মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 01/09/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 01/09/2020  Upokontha sahitya patrika - 01/09/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 01/09/2020

   "উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
              (ওয়েব ম্যাগাজিন)
            
প্রকাশ কাল:-01/09/2020, মঙ্গলবার
               সময় :- বিকাল 4 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577





🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝🏝

এই বেশ ভালো থেকো নচি !
~ রাজা দেবরায়

বর্তমান সময়ের একজন জনপ্রিয় কবির (সম্ভবত শ্রীজাত) লেখা দিয়ে সেলিব্রেট করছি -
"আমরা ফুলের সুগন্ধ নিই
এইটুকুই পারতাম
আগুনের কোনো পদবী হয়না
নচিকেতা যার নাম"

বাংলা গানের 'ডন', সাংস্কৃতিক যোদ্ধা, গীতিকার, সুরকার, সুলেখক, গায়ক, সঙ্গীতবোদ্ধা, কবি, দার্শনিক নচিকেতা চক্রবর্তী'কে জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই ।

একমুখ খোঁচা খোঁচা দাড়ি । হঠাৎ ১৯৯৩ সালে বাংলা গানের ধারাকে পাল্টে দিতে চিৎকার করে বলেছিলেন "এই বেশ ভালো আছি" । বলেছিলেন "শুধু বিষ, শুধু বিষ দাও, অমৃত চাইনা" । 'অশ্লীল ভাষা' প্রয়োগ করে বলেছিলেন "হাসপাতালের বেডে টিবি রোগীর সাথে খেলা করে শুয়োরের বাচ্চা" !

নতুন এক প্রেমিকের থুড়ি মেরুদণ্ডী প্রেমিকের আবির্ভাব ঘটেছিলো । বলেছিলেন "এই তুমি কি আমায় ভালোবাসো ? যদি না বাসো, তবে পরোয়া করিনা, আমি সূর্যের থেকে ভালোবাসা নিয়ে রাঙাবো হৃদয় তার রঙ দিয়ে, পোশাকী প্রেমের প্রয়োজন বোধ করিনা" ।

বাংলা গানের একঘেয়েমি কাটাতে বা "আমি-তুমি/তুমি-আমি পারমোটেশন আর কম্বিনেশন"-এর ঘেরাটোপ থেকে বাংলা গানকে মুক্ত করতে 'মধ্য গগনে দাঁড়িয়ে থাকা সূর্য' নচিকেতা 'আগুনপাখি' হয়ে জন্ম নিলেন ।

এসেই বললেন "যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, নিরাশার পাখি দু'হাত বাড়ায়, খুঁজে নিয়ে মন নির্জন কোণ, কী আর করে তখন, স্বপ্ন-স্বপ্ন-স্বপ্ন স্বপ্ন দেখে মন" । মূলত যুবরা উল্লাসে ফেটে বললো "আরে এ যে আমার মনের কথা, আমার কথা ।" গান নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলো একদল যুব সম্প্রদায় । সঙ্গী "বেকার যুবকদের সান্ত্বনা একটাই, চাকুরীর বদলেতে আছে প্রেম" !
'নীলাঞ্জনা' সবার প্রেমিকা হয়ে উঠলো রাতারাতি !

প্রেমিক হলেও যে মেরুদণ্ডী প্রেমিক হতে হয়, বুঝিয়ে দিলেন এই বলে "যখন আমার ঘরেতে আঁধার, নেই একফোঁটা কেরোসিন, পাওনাদারের অভিশাপ শুনে জেরবার হয় বুড়ো বাপ, আমি তো তখন পারবোনা খেতে চাইনিজ বারে চাউমিন, এই তুমি কি আমায় ঘৃণা করো ? যদি ঘৃণা করো তবে পরোয়া করিনা, আহা বয়ে গেছে সেই ভালোবাসা ধরে, বহুতে হারানো স্বপ্নকে ছেড়ে, সবাই তো আর নিজেকে বেঁচতে পারেনা" !

বাংলা গানে নতুন এক 'লেবেল' পড়লো "জীবনমুখী গান" ! নতুন ধারা, নতুন কথা, নতুন ভাবনা, নতুন উপস্থাপনা, নতুন গায়কী, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি !

সেই মানুষটিই আবার একবুক যন্ত্রণা নিয়ে ব্যঙ্গ করে বলেছেন "যদি চাও সফলতা, মেনে নাও এই সিস্টেম, ফেলে দাও স্রোতের মুখে আদর্শ, বিবেক ও প্রেম, এ সমাজ মানবে তোমায় গাইবে তোমারই জয়গান, আমি কোন বাউল হবো এটাই আমার অ্যাম্বিশান" ।

রাজনৈতিক চেতনাবোধের উল্লেখও আমরা পেয়েছি অনির্বাণ, আদিত্য সেন, হল্লাবোল, আমি মুখ্যু সুখ্যু মানুষ, আমার সোনা চাঁদের কণা সহ বিভিন্ন গানে ।

বৃদ্ধাশ্রম গানটি তো অতি বিখ্যাত একটি গান । তাছাড়াও পণবিরোধী গান "আসলে দিলে পণ, দেবেরে তন ও মন, তোকেই সুন্দরী বলবে সব শালাই" । ডাক্তার, সরকারী কর্মচারী, বক্স অফিস, জ্যোতিষের ভণ্ডামি ইত্যাদি বিষয়ক গান মানে সমাজকে সচেতন করার বিখ্যাত গানগুলো বহুবার তার কথায় ও সুরে এবং অবশ্যই তার সুরেলা কণ্ঠে আমরা শুনতে পেয়েছি ।

এই মানুষটি আবার প্রেমের নতুন আঙ্গিক, নতুন রঙ, নতুন শেড খুঁজে পান প্রায়শই । যেমন একটি গানে বলেছেন "ভালোবাসা আসলে একটা চুক্তি যেন, অনুভূতি-টনুভূতি মিথ্যে, কেউ দেবে নিরাপত্তা কেউ বিশ্বাস, আসলে সবাই চায় জিততে, ভালোবাসা আসলে পিট্যুইটারির খেলা, আমরা বোকারা বলি প্রেম, ইট'স এ গেম-ইট'স এ গেম-ইট'স এ গেম" ! আবার তিনিই বলছেন "সঙ্কীর্ণ মনের মানুষ যারা, তারাই তো ভালোবাসে একবার, যার মন বড় যতো দেখে ভালো অবিরত, তারাই তো ভালোবাসে বারবার" ! আবার বলেছেন "সে ছিলো তখন ঊনিশ, আমি তখন ছত্তিরিশ, প্রেমে পড়তে লাগেনা বয়স, মনে থাকেনা ঊনিশ-বিশ" !

বাংলা গানে গজলের মজাটাও আমরা বহুবার পেয়েছি তার সৃষ্টিতে । যেমন - এই আগুনে হাত রাখো, যেভাবেই তুমি সকাল দেখো সূর্য কিন্তু একটাই, অনির্বাণ, যখন সময় থমকে দাঁড়ায়, এ মন ব্যাকুল যখন তখন, আমার ইচ্ছে করে আকাশ বাড়ির ছাদ ইত্যাদি । এছাড়াও আরো বহু বহু গান আমাদের উপহার দিয়েছেন যা লিখে শেষ করা যাবে না । জানি আরো অনেক অনেক ভালো গান বাদ পড়েছে, এই মূহুর্তে মনে নেই । তিনি উদার্ত কণ্ঠে বলেছেন "এই তো জীবন, আছে বলো কতক্ষণ ? জীবনের বাজি ধরা কভু জেতা কভু হারা, এই তো জীবন, আজ আমি নচিকেতা কুলীন সঙ্গীত বিক্রেতা, কাল হরিজন, এই তো জীবন " ।

পরিশেষে, গোটা বিশ্বই যখন একটা অস্থির পরিবেশের মধ্য দিয়ে বা অস্থির পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলছে তখন 'বার্থডে বয়ের' কথা দিয়েই আবারো স্বপ্ন দেখা শুরু করি চলুন -
"একদিন ঝড় থেমে যাবে
পৃথিবী আবার শান্ত হবে
বসতি আবার উঠবে গড়ে
আকাশ আলোয় উঠবে ভরে
জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে
পৃথিবী আবার শান্ত হবে..."








     বাবা
          রঞ্জনা রায়

 সাদা পাঞ্জাবি আর সাদা ধুতি
 চকচকে পামসু ফিটফাট অতি।
 সিগারেট ছিল তোমার অতি প্রিয়
 ড্রাইভে তুখোড় স্বভাবে রমনীয়।
 চিবুকে তোমার রেখেছি আঙুল
দিয়েছো আদর ফুটেছে ফুল।

 বাবা আজও কাঁদি অন্ধকারে
 তোমার স্বপ্ন দেখি বারে বারে।
 আদর করে ডাকতে তুমি
 আয় রে সোনা এসেছি আমি।
 আমূল চকলেটে বাবার গন্ধ
 তোমার খুকি আজও স্মৃতিতে বন্ধ।
 খুঁজি গ্রামাফোন নীল বর্ষাতি
 খুঁজি ভালোবাসা খুঁজি জাদুকাঠি।







সাদা-কালো
            সত‍্যব্রত ধর

খাপছাড়া নবজাগরণের নলখাগরা দিয়ে
শ‍্যাওলা ধরা কিছু শব্দ লিখি রোজ।
বাক‍্যগুলো সাঁতার কেটে ছন্দের সাথে
সঙ্গমে মাতার অনাগ্রহ দেখায়।
বরং গদ্যের কথামালা গল্পের ঝুড়িতে
এলোমেলো পদের বিস্ফোরণ ঘটাতে ব‍্যস্ত।
ওদিকে বিক্রি হওয়া মনের কথাগুলো
পাঠকের হিসাব ভুলে শুধুই সাদা-কালো।







সময় যেন দ্রুতশীল স্রোত
         আব্দুল রাহাজ

 ওরা তখন ছোট বয়স তিন চার বছর হবে নুরু পুশি আয়েশা সাব্বির রহমান রা ও পাড়ার রায় বাবুর কাছে সবে পড়াশোনা শুরু করেছে তখন ওরা গ্রামের পাঠশালায় ভর্তি হয়নি সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে ওরা বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ভর্তি হলো গ্রামের পাঠশালায় বেশ আনন্দে তাদের দিন কাটছিল সুটাই নদীর তীরে কত খেলা কত আনন্দ রহমান দের পুরনো বাড়িতে লুকোচুরি খেলা ওরা সবই করতো। দেখতে দেখতে গ্রামের পাঠশালায় বেশ ভালো পড়াশোনা করতে লাগতো গ্রামের পাঠশালার পণ্ডিতমশায় ওদের নিয়ে খুব আশা ছিল সময়ের সাথে সাথে সব যেন কিরকম পরিবর্তন হতে থাকলো এদিকে আয়েশা পুষি বেশ বড় হল বাড়ি থেকে ওদের বিয়ে ঠিক হল সাব্বির রহমান বলল সময়টা কি দ্রুত আমরা সেই কদিন আগে আমরা নদীর ধারে খেলা করেছি আজ আমরা বড় হয়ে গেছি দেখ না আমাদের পুষি আয়েশার বিয়ে হয়ে যাচ্ছে দেখতে দেখতে ওদের দুজনের বিয়ে হয়ে গেল বড় পরিবারে সাব্বির রহমান একা হয়ে গেল কয়েকটা পথে যাওয়ার পর ওদের বাড়ির অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে ওর আর পড়াশোনা করতে এগিয়ে এলো না বাবার সাথে সবাই কাজ করতে লাগল গ্রামের মানুষের পাশে দাঁড়াতে লাগলো ওদের গ্রাম ছিল ওদের কাছে একটা পৃথিবী ওদের আর সুটাই নদী পাড় হওয়া হলো না বেশ আশাবাদী ছিল ওদের গ্রামের পাঠশালার পণ্ডিতরা কিন্তু সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ওরা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। প্রকৃতির মায়া কোলে সূর্যের উজ্জ্বল রশ্মির মত সময় যেন এক নদীর স্রোতের মতো বহমান হয়ে চলেছে ওদের আর পড়াশোনা হল না দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড় করার জন্য লেগে পড়তো চাষের খেতে আস্তে আস্তে সময়ের সাথে সাথে সব যেন আর্থিক সচ্ছলতা পরিপূর্ণ হল কিন্তু কোথাও যেন তাদের যে স্বপ্ন তা সময়ের সাথে বিলীন হয়ে গেল সত্যি সময় ওদের কাছে দ্রুত স্রোত হিসেবে রয়ে গেল আজীবন।








ওঠো যাগো ......
                সায়ন প্রামানিক


ওঠো যাগো.. হে নারীজগৎ
তোমাতে মুগ্ধ ,আজি এ বিশ্বজগৎ ,
তোমাতে স্নিগ্ধ,কোমল দুটি নয়ন ,
প্রকৃতির বিবর্তনে, প্রস্তুত বয়ন !!
স্বরূপে অপরূপা, এক ও অদ্বিতীয়া তুমি হে ....
তাইতো আজ দিকে দিকে ঘটেছে যে তব প্রসার ,
তুমিই জয়ী , তুমি উদার ..
আহা : কতই না রূপ তোমার ,
এ নিখিল বিশ্বকে, মিটিয়েছ যত আবদার ,
স্মেহ আর ভালোবাসা, মমতায় দুর করেছ জগতের সব অন্ধকার ।
নারী যেথা নিশ্চিহ্ন, বৃথাই সব কল্পনা ,
জেনে রেখো বিশ্ব,এই নারীর শক্তি স্বল্পনা ।
তাইতো আজও সবেমিলে করি নারী শক্তির বন্দনা।
     
     







শহর
ফিরোজ হক্

প্রকৃতির কোলে সবুজের সমারোহ দেখে
চিন্তিত হয়ে পড়ি।
ওরা গোগ্রাসে গিলে গিলে খায় প্রকৃতি
তৈরি করে শহর।

ক্রমে প্রকৃতি বিবর্ণ রূপ ধারণ করে
ফ্যাকাশে হয় তার রঙ
আমি ও তুমি প্রতিনিয়ত অন্যায় দেখে দেখে
বড়ো হয়ে উঠি।
পালন করি সুরক্ষা...

এদিকে সবুজ তাদের দলবল নিয়ে
গোপনে আন্দোলন তৈরি করে
যার ব্যাপ্তি ছড়িয়ে পড়ে
অ-আ থেকে এ-বি পর্যন্ত...







কবিতা : অপেক্ষা!
               বিশ্বজিৎ কর

সেকালের সাদাকালোয় বলা হয় না-"আমি তোমারে ভালবেসেছি"!
তোমাকে ছন্দহীন কবিতায় এঁকেছি,
নদী-মায়ের আঁচল-পাড়ে বেঁধেছি,
সরষে ক্ষেতের হলুদ বসন্তে দেখেছি,
পাহাড় গায়ে ঝরনা করে রেখেছি!
ঐ শোনো, ভালবাসার দরবারে শিঙা বেজে উঠল -
বিচার হবে তোমার-আমার!
কবিতা আজ বিচারক,তোমারই জয় হবে!
পরাজয়ের গ্লানিতে নদী-মায়ের কোলে শুয়ে থাকব,
তোমার কবিতা হয়ে ওঠার অপেক্ষায়!








   আযানের সুর
                জুয়েল রূহানী

পৃথিবীর সেরা সুর
ঐ আযানের ধ্বনী,
কান পেতে শুনলে যে
জুড়ায় হৃদয় খানি!

যতই শুনি আমি
ততই ভালো লাগে,
নাজাতের সুর ধ্বনী-
হৃদয় মাঝে জাগে।

মৃত্যু অব্দি যেন-
প্রতিদিন প্রতি ক্ষণ,
আযানের সুর শুনে-
আলোকিত হয় মন।








             জীবন মৃত‍্যু 
                হামিদুল ইসলাম
                 

একদা উতলা ধরনী
অসুস্থ কদাকার
ভয় আর আতঙ্ক মনের ভেতর
হানা দেয় বারবার ।

পথে পথে অসুস্থ মানুষ
অসুস্থ পৃথিবীর প্রাণকোষ
মৃত‍্যু ভয়ে ভীত অলস রজনী
 প্রতিদিন এখন মৃত‍্যুরোষ ।

জীবন আসলে
জীবনের বোঝে না কোনো মানে
এ জীবন পুড়ে যায় অগাধ দুপুর বেলা
তবু সে দাঁড়ায় না কোনোখানে।

বস্তুর ভর ভার থেকে বেশি
জ‍্যামিতিক জীবন যেনো নদী
ঈশ্বরের পৃথিবী বিপন্ন আজ
ঈশ্বর থাকে যদি ।

এ জীবন অসম বৈপরীত্যের সাক্ষী এখন ।









হাসান ও হুসেন   
     জাহাঙ্গীর দেওয়ান

ইরাকের গভর্নর মোয়াবিয়া
রসূলের বিশ্বস্ত সাহাবা।
নবীজীর সাক্ষাৎদর্শন সেরে
যেতে চান বাইতুল কাবা।

বুঝিয়ে বলে শান্তনা দেন নবী
তোমার-ই পূত্র হবে এজীদ।
হাসান হোসেনকে করবে নাশ
নীতিতে হবে আগ্রাসী জীদ।

সে কথা শুনে মোয়াবিয়া কয়
বিয়ে না করে থাকব কুমার।
নবীজী বলেন, তুমি বিয়ে কর
এই সাশ্বত সত্য বিধান তাঁর।

সীমারের চক্রান্তে মাইমুনাকে
দিয়ে এজীদ বিষ খাওয়ান।
সরবতি জহরেই ইমাম হাসান
ছাতি-ফেটে শহীদ হয়ে যান।

পরিবারকে দেখিস বদলা নিস
হাসান বলেন হুসেনকে ডাকি।
জান্নাতে হুর-পরীর সাথে খেলা
ডাকে নানাজান,বলেই ফাঁকি।

দাদার ঘাতক জালিম রাজার
শাস্তি দিতেই ইরাক দেশে।
বীর বিক্রমে লড়াই শেষ করে
ফোরাত নদীর তীরেই এসে।

ঘোড়ার খুর বসে গেল শেষেই
তৃষ্ণা মেটাতে ফোরাত পাড়ে।
এজীদ সেনাপতি সীমার এসে
তলোয়ার মারে সজরে ঘাড়ে।









স্বাস্থ্য রক্ষায় করণীয়
           ডা: নরেন্দ্র নাথ নস্কর

সংক্রামক রোধ প্রতিরোধে শারীরিক দুরত্ব, নাক,মুখ ঢেকে চলা ও সাবান জলে হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা

সাম্প্রতিক করোনা প্রতিরোধে সরকার ও স্বাস্থ্য বিভাগ কয়েকটি নির্দেশিকা জারি করেছে।
সেগুলো হল
1. কমপক্ষে এক মিটার,সম্ভব হলে 6 ফুট দুজনের মধ্যে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা

2. মাস্ক দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে চলা

3. ঘন ঘন সাবান জল দিয়ে ভালো করে 20 সেকেন্ড হাত ধোয়া বা আলকোহল স্যানিটাইজার দিয়ে ভালো করে হাত ঘষে নেওয়া হাত শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত

প্রশ্ন হল কেন এগুলোর প্রয়োজন? কিভাবে এগুলো করোনা প্রতিরোধে সাহায্য করে?

মাস্ক ব্যবহারের প্রযোজনীতা

আসলে করোনা19 একটা ড্রপলেট বাহিত ও কিছুটা হাওয়া বাহিত রোগ।
তবে হাওয়ায় কিছুটা ভেসেও এই ড্রপলেট রোগীর থেকে অন্যের নাকে মুখ দিয়ে প্রবেশ করতেও পারে , তবে রোগীর নাক, মুখ যদি মাস্ক দিয়ে ঢাকা থাকে, তাহলে অনেকটাই এই ড্রপলেট নির্গমন আটকানো যেতে পারে। N 95 মাস্ক ব্যবহার করলে বেশিরভাগ ভাইরাস বা জীবানু বেরোনো বন্ধ করা যায়।
ড্রপলেট বেরোনো বন্ধ হলে,রোগের বিস্তারও রোধ করা সহজ হয়।
বলে রাখা ভালো শুধু করোনা রোগ নয় যেকোন শ্বাস বাহিত রোগও এইভাবেই অনেকটা প্রতিরোধ করা সম্ভব ।
জীবানু বহনকারী লোক যদি বাহিরে বেরোলে এই মাস্ক ব্যবহার করেন,তাহলে রোগের অনেকটা বিস্তার রোধ করা যায়।
হাঁচি কাশি বা জোরে কথা বললে এই ড্রপলেট বেশি মাত্রায় বাইরে নির্গত হয় ও সেই জীবানু বাহিত ড্রপলেট কণিকা এক মিটার পর্যন্ত দুরে যেতে পারে। হাওয়া থাকলে একটু বেশি দুরত্বেও যেতে পারে। এই দুরত্বের মধ্যে কেউ থাকলে, সেই ড্রপলেট কণিকা তার নাকে বা মুখের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।
মাস্ক ব্যবহারের সবার থেকে বেশি প্রয়োজন তাদের যারা নি:শব্দে রোগ জীবানু বহন করে চলেছে অথচ তারা নিজেরা জানে না। টেস্ট না করলে এদের ধরা বড় কঠিন। এরা নিশ্চই কোথাও মাস্ক ব্যবহার না করে কোন রোগীর বা রোগ জীবানু বহনকারী লোকের সংস্পর্শএ এসেছিল। এদের জন্যই রোগের বিস্তার বেশি হয়। মাস্ক ব্যবহার করলে ও শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখলে এই সং স্পর্শ বেশিরভাগ এড়ানো যায়।
তবে সুস্থ লোকের ক্ষেত্রে সাধারণ মাস্ক খুব বেশি প্রতিরোধ করতে পারে না,এক্ষেত্রে N95 মাস্ক খুবই কার্যকরী হয়।
যেহেতু কেউ জানে না কে নি:শব্দে জীবানু বহন করছে,তাই সবার জন্যই মাস্ক ব্যবহার অত্যন্ত প্রয়োজন। N95 মাস্ক একবার ব্যবহার করার পর শুকিয়ে রেখে তিন বা চারদিন পরে আবার ব্যবহার করা যায়। এই ভাবে N95 মাস্ক কমপক্ষে চারবার বা কিছু বেশি বার ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে সাধারণ মাস্ক একবার ব্যবহার করে ফেলে দিতে হয়।
মনে রাখবেন সাধারণ মাস্ক একবার ব্যবহার করে ফেলার আগে সেটাকে কেটে তবে ফেলে দিলে ভালো হয় ও তারপর সাবান জলে ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে।কারণ কিছু অসাধু লোক এই সাধারণ মাস্ক ডাস্টবীণ থেকে তুলে আবার বাজারে অন্য লোককে বিক্রি করতে পারে।এটা প্রতিরোধ করা সবার কর্তব্য।
এই জন্য বাইরে বেরোলে আগে মাস্কে মুখ ও নাক ঢেকে তবে বেরোবেন।

এবার সামাজিক বা শারীরিক দুরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা কিছু জেনে নেওয়া যাক।

শারীরিক দুরত্ব মানে একজন লোকের থেকে আরেকজন লোকের দুরত্ব যেকোন স্থানে কমপক্ষে এক মিটার বা তার বেশি দুরত্ব বজায় রাখা।

তাহলে সামাজিক বা শারীরিক দুরত্ব বজায় থাকলে, মানে অন্য লোকের থেকে কমপক্ষে এক মিটার বা তার বেশি দুরে অন্য লোক থাকলে ড্রপলেট কণিকাবাহিত রোগ জীবানু দ্বিতীয় লোকটির নাকে বা মুখে ঢুকতে পারে না। এতে রোগও হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে।
সুতরাং দুজনের মধ্যে সামাজিক বা শারীরিক দুরত্ব এক মিটার বা তার বেশি হলে রোগীর থেকে রোগ জীবানু সুস্থ লোকের দেহে প্রবেশ করে না,এতে রোগও হয়না। ফলে রোগের বিস্তারও হয়না।

এবার হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা কি সেটা জেনে নেওয়া যাক।

কোন রোগী যদি রোগগ্রস্ত অব্স্থায় নাকে বা মুখে হাত দেয় বা নাক মুখ নি:সৃত সর্দি রস হাতে লেগে যায়,তাহলে সেই হাত যেখানে স্পর্শ করবে বা ধরুন দরজার হাতল, গ্লাস বাটি বা থালা বা যেখানে লোকে বেশি হাত দেয় সেখানে স্পর্শ করে সেখানে জীবানু লেগে যায় ও প্রায় দুই বা তিন দিন ঠিক থাকে।এই জায়গা যদি সুস্থ কোন লোক হাত দেয় দেয় বা ব্যাবহৃত গ্লাস বাটি ইত্যাদি স্পর্শ করে তাহলে সেই হাত সংক্রমিত হয়ে যায়। সেই হাত কেউ যদি সাবান জলে ভাল করে না ধুয়ে তার নাক মুখ বা চোখে স্পর্শ করে তাহলে অসুস্থ লোকের রোগ জীবানু সুস্থ লোকটির দেহে প্রবেশ করে রোগ হতে পারে। যদি সুস্থ বা অসুস্থ দুজন লোকই ভালো করে সাবান জলে 20 সেকেন্ড হাত ধোয় তাহলে সেই হাত জীবানু মুক্ত থাকে।

সুতরাং জীবানু মুক্ত হাতের মাধ্যমে আর রোগ ছড়াতে পারে না। রোগ শুধু অসুস্থ লোকটির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। সেই লোক সেরে গেলে রোগের আর বিস্তারও আর হয় না।

এইভাবে শারীরিক দুরত্ব, মুখে মাস্ক পরা ও সাবান জলে হাত ধোয়া যদি নাগরিকরা প্র্যাকটিসে অভ্যস্থ হয়ে যান তাহলে করোনা ও শ্বাস বাহিত অনেক রোগের যেমন করোনা ছাড়াও টিবি ইনফ্লুয়েনজার বিস্তার বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বন্ধ হয়ে যায় বা রোগকে কন্ট্রোল করা সহজ হয়।

আসুন সবাই মিলে করোনা রোগ প্রতিরোধের জন্য এই তিনটা জিনিষ বাহিরে বেরোলে মেনে চলি অর্থাত
 1। মাস্ক ঠিক মোট ব্যবহার করি
2। শারীরিক দুরত্ব এক মিটারের বেশি বজায় রাখি যথা সম্ভব
3। ঘন ঘন হয় সাবান জলে ভালো করে হাত ধুয়ে নিই বা আলকোহল স্যানিটাইজর দিয়ে ভালো করে হাত ঘষে নিই হাত শুকিয়ে যাওয়া অবধি ।








ফুলদানি
        সত্যেন্দ্রনাথ পাইন


     আমি ফুলদানি।
কেন আজ রিক্ত নিশীথে
কেন শুধু পড়ে অশ্রুজল?

মনে পড়ে, কত না বিচিত্র ফুল
একদিন সাজানো হোত
    আমার বুকের মাঝখানে।
ছিল পরিপূর্ণ সে, রজনী, গোলাপ, জুঁইয়ের
   ভালোবাসায় পরিপাটি আকর্ষণে ছিল মোহিনী রূপা
     ক্ষণিক বিরহে
      ব্যাকুলতায়
ভরে যেত হৃদয়ের কানন।

 হাসি কান্না বেদনায়
   সতত শুনে নিত
মিলনের প্রান্তদেশে নয়নের নেশা
    জীবনের বসন্ত বেলায়।

আজ বুক ফেটে যায়
   চোখে ঝরে অনাবিল অশ্রু
মলিন হয়ে পড়ে আছি-----
কেউ আসেনি ধুলো ঝেড়ে
   দেখাতে নিখিলের শোভা!

কেউ ভাবেনি আমার ফুল হীন জ্যোতি
        অনন্ত সজ্জায়
    কেন আজ শয্যা হীন

কোথায় আমার দেবতা
   কোথায় পাব তারে?

এ তর্ক নয়, এ হৃদয়ের ফেটে পড়া
             হাহাকার।
কে বুঝবে এ শুধু চোখের জল নয়
   নয় অনন্ত ভর্ৎসনা!

চাই কিঞ্চিৎ অনুগ্রহ।
 অপবিত্র আমি নই
আমার চাহিদা তোমাদের
  বসন্ত সমীরণশুধু
আর কুসুমের প্রবাহে
 সৌরভের শুভ্রতনু।









আজও
তাপস কুমার বেরা


শখের আম্রকুঞ্জ রচনা
আমার সাধ নয় |
হৃদয় ফাটা শোনিত বিন্দু দিয়ে
রচি আমার জীবন বেদ |
অযুত আঘাতে আঘাতে
শাল প্রমান
বৃক্ষ হওয়ার
সোনালী স্বপ্নগুলো
আমার চোখের সামনে দিয়ে
সমাধি হতে
দেখেছি |
অশ্রু ঘেরা
জীবনের
মর্ম দিয়ে
রাতের ঘন অন্ধকার
দূর করে
নিঃসংশয়
আগামী প্রভাত সূর্যের
আলোয়
আলোকিত হওয়ার
অবিশ্বাস্য
সাধনায় রত
আজও |







  ভারতরত্নের প্রয়াণে
           মিনতি গোস্বামী

  হঠাৎ চলে গেলে ছেড়ে সাজানো রাজ‍্যপাট
বিষন্ন হৃদয় আজ হুটখোলা গাড়ি
নক্ষত্র পতনের হাহাকার আকাশে বাতাসে ওঠে গুমড়ি
বাঙালি সন্তান গেল সিংহাসন ছাড়ি।

চাণক‍্যের দক্ষতায় সামলেছিলে বেহাল দেশের অর্থনীতি
সহায়তা করেছিলে নতুন রাষ্ট্রের উদ্ভাবনে
শিক্ষক,প্রশাসক সবক্ষেত্রেই ছিল সীমাহীন দক্ষতা
শ্রেষ্ঠ বাঙালি থাকবে হৃদয়ের মাঝখানে।

 ভারতের রত্ন পেয়েছে ভারতরত্ন সম্মান
নশ্বর দেহ হোক বিলীন
তোমার নাম থাকবে চিরদিন ইতিহাসে
তুমিই বাড়িয়েছিলে গ্ৰামের মান।






শরৎ এলো
         বিপ্লব গোস্বামী

বর্ষা গেলো
শরৎ এলো
শিশির কণা দূর্বা ঘাসে।
মেঘের ভেলা
করছে খেলা
রৌদ্র ছায়া সারা কাশে।

কাশ ফুল
দিচ্ছে দোল
মাঠ ভরা আমন ধান।
শিউলি ফোটে
সৌরভ ছোটে
চাষা গায় বাউল গান।

এলো শরৎ
হিমের পরশ
ফোটে কামিনী,মালতী,জুঁই
মিষ্টি ঘ্রাণ
জুড়ায় প্রাণ
শ্বেত বালাকার আকাশ ছোঁই।







মহিমা
       বিমল মণ্ডল

একটা সিংহাসন
ঘিরে কতজন
যে যার মতো করে
দেয় যে ভাষণ।

পেটপুরে পেটুয়া
খবর ছড়ায়
দিন-রাত আলপনা
সিংহভাগ পটুয়া।

ঝুড়ি ঝুড়ি মিথ্যা
সিংহাসন পদ
বসার আগে বলে
করবো সব হত্যা।

এলোমেলো কয়েকজন
যোগ্যতার হীনবল
চাদরের কুঁড় ধরে
তেল মারে সিংহাসন ।

তারাই হয় বড়ো মাথা
রাজা- বাদশা
ফাঁকিতে চলে তারা
বলে বড়ো বড়ো কথা।

এমনই সিংহাসন সভা
দু'নম্বরী খেলা খেলে
যোগ্যতা ভেঙে এরা
দেশের - দশের আভা।





বৃষ্টি তুমি...
 শুভ্রাংশু কুম্ভকার


বৃষ্টি তোমায় লিখব কি,
মন খারাপের বায়নাটি,
জামার নীচে লুকিয়ে হৃদয়,
বুকের মাঝে মুখ ঢাকি।
আমার ব‍্যথা সত‍্যি কথা,
বৃষ্টি তুমি শুনবে কি?

না রে বাবা, ছন্নছাড়া নই আমি,
সোনাদানা আমার কাছেও খুব দামি,
নাকের নোলক,কানের পাশা,
ঘটি,বাটি,পিতল,কাঁসা,
এসব হিসাব বুঝতে গিয়ে হাঁফ ছাড়ি,
সত্যি বলো,এসব কি খুব দরকারি?

গোপন কষ্ট,সহজ নষ্ট,কঠিন পথে যাই,
তোমার হাতে হাতটি রেখে উধাও হয়ে ধাই।
তুমি আমার অচিনপুরের পথ হবে?
ভাবনারা সব ঝাপটা ডানা মেলে দেবে,
উড়বো দুজন সুখ সীমানার লক্ষ‍্যেতে,
চিহ্নবিহীন মানচিত্রের সেই পথে।

তোমার চোখে খুঁজবো সুখের স্বপ্নকে,
আগলে তোমায় রাখবো বিশাল এই বুকে।

🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥🔥
লেখা আহ্বান

আমাদের পরবর্তী বিশেষ সংখ্যা  

           "শিক্ষক দিবস সংখ্যা-2020"


লেখা পাঠান :- 01 Sep 2020 থেকে 04 Sep 2020 এর মধ্যে


যে ধরনের লেখা পাঠাবেন 👇👇👇👇

বিষয়:- সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণান ও শিক্ষক দিবস 


১) হাইকু, অনুকবিতা, লিমেরিক, কবিতা

২) অনু গল্প, ছোটোগল্প, গল্প 

৩) প্রবন্ধ, জীবনী, স্মৃতি কথা, চিঠি

৪) ইংরেজি:-

        Poem, Short story, Story, Essay 



• নিদির্ষ্ট কোনো শব্দসীমা নেই

• whatsaap তে টাইপ করে পাঠান 

• 9593043577 এই নং তে 

• লেখার উপর অবশ্যই উল্লেখ করবেন "শিক্ষক দিবস সংখ্যা"  

পত্রিকা প্রকাশ করা হবে- 5 Sep 2020 , দুপুর 2 টা 







""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
লেখা পাঠান  "অম্বিকা" শারদ সংখ্যায়  (পিডিএফ) 




0 comments: