রবিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২১

উপকণ্ঠ সাপ্তাহিক পত্রিকা || 25 April 2021 || Upokontha -246 issue

 উপকণ্ঠ সাপ্তাহিক বিভাগ

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)    


প্রকাশ কাল:- 25/04/2021, রবিবার
               সময় :- রাত 07:30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

নিষ্ঠুর মহামারী
বিপ্লব গোস্বামী

প্রতি শতবর্ষ পরে
        তুমি কেন এসো ফিরে
                     হে নিষ্ঠুর মহামারী !!

কখনো বা প্লেগ হয়ে
        নয় তো কলেরা ভয়ে
              নয় স্প‍্যানিশ নাম ধরি !!

এসেছে বার বার
          করেছে নর সংহার
            মৃত‍্যু মিছিল প্রতি বারই !!

 কুড়িতে করোনা নামে
           প্রতি নগর,শহর,গ্ৰামে
             রূপ নিয়েছে অতিমারি !!

চারিদিকে হাহাকার
              নেই কোন প্রতিকার
                   মৃত‍্যু হয়েছে ভারী !!

কেবল আতঙ্ক-ত্রাস
          হায় ! নিয়তির পরিহাস
                 কেবল লাশের সারি !!

কারো বোন কারো ভ্রাতা
        কারো পিতা কারো মাতা
             কারো পুত্র নিছে কারি !!

শ্মশানেতে জ্বলে চিতা
              পুত্র শোকে কাঁদে পিতা
                  শোকার্ত প্রতি বাড়ি !!

জানি না শেষ পরিণতি
        কোথায় যে টানবে ইতি
            অপেক্ষায় আছি তারই !!



(প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষের স্মরণে)
মৃত্যুতে আমি
-শ্যামল কুমার সরকার

মৃত্যুর সাথে সেইদিন থেকে আজ
পর্যন্ত আছি আমি
কোলাকুলি দিয়ে; ধরেছি মৃত্যুসাজ--
আমি মৃত্যুকামী।

কত যে মৃত্যু চোখের সামনে করি
পার, শৈশবের সেই
মৃত্যুটা এলো কৈশোরে যখনি পড়ি;
'আমি' মারি আমাকেই।

মৃত্যু আমার সত্যধারায় চলে
যৌবনের মৃত্যুটা
হলেই, বৃদ্ধজন্ম আমাকে বলে,
'গেল আমার আমিটা!'



কবিতা
      শব্দহীন শঙ্খ
কলমে   ডঃ রমলা মুখার্জী

শব্দহীন আজ শঙ্খ-নিনাদ,
স্তব্ধ হয়ে গেল কবিতার ঝর্ণা।
সেই ঝর্ণা-ধারা অহরহ মনের জমাট কালো ধৌত করে বইয়ে দেয় অমৃত সুধা।
ঝুঁকে পড়া মেরুদণ্ড হয় সিধা,
মসৃণ হয় মরচে ধরা বিবেক।
জেগে ওঠে অতলান্ত চেতনা, শোষকের চোখে চোখ রেখে কথা বলার সাহস।
তোমার প্রতিবাদী কলমের শেষ গদ্যগ্রন্থ "ছেড়ে রেখেই ধরে রাখা";
সেটাই এ মুহূর্তে আঁকড়ে রেখে বলি,
তোমাকে ছেড়েও মনেতেই ধরে রাখবো অনুক্ষণ।
হে সত্যের ধ্বজাবাহী, সাম্যবাদী শঙ্খকবি তোমাকে শত প্রণাম।
বিজ্ঞাপনে মুখ ঢাকা এ অস্হির সময়ে আবার এসো ফিরে
কবিতার আকাশে ধ্রুবতারা হয়ে।
শঙ্খ বাজুক আবার.....
অনুরণিত হোক মানুষের হৃদয়,
মনুষ্যত্বের দ্বার হোক উন্মোচিত।


কবিতা -         
      রবিবাসরীয়
            পিনাকী   মুখার্জী
      
                 রবি  সংসার  এক  পরিবার ,
                   বিভাজন , হয়নি  প্রজনন  !!
               ছোট  সংসারে , প্রাণের  প্রদীপ
                    হাতে ,  আমরাই  ক'জন  !!

               শঙ্খধ্বনি  মৌন  আঁধারে , রাত্রি
                     শেষে  রবির  আলিঙ্গন  !!
                  শরৎ  মেঘে  একাকী  রবির ,
                   আজ  অনেক  আপনজন  !!

                      মন  ভেসে  যায় , সুরের
                  ডানায় ,  তোমার  জলসাঘরে !!
                    তোমার  সুর  অঞ্জলি  দেয় ,
                         তোমার  জল  নূপুরে  !!

                 ঐ   সুরেতেই  ধরেছে  কোকিল ,
                         মিষ্টি  মিলন  আলাপ  !!
                   শূন্য  দুপুর ,  আগুন  হাওয়ায়
                        স্বজন  হারানো  বিলাপ  !!



কবি শঙ্খ ঘোষ প্রয়ানে
তাপস কুমার বেরা 

নিভে  গেল সূর্য
আকাশে |
অদ্ভুত অন্ধকার
চরাচর |
এ তিমির ভেদী
শঙ্খ কি আর
বাজবে না ?
জীবন দীপ জ্বেলে
কে করবে তবে
সন্ধ্যারতি ?
এ ঘোর অমানিশা কেটে
শঙ্খ বাদ্য সহকারে
ভোরের আলো কি
আর ফুটবে না ?




বাবুমশাই
মিলন পুরকাইত

সবিনয় নিবেদন' তোমাকে,
যদিও, 'তুমি আর নেই সে তুমি'!
'বাবুমশাই', কোনো এক 'যমুনাবতীর তীরে',
এক 'মহা নিমগাছ' রেখেছিল তোমায় 'আড়ালে' ঘিরে!
'ঝরে পড়ার শব্দ জানে তুমি আমার নষ্ট প্রভু'!
অমর রবে তুমি হৃদমাঝারে, ভুলবো না তোমায় কভু।
তুমি বলেছিলে, '' চুপ করো, শব্দহীন হও ''
সেই তুমিই তোমার কথা রেখে নিঃশব্দে চলে গেলে!
তবু, তোমার তৈরি করা সেই শব্দ-ছন্দের 'খাল',
তোমায় বাঁচিয়ে রাখবেই, এই ত্রিতালে চিরকাল।

বুক পেতে বেশ শুয়ে আছো ঘাসের উপরে চক্রাবলে!
যে শহরে 'মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে'!
মিথ্যে কথার সেই শহরেই,
তোমার নতুন 'পুনর্বাসন' হোক আজ তবে!




জামাই
অঞ্জলি দে নন্দী, মম

জৈষ্ঠ মাসে।
মেয়ে-জামাই কাছে আসে।
জামাই ষষ্ঠীর পর্ব।
জামাই তো শ্বাশুড়ীর গর্ব। (বানান - আমার)
শ্বশুর কেনাকাটি।
শালা-শালী মজা করে।
আদর-যতন এক্কেবারে খাঁটি।
ঘোমটা টেনে শাশুড়ী রান্না করে
পিঁড়িতে বসে রান্নাঘরে।
সুবাসে ম ম ম করে সারা বাড়ী।
এরপরে শাঁখা-পলা পড়া নিজের দুকরে,
জামাইকে তা পরিবেশন করে।
পোলাও, মাছ, মাংস, ভাজাভুজি, তরকারী।
পাখার বাতাস দেয়।
বেরোয় না তাই ঘাম।
জামাইকে কাছের করে নেয়।
পাকা কলা, কাঁঠাল, লিচু, আম,
তরমুজ, কাঁকুর, জামরুল, জাম।
দয়ের বাটি, মিষ্টির থালা।
খাতির, আপ্যায়ন ঢালা।
খেয়ে উঠে জামাই বাবাজীবন
শ্বাশুড়ী মাকে করে নমস্কার।
আর দুহাতে তাকে দেয় উপহার।
প্রতি বছর জামাইষষ্ঠী হয়।
যুগে যুগে যুগে এভাবেই
তো সম্পর্কের ধারা বয়।
এ কথা যে ইতিহাসই কয়।
সংসার চলে অন্তরের শুদ্ধ ভাবেই।





পরিস্থিতি
শ্রীকান্ত মালাকার

তোমার জন্য এখন আমি অপরিচিত মুখ।
তোমার জন্য হারিয়ে যাচ্ছে বন্ধুত্বের সুখ।
তোমার জন্য ডিগ্রি সব আছে ফাইলবন্দি।
তোমার জন্যই হয়েছিল আলিনগরের সন্ধি।

তোমার জন্য মন ভেঙে সংসার গড়ে কেউ।
তোমার জন্য হাসছে সে লুকিয়ে বেদনার ঢেউ।
তোমার জন্য কোন গায়ক বর্তমানে মুদি।
তোমার জন্যই এক শ্রেণীর হচ্ছে টাকার গদী।

তোমার জন্য বনবাসে জনদরদী নেতা।
তোমার জন্য হঠাৎ লাভবান হন কাঁচামাল ক্রেতা।
তোমার জন্য দিশাহীন জীব করে আত্মহত্যা।
তোমার জন্যই নির্ভীক কলম হারায় তার সত্তা।

তোমার জন্য কোন অপদার্থ হয়ে ওঠে শ্রেষ্ঠ।
তোমার জন্য বলির ছাগল হয় অবুঝ কেষ্ট।
তোমার জন্য নরম হৃদয় হয়ে ওঠে কঠিন।
তোমার জন্যই মহাননেতা নিরুদ্দেশ হয়েছিলেন সেদিন।।





ঝাউবন
   বদরুদ্দোজা শেখু

বেড়াতে যাওয়ার ছিল বন্ধুর বাড়িতে
বন্ধুটি মহিলা ব'লে দ্বিধাও বিস্তর,
বস্তুতঃ এমন সুন্দরী বন্ধুর হাতছানি
নির্জন সৈকতে ঝাউবনের আলিম্পন যেন

ইতস্ততঃ দ্বিধান্বিত মনে বেরোলাম
পাহাড়ি রাস্তায়, পেরোলাম ব্যস্ত বাজারের
মোড়, সব্জি মন্ডির ফুটপাত ধ'রে
আমার লক্ষ্য শুধু বান্ধবীর দেখা পাওয়া,

আদৌ তার বাড়ি যাওয়া নয় ; হয়তো হঠাৎ
কোনো অলৌকিকতায় ভর ক'রে বুঝি
উদয় হবে সে এসে সামনে আমার ,
বলবে অম্লান হেসে, 'দেরী দেখে এসেই গেলাম' ।

বেঁচে যাই বেঁচে যাই তবে , এমন পাওয়াই আমি চাই, কাছে পাওয়া , বাড়ি যাওয়া নয়
পাহাড়ি সন্ধ্যার এই উতলা বাতাসে
আসুক সে আমার কাছে সম্মোহনে সদ্যঃ ঝাউবন ।।




কবিতা
    উত্তরণ
     শান্তি_দাস

জীবনের যত ঘাত প্রতিঘাত
   পেরিয়ে যাবার আশায়,
আসে মোদের অনেক আঘাত
    কেউ থাকে না নিরাশায়।
জীবনে পেরিয়ে যেতে হবে সাগর
   পাহাড় নদী মনে ভাবনা,
সময় বহমান স্রোতের গতিতে
   তবুও মনে জাগে সাধনা।
কামনা বাসনা জীবনের দোড়ে
    সুখকে করি আহরণ,
জীবন যাত্রায় হাবুডুবু খেতে হয়
   যদি না জানে কেউ সন্তরণ।
হতাশাকে চিরসাথী করে রাখলে
   সময় তো পেরিয়ে যাবে,
জীবনের সব আশা আকাঙ্খা
  পূর্ণ হবে না কোন কালে।
চাই মোদের আশা হোক পূর্ণ
   করতে চাই উত্তোরণ,
তাই তো জীবন পথে চলতে
সুখটুকু করতে হবে আহরণ।





দুপুর
রাহাত জামিল

শুনশান নীরবতা আচ্ছন্ন দুপুরের বিলাসিতা,
প্রমোদের অথৈ সাগরে ডুব দিয়ে আয়েস
খুঁজেছিলাম পাকা ডুবুরীর মত।
মালঞ্চ থেকে সবচেয়ে সুন্দর ফুলের
সুঘ্রাণে সাজিয়েছিলাম অপ্রতিরোধ্য দুপুর।
কিম্বা মালির পরিপাটি করা পুষ্প কানন থেকে
বেলী ফুলের অর্ঘ্য সাজিয়ে বরণ করেছিলাম সৌখিন
মধ্যাহ্ন।

বহতা নদে ভেসে যাওয়া শ্যাওলার মতো
পেরিয়েছে সে সব হুড়মুড়িয়ে।
দিনান্তে আঁধারে ফিঁকে হওয়া সূর্যের মতো
বিচ্ছিন্নের ঘোমটা দিয়েছে এখন সেও,
নিষেধের অলিখিত চুক্তিতে স্বাক্ষর করে দূরে সরিয়েছে দ্রৌপদী দুপুরের ঘনঘটা।
ভুলেছে হর্ষ মাখানো দুপুরের নিখাদ ভালোবাসা
আর বিভিন্ন রঙের অভিন্ন রামধনু।

হয়তো এখন সে আদুরে রাত খোঁজে,
কিম্বা মিশুকে বিড়ালের মত উষ্ণ বিছানা!


দিন যায় দিন আসে....
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

দিন যায় দিন আসে,সবার কথা মনে পড়ে,
এলো যে এমন দিন
ইচ্ছা অনিচ্ছায়
অনেকে বন্দী ঘরে৷
বেকুবের মতো কিছু লোক উদাসীন থেকে,
করোনা সংক্রমণে মরে৷

যাঁদের কর্ম করতে বাইরে বের হতেই হয়,
তাঁদের কথা আলাদা,
উদাসীন থেকে ,মাক্স না পড়ে,সামাজিক দুরত্ব রাখে না বজায়,
তাঁদের জন্য আরো জটিল হবে,
করোনাকে দেশে দেশে করা জয়৷

প্রতি শতাব্দীতে এমন ভাবেই বুঝি,
শুরু হয় মৃত্যু মিছিল?
আমরা বাঁচার পথ খুঁজি?
মানুষে মানুষে কি আর নেই আগের মতো মিল?

দশ —বিশ হাজার বছর  আগে,
যখন পৃথিবীতে লোকজন ছিল না বেশী!
তখন ও কি মানুষ ছিল
মিলেমিশে?
আত্মীয়স্বজন বেড়াতে গেলে হতো খুশী?
নৈতিকতা? সে তো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে,
নীতিহীন ভাবে ঝগরা,মারামারি,এই সব যেন বড় হয়ে আছে!
সব কিছু ছাপিয়ে সাহিত্য জগৎ?
এখনো মনটা নিয়ে যায় মানুষের আরো কাছে৷

ভালো থাকুন সবাই,মনে জেগে থাক পবিত্র ভালোবাসা,
লেখক | লেখিকাগণ পাশে আছেন,
মনে তাই জাগে অনেক স্বপ্ন আর আশা৷
——————————————



আশার ছলনা
মহীতোষ গায়েন

একটি আশা বাতাসে উড়ছে
একটি চরছে আকাশে,
একটি আশা রাজনীতি করে
একটি হচ্ছে ফ‍্যাকাশে।

একটি আশা ভোট ময়দানে
একটি শুধুই খাচ্ছে,
একটি আশা রাহাজানি করে
রিগিং করতে যাচ্ছে।

একটি আশা যাচ্ছে প্রচারে
একটি করোনা ভুগছে,
একটি আশা খিদের জ্বালায়
ফুটপাতে পড়ে ধুঁকছে।

একটি আশা প্রেম করে মরে
একটি সাজায় বাসর,
একটি আশা সব লুঠে নিয়ে
বসায় নাচের আসর।

একটি আশা স্বপ্ন দেখাচ্ছে
একটি সুবিধা তুলছে,
সমস্ত আশা উঠেছে সাঁকোতে
সাঁকোটা ভীষণ দুলছে।

একটি আশা এগিয়ে আসছে
সুখ শান্তির জন‍্য,
সব আশারা অপেক্ষায় থাকে
আমজনতা ধন‍্য।



      যদি
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

    যদি হোও সুজন
তেঁতুল পাতায় ন'জন।
   তোমরা ক'জন?
মেঘ বৃষ্টি রৌদ্র ছায়া
  মোট চারজন।
থাকবি আমার সাথে?
    ছায়াঘেরা মাঠে
         কিংবা
হারিয়ে যাওয়া স্রোতে
চড়চড়িয়ে রোদে
      নয়তো
ছাতা মাথায় বরষায়
প্রেম হারানোর ভয়ে
         আনন্দে
         নয়তো
      অশ্রু পাতে।।





বিভাগ-কবিতা
পয়লা বৈশাখ
শংকর হালদার

চৈতের অবসান ,বৈশাখ তার রোদের রং বদলে
ঘোষণা করে, গ্রীষ্ম এখনও তার দখলে ।

একে একে ঋতুগুলো নিজেদের দেখে ফিরে
আভিজাত্য আর অহমিকা রয়েছে ওদের ঘিরে ।

হে নূতন, চিরবরণীয় তোমাকে করি বরণ
ধূপ দীপ পুষ্প আদি আর নানা আভরণ।

ছিন্ন করো দুঃখ দৈন্য ক্লান্তি বিভেদ বেড়া
কে'বা দেখাবে পথ বলো তুমি যে  ছাড়া ।

সখা,সম্মুখে রয়েছ তুমি সময়ের প্রতি বাঁকে
স্বাগত জানায় কর জোড়ে আঠাশের পয়লা বৈশাখে ।




বাসন্তিকা
  অনিন্দ্য পাল

আকাশে ও কিসের রং?
উৎসব মুখর!
হোক্ গে! চল বসন্ত মেখে নিই খুল্লম-খুল্লা
বাজারে প্যাকেটজাত টিপছাপ আর বিছানা-বদল
তাতে কি?
দ্রৌপদীরও তো ছিল পাঁচ-স্বামী!
চল চামড়াটা ডুবিয়ে আনি রক্তহীন ডুবজলে
চল বাসন্তী-নাভিতে চুমু খেয়ে আকণ্ঠ শুষে নিই
কাল-পেয়ালার মধু,
তারপর না হয় ভেবে দেখবো সুন্দরী সায়ানাইড
তোমার ক্লিভেজের খাঁজে লুকিয়ে রাখা যাবে কি না  বিশ্বাসঘাতক রঙের জীবন্ত পুঁটুলি...





প্রেম-বসন্ত
   অশোক কুমার রায়

আড়ালেতে.নড়ে চড়ে ঐ ছুঁড়িটা কে ?
ওরে নদু কৈ-রে আমার চশমাটা দে !
চশমা দিয়ে দেখে
বলছে দাদু হেঁকে
ছুঁড়ির সাথে ছোঁড়াটা বসন্তো-না রে !






কবিতাঃ
"স্মৃতি জ্বালাময়ী"
জুয়েল রুহানী

নূতন দিনের সম্ভাসনে
এ কোন মায়ার আচ্ছ্বাদন?
দূর অজানায় চলার পথে-
পেলাম সুখের সিংহাসন!

সুখের সিংহাসনে বসে
আমি হবো রাজা,
সুখ দিয়েছো তাই তোমাদের
দিব অনেক সাজা!

কল্পনাতে ছিলো নাকো
নানান রঙ্গের আল্পনা,
তোমরা আমায় যা দিলে ভাই
হৃদয় রাজ্যে অল্প না!

কাম্য এমন সুখের স্মৃতি
নূতন দিনের অামন্ত্রনে,
মিশবো মায়ায় ছন্দে অতি-
তোমাদেরই নিমন্ত্রনে!





অনুগল্প
স্কুলের নৈশভোজের সেই দিন টা  
        আব্দুল রাহাজ

সালটা দু হাজার চোদ্দো
তখন আমরা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি স্কুলে ঘোষণা হয় প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে মাছ ভাত খাওয়ানো হবে সবার মনে আনন্দ উচ্ছলতা দেখা দিয়েছিল সেদিন। আমার পাশে বসে থাকা একজন বলেছিল আহা কত দিন পর মাছ ভাত খাব। আমাদের স্কুলের চারপাশের এলাকা ছিল প্রান্তিক মানুষের বসবাস সেই সব পরিবার থেকে আসা ছেলেমেয়েরা আমাদের স্কুলে পড়তো । যেদিন ঘোষণা হয় মাছ ভাত দেবে সেদিন স্কুলঘর ভরে গিয়েছিল খুব ভালো লাগছিল সেদিন সবার সাথে দেখা হয়েছিল । তারপর টিফিনের ঘন্টা পড়ার সাথে সাথে সবাই মাছ ভাত খেতে যে যার জায়গায় বসে পরলো বেস তৃপ্তিভরে মাছ ভাত খেলো। আমার পাশে বসে ছিল একটা সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র দেখলাম তার একটা বড় মাছ পড়েছে সে মাছটা  অর্ধেকটা খেয়ে আর অর্ধেকটা নিয়ে বাড়ি চলে গেছে সত্যি এই দৃশ্যটা কোনদিন ভোলার নয়।  তারপর দিন তার সাথে দেখা হয়নি বোধহয় অত্যন্ত প্রান্তিক পরিবারের‌ ছেলে । সেই নৈশভোজের কথা আজও মনে পড়ে যায় সত্যিই ওই দিন ছেলে মেয়ে গুলো একটু পেট ভরে খেতে পেয়ে ছিল সেদিন‌। ওই যে দৃশ্যটা আজও কোথাও যেন নিজেকে ভাবায় ওই নৈশভোজে মনে করিয়ে দেয় দুবেলা দুমুঠো খেতে পাওয়া ছেলে মেয়ের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেদিন। নৈশভোজের দিনটা আজও যেন বুকের মণিকোঠায় গেঁথে আছে যা থাকবে আজীবন।





প্রবন্ধ
শুধু উপদেশ নয়
ড. নরেন্দ্রনাথ নস্কর

নিজে যেমন সুস্থ হয়ে বাঁচবেন,
তেমনি নিজের আত্মীয় স্বজন, পরিবার, ও সর্বোপরি আপনার প্রতিবেশি বা শুভানুধ্যায়ীরা যাতে সুস্থ থাকেন সেটার জন্য কিছুটা দায়িত্ব আমাদের কম বেশি সবাইয়ের।
এখন নিশ্চয়ই বিভিন্ন মাধ্যমে যেমন টিভি, রেডিও, ওয়াটস্যাপ, ফেসবুক ইত্যাদিতে দেখতে ও শুনতে পাচ্ছেন যে মহমারী আবার দ্বিতীয় অধ্যায়ে নতুন রূপে ফিরে এসেছে সমগ্র পৃথিবীতে।
মাঝে কিছুটা বিরতি দিয়েছিল।
এই সুযোগে বেশির ভাগ মানুষও সাধারণ সতর্কতা নেওয়া, যেমন নাক মুখ ঢেকে মাস্ক পরা, যথা সম্ভব শারীরিক দুরত্ব  বজায় রাখা, ও ভাল  করে  সাবান জলে হাত ধুয়ে  নেওয়া ইত্যাদি, থেকেও অনেকখানি দুরে সরে গিয়েছিল। কেমন যেন সতর্কতাহীন ভয়হীন হয়ে বেশিরভাগ সাধারণ মানুষ বেপরোয়া মনোভাবে চলতে শুরু করেছিল।
বেশিরভাগ মানুষের ধারনা হয়েছিল এই রোগের প্রকোপ চলে গেছে, ও আর এই রোগ ফিরে আসবে না।
এই ভুল ধারনার সুযোগে ধীরে ধীরে এই রোগ ক্রমে বিস্তার হয়েছে। অনেকেই বুঝতে পারেনি বা চায়নি।
এই সুযোগে খুব সহজে করোনা রোগ বিনা প্রতিরোধে মহামারীর আকার ধারণ করেছে ও দেশে দেশে নতুন করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরী করেছে।
এই মহামারী প্রতিরোধে শুধু সরকারের  উপর দায়িত্ব  দিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া  উচিত নয়।
সাথে সাথে  আমাদেরও সবাইকে সরকার ও ডাক্তারবাবুদের উপদেশ মেনে চলতে হবে নিষ্ঠার সঙ্গে।
আগের নির্দেশ মত আবার বাইরে বেরোলে অবশ্যই নাক মুখ ঢেকে মাস্ক পরতে হবে ও যথা সম্ভব শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখতে হবে ও সঙ্গে পরিস্কার সাবান জলে হাত ভাল করে হাত ধুতে হবে বা অলকোহল স্যানিটাইজারে হাত ঘসে নিতে হবে।
আসুন নিজের ও অন্যের স্বাস্থ্য  নিরাপত্তা রক্ষার জন্য ও জীবন রক্ষার জন্য এই বিধিগুলো মেনে চলি ও মহমারী প্রতিরোধে দেশকে সাহায্য করি।





বিভাগ :  বাংলা প্রবন্ধ
দার্শনিক রবীন্দ্রনাথ
"""""""""""""""""""""""""""""""""
    সৌম্য ঘোষ
""""""""""""""""""""""""""""""""

সৌন্দর্যের ভেতর দিয়ে সত্যের ও প্রেমের সাধনাই রবীন্দ্রনাথের সমগ্র কাব্যসাহিত্যের ইতিহাস। এই দর্শন বেদান্তের সেই মূল মন্ত্র :   "একং সদ্বিপ্রা বহুদা বদন্তি"  এই তত্ত্বের মর্মবাণী। অর্থাৎ পৃথিবীর সব বস্তুই একই বস্তুর বিকাশমাত্র। রবীন্দ্রনাথ তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবন থেকে বেদ-উপনিষদের মূল তত্ত্বের পরিচয় লাভ করেছিলেন। কিন্তু মায়াবাদী দার্শনিক কিংবা সন্ন্যাসীর মতো সবই শেষ পরিণতিতে ঈশ্বরে বিলুপ্ত হবে বলে ঈশ্বরের বিশ্বসৃষ্টিকে ‘স্বপ্নজগৎ কিংবা মায়ার আবরণ’ বলে ভ্রম করেননি কবি। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাতে, শত উপলব্ধির প্রত্যক্ষ অনুভূতিতে জীবনসমুদ্ররূপ রূপনারাণের কূলে জেগে উঠে তিনি অনুভব করেছেন, এ জগৎ স্বপ্ন নয়, পরম বাস্তব। এই পরম বাস্তবের আয়নায় দেখেছেন নিজ রক্তের অক্ষরে আপনার বাস্তব রূপ। এই সুখ-দুঃখময় বিচিত্র শোভাসম্পদের আধার পৃথিবী ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কবির কাছে পরম রমনীয় বলে মনে হয়েছে তাই। পৃথিবীর রূপ, রস, গন্ধ, স্পর্শ নিবিড়ভাবে উপলব্ধি করেছেন কবি। তাকে ভালোবেসেছেন প্রেমমুগ্ধ অন্তরের সর্বানুভূতি দিয়ে।

বিশ্বের সেই অন্তর্নিহিত শক্তি, যাঁর থেকে এই রূপময় পৃথিবী এবং সমগ্র বিশ্বের সৃষ্টি, সেই অন্তর্নিহিত শক্তিই হলো সমস্ত সৃষ্টির মূল সত্য। রবীন্দ্রনাথের মধ্যে এই আধ্যাত্মিক চেতনার সাথে যুক্ত হয়েছিল আধুনিক ইউরোপের গতিবাদ। বিশ্বের কোনো কিছুই স্থির হয়ে নেই। সমস্তই বিপুল পরিবর্তন, পরিবর্ধনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলেছে অবিশ্রান্ত। এই যে অনির্বাণ ছুটে চলা, অনন্ত জীবনপ্রবাহ এটাই হলো বিশ্বসৃষ্টির মূল তত্ত্ব।

রবীন্দ্রনাথের  দার্শনিক অনুসন্ধান তাঁর রচনার একটি বিশেষ অংশজুড়ে। এই দার্শনিক আলোচনা তাঁর  প্রবন্ধাবলীর একটি মূল আলোচ্য বিষয়। তাঁর ধর্ম শীর্ষক প্রবন্ধসমূহ এবং শান্তিনিকেতন শীর্ষক প্রবন্ধগুলির প্রধান প্রেরণা দার্শনিক আলোচনা। এছাড়া বিক্ষিপ্ত আকারে সাহিত্য শীর্ষক প্রবন্ধে, পত্রালাপে এবং ছোট ছোট রচনায় দার্শনিক তত্ত্ব মূলস্থান দখল করে আছে। মানুষের ধর্ম শীর্ষক তাঁর ‘হিবার্ট বক্তৃতা’ একটি অমূল্য দার্শনিক রচনা। এই বক্তৃতামালায় তাঁর, সমগ্র দর্শনকে একত্রিত করে বলার চেষ্টা করা হয়েছে। তাঁর কাব্য রচনায় অনেকাংশ দার্শনিক তত্ত্বকণিকা বুকে ধারণ করে আছে। দার্শনিক তত্ত্বই তাদের আধার।

রবীন্দ্ররচনা বিচিত্র ও বিপুল। রবীন্দ্রনাথের ভাষার মাধুর্য কল্পনার অভিনবত্ব, ভাবের গভীরতা, রসের প্রাণদর্শিতা বিস্ময়কর। ভিক্টর হুগো বলেছেন, ‘প্রতিভা ঈশ্বরের আত্মস্বরূপের বহিঃপ্রকাশ।’ বেদে ব্রহ্মকেও আত্মদা বলা হয়েছে। এ অপ্রেমেয় প্রতিভার আবির্ভাব মানুষের ইতিহাসে এক চিরস্থায়ী সম্পদ। আমাদের প্রয়োজন ক্ষুব্ধ অর্থহীন তুচ্ছতাজর্জর জীবনে পরিবর্তন ধারা অব্যাহত রাখা; কিন্তু সকল ক্ষুদ্র প্রয়োজনকে অতিক্রম করে যে মহা জীবনের দিব্য মহিমা আমাদের নিকট উদঘাটিত, তাহাকে যেন আমরা সত্যভাবে শ্রদ্ধা করতে শিখি। সংসারের প্রাত্যহিক জীবনের কৃত্রিমতার কালরেখাগুলি ধীরে ধীরে কালের ‘গহনে’ অন্তর্হিত হয়; কিন্তু রবীন্দ্রনাথের মতো তেজোদীপ্ত মনস্বী, তপস্বী রসিকের একটা পূর্ণ অবয়ব মহাকালের পটে মৃত্যুঞ্জয় হয়ে আছে।
তাঁর কবিতা কখনও মর্তচেতনা, কখনও ব্যঙ্গ কৌতুক আবার কখনো প্রেম ও সৌন্দর্য চেতনার সঙ্গে বিশ্ব চেতনায় সমকাল সংলগ্ন হয়েছে। তিনি  মরমী কবিও। কারণ উপনিষদের ঋসিসুলভ প্রত্যয় তাঁর কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে। সুফিবাদের ধারা,  কবির  ও  রামপ্রসাদ সেনের আলিঙ্গণ তাঁকে ঋদ্ধ করেছে। তাঁর কবিতা গ্রাম বাংলার বাউল ফকিরদের দ্বারাও সমৃদ্ধ হয়েছে। বাউলদের মনের মানুষের মতোই তিনি জীবন দেবতা সৃষ্টি করেছেন।

রবীন্দ্রনাথের মধ্যে  আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক চেতনার সাথে যুক্ত হয়েছিল আধুনিক ইউরোপের গতিবাদ। বিশ্বের কোনো কিছুই স্থির হয়ে নেই। সমস্তই বিপুল পরিবর্তন, পরিবর্ধনের ভেতর দিয়ে ছুটে চলেছে অবিশ্রান্ত। এই যে অনির্বাণ ছুটে চলা, অনন্ত জীবনপ্রবাহ এটাই হলো বিশ্বসৃষ্টির মূল তত্ত্ব। বেদ উপনিষদের গতিবাদ সহস্র সহস্র বছর পূর্বে এই অমোঘ তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বসত্য সম্পর্কে সাধনার লব্ধ অভিজ্ঞতায়। উপনিষদের রচয়িতারা বারংবার তাই অমৃতের সন্তানদের নির্দেশ দিয়েছিলেন সামনে এগিয়ে চলার। বলেছিলেন---- এগিয়ে চলো, এগিয়ে চলো এবং এগিয়ে চলো অবিরাম। যতক্ষণ না তুমি পূর্ণের সাথে মিলিত হয়ে পূর্ণ হয়ে ওঠো হে অমৃতস্য পুত্র, ততোক্ষণ এগিয়ে চলাই তোমার ধর্ম।চরৈবেতি! চরৈবেতি! বিশ্বজগৎ এই পূর্ণতালাভের জন্যই ছুটে চলেছে আদিঅন্তহীন কাল ধরে। কারণ শক্তিমাত্রই গতিময়। বিশ্বের সব বস্তুই গতিময় তাই।   কিন্তু রবীন্দ্রনাথের কবি মন যেমন ইউরোপীয় তাত্ত্বিক গতিবাদের ব্যাখ্যায় তৃপ্ত হতে পারেনি, তেমনি বেদ-উপনিষদের সৃষ্টিতত্ত্বের অবিচলিত উপসংহারে পৌঁছেও অস্থির হয়েছে বারবার। কারণ অনন্ত গতিপ্রবাহে জন্ম থেকে নানান জন্মান্তরে যাত্রা করে অসীমের পানে ছুটতে ছুটতে পূর্ণতা লাভ করার জন্য লালায়িত হননি কবি। তিনি সসীম থেকে অসীমে এবং অসীম থেকে সসীমের খণ্ডতায় প্রত্যাবর্তন করতে চেয়েছেন বারবার। সে কারণেই রবীন্দ্রনাথ বলেছেন---

"আমার কাব্য সাধনার একটিমাত্র পালা। সে পালার নাম সীমার মধ্যে অসীমের মিলন সাধনের পালা।"

রবীন্দ্রনাথের কাব্য সাহিত্যের বৈশিষ্ট্য তাঁর ভাব-গভীরতা, গীতি ধর্মিতা, চিত্ররূপময়তা আধ্যাত্মচেতনা ঐতিহ্যপ্রীতি প্রকৃতি প্রেম, মানব প্রেম, ভাব-ভাষা ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র, বাস্তবচেতনা ও প্রগতি চেতনা।    রবীন্দ্রনাথের দর্শনে ঈশ্বর এক নিবিড় অনুভূতি।  রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বরের মূল নিহিত রয়েছে মানব সংসারের মধ্যেই। তিনি দেব বিগ্রহের পরিবর্তে মানুষ অর্থাৎ কর্মী-ঈশ্বরের পূজার কথা বলতেন।  উপনিষদের ধর্মীয় আরাধনার পথ বেয়ে মানুষের ধর্মে উপনীত হয়েছিলেন তাঁর সৃষ্টি কর্মের মাধ্যমে।

রবীন্দ্রদর্শনে আমরা দেখি  তিনি অনুভূতির পথের পক্ষপাতিত্ব করেছেন এবং তাঁর ক্ষেত্রে একে ঠিক অনুভূতির পথ বললে সঠিক হবে না। আমার মনে হয় তিনি যে পথ অবলম্বন করেছেন তাকে অনুভূতির অন্তর্গত একটি বিশেষ পথ বলে আমরা চিহ্নিত করতে পারি। 

  একদিকে তিনি যেমন আকুল হয়ে ওঠেন অনন্ত সুদূরের ব্যাকুল বাঁশরির আহ্বানে ------- "আমি চঞ্চল হে, আমি সুদূরের পিয়াসী" বলে, তেমনি পরক্ষণেই মৃত্তিকা পৃথিবীর আকর্ষণে তাঁর অন্তর কেঁদে আকুল হয় নিরন্তর। অসীমের আহ্বান ছেড়ে জননী জগতের সাথে নাড়ির টান অনুভব করে ছুটে যেতে চান ধরণীর সুধাস্নেহমাখা কোলে----- "আমারে ফিরায়ে লহ সেই সর্ব মাঝে/যেথা হতে অহরহ অঙ্কুরিছে, মুকুলিছে, মুঞ্জুরিছে প্রাণ শতেক সহস্র রূপে/। গুঞ্জরিছে গান শতলক্ষ সুরে/ উচ্ছ¡সি উঠিছে নৃত্য অসংখ্য সঙ্গীতে।"  পৃথিবীর প্রতিটি সৃষ্টির অস্তিত্বের ভেতরে নিজেকে বিকশিত দেখতে চান তিনি।  তিনি জন্মান্তরে অবিরাম যাত্রা করে ফিরেছেন। রূপ হতে রূপান্তর পরিগ্রহ করতে করতে লোক হতে লোকান্তরে বিচরণ করেছেন জীবনের নানা পর্যায়ের ভেতর দিয়ে ---- "আমার পৃথিবী তুমি বহু বরষের/তোমার মৃত্তিকা সনে/আমারে মিশায়ে লয়ে অনন্ত গগনে/অশ্রান্ত চরণে/করিয়াছ প্রদক্ষিণ সবিতৃমণ্ডল/অসংখ্য রজনী দিন যুগযুগান্তর ধরি।"  বিশ্বের সবকিছুর জন্য এই যে বিপুল ভালোবাসা, বিশ্ব প্রকৃতির সাথে এই নিবিড় একাত্মতা, তার সৌন্দর্যের স্নিগ্ধতায় কবির প্রাণে বিপুল জীবনের অনুসন্ধান জেগে ওঠা, এটা তো কেবল এক জন্মের সাধনায় সম্ভব নয়। জলস্থল, আকাশ বাতাস, লোক লোকান্তর, সর্বদেশকাল, সর্বসমাজে নিজেকে পরিব্যাপ্ত করার এই প্রবল আকাঙ্খা তার  কারণ অফুরান জীবনের পরশ দিয়ে বিধাতা তাঁকে গড়েছেন ------ "আমারে তুমি অশেষ করেছ এমনি লীলা তব/ফুরায়ে ফেলে আবার ভরেছ জীবন নব নব।"
রবীন্দ্রনাথের মতে, “নিছক সত্য সম্বন্ধে জ্ঞান বা নিছক শক্তির আবিষ্কার বাহিরের বস্তু, তারা সত্তার অন্তরের নাগাল পায় না।” নিছক মনন বৃত্তির সাহায্যে যে জানা তার চেয়ে ব্যক্তিগত সম্বন্ধ স্থাপনের দ্বারা হৃদয়বৃত্তির সাহায্যে যে পাওয়া ঘটে, তা আরো গভীর আরো সমৃদ্ধ অনুভূতি- এটিই রবীন্দ্র দর্শনের একটি মূল ভাবধারা। রবীন্দ্রনাথ এ কথাই দার্শনিক ও সাহিত্যিক আলোচনায় বোঝাতে চেষ্টা করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ দার্শনিক।  তারচেয়েও বড় কথা তিনি জীবনরসের কবি। অসীম-সসীমের মিলনকে কবি অনুভব করেছেন প্রেমে ভালোবাসায়, রূপে রসে, গন্ধস্পর্শে, বিষাদে বেদনায়, সুখ-দুঃখে। সেটা তিনি অনুভব করেছেন সর্বানুভূতির ভেতর দিয়ে। কিছুই তাঁর কাছে তুচ্ছ নয় তাই। পৃথিবীর তুচ্ছতম ধূলিকণাও কবির কাছে পরম উপভোগ্য হয়েছে। সবই অভিষিক্ত হয়েছে সৌন্দর্যের নব নব উৎসরসে। সংসারের কোনো বন্ধন কিংবা আসক্তি পরিত্যাগ করে বৈরাগ্যের সাধনায় তিনি তাই ব্রতী হতে চাননি। তাঁর অন্তরস্থিত কবিচিত্তের প্রেমমুগ্ধ হৃদয় জগতের আনন্দযজ্ঞে পূর্ণতার অভিস্নানে সিক্ত হতে উৎসুক থেকেছে অবিরাম। এ কথা রবীন্দ্রনাথ তাঁর বহু কবিতায় নানাভাবে বলতে চেয়েছেন যে পৃথিবীর সমস্ত বিষয় থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে জীবনের একাকীত্বের মধ্যে মানুষের মুক্তি নেই। বিশ্বেশ্বরকে এই বিশ্বের মধ্যেই অনুভব করতে হবে।।





বৃহস্পতিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২১

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা বাংলা শুভ নববর্ষ সংখ্যা- ১৪২৮| Upokontha Bengali happy new year issue-1428

  উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা

 

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 15/04/2021, শুক্রবার
               সময় :- রাত 11. 06 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


রাজা দেবরায়  এর দুটি অনুকবিতা
নববর্ষের হর্ষ!
✍✍✍ রাজা দেবরায়

নববর্ষে আনন্দ,
সঙ্গে ছোট্ট আবদার!
মায়ের হাতের রান্না,
একত্রিত পরিবার।



নববর্ষের আশা!
✍✍✍ রাজা দেবরায়

নতুন বছর,
বয়ে আনুক শান্তি।
দূর হয়ে যাক,
আছে যত ক্লান্তি!




‌অন্য যাতনা 

        অরুণ কুমার ঘড়াই 


নিদ্রাহীন ঘুম অবকাশ খোঁজে,

 হারানো আকাশ ।


জানালার ফাঁকে ফেলে আসা

 পৃথিবী 

একলা ঘরে অন্যরকম ,

জোনাকি বাতাস আনমনে মেঘ 

রহস্য তার কর্তব্য ভুলে যায়।


সে এক অসফল একাকিত্ব

পা থেকে মাথা পর্যন্ত মরাচাঁদ 

বেকারত্ব তুমি হেসো না আর !





আবার বৈশাখ
✍✍✍ অনিন্দ্য পাল

আবার একটা বৈশাখ এল, একবুক অচেনা রোদ্দুর 
আবার একটা বৈশাখ এল, একমুঠো কৃষ্ণচূড়া
আবার একটা বৈশাখ এল, একচুমুক ভালোবাসা
আবার একটা বৈশাখ এল, ক্যালেন্ডারে দখিন হাওয়া

আবার এল বাংলা বছর, তাপ-তপনের দহন
আগুন ভেজা মেঘলা-কাদা, আবার গ্রীষ্ম-সহন
রোদ আধুলি বৃষ্টি ফোঁটা, আম-কাঁঠালের আদর
এই গরমেই জন্মেছিলেন কাদম্বরীর দেওর

নীলের বাতি, চড়ক-পুজো চৈতী ঘামের দেশ
ফুটি-ফাটা মাঠের মাটি, ঘাসের পক্ক-কেশ
বর্ষা এখন পরের বাড়ি, মেঘের ডানা ছেঁড়া
বৈশাখী ঝড় ওই দাঁড়িয়ে, টপকে এল বেড়া
ডাকের ঘুড়ি ওড়ে না আর, আগুন ফানুস কই?
বোশেখ তবু গ্রীষ্ম-পুরুষ, প্রেম কবিতার বই,

যাক চলে যাক গতবছর, আসুক নতুন নবীন
সুস্থ সবল বাঁচুক সবাই, মা -বাপ-ভাই-বহিন।








Bengali New Year
© Anjali Denandee, Mom

Bengali New Year.
It comes in every year.
The Earth moves around the Sun.
So, all the years run run and run........
All seasons come.
All months come.
The Nature says, Welcome!
Times move forward to front.
Never be backward.
We turun over the calender pages.
The life is ever new.
And it says,
Very happy new year!
I like to see you.






নববর্ষের চাওয়া
✍✍✍ বিপ্লব গোস্বামী

নতুন বছর আসুক নিয়ে
নতুন আনন্দ উল্লাস,
নিপাত যাক করোনা-ত্রাস
মিটুক ভ‍্যাকসিন তল্লাশ।

নতুন বছর আসুক নিয়ে
এক নতুন সুসংবাদ,
কোভ‍্যাকসিনে হয় যেন ভাই
কালকরোনা বরবাদ।

নতুন বছর আসুক নিয়ে
নতুন আশার আলো,
মিটে যাক আতঙ্ক-ত্রাস
মুছুক আঁধার কালো।

নতুন বছর আসুক নিয়ে
নতুন এক প্রত‍্যয়,
মনের সকল সুপ্ত আশা
সব সত‍্যি যেন হয়।






মন ছুঁয়ে.....
✍✍✍ গোপাল বিশ্বাস

হাত দিয়ে ছোঁব না তোমাকে
মন দিয়ে ছোঁব
একে একে যোগ করে
তোমাকে আমি করে নেব  l

ফুল দিয়ে ছোঁব না তোমাকে
প্রেম দিয়ে ছোঁব
ঘরের মানুষ বের হয়ে গেলে
রাত জেগে রব  l

হাত দিয়ে ছোঁব না তোমাকে
হৃদয় দিয়ে ছোঁব
তোমার ঘরের বদ্ধ দরজা টা
এবার খুলে দেব  l

সুখ দিয়ে ছোঁব না তোমাকে
দুঃখ দিয়ে ছোঁব
সবিতা কখনোই ডুবে যায় না
আমরাই তো ডুব দিয়ে যাব  l

হাত দিয়ে ছোঁব না তোমাকে
প্রেম দিয়ে ছোঁব
হৃদয়ের গভীর ডাক এলে
তোমাকে আমি করে নেব  l







নবরূপে_বর্ষবরণ
     ✍✍✍ শান্তি_দাস

ভেদাভেদ ভুলে শুভ নববর্ষে খুশীর জোয়ারে ভেসে,
বছর আসে বছর ঘুরে নববর্ষের আনন্দ থাকুক হৃদয় জুড়ে।
নবরূপে নতুনকে বরণ করে এসো সবাই পুরাতনকে মুছে ফেলে।
নতুন বছর এসেছে ভালো কাটবে তাই মনে আনন্দ খেলে।

গত বছর বিভীষিকাময় সারা বিশ্বে জুড়ে,
কত শত শত মানুষ লড়াইয়ে হেরেছে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে।
পুরাতন বিদায় নতুনকে বরণ কত ব্যথা বেদনা ছিল ঘিরে,
এসেছে  নতুন বছরকরেছি বরণ নতুন রূপে তবুও মনে আসে ফিরে।

সৃষ্টির সৃষ্টি ভিন্ন ভিন্ন রূপ তাতে তবুও নেই কোন বিরাম,
নতুন বর্ষ এসেছে আনন্দ উৎসবে তাতে না রেখে অভিমান।
ভালো মন্দ সব নিয়ে তো মোদের জীবন গড়া,
তাই বলে কি আমাদের সবসময় মন্দকে মনে করা !

গত বছরের এই আতঙ্কের অন্ধকার দূর করে দাও আলো,
পৃথিবীকে সুস্থ স্বাভাবিক ছন্দে সাবলীল রূপে দূর করো মনের কালো।
মনে ভয়ভীতি তবুও নতুনের বরণ করতে কেউ নয় পিছু,
আনন্দ উৎসবে বর্ষররণ অনুষ্ঠান নেই কিছুতেই কম কিছু।

নতুন রূপে এসেছে ব্ছর সবার জীবন হয়ে উঠুক আলোকিত,
নতুনের আহবান আনন্দ উৎসবে সবার মন পুলকিত।
সবার শুধু একটাই আক্ষেপ নতুন স্বাচ্ছন্দ্য আসুক ভোরের জাগরণে,
নতুন বছর যেন সবার আনন্দ কাটে নবরূপে করে এই বর্ষবরণে।








কেউতো এমনভাবে ছাপ রেখে যায়নি
✍✍✍ আমিরুল ইসলাম

আমিও প্রেমে পড়েছিলাম,
আমারও বুকের বামপাশে চিনচিনে
ব্যাথার হঠাৎ টের পেয়েছিলাম।

এর আগেও তো হাত ছুঁয়েছি প্রেমের।
এর আগেও তো প্রেমে পড়েছি -
কুয়াশার ফাঁকে ফাঁকে জোনাকির, শিশির বিন্দুর,
হিমালয়, কাঞ্চনজঙ্ঘা,সিন্ধুর।
এমনভাবে কেউতো কাছে ডাকেনি,
কেউতো এমনভাবে আকড়ে ধরেনি।

এচোখ বর্বাদি দেখতে চাই-
তুমি-বিনা গণজোয়ার পৃথিবীর।
তুমি বিহীন হৃদয় আগুনে পোড়া ছাই।

এর আগেও তো স্বপ্ন দেখেছি,
অগনিত মিথ্যে স্বপ্ন বুকেই দাফন করেছি।
কিছু স্বপ্ন আবার জমে উঠে, মাথা তুলে দাড়ায়-
বুকেই কাঠি মারি..., তাদেরও ভবিষ্যৎ ছাই।
এমনভাবে কেউতো স্বপ্ন দেখায়নি।
কেউতো এমনভাবে ছাপ রেখে যায়নি।
**********সমাপ্ত**********





বিবর্ণ ক্যানভাস
✍✍✍ ডাঃ তারক মজুমদার

সাদা কালোয় দ্বন্ধে বিভোর
উপোশী যত মন
স্বপ্ন যতই খান খান
অটুট থাকবেই  পণ।

জীবন নদীর বাঁকে আজ
কত কী যে ঘটে
স্বচ্ছ পোশাক  কালিমা লিপ্ত
অনেকেই শুধু চটে।

মন যদি হয় আনমনা
বিবর্ণ  ক্যানভাস
অশ্রুসিক্ত নয়নে জোটে
শুধুই উপহাস।






ওদের গ্রামে বাংলা নববর্ষের মেলা
✍✍✍  আব্দুল রাহাজ

চৈত্র মাসের বিদায় এসেছে নতুন সকাল এসেছে একটি নতুন বছর।
পুরানো সব দুঃখ কষ্ট ভুলে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে 
শুরু করেছে বাঙালি এক নতুন জীবন।
পলাশপুরের মাঠে প্রতি বছরের মতো বাংলা নববর্ষের সেই মেলা হয়ে আসছে জমজমাট ভাবে
কিন্তু করোনার আবহে ভাটা পড়েছে এবারের মেলা। আট থেকে আশি সবাই আসে মেলায়
গাই গান করে আনন্দ শুরু হয় নতুন জীবন নতুন বর্ষের মধ্য দিয়ে
মেলাটি বাঙালির কাছে এক নতুন চলার পথ শেখায়। নতুনত্বের এই মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি শুরু করে এক অনন্য অধ্যায় বিভিন্ন অনুষ্ঠান কার্যকলাপের মধ্যে দিয়ে সত্যিই একটি বছর পার বাংলা নববর্ষের একটি সালকে পেরিয়ে বাঙালি আজ পেয়েছে  নতুন বর্ষ নতুন দিন। সব হারিয়ে কোথাও কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল সবাই কিন্তু আবারও নতুনত্বের এক আলোর রশ্মি নিয়ে সামনে উপস্থিত হল আমাদের এই বাংলা নববর্ষ। সুজনদের গ্রামের এই মেলা ওখানকার প্রান্তিক মানুষদের এক আলাদা করে বাঁচতে শেখায় সবকিছু ভুলে। একে একে পুরানো দ্বন্দ্ব ভুলে মিলে যায় এক মহানন্দে এইভাবে সবাই মিলে মেলার মধ্যে দিয়ে নতুন দিন তথা বছরের সূচনা হয় ওদের গ্রামে।








*বৈশাখীর নববর্ষে ঐতিহ্যের বাঙালিয়ানা।*
      ✍✍✍রাজীব কুমার নন্দী

"নতুন বছর নতুন করে তোমায় বরণ করি,
সুখের মাঝে ওঠে যেন সবার জীবন ভরি।"

বাঙালির নতুন বছর মানে নতুন ভাবে পথ চলার আবাহনী।বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন এর মাঝে নববর্ষ বাঙালির হৃদয়ে এক দারুন জায়গা করে নিয়েছে।
বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বছরের প্রথম দিনটি শুরু হয় পয়লা বৈশাখ দিয়ে। গোটা বিশ্ব জুড়ে বাঙালিরা নতুন বছরের এই প্রথম দিনটি বাঙালি সংস্কৃতি ও আচার আচরণের সঙ্গে পালন করেন। এই বছর ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুসারে ১৪ এপ্রিল পালিত হবে পয়লা বৈশাখ।
গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুসারে, বাংলা নববর্ষ সাধারণত ১৪ বা ১৫ এপ্রিল পড়ে। বাংলা সৌর ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস বৈশাখের প্রথম দিনটিকে নববর্ষ, পহেলা বৈশাখ বা বৈশাখি নামে ডাকা হয় দেশের বিভিন্ন জায়গায়। এই বছর ১৪২৮-এ পা দেব আমরা। ১৫ এপ্রিল,বৃহস্পতিবার পড়েছে ১ লা বৈশাখ। সুতরাং চৈত্র সংক্রান্তি পালিত হবে তার আগের দিন অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল।

পয়লা বৈশাখ থেকে বাঙালি ব্যবসায়ীরা নতুন আর্থিক বছরের সূচনা করেন। নতুন খাতায় ব্যবসার হিসেব রাখা শুরু হয় এদিন থেকে। দোকানে দোকানে পয়লা বৈশাখে তাই লক্ষ্মী-গণেশের পুজো করে ও খাওয়া দাওয়ার মাধ্যমে হালখাতা পালন করা হয়। নতুন বছরে পরস্পকে শুভেচ্ছা জানানো, নতুন পোশাক পরা, খাওয়া দাওয়া, আড্ডা ও মিষ্টিমুখ করে নতুন বছরের প্রথম দিনটি পালন করেন বাঙালিরা। পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরার অনেক জায়গায় পয়লা বৈশাখ উপলক্ষ্যে মেলা বসে।

ইতিহাস অনুসারে সপ্তম শতকের বাংলার রাজা শশাংক বাংলা ক্যালেন্ডারের সূচনা করেন। পরবর্তীকালে মোঘল সম্রাট আকবর কর আদায়ের সুবিধের জন্য সৌরবর্ষ অনুসারে তারিখ-ই-ইলাহির প্রণয়ন করেন। শকাব্দে বাংলা ক্যালেন্ডারের প্রথম মাস ছিল চৈত্র। পরে তা বদলে বৈশাখ থেকে বছর শুরুর প্রথা শুরু হয়।
বাঙালিদের সবচেয়ে বড় উত্‍সব দুর্গাপুজো হলেও পয়লা বৈশাখের নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে আলপনা দিয়ে, পুজো করে এই দিনটি পালিত হয়। শহরেও পয়লা বৈশাখে সেজে ওঠে বড় বড় শপিংমলগুলো। বাংলা গান, বাংলা সাহিত্য, বাঙালির পোশাক, বাঙালির রান্নার মাধ্যমে পয়লা বৈশাখের হাত ধরে নিজস্ব সংস্কৃতির কাছে অন্তত এই এক দিনের জন্য হলেও ফিরে যায় বাঙালি সম্প্রদায়।
উত্তর ও মধ্য ভারতে নতুন বছর বৈশাখী, আসামে রঙ্গালি বিহু, তামিলনাড়ুতে তামিল পুঠান্ডু, কেরালায় বিশু, ওড়িশায় বিশুব সংক্রান্তি এবং পশ্চিমবাংলায় পয়লা বৈশাখ নামে পরিচিত নববর্ষ উৎসব।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসন্ন ,এই করোনা মহামারীর পরবর্তী সময়ে আগেরবারের দুঃখ ভুলতে চাইছে আপামর বাঙালি।তবু সতর্ক ভাবে।
তাই কবির কথায় বলা যায়।
"নতুন দিনে নতুন ভাবে দাও সবারে শিক্ষা।
ভালোবাসার মন্ত্রে যেন সব্বাই পায় দীক্ষা।"

💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫💫


বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক " শ্রী অরুণ কুমার ঘড়াই" সম্পাদিত প্রথম সূচনা সংখ্যা " শব্দ পাখি "

পড়ুন নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে 


শব্দ পাখি || দ্বি-মাসিক ওয়েব ম্যাগাজিন || বৈশাখী সংখ্যা-১৪২৮ প্রথম সংখ্যা ||


🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈🌈


#উপকণ্ঠ 

#উপকণ্ঠ_সাহিত্য_পত্রিকা

#বাংলা_প্রাত্যহিক_ওয়েব_ম্যাগাজিন