"উপকণ্ঠ 25শে জুন সংখ্যা "
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-25/06/2020, বৃহস্পতিবার
সময় :- সন্ধ্যা 6 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
আজকে উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিনে যারা কলম ধরেছেন✒✒✒✒👇👇👇👇👇
ইংরেজি কবিতা:-
1) সিদ্ধার্থ সিংহ
2) সাবির আহমেদ
অনুগল্প:-
1) সুজাতা সরকার
স্মৃতি কথা:-
1) জুয়েল রূহানী
মুক্ত গদ্য:-
1) কাশীনাথ সাহা
ছোটোগল্প:-
1) আব্দুল রাহাজ
কবিতা:-
1) শংকর হালদার
2) তৃণা মুখার্জী
3) রঞ্জন চৌধুরী
4) বিপ্লব গোস্বামী
5) গণেশ দেবরায়
6) হামিদুল ইসলাম
How many times more
✒✒✒ by Siddhartha Singha
O mother, you are drenched bathed in your own sweat
How many times will you brush aside the twigs and leaves
dropping pitar-potter
How many days will you hold my hand and drag me
into the varanda from the court yard, into the room
from the varanda
How much more will you protect me yourself facing storms and rains.
O mother, you are drenched bathed in your own sweat
Now at least loose your hold and send me outside the maingate alone.
Ode to the Ababeel
(Rectified poetry )
✒✒✒ by Sabir Ahmed
O the angels of Allah, O the heavenly birds,
O the immortal birds,O the enemy slaughter,
O the birds of sensation, O pain killer,
Like the stream of eternal river that never ends,
Greet to thee upon this earth with the divine flowers.
Be fructuous thy unnumbered peace of years,
Upon my troublesome life merged under the mire.
My waiting for thee for one score, O hair !
Like the moving asteroids, pelting stones
Peel the wings of venomous wisps like the beans.
Tear the cobwebs of black spider.
Squash the millipedes wriggle hither and thither.
Break the anthills of wood ants like glasses.
Or kill the leeches and octopuses,
Which suck blood of innocuous creature,
In the heart of nature.
For the fear of centipedes and snakes around,
Men are rudderless-
Where the taste of peace is vanished .
All Creatures dither for fear,
Where the lions and tigers roar,
With the full heartfelt glee.
Like volcano by the red sparks of envy,
On the bloody corpses the spreading salt,
And the bony flesh by melting drop out-
In the fire of pyre.
Mixed up in the sky, in the air,
Where the dreams of downtroddens burn.
Conciliate my helpless and winced conscience-
O Ababeel with thy happy strain.
The earth is ever ill,
In the concentric circle,
Suffers from the viral pneumonia,
By the provocation of megalomania.
Under the dirty blanket,
Mothers' tears with the torn garment,
Outcry of the hungry children,
On the footpath, in the lane,
Are heard and seen.
O Allah gifted Ababeel,
Annihilate the omens that are chaotic and evil.
O twist the black hands and the devil's will.
Come out swarms from a secret cave,
The people from the black society to save.
Do so what you did in Mecca to save Kaaba,
By the command of almighty Allah.
O come ! come Ababeel, O come !
Being the symbol of eternal peace, heart and love.
বিষয় --অনুগল্প
ভাত
✒✒✒ সুজাতা সরকার
পরিযায়ীর জীবনের এক করুন কাহিনী
ভাত দাও গো ভাও!দুটো ভাত একটুস নুন!ব্যাস আর কিচ্ছু লাগবে নাই গো বাবু প্যাটে যে কত্তোদিন ভাত পরেনি গো-লোকটার চোখটা লোভে চক্ চক্ করে উঠলো। একমাথা এলোমেলো কাঁচাপাকা চুল,খোঁচাখোঁচা দাড়ি ধুলামলিন পোশাক
মুখে অজস্র বলি রেখা তোবরানো গাল কোটরাগত চোখ দুটিতে করুন আর্তি -দুটো ভাতের জন্য!
কি করি আর কি বলি বুঝতে পারছি না এমন সময় ঘরের ভিতর থেকে ডাক এলো "ভাত বেরেছি খাবে এস"
লোকটা কম্পিত স্বরে বললো "ভাত"
এবার আর দ্বিধা না করে এসো আমার সাথে ঐ কলে হাত ধুয়ে ঐ আমতলাতে বসো ,আমি ভাত আনছি -
ঘরে ঢুকে ভাতের থালাই ডাল তরকারী ঢালতেই গিন্নি রে রে করে উঠলো ।
"এই নাও গত ভাত পেট ভরে খাও আর ও দেবো"
লোকটি হামলিয়ে পড়লো থালার ওপর গোগ্রাসে গিলতে শুরু করলো! কি ভঙ্কর খিদে!
বলতে লাগলো খেতে খেতে "লে পরান লে ভাত খা প্যাট ভরে ভাত খা!!
কবিতা
পুনরায়
✒✒✒ শংকর হালদার
যেখানে মসৃণ চেতনা ডানা মেলে ধোঁয়াশা রাজ্যে ।
গোধূলির উপচে পড়া স্বপ্ন পথ হারায়...
মানবিকতা বন্দী দশায় ...
আর ভরসা আটকে থাকে সম্পর্কের মিহি সুতোয় ।
বেঁচে থাকার বাসনা এখন ঈপ্সিত স্বপ্ন!
সয়ে থাকা জীবন প্রতীয়মান আলোর মাপকাঠি ।
সমাজ কোঠরে কোঠরে...
বিচ্ছুরিত ছেঁড়াখোঁড়া জমে থাকা কালো শব্দ
ধুয়ে মুছে সাদা হোক অকাল বৃষ্টিতে,
পুনরায় সেজে উঠুক সমাজ নবনব রূপে ।
দাদু
✒✒✒ তৃণা মুখার্জী
পড়ে আছে অনেক স্মৃতি ।
পড়ে আছে ভাঙা লাঠি , ধুলো জমা জুতো। হয়েছে ঝোল দেওয়া তরকারি ও রুটি।
শুধু দাঁত ছাড়া সেই চুয়াল দুটো আর নেই।
মানুষ চেনার ফাঁকে
✒✒✒ রঞ্জন চৌধুরী
পিঁপড়ে স্বভাব নিয়ে বেরিয়ে পরি
লাইনে দাঁড়াই
রেশন তুলি
অটো, বাসে চড়ি
আবার দুষ্টু লোক দেখলে কুটুস করে কামড়েও দিই
আর সারিবদ্ধ দিন শেষে ফিরে আসি যে যার বাসায়....
তবে এইভাবে লাইনে দাঁড়াতে দাঁড়াতে
সার কথা বুঝেছি
পোড়া অন্ন ও খিদের মাশুল গোনা
পিঁপড়েদের শৃঙ্খলা ভাঙার মত
আজও কোন বিপ্লবের জন্ম হয়নি
রচিত হয়নি কোন দেশের কোন সংবিধানের অনুচ্ছেদ......
এবং এও বুঝেছি
মধুস্রাবী পিঁপড়েদের শৃঙ্খলাপরায়নতার রহস্য
মানুষ আজও উদঘাটন করতে পারেনি....
মানুষ যা পেরেছে
উদ্যোগী হয়ে নিজেই নিজের মত লাইন ভাঙে
ধর্ম ও গোষ্ঠীবদ্ধ হয়
আর একে অপরের সংক্রমণ ছড়ায়
স্রেফ সংক্রমণ....
***
বিচিত্র দুনিয়া
✒✒✒ বিপ্লব গোস্বামী
এ বিশ্ব দুনিয়া বড় বিচিত্র ভাই
গুণ দেখে নয়,
জাত দেখে দেওয়া হয়
অগ্ৰাধিকার !
কত জ্ঞাণী গুণীর
জাতের দোষে ভাগ্যে লাথ !
সাধারণ বঞ্চিত হয় সদাই।
অগ্ৰাধিকার যদি দিতেই হয়
তা যেন পায়
বীর শহীদের সন্তান।
জাত ধর্মের সংরক্ষণ
নিপাত যাক,
প্রকৃত গুণীজন পাউক
তার প্রাপ্ত সম্মান।
আজকের গ্রাম
✒✒✒ গণেশ দেবরায়
( কবি বন্দে আলি মিয়ার আমাদের গ্রাম কবিতার অনুকরনে)
নেই কোথাও ছোট গ্রাম নেই ছোট ঘর
কেউ কাউকে জানি না কে আপন কে পর।
পাড়ার সকল ছেলে পিঠে ব্যাগ নিয়ে
দিন রাত ব্যাস্ত মোবাইল এ হেড ফোন দিয়ে।
নেই সেই ছোট গ্রাম আলো বায়ু ভরা
ধান খেত উধাও সব দিঘি সব মরা।
চাঁদের কিরন আজ যায় নাকো দেখা
চারিদিকে উঁচু দালান রঙে ঢঙে আঁকা।
সকাল হয় তবুও আজ সূর্য না হাসে
পাখির কাকলি নেই এ ভোরের বাতাসে
" স্বপ্ন "
✒✒✒ হামিদুল ইসলাম।
জীবন বড়ো কঠিন
কঠোর। পাথুরে ভূমি
পাথুরে জমিনে প্রতিদিন করি চাষ
এ জীবন তবু শুষ্ক মরুভূমি ।।
এখানে জলের জন্য হাহাকার প্রতিদিন
জলকে রাখি অঞ্জলি ভরে
জল ছাড়া মৃত্যু অনিবার্য
জীবনকে সাজাই থরে বিথরে ।।
জীবন জলের জন্য পাগল
ভালোবাসা চায় জল
বিকেলের রামধনু রঙ ছুঁয়ে যায় মন
কতো স্বপ্ন ঝরে পড়ে। হয়ে যায় বিফল ।।
নষ্ট জীবন একে একে সাজাই
পাগলামী প্রতিদিন
জীবনকে তুলে রাখি মনের চিলেকোঠায়
প্রতিদিন স্বপ্নগুলো হয়ে ওঠে রঙিন ।।
আষাঢ়ের এক বিকেল
✒✒✒ জুয়েল রুহানী
আষাঢ়ের আকাশে ঘন কালো মেঘ জমা, মেঘ চিরে যেন এখনি ঝড়ে পরবে ভূবনের সবুজ-শ্যামল বিস্তৃত মাঠের'পরে অজস্র বৃষ্টিধারা। কিন্তু না, বৃষ্টি ফোটার ছন্দ মাটি স্পর্শ করলো না! নিমিশেই ঘন কালো মেঘ মিশে গেল অসীম গগনের বুকে। লাল সূর্যটা মিষ্টি হেসে উঁকি দিল পশ্চিমাকাশে। আমরা দুই বন্ধু তখন কলেজের বারান্দায় দাড়িয়ে তাকিয়েছিলাম গগনপানে কালো মেঘের দিকে। কিন্তু ঘন কালো মেঘের অবসানে সূর্যের হাসিতে দু'জনের প্রাণে আনন্দ সঞ্চার হলো।
এমন এক মায়াবী বিকেলে কি হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায়? নিশ্চয়ই না। আর তাইতো দুই বন্ধু বেড়িয়ে পরলাম, দু'চোখ যেদিকে যায় আমরা আজ সেদিকেই ছুটবো। খোলা আকাশে পাঁখি যেমন ডানা মেলে দূর অজানায় পাড়ি জমায়, আজ আমরাও পাড়ি জমাবো কোন এক অজানা ঠিকানায়। শুরু হলো আমাদের অজানা গন্তব্যে পাড়ি জমানো। পথ বেয়ে চলতে লাগলাম দুই বন্ধু। রাস্তার দুইধারে সাড়ি সাড়ি বৃক্ষ, মাঠে বিছানো সবুজ চাঁদর, দেখে মনে হয় যেন; স্বপ্নের রং তুলিতে আঁকা ক্যানভাসের ছঁবি। কী অপূর্ব রূপ! রুপের সীমা-পরিসীমা নেই, আছে শুধু রূপ আর রূপ! চলার পথে চোঁখে পরলো মাঠের'পরে কৃষকের আপন হাতে ফসল বোনার মায়াবী দৃশ্য। কোথাও আবার ছেলে-মেয়ে ছুটাছুটি করছে, রঙ্গীন ঘুড়ি আকাশে উড়াচ্ছে নাটাই হাতে এক দল ছেলে। ইচ্ছে করে ঘুরির মত হাওয়ার মাঝে উড়ি। কিন্তু এ যে কল্পরাজ্যে হাবুডুবু খাওয়ার নামান্তর মাত্র। যা কখনও পূরন হওয়ার নয়। আবেগতাড়িত ইচ্ছার নামান্তর!
যা হোক পথ যেতে লাগলাম। পথ যেতে যেতে হঠাৎ চোখে পড়লো এক বিরাট বটগাছ। ডালপালা বিস্তার লাভ করেছে অনেক দূর পর্যন্ত। স্থানিয়সুত্রে জানলাম প্রায় তিন একর জমি জুড়ে বিস্তৃত এ বটগাছটি। বটগাছের তলায় ঈদগাহ্ মাঠ, যা মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসবের প্রাণকেন্দ্র।
ঐতিহ্যের ধারক-বাহক এই বটগাছটি আছে বাংলাদেশের রংপুর বিভাগের অধিনে, লালমনিরহাট জেলার সদর উপজেলায়। উপজেলা পরিষদ হতে প্রায় ৫ কিঃমিঃ পূর্ব-উত্তরে অবস্থিত এ বটগাছটি। এই ঐতিহ্যবাহি বটগাছটি দেখতে দূর দূরান্ত থেকে অনেক দেশী-বিদেশী পর্যটক ছুটে আসে। আমরা দুই বন্ধু আজ আষাঢ়ের এক সোনালী বিকেলে মনের অজান্তেই ছুটে এসেছি ঐতিহ্যমন্ডিত এ গাছটির কাছে।
দু'জনে ঘুরে ঘুরে দেখলাম বটগাছটি। দেখতে দেখতে সন্ধা ঘনিয়ে এলো, ফিরে যেতে হবে গৃহভ্যন্তরে। হঠাৎ করে দু'নয়নের পথ নির্দেশনায় আজ আমরা যেমন এই ঐতিহ্যের শিকড়ে এসেছি, এমনি ভাবে মনের অজানায় বেড়িয়ে পরলে দেখা মিলবে ঐতিহ্যের নানা নিদর্শন।
গোধূঁলি লগনে গগনে আবারও কালো খেলা করতে লাগলো, আর আমরা বেলা শেষে ফিরে যেতে লাগলাম আপন গৃহে নিয়তীর নির্দয়ে!
মুক্ত গদ্য
ঈশ্বরের খেয়াঘাট
✒✒✒ কাশীনাথ সাহা
মুক্ত মনের অনুচ্চারিত ভালবাসায় ঈশ্বরের বাগানে রক্তকরবী ডানা মেলে। শব্দ নয় বিশ্বাস, উচ্চকিত নয় স্থিতধী, রৌদ্রময় প্রাবল্য নয় নৈশব্দ বন্ধনেে অঙ্কুরিত হয় কবিতা। নদী পারাবারের খেয়াঘাটের পারানি। গড়তে হলে ভাঙতে হয়। ভাঙনটিও যেন হয় শিল্পীর মাধুকরী। সৃষ্টির মগ্নতা মানুষ শিখে নিয়েছে। জেনে নিয়েছে অনাবাদি জমিতে শস্য ফলানোর রহস্যময়তা। তবুও ভুল হয়। অহংকার, আত্মতুষ্টির আতুড়ঘরটি যে আমার ভিতরেই ছলাৎ ছলাৎ মাটি ক্ষয়ের যতিচিহ্ন আঁকছে প্রতিনিয়ত।
তারপর তো পথ খুঁজে নেওয়ার দিব্যদৃষ্টিতে পথ চিনে নেওয়ার আড়ম্বর। আহা অক্ষর যদি নিজেই খেয়া নৌকায় কবিতার আলো বিকিরণ করতো!
ভালবাসার কথা উচ্চারণ না করেও তো ভালবাসা শব্দটি প্রোথিত করা যায় অন্য হৃদয়ে। সেই সেতুটি তৈরী কি দিয়ে!
অদৃশ্য সেতুর বন্ধনে আলোকিত হয় প্রেমিকার মগ্নতা। সেই সেতুটি একটু টালমাটাল হলেই ভেসে যায় বিশ্বাসের কাঠামো। কতোবার ভেঙেছি আকাশ আবার কতোবার অদৃশ্য বন্ধনে ঋদ্ধ হয়েছি। এই খেলা চলছে নিরন্তর। এপারেও ঈশ্বর ওপারেও সেই তিনি। মাঝখানে আমি আমি আর শুধুই আমি।
কৈশোরের প্রেমিকার মুখখানি মুছে যায়নি আজও। নিভৃতে তাঁকে রেখে দিয়েছি গোপন কুটিরে। মাঝে মাঝে আগল খুলে যন্ত্রণা খুঁজে রক্ত ক্ষরণের স্রোতটি ছুঁয়ে আসি। সে ছিল ভালবাসা ঈশ্বরের খেয়াঘাট। আজ দায়িত্ব, এখানেও বিশ্বাস নিরাপদ আশ্রয়ে আছে। সিঁথিতে সিঁন্দুর আর লালপাড় শাড়ির আঁচলে সে থেকে গেল একান্ত আপন হয়ে। শরীর ছুঁলাম হৃদয় নিলাম না।
এ তুমি কেমন তুমি চোখের তারায় আয়না ধরো, এ কেমন কান্না তোমার যখন তুমি আদর করো....
অক্ষর নিয়ে বসবাস করলাম, ঘর করলাম, অহংকারী হলাম, স্থিতধী হলাম তবুও অক্ষর চিনতে পারলাম কোথায়। পুরোটাই আড়ম্বর। হয়তো ছিটেফোঁটা বিশ্বাস ছিল তাই সংসারটা ডুবতে ডুবতেও ভেসে আছে। কদমতলে কৃষ্ণ বাঁশিতে ডাকলেই রাধা ছুটে যায় সব লোকলাজ সরিয়ে। এ প্রেম না মোহ!
নদীতীরে খেয়াঘাটে নৌকাে বাঁধা আছে। এপারে আমি ওপারে না পাওয়ার তাজমহল। অক্ষর সাজিয়ে তুলেছি প্রতিনিয়ত। শুধু আর একটি নীলপদ্ম চাই। নীলপদ্ম একটি।
দয়ালু পরিবার
ছোট গল্প
✒✒✒ আব্দুল রাহাজ
গ্রামটা আদি দিগন্তের পথ ধরে পতিত ছিল প্রকৃতির কোলে নামটি তার ফরিয়াদ পুর। গ্ৰামটিতে প্রাকৃতিক শোভা ছিল দেখার মতো প্রায় হাজার খানেক লোকের বসবাস গ্রামে একটু হলেও বড় ছিল। গ্রামটি দুটি পাড়ায় বিভক্ত একটার নাম তরফদার পাড়া আরেক পাড়ার নাম সরকারপাড়া। দুই পাড়ায় হিন্দু-মুসলিমের বসবাস গ্রামের মানুষগুলো অত্যন্ত প্রান্তিক গ্রামটির পূর্বে দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ তার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট্ট নদী আঁখি নদীর নামটি ছিল খুবই সুন্দর এরপর পশ্চিমে ছোট্ট ময়ূর ঘন বন দেখতে খুব সুন্দর লাগতো দূর থেকে আর তার পাশেই একটা ছোট্ট বাজার নাম তার পঞ্চার হাট বাজারটা বেশ বড় গ্রামের লোক এখানে আসতো বাজার করতে জিনিসপত্র কিনতে আর বাজারের সামনে দিয়ে চলে গেছে সুদীর্ঘ রাস্তা শহরের দিকে। গ্রাম এর ভিতর এক জায়গায় ছোট্ট পাঠশালা সেখানে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করত। প্রকৃতির মাঝে রুপ-লাবণ্যে ফুটে উঠত গ্রামটি। গ্রামটিতে একটা মোড়ল ছিল নাম তার বসুমতি সেই অনেকদিন আগে থেকে গাছ ঘেরা একটা বড় বাড়ির ভিতরে থাকতেন মোড়লের বয়স প্রায় নব্বই ছুঁয় ছুঁয় দেখতে মোটামুটি কালো ছিপছিপে শরীর বয়স হওয়ার কারণে একটু যেন চামড়াটা গুটিয়ে গেছে। মোড়লটি খুবই দয়ালু গ্রামের মানুষের জন্য ভাবতেন বিপদের দিনে পাশে দাঁড়াতেন গরিব ছেলে মেয়েদের বিনা পয়সায় পড়াতেন কিন্তু মোড়লের বাড়িতে একা থাকে একবার এক বছরে তার পুরো পরিবার চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছিল তিনি তখন ইংল্যান্ডে বাণিজ্য যাত্রায় গিয়েছিলেন তারপর ফিরে এসে দেখেএই অবস্থা বসুমতির মাথায় হাত পড়ে বেশ কয়েক মাস শোকে স্তব্ধ ছিলেন তারপর তিনি মানব সেবায় নিয়োজিত করলেন নিজেকে। এরপর গ্রামের প্রান্তিক মানুষ গুলো তার ভরসায় কিছুটা হলেও নির্ভর করত অনেকে এই মোড়লের এই বাড়িকে দয়ালু পরিবার বলতেন চারিদিকে গাছপালায় মোড়া একটি অতীব গ্ৰাম মোড়লের কাছে ছিল এক মহা মূল্যবান সম্পদ তিনি সব সময় গ্রামের কথা ভাবতেন। বিকাল বেলায় রহিম করিম নরেন সরেনদের বাড়ি যেতেন একটু গল্পগুজব করতেন আর দেখতেন নদী আঁখিকে আর ভাবতেন এই নদীতে সলিল সমাধি হয়েছিল তার পরিবারের ভাবলেও তার চোখে অশ্রু গড়িয়ে আসে গ্রামের ছেলে মেয়েদের তিনি খুব ভালোবাসতেন। গ্রামটির বাড়িগুলি ছিল মাটির ঘর দিয়ে ছাউনি আর সবাই প্রান্তিক দিগন্তবিস্তৃত মাঠের ফসল ওই গভীর বনের ফলমূল আর নদী থেকে ধরা মাছ এসব নিয়ে তারা কেউ জীবিকা উপার্জন কেউবা দুবেলা-দুমুঠো খাবার জোগান করতো ছোট্ট হাট-বাজার টি তাদের কাছে ছিল এক প্রাণকেন্দ্র সেখানে অনেক দোকান ছিল বেশ ভালই বেচাকেনা করত নয়টা পর্যন্ত ভিড় জমতো তো আশেপাশের গ্রামের লোক আসত নানা গল্পগুজবও হতো প্রতি মঙ্গলবার হাট-বাজার বসতো সেদিন বেশি ভিড় জমতো গ্রামের সবাই সেদিন হাঁটে যেত সবাই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে বাড়ি ফেরার পথে একটু জিলাপি স্বাদ নিতে নিতে গরুর গাড়ি করে বাড়ি আসতেন মন্ডলের এইসব দৃশ্য দেখে সময় কেটে যেত। তারপর একবার বেশ কয়েক বছর আগে মোড়লের কাছে চাকর আদ্যনাথ সে দৌড়ে দৌড়ে এসে বলল বাবু সব হয়েছে ক্ষতি হয়েছে তখন বাবুর বয়স পঞ্চাশ কোথায় ক্ষতি হয়েছে এই তো গ্রামে কি ব্যাপারটা তাড়াতাড়ি বলে হেঁয়ালি করিস না বলল গ্রামে অভাব দেখা দিয়েছে মানুষের অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে তখন একটু ভেবে বলল চল তো দেখি গিয়ে দেখে সত্যিই তাই গ্রামের মানুষের আর্তনাদ দেখে তিনি শহরে তার যেসব খাদ্য সামগ্রীর গুদাম ছিল সেখান থেকে খাবার আসতে থাকলো মোড়ল আর তার চাকর গ্রামের কিছু যুবকদের নিয়ে খাদ্য সামগ্রী দিতে লাগলো এইভাবে প্রায় একমাস দেওয়ার পর তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠল এই হাসি ছিল বড় পাওনা তারপর একটা দিন দেখে মোড়ল বসুমতী বাড়িতে ডেকে বনভোজনের আয়োজন করলেন। গ্রামের সবাইকে সেদিন নতুন পোশাক দেওয়া হয় পেট ভরে খাওয়া দাওয়া হয় মোড়লের বাড়িতে আর মোড়ল বলেন তোমরা আমার প্রাণ আমাদের এই গ্রাম হচ্ছে আমাদের কাছে মা তাই আমরা এবার থেকে এখানে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে সবার বিপদে এগিয়ে আসবো ঠিক আছে আর আমাদের গ্রাম কে আমরা সুন্দরভাবে সজ্জিত রাখবো সবাই সহমত হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ। গ্রামের ছোট্ট ছেলে আফন বলল আমাদের কি হবে তখন মোড়ল হেসে বলল আমি পরাবো গল্প করবো কেমন একথা শুনে তারাও খুব আনন্দিত হলো। এই এইভাবে মোড়লের কথা শুনে দিনগুলি ভালোই যাচ্ছিল গ্রামের মানুষদের। এদিকে দিগন্তবিস্তৃত মাঠে ফসল হয়েছে অনেক সবাই আশায় বেধে সেজে এবার ভালো ফলন হয়েছে গ্রামে। গ্রামের ঘরে ঘরে শান্তির আবহ দেখা যায় উৎসব উৎসব আমেজ সৃষ্টি হয় গ্রামে দিন যায় দিন আসে গ্রামের মূল সবাইকে আগলে ধরে বাঁচতে থাকে।এইভাবে গ্রামবাসীর সঙ্গে দিন কাটায় জীবনের শেষ সময় টুকু তারপর নেমে এলো মোড়লের জীবনের শেষ সময় গ্রামের সকলের মাঝে থেকে চলে গেল চিরঘুমের দেশে। আর সেই বাগান আবৃত বাড়ি টি সবার কাছে স্মৃতি হয়ে রইল দয়ালু পরিবার হিসেবে
©সেক আসাদ আহমেদ
সম্পাদক, উপকণ্ঠ
গাংপুরা, রামনগর, পূর্ব মেদিনীপুর
তাং- 25/06/2020
অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন
উত্তরমুছুন