বুধবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/09/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/09/2020
Upokontha Sahitya Patrika Web Megazine- 23/09/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/09/2020


" উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"

   (ওয়েব ম্যাগাজিন)
  উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 23/09/2020
প্রকাশ কাল:-23/09/2020, বুধবার
   সময় :- সন্ধ্যা 7:30 টা

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577



ধারাবাহিক প্রবন্ধ
     শীর্ষক :---- কবিতার রূপকল্প --- ৩য় পর্ব

    রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র ----- ফিরে দেখা
                   সৌম্য ঘোষ

              মধ্যযুগের বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ছিলেন কৃষ্ণনগর রাজসভার কবি রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র । ১৭১২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর জন্ম । ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যু । কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের প্রেরণা ও আনুকূল্যে ভারতচন্দ্রের " অন্নদামঙ্গল কাব্য" রচিত হয় । "অন্নদামঙ্গল" কাব্যের তিনটি ভাগ । প্রথম ভাগ "শিবায়ন বা দেবীমঙ্গল", দ্বিতীয় ভাগ "কালিকামঙ্গল বা বিদ্যাসুন্দরের কাহিনী" এবং তৃতীয় ভাগে আছে "মানসিংহ- প্রতাপাদিত্য- ভবানন্দের" কাহিনী। একমাত্র অন্নদা ছাড়া কাব্যের তিনটি ভাগের মধ্যে কোন যোগ নেই।  নামে মঙ্গলকাব্য হলেও , প্রকৃতিতে পুরানো মঙ্গলকাব্যের সঙ্গে তেমন মিল নেই।  প্রমথ চৌধুরী বলেছেন,  এই কাব্য থেকেই আমাদের বাংলা সাহিত্যে  "secular sprit" - এর জন্ম ।

                       মধ্যযুগের কবি ভারতচন্দ্রের তুল্য বিদগ্ধ কবি আর নেই বললেই চলে । অনেক সমালোচক তাঁর কাব্যের বিরুদ্ধে অশ্লীলতার অভিযোগ এনেছেন । এই অভিযোগ পুরোপুরি অনায্য নয় । ভারতচন্দ্র মধ্যযুগীয় নন , আধুনিক যুগেরও নন , তিনি যুগসন্ধির কবি । যে সময় অন্নদামঙ্গল লিখিত হয় তখন সদ্য মোগল শাসনের অবসান ঘটেছে । দেশব্যাপী বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতায় সর্বব্যাপী অবক্ষয় দেখা দিয়েছিল । " নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায় " এমনই ছিল পরিস্থিতি। তৎকালীন অভিজাত বর্গের রুচিবিকারকে তৃপ্ত করতেই এই কাব্যের সৃষ্টি ।কিন্তু অশ্লীলতা এই কাব্যের প্রধান আকর্ষণ নয় । তাঁর কাব্যের প্রধান আকর্ষণ ভাষাগত পরিপাঠ্য । স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, এমন শব্দ কুশল কবি মধ্যযুগের বাংলায় আর আবির্ভূত হয় নি । তাঁর কাব্যের কারুকার্য শব্দের দীপ্তি আমাদের মোহিত করে । কাব্যে শব্দ নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি আধুনিক মনের মানুষ ছিলেন । শব্দালঙ্কার ও অর্থালঙ্কার ব্যবহারে ছিলেন supreme literacy craftsman . অসামান্য কুশলতায় তিনি অন্নদামঙ্গল কাব্যে সংস্কৃত ছন্দ ব্যবহার করেছিলেন । তাঁর চিত্রিত চরিত্রগুলির মুখের কথা দৃপ্ত সংহত ও ক্ষুরধার । দরিদ্র কবির প্রতি দারিদ্র জর্জর কবিপত্নী উক্তি ,

      " মহাকবি মোর পতি কত রস জানে ।
        কহিল বিরস কথা সরস বাখানে ।।
         পেটে অন্ন বস্ত্র যোগাইতে নারে ।
     চালে খড় বাড়ে মাটি শ্লোক পড়ি সারে ।।"
এই কবিতায় অনুপ্রাণিত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছিলেন ,

         " কহিল কবির স্ত্রী ---
           রাশি রাশি মিল করিয়াছ জড়ো
           রচিতেছ বসি পুঁথি বড়ো বড়ো
           মাথার উপরে বাড়ি পড়ো পড়ো
           তার খোঁজ রাখো কি !
           গাঁথিছ ছন্দ দীর্ঘ হ্রস্ব
            মাথা ও মুণ্ড , ছাই ও ভষ্ম;
           মিলিবে কি তাহে হস্তী অশ্ব
           না মিলে শস্যকণা ।।"

              মানব জীবন নিয়ে সংহত অভিজ্ঞতার প্রকাশের ভারতচন্দ্র যত পরমার্থতা পেয়েছে তেমনটি অন্য কোন কবি পাননি ।
       " ঝাঁপানি কাঁপনি সার কেবল উৎপাত ।
           অধর দংশিতে চায় ভেঙে যায় দাঁত ।।"
কিম্বা,
          " ভবিষ্যতে ভাবি কেবা বর্তমানে মরে ।
            প্রসাবের ভয় তবু পতি সঙগ করে ।।"

আবার ,
       " মাতঙ্গ পড়িলে দরে পতঙ্গ প্রহার করে  "
বা,
      " নীচ যদি উচ্চভাষে সুবুদ্ধি উড়ায় হেসে"

                 ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে রায়গুণাকর ভারতচন্দ্র মৃত্যু হয় । ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজরা সিরাজউদ্দৌলা কে পরাজিত করে ।  তৎপরবর্তীকালে  সমগ্র বাংলার রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সামাজিক বিশৃঙ্খলা সর্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিল । এইরূপ অশান্ত পরিবেশের  মধ্যে রায়গুণাকর তাঁর বাকবিন্যাসে সরসতা নিয়ে বিরাজমান ছিলেন । তাঁর রচনায় আধুনিক ভাবনার চিহ্ন পাওয়া যায় । তিনি তাঁর পূর্বজ কবিদের মতো ধর্ম ভাবে ভারাক্রান্ত ছিলেন না। বিদ্যা-সুন্দরের যৌনবিহার কে তিনি আধ্যাত্মিক অপার্থিবতায় উপস্থাপিত করেননি । ঐহিকতা ও বাস্তবতা তাঁর কাব্যের প্রধান লক্ষণ । সেই সময়ে অবস্থান করেও তিনি ছিলেন প্রকৃত অর্থে secular . সব ধর্ম তাঁর কাছে সমান ছিল -------   "পুরানে কোরানে দেখ সকলই ঈশ্বর " । তাঁর কাব্যের প্রধান উপাদান ছিল আদিরস ও হাস্যরস । কিন্তু সেটা অধিকাংশ সময়ে পরিশীলিত । মাত্র একবার তাঁর কাব্যে মানব রসের অসামান্য সাক্ষাৎ পাওয়া যায় ঈশ্বরী পাটনী কাহিনীতে । দেবীঅন্নদা গঙ্গানদী পার হওয়ার সময় এই খেয়ামাঝি কে বর দিতে চাইলে  সে  প্রার্থনা করে,  " আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে " । এই প্রার্থনা অনাদিকালের দৈব হতদরিদ্র বাঙালি নর-নারীর স্নেহ ব্যাকুলতার প্রতিধ্বনি ।







আধুনিক দুর্বোধ্য কবিতা 

   - অগ্নিমিত্র 

    

  অতি আধুনিকতার প্রভাবে আজকাল অনেক সময়েই কবিতা দুর্বোধ্য হয়ে যাচ্ছে । তার মর্মোদ্ধার করাই যাচ্ছে না । কবি কী বলছেন বা বলতে চাইছেন, তা স্পষ্ট হচ্ছে না ।

  অনেকে বলবেন, এগুলি তো উত্তর আধুনিক বা পোস্ট- মডার্ন গোত্রের কবিতা। এগুলি তো অনুভব করতে হয়, তবে আর মানে বোঝার কী আছে ?! তাদেরকে আমার জিজ্ঞাসা, মানে যদি একটুও না বুঝি তবে কী করে মনপ্রাণ দিয়ে অনুভব করি?!..যদি তাঁরা সেটা বলে দেন তো ভালো হয়। 

  এই জিনিসটি বিগত কয়েক দশক ধরেই দেখা যাচ্ছে । যার কবিতা যত দুষ্পাঠ্য ও দুর্বোধ্য, তিনি নাকি তত বড় মাপের কবি। এরকম অনেক 'কবি' বেশ 'নাম' করেছেন । 

   মানছি, হয়তো বেশি সরলীকরণ করে ফেললে কবিতার গরিমা থাকে না; তবে বেশি প্যাঁচালো করলেও তার কোনই গুরুত্ব নেই, অন্ততঃ আমার মতো সাধারণ লেখক ও পাঠকের মতে। সাহিত্যও এতে লাভবান হচ্ছে না, বরং ক্ষতিগ্রস্তই হচ্ছে ।।








সাঁওতাল
       শুভ্রাংশু কুম্ভকার


আমরা ভারতবর্ষের আদিম জনজাতি,
প্রথম থেকেই ধরে এসেছি সভ‍্যতার হাল,
দোবরু পান্নার বংশধর বিভূতি বাবুর লেখায়,
বীর বিক্রমে বেঁচে থাকা সাঁওতাল।

জঙ্গল যেন মাতৃসমান,
তারই জন্য জীবন মন সমর্পণ।
ভানুমতীও বন‍্য সুবাসে সুন্দরী,
প্রকৃতির কোলে সৌন্দর্য তার চিরন্তন।

ছোটনাগপুর মালভূমি জুড়ে শান্তিধাম,
সবুজ অবুঝ ত্রস্ত বিদেশী আগ্ৰাসে,
অধিকার কাড়ে ইংরেজ বন্দুক জোরে,
চালাকি করে ঝুলিয়ে ছিল সুদের ফাঁসে।

প্রকৃতি মায়ের কোলেই শেখা সবকিছু,
গরীব নিরহংকার স্বভাব, হৃদয় কিন্তু অভাবহীন,
জল,জঙ্গল,মাটি রুখি প্রানপণ করে,
রক্ত দিয়েও শোধ করে যাই মাটির ঋণ।

ধনুক,বর্শা, তীরের ফলা থামিয়ে ছিল কামান,
অমর রয়েছে সিধু, কানু আজও দিয়ে প্রাণ বলিদান।











  হিসেব
      মিনতি গোস্বামী


হিসেবের ঘরে গড়মিল হলে
কেউ যদি মিশে যায় অন্ধকারে
মাননীয় বিচারক, আপনি
তাকে আত্মঘাতের অপরাধে
দন্ড দিতে পারেন না,
সোজা হিসেব কষবার
তার ও আছে অধিকার।

মুখ আর মুখোশের মঞ্চে
অবিরত কাটাকুটি
কানাঘুষো জলসায় কানপাতা জনার্দন
চিরকাল নেহাতই চুনোপুঁটি।

হেরোদের বনবাস ললাট লিখন
শকুনি মামারাই খেলে কাটাকুটি।








বিভাগ-
        হাইকু কবিতা
                  শংকর হালদার

০১।
সোনালী ধান
কৃষাণে ভরে বুক
স্বপ্ন দু'চোখে ।
০২।
ধর্ম-ধার্মিক
নিন্দিত অহরহ
সহজলভ্য ।
০৩ ।
জৌলুস ধারা
মিথ্যার আলিঙ্গন
সমাজ জুড়ে ।
০৪।
সত্য তিক্ততা
ঝাঁঝালো ও বারুদ
মানেনা কেউ ।
০৫।
জমানো অর্থ
সংকট জীবন
কীসের দর্প ।
০৬।
বৈচিত্র্য মন
আঁকড়ে ধরেছে ও
মিথ্যার গ্লানি ।
০৭।
মেনেছি সব
দোদুল্যমান মন
সত্য ভুলেছি ।








আমি ঘুমাতে পারিনা
                 অলোক রায়


আমি ঘুমাতে পারিনা বড্ড কষ্ট হয়,
কী জানি ওরা কালোরাত কিভাবে সয়।
শিশুদের আর্তনাদ আজও কানে বাজে,
আঁতকে উঠি মাঝরাতে দুরুদুরু করে বুকের মাঝে।
সেই বিভৎস আর করুণ মুখগুলো,
যখন দেওয়াল চাপা পড়েছিল।
যখন কেউ ছিলনা আশেপাশে,
তখন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে মাথার ওপর।
চোখের সামনে কত তাজা প্রাণ পরিণত হল লাশে।
আমি ঘুমাতে পারিনা যে সেই দৃশ্য গুলো চোখে ভেসে ওঠে,
আমি বাকরুদ্ধ হয়ে যাই কথা ফোটে না মুখে ঠোঁটে।
সদ্য সন্তান হারা মায়ের তীক্ষ্ণস্বর কানে ঝড় তোলে,
যেন অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিশোধের কথাই অট্টহাসিতে ঘুরিয়ে বলে।
একটি অভিশপ্ত রাত,
যেন কিছু অভিশাপ ফুটে উঠেছে মায়ের আর্তনাদে,
আমি ঘুমাতে পারিনা মনে হয় আটকে পড়েছি আতঙ্কের খাদে।







জানি না কোন পাপে
                  বিপ্লব গোস্বামী


জানি না কোন পাপে
না কি কোন শাপে ,
তুমি অন‍্যের পরিণীতা !
তব বিরহে জ্বলছে সখী
বুকের মাঝে চিতা।

জানি না কোন পাপে
না কি কোন শাপে ,
তুমি অন‍্যের ঘরের সতী !
জানি না কার ভুলের ফলে
এমন নিঠুর পরিণতি।








দূর আকাশের পাখি
            আব্দুল রাহাজ


ও পাখি ও পাখি
তুমি বেড়াও যত দূরে ইচ্ছে মতো ডানা মেলে
তুমি তো সেই দূর  আকাশের পাখি।
সত্যিই তোমরা স্বাধীন তোমরা স্বাধীন এই পৃথিবীর বুকে।
ও দূর আকাশের পাখি
তোমার ডানাই বেঁধে নিয়ে যাবে কি আমাকে
দূর আকাশের আঁখিতে।
সাদা কালো মেঘ গুলোর উপর দিয়ে তোমরা যখন ডানা মেলে উড়ে যাও তখন যেন মনে হয় আমরাও যদি একবার এরকম উঠতে পারতাম তাহলে বেশ আনন্দ হতো। ও দুর আকাশের পাখি তোমার সাথে বন্ধুত্ব আমরাও যদি হতো উড়ে যেতে পারতাম এক অন্য দেশান্তরে।
সত্যি তোমরা মুক্ত তোমরা স্বাধীন তোমরা সেই দূর আকাশের পাখি।








ধান রোয়া হয়ে গেছে
                       সাফরিদ সেখ


ধান রোয়া হয়ে গেছে-ক্ষেত সবুজ এ ভরেছে আজ
সবুজ পোশাক ,শ্যামলা বরন যেন জড়িয়েছে গায়।
এইখানে পল্লীপথের কোলে এইখানে মাঠের ভিতর
এলাইতো কেশ, ছড়ায়ে দিয়েছে-কেমন বিন্যাস।

এইখানে শ্যামা শুয়ে আছে-গভীর নিদ্রায় বিভোর।
কতদিন তার সঙ্গে দেখা হয়নি,কথা হয় নি।
শান্তি তবু;শিশির ভেজা খোলা মাঠের গায়ে
গেলে আছে ঘাস ফড়িং, কল্লোলিত ঝিল্লির ডাকে।

তার সমস্ত চিন্তা,ভাবনা, ঘিরে বেচেঁ আছে এক স্বপ্ন
সবুজ মাঠ, ক্ষেত তার দিয়েছে শান্তি নীড় এক।









পুষে রাখা ইচ্ছাকুসুমগুলি
                অঞ্জলি দে নন্দী, মম


যুগ যুগ যুগ ধরে
ওরা পোষা আছে
আমার গোপন অন্তরে।
চির পুরোনো চির নবীন ওরা
আমার অনন্ত জীবনের কাছে।
কখনও ওরা
কল্পনার অশেষ আকাশে ওড়ে,
কখনও বা অনুভবের হৃদয় ভূমিতে ঘোরে।
আমার পুষে রাখা ঐ
অসংখ্য ইচ্ছাকুসুমগুলি
আমি আপন হাতে তুলি
গাঁথি অশেষ মালা।
নিজেই নিজের কন্ঠে পড়ে রই।
আমার মনের বন্ধ ঘরের তালা
যা কখনোই যায় না খোলা
তার আঁধারে বসে
আমি পড়ে
ওই না শেষ হওয়া মালা
অপেক্ষা করি যুগ যুগ যুগ ধরে।
আমার হৃদয় ওকে দেয় দোলা।
কখনও ধৈর্যহারা হয় না ও সে।
তোমার অপেক্ষায় থেকে থেকে থেকে।
আমার পোষা অশেষ ইচ্ছা যত
সবই আছে তোমার মহিমা আলোয় ঢেকে।
তোমার দর্শনাপেক্ষা - ওদের অসীম পথ ও।







যেতে যেতে
          উমর ফারুক


যেতে যেতে পায়ে কত কাটা ফুড়লো?
মাটি ফেড়ে জোক?
তীক্ষ্ণ তীরের ফলায় বিদীর্ণ হল পিঠ
তবুও পিছু পা হইনি!
নিভৃতে একাকী হেঁটে যাই
এক হাত বুকে
আরেক হাতের মুঠোই ঐশী বাণী!
দুর্গম পথ প্রশস্ত করে দিল।
আমি দেখি,,
চাঁদটি আকাশের ডানায় ঝাঁপটাই
অসুন্দর হল
আবার ডানা ঝাপটালো
আবার রূপসী হল
যেতে যেতে পথ ছোট হল
স্বস্তির দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে একটি জয়ধ্বনি!!..







কবিতা :
     কবিতা,ভালবাসা দাও!
              বিশ্বজিৎ কর


নৌকা ছেড়ে দাও -
ওকে চলতে দাও,নিজের মতো!
ঈশান কোণে মেঘ জমার আগে চলো ঘুরে আসি!
আমরা থাকব কাছাকাছি,নৌকা চলবে আপন ছন্দে!
কেউ হাসবে,কেউ জ্বলবে,কেউ বা টিপ্পনী.....
সময় এসেছে,দ্বিধা-দ্বন্দ্বের জাল ছিঁড়ে দাও!
তুমি যে আমার কবিতা,
ভালবাসা দাও-
যেভাবেই হোক না কেন!








ছড়া 
পিতা-পুত্র-পতি, অগতির গতি
         ডঃ রমলা মুখার্জী


পুরুষ মানেই দুই পাঁউরুটির
        ভিতরেতে ভরা পুর-
উদ্ধে জায়া, নিম্নে জননী
        কার গানে দেবে সুর?
দুই সপ্তকে নত মস্তকে
        মেলাতে বেসুরো জীবন-
বায়নাক্কা দুলাল-দুলালির
       মেটায় সে আজীবন।
তবু "মরদের নেই তো মুরোদ"
       উঠতে বসতে খোঁটা-
মায়ের অভিযোগ ছেলে ভেড়ুয়া
       পুরুষ বলির পাঁঠা।
কারও কথায় কান দিও না
        পুত্র-পতি-পিতা-
সংসার-নাওয়ের কান্ডারী হে,
       তুমিই পরিত্রাতা।
বীরপুরুষেরা যুগে যুগে কত
      করেছেন মহা-কর্ম....
নওজোয়ান তোমাকে প্রণাম
       দেশের তুমি বর্ম।









চোখের মায়া
                    পার্থ প্রতিম হালদার


তোমার চোখের মায়ায়
প্রেম আসে প্রেম যায়।
গভীর রাতে বিছানা তে
হৃদয় কেঁপে যায় । তোমার
মিথ্যে অভিনয় গুলো
এখনও আমাকে
পাগল করে দেয় । ঘুম
ভাঙিয়ে দেয় অতীত
স্মৃতি গুলো ,স্বপ্ন গুলো ।
আর কাঁদতে কাঁদতে
রাত ফুরিয়ে যায় ।

তোমার চোখের মায়ায়
পাগল হয়ে বছরের পর
বছর কেটে যায় ।
মিথ্যে প্রতিশ্রুতি গুলোও
সত্য বলে মনে হয়।
তোমার চোখের মেঘে
শত শত বিদ্যুৎ বয়ে যায়।
কত রাত আসে আবার
রাত চলেও যায় ।

তোমার চোখের মায়ায়
স্বপ্ন আসে স্বপ্ন যায় ।
কত আবেগে দীর্ঘ নিঃশ্বাসে
মন উদাস হয়ে যায় ।
কত দুর্বল মনের কোনে
দাগ রেখে যায় ।
ঘুম ভেঙ্গে যায়
গভীর রাতে বিছানাতে ।
তোমার চোখের মায়ায়
কান্না আসে কান্না যায় ।







        কণ্টকময় জীবন
                  হামিদুল ইসলাম

                     
পাখিরা পৃথিবীর গান গায়
বয়ে চলে নদী
আকাশ সাক্ষী
তোমাকে একদিন   ভালোবেসেছিলাম
যখন আমি প্রথম বর্ষের ছাত্র ।।

মানুষ বড়ো ব‍্যস্ত
ব‍্যস্ততার মধ‍্যে কেটে যায় জীবন
ভালোবাসা চির অক্ষয়
তোমার জন‍্যে ভালোবাসা তুলে রাখি
বুকের খাঁচায়  ।।

বৃথাগঞ্জ দশাননে
তবু ভ্রুক্ষেপ করি না জীবন 
জীবন বড়ো অসহায়
পৌঁছে যায় সহসা মৃত‍্যুর দোরগোড়ায়
তবু হাল ধরি একাকী  ।।

পাড়ি দিই জীবন নদী
জীবন তুমি কণ্টকময়  ।।





মনের রাজ্য জয়
              জুয়েল রুহানী

সৃষ্টি সুখের উল্লাসে আজ
দৃষ্টি তাহার পানে,
যাহার মাঝে স্বপ্ন খেলে-
দু'চোখেরি কোণে।

কুন্তলে তার মেঘের ছোঁয়া
যায় না তারে পাওয়া,
এলো কেশে যায় হারিয়ে-
এলে ফাগুন হাওয়া।

রেগে-মেগে আগুন হয়ে
তাকিয়ে যখন রয়,
হংসী নাচে হৃদ যমুনায়-
ভর করে ডানায়।

তাহার পানে দৃষ্টি দিয়ে
পলক ফেরার নয়,
স্বপ্ন রূপের ঝলসানিতে
মনের রাজ্য জয়!








ফরিয়াদী আহ্বান
          এমাজদ্দিন সেখ


পিল পিল  শ্রী'হারা কর্মহীন যুবসমাজ ;
ঘুরছে যেন শ্মশান দেশে জিন্দা লাশ ! 
প্রেম - প্রেরণা হীন ,  নাই হাসি ,নাই আশ ; ..
রাজা চান অক্ষয় গদি,  বেঁচে থাক অতিমারী খাস ! 
বুদ্ধি বন্ধক ভক্ত আছে , নাই ধর্না প্রতিবাদ ভাষ ! ...
নিন্দুক হাঁকিলে , আছে মহা ঢাল করোনা তাস ! 
তাসের ত্রাসে , জয়তে সীতা রামের খুসে দিশাহারা ;
মাগো , প্রগতির গতি পিছন ফেরা সীমানা ছাড়া ! ?
"মনু" মাথায় রাজা ঢল ঢল যোগা চল ; ...
যন্ত্র জঞ্জাল মাঝে নাই তপোবন , সারথী কোথায় চল ? 
দুর্গম গিরি , অথৈ সাগর বা সাইক্লোনে খোকা ডরালে ;...
নিশ্চিত আরাম জেনেও যায়না মাতৃ জঠোরে ফেরা !
ভয় ও মোহের কালো ঠুলি খুলতেই হবে কালের দাবী ;
এগোতেই হবে ,হাঁকে বাঁচার আহ্বানে পুব দিগন্তে রবি ---
মুক্ত বাতাস , অন্ন চাই ;  প্রাণ চঞ্চল প্রেম গান ; ...
স্রোতস্বীনি দেশ  গড়তে হাতে হাতে কাজ চাই l
আল্লা-  হরি থাকে থাকুন ব্যক্তি মনের গহীনে বাস  ;
দেড়শো কোটির স্বচ্ছল জীবন তরে চাই নতুন মানুষ চাষ । 

  







1 টি মন্তব্য:

  1. ফরিয়াদি আহ্বান কবিতা টি ভালো লাগলো ।কিন্তু এটা বেশি রাজনৈতিক কবিতা হয়ী গেলো। জানতে চাই এই ধরনের কবিতা অন্য কারো বিরুদ্ধে লিখলে পাবলিশ হবে তো।

    উত্তরমুছুন