বৃহস্পতিবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/09/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/09/2020

Upokontha sahitya patrika web Megazine-10/09/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 10/09/2020

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
              (ওয়েব ম্যাগাজিন)
            
প্রকাশ কাল:-10/09/2020, বৃহস্পতিবার
               সময় :- সন্ধ্যা 5 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577





অনুকবিতা
         শংকর হালদার
                      ০১
কোনো কিছুই নতুন নয় ,
আবার সব কিছুই নতুন ।
কালের বিবর্তনে কেউ নিজেকে হারিয়ে ফেলে ,
আবার কেউ আবিষ্কার করে নবরূপে ।
                      ০২
যেখানে সুন্দর,
সেখানে শয়তানের কালো ছায়া ।
মাড়ালে ঐ জীবনে এঁকে দেয় এক কলঙ্কিত অধ্যায় ।
                       ০৩
দুঃখ, কষ্ট, দৈন্য অঙ্গের বসন ভেবে পিছনে রেখে জীবনকে উপলব্ধি করাটাই আনন্দ ।
      
                    ০৪
অস্তাচলের নিরব ঈশারায় তমসার গোপন শোকভার
বিবর্তনের সাময়িক অন্তরায় ।
অটল লক্ষ্যে এক এক পদক্ষেপ এক এক অধ্যায় ।
              ০৫
মাঝে মাঝে খণ্ড বাক্যগুলো অখণ্ডের পরিপূরক রূপও বটে।কেননা, সমাজে ঘটে যাওয়া খণ্ড কিংবা অখণ্ড ঘটনা যা জীবনকে বদলে দিতে পারে ।






                 এখন
                        বিকাশরঞ্জন  হালদার

শ্যামশ্রী ইচ্ছেরা এখন মুখে মাক্স লাগিয়ে ঘোরে। মনের স্বাস্থ্য  ছোটো বড়ো হয়। মানচিত্রে মানচিত্রে  সংক্রামক! উঁকিমারা  জীবনে তেতোকে  এখন  মিষ্টি বলে ডাকতে শিখেছি জানো!






             মন্দ কপাল
                     বদ্রীনাথ পাল

পুণ্যাত্মা মরলে করেন 'স্বর্গে আরোহণ'-
রাজা-উজির ! তারাও করেন 'পরলোক গমন'।
মন্দ কপাল আমজনতার-
মরলে খবর কে রাখে কার-
'পটল তুলে' তাইতো তারা মরলে সে কারণ।






সৃষ্টির কোন দিক
          উমর ফারুক

বিধুর ললাটে যেন রুগ্ন মানব
শত্রুতা কেড়ে নেয় অধিকার!
সৃষ্টির নির্ঝরে ভেঙে যায় স্বপ্ন
দিনক্ষণ ঠিক করে অবিচার।
ক্রন্দনে উত্তাল সাগরের বুক
সিন্ধুর শিহরনে উপকূল জাগে।
সৃষ্টির অভিযোগ কে বা শোনে
স্রষ্টার রহস্য শুনে নাও আগে।
এবার হাত মুঠ কর পিন্ড গলেছে
দৌড় দিয়ে প্রতিরোধ করছ?
পাঁজরের হাড়ে হাড়ে চিড় ধরে যাচ্ছে
তবুও কি তোমরা কেউ লড়ছ?
নিজ দোষ মিছি বলা হয় না
সৃষ্টির কোন দিক তুমি নিলে
গ্ৰহ ও তারকারা দেয় যে সম্মান
আজকে কি তা তুমি হারালে!








গড়ব মোরা
           বিপ্লব গোস্বামী

যেখানে দুঃখ নেই,কষ্ট নেই
নেই কোন ঝড় ;
সুখের নিশ্চিন্ত দ্বীপে
গড়ব মোরা ঘর।
যেখানে মেঘ নেই,ঢেউ নেই
নিতল সুনীল ;
বলব সেথা মনের কথা
খোলে দিল।







লকডাউনের প্রাকৃতিক পরিবেশ
(প্রবন্ধ)
         আব্দুল রাহাজ


বর্তমান সময়ে যখন সারাবিশ্ব তথা দেশ করোনার আবহে স্তম্ভিত  যেখানে মৃত্যু মিছিল অব্যাহত সেখানে দাঁড়িয়ে মানবজাতি যেমন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গৃহবন্দি হয়ে আছে সেখানে কোথাও যেন প্রাকৃতিক পরিবেশ এক অপরূপ দৃশ্য ফুটে উঠেছে ।পরিবেশ বর্তমান সময়ে যে কালো অন্ধকারে এগিয়ে যাচ্ছিল মানবজাতি তথা বিশ্ববাসী পরিবেশ এই ভয়াল অবস্থাকে না বুঝে আরামবিলাস ভোগবিলাস করছিল তাই করোনার আবহে এই লকডাউনের ফলে পরিবেশ কোথাও যেন তার সবুজ ফিরে পেয়েছে যেসব অসহায় মানুষ গুলো প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল তারা কোথাও যেন এক আধো স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে । করোনার আবহে তারা সবুজ মাকে মুক্ত নিঃশ্বাস নিতে পারছে ওদের এই আবহে খাওয়া না হলেও  ওরা কোথাও যেন শ্বান্তিতে আছেন ‌।
এই সবুজ রাঙানো পরিবেশ ফুটে উঠলেও যে শান্তি তা কোথাও যেন তা কোথাও যেন করোনার আবহে অন্য রূপে ফুটে উঠেছে। দূষনহীন এই পরিবেশ গৃহবন্দি মানুষের কোথাও যেন আরাম দিচ্ছে । অসহায় মানুষগুলো যেন বহুদিন পর দুচোখ ভরে তাদের মা সবুজ বনকে দুচোখ ভরে দেখছে। শহরের পরিবেশ যেন এক অন্য রুপে উদ্ভাসিত হয়েছে এক নতুন রূপে গড়ে উঠেছে । অনেক দিন বাদে নীল আকাশ যেন আপন ছন্দে ফিরেছে এক নব দিগন্তের সূর্য উদিত হলেও কোথাও যেন করোনার আকালে একটু  হলেও থমকে আছে ।
সবমিলিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ করোনার আকালে অপরূপ সাজে ফুটে উঠলেও কোথায় যেন আক্ষেপের চিএ ফুটে উঠছে।









            কালের প্রবাহ
                        সুশান্তমজুমদার       

    
   উচ্চবিত্ত ব‍্যাসনে ফ‍্যাশনে ব‍্যস্ত
  নিম্নবিত্ত বড্ড পরিশ্রান্ত,
রাজার রাজ‍্য চলছে দারুণ
মধ‍্যবিত্ত হয় দিকভ্রান্ত !
সোনার হরিণ সেই শুভদিন
    ভরসা আজ  দুরস্ত,
বেঁচে থাকার স্বপ্ন টুকু
        গগন পটেই অস্ত ।
ধরেছে হাল ঘোড়েল মাঝি
   রঙ বদলে অভিজ্ঞ,
দাঁড় টানে দাঁড়কাকের দল                    
     ছই'য়ে চলে ভোজনযজ্ঞ।
যতই ফেল শক্ত জাল
  জীবন নদীর মাঝারে,
ফসকে যাবেই রাঘব বোয়াল
    চুনো পুঁটির ভিতরে ।
সুয়োরানী আছে পরম সুখে
   দুয়োরানীর বড় কষ্ট,
চিত্রনাট্ট বদলায় না কভু 
 বেচারা পাবলিক সর্বশান্ত !
শাসক শোষক বাধে জোট
ফর্সা হয় কালোনোট,
আল্লা হরির নেই করিশমা
লক্ষ‍্য এখন গনভোট।
প্রতিবাদের নেই তো মুরোদ
কেবল দোষারোপ করা,
পেশী শক্তির বড়ই অভাব
তাইতো  কলম ধরা ।







অপমানিতের বেদনা
  মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ


সন্ধ্যার দিকে 'বুলবুল' ঝড় ঞমশ প্রবল হইতে লাগিল। বৃষ্টির ঝাপট বজ্রপাতের শব্দ এবং বিদ‍্যুতের ঝিকিমিকিতে আকাশে যেন সুরাসুরের যুদ্ধ বাধিয়া গেল।কালো কালো মেঘগুলো মহাপ্রলয়ের জয়পতাকার মতো দিগ্-বিদিকে উড়িতে আরম্ভ করিল, খালের এপার ওপারে বিদ্রোহী ঢেউ  গুলো কলকল শব্দে নৃত্য জুড়িয়া দিল। এবং বাগানের বড়ো বড়ো গাছগুলো সমস্ত শাখা প্রশাখা ঝটপট করিয়া হা-হুতাশ সহকারে দক্ষিণে পূর্বে পশ্চিমে লুটোপুটি করিতে লাগিল।
     কিছু দিনের মধ্যে 'বুলবুল' ঝড় থামিয়া গেল পরিবেশ শান্ত স্নিগ্ধ হইয়া যায়। সূর্যের কিরণে চারিদিক ঝলমল করিয়া ওঠে
-------------এর পর  গল্প  বাঁক অন্য দিকে। গল্পের মঞ্চে প্রবেশ করেন এক মমতাময়ী মা, ওই মমতাময়ী মায়ের পরনে ছিল লালচে রঙের এক শাড়ি, মাথা ভরতি চুল, রোগা-পাতলা চেহারা, দেখিলে মনে হয় এিশ-চল্লিশ বছর বয়স। দেখা যায় ওই মমতাময়ী মা গ্রামের একজন লোকের কাছে বলছে - - বাবা, বাবা, আমাকে দুটো খেতে দাও না, আমি অনেক দিন না খেয়ে আছি।
তখন লোকটি জিজ্ঞেস করেন
---ও মেয়ে তোমার বাড়ি কোন খানে, তোমার ছেলে মেয়ে কেউ নাই?
মেয়েটি একটু চুপ করে থেকে তারপর বলল
---বাবা সব বলিব আগে আমাকে দুটো খাইতে দাও খুদায় পেটটা যে জ্বালা করে।
         তার পর ওই মমতাময়ী মাকে ভাত খাইতে দেওয়া হইল, খাবার সময় তার দু-নয়নের জল টোপাকেটে, টোপাকেটে খাবারের উপর পরিতেছে। ওই দৃশ্য দেখিয়া মনে হচ্ছিল যেন শতশত বছরের যন্ত্রণা উঁকি মারিতেছে। তাঁর দু-নয়নের জল কিছু বুঝাইতে চাইতেছে।এর'ই মধ্যে চারিদিকে ভিড় জমিয়া গিয়াছে। তারপর খাওয়া শেষ হইবা মাত্রে ওই লোকটি আবারও  জিঞ্জাসা করিলো
---ও মেয়ে তোমার কেউ নাই?
মেয়েটি একটু গম্ভীর ভাবে কিছু সময় চুপ থাকার পর কাঁদিতে কাঁদিতে বলিতে লাগিল
---বাবা আমার বাড়ি হল ওই যে ওই চৌরাস্তার হেকাতির মোড়ে, আর আমার কোনো মেয়ে নাই, শুধুমাত্র আছে একটা ছেলে।
গ‍্রামের রাজু নামের ওই লোকটি আবারও জিঞ্জাসা করিলো
-----তা ছেলে কি করে?
মেয়েটি অর্থাৎ ওই মমতাময়ী মা অতি কষ্টের সাথে বলছেন
----আমার ছেলে. - - আমার ছেলে রাজমিস্ত্রীর কাজ করে।
ভিড় জমিয়ে থাকা ভিড়ের মাঝ হইতে আবারও একটি মেয়ে জিঞ্জাসা  করিল
----তা তোমার ছেলে তোমাকে দ‍্যাখে নাই?
মেয়েটি কতটা যন্ত্রণা নিয়ে বলছেন
---হ‍্যা মা আমাকে দ‍্যাখে আর দ‍্যাখে বলেই তো আমি আজ অন‍্যের দ্বারে দ্বারে  ঘুরছি। আমার ছেলের দুটি  সন্তান আছে যাদের আমি খোকা আর খুকি বলে ডাকতাম। আমি যখন বলিতাম, খুকি, এক গ্লাস জল নিয়ে এসোতো খাব, তখন মা বৌমা বলিয়া দিত, মরগে যাও বুড়ি। আমি যখন বলিতাম খোকা, আমার কাছে এসোনা একটু গল্প করি তখন খোকার বাবা খোকাকে বলিয়া দিতো, বুড়ি  চুপ করে বসে থাকো নইলে ঘর থেকে বাহির করিয়া দিবো।
            এইতো সেদিন 'বুলবুল' ঝড়ের দুদিন পরে ছেলে,বউ, নাতি নাতনি সবাই  মিলিয়া রাতে মাংস রান্না করিল লুচি ভাজলো এবং রাতে চারজনে মিলিয়া আনন্দ উৎসব করিয়া পেটপুরিয়া খাইলো আমাকে একটুও দিল না। জানো বাবা'রা জানো মা'রা সকালবেলায় খোকাকে ডাকিয়া বলিলাম
--খোকা, কাল রাতে তোমরা তো কত কিছু খাইলে,কই আমাকে একটু ও দিলেনাতো,
ওমনি খোকা গিয়া মায়ের কাছে বলিয়া দিল। আর তখনই দেখি যে মা, খোকার মা আর বাবা দুজনে মিলিয়া ঝগড়া জুড়িয়া দিল তার পর কিছুক্ষণ পরে দুজনে মিলিয়া আমাকে গালি-গালাজ দিয়া মিথ্যা চোরের অপবাদ দিয়া ঘর হইতে বাহির করিয়া দিল।
             সেই দিন হইতে আমি হইয়া গেলাম ফুটপাতবাসী তাই আমি আজও অন‍্যের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি দুমুঠো খাবারের আশায়।
ভিড় জমিয়া থাকা ভিড়ের মাঝে ওই টিনা নামের মেয়েটি আবারও বলল
---তা তুমি এই ভাবে না ঘুরিয়া কলকাতার মুনিব বাবুর বাড়িতে কাজ করিলে পারিতে। তাহলে তোমার মাঝে জমে থাকা দুঃখ কষ্ট গুলো একটু হইলেও কমিয়া যাইতো।
মেয়েটিকে বলিলেন
---মা আমার জন্ম হইয়াছে গ্রামে আর ছোট্ট বেলা থেকেই গ্রামেই বড়ো হইয়াছি। শহর কি জানিনা,শহর কেমন হয় তা বলিতে পারবো না। আর না ছিল কোলকাতার মুনিব বাবুর সাথে যোগাযোগ। হইতো কারুর ক
হইতো কারুর কাছে বলিলে নিয়া যেত কিন্তু তা বলিনে শুধুমাত্র নাতি নাতনিদের জন‍্য।আমি নাতি নাতনিদের মুখ না দেখিলে থাকতে পারিনে মাগো ____সেদিন সারাদিন বাইরে ঘুরিয়া ঘুরিয়া বিকাল পাঁচটার সময় গিয়াছি নাতি নাতনিদের দেখিতে, বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে যেই ডাকিলাম খোকা,খুকি তোরা সব কথায়,আয়না বাবা আমার কাছে,অনেক দিন হলো তোমাদের মুখ দেখিনে।তখনি ঘোরের ভিতর থেকে খুকির মা বলছে ও খোকা,দ‍্যাখতো কথাকার ভিক্ষারিনী আসিয়াছে।শুনিয়া মাত্র মাগো কি বলিবো বুকটা যন্ত্রণায় ছটপট করিতে লাগিল।এমনি করে দু__তিন দিন  গিয়াছি মুখ দেখিতে পারি নাই প্রথম বারের মতো পতিবার আমাকে অপমানিতের সাথে ফিরে আসিতে হইয়াছে।
        ওই মমতাময়ী মাকে ছেলে বউ মিলিয়া এতো লাঞ্ছিত,অপমানিত,দুঃখ__কষ্ট,যন্ত্রণা দিলেন তার পারেও করিছে ছেলে বউয়ের জন‍্য আশীর্বাদ।মা জাতি অর্থাৎ নারী জাতি বুঝি এমনি হয়। তার পর দেখিতেছি ওই সর্বহারা বদনাতুর মমতাময়ী মা ভিড় জমিয়ে থাকা সকল লোককে বলিতেছে ____দিয়োনাকো কাহার আমার মতো এতো যন্ত্রণা।এই পৃথিবীতে জন্ম নিয়াছো যাহাদের কোলে যতটুকু পারো করিয়ে যেও তাদের যে সেবারে। এটাই হবে মৃত্যুর পরে সর্গে যাবার রাস্তা যে।থাকতে রাস্তা দিয়োগো পাড়ি সঙ্গে নিয়ে যেও সর্গের চাবি।
এই বলিয়া ভিড়ের মধ্যে থেকে বাহির হইয়া যাইবার সময় বারবার বলিতে বলিতে যাইতেছে   ৮নং তিতকুমার গ্রামে যদি একটা বৃদ্ধাশ্রম থাকিতো তাহলে এই বয়সে ওই খানেতে গিয়া সকলের মাঝে সুখ__ দুঃখের কথা কইয়া শান্তিতে দিন জাপন করিতে পারিতাম।
                             








   আমার ইচ্ছে
                 কনিকা রায়


আমি নাকি ভীষণ দুষ্টু!
কিন্তু নাম আমার মিষ্টু!!
সকাল নটায় ও ঘুম ভাঙে না!
ঘন্টা খানেক নাকি ডাকে আমার মা!!
এটা ওটা দুষ্টুমি করতে গিয়ে, হই যখন জখম!
মা আমার সারা দিন ,তখন করেন বকম বকম !!
পড়ায় আমার মন বসে না!
সে সব কথা কেউ বোঝে  না!!
মা বলে পারদর্শী হতে হবে তোকে পড়ায়,  আবৃত্তি,    নাচে ,গানে!
বাবা বলে মন দাও এবার ,শুধু বইয়ের পানে!!
কিন্তু আমার মন পরে রয় ,শুধু খেলার দিকে!
তাই তো আমি পড়া, নাচ,গান, আবৃত্তি সব তুলেছি শিকেয়!!
টি.ভি, মোবাইল দেখতে আমার বেশ লাগে!
সে কথা আমি বোঝাই কাকে!!
সারাদিন বাবার শাসন,
মায়ের বকা ভালো লাগে না আর!
কেউ যদি বুঝতো আমায়, কেমন করে দিন করছি পার!!
ঠাম্মি , দাদু ও কেমন যেন হয়েছে স্বার্থ পর!
বাবা , মাকে বকে না কেন?
বুঝি করেছে আমায় পর।









দুষ্ট লোকের মিষ্ট কথা
               জুয়েল রূহানী

দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথা-
শুনবে নাকো কেউ অযথা,
সামনে এসে সুখ বিলাবে-
আড়াল হলে দিবে ব্যাথা!
দুষ্ট লোকে বলবে তোমায়-
মিষ্টি কথা হাসি হাসি,
শিশুর উপর দরদ যেমন-
মায়ের চেয়ে মাসির বেশি!
দুষ্ট লোকের মিষ্টি কথায়-
কখনও কেউ কান দিও না,
যা আছে সব উধাও হবে-
পস্তাবে তো, আর পাবে না!






কবিতা : অব্যক্ত কষ্ট!
                       বিশ্বজিৎ কর

ঘন কালো মেঘ দেখলেই কষ্ট হ'তো -
মা বলতেন -"বোকা ছেলে,কিসের কষ্ট!"
অকপটে বলতাম-" আকাশ যে এবার কাঁদবে,মাগো"
এখন আকাশের কান্নায় নয়,
কবিতার কান্নায় কষ্ট পাই,একরাশ!
ওরা বলে -"এ সব পাগলামো,
কবি-কবি ভাব!"
ওরা কষ্ট বোঝে না,
ওরা কবিতা চেনে না!
মন মানে না -
চাপা কান্নায় হারিয়ে যাই,
কবিতা'কে নিয়ে!








                     লড়াই
               হামিদুল ইসলাম
                  
জীবনকে চিনেছি কতোদিন
জীবনের পাঠ নিই
পৃথিবীর পাঠশালায়
জীবনের মানে সংগ্রাম
                      জীবন মহীরুহ   ।।
লড়াই আর সংগ্রাম করে
আমরা গরিবরা প্রতিদিন বেঁচে থাকি
আমরা পেটানো লোহা
সংগ্রাম আমাদের নাম
              আমরা এই জীবনের চক্রব‍্যূহ  ।।
সংগ্রাম ছাড়া জীবন অচল
লড়াই ছাড়া গরিবের আকাশ চিরদিন খরা
লড়াই আমাদের জীবন
আমরা কেবল লড়াইয়ের ইতিহাস
                 সে ইতিহাস পাল্টায় শাসকরা  ।।
আজ ঘরে ঘরে যুদ্ধ। যুদ্ধের কাড়া নাকাড়া   ।।






অনুগল্প
        ভ‍্যানিস
                মিনতি গোস্বামী

লকডাউনে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয়েছে বাচ্চাদের।তারা সবাই গৃহবন্দী।স্কুল বন্ধ, বন্ধুবান্ধব নেই, নেই খেলার জায়গা।চার দেওয়ালের মধ‍্যেই চলাফেরা।টুবলুও বন্দী।পাঁচ বছরের ছোট্ট টুবলুর
স্কুল বন্ধু আর স‍্যার,ম‍্যামদের কথা খুব মনে পড়ে।
বিশেষ করে তার ক্লাস টীচার তমাল স‍্যারকে সে খুব মিস করে।কোনো কালাজাদু যেন স‍্যার ম‍্যাম, স্কুল, বন্ধু সবাইকে ভ‍্যানিস করে দিয়েছে বলে তার মনে হয়।
টুবলু মায়ের কাছে পড়ে মায়ের সময় হলে।বাকি সময় জানালা ধরে বসে থাকে।সকালটা তার ভালো কাটে।মা এসময় কাজ করে।সে বসে বসে দেখে নানান ফেরিওয়ালাকে।তাদের ডাক তাকে মানুষের সঙ্গ দেয়।কতদিন বাইরের কারোর সঙ্গে কথা হয়না।
সবজি,মাছ আর ফল ওয়ালারাই অবশ্য আসে।মাঝে মাঝে গ‍্যাসের ভ‍্যান ও আসে।
সবজি দেখলেই টুবলু ,"সবজি দাঁড়াও বলে।
তারপর মাকে হাঁক দেয়,মা সবজি কাকু এসেছে।"
মা রমা কোনদিন কেনে আর কোনদিন ফিরিয়ে দেয়।
সেদিন আপেল কলা চাই ই বলে একজন ফল ওয়ালা হেঁকে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিল হেঁটে হেঁটে ভ‍্যান ঠেলে।
টুবলু তাকে দেখে ও স‍্যার,ও স‍্যার বলে ডাকে।
ফল ওয়ালা তাড়াতাড়ি ভ‍্যান চালিয়ে চলে যায়।
টুবলু মাকে বলে স‍্যার ফল এনেছিল।
মা বলে,"  তোর মাথাটা গেছে ঘরে বসে বসে।"
দিন চারেক বাদে রমা রাস্তায় বেরোয় মুদির দোকানের জিনিস কিনতে।
দেখতে পায় সেই ফল ওয়ালাকে।
সামনে গিয়ে বলে," স‍্যার আপনি?"
ফল ওয়ালা বলে,"আপনি ভুল করছেন।"
"আপনি তো টুবলুর ক্লাস টীচার!
আপনাদের স্কুলে তো আমি যাই।"
"না ম‍্যাডাম, আপনি ভুল করছেন।
ব‍্যাঙের ছাতার মত ঐ সব স্কুল ও নেই,
তাদের মাষ্টারমশাইরাও নেই।
কালাজাদুতে ইস্কুল মাষ্টার সব ভ‍্যানিস।
আমি মামুলি ফল ওয়ালা।"









ছুুুটির দিনচর্যা
                   মহীতোষ গায়েন

ছুটি মানেই আনন্দ খুব ভীষণ আবার অস্থিরতা,
শিরায় শিরায় দহন,গভীর বিষাদ,বিবাদ আবার 
শান্তি-খোঁজে কাব‍্য আর গল্প লিখতে পাগল হওয়া।
ছুটি মানেই আরাম-যাপন,সম্পর্কের টানাপোড়েন,
চাপা গুমোট,বাজার থলে,মতের অমিল,রেষারেষি,
স্বপচারণ পাগলামি ও স্বপ্নভঙ্গ বে-তদবির প্রবঞ্চনা।
ছুটি মানেই মাংস লুচি,খুনসুটি আর ঘুরতে যাওয়া,
কফিহাউস,বাবুঘাট আর মনজিনিষ,আঙুল চোষা,
গভীর রাতে ঘুমের দেশে একলা ঘরে বাদশা হওয়া।
ছুটি মানেই খবর দেখা,খবর বেচা,চোখেতে চোখ...
শরীর মনের মধুর মিলন,কষ্ট ভরা,প্রেম-নদীতে নৌকা
ভাসা,ছন্দ-জীবন চোরাস্রোতে সহবতের সাঁতার কাটা।








      অজানা ঠিকানা 
                     সৌম্য ঘোষ


  সন্ধ্যাবেলায় নীড় খুঁজে ফেরা, এক
  একাকী পথিক আমি, বিচলিত
  হৃদয়ের গভীরের আঁধার ছুঁয়ে ছুঁয়ে
  চলেছি
  অজানা ঠিকানায়........
 
  কতটা পথ পাড়ি দিলে, মিলবে
  এক মুঠো ভালোবাসা ;
  ঠিকানা জানা নেই !
  কতটা পথ পাড়ি দিলে, মিলবে
  বিশ্বাসের আশ্রয়, জানা নেই !
  ঠিক কতটা হাঁটার পর
  এগিয়ে আসবে মুষ্টিভিক্ষা,
 
  ঠিক কতটা পথ পাড়ি দেওয়ার পর
  আঙ্গুল ধরবে কেউ ?
  আর আমি
  ঘুমের বাঁধন ছিঁড়ে
  মাটিতে পা রেখে
  কৃষ্ণচূড়ার তলায়
  ফুঁটিয়ে নেব
  মুষ্টিভিক্ষা চাল
  দু'জনের জন্য........
            






কবিতার  বৈচিত্র্য ভ্রান্তি
              মোঃআলিউল হক


কবিতা ছড়াকার অনেকে আছেন
ছড়া কবিতার পাঠক  আবার আশানুরূপ নয়
যারা কবিতা বোঝেন তাদের সংখ্যা আরও কম।
হেতু নিয়ে  কথা শুনি ঢের
কেউ বলে অভাব  সময়ের
কেউ বলে  রুচি বা চাহিদার ঘাটতি
কেউ বলে হচ্ছে না ভালো কবিতা সৃষ্টি।
কারও মতে কবিতা দুর্বোধ্য  বৈচিত্র্যে বিপন্ন!
কবিতার শরীরে যদি অন্যের মাথা জুড়ে যায়
তাহলে কবিতা থাকলো কোথায়




👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇


লেখা আহ্বান
আমাদের পরবর্তী বিশেষ সংখ্যা  
           "উপকণ্ঠ শারদ সংখ্যা-2020"

লেখা পাঠান :- 08 Sep 2020 থেকে 16 Sep 2020 এর মধ্যে

শারদীয়া সংখ্যার জন্য লেখা পাঠান কোনো নির্দিষ্ট বিষয় নেই যে ধরনের লেখা পাঠাবেন 👇👇👇👇

১) হাইকু, অনুকবিতা, লিমেরিক, কবিতা
২) অনু গল্প, ছোটোগল্প, গল্প 
৩) প্রবন্ধ, জীবনী, স্মৃতি কথা, চিঠি, ভ্রমন কাহিনী
৪) ইংরেজি:-
        Poem, Short story, Story, Essay 


• নিদির্ষ্ট কোনো শব্দসীমা নেই
• whatsaap তে টাইপ করে পাঠান 
• 9593043577 এই নং তে 
• লেখার উপর অবশ্যই উল্লেখ করবেন "উপকণ্ঠ শারদ সংখ্যা- 2020"  

পত্রিকা প্রকাশ করা হবে- 17 Sep 2020 , বিকাল 3টা (মহালয়ার দিন) 


1 টি মন্তব্য: