবে গল্প করার সময় পাই কম।

দেরি হলে আমাদের রানী চিন্তা করবে।

আর ফল যে কত রকমের ও তাদের ফুলের যে কি বাহার তা প্রকাশ করা যায় না ঠিক মত।

কিছু নাম জানি যেমন আম, লিচু,জাম, খেজুর, পেয়ারা, 
লেবু, আপেল ইত্যাদি।

তবে বেশিরভাগ ফুল ও ফলের নাম পরিচয়   অজ্ঞাত  থেকে যায়।

দুরের দেশে বনে বনে ঘুরি যখন মধুর সন্ধানে, তখন কত যে অচেনা ফুল ফলের গাছে গাছে বসি কি বলব?
তাদের ফুলে ফুলে বসে  মধু নিতে হবে বলে, সেই বনের কোন এক উচ্চ  নিরাপদ গাছ দেখে মৌচাক বাঁধি আমরা।
রানীমা বাসায় থাকে।
আমরা সারাদিন মধু সংগ্রহ করে সন্ধ্যার অনেক আগে বাসায় ফিরে আসি।

সারা রাত বিশ্রাম করে আবার একই নিয়মে সেই ভোরবেলায় বেরিয়ে পড়ি মধু আনতে।

তোমাদের সাথে যে একটু গল্প করব, তার সময় কোথায়?







উপলক্ষ্য ঈদ 
     বদরুদ্দোজা শেখু


উপলক্ষ্য ঈদ ।
উপলক্ষ্য ঈদ  ছিল , বরং বলা যায়
ঈদোত্তর  প্রীতি-সম্মিলনী ।
আমরা ছিলাম মোট পাঁচজন সেই সান্ধ্য
চা-চক্রের উদ্যোক্তা ,অন্যরা সবাই আমন্ত্রিত
নবীশ বন্ধু বান্ধবীরা  বিশেষতঃ কেউ কেউ
খুশীর সরল প্রাপ্যটুকুর উৎসাহী দাবিদার , অন্যথায়
ঈদের আনন্দ ক্যামন যেন একপেশে , সকল হৃদয়ে সঞ্চালিত নয় ।
বিষয়টা উপলদ্ধি ক'রে আমরা ক'জন মিলে
প্রায় পঞ্চাশ জনের জন্য যথাসাধ্য
মুখ-মিষ্টির  ছোটোখাটো সৌজন্যমূলক সভা আয়োজন
  ক'রে ফেলি ডাইনিঙে যাতে
প্রায় সব সতীর্থই অংশ নিয়েছিল একযোগে
, প্রথমতঃ এই দৃশ্যে তারা ধন্যবাদার্হ সবাই ।

প্রত্যেকের টেবিলে টেবিলে নক্শী কাগজের প্লেটগুলো
চানাচুর বরফি কেকের সমারোহে  পূর্ণ ছিল সুচারু সুন্দর ,
এই ছোট্ট অবসরে
অনুষ্ঠান উদ্বোধন, স্বাগত ভাষণ ,তারপর
একে অপরের প্রস্তাব মতন বিভিন্ন রাজ্যের
গান হলো উর্দু হিন্দি সিন্ধি বাংলা কাশ্মিরী ওড়িয়ায় ,
দফায় দফায় হাততালি পড়লো যথেচ্ছ , টেবিল চাপড়ে'
শিস দিয়ে আনন্দ ধ্বনিত হলো , হাস্য-কৌতুকের
সরস মহড়া হলো ইতস্ততঃ , অবশেষে মনোজ্ঞ ধন্যবাদ
জ্ঞাপন করলো কাশ্মিরী বন্ধুবর শওকত ,
শেষ হলো  সভা ।

দ্রুত অপসৃয়মান এই দৃশ্যে দেখলাম ----
গুটিকয় ছাড়া কমবেশী প্রায় সমস্ত প্লেটেই
অনিচ্ছায় হেলাফেলা-ভ'রে খাবার ছড়ানো আছে
ইতস্ততঃযেন কারো কোনোরূপ খাবার তাগিদ নাই , আমাদের
যথাসাধ্য  আয়োজনের এমন অবক্তব্য অপচয় দেখে
আমি হতবাক , অপ্রসন্ন । বিষণ্ণ বিমর্ষ কিছু
মুখ ভেসে এলো মনে , যাঁরা প্রায়শঃই অভুক্ত থেকে যান ।
সামাজিক সৌজন্যের এই কি স্বরূপ? নাকি অভিজাত
মহলের মহ্ফিলি রীতি নীতি এই?
সেই সংক্ষিপ্ত বিনোদন আপাততঃ উপভোগ্য হ'লেও , সেই
প্রীতি--সম্মিলনীর লক্ষ্য আর
উপলক্ষ্য আজো মাথা হেঁট ক'রে আছে
হতবুদ্ধি বামনের মতো ।





অপৌরাণিক
     অনিন্দ্য পাল

পাহাড় নেই, নদী নেই, নেই  মাটির গন্ধ
তবু এ রাজত্বে রাম স্বয়ং সিংহাসনে
কৌশল্যাপতি বনবাসে যান আজীবন
অসংখ্য সীতা মিছিলে নামে
পিছু ধাওয়া করে রামের মুখোশে
                                          দশানন রাবণ

সমস্ত গোপন উঠে এসে থিতু হয়েছে
রামের পাদুকায়
মাটির ফাটল বেয়ে আকাল ছুঁয়েছে
নাটক, অভিনয়
তবু পৃথিবীর জঠরে স্থান অকুলান
এবং রাবণের নেই কোন লুকানো মৃত্যুবাণ 

ইন্দ্রজিৎ ও অবধ্য চিরকাল
মেঘের আড়ালে সব জবাব সওয়াল

কালরাত্রির জমানো দুই বরে
কৈকেয়ীরা চায় নিত্য নিয়ম করে
বিভীষণ জন্মাক প্রতি সংসারে

এ রাজপাটে বিষ-রক্তে রজস্বলা
আমাদের ভাবিকাল ...



শনিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 28/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 28/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 28/11/2020, শনিবার
               সময় :- রাত 9 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


           পরিচয়
           পিনাকী   মুখার্জী
      
           অবাক রোমাঞ্চের একটার পর
             একটা  ,  আরো  বড় ঢেউ !!
               এক  ধাক্কায়  বুঝিয়ে  দেয় ,
           রাজত্বে  ঢুকেছে  অচেনা  কেউ  !!

               ছোট্ট বাঁচার গন্ডি ছাড়িয়ে ,
             আজকে যেন অনন্ত অপার !!
              আলাপ হয়নি বলে , শুধু
           অভিমানে সরে  আমি- আমার !!

             নোনাজল বালি গোটা শরীরে ,
               লহমায় দিয়ে যায় পরিচয় !!
           ভিতরে বাইরে  সেই অজানাকে
           চেনা , আলাপন রোমাঞ্চের ছোঁয়ায় !!

             ঢেউয়ের  ফেরার  পরেও , শরীর
                মন  জুড়ে  ঢেউয়ের  খেলা !!
                    আজ  যেন একা লাগে ,
               স্বজন হারানোর  গোধূলি বেলা !!





তখন আর এখন  জীবন
    চিত্তরঞ্জন দেবভূতি

বেশী  দিন  আগের  কথা  নয়,এক  হাজার
বছর  আগে ,
আমাদের  পূর্ব  পুরুষদের জীবনযাত্রার
কথা  মনে  জাগে?
এখনকার  এই  আধুনিক  সুযোগ  সুবিধা  বলতে  ছিল  না কিছু,
হেঁটে  করতে  হতো  যাতায়াত,
কখনো বন্য  পশু  নয়তো  ডাকাত,দস্যুরা
তাড়া  করতো  পিছু!
কি ভয়ঙ্কর  সময়  পার  করে  আমরা  এখন  সভ্য  জগতের এমন  আধুনিক  লোক,
এখনকার  আঘাত  অন্যরকম,
সবার  কপালে  সহ্য  হয়  না সুখ  ভোগ ?

খুব  শর্টকার্ট  জীবন যাপন,
হাতের  মুঠোয়  পৃথিবী,
ভালোবাসা  জলের  দরে  বিক্রী  হয়,
এক  জনের  একএক  রকম  মন৷
আবার  হয়তো  আসবে  এমন  দিন,
পাল্টে  যাবে  যে  রকম  সময়  চলছে  এখন৷









গ্রামের মেয়ে মালতী
       সুস্মিতা দে

আমার ছোট্ট একটি ঘর ।সে ঘর হোক না চাইবার না পাইবার। কিছু আনন্দ নিয়ে  থাকা ছোট্ট একটি খালের উপর দেখি মালতী দিদি সাড়া  দিন বসে পলাশ দাদার কথা ভাবে।
ডাক আসছে মালতী দিদি কে দেখে ছুটে আসে,  চিঠি আসে নি? দিন যায় বসন্ত আসে মালতী  দির ছটফটানি বাড়ে?পলাশ  আসে না পলাশ । গ্রামে অন্ধকারে হারিয়ে গেছে মালতী  একা একা পলাশের কথা আপন মনে বলে চলে সন্ধ্যা তারা চলে যায় ভোরের তারা জাগে ।ছোট গ্রাম মালতীর জন্য কাঁদে মালতী  বোঝা তে বসে  কাদঁছো কেন  পলাশ আসবে আমাকে পিওন দাদা  বলে গেছে?
আর একটু অপেক্ষা করলে ভাত একটু খেলে পলাশ আসবে , পিওন দাদা বলে গেছে । ছোট গ্রামের মানুষ অন্ধকার বোঝে মালতী অন্ধকারের অন্তরে আলো খোঁজে ।





বিপ্লব গোস্বামী এর অনু কবিতা গুচ্ছ
১৷
           নাইবা হলে

       বিপ্লব গোস্বামী

নাইবা হলে জীবন সঙ্গী
     না হলো সহবাস !
তবু কল্পনাতে তোমার আমার
      নিত‍্য বসবাস।

২৷

     সংখ‍্যার ছড়া

   বিপ্লব গোস্বামী

        এক দুই
       তিন চার
     এসো গুণি
      বার বার।

     পাঁচ ছয় সাত
এসো গুণি এক সাত।

     আট নয় দশ
  গুণবে যদি বস।

৩৷

আধুনিক নারী

বিপ্লব গোস্বামী

অর্ধ নগ্ন নেটে মগ্ন
পর ভাষায় কথন,
নাইট ক্লাবে মদ‍্য পান
পুরুষের মতন !
আধুনিক যুগের
আগুয়ান নারীর,
এইতো চলার কায়দা !
এই সুজুগে নর পিশাচ সব
লুটছে তাদের ফায়দা।

৪৷

শরণাগত

বিপ্লব গোস্বামী

দয়াল এসেছি তব শরণে
আশ্রিত জনে না ঠেলিও দূরে
ঠাঁই দাও তব শ্রীচরণে।

শুনেছি তুমি বড় দয়ানিধি
এ কাঙ্গাল মাগে কেবল আশ্রয়
হেরিতে তব রূপ নিরবধি।

শরণাগত জনে না করিও হেলা
সারমেয় সম থাকিব গৃহ কোণে
কেবল উচ্ছিষ্টটুকু দিও দ-ুবেলা।

৫৷
মহামারী শেষে

বিপ্লব গোস্বামী

বেঁচে যদি থাকি দুজন
দেখা হবে তবে,
আবার মিলিব দুজন
মহামারী শেষে।

জানিনা এ প্রতীক্ষার
অন্ত হবে কবে,
বুকেতে জড়াবো দুজন
সোহাগেতে হেসে।

৬৷

চলো যাই

বিপ্লব গোস্বামী

       চলো যাই
       সবে ভাই
পাঠশালে যাইরে,
     সখা সঙ্গে
     হাসি রঙ্গে
লেখি পড়ি ভাইরে।

        খেলে ধুলে
       হিংসা ভুলে
কেটে বেলা সুখে ভাই,
         ভয় নাই
        পড়ি তাই
বইয়ের কোন বোঝা নাই।

        রোজ যাই
        মজা পাই
বড় ভালো গুরু মশাই,
        ভালো মন
        সব সুজন
মেলা-মেশার শিক্ষা পাই।

৭৷
জানি না কি পাপে

বিপ্লব গোস্বামী

জানি না কি পাপে
না কি কোন শাপে ?
তুমি অন‍্যের পরিণীতা !
তোমার বিরহে জ্বলছে সখী
বুকের মাঝে চিতা।

জানি না কোন পাপে
না কি কোন শাপে ?
তুমি অন‍্যের ঘরের সতী !
জানি না কার ভুলের ফলে
এমন নিঠুর পরিণতি।







আনন্দ
   নরেন্দ্রনাথ নস্কর

শিশুর মনের গভীরে নিষ্পাপ লুকানো যে  আনন্দ আছে,
সেই আনন্দে গাছ ফুল ফোটায়।
সেই আনন্দে পাখিরা গান গায়।
সেই আনন্দে মৌমাছি মধু সংগ্রহ করে।
সেই আনন্দে মা শিশুকে ভালবাসে।
প্রকৃতির জগতে যাহা কিছু ভালো, সেই আনন্দ থেকে আসে।
এই আনন্দের গুণেই মানুষ মনুষ্যত্ব প্রাপ্ত হয়।
এই আনন্দের আধিকারী মানুষরাই অন্যকে স্বত:স্ফূর্ত আনন্দ দিয়ে থাকে।
এই আনন্দের স্বাদ যদি কেহ জগতে পায়,
জীবন তার সার্থক।
এই আনন্দের সন্ধানে মানুষ সাধনা করে।
নিষ্পাপ এই আনন্দে যদি ভগবানকে ডাকা যায় তবেই তিনি হয়ত কারো কারো কাছে ধরা দেন।
এই আনন্দ থাকলে সুখ দু:খ তার কাছে তুচ্ছ।
এই আনন্দ বড় দুর্লভ।





                  জীবন
        হামিদুল ইসলাম
                
জীবন মদিরায় নেমে
দেখেছি জীবন
জীবন এক ভয়ংকর অনুভূতি
প্রতিদিন আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে নিত‍্য নতুন সম্পর্ক ।।

প্রতিদিন সম্পর্কের জাল
ছিঁড়ে আসতে চাই
পারি না কিছুতেই
জীবন দুর্গম পাঁকের মাঝে ডুবে পাঁকের জল খায়  ।।

প্রতিশোধ তার পিছু পিছু
ছিঁড়ে যায় মায়াবী জাল
গভীর রাত
নির্মম আকাশে সেও প্রতিশোধ নিতে চায় ।।

লোনা জলে সাঁতার দেয় জীবন
জীবন ভেতরে ফাঁপা
তবু জীবনের জন‍্যে লড়ি
লড়াই দিই প্রতিদিন পাশবিক নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে  ।।

এ জীবন জীবনই
জীবন নয় মসকরা
এখন ঝড়ে ভাঙে বনস্পতির শাখা
নৈমিত্তিক জীবন ফেলে রাখি হাতের উল্টো পাতায়  ।।




          পদ্মবন
      সৌম্য ঘোষ
   
নিরালাবেলায় যখন মনের মুখোশ
খুলে ফেলি--
দেখি আলতা পায়ে দাঁড়িয়ে আছো
দাঁড়িয়ে আছে তোমার রূপকথার আলো
আশ্চর্য ফসলে ভরা শস্যক্ষেত্র
তোমার পদ্মবন ।।



শুক্রবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 27/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 27/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 27/11/2020, শুক্রবার
               সময় :- রাত 7 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

               তুমি
            সৌম্য ঘোষ
      

তুমি ফুল হও আমার বাগানে
রঙিন প্রজাপতি হয়ে উড়ে বেড়াবো
তোমার চারিপাশে ।

তুমি আকাশ হও
শরতের মেঘ হয়ে ভেসে যাবো
তোমার দিগন্তে !

তুমি নদী হও
তরী ভাসিয়ে চলে যাবো কোন্ অজানা
মোহনায় ।

তুমি জ্যোৎস্না হও
তোমার মায়াজালে সঁপে দেব
স্বপ্নে বিভোর হয়ে ।

তুমি কি আমার শয্যাচিতা হবে ?
তোমার হলুদ আগুনে আবিষ্ট হবো
চিরনিদ্রার অনন্ত প্রহরে।




অনামিকা
শুভ্রাংশু কুম্ভকার

অনামিকা,
তোমার কণ্ঠ জুড়ে মালা উঠলো অন্য কারো হাতে,
যৌথ স্বপ্নেরা শেষ হয়ে গেলো বেহিসেবি এক রাতে,
আলো ভরা পথে চলেছি দুজনে, আঁধার কীভাবে এলো?
ভুল বোঝা গড়ে বিভেদ প্রাচীর,আলাদাই করে দিলো।
হাতে ধরা হাত,সেই নিশিরাত এখনো কি মনে পড়ে?
ফেস্ট এর শেষে, নাটকের ড্রেসে, পৌঁছে দিয়েছি ঘরে।
চোখে চোখ রেখে, নবরঙ মেখে, পরদিন তুমি এলে,
সাদা সালোয়ার, লাল ওড়নায় ভালোবাসি বলে গেলে।
চোখে চশমায়,বুক চমকায়, আমি হতবাকে দেখি,
নোটসে্র খাতা,চিঠি চারপাতা আজও বুকে জমা রাখি।
তারপর সেই গাছতলে বসা, সব খাওয়া একসাথে,
তুমি হেঁটে, তাই সাইকেল নিয়েও আমি পথ চলি হেঁটে।
হোষ্টেলের ফোনে শুধু ইনকামিং অপেক্ষাতেই থাকে,
কার সহচরী কখনই বা ডাক দিয়ে যায় কাকে?
বিকেল কাটতো নরম স্বপ্নে,রাত্রে কঠিন বই,
রাতের বিরহ কী কঠিন তা তুমি ভালো জানো সই।
মন দেওয়া নেওয়া পাকাপাকি কথা সবই বছর তিন,
ছেড়ে চলে গেলে কীভাবে কাটাবো আগত আগামী দিন।
দেরি হলো কিছু কাজ খুঁজে পেতে, ততদিনে তুমি পর,
শুনেছি নাকি মস্ত চাকুরে তোমার যোগ্য বর।
আমি শুধু খুঁজি,হিসাব মেলেনা, একাকী অভাগা শোকে,
সুদে মূলে ব‍্যথা বাড়তেই থাকে হৃদয়ের পাশবুকে।



অনুগল্প
পুজো
মিনতি গোস্বামী

পুজোর আর দশদিন বাকি।পুজো হবেনা হবেনা করে প‍্যান্ডেলে বাঁশ পড়েছে টুবলুদের পাড়ায় ।
সরকার  নাকি সব পুজো কমিটিকে পুজোর নির্দেশ দিয়েছে।প্রায় আটমাস স্কুল বন্ধ, বাইরে কোথাও বেরোতে না পারায় টুবলুর মনটা খারাপ ই ছিল।কিন্তু বাঁশ পড়ার পর ই তার মন আনন্দে নেচে উঠলো।পুজো,ঠাকুর দেখা,অঞ্জলি , পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে দেখা,উঃ কি আনন্দ!
টুবলু নাচতে নাচতে বাবাকে বললো,"অনেক দিন বাড়িতে আছি, এবার ঠাকুরতলায় গিয়ে খুব আনন্দ করবো।"
বাবা একরকম কড়া গলায় বললো,"হোক পুজো,আমরা কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবোনা।।
সবাই বেরোলে সংক্রমণ বেড়ে মহামারী হবে।"
টুবলু জানে, বাবার কথাই শেষ কথা।
মায়ের কাছে দরবার করেও কোন কাজ,
হবেনা।টুবলু তবুও দমেনি।দোতলার বারান্দা থেকে
প‍্যান্ডেল বাঁধা দেখে রোজ।সে দেখে পাড়ার অনেক লোক কিন্তু জড়ো হয়ে প‍্যান্ডেলের তদারকি করে।
তাদের সবার মুখে মাস্ক নেই।তারা চায়ের দোকানে ঘেঁষাঘেঁষি করে চা খায়,গল্প করে।পাড়ার অনেক ছোটরাও প‍্যান্ডেল তৈরী দেখে।শুধু টুবলু ঘরে।
মন খারাপ হলেও বাবাকে সে কিছু বলেনা।

টুবলুর ছোটপিসি ষষ্ঠীর দিন এলো সপরিবারে করোনারি নেগেটিভ রিপোর্ট হাতে নিয়ে।
টুবলুর বাবা বললো," তুই আমার ছোটবোন, বারণ করেছি পরিস্থিতির চাপে।ভালোই করেছিস এইভাবে এসে।সবাই ঘরে থাকবো। নতুন রান্না, ছোটদের মজা,আর খাওয়া দিয়েই এবার আমাদের পুজো।"

টুবলু ষষ্ঠীর সন্ধ‍্যে থেকেই পিসির ছেলেমেয়ের সাথে ছবি দিতে লাগলো বাবার ফেসবুকে নতুন পোশাক পরে।আর দেওয়া হল মায়ের হাতের রান্না।
পাড়ার অনেকেই কিন্তু পুজো প‍্যান্ডেলে গেল, রোজ
পুজো দেখলো, মজা করলো।

লক্ষীপুজোর আগের দিন টুবলুর বাবা বললো,
"এপাড়ায় কুড়িটি পরিবারের করোনা পজিটিভ।"
টুবলু এবার বুঝলো, কেন বাবা বাইরে. বেরোতে বারণ করেছিল।
টুবলু বাবাকে জড়িয়ে বললো," তুমি আমার বেষ্ট ফ্রেন্ড।"





সৈন্য প্রতি একরাশ  শ্রদ্ধা
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি তাঁদের মহান অবদানের জন্য একরাশ শ্রদ্ধা জানাই,
মরুভূমি থেকে  সাগরে পর্বত চূড়ায়,
বরফের  মধ্যে  থেকে
নিয়োজিত থাকেন আমাদের  দেশ রক্ষায়,
তাঁদের প্রতি এই মন ভরে ওঠে একরাশ শ্রদ্ধায়৷

কত ঝড়  সংকট বিপদ বার বার আসে,
ভারতীয় সেনার মতো আর দেশকে কারা আর  ভালোবাসে?




মনের ক্যানভাসে
অনাদি মুখার্জি

আজো মনে পড়ে সেই শৈশবের দিনগুলো,
মন ছুঁয়ে থাকে থাকে আমাদের গ্রামের শান্ত নদীর কূলে !
থাকতো সেই খানে গ্রামের দুই ধার পাড়ে পাড়ে ,
সারি সারি কত পলাশ আর কলমিলতা ছেয়ে !
সেখানে আমার বনধু ছিল কত রঙিন প্রজাপতি ,
তাদের পিছনে ছুটতাম আর খেলতাম সারাদিন !
সোনালী বিকেলে আমি কত উড়িয়েছি রঙিন ঘুড়ি,
সবার আড়ালে করেছি  তেঁতুলের আঁচার চুরি !
রিমঝিম বর্ষায় ভিজে খেলতাম ছোটবেলায় ,
মাঠের সেই জমা জলে কাগজের নৌকা করে ভাসিয়ে দিতাম !
ছোট্ট বেলায় সেই দিনগুলি পারিনা আজ ভুলিতে ,
মনের ক্যানভাসে এঁকে রাখি বিনা রঙ তুলিতে !




বিপ্লব গোস্বামী এর তিনটি অনু কবিতা

১।
ভালোবাসা কি পাপ

বিপ্লব গোস্বামী

ভালোবাসা কি দীর্ঘশ্বাস
নাকি হাহুতাশ !
নাকি চির ধরা দিল
স্বপ্নের দ্বারে খিল !

ভালোবাসা কি পাপ
নাকি কোন শাপ !
নাকি আশা ভঙ্গের বেদনা
না পাওয়ার যাতনা !
ভালোবাসার শেষ ফল,
বুকে ব‍্যাথা চোখে জল!

২।
পদচিহ্ন

বিপ্লব গোস্বামী

আমার মনের উঠোন জুড়ে
তোমার পদচিহ্ন !
সারাটা হৃদয় জুড়ে ব‍্যাথার ক্ষত চিহ্ন !
গড়তে ছিলাম স্বপ্ন বাসর
হঠাৎ করলে মানা !
এখন আমি ধুলায় ধূসর
ভেঙ্গে স্বপ্ন ডানা।

৩।
তব চুম্বন

বিপ্লব গোস্বামী

সেদিন নীরবে নির্জনে দুজন,
তৃষা-তোরা চিত্তে তাপ দাহ ভীষণ।
অপলক দৃষ্টিতে কর পরশন,
ঘন ঘন তপ্ত শ্বাস অঙ্গ শিহরণ।
লাজে রাঙ্গা মুখচন্দ্র নত মস্তক,
তপ্ত দীর্ঘ শ্বাস হৃদপিণ্ডে ধকধক।
কাঁপা কাঁপা তব শুঙ্ক অধর,
ধীরে বসিলো ওষ্ঠে কেঁপে থর থর।
নিমীলিত আঁখি তব,স্তব্ধ হলো ক্ষণ
আজো ভুলিনি তব প্রথম চুম্বন।





সাধনা
   সুস্মিতা দে

চলে গেলেন মারাদোনা আপন
         ধাম পেরিয়ে সীমানা ছেড়ে ।

চলে যায় স্মৃতি রেখে ।
স্বর্গধামে,চোখের সামনে বিশ্বজয়ী
হৃদয়টি মানুষের মনে পড়ে

অনেক কাজ অসমাপ্ত
আছে , দাদার স্বপ্ন পূরণ
করতে হবে,  ভাইবোন অন্তরে
কান্না চলে ভাঙছে হৃদয় মন প্রান মারাদোনার খেলা তে আছে আত্মবিশ্বাস সাধনা কতো শ্রম। শুধু  খেলা  না সব প্রশিক্ষণ তৈরি হবে শ্রম সাধনা  প্রেম দিয়ে ।

চোখের অশ্রুর বিসর্জন হয়ে
           ধর্ম কর্ম  সন্তানে মধ্যে থাকে
          নিবেদিত প্রাণ ।
   

         দিনে রাতে ভেবেছিলাম
        নিজেরে আত্মত্যাগের মহিমায় বিফলে যাবে না বিশ্বকাপ জয়ী আর্জেন্টিনার মান ।
         কেবল মিছে  কাজ না করে  নিজেকে চাবুক করে  বানাবো আশীর্বাদ দিয়েযাও





প্রবন্ধ
সাহিত্য আলোচনা ও তার গুরুত্ব
  -  অগ্নিমিত্র

  সাহিত্যের অঙ্গনে আলোচনা হতে পারে গল্প, কবিতা নিয়ে, প্রবন্ধ নিয়ে, নাটক নিয়ে । কাব্যনাট্য ও নাট্যকাব্য কী, তা নিয়ে পর্যালোচনা হতে পারে । সাহিত্যের ইতিহাস, তার রূপরেখা, এমনকি আধুনিক সময় ও সাহিত্যিকদের নানা সমস্যা, আর্থিক টানাপোড়েন  ইত্যাদি বিষয়েও কথা হতেই পারে । বাংলা সাহিত্য একটি প্রবহমান নদীর ধারার মতো। আলোচনার মাধ্যমে সেই নদীতে নতুন স্রোত আসে; নতুন দিশা পান লেখকেরা। তাই প্রতি বইমেলা বা বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে সাহিত্যিকরা আলোচনা করেন নিজেদের মধ্যে । আগে কোন সাহিত্যিকের বাড়ি বা মেসে বা রেস্তরাঁয় এরকম আলোচনা হতো । কফি হাউস ও কুমার্স ক্যান্টিন এরকম আলোচনার জন্য সুবিখ্যাত । তারও আগে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়িতে এরকম আলোচনা হতো ' খামখেয়ালি সভা' নামে ; দিকপাল সাহিত্যিকরা সাহিত্য ও তার ধারা এবং সমসাময়িক ঘটনাবলি নিয়ে আলোচনা করতেন, নতুন লেখার রসদ পেতেন। মিত্র ও ঘোষ প্রকাশনার গজেন্দ্রকুমার মিত্রের বাসায় এরকম আলোচনা হতো । যারা উঠতি লেখক বা লেখক হতে চান, তাঁরাও এই রকম আলোচনায় উপকৃত হতেন ও আজও হন ।
  দুঃখের বিষয়, আজকাল এরকম আলোচনা তেমন হয়না। ফলে সাহিত্যও তার গতি হারাচ্ছে । তবে অনলাইন মাধ্যমে আলোচনা করা যেতেই পারে। তাতে উপকৃত হবে বাংলা সাহিত্য ও তার অগুনতি পাঠক। তবে একটা কথা, সাহিত্যের সভায়
রাজনীতি নিয়ে আলোচনা না হওয়াই ভালো। যদিও সব কিছুই ওতপ্রোতভাবে জড়িত, তাও রাজনীতি ও সাহিত্য পৃথক থাকা উচিত বলে আমার মনে হয় ।।





হ্যান্ড অফ গড
   অঞ্জলি দে নন্দী, মম

মারাদোনা আছেন মারাদোনাতেই।
আঁখির কান্না-রোনাতেই...
অমৃতের সন্তানের মৃত্যু নেই।
তিনি আছেন চির অমরত্বতেই।
তাঁর জার্সী ফুটবল প্রেমীর আরশি।
হ্যান্ড অফ গড।
ফুটবলের লর্ড.....





               ছোঁয়া
         হামিদুল ইসলাম
            

পাপের প্রায়শ্চিত্ত বহন করে চলেছি
কতো যুগ
মাথার উপর সূর্য সাক্ষী
নৈঋতে ঘোর অকাল বোধন
ধীরে ধীরে পেরিয়ে যাই সবুজ মাঠ বন্দর ধানসিঁড়ি ।।

অসম্ভব সময় পেরিয়ে আসি
যুদ্ধ দিনরাত
সে যুদ্ধে জীবন জড়িয়ে পড়ে
বেছে নেয় বিভৎস আলো আঁধারি পথ
কাঞ্চনকন‍্যার পিঠ কুঁকড়ে যায় শত অত‍্যাচারের আঘাতে  ।।

পরের জন‍্যে টেনে আনি অশান্তি
পথকে চিনি রোজ
তুমি বন্ধু বিদায় নিলে পড়ে থাকে রোদ
ভগ্নদ্বারে এসে দাঁড়াই
নির্ঘুম রাত পেরিয়ে যায় অষ্টাদশীর বুকের উত্তাপে  ।।

তবু বৃথাগঞ্জ দশাননে
সূর্য ওঠে প্রতিদিন ভোরে
নৈমিত্তিকতার ছায়া ফেলে একফালি মেঘ
হারিয়ে যাই কোনো এক দূর দেশে
যেখানে মায়ার জগতের ছোঁয়া বিন্দুমাত্র নেই  ।।





জুম্মা মসজিদ
      বদরুদ্দোজা শেখু


পুরনো শহরটায়
কারফিউ লেগে আছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার
ইতস্ততঃ কানাঘুষো উত্তেজনা আর
আশঙ্কার জীবন্ত সমাধি যেন ক'দিন থেকেই
অন্তরীণ জন-জীবনের আর্তনাদ
ইট পাথর কংক্রীট আর দেয়ালের
দূরূহ আড়ালে , ইচ্ছা ছিল
ঈদের নামাজ পড়বো ঐতিহাসিক ওই
জুম্মা মসজিদে অন্ততঃ আত্মতুষ্টির
আনন্দে ,একটি বার দুর্লভ সুযোগ পাওয়ায়  ।
কিন্তু হলো না। পরিস্থিতি প্রতিকূল । অবশ্য
দিল্লীর অন্যতম দ্রস্টব্য বলেও কিছু গুরুত্ত্ব আছে ওখানে  যাওয়ার ,
ধর্মাধর্ম রাজনীতি কূটঘাত
ইত্যাদির ঊর্দ্ধে উঠে যদি যাওয়া যায় ।
বিষণ্ণ আমার মন অঘ্রানের
প্রতীক্ষিত পাকা ধান গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে কাটতে না-পারা
কৃষকের মতো অসহায়, উপেক্ষিত ।
সবুরে মেওয়া ফলার কোনো ঐশ্বরিক
ইঙ্গিতের  আশায় মৌন হ'য়ে দিনকাল গুণে যাওয়া ছাড়া
অন্য গতি নাই , তাই যে-কোনো জামাতে
যথারীতি ঈদ পার ক'রেই দিলাম ।

দু'টো মাস কেটে' গেছে কবে ।
কারফিউ উঠে গেছে , ( যদিও সদাই সম্ভাবনা নতুন দাঙ্গার ),
সুযোগ হয়নি জুম্মা মসজিদে যাওয়ার । শেষ দিনে কোনোক্রমে
হন্তদন্ত হ'য়ে সময়ের দাক্ষিণ্য পাওয়ার অনুমানে  অকস্মাৎ
সেখানে গিয়েই তার  একটি ফটক খোলা পেয়ে দ্রূত
অন্দরে গেলাম । মৌন সংক্ষিপ্ত নামাজে
শুকরিয়া জ্ঞাপন করার পর শ্বেতপাথরের
মুঘল কীর্তির বিশাল মহিমা ফিরে ফিরে
দেখতে দেখতে আবিষ্ট নয়নে তুষ্ট বাইরে এলাম । তবু
খচখচে আড়ষ্টতায়
মন ছেয়ে আছে শুধু শোকাকুল
কালো বস্ত্র -আবৃত গম্বুজ
প্রতিবাদী বিষণ্ণ গম্বুজ ।





ওদের দেশ
  আব্দুল রাহাজ

একটা দেশ খুব বেশি বড় না দেশটির বেশিরভাগ অংশ সবুজের সমাদৃত এক আলাদা জগত নিয়ে এক আলাদা পরিবেশ নিয়ে এক আলাদা জীব বৈচিত্র্য নিয়ে পরিপূর্ণ হয়েছে এই দেশ। দেশটির মধ্য দিয়ে চলে গেছে শখা নদী দেশটির বেশিরভাগ মানুষ প্রান্তিক দেশটির উত্তরভাগ এ ব্যাপক বনাঞ্চল লক্ষ্য করা যায় এই বনাঞ্চলের উপরই ওই দেশের অর্থনীতি ও শখা নদীর উপর ভর করে ব্যবসা-বাণিজ্য হয়। ওই দেশের একটি জনপদ ছিল  জনপদটি দেশের একেবারে শেষে সেখানে বসবাস করত ভরত নামে একটি ছেলে তার পরিবার ছিল না বাবা-মা সেই কোনকালে প্রাণ হারিয়েছে কোন এক দুর্ঘটনায় একা একা একটা বনের মধ্যে বসবাস করে তাদের দেশ নিয়ে সে খুব কৌতুহলী বনের জীব জন্তুর এর সঙ্গে তার ভালই বন্ধুত্ব হয়েছে ছোট থেকে ওদের দেশে ওর কাছে ছিল প্রাণ ছোটবেলায় ও কারোর কাছে শিক্ষা গ্রহণ করেনি‌ প্রকৃতির কাছ থেকেই শিক্ষা পেয়েছে প্রতি পদে পদে জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে । ও ওই বনের মধ্যে থেকে দেখতে পায় তাদের দেশের শোভা মনোরম দৃশ্য। শীতের দিনে ওই বন থেকে বেরিয়ে পড়ে আশেপাশের মানুষদের সাহায্য করে সব মিলিয়ে দেশের প্রান্তিক মানুষদের নিয়ে বেশ ভাবেন ভরত সেও বনের জীব জন্তুদের নিয়ে সেই দেশে খুব ভালো ভাবে বসবাস করে তাই ওর কাছে ওর দেশ এক মনের মধ্যে প্রাণ এক মনের মনিকোঠায় কল্পিত এক  স্বর্গরাজ্য যা আজীবন আঁকড়ে ধরে আছে ও থাকবে তাদের দেশের প্রকৃতির মায়ের কোলে।





দায়ভাগ
মহীতোষ গায়েন

যদি ভাবো দায়ভাগ,তাহলে নেই...
যদি ভাবো ব‍্যবহার করে নিয়ে দাঁড়ি
টানবে,তাহলেও নেই,যদি ভাবো এই
সময়ের তুমি নিয়ন্ত্রক,মেঘ জমে বাজ।

আকাশের নীল রঙ পাল্টে দিয়ে যদি
ভাবো কালোমেঘে ছেয়ে গেছে দিক,
তাহলে বৃষ্টিরাও বুঝে যাবে,হাওয়ারা
ছুটে এসে তুলে নেবে শিকড় বাকড়।

সময়ের গতি মেপেই অবশেষে নিরালা
নিঝুম ঝরে যাবে ফল,ফুল,পাতা,উপদ্রুত
শিরায় উপশিরায় বিদ্যুৎ চমকাবে,শেষে
নটরাজের নৃত্য শুরু হলে,থামানোই দায়।







বৃহস্পতিবার, ২৬ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 26/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 26/11/2020, বৃহস্পতিবার
               সময় :- রাত 7 টা. 40 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

এই ঠান্ডায় খেয়ে  মজা
          চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

গরমের  দিনে খেয়ে মজা  নেই,
যতটা  ঠান্ডার দিনে  আছে,
খেতে  বসে  বার বার
মনে  পড়ে  তোমাকেই,
তুমি  আসবে  আমাদের
পাহাড়ের  কাছে৷
পিঠেপুলি,  খেজুর  গুড়ের  পায়েস,
সমান  ভালো  লাগে,
আমার  প্রিয়তমা  কণিকা  এই  কথা,
বুঝে  যায়  সবার  আগে৷

আমরা  হরেক  রকম  খাবার  কে—না ভালোবাসি?
অফিস  থেকে  হাত  মুখ  ধুয়ে  আগে  খেতে  বসি৷
বয়স  হয়েছে  বলে  সুরা পান  করতে  চায়  না  যে  মন,
খুব  সাবধানে  থাকতে  হয়,
সময়টা  যে একেবারেই  অন্য  রকম৷





শীত পড়েছে তাই
অঞ্জলি দে নন্দী,মম

শীত পড়েছে, শীত পড়েছে, শীত পড়েছে ভাই।
ঠান্ডা জলে স্নান করি না তাই।
ভর দুপুরে রোদে বসে চুল শুকাই।
ভরসা কেবল সূর্যি মামাই।
আর একই সঙ্গে কমলা লেবুও খুব খাই।
এ তো মর্তের সুধাই।
আর মটরের খোসা ছাড়াই।
সন্ধ্যের সময় ঠাম্মার সাথে পিঠে বানাই।
তখন দাদু মোবাইল ফোনে শোনে সানাই।
আর দাদুর পায়ে তেল মালিশ করে বালক কানাই।
মারা গেছে দুজনেই, ওর মা বাবাই।
ওর বাবা ছিল দাদুর দূর সম্পর্কের জামাই।
এখন তাই কানাই-এর বাড়ী আমাদের বাসাই।
রাতের বেলায় লেপের তলায় মুখ লুকাই।
মায়ের গায়ে গা লাগিয়ে ঘুমাই।
মা তো যেন দেবী শ্রী উমাই।
এমন সুখ আর দুনিয়ায় নাই।
সবার সাথে গরম দেশে বেড়াতেও যাই।
তখন তো ঘাম ঝরাই।
ঠান্ডা জলে সাঁতার কাটাও চাই।
আহা বড় তৃপ্তি পাই।





আলু
মাথুর দাস

আলু নিয়ে আলুবাজি
কার কী যে কারসাজি,
বোঝে না কি পাবলিক !

অকারণে    দাম   বাড়ে
ক্রেতা  ত্রাহি ডাক ছাড়ে,
ঝাড়ে বাড়ে  ফড়ে ঠিক ।

চড় চড়  দামে  ওই
নড়ে চড়ে বসে কই,
যারা ঠিক  নড়বার ?

পঞ্চাশ   ছুঁই   ছুঁই
হিমঘরে আলু তুই,
নেই কিছু করবার ?
         *****




বিপ্লব গোস্বামী এর চারটি অনুকবিতা

১|
রাজনীতি

রাজনীতিএক ভীষণ ব‍্যাধি
লক্ষণ বুঝা শক্ত ।
নেতা হলে সবার দেহে জন্মে
লোভের রক্ত।

২|
ঈশান বাংলার কৃষাণ

ঈশান বাংলার কৃষাণ আমরা মাঠে ফলাই ধান
কৃষাণ বলেই ভাগ‍্যে জোটে শত অপমান।
সবার মুখে অন্ন দিতে আমরা ঝরাই ঘাম
ভদ্র লোকের সভ‍্য যুগে নেইতো মোদের দাম !

৩|
বিচিত্র সমাজ

পুরুষতান্ত্রিক সমাজ মাঝে বিচিত্র শাসন
রাস্তায় একা লক্ষ্মী পেলে করতে চায় ধর্ষণ !
বিয়ের লক্ষ্মী কালো হলে চায় মোটা পণ
গর্ভে যদি লক্ষ্মী আসে ভ্রুণে করে নিধন !

৪|
আধুনিক নারী

অর্ধ নগ্ন নেটে মগ্ন পর ভাষায় কথন
নাইট ক্লাবে মদ‍্য পাণ পুরুষের মতন।
আধুনিক যুগের আগুয়ান নারীর এইতো চলার কায়দা
সেই সুজুগে নর পিশাচ সব লোটছে তাদের ফায়দা।





ওগো প্রিয়তমা
          অনাদি মুখার্জি

কত দিনরাত ভেবেছি তোমায় ওগো প্রিয়তমা,
কবিতা তে লিখে রাখলাম মোর  হৃদয়ে সব কথা !
যদি পারো পড়ে নিও আমার লেখা ওগো চিরসখা,
ভাবেনি গো তুমি হবে মোর জীবনের প্রথম প্রেমিকা!
বর্ণিল সাজ পোষাক অলঙ্কার রূপের বাহার তোমার,
সরু তোমার কটি দেশ উন্নত নাক আর চুলের বাহার !
টানাটানা নয়ন তোমার রেশমের মতোন নরম ঠৌট,
এই ভেবে আমি হারিয়ে যায় অতল গভীর ভেতর!
বুকের ভেতর টা জ্বলে উঠে ক্ষণিকের আলো,
হয়তো কোনো একদিন প্রিয়া আমাকে বাসবে ভালো!
লাল চেরি শাড়ি পরে যখোন এসো আমার কাছে,
আমার ষোড়শ যৌবন ছটপট মনে শিহরণ জাগে !
তাই বারে বারে বলছি তোমায় ওগো প্রিয়তমা,
আমার বুকের মধ্যেই থাকো সারাজীবন মোর চিরসখা !




মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১। শিরোনাম- ফুটবলের যাদুকর

ফুটবলের
তুমি যাদুকর
তুমি. ফুটবলের রাজপুত্র
ফুটবল শিখেছিল  তোমার কাছে
একদম নতুন একটা নাচের ছন্দ
যে ছন্দে মেতেছিল একদিন সারা পৃথিবী।

দিয়েগো মারাদোনা ছিলে ফুটবল জগতের নবী
ফুটবলকে ভালোবেসে কাটিয়েছিলে সব ধন্দ
শতাব্দীর সেরা গোলে আছে
তোমার নিজস্ব সূত্র
ঈশ্বরের বর
গর্বের।

২। শিরোনাম-তোমাকে ভালোবেসেই

মারাদোনা
তুমি বলো
একদিন তোমাকে দেখেই
পৃথিবীর দূরতম দেশ আর্জেন্টিনাকে
আপামর বাঙালি প্রিয় ফুটবলকে ভালোবাসা
তোমার ছন্দেই ফুটবলে জাগে নতুন আশা।

ফুটবল তোমার পায়ে এনেছিল নতুন ভাষা
তোমার নামেই মেসিতে জাগে আশা
তোমার বিদায় নাড়ায় অস্তিত্বকে
সবুজ মাঠ রেখেই
বন্ধ হলো
আনাগোনা।




শীতের সকাল
    আব্দুল রাহাজ

কুয়াশাময় শীতের সকাল ফুটে ওঠে
এখন অনন্য রূপে।
সূর্যের উজ্জ্বল দীপ্ত রশ্মিতে বৈচিত্র্য ফুটে ওঠে মায়াবী শীতের সকাল‌।
কেউ ছোটে নিজের কাজে ঠান্ডায় হুহু করতে করতে
আবার কেউ উলের  পোশাক পড়ে যায় পড়তে
কেউ আবার ছুটির দিনে ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে চলে যায় বনভোজনের আয়োজনে।
ছোট‌ ছোট ছেলেমেয়েরা মজা করে আগুনের তাপ নিতে যায় তেপান্তরের মাঠে।
প্রকৃতি ফুটে ওঠে তার অপরূপ সৌন্দর্যের
একরূপে লাবণ্যে সবার সামনে মেলে ধরে
ও যে শীতের সকাল।






                আস্ফালন
           হামিদুল ইসলাম
              

জীবনের জন‍্যে জীবন গড়ি
ভালোবাসার জন‍্যে
স্বপ্নের তাজমহল
তুমি আজ কতো কাছে তবু কতোদূর
তোমার ভালোবাসায় প্রতিদিন ভূগোলের পাঠ নিই  ।।

ভূগোলের শরীর গলদঘর্ম
নুন জলে ভেজা
আমি প্রতিদিন সংগ্রামে মাথা ঠুকি
ভেঙে ফেলি একবিংশ শতাব্দীর দোড়গোড়া
রাঙা চোখে তাকায় পুঁজিবাদ  ।।

নিরন্তর কাস্তে চলে মাঠে
হাতুড়ি কারখানায়
বিপ্লবীরা দখল করে আরো একটি দেশ
আজ ধর্মঘট
শত্রু মিত্রের ময়দানে দেখা হবে আজ  ।।

আমরা অথৈ জলের মাছ
মনের গভীরে স্বপ্ন দেখি বাঁচার
রাম সীতা প্রতিদিন বনবাসে যায়
খোঁজ রাখে না জনতা
কেবল ধানসিঁড়ি ভেঙে পড়ে অনর্থক আস্ফালনে  ।।




দুই ফুলে দাঙ্গার  শহর 
   বদরুদ্দোজা শেখু


শহরের সমারোহ দেখতে দেখতে  ফুল এলো চোখে
ফুলের সৌন্দর্য দেখে অভিভূত হ'য়ে যেতে যেতে
ফুলের মতোই এলো শহরিণী রমণীর মুখ
চোখের সুখের সাথে যাতে বাড়ে বুকের অসুখ ।

দু'য়ের রহস্য আমি পাশাপাশি দাঁড় করালাম
সবুজের অন্তরাল ছেয়ে থাকা ফুলের অনল
নিসর্গের অভিধানে যৌবনের প্রতীকী সম্ভার
মানুষের বংশ-পিপাসার সাথী ষোড়শীরা সব
অন্তরঙ্গ কামনার ফুটে-ওঠা জৈবনিক ফুল
আমার ধূসর চোখে মশগুল ভালবাসার বিকম্প্র প্রবাহ ।

রাশি রাশি পথে-দেখা ফুল আর পথে-দেখা নারী
আমাকে নাড়ায় ভারী , হঠকারী দু'য়েরই প্রকোপ ,
একদল পবিত্র আবেশে মন ভ'রে দ্যায় আর
অন্য দল অশমিত আকাঙ্ক্ষার আগুন জ্বালায়
মনে, যেন এই মন উভয়ের এক অঘোষিত
যুদ্ধক্ষেত্র , পরস্পর প্রতিদ্বন্দ্বী নিসর্গ নিয়মে।

রক্তমাংসের ফুল-ই লাস্যময়ী উলঙ্গ রমণী
বড়ো বেশী জিতে যায় আপাততঃ বয়সের দোষে ,
বলি হয় ফুলেরা ভালবাসার বাঁধানো তোড়ায় ,
অবশেষে জৈবনিক যবনিকা নেমে এলে পরে
করুণায় কবরের ঝোপে হাসে বিজয়িনী ফুল ।
অকস্মাৎ রক্তাক্ত হৃদয় দেখি দৃশ্য পরস্পর
সুন্দরের অভিজ্ঞানে উভয়ের দাঙ্গার শহর ।






               বিভাগ ---- প্রবন্ধ
        জগদ্ধাত্রী পূজার ইতিকথা
         অধ্যাপক সৌম্য ঘোষ
     

          "জয় সর্বগত দুর্গে জগদ্ধাত্রী নমোহস্তুতে"।

জগদ্ধাত্রী শব্দের আভিধানিক অর্থ "জগত+ধাত্রী।
জগতের ( ত্রিভুবন) ধাত্রী ( ধারণকর্ত্রী) ।"
ব্যপ্ত অর্থে দুর্গা,কালী এবংঅন্যান্য শক্তিদেবীগণও
জগদ্ধাত্রী। তিনি জগতের পালিকা শক্তি । তিনি দেবীদুর্গার আরেকটি রূপ । তাই জগদ্ধাত্রীর প্রণাম মন্ত্র তাঁকে " দুর্গা" বলে স্তুতি করা হয় । উপনিষদের ইনি হলেন উমা হৈমবতী । বিভিন্ন তন্ত্র ও পুরান গ্রন্থে এর উল্লেখ আছে । জগদ্ধাত্রী আরাধনা বিশেষতঃ বঙ্গদেশে প্রচলিত । বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চন্দননগর , গুপ্তিপাড়া ও নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী উৎসব জগদ্বিখ্যাত।  কার্তিক মাসের শুক্লা নবমী তিথিতে দেবী জগদ্ধাত্রী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।  হিন্দু বাঙালির ধর্মীয় মানসে রাজসিক দেবী দুর্গা ও তামসিক দেবী কালীর পরেই স্থান সত্ত্বগুণের দেবী জগদ্ধাত্রী ।
                 স্বামী প্রমেয়ানন্দের মতে ,  " ধৃতিরূপিনী মহাশক্তি জগদ্ধাত্রী । সগুণ ব্রহ্মের সৃষ্টি , স্থিতি ও বিনাশ তিনগুণের যুগপৎ প্রকাশ যেমন কালীরূপের বৈশিষ্ট্য,  তাঁর ধরণী ও পোষনী গুণের যুগপৎ প্রকাশও জগদ্ধাত্রী রূপের বৈশিষ্ট্য । ...... ‌
"ধা"  ধাতুর অর্থ ধারণ করা। ভগবতী নিখিল বিশ্বকে বক্ষে ধারণ করে পরিপালন করেন বলে মুনিগণ কর্তৃক তিনি ত্রৈলোক্যজননী নামে অভিহিত । ........
সতত পরিবর্তনশীল জগত সেই মহা শক্তি দ্বারা বিবৃত .... ....
তিনি নিত্যা , শাশ্বতী ও অপরিবর্তনীয়া । দেবী জগদ্ধাত্রীই সেই ধৃতিরূপিনী মহাশক্তি ।"

                     দেবী জগদ্ধাত্রী সিংহবাহিনী, কিন্তু দশভূজা নন, চতুর্ভূজা। বিবিধ আভরণভূষিতা , অরুণকিরণবৎ  বর্ণযুক্তা এবং সর্পরূপ যজ্ঞোপবীতধারিণী । তাঁর বাম দিকে দুই হাতে থাকে শঙ্খ ও ধনু  এবং ডান দিকে দুই হাতে থাকেই চক্র ও পঞ্চবান। রক্তবর্ণের বস্ত্র তাঁর পরিধানে । তিনি সত্ত্বগুণের প্রতীক , তাই প্রথম সূর্যের মতো তাঁর গায়ের রং। অর্থাৎ কমলা। বাহন সিংহ করীন্দ্রাসুর অর্থাৎ হস্তীরূপী অসুরের পৃষ্ঠে দণ্ডায়মান। জগদ্ধাত্রী পূজা তান্ত্রিক পূজা। দুটি প্রথায় এই পূজা হয়ে থাকে। সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমী --------  এই তিনদিন জগদ্ধাত্রী পূজা হয়ে থাকে । কোথাও কোথাও প্রথম বা দ্বিতীয় পূজার পর কুমারী পূজার আয়োজন করা হয়। দুর্গাপূজার  মত  জগদ্ধাত্রী পূজাতেও বিসর্জনকৃত্য বিজয়াকৃত্য নামে পরিচিত। এমনকি পুষ্পাঞ্জলী ও প্রণাম মন্ত্রসহ পূজার অনেক মন্ত্র দুর্গাপূজার অনুরূপ।


বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/11/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/11/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 25/11/2020, বুধবার
               সময় :- রাত 8 টা. 20 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

প্রবন্ধ
আদিবাসী মানুষ ও সাহিত্য
      অগ্নিমিত্র

  বাংলা আদিবাসী ও উপজাতির মানুষেরা তাদের নিজস্ব ভাষাতেই সাহিত্য রচনা করেন। আবার অনেক সময়ে তাঁরা বাংলা ভাষাতেও গল্প বা কবিতা লেখেন । তাই মোটামুটি ভাবে বলা যায় যে তা বাংলা সাহিত্যের অন্তর্গত । যদিও সেই প্রান্তিক মানুষদের সাহিত্যের একটা আলাদা জগতও আছে। এবং আমরা সেই জগতে শামিল হবার তেমন চেষ্টা করি নি।
  বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর  ও পুরুলিয়ার আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষ মূলতঃ সাঁওতালি ভাষায় লেখেন। সেই ভাষার আলাদা একটা লিপি আছে, অলচিকি । কেউ কেউ হয়তো বাংলায় লেখেন। তাঁদের লেখায় সেই সব এলাকার জীবনযাত্রা, সমাজ ব্যবস্থা, রীতিনীতি উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে । আবার উত্তরবঙ্গের উপজাতীয় মানুষেরা বাংলাতেই লেখেন। কারণ তাঁদের আলাদা Script বা লিপি নেই।
  এই সব লেখা নিয়ে আমরা তেমন আলোচনা করি না। যেন আমরা তাদের বাংলা সাহিত্য বলে মনেই করি না। অথচ অপেক সাহিত্যিকরা এই অঞ্চলে ঘুরে বা থেকে এদের নিয়ে দারুণ সব লেখা লিখে গিয়েছেন । আরেকটু যদি এঁদের লেখা প্রচারিত হতো তবে আমরা বুঝতে  পারতাম, এই লেখাগুলিতে প্রকৃতি, মানুষ ও তাদের জীবন কীভাবে মিলেমিশে একাকার হয়ে গিয়েছে !
  আগামী দিনে এই চর্চা আরো বেশি করে হবে , আশা রাখি ।।




বিপ্লব গোস্বামী এর চারটি অনুকবিতা

১|
নাইবা হলে

বিপ্লব গোস্বামী

নাইবা হলে জীবন সঙ্গী
না হল সহবাস !
তবু কল্পনাতে তোমার আমার
নিত‍্য বসবাস।

২|
কেউ জানেনা

বিপ্লব গোস্বামী

নীল আকাশের চাঁদ আর
নীল সাগরের ঢেউ।
জানে শুধু মনের ব‍্যথা
আর জানেনা কেউ।

৩|
তোমায় ভালোবাসি

বিপ্লব গোস্বামী

তোমায় ভালোবাসার অপরাধে
হয় যদিগো ফাঁসি !
মরার আগে বলব তবু
তোমায় ভালোবাসি।

৪|
তুমি আজ আর

বিপ্লব গোস্বামী

তুমি আজ আর নেই আমার
মনের একলা ঘরে !
আছে শুধু হাজার স্মৃতি
অমর হয়ে পড়ে।




মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১।খনন

নিজেই
খুঁড়ি নিজেকে
হাতড়ে হাতড়ে আনি
আমার ভালো থাকার উপাদান
জগৎজোড়া ছড়িয়ে যে আনন্দের নিদান
আমার অন্দরেই রাখা দেখি তার বিধান।

মেকি কোলাহলে কোথাও খুঁজে পাইনা প্রাণ
এখন জেনেছি আনন্দ পঞ্ছভুতের দান
তার ভালোবাসাতেই বাড়ে মান
তাই তাকেই মানি
মাতিনা অনাবশ্যক
কিছুতেই।


২। শিরোনাম- এসো নারী এগিয়ে

এসো
নারী এগিয়ে
এবার নিজেকে ভালোবাসি
নিজের জন্য খরচ সময়
সমাজের তকমা উঠিয়ে দাঁড়াই আয়নায়
নিজেকে সাজাই নিভৃতে একেবারে নিজস্ব কায়দায়।।

নিজের অধিকার নিজেই করতে হবে আদায়
নষ্ট করবোনা জীবন বাঁধা বায়নায়
নারীর চাই নিজের পরিচয়
নারী নয় বানভাসি
নিজেকে গুছিয়ে​
বসো।





আমি আজও ভালোবাসি
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

ভোরের  সূর্য,রূপালী চাঁদ আজও  আমি ভালোবাসি,
নদী ও নারীকে সমান ভালো লাগে,
আর স্বর্গীয় আমার  মায়ের  হাসি ৷

প্রিয়তমা,পুত্র,কন্যাও আছে,সবার  সাথে  থাকি,
ভালোবাসা  দিয়ে  নিজের  মতো  করে
প্রতিদিন প্রেমের  আলপনা  আঁকি৷
এই  পৃথিবী  কত সুন্দর  মাঝে  মাঝে  তাই  দেখি৷





আমি হতে চাই মুক্ত বিহঈ
        অনাদি মুখার্জি

আমি হতে চাই এক মুক্ত বিহঈ,
উড়ে যাবো অনেক দূরে  দিক থেকে দিগন্ত !
ডানা মেলে খুঁশি আমেজ নিয়ে উড়বো আমি দ‍্যুলোকে,
মেঘদের সাথে মিশে যাবে আমার এই মন যে !
আমি আর চাই এই মানুষের দলে থাকে ,
তাই আকাশে তে উড়বো আমি ভেসে!
যেখানে নেই কোনো মায়া মমতা ও পৃথিল ভাষা ,
সমাজের নারীদের নেই কোন  স্বাধীনতা !
সমাজের মধ্যেই চলছে শুধু লিলাখেলা ,
মানুষে মানুষে লড়াই মনুষ্যত্ব আজ শূন্যের কোঠায় !
যেখানে নেই কোন বিশ্বাস নেই একতা ,
পাখিদের মধ্যেই আছে দেখেছি কত ভালোবাসা!
উপরে নেই কোন লাল নিল রঙ,
নেই কোন ভেদাভেদ নেই কোন ডং !
তাই আমি উড়ে যায় ঐ দিগন্তে,
থাকতে চাই আমি মুক্ত বিহঈ!





এসো নতুন স্বদেশ গড়ি..
     শুভ্রাংশু কুম্ভকার

জমানো ব‍্যথারা ভিড় করে করেছে শীর্ণ কলম শিসে,
একরাশ বোবা যন্ত্রণা সয়েও ম্লান মুখ তবু হাসে।
কালি শেষ তাই কলম ঘষেও পাইনা শব্দে ছবি,
প্রতিবাদ হীন নীরবতা সয়ে মূক হয়ে গেছে কবি।
কলমের কালি বাঁচার রসদ,পেটের জোগাড় ভাত,
স্তব্ধ জীবন, থমকে কলম,শরীরে ধরেছে বাত।
দোয়াতও নেই, রিফিল অমিল শব্দেরা উড়ে যায়,
চলে গেলে দিন প্রতিবাদ হীন ফিরে পাওয়া বড় দায়।

যতই নরম সভ‍্য হবে, অধিকারও তত খর্ব,
হারিয়ে তোমায়, অট্টহাস‍্যে জানাবে পেয়েছি স্বর্গ।
রুখে দেবো সব,ঘুরে দাঁড়াবো,কিন্তু শক্তি অভাবে ভুগি,
লোভ লালসার ভাইরাসে সব অনৈক্য রোগে রুগী।
পাঁচে দশে মিলি কোটি কোটি হব সময়ের পথ ধরে,
মিলিত প্রয়াসে প্রতিরোধে তুলি নতুন স্বদেশ গড়ে।





        বালির  বাঁধ
        পিনাকী  মুখার্জী
     
         সৃষ্টির বিস্ফোরণ মুহূর্ত থেকেই
            ওরা  প্রশ্ন  হয়ে জেগে !!
        কখনো  ধুমকেতু কখনো উল্কা
         হয়ে ,  ছুটে আসে তীরবেগে !!

           কখনো  যুক্তিরা  জোট বেঁধে ,
          ভাবনার আকাশ করে মেঘলা !!
              লক্ষ সূর্যের আলো , তবু
          অন্ধকার সরণীতেই সৃষ্টির পথচলা !!

              যত  গ্রহ  তারা  আকাশে ,
             সাগর  তটে  বালির  প্রাচীর !!
            ক্ষণিক আশার  ঝলক ,  উন্মত্ত
           একটা  ঢেউ পেরোলেই  আঁধার !!

                 যে  আঁধারে ডুবে আছে
             সৃষ্টি , সেখানে আলো কতখানি  !!
                     সদ্ না অসদ্ ,  সত্যি
          আলো , নাকি উল্টোদিকের হাতছানি !!




সকাল আমার বসে ভাবে...... বাড়ি চিনতে আসবে কবে..... জন্মদিনে মনরাজকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলী...... কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় স্মরণে........

               আবেগখেকো
                    দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়

ভিতর ঘরে পাগল নাচে
দ্রিমি দ্রিমি সুর বাজে
মহুয়ার মাতালপণায়
শব্দদের গায় আবেশ গড়ায়

ন্যাংটো কলম সুর তোলে
পাঞ্জাবির পকেট গলে
পড়ে আছে কবিতার ঝুটি
চলো সবে জীবন লুটি

তুমি থাকো মাটির ঘ্রাণে
মানুষী প্রেমে এবং প্রাণে
বুকের আগুন জ্বালিয়ে বসে
জীবন সিক্ত তোমার রসে

                   লহ প্রণাম.........



আমার বাংলা
      আব্দুল রাহাজ

হে আমার বাংলা
তুমি আমার জন্মভূমি
বাংলার মাটি
বাংলার জল বাংলার ফুল বাংলার বায়ু সবই যেন আজীবন চিরন্তন।
তোমার প্রকৃতি দেখে অন্য দেশান্তরের মানুষ পায় মাধুর্য চোখ জুড়ে যায় তোমার অপরূপ শোভা দেখে তুমি সেই আমার বাংলা।
তোমার মাটিতে জন্ম নিয়েছে বিশ্ব জয় করা ব্যক্তিবর্গ তুমি সেই আমার বাংলা।
বাংলার সবুজে ভরা দৃশ্য পৃথিবীর আর কোনো প্রান্ত নেই তোমায় পৃথিবী বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ বারে বারে মনে রাখে তাদের মনিকোঠায় ধরে রাখে আজীবন স্মৃতির পাতায় তুমি সেই আমার বাংলা।





                সত‍্যিই তাই
            হামিদুল ইসলাম
               

এখান থেকেই জীবন শুরু
কেটে যায় শৈশব
কৈশোর
যৌবন মানে কঠিন আবর্ত
এখন মানুষের জটিল আবর্তে বাস  ।।

কালাপাহাড় মস্ত পুরুষকার
তার বিরুদ্ধ শক্তি পৃথিবী বিরল
তবু তাকে মানতে হয়েছে
হার মানা হার
হিসেবে গরমিল এখন  ।।

মাঝ বয়সী যৌবন
দোর্দণ্ড সংগ্রামী
চিরকাল যুদ্ধ করে পরের বিরুদ্ধে
জঙগমে মিশেছে সাগর
তবু নির্মল প্রার্থনা বারবার  ।।

ইতিহাস বদলে গেছে
বদলে গেছে পৌরাণিকতার মহতী আবেগ
অযোধ‍্যা আছে ইতিহাসে
রামমের জন্ম সেখানেই
রাম সত‍্য, রাম নাম সত‍্য, সত‍্য রামের জন্মভূমি !!




  স্বরলিপি
          সৌম্য ঘোষ

ক্ষরিত স্বপ্নের ভেতর
তোমার অনুচ্চারিত শব্দের ঘ্রাণ পাই,
মোহ ধুয়ে-মুছে তোমাকে পেলাম
অনুভবে, অবিচ্ছিন্ন অনুরাগে।
মনে হয় তোমাকে ফিরে পাবো
কোন এক রাত-ভাঙ্গা তুমুল জ্যোৎস্নায়,
চাঁদের আলপনায়, দীঘির ঢেউয়ে

এক নির্গুণ বর্ণরঙ আলোদ্বীপে
আমার অগোছালো অক্ষরমালা
তোমার পায়ের কাছে এসে
আশ্চর্য স্বরলিপি হয়ে ওঠে  ।।







নারী
     নরেন্দ্র নাথ নস্কর

তুমি  এখনও অচেনা রয়ে গেলে।
এতদিন ধরে তোমাকে চিনি।
তবুও তোমার অন্তরের খুব কমই  জানি।

তোমার ভালবাসা, তোমার স্নেহ,
তোমার অনুভুতি, তোমার শাসন, তোমার বিচিত্র ভূমিকা এখনো প্রকৃতির মত রহস্যময়ী হয়ে আছে।

সংসার মঞ্চে তোমার এত রোল,  বুঝতে পারিনা কোন ভুমিকায় তোমার আসল পরিচয়।

তুমি না থেকেও আছ। আবার কখনও থেকেও অবগুনঠনে থাক। চেনা যায় না।

প্রকৃতির মত তোমার তোমার পরিচয়েরও বেশিরভাগ অজ্ঞাত।

যুগে যুগে কবি, নাট্যকার, লেখকরা তোমাকে নিয়ে লিখে যাক।
বিজ্ঞানী, সমাজ সংস্কারক ও অনান্যরা তোমার পরিচয় জানতে  সীমাহীন কাল ধরে গবেষণা করে যাক।

শেষে মনে হল, কি হবে বেশি জেনে?
না জেনেই তো বেশ চলছে, চলুক
তোমাকে প্রণাম।




কাটা হাত
        উমর ফারুক

হাতকাটা চিত্কার শুনে কে
কান্নার ভেজা চোখ বন্ধ
ক্লান্তির ঘ্রাণ নাকে ঠোঁট চেপে
কষ্টের শেষ দেখা সন্দেহ।
রাস্তার কিনারে পাথর চাপা
যা দেখা শ্রাদ্ধের খড়ি মাটি
অথৈ সাগর পারে ঘুম ধরে
হাতে পিঠে চড় খায় পরিপাটি ।
গাছে নাচ শর জমে যে জলে
গুটি পোকা বক খায় কিছুক্ষন!
থরে থরে গিট খুলে যায় যার
কেটে গিয়ে মূল হাত শত মন
এক যুগ ভিড়ে যায় হারিয়ে
কাটা দু হাত বাড়ালো হেমন্ত
আকাশের চাঁদ তুই নেমে আয়
এই হাতে রঙ ঢালে বসন্ত ।



We are looking
Anjali nandide,Mom

At lonely new moon night.
In deep darkness,
The stars are too bright.
The sky, endless.
I love it's endlessness.
We are looking to each other now,
From very far.
A star,
Now coming down towards me, very fast.
I wish at this moment,
"Hey almighty!
Gift me ever eternal enjoyment!
In it, i wish to live!"
Just in front of me, it vanishes, at last.
I cannot see it now.
I feel something is on my nighty.
Yes, on it's right-sleeve,
Here is a diamond, star shape.
It is on my dress's tape.
Just near of my right shoulder.
I take it in my palm, now.
I am it's holder.
How nice it is! How! How! How!
In untouchable darkness,
It is very beautiful, yes.
The darkness and I
We are looking it
With unknown sense.
I realize that it is gifted me by the sky.
I put it on my chest.
And say,
"Hey!
The diamond! Can you feel my heart beat?"
Then my sense,
It says, " It has no feeling,
So it can make you the richest."
I think that why it has no feeling?
Then my feeling says,
"It is nothing but a stone.
Though it is gifted as love relation,
Yet it has no feeling.''
Then the darkness says,
It is the  life's most important lesson,
That diamond has no own love, own, own, own."
Then my mind says,
"Why? It's really unknown.''
Then my brain says,
"Now you know it, know!
That love is not in materialistic wealth. No."