"উপকণ্ঠ 28 জুলাই সংখ্যা "
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-28/07/2020, মঙ্গলবার
সময় :- সকাল 11 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐⭐
আজ মহাশ্বেতা দেবীর মৃত্যু বার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতি নিয়ে আলোচনা করলেন মহাশ্বেতা দেবীর খুব স্নেহভাজন বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক সিদ্ধার্থ সিংহ মহাশয়
স্মৃতি কথা
মহাশ্বেতাদি
সিদ্ধার্থ সিংহ
মহাশ্বেতাদির সঙ্গে কবে, কোথায়, কখন, কী ভাবে আলাপ হয়েছিল এখন আর তা মনে নেই।
তবে এটুকু মনে আছে, আমেরিকার একটি প্রকাশনীর তরফ থেকে যখন পৃথিবীর সমস্ত দেশের একজন করে গল্পকারের একটি করে গল্প নিয়ে ইংরেজি ভাষায় অনুবাদ করিয়ে অসম্ভব ভাল একটি আন্তর্জাতিক গল্প সংকলন করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়, তখন বাংলা ভাষার লেখক হিসেবে ওরা নির্বাচন করে রমাপদ চৌধুরীর নাম। ওরাই বলে দিয়েছিল, ইচ্ছে করলে লেখক তাঁর মনোনীত কাউকে দিয়ে এটি অনুবাদ করিয়ে দিতে পারেন।
অনুবাদ করার কথা উঠতেই আমার প্রথমেই মনে হয়েছিল মহাশ্বেতাদির কথা।
মহাশ্বেতাদিকে বলতেই তিনি রমাপদ চৌধুরীর 'ভারতবর্ষ' গল্পটা শুধু যে অনুবাদ করেছিলেন তাই-ই নয়, মূল কপির সঙ্গে টাইপ করে দিয়েছিলেন আরও একটি কপি। হ্যাঁ, টাইপ করে দিয়েছিলেন। কারণ, তখনও এখনকার মতো কম্পিউটারে টাইপ করাটা এত সহজলভ্য হয়নি। আর টাইপ করে দিয়েছিলেন এই জন্য, যাতে কম্পোজ করতে গিয়ে কোনও রকম ভুল-ত্রুটি না হয়। সেই কপি দুটি এখনও সযত্নে আমার কাছে আছে।
এর অনেক পরে আমি যখন বিভিন্ন কবি-লেখক সম্পাদকদের সঙ্গে যুগ্ম ভাবে একের পর এক সম্পাদনা করছি, তখন লিটল ম্যাগাজিনের তরুণ লেখকদের গল্প নিয়ে একটি গল্প সংকলন করার পরিকল্পনা নিই।
এই কাজটি করতে গিয়ে প্রথমেই যাঁর নাম আমার মনে এসেছিল, তাঁর নাম--- মহাশ্বেতা দেবী।
তার আগে অবশ্য লীলা মজুমদার, রমাপদ চৌধুরী, নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, শংকর, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, সুচিত্রা ভট্টাচার্য, নবনীতা দেবসেন, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়দের সঙ্গে পাঁচশোর ওপর সংকলন যুগ্ম ভাবে আমি সম্পাদনা করে ফেলেছি।
রাজডাঙার বাড়িতে গিয়ে মহাশ্বেতাদিকে বলতেই তিনি এক কথায় রাজি হয়ে গেলেন। আমাকে বললেন, কার কার লেখা তুমি রাখতে চাও, তা হলে সবার আগে একটা সুচিপত্র তৈরি করো।
করেছিলাম। এবং উনি সেই সুচিপত্রটাকে এক কথায় অনুমোদনও করেছিলেন। তার সঙ্গে শুধু দুটি নাম তিনি অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিলেন। আমি তাতে রাজিও হয়েছিলাম।
নবারুণ দার মৃত্যুর পর গল্ফগ্রিনের নবারুণের বাড়িতে এসে থাকা শুরু করেন মহাশ্বেতাদি। নানান কাজে আমি সেই বাড়িতেও যেতাম।
শেষ যে বার যাই, গিয়ে দেখি উনি পা ছড়িয়ে বসে আছেন। অস্বাভাবিক রকমের ফুলে গেছে দুটি পা। কথা বলতেও কষ্ট হচ্ছে। শারীরিক সেই কষ্ট নিয়েই উনি সে দিন আমার সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেছিলেন আমাদের পরবর্তী কাজকর্ম নিয়ে।
আসার সময় আমাকে বারবার করে বলেছিলেন, আবার এসো। কিন্তু না, আমি আর কোনও দিনও যায়নি। এমনকী, তিনি যখন অসুস্থ হয়ে বেলভিউ নার্সিংহোমে ভর্তি হন এবং আমাদের ছেড়ে চিরদিনের জন্য চলে যান না ফেরার দেশে, তখনও আমি সেই শোকমিছিলে পা মেলাইনি। কারণ, মহাশ্বেতাদি এই ভাবে চলে যেতে পারেন না।
আমি বিশ্বাস করি, উনি কোথাও যাননি। উনি আমাদের পাশেই আছেন। আছেন আমাদের সঙ্গেই। আমাদের মনের মণিকোঠায়। আমাদের ভালবাসায়। আমাদের শ্রদ্ধায়।
সাহিত্যের কান্ডারী মহাশ্বেতা দেবী
- চিরশ্রী কুণ্ডু ( অবন্তিকা)
সাহিত্য জগতের
আলোর নিশানা হতে ,
অন্ধকারের পথ প্রদর্শক
যাহার কলমের নিবে ;
সাহিত্য যেথায়
সুখের সংসার যাহার
উপন্যাসের তালিকা
হাজারো মানুষের আর্তনাদের চূড়ান্ত পর্যায়ের ,
ভালবাসার নারী শক্তি
অদম্য ইচ্ছা বিরাজিত চরণে ;
সাহিত্যে উপন্যাসের অবারিত দ্বার
উন্মুক্ত চেতনার উন্মেষ
ঘটিয়েছিলেন যিনি ভারতবর্ষে মাঝে
লাঞ্চিত অসম্মানিত পূজিত যারা
বলিদান আজও দিয়েছে সহস্র মানুষ ,
করেছো দান ভরে দিয়েছো অমৃত
সেই সম হাজার সম্মান।
হাজার চুরাশির মা তুমি ,
সর্বজনের অনন্ত সঙ্গিনী
যেথায় তুমি যেতে ছুটে
বঞ্চিত জাতির তরে ,
চলছে আজও সেই বিস্তারিত
আজন্ম কাল ব্যাপি ইতিহাসের সাহিত্যে,
চিরকালের অমর তুমি সর্বজনের মাঝে
জননী তুমি ! বেঁচে আছো হাজারো হৃদয় জুড়ে।।
প্রবন্ধ
অমর মহাশ্বেতা দেবী
আব্দুল রাহাজ
বাংলা সাহিত্যে জগতে এর এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন মহাশ্বেতা দেবী তিনি বাঙালির মননে চিন্তনে স্মৃতির মনি কোঠায় আজও অমর । সত্যি তিনি শ্রেষ্ট সাহিত্য জগৎসভায় আজও আমাদের কাছে তিনি কোথাও যেন জীবন্ত কিংবদন্তি লেখিকা। তার লেখনীর মাধ্যমে ফুটে উঠেছে অসহায় আদিবাসী মানুষের কথা তাদের কষ্টকর জীবনযাত্রা সত্যি তার লেখনীর দ্বারা সব জীবন্ত হয়ে উঠেছে । সূর্যের উজ্জ্বল রাশির মতো তার লেখনী বৈচিত্র্য সমৃদ্ধ হয়েছে যা বাঙালির কাছে এক অনন্য রূপে উদ্ভাসিত হয়েছে । সাহিত্যে অবদান তার প্রচুর সন্মানে ভূষিত হয়েছেন যা বাঙালির কাছে গর্ব। তিনি ভেবেছেন অসহায় মানুষের কথা পাশে দাঁড়িয়েছেন সাহায্য করেছেন তাদের সম্বন্ধে লেখনী এক জীবন্ত সম্পদ হিসেবে আজও অক্ষুন্ন আছে। তিনি আমাদের মাঝে নেই বাংলা সাহিত্য যেন কোথাও ধাক্কা খেয়েছে কিন্তু তার যে লেখনী তার আজও অনন্য রুপ নিয়ে সবার কাছে শ্রেষ্টত্ব লাভ করেছে। তিনি প্রতিটি বাঙালির মনে প্রানে স্মৃতির ক্যানভাসে অমর অমর হয়ে থাকবে চিরজীবন।
•••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
গ্রন্থ সমালোচনা
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••• করোনাকালের বইপড়া-৪
প্রশান্ত ভৌমিক
অনাকাঙ্ক্ষিত এই গৃহবন্দী জীবনে আর যাই হোক না হোক, বইপড়া হচ্ছে জমিয়ে। এই সপ্তাহের পড়া পাঁচটি বইতে প্রাপ্তি বলতে সমরেশ মজুমদার।
১)
আট কুঠুরি নয় দরজা
সমরেশ মজুমদার
সমরেশ মজুমদারের খুব বেশি বই পড়েছি এমন নয়৷ তবে সমরেশের গদ্যরীতি আকর্ষণীয়৷ এই উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে কিছু কিছু জায়গায় রীতিমত চমকে যেতে হয়েছে৷ বিষয়বস্তু তেমন আহামরি কিছু নয়৷ পুলিশ ও সরকারের সাথে বিপ্লবীদের লড়াইয়ের এমন শত শত গল্প আছে। কিন্তু এখানে বিপ্লবী নেতার মৃত্যু ও ফিরে আসা এবং শেষ পরিণতি - এক কথায় অসাধারণ৷ ভাল লাগল অনেক দিন পর থ্রিলারে ফিরে। তবে বিদেশি কাহিনি অবলম্বনে লেখা থ্রিলার আর সমরেশ মজুমদারের এই থ্রিলারের মৌলিক কিছু পার্থক্য চোখে পড়েছে। সব মিলিয়ে খুব সুখপাঠ্য একটি বই। জীবনলালের চোখ দিয়ে যেন পুরো সমাজ ব্যবস্থাকেই দেখা গেল। বই শেষে তৃপ্তির পাশাপাশি একটু মন কেমন ভাবও থেকে যায়।
২)
খুনে তান্ত্রিক
রকিব হাসান
রকিব হাসানের মোটামুটি সকল বইয়ের কাহিনিই বিদেশি এক বা একাধিক বই থেকে সংগৃহীত। কিন্তু তাও সব কাহিনিই কিছুটা নিজস্ব ঢঙের কারণে মৌলিকতার দাবি রাখে৷ খুনে তান্ত্রিকও তার ব্যতিক্রম নয়। তিন গোয়েন্দার কাহিনি হলেও রবিন মিলফোর্ড অনুপস্থিত এই বইতে। কিশোর পাশা আর মুসা আমান এই কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র। সব মিলিয়ে তিন গোয়েন্দার সেই আগের ফ্লেভার পাওয়া গেল। তবে গল্পের বুননের ক্ষেত্রে বলব, যতটা যত্ন নিয়ে কাহিনি গড়ে তোলা হয়েছে, তার চাইতে অনেক তাড়াহুড়ো করে শেষ করা হয়েছে। পড়ে মনে হচ্ছিল যেন ফরমায়েশি লেখা। রকিব হাসানের মত স্বনামধন্য লেখক কিংবা রূপান্তরকারীর কাছ থেকে চাওয়া ছিল এর চাইতেও অনেক বেশি। যার মানদন্ড তিনি নিজেই তৈরি করেছেন।
৩)
জলদস্যুর দ্বীপ
রকিব হাসান
এই বইটি এইট-নাইনে থাকার সময় একাধিকবার পড়েছিলাম। এবার আঠারো বছর পরে আরেকবার পড়তে গিয়ে নতুন থ্রিলই পেলাম৷ রবিন অনুপস্থিত এই গল্পে। কিশোর আর মুসার সাথে এখানে আরেক কিশোর বব আছে। ববের বাবার দেয়া ম্যাপ নিয়ে গুপ্তধনের সন্ধানে যায় দুই গোয়েন্দা। এক অভিশপ্ত কয়েনের কারণে বারবার বিপদে পড়ে। কয়েনটি কি আসলেই অভিশপ্ত? জানা গেল না এই খণ্ডে। অনুবাদ হলেও রকিব হাসানের জাদুকরি স্পর্শে মৌলিক কাহিনির সাথে পার্থক্য খুঁজে পেলাম না৷ তিন গোয়েন্দার অন্যতম আকর্ষণ খাবারের বর্ণনা। সেই বর্ণনা এই বইতে আরো আকর্ষনীয় ভাবেই উপস্থিত। কাহিনি এক আকর্ষণীয় মোড়ে এসে শেষ হয় প্রথম খণ্ড। হাতের কাছে শেষ খণ্ড পাইনি বলে একটা অতৃপ্তি কাজ করছে।
৪) যুগল মিলন
সমরেশ মজুমদার
এটা টিটোর গল্প। টিটো ঘটনাচক্রে ফেরার হয়ে যায়। সেখান থেকে তমার সাথে পরিচয়৷ নাটকীয়তার আবহ কিছুটা থাকলেও থ্রিলারের সেই টানটান ব্যাপারটি পুরো বই জুড়েই ছিল। টিটোর সাথে তমার পরিচয়, জীবনের বাঁক বদল, ক্লাইম্যাক্স, সব শেষে মধুরণ সমাপয়েৎ। মাঝে মাঝে অন্ধকার দিকগুলো উঁকি দিয়েছে বটে, কিন্তু সেগুলো দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সেকারণেই জীবন বারবার কড়া নেড়েছে দরজায়। এখানেই লেখকের স্বার্থকতা। বইয়ের সমাপ্তি অংশটার জন্যেই দীর্ঘদিন এই বইটির কথা মনে থাকবে। আমরা কোথাও বোধহয় এরকম একটা জীবনই চাই দিনের শেষে। হাজার ঝড়-ঝাপটা শেষে একটি শান্তির জীবন। সমরেশ মজুমদারকে দীর্ঘদিন আবিষ্কার করতে না পারার ব্যর্থতা আমাকে এখনও কষ্ট দেয়।
৫) আহরণ
সমরেশ মজুমদার
আরেকটি সমরেশ মজুমদারের উপন্যাস। আমি যেভাবে সমরেশের প্রেমে পড়ে গেছি, তাতে মনে হয় আগামী কিছুদিন সমরেশের সাথেই কাটবে। 'আহরণ' সম্পূর্ণভাবেই একটি সমরেশ মজুমদারীয় প্লটের উপন্যাস৷ সেই শিলিগুড়ির চা বাগান, মদেশীয় শ্রমিক। তবে প্লটে নিঃসন্দেহে কিছু নতুনত্ব রয়েছে। সব মিলিয়ে মন্দ লাগে না। কেন্দ্রে শিবাজী, তার ভাই সিতেশ ভিলেন হয়ে উঠতে গিয়েও উঠল না। শেষটা যেন বাংলা সিনেমার সেই চিরায়ত কাহিনি, দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালন। মিসেস সোমের চরিত্রটি রহস্যাবৃতই রইল শেষ পর্যন্ত। সব মিলিয়ে অসাধারণ। চা বাগানের ভেতরকার রাজনীতি যেন একটি দেশের প্রতিচ্ছবি। রাজনীতি কীভাবে তিলে তিলে একটি প্রতিষ্ঠানকে শেষ করে দিতে পারে, তার জলজ্যান্ত উদাহরণ এই উপন্যাসটি।
এই সপ্তাহে পড়া বইগুলো আমাকে যথেষ্ঠ আনন্দ দিয়েছে। করোনাকালে সবাই আরো বই পড়বেন, এই আশা ব্যক্ত করছি।
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
অন্যান্য কবিতা
••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••••
ঐ এল ঝড়
কনিকা রায়
মেঘ করেছে আকাশ জুড়ে উড়ছে পাখি কত -
ভয় পেয়ে আজ তাই তো তারা ডাকছে অবিরত।
কালো মেঘে ছেয়ে গেছে আকাশ -
আসবে বুঝি এখনই ঐ কালবৈশাখী বাতাস ।
গরু গুলো সব গেছে মাঠে ,
শিশুরা সব গেছে পাঠে ।
দিন দুঃখিনী মা যে আমার ,
আজ ও গেছে পরের বাড়ি কাজে আবার ।
তাই মনটা আমার কেমন করে,
মা যে কখন আসবে ঘরে ।
রামুর বাবা মাছ ধরতে গেছে নদীর ঘাটে -
বাবার জন্য রামুর মনটা কেঁদে ওঠে।
ঐ বুঝি এল ঝড় এল আমফান ,
সব কিছু কে লন্ডভন্ড করে কেড়ে নেবে বুঝি প্রাণ ।
তাই সাবধানেতে থেকো সবাই বলছে সরকার -
আমাদের মাথার উপরেও শক্ত একটা ছাদ হওয়া দরকার ।
আমন্ত্রণ
রাহাত জামিল
ক্লান্ত সূর্য অস্ত গেলে,
মান ভেঙে আসিস একদিন
আমার পর্ণকুটিরে।
গোধূলি অন্তিমে,প্রোদোষালোকে,
তোকে বিরহের গান শুনাবো।
রাতে ধরা ঘুমে শান্ত হলে,
চুপটি করে আসিস একদিন
আমার পর্ণকুটিরে।
রাতের মায়াবী আলো-আঁধারিতে,
তোকে একলা দিনের গল্প শুনাবো।
কাঁঠাল মুড়ি
অলোক রায়
বর্ষাস্নাতে দিন দুপুরে,
সুযোগ পেলেই ঘোরাঘুরি
মাঠের ধারে পুকুর পাড়ে।
সকাল সকাল কাঁঠাল মুড়ি,
পেলে বাঙ্গালীর নেইকো জুড়ি।
বুড়ো খোকা থাকলে ম্রিয়,
দুপুর সাঁঝে সুপ্রভাতে
হাতের কাছে পেলেই প্রিয়।
মায়ের হাতের কাঁঠাল রস
কোনমতে পড়লে পাতে,
হাবলা গোবলা আঙ্গুল চাটে।
বাঁদর গুলোও বড্ড জ্বালায়,
মানুষ দেখলেই দৌড়ে পালায়।
তাদেরও যে বড়োই লোভ,
খেদিয়ে দিলেই জমে ক্ষোভ।
ওরা কোথায় পেলো গাছের খোঁজ,
কাঁঠাল গাছেই দেখি রোজ।
কাঁঠাল মুড়ি ঠাম্মা বুড়ি,
চেটে চেটে খায়।
দেখলে পাতে কাঁঠাল মুড়ি,
কচিকাঁচা নাতিপুতি
ঠাম্মার কাছে অবাধে যায়।
দাম বেড়েছে মুড়ির আজ,
বলতে কোন নেইকো লাজ।
প্রাতরাশে পাতে পেতে,
কাঁঠাল রস চিপে খেতে,
আষাঢ়েতে বড়োই স্বাদ।
কবিতা
আশ্চর্য
অগ্নিমিত্র
একমনে পথে চলে থুতনি কুমার ...
সকাল বিকেল সে যায় যে বাজার !
অন্যের বাড়িতে নোংরাটা ফেলে
থুতনি কুমার চলে জ্ঞানচক্ষু মেলে ।
বলে, দুনিয়াটা গেল রসাতলে ভাই...
আসলে যে সে-ই পাপী, বলবেটা কে?
থুতনি কুমার মহানন্দে চলে ;
ভগবান দেখছেন কী তার লীলা?
থুতনি কুমারের নানান অছিলা?!
বেশি পাপ জমা হলে শিশুপাল হয় ...
থুতনি কুমার ভুলেছে নিশ্চয় !!
প্রকৃতির টানে
মৌসুমী গুহ রায়
( 1 )
আজ ভোরে হেঁটেছি পার্কের পাশে,
ভোরের হাওয়া গায়ে,
মানুষজন, গাছপালা -
বেলা হতে গাড়ি নিয়ে লং ড্রাইভে,
হিলির রাস্তায়,
পথের পাশে মাধবী লতা, হলুদ করবী,
নীল রং এর মাছরাঙা।
পথের দু' পাশে সবুজ ধানক্ষেত।
এসবই আনন্দ দিয়েছে।
( 2 )
বিকেলে ঘরে, সব কিছু কেমন অর্থহীন।
চাকরি করতে ইচ্ছে করে না,
লেখাটাও আর ভালো লাগে না,
কেমন বোরিং জীবন।
ছাদে গেলাম, সুন্দর বিকেল।
পেছনে সবুজ গাছপালা।
পশ্চিমাকাশে সুন্দর গোধূলি।
ছাই ও কমলা রং।
সূর্য অস্ত যাচ্ছে,
দিগন্তে মিলিয়ে গেল।
মন কেমন করল।
কোথায় গেলে সূয্যি মামা ?
অন্ধকার হওয়া পর্যন্ত ছাদে বেড়ালাম।
ঘরে এলাম, ফ্রেশ লাগছে।
মাঝে মাঝে বাইরের জগতে, প্রকৃতিতে যেতে হবে।
মন ভালো হবে।
ভোরের সূর্য উঠবেই
হামিদুল ইসলাম
পুকুরের জলে একঝাঁক বালিহাস
সাঁতার কাটে মাছ ধরে
স্বপ্নের গাছগুলো পড়ে থাকে বালুকাবেলায়
খুনিরা গাছ খুন করে প্রতিদিন
রক্তের বন্যায় ভেসে যায় প্রাণের আস্তানা ।।
মা'র চোখে নদী
সারা জীবন নদীর সাথে কেটে যায় জীবন
জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত রক্ত ঘাম আর নুনের জন্যেই লড়াই
অসহ্য মানবতা
তবু ফিরে আসে সায়াহ্নের আকাশ ।।
অন্তরঙ্গতা ছেয়ে যায় মায়া
নিস্তব্ধ রাত
কামরাঙা জীবন
কচি কচি সুন্দর মুখগুলো কেড়ে নিতে চায়
এক বিভৎস দানব ।।
কাল ভোরের সূর্য উঠবে। উঠবেই ।।
ভালবাসা,তোমাকে বলছি!
বিশ্বজিৎ কর
ভালবাসা,তুমি অভিমানী -
ভালবাসা, তুমি আবদার,
ভালবাসা, তুমি আন্তরিক -
ভালবাসা, তুমি দুর্বার!
ভালবাসা, তুমি সন্দেহপ্রবণ -
ভালবাসা, তুমি জিজ্ঞাসা,
ভালবাসা, তুমি বেপরোয়া -
ভালবাসা, তুমি মনের ভাষা!
ভালবাসা, তুমি নিষ্ঠুর -
ভালবাসা, তুমি কঠোর,
ভালবাসা, তুমি কাছে-আসা,
ভালবাসা, তুমি মনের জোর!
সাঁকো
রঞ্জনা রায়
দুটো জানলা একটা দরজার মাঝে
আটকা পড়ে আছি।
জানলার কাঁচে ধূলো জমে
আলো কমে আসে -
মরচে ধরা কব্জার খেয়ালে দরজাটা বন্ধই থাকে ।
সাঁকো খুঁজি ওপারে যাবার
ঝড় ওঠে - এক আত্মময় আঁধার ঘিরে ধরে
দূরে কোথায়? কে আছে সাঁকোর ওধারে
কোন আত্মসমীক্ষণের আলোয়
সেই সাঁকো আলোকিত হবে?
পুজোর ঢাকের জিজ্ঞাসা
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
মা গো আমার!
বল তো তুই আমায়।
আমি হোলাম ঢাক।
তোর পুজোতে আমি বাজি, ধর্মরূপে।
টাক ডুম টাক ডুম টাক টাক টাক...
আরতির সময় নৈ তো আমি থামার।
বিসর্জনে, সাধ্য কার, আমায় থামায়?
বল তো মা!
আমার এই বোল তুলছে কে?
আমি কি নৈ তোর বিধর্মীর চর্মরূপে?
গোচর্মই তো আমার বোল তোলে।
আর তোর অর্চনা চলে, সেই বোলে।
বল তো মা!
এ তোর ক্যামন ধর্ম কর্ম?
বোঝা তো মা আমায়, এর আসল মর্ম!
ছড়া
নামকরণ
মিনতি গোস্বামী
নামকরণ. নামকরণ
খুবই বাজে কাজ
নাম খারাপ. হলে পরেই
সারাজীবন লাজ।
ভূতনাথের নামটা জানি
হয়ে. গেছিল ভূতো
গুণধরকে শর্টকাটেতে
ডাকে সবাই গুঁতো।
ভদ্রাবতীকে এক ডাকেতে
সবাই চেনে ভাদু
চন্দ্রধর তো. সেই কবে যে
হয়েই. গেছে. চাঁদু।
বলবো কত নামের কথা
হবে বিরাট. ফদ্দ
বদনামেতে. বদনামেতে
হয়েছে. কত. হদ্দ।
তাইতো বলি. নামকরণ
বড় কঠিন কাজ
নামের ফাঁদে. ধরাই থাকে
আসল কারুকাজ।
তুমি উড়ে যাও
রুহুল আমিন
আজ তোমার সমস্ত গহনায় ঝাপসা শ্যাওলা
কোঁচকানো তোমার মনে মরীচিকার উৎপত্তি
অর্ধেক পাগলের শব দেহ উঠানে পড়ে
আধা-দুঃখ বৃষ্টিতে ভেজে বিস্ময়ে
কৌতূহলের রঙ চড়ে তোমার চোখে
হুড়োহুড়ি তোমার ঠোঁটের বাক্যের মাঝে
রক্ত মাংস হীন পাগলকে মনে রাখবে?
নাকি নতুন করে স্বপ্ন দেখবে?
তোমার ফিনকি দেওয়া লাল ঠোঁটে
ঝাপসা শ্যাওলার চুমু আঁকি
মাটির নিচে আমাকে মিশিয়ে দিও
সুজতা আমি আসবো না আর কখন।
চাই প্রতিবাদী মিছিল
আব্দুল রহিম
আবার দলে দলে শুরু হবে প্রতিবাদী মিছিল,
অবসান ঘটবে সমাজের মাৎস্যন্যায় যুগের
আবার কবির কলমের কালিতে বিশুদ্ধিকরণ ঘটবে
শিশুরা মিষ্টি হাসি হাসবে মা ছেলেকে জড়িয়ে ধরবে অন্যায়-অত্যাচারের প্রতিবাদে স্লোগান উঠবে
মুখোশ ঢাকা চোর ডাকাতের পায়ের মাটি কাঁপবে
আর বেশি দেরি নেই শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা...
যেদিন মানুষ বুঝবে স্বাধীনতার মধ্যে তারা পরাধীন সেদিন হিন্দু মুসলিম খৃষ্টান কাঁধে কাঁধ রেখে লাফিয়ে পড়বে..
হাড়ি মুচি ডোম ডোকল জাগাবে জাতির পতাকার শক্তি
কুমোর কামার চাষী শ্রমিক নামবে রাস্তায়, হয়ে উঠবে প্রতিবাদী
সেদিন যাবে ভক্ষকের শ্যাম সুন্দরের মুখোশ খুলে
মানুষ মনুষ্যত্ব ধর্ম নিয়ে এগিয়ে আসবে দলে দলে
আর বেশি দেরি নেই শুধু একটু সময়ের অপেক্ষা।।
আবার দলে দলে শুরু হবে প্রতিবাদী মিছিল
আবার শুরু হবে আকাশে বাতাসে জয়ধ্বনী.
থাকবেনা আর জাতি ধর্ম বর্ণ বেষম্য
রক্ত দেবে সবাই সবার জন্য।।
যেদিন মানুষ বুঝবে সে আজও পরাধীন
আজও মাৎস্যন্যায়ের যুগে আবদ্ধ
সেদিন দেবে সুপ্ত হৃদয় বুক ফাটা শব্দ
আবার শুরু হবে দলে দলে প্রতিবাদী মিছল।।
0 comments: