রবিবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/02/2021

  

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/02/2021


**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 07/02/2021, রবিবার
               সময় :- রাত 06. 45 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


গোলাপের অনুভূতি
         গল্প
কলমে.......... অনাদি মুখার্জি

লাল গোলাপ হলো নাকি সৌন্দর্য ও প্রেমের প্রতিক ! বহু  গল্পের মধ্যেই নাকি বার বার ঘুরে ফিরে আসে সেই রক্ত গোলাপে কথা !  সময়ের সাথে সাথে প্রেমের ধরন বদলে গেলেও কিন্তু প্রেম নিবেদনের ভাষা হিসাবে লাল গোলাপের আবেদন চিরন্তন ! তাই তো আজ শুভ সেই লাল গোলাপ কিনে তার প্রিয় সাথি রিয়া হাতে দিয়ে তার মনের কথা বলবে ! রিয়ার সাথে তার অনেক দিনের সম্পর্ক ,সেই সম্পর্ক আসতে আসতে কত গভীর চলে গেছে তবুও তারা দুই জনে মুখে কিছু বলেনি ! লাল গোলাপ যদি ভালোবাসা প্রতিক হয় তবে এই লাল গোলাপ দিয়ে রিয়ার মনের কথা জানতে হবে তার সাথে শুভ ও তার ভালোবাসার কথা জানাবে ! প্রেম হলো এমন একটা জিনিস যা চোখের ভাষায় মনের অনুভূতি গুলো বুঝে নিতে হয় এই সব অনুভূতি গুলো মুখে বলা যায় না !  সত্যিই তাদের ভালোবাসা ছিল এক অন্য ধরনের কিন্তু কি ভাবে সেই ভালোবাসা তাদের কে জড়িয়ে ফেললো এক অন‍্য অনুভূতি ছোঁয়ায় ! আজ খুব মনে পড়ে সেই দিনের কথা !
শুভ তখন কলেজের পড়ে ,একদিন কলেজের লাইব্রেরি তে বই আনতে গিয়েছিল শুভ ,সেই খানে রিয়ার সাথে তার দেখা ! প্রথমে রিয়ার বলে উঠলো আপনি কি এই কলেজের নতুন ? রিয়ার মুখে এই কথা শুনে শুভ বললো কি যে বলেন আমি নতুন কেন ? আপনি মনে হয় নতুন ! রিয়া বলে উঠলো না আমি নতুন নয় কিন্তু আপনাকে তো আগে দেখেনি ! শুভ বললো দেখবেন কি করে চোখে তো চশমা লাগিয়ে থাকলে ! রিয়া তখন তার চোখের চশমা খুলে বললো কিন্তু আমি আপনাকে চিনি আপনি তো সোমার দাদা তাই না ! শুভ অবাক হয়ে বললো আপনি সোমার বনধু ! হুম রিয়া বলে তার হাতে একটা বই দিয়ে বললো এই বইটা জন‍্যই আপনি লাইব্রেরী তে এসেছেন তাই না ! কি আশ্চর্য এই বইটা জন্য আমার আসা কি করে জানলেন শুভ জানতে চাইলো তখন ,রিয়া হেসে বললো আমি সব কিছুই বুঝতে পারি বলে রিয়া চলে গেলো ! তারপর থেকে তারা কলেজের দেখা হলে কথা হতো ,টিফিনের ফাঁকে একসাথে ফুচকা খেতো বা কখনো মাঠে বসে গল্প করে সময় কাটাতো ! একসময় শুভর কলেজের শিক্ষা শেষ করে সেই একটা ভালো কোম্পানি তে চাকরি পেলো ! সেই খানেও রিয়া কে দেখতে পেয়ে বলে আরে তুমি রিয়া ! রিয়া বলে হুম এই কোম্পানি তো আমার বাবার ,তাই আমি আছি বুঝেছো ! একদিন শুভর মায়ের অবস্থা খুবই খারাপ হলো ,শুভর তার মাকে নিয়ে ডাক্তারের কাজে গেল তখন ডাক্তার বললো তোমার মায়ের হার্টের অবস্থা ভালো নেই এখুনি অপারেশন দরকার ! এই অপারেশন করতে  প্রায় লাখ টাকা লাগবে ! সেই সময় রিয়া তার কাছেই ছিল সব শুনে রিয়া বললো বেশি চিন্তা করো না আমি আছি যা টাকা লাগবে আমি দেব ! শুভর মায়ের অপারেশন হবার পরেও রিয়া সব সময় তার মায়ের দেখাশোনা করতে লাগলো ! শুভর মা ভালো হয়ে উঠলো এই সব দেখে একদিন শুভ রিয়াকে বললো সত্যিই তুমি যা করেছো তা কল্পনা করা যায় না ,তোমার টাকা টা কি ভাবে শোধ করবো তা ভাবছি ! রিয়া তখন তার মুখে উপর হাত টা চেপে ধরে বললো এই সব থাক না ! আমার খুব ভালো লেগেছে তোমাকে তাই তোমার কষ্ট দেখে আমি করলাম সব ! তখন শুভ রিয়ার হাত টা টেনে নিজের হাতের ওপর রেখে বললো তোমার কাছ থেকে টাকা নেওয়া টা আমার ভুল ছিল না কারন আমি ও তোমাকে খুবই ভালোবাসি ! তাই দেখো বিধাতা মানুষ কে কিছু সমস্যায় ফেলে দেয় আর যে মানুষ টা তার পাশে থেকে সব সমস‍্যা সমাধান করে দেয় আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় আমি জানি তুমি ও আমাকে সেই রকম ভাবে ভালোবাসো কিন্তু আমরা কেউ কাউকে বুঝতে দিইনি ! আমার জীবনের তোমার ভালোবাসা কতটা তা আজ বুঝলাম ভাবেনি কোনোদিন তোমার কাছে এত ভালোবাসা পাবো ! আজ তোমাকে একটা কথা বলতে চাই যা কোনোদিন তোমাকে বলতে পারেনি ! যেদিন তোমাকে আমি প্রথম দেখেছি সেই দিন মনের মধ্যেই একটা অনুভূতি পেয়েছি আজ তোমাকে বলে দিতে চাই ! রিয়ার তখন শুভর হাত খানি ছেড়ে বললো তোমার মুখ থেকে এই কথা গুলো শুনে আমার মন খুব আনন্দ হচছে কিন্তু এই ভাবে শুনতে চাই না ! আমার ইচছে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ এনে দিয়ে আমাকে বলো শুভ বলে রিয়া চলে গেলো ! রিয়ার মুখে এই কথা শোনার পর ভাবলো আজ রোজ ডে ভালো দিন তাই সেই মনের আনন্দে এক গুচ্ছ লাল গোলাপ এনে রিয়ার হাতে দিয়ে বলবে আমি তোমাকে ভালোবাসি রিয়া !
কিছুক্ষণের মধ্যেই শুভ বাজার থেকে এসে রিয়া দিকে তাকিয়ে বললো দেখো তোমার জন্য কি এনেছি ! রিয়ার হাতে লাল গোলাপ দিয়ে বললো হ‍্যাপি রোজ ডে ,
রিয়া এক হাতে লাল গোলাপ নিয়ে অন্য হাতে শুভর হাত ধরে ধরে রইলো তার চোখে উপর চোখ রেখে !  একে অন‍্যের মাঝে হারিয়ে গেলো ! অনেক ক্ষণ পর বললো রিয়া সত্যিই গোলাপ ফুলের কি গুণ আমার অনুভূতি গুলো এই ফুলের মাঝে আছে , তখন শুভ এক হাতে গোলাপ নিয়ে অন্য হাত দিয়ে রিয়াকে জড়িয়ে ধরে বললো তুমি তো আমার গোলাপ তাই তো আমার সব অনুভূতি প্রকাশ গুলো তোমার কাছে ধরা পড়ে !



Rose Day
~ Raja Debroy & Panchali Deb

Today is 'Rose Day',
Ample of roses bloom!
Today the price is much high,
Traders are  happy,
feels like they would reach the sky!
Gifting a flower today makes you cool!
Should the colour of the flower be red?
If I give another colour,
would I look like a fool?
Why pay today?
Is it just to be a part of this mad race?
No sense in it I am telling you,it has no base!
I don't wanna ruin the suprise.
Everyone has lost their intellect!
We are running like a fools,
doing whatever we want,
without analyzing the fact!
Honestly, these days are wrong,
This month actually makes us drool
and believe me it isn't cool
as we become the greatest 'Fools'!



মানুষ  সবাই  নেই  তো  মানুষ......
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি
(দার্জিলিং  জেলা  থেকে)

মানুষ  সবাই  তবু অমানুষ  আজও  কিছু আছে,
চোখের  সামনে  তাই  তো  দেখি—
কিছু মানুষ  নামছে  কত  নিচে,
পশু? তারা  তো  অনেক  ভালো,
করে না এতো রকমের শয়তানি!
আমাদের  চারপাশে  ভালো  মানুষের  পাশে
কত  শয়তান  আছে,
তা  আমরা  অনেকে  তো  জানি৷
ঐসব  শয়তান  না  থাকলে  আরো  সুন্দর হতো আমাদের এই  দেশ  খানি৷





শিরোনাম- কৃষক বন্ধু
কলমে-মিনতি গোস্বামী

ঘর ছেড়ে, সংসার ছেড়ে, আজ রাজপথে বসে ওরা
তোষামোদী জনগণ,সুখী মন , কতদিন চুপ থাকবে তোমরা?
পেটের ক্ষুধা, মনের সুধা, সব মেটাই ওদের দানে
ভাই বলে, বন্ধু বলে,মেলাইনা ওদের প্রাণ প্রাণে।

ওরা জানে, ওরা মানে , ওদের দেশ ওদের মাটি
দেহের চেয়ে, প্রাণের চেয়ে, ফসল মায়ের মত খাঁটি।

লোভ নয়, লালসা নয়, ওরা চায় ফলাতে ফসল
ঘাম দিয়ে, রক্ত দিয়ে, পেতে চায় মাটির দখল।
জীবন নিয়ে, পরিবার নিয়ে , লড়ছে তাই শেষ লড়াই
বোধ জাগিয়ে,বিবেক জাগিয়ে, ওদের সঙ্গে থাকো সবাই।





ক্ষমা করো মা
             বিপ্লব গোস্বামী

  যে পতাকার জন‍্য হাসতে হাসতে
  সীমান্তে সেনা জীবন করে দান,
যে পতাকার জন‍্য স্বাধীনতা সংগ্ৰামে
  শত শহীদ করেছে আত্ম বলিদান।
হায় ! আজ সেই পতাকার অপমান !!

  হায় ! আজ সেই পতাকার অপমান !!
আজ কৃষক বেশে , বীর শহীদের দেশে,
শত শয়তানের উত্থান, পাকিস্থানী প্রেতাত্মা
দেশদ্রোহী সব বলছে জয় খালিস্থান !!
ক্ষমা করো মা ! আজ তব ঘোর অপমান !!

  ক্ষমা করো মা ! আজ তব ঘোর অপমান
আর নয় সহন , এবার পাল্টাতে হবে ধরন,
   হতে হতে কঠোর , করতে মিরজাফর দূর।
দিতে হবে ফাঁসি , ফোটাতে মায়ের হাসি,
সবাই মিলে গাইব ভারত মায়ের জয়গান।

সবাই মিলে গাইব ভারত মায়ের জয়গান
   যে দেশের সৌরভে ,বীরত্বের গৌরবে
মুগ্ধ বিশ্ববাসী, সে মায়েরে বড় ভালোবাসি।
   কখনো সইব না সে মায়ের অপমান
   সদা গাইব ভারত মায়ের  জয়গান।




নতুন প্রভাতের আলো
     আব্দুল রাহাজ

রোহিত শামীম তনুশ্রী মোহাম্মদ ওরা সবাই সেদিন চিত্রা নদীর পাড়ে খেলা করছিল। পূর্ব আকাশে সূর্য তার নিস্তেজ আলো ভূমিতে পড়ছে যে সূর্যের আলো সারাদিনটা বৈচিত্র্য নিয়ে ফুটে উঠেছিল চারিদিকে সে এখন নিস্তেজ হয়ে পড়েছে তাই না শামীম এটা বলেছিল তনুশ্রী হ্যাঁ তাইতো। কিন্তু দেখ সকালের নতুন প্রভাতের আলো বেশ সুন্দর লাগে আমাদের তাই না কি অদ্ভুত এই পৃথিবী ধরাতল ওরা এসব আলোচনা করছিল। হঠাৎ দূর থেকে সূর্যের অন্তিম আলোর নিচ দিয়ে রাখাল বালক বাঁশি বাজিয়ে গরুর পাল নিয়ে যাচ্ছে বাড়ির দিকে ওদিকে পাখিগুলো দূর আকাশে উড়ে যায় তার বাসস্থান এর দিকে কি দৃশ্য দেখলো আজ। ওদিকে মাগরিবের আজান হচ্ছে শামিম মোহাম্মদ দৌড়ে ছুটে গেল মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়ি ফিরল সন্ধ্যেবেলায় সবার সাথে দেখা পন্ডিতমশাইয়ের বাড়িতে ওরা এবার পড়াশোনা করবে।  শীতের ভাবটা যেন আসতে শুরু করেছে এবারে আগে থেকেই ওরা সেটা বারবার প্রত্যক্ষ করছে । চারিদিকে যেন নতুন নতুন ভাব ফুটে উঠেছে এসব নিয়ে ওরা কথা বলছিল নিজেদের মধ্যে তারপর পণ্ডিতমশাই এসে ওদের ইতিহাস-ভূগোল গণিত পড়িয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। শামিমার মোহাম্মদ ঠিক করে ফজরের নামাজের পর প্রভাতের নতুন আলো দেখবে চিত্রা নদীর পাড়ে গিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করলো তারপর আস্তে আস্তে সূর্যের আলো ফুটে উঠল চারিদিকে যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠলো সবকিছু তার রশ্মিতে এটা দেখে বেশ আনন্দ পেয়েছিল সে দিন। নতুন প্রভাতের আলো দেখে ওরা শপথ নিয়েছিল নতুন কিছু করার সেদিন থেকে এইভাবে ওরা নতুন প্রভাতের আলো উপভোগ করতে করতে কোথাও যেন তারা জীবনের শেষ সায়াহ্নে উপস্থিত হয়েছিল আস্তে আস্তে পড়াও যেন এই পৃথিবী ধরা তলে সূর্যের আলোর মত হারিয়ে গেল।





সত্য কথার শক্তি
ঐশিকী সিংহ

শুনতে তিতে হলেও
কথাগুলো হয় খাঁটি,
সত্যকে খুঁজতে গেলে
বাঁধতে হয় অনেক আঁটি-ঘাঁটি।

সব দেখে শুনেও
রাখতে হয় মুখ বন্ধ,
সমাজের কাছে অভিনয় করতে হয়
যেনো আমি একেবারে অন্ধ।

সবই দেখি সবই বুঝি
সবাই তাই পট্টি পরায় চোখে,
অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে
সবাই আঙুল তুলবে তোকে।

মুখের ওপর সত্য বল
বাচাল বলবে তোকে,
যদি নিই মিথ্যে আশ্রয়
সমাজ তুলে ধরবে আমাকে।।






   বড় খোকা
শ্রীকান্ত মালাকার

বয়সের ভারে জীর্ণ আমি
শীর্ণ এই শরীল।
কন্ঠের জোরও কমেছে আমার তাড়া মারলেও পালাই না বিড়িল।

পাঁচ সন্তানের মা আমি
তবে ভীষণই বোকা।
আমার দায়িত্ব নিয়েছে সব
একমাত্র বড় খোকা।

বাছা আমার বড়ই ভালো
পেয়েছে বহু কষ্ট।
সংসারের প্রতি যে দূঢ় টান
দেখা যায় তা স্পষ্ট।

খুব ছোটতেই অভাবী সংসারের
নিয়েছিল খোকা ভার।
ভাইরা সব ধনী হয়ে গেল
পারলোনা শুধু ও আর।

জমানো টাকা খরচ করে
দিয়েছিল বোনটার বিয়ে।
বাপের নামে কিনেছিল বলে
ভাগ দিল ঝামেলায় না গিয়ে।

জ্যেষ্ঠ পুত্র হওয়া সত্ত্বেও
বঞ্চিত ছিল আমার আদর।
ছেঁড়া শোইটার পরছে নিজে
কিনেছে নতুন আমার চাদর।

বড় খোকা মোর সোজাসাপ্টা
করতে পারেনা অভিনয়।
আমার নামের সব নিয়েছে
আদরের ছোট ছেলে চিন্ময়।

সেজো ছেলে তো ঘরজামাই
পেয়েছে শ্বশুরের সম্পত্তি।
আলিশান ঘরে আমাকে রাখতে
বৌমার খুব আপত্তি।

মেজো ছেলে ফ্লাট বাসি
একমাত্র চাকরি করে সেই।
টাকার লোভে এসেছিল ছুটে  বাপের সম্পত্তি ভাগ হল যেই।

বড় খোকা মোর ভীষণ ভালো
এখনো করে বাপের শেখানো কাজ।
শাসন-ভালবাসায় বেঁধে রেখেছে আমায়
ওর মধ্যেই বাবাকে দেখছি আজ।।







পাহাড়ের উল বােনা নারী
     বদরুদ্দোজা শেখু

মহিলাটি বুনছিলো উল,
কাঁটা আর ক্ষিপ্র আঙুল
ফুটিয়ে তুলছিলো ফুল
ভিড়ের শহরে মশগুল
                  মনের সড়ক জুড়ে রূপের মোড়ক

গুলমােহরের মতো ফুল্ল বিপুল
লাবণিতে চাহনির সব
রঙটুকু ছেয়েছিলো বিভাের নীরব
আত্মমগ্ন অবয়ব
                আকাশের নীল জুড়ে ভেসে যাওয়া বক ;

শখ নয়, চক খড়ি চক নয়, সম্মােহন নয়,
চারিপাশে ব্যস্ততার বিরক্ত বিষয়
যেন তার অধিগম্য নয় কিছু, ক্রেতার দঙ্গল
পাশ দিয়ে চলে যায়, সুখী বেনােজল
পাহাড়ের ঢলে যেন দাঁড়ায় না ; বানায় সে নেপথ্যচারিণী
পরিচ্ছদ বিপণির সানুদেশে সৃজন-মুখর বিকি-কিনি ।




কৃষকদের কথা
মহীতোষ গায়েন

আদৌ কি তারা কৃষক ছিল
যারা লাঠি,তরোয়াল হাতে,
লালকেল্লায় যে তাণ্ডব হলো
গেল আন্দোলন ভিন্ন খাতে।

কৃষকদের দাবি সঙ্গত ছিল
সেটা বিলক্ষণ জানি সবাই,
নেতাদের দোষে বেসামাল
পথ ইজ্জত গেল জবাই।

জাতীয় পতাকার অবমাননা
তোমাদের উচিত ছিল না ভাই,
দেশের সম্মান ও দশের সম্মান
হোক রক্ষিত সেটাই সবাই চাই।

কৃষক তুমি তরোয়াল ছেড়ে
ধরো লাঙ্গল,কোদাল,কাস্তে,
দাবি পূরণে পথেই নামো
আন্দোলন করো বাঁচতে।




প্রাপ্তি
বাপন দেব লাড়ু

বুকের মধ্যে জমে উঠেছে,
একটুকরো বিষাদ...
ঐ দূর ছায়াঘেরা ঝাউগাছ  সমুদ্র সৈকত থেকে
নিঃশব্দে আমি দাঁড় টেনে যাই আকাশ-ঘাটে...

নীলিমায় সময় ভেসে যায়,
তট টুকুই শুধু জেগে থাকে একা,
ঠিক যতটুকু জেগে ছিলে তুমি...

এ যেন এক নিঃসীম সময়ের মাঝে ডুবে থাকা;
সারাদিন হাত পা লাফালাফি করলেও,
মাথা এখনো মেনে নিতে পারেনি,
কতটুকু পেতে গিয়ে হারালাম কতটা?



প্রবন্ধ 
আজকের দিনে যুব সমাজ যেখানে দাঁড়িয়ে
কলমে ডঃ রমলা মুখার্জী

যুব সমাজ হল জাতির ভবিষ্যৎ, দেশের আশা-ভরসার কেন্দ্রস্থল; কারণ জাতীয় জীবনে যে কোন গুরুত্বপূর্ণ কর্মে, যে কোন আপদে-বিপদে যুবসমাজ অগ্রণী এবং সাহসী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমানে আর্থসামাজিক পরিবেশের কারণে আমাদের দেশে  বেশ কিছু যুবক আজ সন্ত্রাস ও হত্যার মত অপরাধমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছে। তাদের মধ্যে আজ নৈরাজ্য, অবক্ষয়, হতাশা, ব্যর্থতা ও আশাভঙ্গের আর্তনাদ প্রায়ই শোনা যাচ্ছে। বৃহত্তর যুবসমাজের মঙ্গলের কথা ভেবে এই অবক্ষয় থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সচেতন যুবসমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের ভুলে গেলে চলবে না জাতীয় জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্মরণীয় অবদান রাখা তাদের কর্তব্য।
আজকের যুগে যুবক-যুবতীরা বেকারত্বের হতাশায় ক্লান্ত। অথচ যুবক-যুবতীরাই হচ্ছে দেশ ও জাতির প্রাণশক্তি। যুবসমাজকে বাদ দিয়ে জাতীয় জীবনে উন্নতি ও অগ্রগতির কথা ভাবাই যায় না।  এই ভয়ংকর পরিস্থিতিতে সমাজে শুধু যে হতাশা বাড়ছে তা নয়, বরং নানাবিধ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দ্বারাও সমাজের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও যুব শক্তিকে আত্মকর্মসংস্থানে উদ্ধুদ্ব করে তুলতে হবে, নতুবা বিদেশী সামগ্রীর প্রতি নির্ভরশীলতা থেকে আজকের যুবসমাজকে মুক্ত করা যাবে না।
     যুব সমাজই হল দেশের সচেতন নাগরিক। তাই জাতি গঠনে তাদের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। যৌবনই হল মানবজীবনের শ্রেষ্ঠ কর্মসাধনের আদর্শ সময়। এ সময় যে কোন ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হওয়া সম্ভব কারণ এই সময়ে মানুষের কর্মে উদ্দীপনা থাকে সবচেয়ে বেশি। তাই জীবনের যাবতীয় দায়িত্ব নেওয়ার আদর্শ সময় হল যুবক বয়েস। আমাদের দেশ বহু দিক থেকে পিছিয়ে আছে। অজ্ঞতা ও কুসংস্কার আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বাসা বেঁধেছে। এই করুণ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এবং রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, ধর্মনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য যুবসমাজ নেতৃস্থানীয় ভূমিকা গ্রহণ করতে পারে। আগামী দিনের দক্ষ কর্মকর্তা ও দক্ষকর্মী হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার জন্য জীবনে তাদের ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে হবে। জাতীয় নানা সমস্যা ও সম্ভবনার সাথে একাত্ম হওয়ার মধ্যে দিয়েই যুবসমাজ জাতিগঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।






   ঘুমন্ত ঈশ্বর 
      সৌম্য ঘোষ

  এখন আমি ফুলের ভাষা, পাখিদের ভাষা,
  সমস্ত রাতের নক্ষত্রদের ভাষা বুঝতে পারি ।
  মানুষের  স্বজ্ঞায় গাঢ় মুগ্ধতায় দেখেছি --
  বহু ঈশ্বরের জন্ম,
  ঈশ্বরের মৃত্যুও  দেখেছি সামনে ।

   'কে  ঈশ্বর ?   ছিল কি কেউ ?'

  একসময় সবাই ছিল মানুষ
  ঈশ্বরের আবির্ভাব তারপর…...

  নিজেকে কষ্ট দেওয়ার আগে,
  নিজেকে নষ্ট করার আগে,
  বোঝেনি মানুষ সেকথা ।
  শ্মশানের দীর্ঘ শূন্যতায়......
  কবরের দীর্ঘ অপেক্ষায়........
   যোগ- বিয়োগগুলো  বোঝে ।

   বহুকাল ধরে, গাঢ় শূন্যতার মাঝে ,
   এখন বোঝা যায়........
    আলো ও অন্ধকারে ঘুমন্ত ঈশ্বরকে ।।





      যেমন   খুশি  সাজো
          পিনাকী মুখার্জী

             মেঘের   মাঝে  মুখের  ছবি ,
               চোখে  রূপকথারই  খোঁজ  !!
             ভাঙাগড়া , ভোল  বদল দেখে ,
                চোখ  কপালে  হররোজ  !!

                রাম  চলেছে  ধনুক হাতে
                     করতে  রাবণ  বধ  !!
            এবার  হবেই  ইচ্ছেপূরণ , যুঝে
                 আশা ,  জীবন  মূল্যবোধ  !!

              আশার  বাদল ,  ফানুস  হয়ে  ,
                 হাওয়ায়  খানিক   দূরে  !!
                রাবণ  ভিখারী ,  সাধুর  বেশে ,
                     যখন  যেরূপ  ধরে   !!

                  রাক্ষস  আর  বাঁদর  গুলো
                        দেদার  ছুটে  মরে  !!
                   রামায়ণ  দুষ্টু  মেঘের  দলে   ,
                        বদল   দুচোখ   ভরে  !!






                জীবন
     হামিদুল ইসলাম
              

সূর্যের উত্তাপে পুড়ে যায় মন
রোদ এসে ভীড় জমায়
        মাস্তুলের উপর
পাগল হাওয়া হয়ে যায় পর ।।

নৌকো ছেড়ে দিই সমুদ্র বরাবর
অথৈ জলে পুনর্জন্ম নেয়
            আশার ফুল
প্রতিদিন ভরে ওঠে মনের উপকূল  ।।

নৌকোর ছইয়ে ব‍্যস্ত জীবন
জীবনকে ভেঙে দেখি বারবার
            অবচেতন মন
রাতের আঁধারে খুলে দেয় দুনয়ন ।।






'নিয়ম করে সবাই ফিরে আসে'
       আমিরুল ইসলাম

নিয়ম করে সূর্যটা ঠিক আজকেও
পূবের দুটো পাহাড়ের বুক চিরে, রক্তরাঙা-
গাঢ়, লাল-হলুদ আকাশের বুকে গা-ভাসিয়েছে।
বিশ্রামহীন ক'টা কাক সদ্য সকালে আজকেও
চৌরাস্তার মোড়ে দেবদারু গাছের নিচে -
প্রাণহীন ডাস্টবিনটিতে হামলা করেছে।

প্রকৃতির নিয়ম মেনে আজকেও ঘাসের ওপর,
মটরশুঁটির ডগায়, অগণিত শিশির জমে
সবুজকে- আরো গাঢ় সবুজ তাজা করে তুলেছে।
নিয়ম করে আজকেও ভুখাপেটে প্রজাপতির লুকোচুরি শিউলি,বেলি, সরিষার ফুলে ফুলে।
নিয়ম করে সূর্যটাও ধীরে ধীরে উপর থেকে -
আরো উপরে অবিরত উঠেই যাচ্ছে।

নিয়ম করে পৃথিবীতে সূর্যের আলো
প্রদীপের মতো আজকেও অক্ষত অচ্ছুত।
নিয়ম করে সবই চলছে চারপাশে,
নিয়ম করে সবাই ফিরে আসে রোজ,
সন্ধার আকাশ মেঘাচ্ছন্নতা কাটিয়ে তারাদের বুকে সাজিয়ে তার সৌন্দর্যে ঠিক ফিরে আসে সময়ে।
বেগানা,মুসাফিরও ঠিক সময় ফিরে তার অস্থির গৃহে
কেবল তুমিই এলে না।
                     ******সমাপ্ত*****

1 টি মন্তব্য: