শনিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ শিক্ষক দিবস সংখ্যা-2020 Upokontha Teachers Day issue-2020

উপকণ্ঠ শিক্ষক দিবস সংখ্যা-2020  Upokontha Teachers Day issue-2020

উপকণ্ঠ শিক্ষক দিবস সংখ্যা- 2020
             "উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
              (ওয়েব ম্যাগাজিন)
                    বিশেষ সংখ্যা 
       "উপকণ্ঠ শিক্ষক দিবস সংখ্যা- 2020"

প্রকাশ কাল:-05/09/2020, শনিবার
               সময় :- সকাল 10 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

প্রচ্ছদ শিল্পী- তনুশ্রী জানা
ডিজাইন- সেক আসাদ আহমেদ

  উপকণ্ঠ শিক্ষক দিবস সংখ্যা- 2020   
         নির্বাচিত লেখক তালিকা             

বিভাগ-ইংরেজি লিমেরিক
• সাবির আহমেদ

বিভাগ- ইংরেজি কবিতা
• সায়ন প্রামানিক

বিভাগ- বাংলা লিমেরিক
• সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়
• সুপ্রকাশ আচার্য

বিভাগ- হাইকু
• ড. রমলা মুখার্জী
• শান্তনু মজুমদার

বিভাগ- অনু কবিতা
• বিশ্বজিৎ কর

বিভাগ-মুক্ত গদ্য
 • ড. মহীতোষ গায়েন

বিভাগ- নিবন্ধন
• রাজীব কুমার নন্দী

বিভাগ-- প্রবন্ধ
• অগ্নিমিত্র
• শিবব্রত গুহ
• সৌম্য ঘোষ
• বাপন দেব লাড়ু

বিভাগ- স্মৃতি কথা
• সুতপা শেঠ
• সুনন্দ মন্ডল
•ডা. নরেন্দ্রনাথ নস্কর

বিভাগ- ছোটোগল্প
• আব্দুল রাহাজ

বিভাগ- গল্প
• কবিরুল
•মিনতি গোস্বামী

বিভাগ- অনুগল্প
• শেখ নিয়ামত ইসলাম
• শ্যামসুন্দর মন্ডল

বিভাগ- সংগীত/গান
• মোঃ আলিউল হক

বিভাগ- কবিতা (১ম অংশ)
১) তীর্থবাসী মণ্ডল
২) দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়
৩) তাপস বর্মন
৪) বসন্ত পরামাণিক
৫) পিনাকী মুখার্জী
৬) আসমাত আলী
৭) জগদীশ মন্ডল
৮) গণেশ দেবরায়
৯) সুশান্ত মজুমদার
১০) দীপঙ্কর বেরা
১১) সৌভিক রাজ
১২) জুয়েল রুহানী
১৩) সৌমেন্দ্র হালদার

বিভাগ- কবিতা (২য় অংশ)
১) মন্দিরা ভারতী
২) কনিকা রায়
৩) উমর ফারুক
৪) বিকাশরঞ্জন হালদার
৫) আব্দুল রহিম
৬) অনিন্দ্য পাল
৭) বিমল মন্ডল
৮) হামিদুল ইসলাম
৯) শুভ্রাংশু কুম্ভকার
১০) দেবাশীষ সরখেল
১১) অষ্ট দেয়াশী
১২) সত্যজিৎ পাল
১৩) গোবিন্দ মোদক
১৪) মোঃ আবু হোসেন শেখ
১৫) জাহাঙ্গীর দেওয়ান
১৬) বিমান প্রামানিক
              ইংরেজি লিমেরিক                 

                                                   
A Limerick  
           S. Ahmed

A learned teacher was a quack doctor !
  He had a broad bald compounder,
Held a purse with injection.
The patient had loose motion !
'TuTu' was applied to D booster.



                ইংরেজি কবিতা                    

            TEACHER 
SAYON PRAMANIK

You're the heart of every classroom
The soul of every school ,
The mind behind the message
That learning is cool .
Your patience & understanding can't be undersold .
Your courage & commitment
Is that of legends told .
Each day you teach our children
Is a day to rejoice .

 





            বিভাগ- লিমেরিক                     

       শিক্ষাগুরু
               সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়

পিতা- মাতার পরে, যিনি মোদের গুরু,
যার স্নেহের পরশে, পথ চলাটা শুরু
মন আঁধারে জ্বালিয়ে আলো
শেখান কোনটা মন্দ ভালো
মাথা তুলে বাঁচতে শেখান তিনি শিক্ষাগুরু।





শিক্ষক দিবস
         সুপ্রকাশ আচার্য

জীবনবোধের পাঠ দিলে তুমি,তুমি চিন্তন মনন
চোখ খুলে দিয়ে বুঝতে শেখালে,পরিয়ে জ্ঞানাঞ্জন
শিক্ষক মানে চলার ছন্দ,
দূরীভূত করে মনের দ্বন্দ্ব,
রাধাকৃষ্ণন জন্মদিবসে, শিক্ষক পায়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন। 



               বিভাগ-হাইকু                       


  শিক্ষক দিবস হাইকু
        ড. রমলা মুখার্জী
1.
রাধাকৃষ্ণণ,
মহান জন্মদিনে
শ্রদ্ধা, সম্মান।
2.
দীক্ষা প্রদান
ব্রত জীবনে যাঁর,
আদর্শ গুরু।
3.
শিক্ষার্থীগন
ভালোবাসার ধন
বড় আপন।
4.
প্রকৃত শিক্ষা
লাভ করেন যাঁরা
অমর তাঁরা।







হাইকু
শান্তনু মজুমদার

১)
শিক্ষক যে হলেন
ভারতের মেরুদণ্ড
ছাত্রের প্রাণ সম।
২)
আজ সমাজ নির্দয়
অসহায় যে শিক্ষক কুল
নিশ্চুপ শিক্ষার্থী।
৩)
স্বাধীনতার দাম
ঐ দশ হাজার তিনশ তেইশ
মেটায় অশ্রুতে।
৪)
সাবিত্রী ফুলে
প্রথম নারী শিক্ষিকা
ছাত্রীর অজানা !
৫)
নিম্নবিত্ত আজ
ক্ষুদার্থ শিক্ষক সমাজ
নির্বাক প্রশাসন।




             বিভাগ-অনু কবিতা                  

এক আন্তরিক নিবেদন!
              বিশ্বজিৎ কর


শি=শিষ্টাচারের প্রথম পাঠ
ক্ষ=ক্ষয়িষ্ণু সভ্যতার চন্দন কাঠ
ক=করজোড়ে করি স্মরণ
দি=দিকনির্দেশের সুবচন
ব=বলিষ্ঠতার উজ্জ্বল নাম
স=সকল শিক্ষককে জানাই প্রণাম!







                 বিভাগ-মুক্ত গদ্য                 

শিক্ষারত্ন বর্জিত সুন্দরবনের সেই শিক্ষক
          ড.মহীতোষ গায়েন

সেই শিক্ষক,স্কুল শিক্ষকতা স্বেচ্ছায় ছেড়ে
বাদাবনে শিক্ষার প্রসারে ও সমাজ উন্নয়নে
নিজেকে নিয়োজিত করলেন,সম্বল সামান্য
জমি,আপাদমস্তক বামপন্থী, সংসার-সন্ন্যাসী।

স্ত্রী যমুনাবালা কোন দিন সুখের মুখ দেখেননি,কোথাও যাননি,ভালো কিছু পরা বা খাওয়া হয়নি,শুধু ছেলে মেয়ে মানুষকরা,গাছ,ফুল,লতাপাতা দেখা, উপরতলার ভণ্ডামির আঁচ গায়ে লাগেনি।

বহু মানুষের ভিখিরি অপবাদ ঘোচালেও নিজেকে মাঝে মাঝে সেই অপবাদ শুনতে হয়েছে নিদারুণ,সমাজসেবা,জীবনে বাহান্নটি স্কুল প্রতিষ্ঠা তথা শিক্ষাপ্রসারে ছুটেছেন গ্রাম থেকে গ্রাম,শহর,নগর‌,গঞ্জ।

কোন সরকারি পুরস্কার বা খেতাব পাননি,
শিক্ষার প্রসারের জন‍্য শুধু এক বেসরকারি সংস্থা দিয়েছে সুন্দরবনের বিদ‍্যাসাগর পুরস্কার-২০০৩,অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী বা আমলা,নেতারা আসার সময় পাননি।

একাত্তরের নির্বাচনে সিপিআই-এর টিকিটে লড়ে সিপিএমের কাছে একসহস্র ভোটে হারলে পুরস্কার পাবেন কী করে?জোর যার মুলুক তার,বছর যায় বছর আসে,দল যায় দল আসে অধরা থাকে অবদান।

মানুষটা বড় বোকা ছিলেন,মাথা উঁচু ছিল,সততা ছিল অটল,গরীবের দু:খে ব‍্যথী,
মানবিক,দল-লবি করতে বা ধরতে
জানতেন না,তেল দিতে পারতেন না,চাষের জমি,জীবন শিক্ষা প্রসারে অর্পণ করেও তিনি আজও ঝরাপাতা,বাসি ফুল।

পাঁচ সেপ্টেম্বর ফিরে ফিরে আসে,শিক্ষার প্রসারের জন‍্য সুখ স্বাচ্ছন্দ্য বিসর্জন দিয়ে ২৪ পরগনার এই ব্রাত্য শিক্ষক, আদর্শ শিক্ষাব্রতী বিনোদ বিহারী গায়েন আজ অমৃতলোকে...শিক্ষারত্ন না পেলেও তিনি জনতার কাছে মানুষের রত্ন,শিক্ষার রত্ন।






                  বিভাগ- নিবন্ধন                 

শিক্ষক দিবসের অ আ ক খ
        রাজীব কুমার নন্দী

"আমরা চাঁদে পৌঁছাতে পেরেছি
কিন্তূ আমরা মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারিনি।"
     ড: সর্বপল্লী রাধা কৃষ্ণন এর লেখনীর তানে বিকশিত জীবনের এগিয়ে চলার মন্ত্র।আকাশ ছোঁয়ার গল্প গুলো শুরু হোক মানুষের কাছে ভালোবাসার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার পরেই।শিক্ষার রেট রেসে এগিয়ে চলেছে আধুনিক শিক্ষার ডিজিটাল রূপায়ণ,করোনার অতিমারী তে এখন চক ডাস্টার এর সাদা গুঁড়ো শ্রেণী কক্ষ ভর্তি করে না,ছাত্র হাজিরা খাতায় ধুলোর আচ্ছাদন ,প্রার্থনা আর ছুটির ঘন্টার লোহার বেলটা বুঝি মরচে ধরেছে অনেকটা।হাবুলের ক্লাসের ঘুলঘুলিতে যে পায়রাটা ডিম পেরেছিলো সেও নাকি এখন উড়তে শিখেছে!বিদ্যালয়ের গেটের তালায় চাবি ঢোকেনি অনেকদিন।খেলার মাঠে ঘাস গুলোও মনখারাপে বিকেলের রোদ্দুর কুড়িয়ে চলেছে।এ বছরের শিক্ষক দিবসে শিক্ষক দিবসে বিষাদের সুর।জীবনের বাঁচার তাগিদে মানুষ যেমন জীবিকা পাল্টেছে তেমনি শিক্ষার ও বদল এসেছে করোনার অতীমারিতে।শিক্ষার উপকরণ গেছে বদলে।চক, ডাস্টার,ব্ল্যাকবোর্ড, ছেড়ে শিক্ষার উপকরণে এখন নাম লিখিয়েছে ফেসবুক,হোয়াটস আপ, গুগল এর দল।ভার্চুয়ালী শিক্ষার অস্ত্রে শিক্ষার আবাহন হচ্ছে এই বিপদের দিনে।
    ড: সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন 1888 সালে 5ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন তিরুত্তানি নামক এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে। যিনি ছিলেন ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভারতরত্ন ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান।তাঁর বাবা বীরস্বামী ছিলেন স্থানীয় জমিদারের খাজাঞ্চি।মা সীতাম্মা ছিলেন গৃহবধূ। তাঁদের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। কিন্তু অভাব, দারিদ্র্য কোনকিছুই রাধাকৃষ্ণান কে দমিয়ে রাখতে পারে নি।কে.ভি. হাইস্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন ও পরে হার্মানসবার্গ ইভানজেলিকাল লুথেরান মিশন স্কুল, গভর্নমেন্ট হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল এই ভাবেই তাঁর শিক্ষা জীবন এগোতে থাকে।খুব মেধাবী ছিলেন।
     1909 সালে মাত্র একুশ বছর বয়সে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয় মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সি কলেজের অধ্যাপক হিসেবে। তার পর একে একে সারাজীবনে তিনি কলকাতা,মাইসর, শিকাগো সহ বহু বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়িয়েছেন। সেই সময় তিনিই ছিলেন প্রথম ভারতীয়, যিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি অন্ধ্র বিশ্ববিদ্যালয় ও বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়েরও অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন।তিনি ভীষণ ভাবে প্রভাবিত ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের দর্শন দ্বারা। তাই তাঁর প্রথম বইটি তিনি লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথের দর্শন নিয়ে-দ্য ফিলজফি অব রবীন্দ্রনাথ টেগর। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার সময় তিনি বিখ্যাত ইন্টারন্যাশনাল কংগ্রেস অব ফিলজফিতে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেন এবং এই সভায় ভারতীয় দর্শন কে আন্তর্জাতিক স্তরে ভীষণ ভাবে পরিচিত করান। তাঁর রচিত বইয়ের মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য"ইস্টার্ন রিলিজিয়ন অ্যান্ড ওয়েস্টার্ন থট"দ্য ভাগবৎ গীতা,দ্য প্রিন্সিপাল উপনিষদ প্রভৃতি। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন।যার মধ্যে ছিল----দ্য কোয়েস্ট, জার্নাল অব ফিলজফি, ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অব এথিক্স।1947 সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর তিনি হন স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি। 1952 থেকে 1962 সাল পর্যন্ত এই পদে থাকার পর তিনি হন স্বাধীন ভারতের দ্বিতীয় রাস্ট্রপতি 1962 সালে। এই পদে তিনি সসম্মানে ছিলেন 1967 সাল পর্যন্ত। তিনি যখন রাস্ট্রপতি হলেন তখন তাঁর ছাত্র ছাত্রী ও গুনমুগ্ধরা চাইলেন তাঁর জন্মদিনটি বিশেষ ভাবে পালন করতে। কিন্তু তিনি বললেন " 5 ই সেপ্টেম্বর আমার জন্মদিন পালন না করে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করলে আমি আরও অধিক সম্মানিত বোধ করবো।"সেই থেকে শুরু হল 5 ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করার রীতি।
     শিক্ষার আঙ্গিকে এগিয়েছে সময় বদলেছে রীতি নিয়ম তবু শিক্ষকদের সম্মাননা দিয়ে আসছে শিক্ষক দিবসের এই বিশেষ দিন।শিক্ষার অনন্ত আলোয় বিকশিত হয়েছে নানা গুণী শিক্ষক,তাঁদের শিক্ষন সৌরভে সমৃদ্ধ হয়েছে ছাত্র সমাজ।
    আধুনিকতার নব মন্ত্রে শিক্ষার আধুনিকতার যাঁতাকলে প্রকৃত শিক্ষাকে ছিনিয়ে আনাই এখন লড়াইয়ে মত্ত।তবু ডিজিটাল ভাবনায় শিক্ষক দিবসের উজ্জাপনের সুর বেঁধেছে বিদ্যালয় থেকে কলেজ ,ইউনিভার্সিটির উঠোন জুড়ে।সেখানে শুধুই ঘরে ফেরার মত শ্রেণী কক্ষে ফেরার নস্টালজিক টান।যেনো মায়ের কোলে ফিরে আসার অপেক্ষা।
উপনিষদ এর কথায় বলা যায়:-
*"ঈশা বাস্যমিদং সর্বং যৎ কিঞ্চ জগতাং জগৎ।*
*তেন তকতেন ভুঞ্জীথা মা গৃধ: কশ্য সিদ্ধনম ll"*







                    বিভাগ-প্রবন্ধ                   

 (এক) 

    শিক্ষক দিবস
                   অগ্নিমিত্র

 প্রতি বছর ভারতে ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস পালিত হয় । এই দিনটি ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং দার্শনিক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের জন্মদিন । ওনাকে স্মরণ করেই প্রতি বছর এই দিবস উদযাপন করা হয় ।..
 শ্রী রাধাকৃষ্ণন ১৮৮৮ সালে দক্ষিণ ভারতের এক গ্রামে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । মাত্র সতেরো বছর বয়সে এফ.এ. পাশ করেন তিনি। এম.এ. পড়ার জন্য তাঁকে দর্শনশাস্ত্র বিষয় হিসেবে বেছে নিতে হয়েছিল, কেননা তাঁর দাদাও ঐ একই বিষয়ে পড়েছিলেন এবং নতুন বই কিনে দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর পিতামাতার তখন ছিল না। তাঁর পছন্দের বিষয় ছিল পদার্থবিজ্ঞান, যদিও তিনি ভেলোরে এক মিশনারি কলেজে দর্শন নিয়ে পড়েন। শিক্ষকদের হিন্দু ধর্ম সম্বন্ধে অজ্ঞতা ও বিতৃষ্ণা তাঁর মনকে আঘাত করে। হিন্দু ধর্ম ও দর্শন নিয়ে তিনি অনেক গবেষণা করেন। প্রমাণ করেন যে হিন্দু ধর্ম অনেক উদার ও সুবিন্যস্ত । অদ্বৈত বেদান্তের ধারণার অন্যতম প্রবর্তক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন । মাত্র কুড়ি বছর বয়সে থিসিস জমা দেন রাধাকৃষ্ণন । পরে তিনি অনেক জায়গায় শিক্ষকতা করেন। মাদ্রাজে প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়ান ; অধ্যাপনা করেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়েও । দেশে ফিরে এসে ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৮ অবধি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন ও উপাচার্য হন । প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দর্শন নিয়ে তাঁর জ্ঞান ছিল সুগভীর ।
 ১৯৫২ সালে দেশের উপরাষ্ট্রপতির পদ অলঙ্কৃত করেন ডঃ রাধাকৃষ্ণন;
 আর ১৯৬২ সালে দেশের রাষ্ট্রপতি হন। অফিসে সবাই তখন তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন যে এই ৫ সেপ্টেম্বর দিনটি শিক্ষক দিবস রূপে পালিত হোক। ১৯৬৭ সাল অবধি তিনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন ।
 জন্মলগ্নে এই সুমহান শিক্ষাবিদকে প্রণাম জানাই ।।








(দুই) 

শিক্ষকেরাই হলেন জাতির মেরুদণ্ড
                শিবব্রত গুহ


শিক্ষক দিবসের সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত। এই দিবস সম্বন্ধে আমরা অনেকেই অনেক কিছু জানি। প্রতি বছর ৫ই সেপ্টেম্বর,
সারা ভারত জুড়ে শ্রদ্ধার সাথে শিক্ষক দিবস
পালন করা হয়ে থাকে। শিক্ষক দিবসের গুরুত্বই
আলাদা। যা ভাষায় যথাযথ প্রকাশ করতে আমি অক্ষম। তবুও, আমি এখন আপনাদের সামনে শিক্ষক দিবস সম্বন্ধে কিছু আলোকপাত করার চেষ্টা করবো।

শিক্ষা জ্বালায় মানুষের মনে জ্ঞানের পবিত্র আলো। এই আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে, মানুষ পারে
ভালো মন্দ, সত্য অসত্যের বিচার করতে। কোন মানুষের জীবনে যদি শিক্ষার আলো না পৌঁছায়,
সেটা বড়ই দুর্ভাগ্যের ব্যাপার। এই দায় দেশের সরকারের। দেশের সরকারের দেখা উচিত, যাতে,
একজন মানুষও শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত না হয়।

এই শিক্ষা আমাদের যিনি বা যাঁরা, আমাদের দান করেন, তিনি বা তাঁরাই হলেন শিক্ষক। শিক্ষা দান
মহান দান বলে পরিগনিত হয়। শিক্ষকেরা হলেন জাতির মেরুদণ্ড। একটা উন্নত জাতি
গঠন করার জন্যে, শিক্ষকদের একটি বিরাট ভূমিকা রয়েছে। শিক্ষকেরা আমাদের সমাজে বড়ই শ্রদ্ধার পাত্র। একজন ছাত্র বা ছাত্রীর জীবন
ও চরিত্র গঠনেও শিক্ষকের অবদান থাকে।
কোন ছাত্র বা ছাত্রী ভুল করলে, শিক্ষক, তাদের সেই ভুল খুব যত্নসহকারে সংশোধন করে দেন।


শিক্ষক ছাত্র ও ছাত্রীদের জীবনে এক বড় অভিভাবকের ভূমিকা পালন করে থাকে।
তবে, শিক্ষকেরা শুধু আমাদের দেশ ভারতবর্ষেই
নয়, সারা পৃথিবীতে শ্রদ্ধেয় ও সন্মানীয়। এই শিক্ষক দিবস পালনের রীতি গোটা পৃথিবী জুড়েই
আছে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই ৫ই অক্টোবর দিনটিকে, " বিশ্ব শিক্ষক দিবস " হিসাবে পালন
করা হয়ে থাকে, ১৯৯৫ সাল থেকে। দেশগুলো হল, কানাডা, জার্মানি, বুলগেরিয়া, ইস্তোনিয়া,
লিথোনিয়া, মলদ্বীপ, নেদারল্যান্ড, পাকিস্তান,
ফিলিপাইন, কুয়েত, কাতার, রাশিয়া, ইংল্যান্ড প্রভৃতি।


আবার, পৃথিবীর কিছু দেশে , ২৮ শে ফেব্রুয়ারী দিনটিকে, শিক্ষক দিবস হিসাবে পালিত হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে, মরক্কো, মিশর, সৌদি আরব,
ইয়েমেন, জর্ডন প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।


আমাদের দেশ ভারতে, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি, ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ - এর জন্মদিন, ৫ ই সেপ্টেম্বর, বিশেষ মর্যাদার সাথে, " শিক্ষক দিবস " - রূপে পালিত হয়। তিনি ভারতরত্ন উপাধি পেয়েছিলেন। তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ। মহান দার্শনিক ছিলেন তিনিও।
একজন বাগ্মী, অধ্যাপক ও রাজনীতিবিদ ছিলেন
রাধাকৃষ্ণণ। তিনি ছিলেন স্বাধীন ভারতের
প্রথম উপরাষ্ট্রপতি ও দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি।


শোনা যায়, একবার তাঁর কিছু ছাত্র ও অধ্যাপক বন্ধুরা, তাঁর জন্মদিন পালন করতে গেলে,
রাধাকৃষ্ণণ বলেছিলেন তাঁদের, " আমার জন্মদিন
পৃথক ভাবে পালন না করে আমি গর্বিত হব, দিনটি
যদি দেশের সমস্ত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে পালন করা হয়। "


বর্তমান তামিলনাড়ু ও তৎকালীন মাদ্রাজ প্রদেশের তিরুতান্নিতে এক গরীব ব্রাক্ষণ পরিবারে, ১৮৮৮ সালের ৫ ই সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ছেলে পূজারি হোক, এমনটাই
চাইতেন তাঁর বাবা। বাবা কখনও জাননি,
ছেলে ইংরেজি পড়ুক। কিন্তু, অদম্য জেদের
অধিকারী ছিলেন রাধাকৃষ্ণণ। শেষে, তাঁর জেদের কাছে তাঁর বাবা হার মেনে নেন।


মেধাবী ছাত্র রাধাকৃষ্ণণ স্কুলজীবনে, অসংখ্য
স্কলারশিপ পেয়েছেন। তাঁর বয়স যখন মাত্র ২০ বছর, তখন তাঁর বেদান্ত দর্শন বিষয়ে, গবেষণামূলক প্রবন্ধ হয়েছিল প্রকাশিত।
ছাত্রছাত্রীদের কাছে, তিনি ছিলেন অসম্ভব জনপ্রিয়। মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার উদ্দেশ্যে, যখন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিদায় নিচ্ছেন, তখন তাঁর পড়ুয়ারা ফুলসজ্জিত গাড়ির ব্যবস্থা করে, তাঁকে হাওড়া স্টেশন পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছিল।


তাঁর রাষ্ট্রপতির মেয়াদকালে, দুটো যুদ্ধে যেতে হয়েছিল ভারতকে। তার মধ্যে প্রথমটা ছিল
১৯৬২ সালে, চিনের সাথে যুদ্ধ। আর ছিল পাকিস্তানের সাথে যুদ্ধ।

শিক্ষকদের সাথে ছাত্রছাত্রীদের সম্পর্ক বড়ই
মধুর ছিল আমাদের দেশ ভারতবর্ষে, সেই সুদূর প্রাচীনকাল থেকে। শিক্ষকেরা ছাত্রছাত্রীদের
জীবনে বড় হতে ও প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করে
চলেন সবসময়। এরকম অনেক উদাহরণ আমাদের সমাজের বুকে ছড়িয়ে আছে।
আজ শিক্ষক দিবসের পুণ্যলগ্নে, মহান শিক্ষকদের প্রতি আমার যথাযোগ্য শ্রদ্ধা ও
সন্মান জানিয়ে আমার এই লেখায় ইতি টানছি।

( তথ্য সংগৃহীত)








(তিন) 
     শিক্ষক দিবস-------- ভিন্ন ভাবনায়
            সৌম্য ঘোষ


                 ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের ১৩২ তম জন্মদিবস । ভারতে ৫ই সেপ্টেম্বর কে শিক্ষক দিবস হিসেবে পালন করা হয় ১৯৬২ সাল থেকে । বিশ্ব শিক্ষক দিবস ও শিক্ষা উন্নয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৬৩ সাল থেকে ৫ই অক্টোবর কে " বিশ্ব শিক্ষক দিবস" হিসাবে পালন করা হয় । বিশ্বে ১০০টি দেশে শিক্ষক দিবস পালন করা হয়।

                "শিক্ষক" শব্দটির অর্থ কী ?
অত্যন্ত ব্যাপক সন্দেহ নেই । বাংলা " শিক্ষা" শব্দ এসেছে " শাস" ধাতু থেকে । অর্থাৎ শাসন করা বা উপদেশ দান করা । ইংরেজি " education" শব্দটি এসেছে ল্যাটিন " educatum" শব্দ থেকে । যার অর্থ হলো ' বাহির করে আনা' । অর্থাৎ ভেতরের সম্ভাবনাকে বাইরে বের করে আনা । সক্রেটিস বলেছিলেন, " শিক্ষা হলো মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের বিকাশ ।" অ্যারিস্টোটল বলেন, " সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হলো শিক্ষা ।" কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায়, " শিক্ষা হল তাই যা আমাদেরকে কেবল তথ্য পরিবেশন করে না। বিশ্বসত্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের জীবনকে গড়ে তোলা ।

                         আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও অভিমত, জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হলেন------- " মা"। জীবন লাভ করার পর থেকেই জীবনের প্রতি পাতায় আমরা যা শিখি, তার প্রথম শিক্ষক স্বয়ং "মা" । কথায় আছে, একশত শিক্ষকের সমান একজন মা ।

                       এখানে আমি মাননীয় পাঠকদের কাছে একটি বিনীত প্রশ্ন রাখছি,
                       " শিক্ষক কে ?"
----- ছাত্র-ছাত্রীদের ভেতরের শক্তিকে উপলব্ধি করে, সেই শক্তিকে বিকশিত করেন যিনি। তাদের সমস্ত জড়তা- দ্বিধা- ভয় কে কাটিয়ে দিয়ে স্বপ্নযাত্রার সূচনা ঘটান যিনি। যিনি গন্তব্য নয়, বরং পথ হাঁটতে শেখান। যিনি সিদ্ধান্ত চাপিয়ে না দিয়ে বরং কত ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তার কৌশল শিখিয়ে দেন। সকল সীমাবদ্ধতাকে দূরে ঠেলে, সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দেন যিনি -------- তিনি ই হলেন একজন আদর্শ শিক্ষক । শিক্ষা হলো সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের জন্য অব্যহত অনুশীলন ।

                        বর্তমান প্রেক্ষিতে দুই প্রকার শিক্ষা দেখি-------- প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ শিক্ষা। শিক্ষার আনুষ্ঠানিক প্রতিষ্ঠান হলো বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়। পরীক্ষায় অধিক নম্বর পেয়ে জীবনের ইঁদুর দৌড় প্রতিযোগিতায় সফল হওয়ার লড়াই চলে এখান থেকেই। " শিক্ষা আনে চেতনা", বা " শিক্ষা গড়ে দেশের ভবিষ্যৎ" ---- এই বহুকথিত স্লোগানগুলি বর্তমানে ক্লিশ হয়ে গেছে । মানুষ গড়ার শিক্ষা বর্তমানের সিলেবাসে অন্তর্গত নয়। প্রাতিষ্ঠানিক বিদ্যালয় বা মহাবিদ্যালয়ে যত টুকু শেখা হয় বেশিরভাগটাই অপ্রত্যক্ষ শিক্ষা । প্রত্যক্ষ শিক্ষা নামমাত্র বা নেই বললেই চলে । তাই সামাজিক সম্পর্ক, সামাজিক মূল্যবোধ, সহনশীলতা, অসাম্প্রদায়িক মনন- চিন্তন , মুক্তমনে সুসংস্কার এখানে গড়ে ওঠে না।


                      পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে শিক্ষা জগতে স্বাভাবিকভাবে প্রবেশ করেছে নৈ:রাজ্য । বর্তমানে সব কিছুই বাজার অর্থনীতির দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা হয়ে থাকে । সবকিছুই এখন লেনদেন । ফলে, শিক্ষা এখন "পণ্য" । তাই সহমর্মিতাহীন , আনুগত্যহীন, শ্রদ্ধা-স্নেহ-মমতা-দায়িত্ববোধ হীন এক অমানবিক সম্পর্ক দানা বেঁধেছে । শিক্ষক ও শিক্ষা জগতের এই নৈ:রাজ্য আজ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে । বাজার অর্থনীতির যে ব্যবস্থাপনা, যে বিচ্ছিন্নতার শেকড় সমাজের বুকে প্রবেশ করেছে , তার মূল উৎপাটিত না করলে এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব নয় ।।











(চার) 
       শিক্ষক দিবস
                বাপন দেব লাড়ু



" A Good Teacher is Like a candle,
it consumes itself to light the way for others. " --- Mustafa Kemal Ataturk
এক জন সত্যিকারের মানুষ হওয়ার পেছনে শিক্ষকের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে, তা নতুন করে বলার কিছু নেই। সেই শিক্ষক যে শুধু পড়াশোনার ক্ষেত্রেই হতে হবে, তা নয়। তিনি থাকতে পারেন জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রেই, প্রতিটি পদক্ষেপেই। তিনি যে শুধু পড়ুয়াকে শেখাবেন , তাই নয়। তিনি তাকে জীবনে চলার পথে পরামর্শ দেবেন, ব্যর্থতায় পাশে দাঁড়িয়ে উৎসাহ দেবেন, সাফল্যের দিনে নতুন লক্ষ্য স্থির করে দেবেন। তিনি তাকে শুধু সফল নয়, সর্বপোরি একজন ভাল মানুষ হতে শেখাবেন। ঠিক এমনই এক জন আদর্শ শিক্ষক ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণ (৫ই সেপ্টেম্বর, ১৮৮৮ – ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭৫) তামিলনাডুর তিরুট্টানিতে এক দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীন ভারতের প্রথম উপরাষ্ট্রপতি (১৯৫২-১৯৬২) এবং দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি(১৯৬২-৬৭) ছিলেন। তিনি রাজনীতিবিদ, দার্শনিক ও অধ্যাপক ছিলেন। এই শান্ত মানুষটি ছাত্রজীবনে অতি মেধাবী ছিলেন। জীবনে কোনও পরীক্ষায় তিনি দ্বিতীয় হননি। বিভিন্ন বৃত্তির মাধ্যমে তাঁর ছাত্রজীবন এগিয়ে চলে। ১৯০৫ সালে তিনি মাদ্রাজ খ্রিস্টান কলেজ থেকে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তার বিষয় ছিল ‘বেদান্ত দর্শনের বিমূর্ত পূর্বকল্পনা’। বিশ্বের দরবারে তিনি অতি জনপ্রিয় দার্শনিক অধ্যাপক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। ১৯৩১ সালে তাঁকে ব্রিটিশ নাইটহুডে সম্মানিত করা হয়। ১৯৫৪-তে ভারতরত্ন সম্মান পান। প্রথম জীবনে তিনি মহীশুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপনা করেন (১৯১৮)। এ সময় তিনি বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পত্রিকায় লিখতেন। সে সময়েই তিনি লেখেন তাঁর প্রথম গ্রন্থ ‘ দ্য ফিলোজফি অফ রবীন্দ্রনাথ টেগোর’। দ্বিতীয় গ্রন্থ ‘দ্য রেন অফ রিলিজিয়ন ইন কনটেমপোরারি ফিলোজফি’ প্রকাশিত হয় ১৯২০সালে। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েও অধ্যাপনা করেন। দেশ–বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বারবার অধ্যাপনার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছেন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তাঁর গুণমুগ্ধ ছাত্র ও বন্ধুরা তাঁর জন্মদিন পালন করতে চাইলে তিনি বলেন জন্মদিনের পরিবর্তে ৫ই সেপ্টেম্বর যদি শিক্ষক দিবস উদ্‌যাপিত হয় তবে আমি বিশেষরূপে অনুগ্রহ লাভ করবো। সেই থেকে এই দিনটি ভারতে শিক্ষক দিবসরূপে পালিত হয়ে চলেছে।







              বিভাগ-স্মৃতি কথা                   



''সালকিয়া বালিকা বিদ্যালয় ও শিল্পাশ্রম''
                  সুতপা শেঠ

"-কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে তার গৃহশিক্ষক বলেছিলেন, ''এখন বিদ্যালয়ে যাবার জন্য যত কাঁদছ,পরে না যাবার জন্য এর থেকে অনেক বেশি কাঁদতে হবে ''।ছোটবেলায় গল্পচ্ছলে একথা শুনে খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম । কিন্তু এই ভয় বুকে নিয়ে ভর্তি হলাম বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণীতে ।

সালকিয়া বালিকা বিদ্যালয় ও শিল্পাশ্রম

    আমার স্কুলের নাম, ''সালকিয়া বালিকা বিদ্যালয় ও শিল্পাশ্রম''।বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ, গ্রন্থাগার ছাড়া প্রথম সেদিন সবথেকে বেশি নজর কেড়েছিল বিদ্যালয়ের বড় খেলার মাঠ ।এসবের মধ্যেই পরিচয় হল ''দিদিমণি ''-দের সাথে ।পড়া বোঝানো, সব কাজে উৎসাহদান,আবার ভুল হলে বকুনি, সবই পেয়েছি তাদের কাছে ।এরপর পরিচয় হয় আমাদের ''বড়দি''-র সাথে ।প্রথমদিকে ভয় পেলেও পরে তার কাছে সব সমস্যার জন্যই পেয়েছি সহজ সমাধান ।বুঝতেই পারলাম না এসবের মাঝে কোথা দিয়ে কেটে গেল শিশু শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ।বন্ধুদের সাথে হাসিকান্না, ইয়ার্কি-ঠাট্টার মধ্যে দিয়ে কিভাবে কাটত সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত জানতেই পারতাম না ।
       কিন্তু আজ,সে সব শুধুই স্মৃতি, যা সযত্নে রাখা আছে আমার মণিকোটায়।ভবিষ্যতে আমি যেখানেই থাকি, যত দূরেই যাই,চিরকাল আমার স্মৃতিতে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে আমার ''বিদ্যালয়'',আমাদের ''বড়দি '',আমাদের সব ''দিদিমণি ''আর আমার ''বন্ধুরা ''।তাই এই বিদ্যালয়ের এগারো বছর আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ ।











        শিক্ষক ও শিক্ষারত্ন
                ‎ সুনন্দ মন্ডল

দশ বছরের একটি ছেলে ছুটে বাড়ি এসে বলল,
বাবা, শিক্ষক পুজো কেমন জানো?

আমরা জানি দুর্গাপুজো, কালীপুজো, সরস্বতীপুজো হয় নিয়ম মেনে, সময় গুনে।
কিন্তু শিক্ষক পুজো!
সে, কেমন রে?
শুনিনি তো কোনোদিন!

কেন, কালই তো সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণাণের জন্মদিন,
তাঁরই উদ্দেশ্যে পাড়ায় পাড়ায়,
বিদ্যালয় থেকে মহাবিদ্যালয়
ফুল, চন্দন আর ধুপকাঠির গন্ধে ভরিয়ে দেবে।

এটা তো পুজো নয় রে,
এটা পালনীয় দিন।

তাহলে ঐ পাড়ার মোড়ে যে ওরা বলছিল,
এটা নাকি শিক্ষক পুজো!

আরে, সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ শিক্ষক উনি!
তাঁর জন্মদিন মানেই সমস্ত শিক্ষকজাতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানানো।

কিন্তু বাবা, ওরা যে বলছিল
শিক্ষকরা শুধুই ডিম, চা, বিস্কুট খায়
আর অফিসে বসে থাকে!
কোনো ক্লাস করে না।
সেই শিক্ষককে কী শ্রদ্ধা জানানো উচিত?

এসব তোকে কে বলল বল তো?
ধুর, এরকম ফালতু কথায় কান দিবি না কখনো!
শিক্ষক চিরকালীন শ্রদ্ধার, সম্মানের।
শিক্ষা দিয়েই উনারা ছাত্রছাত্রীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়েন।
ওদের সম্মান দিতে না পারিস,
কোনোদিন অসম্মান করবি না।
আর সম্মান জানাবি না কেন?
তোর থেকে বয়সে বড়রা সকলেই শ্রদ্ধার, সম্মানের।

তুই যে স্কুলে যাস,
কখনো দেখেছিস, শিক্ষকরা ক্লাস ফাঁকি দেয়?

না বাবা, সে তো দেখিনি!
তাছাড়া, আমাদের তো বেসরকারি স্কুল।
আমাদের বেতনের টাকায় ওদের সংসার চলে,
তাই ওরা পড়াতে বাধ্য।
আর সরকারি স্কুলে তো ক্লাস ফাঁকি হয়ই!

(বাবা এসব শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল)

কী হল বাবা?

কিছু না, তোকে কোন শিক্ষক কী শেখাল জানি না,
তবে তোর ধারণা আমাকে পাল্টাতেই হবে,
নইলে মানুষ হয়েও অমানুষ থেকে যাবি।
নিজে একজন শিক্ষক হয়ে অযোগ্য সন্তানকে কুশিক্ষা তো দিতে পারি না!

ঠিক আছে বাবা, রাধাকৃষ্ণান ভালো শিক্ষক, ভালো মানুষ, উনি শ্রদ্ধার যোগ্য।
কিন্তু বয়সে বড় হলেই কি সবাই শ্রদ্ধার যোগ্য হন?
তাছাড়া আজ পর্যন্ত কোনো শিক্ষকের কি উনার মতো আদর্শ আছে?

এখন আদর্শ, সম্মান, শ্রেষ্ঠত্ব, প্রতিপত্তি সবই টাকার মাপকাঠিতে বাঁধা।
শুনেছি, তুমিও টাকা দিয়েই চাকরিটা পেয়েছিলে!

বাবা, আমি উনার মতোই শিক্ষক হতে চাই!
কত টাকা লাগবে এখন সেরকম শিক্ষারত্ন হতে?

(প্রশ্নের মুখে পড়ে বাবা চুপ করে গেলেন)
           








শিক্ষক জীবনের অম্লমধুর কিছু অভিজ্ঞতা
           ডাঃ নরেন্দ্রনাথ নস্কর

দেখতে দেখতে বয়স যেমন বেড়ে যায়,তেমনি জীবনের অভিজ্ঞতাও কম হয় না।
প্রায় পঁচিশ বছর হয়ে গেল স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষক হিসেবে ।একসময় কে ভেবে ছিল ডাক্তারির শিক্ষকতা করব। ভেবেছিলাম প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে জীবন কাটিয়ে দেব। কিন্তু ভগবানের ইচ্ছা অন্যরকম। তার ইচ্ছাই পূর্ণ হয়। তবে তিনি যাহা করেন মঙ্গলের জন্যই করেন এটা বারে বারে দেখেছি।
প্রথম প্রায় চার বছর এম বি বি এস কোর্সে পড়াবার পর পরীক্ষা দিয়ে একটা স্নাতকোত্তর ইন্সটিটিউটে শিক্ষক হিসাবে যোগ দিলাম। এখানেও দেখতে দেখতে কুড়ি পেরিয়ে একুশ বছর প্রায় হয়ে গেল। বছরে বছরে কত ডাক্তার যে এখানে পড়তে এল তারপর পাশ করে বেরিয়ে গেল কত আর মনে রাখব।
এই নাতিদীর্ঘ শিক্ষকতার পথে সামান্য কয়েকটা ছোট্ট অভিজ্ঞতা এখানে বর্ণনা করতে চেষ্টা করব।

কয়েক বছর আগে একদিন দক্ষিন কলকাতার গড়িয়াহাটে সবে মাত্র গাড়ি থেকে নেমেছি।
সাথে আমার জীবন সঙ্গিনী আছে।
দেখি এক ভদ্রমহিলা এসেই আমার পায়ে প্রণাম করতে গেলেন। মুখ দেখে চেনা চেনা মনে হল। কত ছাত্র ছাত্রী শিক্ষক জীবনে এসেছে,গেছে কত আর মনে রাখব? যাই হোক বললাম তোমার তোমার নাম যেন কি ছিল। মেয়েটি বলল দেবারতি চক্রবর্তী। স্যার আপনি সেবারে না থাকলে আমার পাশ করা কঠিন হয়ে যেত। আপনি আমাদের মত ছাত্র ছাত্রীদের নানা ভাবে কত যে সাহায্য করেছেন কি বলব।
এদিকে আমার স্ত্রী শুনে তো মনে মনে ক্ষুব্ধ হচ্ছে বুঝতে পারছি।কিন্তু অভদ্রের মত চলে যেতেও পারছি না,বাধ্য হয়ে বললাম ঠিক আছে একটু তাড়া আছে চলি।
আমার স্ত্রী বেজার মুখে বলল, শুধু ছাত্রীদের তুমি সাহায্য কর দেখছি। ছাত্রদের সাহায্য করার কথা তো কোনোদিন শুনিনি।
বললাম তুমি কত টুকু জান, কত ছাত্রকেও পড়াশুনায় সাধ্য মত সাহায্য করে গেছি কয়জন জানে বল।
আসলে এটা মেয়েদের বৈশিষ্ট্য।আরেকজন মেয়ে,বিশেষ করে যদি দেখতে ভাল হয় তাহলে কত প্রশ্ন যে শুনতে হবে তার ইয়ত্তা নেই, তারপর সেটাকে প্রশমিত করতে অনেক সময় লেগে যায়।
অনেক ছাত্র ছাত্রী যে নানা সময় পড়াশুনা নিয়ে ফোন করে। কেউ থিসিস নিয়ে,কেউ অন্য কোন টপিক নিয়ে।
বাড়িতে যদি ছাত্রের ফোন আসে কোন অভিযোগ আসে না। কিন্তু কখনো যদি কোন ছাত্রীর ফোন আসে তখন কত যে প্রশ্নর উত্তর দিতে হবে কি বলব। অমূলক নয় এটা বেশিরভাগ মেয়ের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট মনে হয়। এখন এগুলো গা সহা হয়ে গেছে।
একবার কি হল একটা জাতীয় সেমিনারে প্রধান বক্তা হয়ে আমন্ত্রিত হয়েছি। স্বয়ং কলেজের অধ্যক্ষ ফোন করে আমন্ত্রণ করেছেন। তিনি মনে হয় কোন একটা বিভাগীয় প্রধানকে কোওডিনেটার করে দিয়েছেন বাকি কাজ গুলো করে দিতে।
সেই বিভাগের প্রধান ছিলেন এক মহিলা। একদিন রাতে দেখি সেই মহিলার ফোন, কি বিষয়ে বলতে হবে সেইটা জানিয়ে দিতে চান ।
সেদিন স্ত্রী পাশে ছিল। ব্যস যায় আর কোথা। কত উপদেশ মহিলাদের সঙ্গে অত কথা বলতে নেই, আরো কত কি। ভদ্র মহিলা সেই সময় ফোন ছিলেন। ভাগ্যিস শুনতে পাননি। কিযে ভাবতেন? পেয়েছেন কি না তাও বলতে পারছি না।
সারা ভারতবর্ষে আমাদের ছাত্র ছাত্রী ছড়িয়ে আছে। নানা উচ্চ পদ তারা অলঙ্কৃত করছে। যখন কোন কেন্দ্রীয় দলের সদস্য হয়ে কোথাও অন্য রাজ্যে যাই দেখি অনেক জায়গায় আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা এখনো চিনতে পারে।অনেকে প্রণাম করতে আসে।

সম্প্রতি আগের বছর উরিস্যায় এক প্রবল ঘূর্ণীঝড় আছড়ে পড়ে ছিল। কয়েক ঘন্টার মধ্যে কত যে গাছ পালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে,কত কাঁচা বাড়ি যে পড়ে গেছে তার ইয়ত্তা নেই।
 সেবারেও এক কেন্দ্রীয় জনস্বাস্থ্য দলের সদস্য হয়ে উরিষায় যেতে হয়েছিল।
ওখান গিয়েই রাজ্যের উচ্চপদস্থ স্বাস্থ্য অধিকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকে বসতে হয়েছিল ।
সেখানে বৈঠকের সময় একজন উচ্চপদ বিশিষ্ট অধিকারী মাঝখান থেকে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য অধিকর্তাকে বললেন স্যার ইনি আমাকে পড়িয়েছিলেন যখন আমি স্নাতকোত্তর ছাত্র ছিলাম।
ভাবলাম এরাও এখনো আমাদের মনে রেখেছে। সেখানে তিনিই হলেন আমাদের পরিদর্শনের প্রোটকল অফিসার । কয়েকদিন তার সাথে বিধস্ত জেলার অনেক স্থানে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেখে এসে রিপোর্ট দিয়েছিলাম। সেই ছাত্র সেবারে এর বাইরেও অনেক জায়গা ঘুরে দেখিয়েছিল।
একবার অন্ধ্রপ্রদেশে এক কনফারেন্স এ যোগ দিয়েছিলাম।সেবারেও দেখি সেখানকার অর্গানাইজিং সেক্রেটারি আমাদের এক ছাত্র। দেখি অনেকের সামনে প্রণাম করতে এসেছিল। একটা সেশনের চেয়ারম্যান করে দিয়েছিল। কত যে বলব তাদের কথা এই অল্প পরিসরে।
এই পশ্চিমবঙ্গেরও কোন জেলা কোন অফিসিয়াল কাজে গেলেও দেখেছি কত যে ছাত্র রয়েছে। তারা অনেকেই এখনো দেখলে চিনতে পারে। আমরা হয়তো ভুলে গেছি। কিন্তু তারা মনে রেখেছে। কেউবা হয়ত কথা বলার ভয়ে দুরে সরেও যায়। সেটা খুবই কম।

শিক্ষক জীবনের এটাই প্রাপ্তি।
এদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ।
এরা সবাই ভালো থাকুক এই ভগবানের কাছে প্রার্থনা।








                 বিভাগ-ছোটোগল্প                
      
     আমার প্রিয় শিক্ষক
                    আব্দুল রাহাজ

দিনটা ছিল সবে হাইস্কুলে ভর্তি হওয়ার পাঁচ দিন পর সম্ভবত মনে আছে সেদিন আমি তৃতীয় বেঞ্চের প্রথমদিকে বসেছিলাম স্যারেদের খুব ভয় করছিলাম পাশে ছিল আমাদের গ্রামের পাঠশালার বন্ধু কাইফ আর মইফুল ওরাতো হাসিখুশি নিয়ে বসে আছে আমি ভয়ে ভয়ে ক্লাসগুলো করতাম প্রথমদিকে । সেই ক্লাসটা ছিলো ভূগোল



 আমার এখন ও স্পষ্ট মনে আছে স্যার বলেছিল এই পুঁচকে বইটা দাও আমি তো ভয়ে ভয়ে বইটা দিয়ে এলাম সারা ক্লাস হাসিতে ফেটে পরলো সেদিনের মত ক্লাসটা ভালোভাবে করলাম ক্লাসের শেষে স্যার বলল তোমার নামটা কি আমি আস্তে আস্তে বললাম আব্দুল রাহাজ আব্দুল জাহাজ আমি বললাম না না স্যার রাহাজ স্যার একটু হেসে বলল ও আচ্ছা ঠিক আছে আবার কালকে দেখা হবে। সময়ের সাথে সাথে স্যারের সাথে খুব আলাপ-পরিচয় হয়ে গেল আমাকে বিভিন্ন উপদেশ দিত মনে করতাম তিনি আমার কাছে শ্রেষ্ঠ আরেকটি স্যার ছিল আমাদের তিনি নিতেন জীবন বিজ্ঞান খুব ভালো বোঝাতেন প্রথম দিনেই আমাকে ভালোভাবে চিনে ফেলে কারণ ওই দিন আমি খেলা সম্পর্কিত বেশ উত্তর দিয়েছিলাম তারপর থেকে সব স্যার ম্যাম দের সাথে বেশ আলাপ পরিচয় এর মাধ্যমে চেনা পরিচিত হয়ে যায় মজার ব্যাপার হলো ওই স্যারের সাথে আমি সাইডলাইন রেফারি করতাম ইস্কুলে খেলার সময় আরো দুজন স্যার ছিলেন তারা আমাকে সবসময় ভবিষ্যতের গাইড করতেন ভূগোল স্যার জীবনবিজ্ঞান স্যার সত্যিই আমার কাছে ছিল স্কুল জীবনের শ্রেষ্ঠ স্যার প্রত্যেক শিক্ষক দিবসের সময় স্যার আমাদের অনুপ্রেরণা ছিল বেশ ওই দিনে আমরা তাদেরকে খুব শ্রদ্ধা করতাম দেখতে দেখতে স্কুল জীবনের শেষ পর্যায়ে সে অশ্রুসিক্ত জলে তাদেরকে বিদায় দিয়ে আজ দুবছর হলো আমাদের স্কুল জীবন শেষ কিন্তু সেই সব এর গুলোর উক্তি উপদেশ আজও আমাকে চলার পথে সাহায্য করছে। সত্যিই তারা পাশে না থাকলে আমি হয়তো লাস্ট বেঞ্চের ছাত্র হয়ে যেতাম শিক্ষক দিবসে তারাই হচ্ছে আমার শ্রেষ্ঠ স্যার যা
আজীবন আমার মণিকোঠায় গেঁথে থাকবে






                    বিভাগ- গল্প                     
     
  ( গল্প- এক)    

               ছায়া
                    কবিরুল
           

     সুদাম পড়াশোনায় অমনোযোগী হলেও শিক্ষাগুরুর কথা মানত কদর করত। উনারা যা বলত তাই শুনত। শিক্ষক মহাশয়রা মহাত্মা গান্ধীর উপমা দিতেন। সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণনের কথা বলতেন। বাপুজির জীবন দর্শনের কথা বলত। বাপুজীর সততা ছাত্রদের মুগ্ধ করত। রাধাকৃষ্ণননের নীতি আদর্শ সবাই মন দিয়ে শুনত। সব ছাত্ররা নীতি বাক্য না মানলেও সুদাম মানত।
      সুদাম ছোট থেকেই সৎ হবার চেষ্টা করে এসেছে। আদর্শবান চরিত্রবাণ পুরুষ হতে চেয়েছে। সৎ শিক্ষক হতে চেয়েছে। এই জন্য লেখাপড়ায় অনেক পিছিয়ে পড়লেও সুদাম ছিল শিক্ষকদের কাছে চোখের মণি।
     তাই প্রথম থেকেই শিক্ষকের সাথে একটা ভাল বণ্ডিং গড়ে উঠেছে। যেটা ওর কর্মজীবনকে অনেকখানি প্রভাবিত করেছিল।
      সুদাম জীবনে চেয়েছিল একজন বড় আদর্শবান শিক্ষক হতে। শিক্ষার বীজ সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে। মানুষ গড়ার কারিগর হতে।
      তবে জীবনে কোন কারণে সুদামের শিক্ষক হয়ে ওঠা হয় নি। জীবনের পথ থেকে সে সরে গিয়েছিল। ভাগ্যচক্রে সুদামকে ভাতের জন্য অন্যভাবে রোজগারের পথ বাছতে হয়েছিল।

  তবে সুদাম সারাজীবন সৎ থেকে গেছে। আর তার সুফল সে হাতে নাতে পেয়েছিল। যদিও তারজন্য চোখের জল কম ফেলতে হয়নি সুদামকে। পুরষ্কারও ভাল জুটেছিল

     ****** ****** *****

          দাদুর হাত ধরে খুব ছোটতে সুদাম পনেরোই আগস্টের দিন পাড়ার অনুষ্ঠানে এসেছিল। সেদিন ঐ অনুষ্ঠানে মহাত্মা গান্ধীর উপর একটা নাটক হয়। চোখের সামনে নাটক দেখে বাপুজীকে প্রত্যক্ষ করল। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ আর নীতি সুদামের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠল। যেটা স্কুলের শিক্ষকরা দিদিমণিরা বারবার বলত। সুদামের কাছে গান্ধীজি ছিল প্রকৃত শিক্ষক। আদর্শ শিক্ষাগুরু।
     যদিও সুদাম সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণনের নাম শুনেছিল। উনার ধ্যান ধারণাও সুদামের চিন্তন আর মননকে প্রসারিত করেছিল।
        সেই দিন থেকেই গান্ধীজির চেতনা সুদামের মনে শিউলি ফুল হয়ে ফুটেছিল। তবু শিক্ষক রাধাকৃষ্ণণ মুছে যায়নি।
সুদাম চেয়েছিল বড় হয়ে একজন আদর্শ শিক্ষক হবে। হতে পারেনি। কারণ পড়শোনা বেশীদূর চালিয়ে নিয়ে যেতে পারেনি।
 সুদামের কাছে বাপুজীই রাধাকৃষ্ণণ।
      সেই যে গান্ধীজির আদর্শ ওর মনে ঢুকল, সেই থেকে তা ঢাল হয়ে সুদামকে রক্ষা করে এসেছে।
     ....... ....... ....... ....... .........

        এরপর অনেক বছর কেটে গেছে। কিন্তু সুদামের গান্ধীবাদ মন থেকে মুছে যায়নি। বোকা , গোবেচারী , সরল সুদাম জীবনে গান্ধীবাদের পরীক্ষায় পাশ করল বটে , তবে নিজের ক্যারিয়ারটা শেষ করল।
     রাধাকৃষ্ণননের বীজ রোপিত হয়ে অঙ্কুর বের হবার পর আর বেড়ে উঠল না। শিক্ষক হবার স্বপ্ন মুছে গেল চিরতরে।
     ...... ....... ..... .......... ....... .......

     বারো ক্লাসের বোর্ড এক্জাম। পরীক্ষার হল বেশ থমথমে। সুদাম ভালই লিখছে। সুদামের বন্ধু প্রতীক কিছুই পারছে না।পরোপকারী সুদাম বন্ধুকে দেখাতে গিয়ে গার্ডের কড়া নজরে পড়ল। সুদামের খাতা কেড়ে নেওয়া হয়।
       সুদাম আর পরীক্ষা দিতে পারেনি। সুদাম অহিংসায় বিশ্বাসী। সততায় বিশ্বাসী। বারো ক্লাস পাস করলেই প্রতীকের পুলিশের চাকরি পাকা। ওর বোনেরও বিয়ে দিতে হবে ওকে। সুদাম পারত গার্ডকে সব খুলে বলতে। পারেনি। প্রতীককে বাঁচিয়ে দিল।
     হয়ত বারো ক্লাস পাস করার পর ওর জীবনের মোড় অন্যদিকে ঘুরত। সৎ শিক্ষক হবার স্বপ্নটা বেঁচে থাকত।
     ...... ..... ...... ....... ....... .......
       পরে একবার ......
    অটো চালানোর সময় কুকুরের বাচ্ছা ওর অটোর সামনে চলে আসে আর মারা যায়। ইউনিয়নের ছেলেরা ওকে বেধড়ক মার মারে। সেবারেও গান্ধীবাদের জয় হয়।
    .... ..... ..... ...... ......... .........
 
        সুদামের ক্যানসার আক্রান্ত মা হসপিটালে ভর্তি আছে। অবস্থা সিরিয়াস।
      আজ গান্ধীজির বার্থডে। দুদিন বাদেই পুজো। রাস্তায় সাংঘাতিক ভিড়।

     সারাদিন অটো চালিয়ে ক্লান্ত সুদাম হসপিটালে যাবার সময় পায়নি। সন্ধ্যের অনেক পরে হসপিটালের দিকে পা বাড়াতেই একটা বড় ব্যাগ নজরে পড়ল। কেউ ফেলে গেছে তার অটোতে। ব্যাগে প্রচুর টাকা আর জুয়েলারী।
     বাইরে অনেকটা টাকার দেনা।
      মালদার মঙ্গলবাড়ির সুদাম পারত ব্যাগের সব জিনিস আত্মসাৎ করতে।
      পারল না। হৃদয়ের অলিন্দে লুকানো " গান্ধীবাদ " তার ক্ষণিকের লোভকে মেরে ফেলল।
      রুপেশ কানারিয়া টাকা ও সব গহনা ফেরৎ পেলেও সুদাম সব হারাল।
       ..... ........ ...... ..........
       এগারোটার পর যখন হসপিটালে পা রাখল তখন দেখল মায়ের মরদেহ ফুলের আদরে মুড়ে রয়েছে।
      অনতিদূরেই গান্ধীর মূর্তি। আর কিছু দূরে হাইস্কুলের প্রাঙ্গনে সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণননের মূর্তি। গাঢ় আলো আর ফুলে সুসজ্জিত হয়ে মূর্তি দুটি হাসছে।
       সুদামকে দেখেই হাসপাতালে সমবেত সকলে সমস্বরে চিৎকার করে উঠল -
       " বল হরি হরি বোল !
         বল হরি হরি বোল !
মায়ের মৃত্যু হল বটে । বেঁচে থাকল আদর্শ। গুরুর শিখানো বুলি।
      চিতার আগুণে ঝলসে উঠল মায়ের মরদেহ।
      মরদেহ পুরোপুরি দাহ হলে মায়ের অস্থিভস্ম কপালে ঠেকিয়ে গান্ধীজি আর রাধাকৃষ্ণনের মূর্তিকে করজোড়ে প্রণাম করে অটোর পাশে দাঁড়াল সুদাম।
     মৃর্তিদুটির ছায়া সুদাম আর সুদামের অটোর উপরে পড়েছে।
       ছায়া দুটিই সুদামের চলার পথের সঙ্গী। ঢাল। পথের পাথেয়।
     ছায়া দুটি সততার ছায়া। আদর্শভাবে পথ চলার ছায়া। প্রকৃত শিক্ষার ছায়া।
     সারা জীবন সুদাম ঐ ছায়া দুটিকে আঁকড়ে বেঁচে থাকবে। আর মানুষের মঙ্গল করবে।






(গল্প- দুই) 

      মাষ্টারমশাই
               মিনতি গোস্বামী



এ কি এখানে মাষ্টারমশাই?
নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারে না অলকা।
দরজায় কলিং বেলের আওয়াজ পেয়ে সমর গিয়ে দরজাটা খোলে।অলকা ঘরে ঢোকে।অলকার পা মচকে গেছে।ব‍্যথা তেমন নেই,ফোলা আছে বলে
ডাক্তার বাবুকে দেখিয়ে এক্সরে করে ফিরবে বলে অলকা একাই গেছিল।সমর ঘরে পাঁচ বছরের ঝিমলিকে সামলাচ্ছিল।
বাথরুম থেকে স্নান সেরে এসে মাথার জল মুছতে মুছতে অলকা বলে," ছি ছি,কি দিনকাল হল!
গাটা আমার ঘিনঘিন করছে। "
সমর বলে," স্নান সেরেছো, স‍্যানিটাইজার লাগিয়ে নাও, সব ঠিক হয়ে যাবে।"
"না, সব ঠিক হবেনা। মনেতে স‍্যানিটাইজার লাগানো যায়না।মানুষ এত নোংরা হয়,তাও মাষ্টারমশাই?"
"তুমি তো ডাক্তারখানায় গেছিলে?"
"গেছিলাম, কিন্তু আমাকেই দেখতে হল ও দৃশ‍্যটা।
ঐ যে তোমার পূজনীয় মাষ্টারমশাই, ভীমরতি কাকে বলে! টোটোয় বসে দেখলাম,রেডলাইনের একটা মেয়ের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কথা বলছে।ছি ছি, লজ্জা ঘেন্না বলে কিছু নেই?
দিনের বেলা জনসমক্ষে দাঁড়িয়ে এই. অনাচার?
এত অগণিত ছাত্রছাত্রী,এত চেনা মানুষ, বোধবুদ্ধি লোপ পেয়েছে?
আমরা তো ঐ রাস্তায় গেলে মুখ ঢেকে যাই।মাষ্টারমশাইকে দেখে আমার গা বমি বমি করছিল।এনাকে আবার তুমি তোমার জীবনের আদর্শ শিক্ষক বলো?
আর হবে নাই বা কেন?
টাকা, টাকা। বুঝলে, টাকা বেশি হলে মানুষের চরিত্র খারাপ হয়।লকডাউনের নামে. সাতমাস ধরে
স্কুলে যেতে হচ্ছেনা।কোন কাজ নেই,ব‍্যাঙ্কে ৭০-৮০
হাজার টাকা ঢুকে যাচ্ছে।শরীর তো এমনিই গরম হবে।আর গরম কাটাতে রেড লাইনে হাঁটা।
আরে বাবা, টাকা বেশি হলে কি একটা মেয়েতে মন ভরে?
সাধে এই মাষ্টারদিকে ফেসবুক জুড়ে রোজ গালাগালি দেয় লোকে!
আর সরকারকেও বলিহারি যাই।
আরে বাবা, স্কুল বন্ধ করেছিস,কর।
এদের দিয়ে অন্য কাজ করা।মাইনে তো পাচ্ছে।
সরকারি স্কুলে তো অনলাইনে ও তেমন ক্লাস হচ্ছেনা।বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়িয়ে আসতে বললে এরা জব্দ হত।
ঘেন্না, ঘেন্না।আমার মেয়েকে কোনদিন ও
শিক্ষকতার লাইনে পাঠাবো না।"

সমর এতক্ষণ ধরে অলকার মুখ থেকে সব শুনে বললো," তুমি ভুল দেখেছো।মাষ্টারমশাই
ওরকম মানুষ নন।"
"থাক,আমি ভুল দেখিনি। সাদা পায়জামা
আর পাঞ্জাবি পরে একেবারে বিশিষ্ট
ভদ্রলোক।আমার কখনো ভুল হতে
পারেনা।ওসব ঘাপটিমারা রাঘব বোয়াল।"
আদর্শের ধ্বজা উড়িয়ে বেড়ানো এই সব লোকেরাই নরকের কীট।তাইতো ছাত্রসমাজের​ এত
অধঃপতন।"

সমর অলকার মুখের এই কথাগুলো সহ‍্য করতে
পারছিলনা। কিন্তু মাষ্টারমশাইকে নিয়ে অলকার
সঙ্গে আর কোন কথা বলতে ইচ্ছে করছিল না
বলে সমর চুপ করে যায়। কাজের অজুহাতে তার সামনে থেকে সরে যায়।

তিনদিন পর সন্ধ‍্যেয় রিমোট ঘুরিয়ে লোকাল চ‍্যানেলের খবর দেখতে বসে সমর অবাক।
এ তো তার প্রিয় মাষ্টারমশাই।
লকডাউনে ছ'মাস ধরে মাষ্টারমশাই কি কর্মকাণ্ড করেছেন শহরে তা দেখানো হচ্ছে।
এই ছমাস মাষ্টারমশাই নিজের মাইনের সব টাকা
অসহায় মানুষের সাহায্যে দিয়েছেন।
প্রথম মাস থেকেই গরীবদের রান্না করা খাবার,
কোথাও চাল ,ডাল, সবজি বিতরণ,
কোথাও শিশুদের দুধ ও পথ‍্য দিয়েছেন।
ষ্টেশন চত্তরে থাকা অসহায় মানুষদের তিনি
স্বাভাবিক অবস্থাতেও দেন।
এছাড়া সমাজে যারা অচ্ছুত বলে পরিচিত,
সেই রেডলাইনের শখানেক মেয়ের
মাসকাবারি বাজার, মুড়ি, ওষুধ এবং
সিলিন্ডারে গ‍্যাস ও ভরে‌ দিয়েছেন।
একাজ তিনি একা করেছেন নিজের টাকায়।
এতবড় কর্মকান্ডের জন্য পৌরসভা থেকে শিক্ষক দিবসের দিন মাষ্টারমশাইকে শহরের শ্রেষ্ঠ
নাগরিকের সম্মানে ভূষিত করা হবে।
এই বছরের ডিসেম্বরে ই মাষ্টারমশাইয়ের
চাকরি থেকে অবসরের সময়।
সেই খবর ই দেখানো হচ্ছে।
হিড়হিড় করে সমর অলকাকে টেনে এনে
বসায় টিভির সামনে।অলকা লজ্জায়
মাথা নত করে।আনন্দে সমরের দুচোখে জল।
সমর বলে," শিক্ষকের কাছে কোন
মানুষ ই অচ্ছুত নয়।
নিজের দৃষ্টিটাকে একটু উদার করো অলকা,
তাতে একদিন তোমার মনুষ‍্যত্ববোধ জাগলেও
জাগতে পারে।"






             বিভাগ-  অণুগল্প                    

       অনুগল্প-১
                       মনে পড়ে
          শেখ নিয়ামত ইসলাম


রাস্তা দিয়ে হাটতে হাটতে তময়ানির নজর পড়লো একটা দ্বিতল বিশিষ্ট বিল্ডিং এর দিকে |সদর দরজায় বড়ো বড়ো অক্ষরে লেখা রয়েছে আমডাঙ্গা হাHVই স্কুল |বর্তমানে সে একাদশ শ্রেণীর ছাত্র |কোরোনার কারণে একটানা এখনও পর্যন্ত স্কুলের সহিত সম্পর্ক ছিন্ন |

     সস্কুলের সামনে সে থমকে দাড়াই আর ভাবতে থাকে,আজ তো 5-ই সেপ্টেম্বর অর্থাৎ শিক্ষক দিবস |মনে পড়ে যায় বিগত কয়েক বছর সে স্কুলে শিক্ষক দিবস পালন করে আসছে,আজকের দিনে সে আর ছাত্র থাকেনা,শিক্ষক হয়ে অপেক্ষাকৃত নীচের ক্লাসে গিয়ে ক্লাস নিত,বন্ধুরা দল বেঁধে উপহার কিনে স্যারদের হাতে তুলে দিত,আর পা ছুঁয়ে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিত |

   কিন্তু আজ সে সব কোথায় যেন উবে গেল |ইস্কুল পর্যন্ত খোলা নেই,মনে মনে তময়ানির দুঃখ হয় |










অনুগল্প-২

         ভাঙ্গন
             শ্যা ম সু ন্দ র ম ন্ড ল


সেদিনটার কথা আমার খুব মনে পড়ে। আজ থেকে ২২ বছর আগের ঠিক আজকের দিনটা। অংকের স্যার বাবাকে ডেকে পাঠালেন। বাবা গেলেন।
স্যার জিজ্ঞেস করলেন,ছেলের খাতা দেখেছেন?
বাবা উদ্বিগ্নস্বরে বললেন,কই না তো স্যার!স্যার ও কি ---
স্যার বললেন, হুম। হাফ ইয়ারলিতে ভীষণ খারাপ। ৫০ এর ১৬। ভালোবাসার কাছে বোধহয় এটা আশা করা যায় না।
বাবা লজ্জিত মুখে বসে রইলেন।
স্যার বললেন, ওকে আগামীকাল আনুন।
বাবা এসে ভীষণ বকলেন। বললেন, দুঃখটা কোথায় জানিস? রেজাল্ট খারাপের জন্য নয়,মানুষ হলি না।
এতদিন প্রচুর বকুনি খেয়েছি কিন্তু জেদি প্রাচীরটাকে ভাঙ্গতে পারিনি। কী জানি, সেদিন শেষ কথাটায় প্রাচীরটা ধসে পড়ল! আমি খুব কাঁদলাম।

পরদিন শিক্ষক দিবস। বাবা আমাকে নিয়ে গেলেন।
স্যার আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন, কিরে বাবু আমার বুকটা এভাবে ভেঙে দিতে পারলি?
মাথা নিঁচু করেই আমি ঝরঝর করে কেঁদে ফেললাম।
স্যার আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরে বললেন, আমি জানতাম। কি জানিস বাবা, নতুন করে গড়ে ওঠার আগে নিজেকে এভাবেই ভেঙেচুরে নিতে হয়।










              বিভাগ- সংগীত                      


     শিক্ষক দিবসের গান
               মোঃআলিউল হক

রাধা কৃষ্ণান  রাধা কৃষ্ণান
তুমি ভারতের সুসন্তান।
সেপ্টেম্বরের পাঁচ তারিখে
জন্ম নিলে তুমি তিরুতানিতে।।
অতি মেধাবী ছাত্র তুমি  আদর্শ শিক্ষক
রাজনীতিবিদ দার্শনিক লেখক অধ্যাপক
মহা গুণবান ভারত রতন
ক'জন হয় তোমার মতন
ভারত ভূমির শীর্ষ পদে বসে বাড়িয়েছো দেশের মান।

কীর্তিবান হে তুমি যশরাজ
তোমার গুনে মুগ্ধ সমাজ
তোমার নামে
তোমার গুণে
শিক্ষক দিবসের গান।





        বিভাগ-কবিতা  (প্রথম অংশ)       

       শিক্ষক দিবসে
                 তীর্থবাসী মণ্ডল

পিতা মোর জন্ম দিয়ে
      দেখালো পৃথিবীর আলো
মাতা মোর স্নেহ দিয়ে
     শেখালো বাসিতে ভালো।
শিক্ষক মোরে শিক্ষা দিলেন
          মানুষ হয়ে উঠতে
মালির মতো সুযোগ দিলেন
       ফুলের মতো ফুটতে।
তাঁর শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে
       বিকশিত যেন হই
তাঁর স্নেহ প্রেম আর মমতায়
         সদা জাগ্রত রই।
তাই আজি এই শিক্ষক দিবসে
        তাঁর যুগল চরণ স্মরি
জীবন থাকিতে ঐ চরণের
         যেন সম্মান রাখিতে পারি।
আজি এই পূণ্য দিবসে
       করহ আশীষ মোরে
যেন জীবনের সকল বাধা
       ফেলে দিতে পারি দূরে। 
তাই,  আজ এই শুভ দিনে
       তোমারে স্মরণ করি
সারাজীবনের জ্ঞান পিপাসা
    দাওগো আশীষে ভরি।
          





                           
       হৃদয়ে বাস
          দেবাশীষ মুখোপাধ্যায়


সততায় হোক বাসা
সতত তোমার
জীবন জয়ী হোক
মিথ্যার হার।
নিয়ম শৃঙ্খলা মানায়
চলুক জীবন
একফালি রোদ হও
প্রাণে আমরণ।
তুমি পথ চলো শুধু
উঁচু করে মাথা
জীবনে জীবন যোগ
সাফল্যের বারতা।
অবিরত পথ চলা
শপথ যে গাঁথা
শিক্ষকের আদর্শ মাথায়
আজি চরণে প্রণত মাথা।
   
        






প্রনম্য শিক্ষাগুরু
          তাপস বর্মন


শিক্ষক সে তো মেরুদন্ড
  জাতির এবং দেশের,
প্রনম্য তারা নমস্য তারা
  শ্রদ্ধাভাজন দশের।
জ্ঞানের মশাল জ্বালিয়ে করেন
     অজ্ঞানতা দূর,
স্নেহ শাসন ভালোবাসায়
    সবার মনের সুর।
অনেক সময় কাটিয়ে দেন
   সমাজ গড়ার লক্ষ্যে,
ভবিষ্যতের স্বপ্ন আঁকেন
   শিক্ষার্থীদের চক্ষে।
শিক্ষক শুধু শিক্ষক নয়
ফ্রেন্ড ফিলোজফার গাইড,
তারাই কেবল দিতেই জানে
   নেইকো নেওয়ার রাইট।
পিতা মাতার পরে যাদের
     সর্বাগ্রে হয় স্থান,
তারাই মোদের শিক্ষাগুরু
   আদর্শের পরিযান।
যতই বড় বৃক্ষ হও না
  তাদের হাতে রোপন,
একটিদিন পারলে করো
  শ্রদ্ধা ভক্তি জ্ঞাপন।
      








    শিক্ষক
           বসন্ত পরামাণিক

শিক্ষকই তো মনের ঘরে ছড়িয়ে দিয়ে আলো
দূর করে দেন অজ্ঞানতার অন্ধকারের কালো ।
জ্ঞানের প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে চেনান সঠিক পথ,
তিনিই আবার গড়তে শেখান আলোর ভবিষ্যৎ ।
শিক্ষকই তো মানুষ গড়ার সঠিক কারিগর,
জ্ঞানের আকর প্রাণে প্রাণে ছড়ান পরস্পর।
ক্ষমার মহান আদর্শে তাঁর ভরা হৃদয়-প্রাণ,
কর্তব্যের ব্রত শেখান, তিনিই তো মহান ।








   তিনি  শিক্ষক 
              পিনাকী  মুখার্জী
                
        সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন মহান শিক্ষাব্রতী ,
         প্রথমে  শিক্ষক   দ্বিতীয়  রাষ্ট্রপতি ।
         জন্মদিবস  উৎসর্গ  শিক্ষকদের তরে ,
         স্মৃতির আকাশ  ঝলমলে রোদ্দুরে  !!
                 মায়ের  ভাষা  দিয়ে শুরু
                বাবার হাত ধরে পথচলা !!
           ধ্রুবতারা হয়ে সঠিক পথনির্দেশ
               আজ  তাদেরই কথা বলা !!
               জীবনের  চলার পথে সেই-
               সব  বাড়িয়ে দেয়া হাত  !!
             বর্ণপরিচয় দিয়ে শুরু , ভুল
              শুধরে শেখানো ধারাপাত  !!
              সহজপাঠ তখন সহজ ছিলো
              না  মোটে , না থাকলে পাশে !!
             ভালোবেসে কভু বকে শেখানো ,
           গুন ভাগ যখনি তালগোলে মিশে !!
            এভাবেই ভেসেছে নৌকা স্রোতে
           দাঁড়িয়েছেন  তরণীর দাঁড় হাতে  !!
             তিলেতিলে গড়া এ  সৌধখানি
                উজ্জ্বল যার দর্শন নিভৃতে !!








শিক্ষা গুরু
       আসমত আলী
   
শিক্ষক হলেন জ্ঞানের আলো
   দেশের হাতিয়ার,
মানুষ গড়ার মুন্সিয়ানায়
  নাই তুলনা তাঁর ।
দক্ষ হাতে মানুষ গড়েন
   মানবতা দিয়ে ,
জ্ঞানী হয়ে ওঠে মানুষ
  তাঁদের শিক্ষা নিয়ে।
জ্ঞানের প্রদীপ শিক্ষা গুরু
    বিশ্ব মানব জানে,
মাতা-পিতার পরে তাঁদের
  স্থানটি সবাই মানে ।
শিক্ষক সেতো সূর্যসম
  শিক্ষা জগৎ মাঝে,
তাঁর কিরণে জ্ঞানের আলো
  জ্বলে সকাল সাঁঝে ।
শিক্ষক মানে রাতের শশী
   তিমিরেতে আলো,
সেই গুরুকে জানাই প্রণাম
   থাকুন সদাই ভালো ।।









গর্ব ভারতের
            জগদীশ মন্ডল

পাঁচ সেপ্টেম্বর সাজাই সবাই
শিক্ষক শ্রদ্ধার ভেলা
মনে পড়ে যায় রাধাকৃষ্ণানের
ছোট্ট ছেলেবেলা।
ছেলে নয় তো সোনায় বোনা
তাঁর জীবন বানী,
বিশ্বশিক্ষার পাঠশালাতে
উজ্জ্বল মুখখানি।
গরীব ঘরে জন্মেছিলেন
দারিদ্র হয়নি বাধা,
অধ‍্যাবশায় মনের জোরে
জয়ী হন সর্বদা।
দর্শনশাস্ত্রে অধ‍্যাপনা
দারুণ স্মৃতিধর,
অক্সফোর্ডেও পেয়েছেন
গুণীর সমাদর।
প্রথম উপরাষ্ট্রপতি
পরে রাষ্ট্রপতি,
কৃতী সন্তানের ভারতরত্ন
ছড়ায় আলোর জ‍্যোতি।
শিক্ষক দিবস পালন করি
তাঁর জন্মদিন ঘিরে,
ছাত্র শিক্ষক হৃদয় কাছে
আসে ফিরে ফিরে।
দেশবিদেশের ছাত্রছাত্রী
মহান আদর্শের,
দিনটি এলে গাঁথি মালা
গর্ব ভারতের।









শিক্ষক
       - গণেশ দেবরায়

তুমি আকাশের মতো বিশাল
তুমি সূর্যের মতো  উজ্জ্বল
তুমি জলের মতো স্থির
তুমি ইশ্বরের মতো দয়ালু
তুমি পিতার মতো শাসক
তুমি মাতার মতো স্নেহময়ী
তুমি তৃণের মতো সহিষ্ণু
তুমি বৃক্ষের মতো ধৈর্য্যশীল
তুমি সখার মতো সহযোগী
তুমি ভাইয়ের মতো বিশ্বস্ত
তুমি রামধনুর মতো স্বপ্ন
তুমি বাতাসের মতো শীতল
তুমি পর্বত তুল্য জ্ঞানী
তুমি সাগরের মতো পবিত্র,
তুমি শিক্ষক - তবেই তুমি শিক্ষক।









     শিক্ষক
         সুশান্ত মজুমদার

তোমার হাতেই হাতে খড়ি
পাঠের সহজ পাঠখানি,
তোমার রাঙ্গানো দীপ্ত আঁখিতে
সফলতার অদৃশ‍্য হাতছানি।
রেগে যেতে ভীষণ তুমি
পড়া না'পারার তরে,
ঝাঁঝালো কন্ঠে করতে ভর্ৎসনা
অজানা সব অক্ষরে!
রাগ অভিমান হত মনে
শুনে তোমার কটু-বচন,
বিষন্ন হৃদয়ে ফিরতাম গৃহে
ছেড়ে তোমার শিক্ষাঙ্গন ।
ফাঁকি দিয়ে স্কুল পালিয়ে
খেলায় মাতিলে মন,
স্নেহের সুরে বলিতে ওরে
পড়বি চল এখন!
জ্বালিলে তুমি মনের প্রদীপ
প্রতিভার সুষ্ঠু বিকাশে,
ছড়াইলে তুমি জ্ঞানের আলো
ভ্রান্ত অশিক্ষার আকাশে।
অধুনা কালে নিয়মের জালে
বন্দি তব উত্তরসূরি,
বাঁচে রঙ্গে  সবল অঙ্গে
নাহি তবু বাহাদুরি।
সুশীল সমাজ তুলিছে আওয়াজ
শিক্ষক,  কোন্  ছার !
সমাজের অবক্ষয় মেরুদন্ড হীনতায়
করিবে  কে উদ্ধার ?
     







শিক্ষার সেরা
           দীপঙ্কর বেরা

রোজ শিখতে চাই যদি কেউ শেখায়
রোজ শেখাতে চাই যদি কেউ শিখতে চায়,
এসব তো চলার পথে সবার জন্য
সব শিক্ষার সেরা শিক্ষা স্কুল শিক্ষক বরেণ্য।
বড় হয়ে যা শিখছি তা তো করতে পারি জাস্টিফাই
ঠোক্কর বুঝতে পারি যতই হোক হাইফাই,
এসবই মানুষকে চেনায় স্কুল জীবনের শিক্ষক
সেই শিক্ষাই সেরা শিক্ষা তোমার আমার দীক্ষক।
ঘরের শিক্ষা ভুল হতে পারে, ভুল হয়ও;
সেই ভুল শুধরে দিয়ে স্কুল শিক্ষা এনে দেয় জীবনের জয়ও।
শিক্ষক তাই জাতির নায়ক হৃদয়ে থাকে সবার
আসল শিক্ষা পেতে তাই, স্কুলে যায় বইয়ের ভার।










আলোকবর্তিকা
             সৌভিক রাজ

আমার প্রিয় শিক্ষক ও শিক্ষিকার উদ্দেশ্যে বিনম্র শ্রদ্ধায় নিবেদিত-


শিক্ষক আমাদের আলোকবর্তিকা,
      আদর্শের প্রতীক।
তাঁরই দেখানো পথে হেঁটে
   ছাত্রছাত্রীরা আজ পথিক।
জ্বালিয়ে রেখে জ্ঞানের শিখা
তুমি অন্ধকারে আনো আলো
হে শিক্ষক মহান তুমি
জগতের সকল ভালো।
পরমস্নেহে ধন্য হয়ে তোমার কাছে
আমাদের শিক্ষা হয় যে শুরু,
তুমি আমাদের মানুষ করো
তাই  তো তুমি পরম গুরু।
শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় তুমি
চির উজ্জ্বল থাকবে মম মনে,
তোমার দানে চির ঋণী মোরা
প্রনাম জানায় তব চরণে।
যা কিছু শিখেছি তোমার দানে
তুমি দিয়েছ প্রকৃত শিক্ষ্‌
দাও তবে আবার নতুন করে
মানুষ হওয়ার দীক্ষা।
                  







শিক্ষক
         জুয়েল রুহানী


মাথার'পরে ছাঁয়াতরু হয়ে
ছাঁয়া দানে যিঁনি তৎপর,
জীবনগাঁথার যত মায়া আছে
অবদান আছে স'বি তার।
পিতৃ-মাতৃ পরিচয়ে যিঁনি-
রয়েছেন কী কভূ পিছে?
স্নেহ-মমতার উৎস তিঁনি-
এতটুকু নয় যে মিছে।
যিঁনি জীবন জয়ের মন্ত্র দিয়ে
স্বপ্ন দেখান নতুন করে,
তিঁনি আপন স্বার্থ বিকিয়ে দেন
স্বার্থ বিলান মোদের তরে।
শ্রদ্ধা-ভক্তি যত ভালোবাসা-
শিক্ষক যিঁনি তাঁহার তরে,
তাঁহার চোঁখে শিশু হয়ে-
রয়ে যাব আমি জীবন ভরে।









শিক্ষক দিবস স্মরণে
             সৌমেন্দ্রনাথ হালদার


শিক্ষক দিবস এলেই ভাসে
তোমার মুখের ছবি,
জ্ঞানের আকাশ আলো ক'রে
জ্বলন্ত এক ' রবি ' ।
সেদিন তোমায় ফুলে সাজাই
সাজাই তোমায় চন্দনে ,
এমন দিনে বাঁধা পড়ি
শিষ্য-গুরুর বন্ধনে ।
স্মরণ করি নত শিরে
তোমার কীর্তি-গাথা ,
জীবন-পথে চলতে যেন
উঁচু থাকে মাথা ।
'সর্বপল্লী ' তোমায় যেন
বুকে রাখি ধ'রে,
আলোর ও পথ থেকে যেন
কভু না যাই স'রে ।

      




     বিভাগ- কবিতা (দ্বিতীয় অংশ)         

শিক্ষক দিবস
       মন্দিরা ভারতী

জীবনের প্রথম শিক্ষক মা
তার হাত ধরেই শিখি পথ চলতে,
শিখি মানুষ চিনতে
শিখি ভালোভাবে কথা বলতে।
শিক্ষার সীমারেখাটুকু শুধু বিদ্যালয়ের মধ্যেই
থাকে না আটকে ,
জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত শেখায়
আরও ভালোভাবে বাঁচতে।
বিদ্যালয় দেয় নানান বন্ধু
দেয় নানা জ্ঞান,
শেখায় স্নেহ ভালোবাসা
শেখায় আদর সম্মান।
জানি চোকানো অসম্ভব শিক্ষকদের ঋণ ,
তাই তাদের জানাতে সম্মান
বেছে নেওয়া হয় এই দিন।
এ দিনের মূল্য অনেক
এ দিন সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণানের জন্মদিন,
সকলের প্রতি প্রেম ভালোবাসা নিয়ে
সুন্দরভাবে পালিত হোক বারবার এই দিন।








 গুরু প্রণাম
          কনিকা রায়

হে শিক্ষক ,
হে শ্রেষ্ঠ সমাজ গুরু,
তোমায় জানাই প্রণাম।
তোমার দেওয়া শিক্ষায়-
এমন সুন্দর জীবন পেলাম।

তোমার আশিসে গুরু ,
মোদের প্রথম পথ চলা শুরু।
পদে পদে তোমার শিক্ষা মোরা করেছি অর্জন,
ধিরে ধিরে অশিক্ষাকে করেছি বর্জন।

তোমার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে-
কেউ হয়েছে ডাক্তার,
কেউ হয়েছে ইঞ্জিনিয়ার,
আবার কেউ হয়েছে সুসন্তান পিতা মাতার।

হে শিক্ষক ,
হে শ্রেষ্ঠ সমাজ গুরু,
তোমায় জানাই প্রণাম
তোমার দেওয়া শিক্ষায় -
এমন অপরূপ জীবন পেলাম।








শিক্ষার আলো
          উমর ফারুক

আমাকে একটুকরো
শিক্ষার আলো দাও!
কেননা জীর্ণ জীবনে বেঁচে থাকা মানে
অন্ধ দাঁড়কাক সেজে বিশ্ব পরিভ্রমন!
অন্ধ পরিব্রাজক হয়ে
দেশ দেশান্তরের যন্ত্রণা
আর ঘুম আমাকে অন্ধ করে দেই।
ফেরারী মন চায় একটু আলো।
কিন্তু শিক্ষার সবটুকু
আলো নেই সবুজ পৃথিবীতে !
শিক্ষার এক আলোক রশ্মি নির্গত হয়ে
যে মহল আলোকিত করে
সেই মহলে অন্ধ দাঁড়কাক ঢুকতে পারেনা
অন্ধকারে চোখ মেলে
এখনও তার জাতিকে
আলোকিত করতে পারে নি।







  পদ চিহ্ন এঁকে গেছো ...
         বিকাশরঞ্জন হালদার

  নিঝুম বুকে ধরো দূরের দৃষ্টি দার্শনিক
দীক্ষকের ঘোর শ্রান্তি অমর্যাদা দ্রবীভূত তোমার ব্যথায়
ব্যগ্র অন্তর মেঘের মতো ঘিরে ধরে একান্ত আকাশ
সার্থক পথিক পদ চিহ্ন এঁকে গেছো জ্ঞানের ভুবনে
অন্ধকার ভয় পেয়ে দূরে সরে যায়

তোমার আসন কাঁদে

আগুনের আশিস এসে মন ছুঁয়ে দেয় শিক্ষক দিবসে !!







বৃদ্ধ শিক্ষক
          আব্দুল রহিম

আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথাগুলো,
যারা যুগ যুগ ধরে নিংড়ে দিয়েছে সাফল‍্য
যাদের জায়গা মঞ্চের পিছনে চেয়ারগুলো
যারা আসতো ফুটন্ত রৌদ্রে পুড়ে পুড়ে
পায়ে প‍্যাডেল করে আর এক হাতে ছাতা ধরে
তারা কত না ছাত্রের অট্টহাসি,ঠাট্টা ব‍্যাঙ্গাত্মক
সহ‍্য করে,তবু তারা আদর্শবান ছাত্র গড়ে ।।

আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথা গুলো
যারা ঢিলা-ঢালা প্যান্ট শার্ট আর চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা পড়ে তবু তারা আর্দশবান ছাত্র গড়ে
আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথা গুলো
যাদের জরাজীর্ণ শরীরটা বাঁকিয়ে পড়ে
তবু মৃত‍্যুকে ভয় না করে,পা'য়ে ছেঁড়া জুতা, হাতে ভাঙা ঘড়ি পড়ে চলে আসে ঠিকঠাক সময় ধরে ।।

আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথা গুলো
যাদের জায়গা পিছনের চেয়ারগুলো
তবু তারা দুঃখ না পেয়ে, আর্শীবাদ করে বৃদ্ধ অন্তরে
তারা মৃত‍্যু থেকে হয়তো এক পা দূরে
তবু তারা কতনা রবি কাজী নেতা স্বামী নিজের হাতে গড়ে,কিন্তু কেউ কি তাদের একটুও মনে করে
তারা বসে থাকে মঞ্চের পিছনের চেয়ারে।।

আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথা গুলো
যারা বুকের রক্ত দিয়ে নিয়ে এসেছে সাফল‍্য
দেখিয়েছে যুগ যুগ ধরে অন্ধ পৃথিবীকে আলো
আমি বলছি সেই বৃদ্ধ শিক্ষকের কথা গুলো
যারা হাসতে হাসতে মৃত‍্যুবরণ করে
তবু তারা আজীবন মানুষের মনে বিরাজ করে
তাদের কথা যতই বলি কম পড়ে'রে।।









শিক্ষক
     অনিন্দ্য পাল

চারা গাছে জল , সার প্রভৃতি আদরে ফলিয়েছি
বাগান ফসল
সবুজ জীবন
এখন সেই সব বৃক্ষে নতুন আশাফুল
কচিপাতায় গন্ধ লেগে আছে শিকড়ের
মনজুড়ে বাষ্প ওড়ে সোঁদা মাটির
ওরা ইচ্ছা নদীএখন

তবু যেন শান্তি নেই,
স্বস্তি পাই না সেই আনন্দের মত
যেমন দেখেছি সেই সব নক্ষত্রদেবতাদের
যেমন দেখেছি আমাদের সেই সব ধ্রুবতারাদের
যাদের আঙুল ধরে হেঁটে এসেছি
আদিম বন্ধুর পথ
যাদের উচ্চারণে মুদ্রিত হয়েছিল সু-ভাগ্য
যাদের ক্ষয়ধুলো গড়ে দিল আমাদের বর্তমান,
যাদের ভালোবাসা এগিয়ে দিল ভবিষ্যৎ যাপন
সেই সব তারাদের আলোয় এখনও কেটে যায়
নির্দায় রাত
সেই সব মহাজীবনের মত হইনি এখনো
সেই সব ইশ্বরের মত হইনি এখনও
ছায়া হয়ে রয়েছি বিপুল সেই মহত্ত্বের

আমাদের ‌শুধু সময় মেপে বৃষ্টি ঝরা
সঞ্চয় নেই মায়াজলের
পুষ্করিণীর ঘাটে পাঁককাদা ভরা
সব আছে তবু কি যেন নেই, গভীরে আমাদের
শিকড়ে নতুন বালিমাটি দাগ
পুরানো কাদা সব ধুয়ে মুছে গেছে
হিসেবি স্নেহ আর ভালোবাসার ভাগ
আমাদের এখন ঘন্টা পাঁচেক
আমাদের এখন, সাবধান !

তাই আয়নায় খুব ভয় হয় যখন
চোখ বুজে দেখি সেই সব পদাঙ্ক
সেই সব মন্দিরে চুপচাপ বসি
যদি মেলে, এই ভুল অঙ্ক।










আমার শিক্ষক
            বিমল মণ্ডল

ক্লাসের মধ্যে পড়া না করে এলে
কান ধরে দাঁড় করিয়ে রাখতেন এক পা তুলে
সবার কাছে রাগি স্যার পরিচিত স্কুলে
গোঁফ জোড়া দেখেই মাত্র যায় প্যান্ট খুলে
একদিন তিনি হুংকার তুলে ভয়েসচেঞ্জ ধরে
উত্তর পেয়েও কি জানি আমায় বেশ মারে
শাসিয়ে পাঠান মনিডারকে লাঠির খোঁজে
সাঁইসাঁই করে মেরে যান, থাকি চোখ বুজে
ভুলটা আমার কোথায় যদি জানতাম পরে
শুধরে নিতাম মায়ের কাছে গিয়ে ঘরে   
মাথা নেড়ে বলেন,'স্যার ভুল নেই তোমার কোন
আসার পথে দেখে ছিলাম সকালে খেলছিলে যেন।'
এবার বুঝেছি স্যারের কাছে মার কেন খেলাম?
প্রণাম আর শ্রদ্ধা জানিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম।








                   শিক্ষক দিবস
                   হামিদুল ইসলাম
                   

আজ শিক্ষক দিবস
আমরা জানি, শিক্ষক শিক্ষার মেরুদণ্ড
শিক্ষক জাতির গুরু
শিক্ষককে তাই মর্যাদা দিই আমরা
শিক্ষক দিবস পালনের মধ‍্য দিয়ে ।।

পাঁচ সেপ্টেম্বর মহান শিক্ষক ডঃ রাধাকৃষনের জন্ম দিবস
সেদিনই আমাদের শিক্ষক দিবস
ডঃ রাধাকৃষন ছিলেন মহান শিক্ষা গুরু
মহান পণ্ডিত
তাঁকে আমরা চিনি প্রতিটি নখদর্পণে ।।

এ বছর পৃথিবীতে সাঙ্ঘাতিক মহামারী
তাই স্কুল কলেজ বন্ধ
শিক্ষক দিবস আমরা এবার পালন করবো
আমাদের বাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে
আর মহান শিক্ষক ডঃ রাধাকৃষনের প্রতিকৃতিতে মালা দিয়ে ।।

ডঃ রাধাকৃষনের আদর্শে আমরা পথ চলি
সে পথ থেকে হবো না বিচ‍্যুত
আমরা সেরকম শিক্ষক হতে চাই
আগামী দিনে আমরাই দেশ গড়বো সে পথে
এসো সবাই মিলে হাতে হাত রাখি ।।










    গুরুমশাই
             শুভ্রাংশু কুম্ভকার


মোটা চশমার গুরুমশাই প্রাথমিকে,
এঁকেছিলেন স্বপ্ন, প্রথম আমার চোখে।
অক্ষরজ্ঞান, সহজপাঠ, কিশলয়ের সাথে,
নবগণিতের মুকুলেরা আনন্দেতে মাতে।
শব্দ, বাক্য, রচনাশৈলী বাঁধছি যখন বুকে,
গুরুমশাই ভাষ‍্যপাঠ শেখান অমৃত মুখে।
যা ঘটছে চোখের সামনে বিজ্ঞান তা সবই,
ভালো করে ভাবলে সহজেই বুঝতে পারবি।
শেখানোর সেই আদবকায়দা আজও মনে আছে,
সেই রীতিকেই আঁকড়ে নিজেও শিক্ষা দিই সমাজে।
হয়তো সমাজ বদলে গেছে পরিস্থিতির চাপে,
শিক্ষার অর্থ একই আছে সকল রকম মাপে।
আচরণের পরিবর্তন ঘটবে যখন ভালো,
অজ্ঞানতার আঁধার মুছে আসবে শিক্ষার আলো।
শিক্ষকদের চিরকালই নাছোড়বান্দা জেদ,
সকলকে শিক্ষিত করে ঘুচিয়ে দেয় বিভেদ।
আপনি দিলেন চিত্তশুদ্ধি বিবেকবোধের পাঠ,
ভালো থাকুন গুরুমশাই সকল বালাই ষাট।







শিক্ষক দিবস দুই হাজার কুড়ি
        দেবাশীষ সরখেল

সেদিন শিক্ষকতায় পয়সা ছিল খুব কম আনন্দ ছিল বহু গুণ
ছাত্রদল বন্ধুবান্ধব
সম্মানসূচক দূরত্ব বজায় রেখে মেলামেশা অন্য গম্ভীর মাস্টারের অপছন্দ ছিল
সেদিনের বন্ধু ছাত্ররা 
অবসরকালীন সময়ে নাতি-নাতনিসম
 ক্ষত নেই অমলানন্দ সুধা পান করে
  মন্তেশ্বরীর দেড়শ বছরে অবসর নিলাম
 এবার শিক্ষক দিবসে কলম পাবনা
   প্রিয় ছাত্র ইতিউতি চেয়ে দেখে আমি নেই
   অবসর নিয়েছি








 শিক্ষক শিক্ষিকা
            অষ্ট দেয়াশী

আমার প্রথম শিক্ষক শিক্ষিকা হলো
আমার পিতা-মাতা ।
তাদের হাত ধরে এলাম আমি স্কুলে ।
পিতা-মাতার মতো আমি শাসন পেলাম
তাদের ।
তাদের আদর্শ নীতি কথা নিলাম আমি এ
মনে ।
তাদের আদর্শ নীতি হলো আমার চলার পথ।
আমার পিতা-মাতার মতো এ মনের
মধ্যে দিলাম তাদের স্থান।
আমার বড়ো হওয়ার পিছনে আছে তাদের
অবদান।
তাদের জন্য পেয়েছি আমি অনেক কিছু।
তাদের চরণে ঠাঁই হয় যেন এ জীবনে আমার।
শতকোটি প্রণাম রইলো তাদের চরণে আমার
এ জীবনে।
পিতা-মাতার মতো রাখবো তাদের আমার মনের মাঝে।










মাষ্টারমশাই
        সত্যজিৎ পাল

গুরু কুল, পাঠশালা নাম পাল্টে
      এখন হয়েছে স্কুল,কলেজ,বিদ্যালয়
গুরু গুরুদেব শিক্ষাগুরুরাই এখন
      স্যার টিচার আর মাষ্টারমশাই ।

ছাত্র-ছাত্রী স্কুলে প্রথমেই শেখে
      অধ্যায়ন এবং নিয়ম শৃঙ্খলা।
ভবিষ্যতের ভীত তো ওখানেই গড়ে দেয়
       শিক্ষকদের শাষন আর পরিচালনা।

কঠোর শাষন চোখ রাঙানি থাকলেও
      হৃদয় সর্বদা ভালোবাসায় ঠাসা
সন্তানের ভবিষ্যৎ তো স্কুলেই
          শিক্ষকেরাই অভিভাবক দের ভরসা।

ধন্য শিক্ষক, তাদের ছাত্র আজ,
     আমলা, উকিল,কেউ চালায় পুলিশ প্রশাসন।
কেউ পিওন ,কেউ প্রফেসর,
        কেউ চালায় দেশের শাসন।

লুপ্ত সন্মান আজ হারিয়েছে শ্রদ্ধা,
        বেড়েছে হানাহানি, হিংসা ও ঝগড়াঝাঁটি।
নিজেরাই নিজেদের ভুল পথে এনেছে,
       যেদিন কেরেছে শিক্ষকের হাতের লাঠি।

শাসনহীন সমাজ আজ হারিয়েছে ধৈর্য
     স্বার্থবাদী করে শিক্ষকদের অসন্মান।
যুগ যুগান্তরে সমাজকে শিখিয়ে এসেছেন
    জানাই করো জোড়ে শিক্ষকদের প্রনাম ।








দেশ গড়ার কারিগর 
           গোবিন্দ মোদক

শিক্ষক হলেন শিক্ষাব্রতী, মানবজমিন গড়েন;
সমাজবন্ধুদের তালিকাতে প্রথম সারিতে পড়েন।

শিক্ষক হন ছাত্রের বন্ধু, দেখান পথের দিশা ;
শিক্ষা বিতরণ করেন তিনি, মেটান জ্ঞানের তৃষা।

পিতা ও মাতার পরেই শিক্ষকদের স্থান ;
বিশ্বজুড়েই ছাত্র-ছাত্রীরা করে তাঁকে সম্মান।

শিক্ষক হন ফিলোসফার, শেখান ন্যায়-নীতি ;
শ্রদ্ধা-ভক্তি-ভালোবাসা, জীবে দয়া, প্রীতি।

শ্রেষ্ঠ সমাজ-বন্ধু তাই, সরস্বতী দেন বর ;
শিক্ষক তাই পূজিত হন, দেশ গড়ার কারিগর।।









              শিক্ষক মশাই
     মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

শিক্ষক হলেন মোমবাতির মতোন
যিনি নিজেকে পুড়িয়ে,
            অন্যকে দেন আলো।
মা তো জন্ম দেয়,
           একজন নিষ্পাপ শিশুকে
কিন্তু,অফুরন্ত প্ররিশ্রমে,
              সুশিক্ষায় বড়ো করে তোলেন।
একজন আর্দশবান শিক্ষক ...

তাই আমার কাছে,
     শিক্ষক হলেন জ্ঞান বৃদ্ধি তথা,
             সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।
তেমনি শতকোটি শিক্ষককের
                মাঝে গেলেন বিলিয়ে যিনি
তাঁকে শত শত প্রনাম শ্রদ্ধাঞ্জলি
তিনি হলেন মহান, আর্দশবান শিক্ষক
ডাঃসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান।

তাঁর এই জন্ম দিনে রইল আমার
প্রাণভরা ফুলের শুভেচ্ছা ও কোটি প্রনাম।।










প্রকৃত শিক্ষক
                    জাহাঙ্গীর দেওয়ান

ওস্তাদ-ই হলেন ইলমি-য়া'তের নূরানী রাহবার ,
ওস্তাদী পারেন পৌঁছে দিতে খোদারই দরবার ।
দুনিয়া জুড়ে সব মানুষের শিক্ষার গুরু আছে ,
বিশ্বনবী-যে উম্মী ছিলেন,উস্তাদ ছিলনা পাছে।

তদানীন্তন আরবিয়দের জাহেলিয়াতের যুগে ,
ওকায মেলায় চলতো লড়াই কাব্যের হুজুগে ।
মদেই চালাত ফোয়ারা, সুদ নিয়ে জুয়া খেলে ,
বাজি'তে পেটচেরে, কি আছে মেয়ে না ছেলে ?

কারপশু পানি আগে খাবে সেটাই নিয়ে দ্বন্দ্ব ,
ওস্তাদ এসে যেতেই, খোলা চোখে দেখে অন্ধ ।
জান-মাল-ওয়াক্ত ত্যাগ দিয়ে ওস্তাদ হ'ন ধন্য ,
রক্ত-পুঁজ,থুতু খেয়ে-মেখে সাগরেদ পান পূণ্য ।

যাঁদের মল-মূত্র ছাড়াই কোন ত্যাগ জানা নেই ,
ছাত্রীর সাথে প্রেম, ধর্ষণ-খূন তাতে মানা নেই ।
ছাত্রদের থেকেই বিড়ি চেয়ে খান ফ্রি-আগুনে,
জ্যোৎস্নায় ধানভেনে, শীতখোঁজে এরা ফাগুনে।

পিতা-মাতাসম ওস্তাদ হতে থাকবেনা কিছু অল্প,
শিক্ষক দিবস তবে পূর্ণতা পাবে এটাই হল গল্প।






শ্রদ্ধেয় শিক্ষক 
             বিমান প্রামানিক 

শিক্ষক মহাশয় সবাই আপন
               সকলেই চির শ্রদ্ধেয়
তার মাঝে তিনি একজন
             আমার পরম পূজনীয়।
বিদ্যালয়ে তাঁর অবদান
                        আজও ভুলিনি
সবার মুখেই তাঁরই নাম
      আজও প্রাক্তনীরাও ভুলেনি।
আমার গ্রামেই ছাত্র যত তাঁর
       সবাই আজও তাঁকেই চেনে
শিক্ষক দিবসই শুধু নয়
              সারা দিবস চলি মেনে।
বিজ্ঞানের অগাধ ভান্ডার তিনি
             শুধু বিজ্ঞানের শিক্ষা নয়
ন্যায়, নীতি যত শিখিয়েছেন তিনি
          তাঁর পরশেই জীবনে জয়।
আজকের এই বিশেষ দিনে
               তাঁকে স্মরি একটিবার
তাঁর চরণে প্রণাম জানাই
                         শতকোটি বার।







২টি মন্তব্য:

  1. সর্বাগ্রে পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত সমস্ত সাহিত্য যোদ্ধা মহোদয়কে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। পত্রিকায় প্রকাশিত সমস্ত লেখা বেশ ভালো। প্রত্যেকের লেখার মধ্যে সাহিত্যের ছোঁয়াা আছে যা বিশেষ ইতিবাচক। আমার সংগীত / গানটি ছেপেছেন তাই আন্তরিক ভাবে কৃতজ্ঞ। সকলের জন্য মঙ্গলকামনা রইলো।

    উত্তরমুছুন
    উত্তরগুলি
    1. সুন্দর মতামতের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ🙏💕🙏💕🙏💕🙏💕

      মুছুন