"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-18/06/2020, বৃহস্পতিবার
সময় :- বিকাল 3টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click here
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
আজকে উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিনে যারা কলম ধরেছেন✒✒✒✒👇👇👇👇👇
ইংরেজি কবিতা:-
• সিদ্ধার্থ সিংহ ও দেবনাথ সাঁতরা
প্রবন্ধ:-
• রাজা দেবরায় ও আব্দুল রাহাজ
রম্যরচনা:-
• কাশীনাথ সাহা
স্মৃতি কথা:-
• অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)
কবিতা:-
• ডঃ রমলা মুখার্জী ও হামিদুল ইসলাম
মজার ছড়া:-
• রাজকুমার ঘোষ
কবিতা:-
• মিঠুন রায়
ছড়া:-
• বিশ্বজিৎ কর
গদ্যকবিতা:-
• রঞ্জন চৌধুরী
কবিতা:-
• গণেশ দেবরায়
• অনিরুদ্ধ কর
• জুয়েল রূহানী
• গোবিন্দ কুমার সরকার
• বদরুদ্দোজা শেখু
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
Whom I don't know, don't remember
✍✍✍ Siddhartha Singha
Whom I don't know, don't remember--- crown him
I will accept
if somebody known is crowned, he will not know me anymore
if some of the freinds are crowned, they will drift away much apart
if relatives are crowned, they will draw lines through all boundaries
crown him, whom I don't know, don't remember I will accept
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
I want you
✍✍✍Debnath Santra
I never want to touch the moon
Do not want to go to any Dreamland
I just want to touch you
And I want to kiss your hand.
I don't want any queen rose
I don't want any fragrant flowers
I want the smell of your thick hair
And I want flowers tied to your bun.
I don't want any diamonds
I don't want a palace
I don’t want false gold
I want a fairy like you.
I don't want any artificial light
So that the eyes also hurt
I want the flame of your lamp
Which will give me warmth of love.
I just want you
I want to see your smile
Morning and evening with you
I will bathe in love.
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
প্রবন্ধ
প্রস্তুতি সবচেয়ে আগে প্রয়োজন !
✍✍✍ রাজা দেবরায়
শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে উপদেশ দিলেন তপস্যা করে সকল দেবতাকে তুষ্ট করে তাঁদের কাছ থেকে সেরা সেরা সব অস্ত্রগুলো বর হিসেবে চেয়ে নেওয়ার জন্য । অর্জুন সেইমতো কঠিন তপস্যা করে সেরা সেরা সব অস্ত্রগুলো বর চাওয়ার মাধ্যমে প্রাপ্তিলাভ করলেন ।
যুদ্ধে সেগুলো প্রয়োগ করলে নিমেষেই কৌরবপক্ষ হেরে যেতো । কিন্তু নির্ভীক যোদ্ধা অর্জুন তা করেননি । শ্রীকৃষ্ণও জানতেন যে অর্জুন সেগুলো ব্যবহার করবেন না, অর্জুন তাঁর নিজ ক্ষমতাবলেই যুদ্ধ করবেন ।
শ্রীকৃষ্ণ সেটা জেনেও অর্জুনকে এই উপদেশ দিলেন কেনো ?
অর্জুন যদি সেরা সেরা সব অস্ত্রগুলো প্রাপ্তিলাভ না করতেন তাহলে কৌরবপক্ষের কেউ সেগুলো লাভ করতে পারতো । তারা সেগুলো পেয়ে অবশ্যই যুদ্ধে প্রয়োগ করতো । তখন পাণ্ডবরা হেরে যেতো । তাই সেটা আটকাতেই শ্রীকৃষ্ণের সেই উপদেশ দেওয়া ।
মূল কথা হলো আপনি যেকোন যুদ্ধেই মানে সেটা রাজনৈতিক হোক বা খেলা হোক বা অন্য কিছু হোক, সব প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবেন । সেরা সেরা অস্ত্রগুলো নিজের কাছে রেখে দেবেন যাতে বিপক্ষ যেন সেগুলো ব্যবহার বা প্রয়োগ করার সুযোগ না পায় ।।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
পরিবেশ, সমাজ সংস্কৃতি
(প্রবন্ধ)
✍✍✍ আব্দুল রাহাজ
পরিবেশ সুস্থ থাকলে সমাজ সুস্থ থাকবে সংস্কৃতি স্বংয়মহিমায় ফুটে উঠবে এক অনন্য পরিবেশ তৈরি করবে। এই ধারণা বা চিন্তাভাবনা বর্তমান সময়ের মানুষের মনে আর নেই গোটা মানব জাতি পরিবেশের উপর হিংস্র পশুর মতো থাবা বসাচ্ছে ফলে পরিবেশ দিনের পর দিন কোথাও যেন কোনঠাসা হয়ে পড়ছে। মানুষের এই আরামবিলাস ভোগবিলাসের ফলে পরিবেশ আজ ধ্বংসের মুখে ভবিষ্যৎ বলছে কালো অন্ধকার নেমে আসছে পরিবেশের সামনে। পরিবেশের এই ভয়ংঙ্কর অবস্থা দেখে প্রকৃতি মা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ফলে সবুজের যে মনোরম পরিবেশ তার যেন সূর্যের নিস্তেজ আলোর মতো হয়ে আসছে। প্রান্তিক মানুষ গুলোর ভরসা ছিল প্রকৃতির মায়ের কোলে সবুজ ঘেরা বন তা থেকে তারা ফল মূল কাঠ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পেত তাদের দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করা সম্ভব ছিল একটু খেতে পারতো কিন্তু বর্তমান সময়ে পরিবেশ ও প্রকৃতির যা অবস্থা তা তাদের সমাজের বুকে বেঁচে থাকা দুর্গম পথের মতো হয়ে যাচ্ছে এবং তারা অসহায় হয়ে পড়ছে। তাই পরিবেশের এই ভয়ংঙ্কর অবস্থার প্রভাব বর্তমান সময়ে সমাজের উপর ব্যাপক ভাবে পরিলক্ষিত হয়েছে। পরিবেশের এই কালো অন্ধকার এর দিনে সমাজ সংস্কৃতি যেন এক অন্যরকম আচরনে সামিল হয়েছে। সমাজের মধ্যে অশ্বান্তির আগুন জ্বলছে একটু শান্তি নেই বিপদের দিনে পাশে দাঁড়ানোর মনমানসিকতা নেই মানুষ ছুটছে একটু আরাম ভোগবিলাসের তার জন্য ই পরিবেশ তো আজ তলানিতে ঠেকেছে।আর সংস্কৃতি কোথাও যেন তার আপন মহিমা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে ফলে যে ভেদাভেদ মেলবন্ধন ছিল তা যেন কোথাও কোথাও বিলীন হয়ে যাচ্ছে এসবের মধ্য দিয়ে আমাদের বর্তমান পরিবেশ , সমাজ সংস্কৃতি এক সংকটময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে। আমরা মানবজাতি যদি এর প্রতি সজাগ না হই তাহলে মায়াভরা পরিবেশ , প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য শোভা সমাজ সংস্কৃতি এই সবুজ ঘেরা পৃথিবী চিরতরে ধ্বংসে হয়ে যাবে আর মনুষ্য জাতি কালো অন্ধকারের মধ্যে বিলীন হয়ে যাবে বিলীন হয়ে যাবে।
"হে সভ্য মানব জাতি
তোমরা তো শ্রেষ্ট বুদ্ধিমান
তবে কেন তোমরা অসচেতন জ্ঞানহীন
আচরনে আবদ্ধ
তোমরা বোঝো পরিবেশের গুরত্ব বাঁচাও তাকে
মানুষ কে বোঝাও সচেতন করো
আর ফিরিয়ে দাও তার আগের সৌন্দর্য।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
রম্যরচনা
ভাইরাস
✍✍✍ কাশীনাথ সাহা
কোথা থেকে কি হয়ে গেল বোঝবার আগেই হম তুম এক কামরে মে বন্ধ হো ঔর চাবি খো যায়ে।
আমরা দেশবাসী আর বিদেশবাসী সবাই গাড্ডায় পড়ে গেছি। বাজার বন্ধ, বেড়ানো বন্ধ, আড্ডা বন্ধ,পরকীয়া বন্ধ। কুড়ি পঁচিশ বছরের প্রাগৈতিহাসিক বউকে আবার পালিশ মেরে চকচকে করে নিজের মতো করবার অসাধ্য সাধন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। পালিশে বউ কতোটা চকচকে হয়েছে জানিনা তবে পালিশ করতে করতে আমি পালিশওয়ালা বনে গেছি। রাজু বন গয়া জেন্টলম্যান! বউ মশলা বাটছে আমি আলু কাটছি। বউ চপ ভাজছে আমি বেসন গুলছি।বউ তরকারিতে নুন দিল, ভালবেসে আমি আর একবার নুন দিলাম। বউ বলল পায়েস করবো, আমি বললাম তাই করো আমি আমি পেঁয়াজ বেঁটে দিচ্ছি। বউ, অবাক, পায়েসে পেঁয়াজ কি হবে? আমি বললাম, কেন দেয়না? না পায়েসে পেঁয়াজ দেয় না। কেন দেয়না? আজ থেকে চালু হোক পায়েসে পেঁয়াজ দেওয়া। বউ হেসে লুটোপুটি। এই করতে করতে আবার পুরাতন প্রেম মাথা চাড়া দিচ্ছে। পরকীয়া নয় স্বকীয় ভাইরাস। কে বলে কদমতলা ছাড়া প্রেম হয়না! চার দেওয়ালের মধ্যে টগবগিয়ে প্রেম ফুটছে। চলুক, অনন্তকাল চলুক এই চায়না সেলিব্রেশন। তবে চায়না মাল তো বেশিদিন লাস্টিং করবে না। ভাইরাস চলে গেলে ওপারে রইবে তুমি আমি রইবো এপারে...।
বউকে বললাম ছুটি চলছে চল পুরী যাই। বউ বলল দূর অসব্য ( আদরে ভ টা ব হয়ে গেছে) এখন তো লকডাউনে সব বন্ধ যাবে কি করে? বউ ধরতে পারেনি সময় বুঝেই কোপ মেরেছি। আমি বললাম তাই তো! ঠিক আছে সমুদ্রকেই ঘরে নিয়ে আনছি। হোম ডেলিভারিতে দু বোতলের অর্ডার দিয়ে দিলাম। না, আপনারা যা ভাবছেন পুরোটা তা নয়। জিনিসটা ওটাই তবে দুবোতল মানে গিন্নীর জন্য একটা নয়। দুটোই আমার জন্য। আজ একটা কাল একটা। সরকারের চিন্তা ভাবনাকে স্যালুট। আমাদের মতো গরীবের দুঃখ টা বুঝতে পেরে এটা ছাড় দিয়ে দিয়েছে । জিও। আগলে বার.... কা সরকার!
এই দুর্যোগে গরীবের কষ্টতো হচ্ছেই। হাহাকারে ভরে গেছে গরীবের উঠোন। কিন্তু সবচেয়ে বেশী কষ্ট নব্য প্রেমে পড়া ছেলেমেয়েগুলোর। কেউ কাউকে দেখতে পাচ্ছে না, ছুতো ছাতায় ছুঁতে পারছে না। মান অভিমান নাই। একি কম যন্ত্রণার। রাজ্যসরকার, কেন্দ্র সরকার, পাটী, ক্লাব জনগণ কেউ বুঝতে পারছে না ওদের দর্দ ভরি কহানী। এ ব্যথা কি যে ব্যথা বোঝে কি আন জনে সজনি আমি বুঝি মরেছি মনে মনে...
এখন প্রচুর সমাজসেবী ময়দানে নেমে পড়েছে। হাতে পাঁচ টাকা দামের এক প্যাকেট বিস্কুট সাথে তিনজন ফটোগ্রাফার। হাসিহাসি মুখে পোজ মেরে উত্তমকুমার মার্কা ভুবন ভোলানো হাসি বিলোতে বিলোতে বিস্কুটটাই আর বিলানো হলো না। না হোক, আসছে বছর আবার হবে। ফটোটা জম্পেশ হয়েছে, বউ যা খুশি হবে....। এই নকলি মাকালদের দাপটে আসলি দাতারা আর হালে পানি পাচ্ছে না।
দেশভক্তিতে গদগদ করছে কিছু মানুষ। দেশের প্রতি এদের এতো প্রেম যে কোথায় ছিল বুঝতে পারিনি। পনের টাকার মাক্স সত্তর টাকা।চাল, তেল ডাল আটা, চিনি সব হু হু করে গোষ্ঠী সংক্রমণের মত বিস্তার করছে। আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ই ই ই ই...
কবিদের টাটকা কবিতায় ভরে উঠছে দিস্তা দিস্তা কাগজ। কি নেই কবিতায়৷! ঝর্ণা আছে পাহাড় আছে সাগর আছে নদী আছে। জৈবসারের মতো প্রেম আছে। আর করোনাতো বস্তা বস্তা।
জিলে লে জিলে লে আও আও জিলে লে...
সংগীতের সুরও ভাইরাসে আক্রান্ত। সুর আছে কথা পাল্টে গেছে...
সরকার লকডাউন করেছে আমরা হরদিল জো প্যার করেগা ও গানা গায়েগা.. মৌজ মস্তিতে আমরা লকডাউন মানাচ্ছি। দুবেলা মোটরসাইকেল চক্কর মেরে দেখতে বের হচ্ছি কেমন চলছে মাদারি কা খেল!
সরকার বললো হাততালি দাও শঙ্খ বাজাও আমরা ঢাকঢোল তাসা ব্যান্ড খোল করতাল নিয়ে দুর্গাপূজার বিসর্জনের মতো বেরিয়ে পড়লাম দলবেঁধে। কি ফূর্তি! আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।
সরকার প্রদীপ জ্বালাতে বললো আমরা শুশুনিয়া পাহাড়টাই জ্বালিয়ে দিলাম। অল্পেতে খুশি হবে দামোদর শেঠ কি, মুড়কির মোয়া চাই চাই ভাজা ভেটকি।
আমরা বেশ মজে আছি। কখনো পাখির নীড়ের মতো বনলতা সেনে কখনো আঁখ মারে ও লেড়কি আঁখ মারে ...
রামায়ন মহাভারতেও আবার হুমড়ি খেয়ে পড়ছি। এজীবনে কতো সাধ ছিল কিছুই তো পেলাম না। কিন্তু লকডাউন তো পেলাম। সেটা কম কি?
রাজনীতির কচকচানি ভুলে আবার তো একসাথে হলাম কয়েকটি দিন । ধর্মান্ধতা সরিয়ে দু'চার দিন একটু হলেও তো মানবিক হলাম সেটা কি কম পাওনা। মমতার বুক আবার মমতাময়। মোদীজির কন্ঠস্বরে দখিনা বাতাস। বামেদের হৃদয়েও বিপ্লব থেমে গিয়ে, মধু মালতি ডাকে আয়... । আর আমাদের মনেও বন্য প্রেমের ভাইরাস। বেশ করেছি প্রেম করেছি করবোই তো....
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
ছোটবেলার রথের মেলা
✍✍✍ অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)
আমাদের ছোটবেলায় কলকাতার রথের মেলার এক অন্য আকর্ষণ ছিল। কসবা রথতলা, ঢাকুরিয়া, আরো অনেক জায়গায় রথ বেরোত । ইস্কনের রথের মেলা হতো দেশপ্রিয় পার্কে । বিরাট ব্যাপার; রথ থেকে উল্টোরথ, সাত দিন ধরে মাঠ জুড়ে মেলা চলতো।
দীক্ষিত সাহেবরা সব মন্ত্র পাঠ করে যজ্ঞ করতেন । তাঁদের উদাত্ত গলায় ' স্বাহা' উচ্চারণ অদ্ভুত সুন্দর লাগতো। মেলায় হরেক ছোটবড় দোকান বসতো। থাকতো নাগরদোলা, বন্দুক ছুঁড়ে বেলুন ফাটানো, আরো অনেক কিছু । মাটির পুতুলের দোকান আসতো ।.. আমরা ভাইবোন মিলে খুব আনন্দ করতাম। ভোগের খিচুড়ি, পাঁপড়, এইসব খাওয়া চলতো ।
কসবা রথতলাতেও দোতলা বড় রথ বের হত। তারও সৌন্দর্য কম ছিল না ।
আজও রথ উৎসব আসে, তবে সেই রথের মেলা হয় কিনা জানি না । হলেও তার সেই জলুষ আর নেই; অথবা হয়তো আমাদের মনটাই অন্যরকম হয়ে গিয়েছে । আর কিছুতেই আশ্চর্য হই না! এখন বোকাবাক্সের পর্দাতেই রথের মেলা দেখা চলে ।..
ছোটবেলাটা এরকমই; তার কথা থেকে থেকে মনে পড়ে । ভোলা যায় না ।।...
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
কবিতা
পঞ্চপদীতে শহীদবেদীতে
✍✍✍ ডঃ রমলা মুুখার্জী
মাতার মতই মাথার ছাতা তোমরা সুমহান ।
তুমুল তুফানে ঝঞ্ঝা পেরিয়ে-
অভীক প্রহরী রয়েছো দাঁড়িয়ে ।
ধন্য ধীর, কর্মে বীর, ধন্য নওজোয়ান ।
সীমান্ত-সেনার দেশ-প্রেম খাঁটি
দাও না নিতে এক তিলও মাটি –
লড়াকু যুদ্ধ বীর
গড় শান্তির নীড় ।
সন্তর্পণে উপড়িয়ে ফেল শত্রুর সব ঘাঁটি ।
দেশের মাটিকে আঁকড়ে আদরে
মরণ-বরণ করেছো সাদরে
যত শহীদ সৈনিক
রণজয়ী নির্ভীক ।
দেশবাসীকে জড়িয়ে রেখেছো নিরাপত্তার চাদরে ।
পায়ের তলায় দাও যেস্বাধীন ঠাঁই,
তোমাদের ভুলে না কভু যাই ।
দিয়েছো বন্ধু দুহাত বাড়িয়ে -
সীমান্ত পারে রয়েছো দাঁড়িয়ে
দেশের দশের ভাই, তুলনা কোথাও নাই।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
খেলার আসর
✍✍✍ হামিদুল ইসলাম
আর এক ভাবনায় মত্ত এ জীবন
জীবনের দোরগোড়ায়
তবু সুখের অনুভূতি যাপন করি
তোমার সুখ ছায়ায় ।।
ফিরে আসি মোহনা বরাবর
ভীষণ রাত
পৃথিবীর যতো দুঃখ পাড়ি দিই প্রতিদিন
তবু জাগ্রত আমার প্রভাত ।।
অসহিষ্ণুতার জাল ভাঙি নখের চারায়
অশরীরী আত্মারা বহুদূরে সীমানা হারায়
সীমান্তে এঁটে দিই খিল
অশরীরী আত্মাদের আসা যাওয়া বন্ধ ।।
আকাশে প্রতিদিন ঘুড়ির লাটাই
আমরা ঘুড়ি
উড়ে যাই স্বর্গ মর্ত্য পাতাল
স্বর্গের গোলাপ বকুলে ভাসে প্রেম প্রেম সুগন্ধ ।।
তোমাকে নিয়ে পেরিয়ে যাই আকাশ
দুহাতে স্বপ্নগুলো সাজাই
মনের চিলেকোঠায় গড়ে তুলি
নির্জন বাসর ।।
রাত আসে প্রতিদিন হাতের মুঠোয়
রেখে যায় নিবিড় আঁধার
আমরা দুজনে জীবনকে গড়ে তুলি
মৃত্যুহীন খেলার আসর ।।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
পিনুমামা ও রুপু
✍✍✍ রাজকুমার ঘোষ
পিনু মামার ছোট্ট মুখে
লম্বা খোঁচা দাড়ি
মাঝেই মাঝেই গাঁজার সাথে
শুধুই খেতো তাড়ি
পিনু মামার বন্ধু রূপু
বিশাল তার ভুঁড়ি
সকাল হলেই বোতল চাই-ই
নয়তো সুড়সুড়ি
রূপুর আবার দিমাগ খুব
রাবনসম রুচি
মনের আশ ব্যর্থ হলেই
রেগে ফুলকো লুচি
পিনু মামা সু্যোগ বুঝে
দিলো রুপুর সঙ্গ
দুধের স্বাদ ঘোলে মেটায়
শেষে রসভঙ্গ ।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
স্মৃতি ও চুম্বন
✍✍✍ মিঠুন রায়
মুষলধারা বৃষ্টি জুড়ে
জেগে ওঠে শুকনো পাতার ঘ্রাণ,
মেঘের গুমোট মুখ দেখে
পাখিরা ফিরে গেছে নীড়ে,
পথভ্রষ্ট স্মৃতির মতো গাঢ় তাই তোমার অধরের চুম্বন।
মনুষ্যত্ব আজ তলিয়ে গেছে ধরিত্রীর পঙ্কিলে।
আলোর সন্ধানে ভবঘুরে হয়ে দিশাহীন পথে হাঁটছে মানুষ।
স্নায়ূরোগের বিকল্প খুঁজতে গিয়ে একসময় সেও হারিয়ে যায় অর্ধ-চেরা আকাশের বুকে।
মুখ বুজে সহ্য করে সব যন্ত্রণা,
বিধিলিপির এই এক নির্মম পরিহাস!
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
ছড়া
রকমারি ঝকমারি !
✍✍✍ বিশ্বজিৎ কর
করোনা তো পাশবালিশ
ডেঙ্গি মোদের সাথী,
স্বাস্থ্যবিধিকে বুড়ো আঙ্গুল
তর্কে মাতামাতি!
নতুন পাওনা সীমান্তযুদ্ধ
লড়ছে মোদের জওয়ান,
গর্বের সাথে বলুন সবাই
মেরা ভারত মহান! 🇮🇳
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
আবেদন
এইটি একটি গদ্য কবিতার আদলে রচনা। সকলে একটু ধৈর্য ধরে পড়ুন এবং ভালো/মন্দ সুচিন্তিত মতামত দিন, সাদরে গ্রহণ করবো।
পুঁথিরমণ
✍✍✍ রঞ্জন চৌধুরী
পুরনো পুঁথি খুলে বসলে, হলদেটে পৃষ্ঠারা বলে - - - দেখ কেমন মলিন হয়ে আছি, একটু ঝেড়ে পুছে সাফ করে দাও তো।
পুরনো পুঁথি খুলে বসলে - - - অজস্র শিকড় ঘিরে ধরে আমাকে, শুস্ক অস্হিরতায় । বিবর্ণ পাতাগুলো থেকে একটা হরিণ ছুটে বেড়ায়। আদি ও অনন্ত সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে পরে চীহ্নহীন বাতাসের মুখে। অচলবন্ধন থেকে মুক্ত পাতারা নিবিড় সোহাগ জানায়, আঁধফোটা বাউলের কলিতে।
পুরনো পুঁথি খুলে বসলে - - - স্মৃতির ভিতর থেকে উড়ে যায় এক দুধসাদা বক, মাটির স্রোত গড়িয়ে। একরাশ মুগ্ধতা আমাকে আঁকড়ে ধরে অক্ষরের নির্জন ভূমিতে। ঘড়ি থেমে যায়। আঙুল খুঁজে ফেরে অমরতর সাত রাজার ধন।
পুরনো পুঁথি খুলে বসলে - - - দিন শেষের সন্ধ্যা রাতে বিমুর্ত কেউ এসে প্রদীপ জ্বেলে দিয়ে যায়। শব্দহীন ভরে ওঠে ঘর আলোর রোশনায়।
পুরনো পুঁথি খুলে বসলে - - - সম্ভবত, শতাব্দী শেষেও বিধৃত হতে চায় কায়কোবাদের মহাশ্মশান, পরম্পরায় ।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
এখন সময়
✍✍✍ গণেশ দেবরায়
বাইরে হাত বাড়ালাম
নিস্তব্ধ গাঢ় অন্ধকার।
হাতটা হৃদয়ে রাখলাম
যন্ত্রণার কান্না শুধু।
হাতটা মাথায় রাখলাম
আগুন দাউ দাউ করছে।
জীবন এখন মরুভূমি
উষ্ণ উত্তপ্ত জল শূণ্য
চারদিকে শুধু মহাপ্রলয়ের বার্তা
ঘরে বাইরে এমনকি হৃদয়েও।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
অকবির কবিত্ব
✍✍✍ অনিরুদ্ধ কর
চৈত্রের রৌদ্রতাপে দাহিত নগর,
তপ্ত সমীরণে অনার্দ্র কবিত্ব অকবির ।
সহসা বাজিয়া উঠিল রণডঙ্কা !
বাদিকার অস্তিত্বে এক অলীক আশঙ্কা !
তবে নারী পরমা প্রকৃতিরূপে আজ ।-
আশাশূন্য মানববক্ষে তীব্র উচ্ছ্বাস,
নগণ্য বারিপাত কাব্য-বিষাদে, -
অকবির সিক্তদেহ কবিত্বের নীরে ।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀 🍀🍀
উপকন্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ
" আযান "
✍✍✍ জুয়েল রুহানী।
মসজিদে ঐ মুয়াজ্জিনের আযান শোনা যায়
মাঠে ঘাটে কাজ ফেলে সব আয় নামাযে আয়
প্রভূর ডাকে দাও সাড়া দাও আপন মহিমায়
প্রভূর বিধান মানলে তবে নাযাত সু-নিশ্চয়!
মসজিদে ঐ মুয়াজ্জিনের আযান শোনা যায়
কান পেতে শোন্ মায়াবী সুর হৃদয় ভরে যায়
পৃথিবীর এ সংসারে যে সুখ খুঁজে না পায়-
প্রভূর বিধান মানলে তবে মিলবে সু-নিশ্চয়!
মসজিদে ঐ মুয়াজ্জিনের আযান শোনা যায়
প্রভূর রহম পেতে হলে লুটাও যে সেজদায়,
নিজ হাতে এর প্রাপ্য বুঝে দিবেন দয়াময়
প্রভূর বিধান মানলে তবে নেই কিছু আর ভয়।
মসজিদে ঐ মুয়াজ্জিনের আযান শোনা যায়
কেউ নামায ফেলে করিসনে পার ব্যাস্ত সময়
ফেলে কর্ম যত হও নত ঐ প্রভূর সিজদায়
প্রভূর বিধান মানলে তবে ভরবে যে হৃদয়!
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
মিথ্যেবাদী
✍✍✍ গোবিন্দ কুমার সরকার
আমাকে ছেড়ে যদি তুমি ভালো থাকো ,
যদি তোমার আকাশ মেঘলা না হয়,
আঁচল একটুও না ভিজে,
যদি বুকভাঙার শব্দ শুনতে না পাও,
বুকে হাত রেখে স্পন্দন অনুভব না হয়,
শ্বাস-প্রশ্বাস যদি দীর্ঘশ্বাস না হয়,
আড়ালে চোঁখের জল না ফেলো যদি,
দৃঢ় বিশ্বাস, তুমি আমার মতো মিথ্যেবাদী।
আমায় ছাড়া যদি মন চঞ্চল হয়,
যদি তোমার মন উদাস না হয়,
আমায় পাওয়ার যদি প্রত্যাশা না জাগে,
আমার বুকে যদি শান্তির বার্তা পাও,
বিনিদ্র রজনী যদি একটুও না কাঁদে,
চন্দ্রমল্লিকা যদি মাদকতা না আনে,
মন যদি না হয় একটুও অনবাদি,
দৃঢ় বিশ্বাস, তুমি আমার মতোই মিথ্যেবাদী।
🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀🍀
বাসনা
✍✍✍ বদরুদ্দোজা শেখু
পাখিগুলো উড়ে যায় সতর্ক সজাগ
ফুল ফুটে , ঝ'রে যায়, ছড়ায় পরাগ
সূর্য ওঠার সাথে জেগে ওঠে জীবন জগৎ
রাত এলে ঘুমায় পৃথিবী আগেপিছে অপূর্ব কুদরত,
দুরন্ত খরায় চোখ রগড়ায় দেখি সবুজের বন
ঝরা পাতা জানে যেন বসন্তের তীব্র আবাহন,
মন হাসে মন কাঁদে আনন্দে বিরহে
তেপান্তরে উড়ে যায় সমুদ্দুর তেরো নদী পরীদের দহে
নীল জল গোলাপী জল বন্দর লেকে
থেকে থেকে বরফের দেশে ঘুরে রহস্যের ঠেকে,
মাটি মেখে ছাই মেখে , মেখে কাদা বালি
ডিঙি নৌকা হাল মই বেয়ে যায় পোড়ো ঘরে সোনালী রূপালী
শষ্য আহরণে মগ্ন, রুগ্ন দেহ ভগ্ন স্বাস্থ্য মন
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শ্বাস নিয়ে বেঁচে থাকে স্তিমিত লন্ঠন
আজীবন সুন্দরের সংসর্গ খুঁজে যায় কথায় শব্দে সাহিত্যে সংগীতে,
ছুতোর দর্জির মাপজোঁখ ছুরি কাঁচি ফিতে
দিয়ে মাপবার নয় অনুভূতি-ভুবনের আনন্দ-কানন --
কখনো সমুদ্দুর কখনো আকাশ কখনো বিজন নিদাঘের বন,
বিনীত হৃদয় সুখ পায় এই সব কথা ক'য়ে ক'য়ে---
বেঁচে আমি থাকতে চাই বন হ'য়ে নদী হ'য়ে ফুল পাখি প্রজাপতি হ'য়ে ।।
------------------------------------------------------------
© সেক আসাদ আহমেদ
সম্পাদক , উপকণ্ঠ
গাংপুরা ,পূর্ব মেদিনীপুর
18/06/2020
0 comments: