উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 29/09/2020
Upokontha Sahitya Patrika Web Megazine- 29/09/2020
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 29/09/2020 |
সুখ
রঞ্জনা রায়
নিজের মাঝে সুখ খুঁজে নিই
নিজের মাঝেই অ-সুখ
নিজের মনেই স্বপ্ন সাজাই
জোয়ার ভাটায় উন্মুখ
স্বপ্ন সবই ভাঙা ঝিনুক
পায়ের তলায় ফোটে
বৃহন্নলার স্বপ্ন শালুক
রক্ত ঝরায় ঠোঁটে ।
জ্যোৎস্না শুধু পালিয়ে বেড়ায়
তোর আমার দুটি বাড়ি
মাছ রাঙাদের মনের ডেরায়
ইচ্ছে ঘুড়ির ওড়া উড়ি ।
সুখ খুঁজতে বেরিয়ে পড়ি
গহন জলের ঘূর্ণি টানে
হিসেবি মন মাপছে কড়ি
কে জানে গো সুখের মানে?
বিবর্ণ পাতাবাহার
হামিদুল ইসলাম
কবিতার জন্যে কবিতা লিখি
শব্দের মধ্যে লুকিয়ে থাকে ছন্দ
মনের শব্দগুলো কখনো দূরে বহুদূরে চলে যায়
আমরা থাকি অন্ধ ।
কবিতারা এখন প্রতিদিন হেঁটে হেঁটে আসে
মনের গভীরে জেগে ওঠে আকাশ
পেরিয়ে যাই শীলেদের বাগান শিফনবাড়ি
পূজো পূজো গন্ধে ভেসে বেড়ায় বাতাস ।
বাতাসের কানে কান পাতি
আমরা এখন ইতিহাস
জলে জলে ডুবে যায় জলনূপুর
হৃদয়ের চোরাবালিতে দোপাটি ফুলের সুবাস।
ফুলগুলো প্রতিদিন উড়ে যায়
প্রজাপতি হয়ে
উদ্যানের বসতি ভাঙে দেয়ালের কার্নিসে
রিক্ত নদী চলে যায় বয়ে ।
নদীর জলে জীবনকে খুঁজি
পেয়ে যাই মুক্তো
বিবর্ণ পাতাবাহার ঝরে পড়ে প্রতিদিন
প্রতিটি শিরায় শিরায় জমে ওঠে রক্ত ।
আমি একান্তই গ্রামের মেয়ে
সাফরিদ সেখ
আমি একান্তই গ্রামের মেয়ে
তোমাদের মতো কি আর পারি?
আমার মাথায় ওড়না, মৃদু স্বর
তোমাদের ওসবের বালাই নেই।
কপালে চশমা ,নিতম্বে জিন্সপ্যান্ট
চলার ভঙ্গি নাই বা বললাম।
বিলেতি ঢঙের বার তোমাদের বড়ই দরকারী
সেখানে তোমাদের কতই কারবার।
আমি কিন্তু তোমাদের মত স্মার্ট নয়
মুখে সিগারেট টানতে টানতে কথা বলি না।
উন্মুক্ত মাঠে একটু বসা আর উদার নীলিমার অবলোকন।
যা কিছু নেবার পাবার সবই ফসল ভরা মাঠে।
তুমি সারারাত কলকাতার লাইট গুনতে পারো।
ভোর রাতে টলতে টলতে বাড়ি ফেরা।
পরদিন কলেজ বন্ধ, বকেলে জমিয়ে আড্ডা।
বন্ধুকে ম্যাসেজ,চ্যাট, লইক,পোস্ট...কমেন্ট।
মোকে প্রদীপ শিখা তন্দ্রা আনে ,ঘুম পাড়ায়।
ভোর বেলায় উঠে বই নিয়ে বসে পড়তে পড়তে বিছানায় লুটিয়ে পড়া।
যথা সময়ে কলেজ, বন্ধুদের সাথে কথা,ব্যাস।
ম্যাসেজ চ্যাট নয়,বিকেলে কিন্তু বেড়াতে আসিস।
নিভৃত মনের পুজো
ডঃ রমলা মুখার্জী
হোক না পুজো অন্যভাবে, নিভৃত মনের আরাধনা-
বাহির পুজোর ঘুচুক আঁধার, অন্তরের হোক উপাসনা।
জানি যে জন গড়ছে ঠাকুর, তার এটা উপার্জন,
তবু বলবো সীসার রঙে জল দূষণ অতি ভীষণ।
বন্ধ হোক বেলপাতা, ফুল, জলে প্রতিমা নিরঞ্জন-
মনের যত জমাট কালো এবার পুজোয় বিসর্জন।
আচার, আমোদ পরের কথা, আগে সামলাই পরিবেশ -
বাজি-বারুদের শব্দ-অগ্নি হোক একদম নিঃশেষ।
আলোকমালার ঝলকানিতে নিভে যায় চেতন আলো-
স্বল্পালকে হোক পুজো, পরিবশ রক্ষার পক্ষেও ভালো।
শুদ্ধ হোক পরমা প্রকৃতি, পবিত্র হোক চিত্ত,
মানবী দুর্গার দুর্গ গড়ে সুরক্ষিত করি নারীত্ব।
যে দেশে নারী লাঞ্ছিত হয়, গরীবেরা মরে ভুখা-
মারণ অসুখে অসহায় রুগী ঘরের কোনে একা-
সে দেশে এবার পুজিত হোক স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তার,
সাফাইকর্মী, পুলিশ আর সব, নিরলস সেবা যার।
অসুস্থদের পাশে থেকে কঠিন সময় করি পার-
স্বাস্হ্যবিধি হোক পূজা-উপাচার, চৈতন্যোদয় হোক সবার।
প্রবন্ধ
শিশুদের সুশিক্ষিত করতে হলে
- অগ্নিমিত্র
শিশুদের সুশিক্ষিত করতে গেলে আগে বাড়ির সুস্থ পরিবেশটা খুব দরকার। বাড়িতে শিক্ষা ও সংস্কৃতির চর্চা থাকাও বাঞ্ছনীয় । বাড়িতে কলহ বা কোলাহল বেশি না হওয়াই উচিত । তা না হলে শিশুর রুচি ও মনন ঠিক গড়ে উঠবে না। তার মানসিকতার উপর কুপ্রভাব পড়বে ! বিদ্যালয়ের পড়ার পাশাপাশি শিশুদের প্রচুর সাধারণ জ্ঞানের বই বা ভালো গল্পের বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন । এতে জ্ঞান ও কল্পনাশক্তি বাড়ে । তবেই এক উদার, শিক্ষামনস্ক ব্যক্তিত্ব তৈরী হবে। আর উচিত বন্ধুদের সাথে রোজ খেলাধুলো করতে দেওয়া; কারণ না খেললে বুদ্ধি, চেতনা ঠিক বিকশিত হয় না । তবে সেই বন্ধুরা যেন ভদ্র ও ভালো হয় ।
বেশি মুঠোফোনের অভ্যাসও না করানোই শ্রেয়। এতে নানা অবাঞ্ছিত সাইটে আকৃষ্ট হয় শিশুরা । একটা নেশাও তৈরী হয় । তবে মুঠোফোনের মাধ্যমে শেখা অবশ্যই ভালো।।
কবিতা -
ক্ষুধিত পাষাণ
পিনাকী মুখার্জী
পায়ে পায়ে এগিয়ে চলা
পাহাড়ের বুক চিরে !!
জীবন সঙ্গী জীবন গাথা
রোজ তোমাকে ঘিরে !!
তোমার ওপর সময় ছোটায়
সভ্যতার জয় রথ !!
তোমায় ঘিরে ওঠা পড়া ,
পোড়া ভাগ্যের ভগীরথ !!
তোমায় ঘিরে ভরসা আশায়
বুক বেঁধেছে মানুষ !!
ওড়ায় আগুন পোড়ায় আগুন
আশার আহুতি ফানুস !!
তোমার কালোয় ভাগ্য লিখনের
অনুভবে এগিয়ে চলা !!
মমতা বিহীন ক্ষুধিত পাষাণে
জীবন মাড়িয়ে চলা !!
শিক্ষাগুরু
বিপ্লব গোস্বামী
শিক্ষা হলো প্রদীপ শিখা
ঘুচায় আঁধার কালো,
শিক্ষক হলেন আলোর দিশারী
জ্বালান মনে আলো।
ধূপের কাঠির ন্যায় শিক্ষক
নিজেই পুড়ে যান,
শূন্য করে নিজের ভাণ্ড
জ্ঞান করেন দান।
যেদিন আমার চোখ ফোটেনি
নিকষ কালো রাত,
তিনিই সেদিন দেখিয়ে ছিলেন
আলোর সুপ্রভাত।
যার কাছেতে শিক্ষা নিয়ে
যাত্রা হলো শুরু,
তিনিই হলেন আলোর দিশারী
তিনিই শিক্ষা গুরু।
যার আশিসে পদ্য লিখি
যার আশিসে কবি,
এসব কিছুই আমার নয়তো
তার শেখানো সবই।
তোমার খেয়ালে
মন্দিরা ভারতী
বাতাসে মিশে আছে
তোমার দেহের গন্ধ ,
বসেছি লিখতে কিন্তু
খুঁজে পাচ্ছি না ছন্দ।
সূর্য উঠেছে নিয়ে
তীব্র এক প্রকাশ ,
তবু কেন মেঘলা আজ
আমার মনের আকাশ?
চাইছি ভূলতে তবু
বারে বারে পড়ছে মনে ,
সারাদিন ঠোঁটে মিথ্যে হাঁসির সাজ
গুমরে মরছি গোপনে।
ভূলবো কোনটা বলো
সারা প্রকৃতি জুড়ে তোমার খেয়াল,
তুমি সমীরনে তুমি নীলাকাশে
আর কী বোঝাবো মনের হাল।
নৈঃসঙ্গ্য
বদরুদ্দোজা শেখু
থিকথিক গিজগিজ করছে মানুষ ,
শহরের এই নিত্য ভয়ংকর ভিড়
আমার একান্ত
নৈঃসঙ্গ্য বাড়িয়ে তোলে
ক্রমশঃ প্রসারমাণ ঘরবাড়ির ভিতর
নিজেকে নিজের ক'রে গুটিয়ে রাখার
নির্বিঘ্ন দেয়ালে লেগে থাকা দূরত্ত্বের মতো ,
অন্তরঙ্গ সখ্যতার হাত খুঁজতে বেরিয়ে
অর্থের কুঠারে ধাক্কা খেয়ে চারার বনানী
বিবর্ণ ধূসর হ'য়ে যাওয়ার মতো ,
চার আনা পয়সার দুর্মূল্য রিক্ততায়
চৌদ্দ মাইল পথ পায়ে হাঁটার দীর্ঘ ক্লান্তির মতো ,
পার্কের বেঞ্চিতে ব'সে ফুলের সান্নিধ্য পাওয়ার বদলে
বস্তির জবর-দখল-নোংরা খিস্তিখেউড় খাওয়ার মতো
কঠোর শূণ্যতা আমার একান্ত নৈঃসঙ্গ্য বাড়িয়ে তোলে ---
অথচ আমার চারিপাশে
থিকথিক গিজগিজ করছে মানুষ ।।
কবিতা
কথা
- মিনতি গোস্বামী
না বলা কথারা গুমড়ে মরে
সুযোগ পেলে রাতের আঁধারে
জোনাকির মতো দিপ দিপ করে
ডানা মেলে ঘুরে বেড়ায়।
সব কথা কখনো কেউ
সাজাতে পারেনা অক্ষরে
জীবনের কত কথা,কত গল্প
চলে যায় লোকচক্ষুর অগোচরে।
কথার টুঁটি টিপে থাকার
যতদিন থাকবে রেওয়াজ
ততদিন মনের কথার
কেউ পাবেনা আঁচ।
অনুগল্প
পরীর দেশ
আব্দুল রাহাজ
একটা বিচিত্র দেশ ছিল চারিদিকে গাছপালায় ঘেরা সেখানে থাকত পরীরা ।বেশ মায়াবী সৌন্দর্যের অধিকারী ছিল সেই দেশ সেখানে বাস করত নীল পরী লাল পরী। পরীদের রানী ছিল লাল পরীরা বেশ মিলেমিশে থাকতো ওরা। রংবে রঙের ফুলের বাগান নানা রকম গাছপালার মাঝে এক মনোরম পরিবেশে থাকতো রানী লাল পরী অন্যান্য পরীদের গল্প শোনাতো। একদিন অন্য দেশান্তরের দস্যুরা পরীর দেশে থাকতে আরম্ভ করলো নানা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে লাগল পরীর দেশে কোথাও যেন পরীর দেশের সব হারিয়ে যাচ্ছিল শোভা হারিয়ে যাচ্ছে তারপর নীলপরীর একদল ভুতের অভিনয় করে তাদের কিনা শাস্তি দিয়েছিলো আর এই খবর শুনে লাল পরী রা কি আনন্দ পেয়েছিল।পরীরা তখনও পৃথিবীর কথা শুনেনি অনেক কাল আগে একবার লাল পরি রা ঘুরতে ঘুরতে পৃথিবীর এক বনে নেমে পরে তারা ভাবে এখানে ফুলের বীজ ছড়াবে তাদের দেশ থেকে ফুলের বীজ নিয়ে এসে ছড়িয়ে দিতেই কিছুদিন পর ফুলে ফুলে ভরে উঠলো সারা পৃথিবী পরীর দেশের মতো সুন্দরে সুন্দরে ভরে উঠলো মায়াবী পরিবেশ গঠিত হলো তা দেখে পরীরা হাসতে হাসতে পরীর দেশে ফিরে গেল। এরপর থেকে পৃথিবী হয়ে উঠল অনন্য সৌন্দর্যের অধিকারী আর পরীরা তাদের দেশকে নিয়ে এক বিচিত্র জগতে ভেসে রইল।
রাত
উমর ফারুক
ঝিঁঝি ডাক ছাড়ে জানালার বাইরে
চিন চিন করে এই অন্তর
জোনাকিরা আজ সেথা নাই রে
ফু দিয়ে পড়ি শুধু মন্তর।
ব্যাঙ সাপ পাশা খেলে শত্রুতা নায় রে
চামচিকে ঘুরেফিরে বড্ড
বাদুড়ের চোখ কানা করিসনে ভয় রে
দিন হলে রাত হবে স্তব্ধ।
পুকুরে মাছ ঘোরে রাত বড় বিস্মিত
কলুষিত জলে কেউ লুকিয়ে
বক চিল মাছরাঙা হয়েছে স্তিমিত
নারিকেল গাছ মাথা উচিয়ে।
আরশোলা গুটি গুটি পায় হেঁটে যায় রে
বিষদাঁত কারো ভেঙে পড়ে
আপনার পিছু ভয় বুক চেপে ধরে রে
নিশুতি এই রাত ভুত্তুড়ে!
সাদা চাঁদ দেখা গেল ঝলমলে জলেতে
রূপ খানি সুন্দর খুব লাগে
না জানি কোন ফাঁকে দস্যুর থাবাতে
ঘুমন্ত আমি যেন ওঠে জাগে।
চোখের
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
সবার মত বাইরে থেকে হলেও শক্তিতে এক্সট্রা অর্ডিনারী। যা ঘটবে তা অঞ্জু অনেক আগে থেকেই দেখতে পায়। কোথায়? ওর সামনে, হাওয়ায়। ও সাবধান করে, যার যা খারাপ দেখে তাকে বলে। আবার সুখবর জানায় কারোর ভালো দেখলে। এ সব মিলেও যায়। তাই ওকে সবাই মানে। দেবী জ্ঞানে ভালোবাসে। বিয়ে হল। ওকে বিবাহিতা সম্পর্কিতা ওর সকলেই নির্যাতন করে। বললেই বলে যে পাগলী বৌ জুটলো, মরলেই তারা রেহাই পায়। একদিন শ্বশুর রাস্তায় বেরোচ্ছে। ও বলল, " বাবা আজ আপনি বাড়ীর বাইরে বেরোবেন না! কাল বেরোবেন! " শ্বশুর বলল, " ক্যানো? " বৌমা বলল, " ২৪ ঘন্টা আপনার জীবনে বিপদ ডেকে আনবে। এই সময়টা কেটে গেলে আর ভয় নেই। " ওকে ধমকি দিয়ে বেরিয়ে গ্যালো। একটু পরে হন্তদন্ত হয়ে হাঁফাতে হাঁফাতে একটি বালক এসে বলল, " তাড়াতাড়ি চল! দে জ্যেঠুর মোড়ের মাথায় একসিডেন্ট হয়েছে। একটি মাল বোঝাই ট্রাক পিছন থেকে এসে জ্যেঠুর বাই সাইকেলে ধাক্কা মারে। " তখন সবাই ছুটলো। হাসপাতালে দিল। কয়েক দিন পরে ডান হাত ও বাঁ পায়ে প্লাস্টার করে বাড়ি ফিরলো। ক্রাকস। এবার শাশুড়ি বউকে বেদম চুলের মুঠি ধরে ঝাঁটা দিয়ে মারলো। বলল, " কুকথা বলে আমার স্বামীকে খেয়ে নিচ্ছিলো আর একটু হলে। আমার সিঁদুরের জোরে ফিরে পেলুম। এই জয়! তুই তোর বউকে এক্ষুনি বাপের বাড়ি ধরে দিয়ে আয়! আর যেন ও কক্ষনো এমুখ হয়। বলে আসবি বৌয়ের বাপকে। আমি ফের তোর ভালো দেখে বিয়ে দব। " অঞ্জু চিরতরে ত্যাজ্য হল। কিন্তু ওর দিব্য শক্তি ওকে নব পথ দেখালো। ও সাধু হল। আশ্রমে থাকে। সারা পৃথিবীতে ওর ভক্ত হল...........
মনের ইচছে
অনাদি মুখার্জি
ইচছে হয় কভু পাখি হয়ে যায় কাছে তোমার ,
কতদিন দেখিনো তোমায় ওগো সাথি আমার !
আজ আমি চাই মোর নয়নে দেখিতে তোমায় ,
ইচছে তো জাগে মনে চলো কথাও হারিয়ে যায় !
ইচছে গুলো সাজিয়ে রেখেছি আমি মনে ,
সকাল সাঁজে তোমাকে মনে পড়ে ক্ষনে ক্ষনে !
রাজপথ ছেড়ে এসেছি তোমার এই গলিতে,
আমি নাকি বাউনডুলে তুমি প্রায় বলিতে !
তুমি হলে আমার কাছে গোলাপে চেয়েও দামি ,
মনের ইচছে তো তুমি আছো আমার এক অনুভূতি ছবি !
হীরক রাজ্যে করোনা
সুশান্ত মজুমদার
রাজাঃ- কেমন আছ সব সভাসদ গণ,
শুনেছ কি খবর আছে জব্বর একখান?
মন্ত্রীঃ- কি সন্দেশ জাহাপনা ?
করুন নিবেদন,করি প্রার্থনা।
রাজাঃ- বেটা নিষ্কর্মার ঢেঁকি একখানা,
কি করে করো মন্ত্রিত্ব বুঝিনা।
মন্ত্রীঃ- মহারাজ,করুন মার্জনা,
ভুল করেছি মস্ত
গৃহ কাজে ছিলাম ব্যাস্ত
তাই খবর টি আছে অজানা।
রাজাঃ- সুদূর দুর্গম এই হীরক রাজ্যে
ভাইরাস করোনা,
পুরো-দস্তুরে দিয়েছে হানা !
সভাসদ গণ সকলেঃ-- সে কি !
রাজাঃ- তবে আর বলছি কি,
এযে মাথায় ভেঙে পড়ল আকাশ !
কি করে প্রবেশ করল এ রাজ্যতে ভাইরাস?
কিহে গুপ্তচর,
জানো কি, কোন সমাচার?
গুপ্তচরঃ- মহারাজ, করলে অভয় দান,
করি তবে নিবেদন।
রাজাঃ- আহা! করো কেন হেঁয়ালি,
কি জানো?শুনাও দেখি পাঁচালি।
গুপ্তচরঃ- পাঠশালার ধূর্ত পন্ডিত,
সেই বেটা উদয়ন।
করে ছিলো বিদেশে গমন ।
হঠাৎ তার ঘটেছে আগমন
দেহেতে করি বীজাণু বহন।
এখন রাজ্য মাঝে তার
ঘটেছে অবাধ বিস্তার ।
রাজাঃ- হুম,পন্ডিতের ব্যাবস্থা পরে হবে,
এমন সাধের হীরক রাজ্যের কি হবে?
মন্ত্রীঃ- এখন আমাদের আশু প্রয়োজন,
যে ভাবেই হোক ঠেকানো সংক্রমণ।
রাজাঃ - ওহে গবেষক ! কি বলে তোমার
গবেষণা ?
আছে কি কোন ঔষধি,দমনে করোনা?
গবেষকঃ- ঔষধ মেলা ভার,
এখনো হয়নি তো আবিস্কার।
তবে মানতে পারলে কিছু নিয়ম,
হতে পারে ঢের উপশম।
রাজাঃ- বলো গবেষক, কি আছে
উপায় ?
মানলে নিয়ম, যদি বাঁচা যায় !
গবেষকঃ- নিয়ম খুবই সহজ সরল,
সকলের আছে জানা।
মুখেতে লাগাবে মুখোশ,
হাতেতে দস্তানা ।
বার বার হাত ধুতে কর ব্যবহার,
সাবান, জল এবং স্যানিটাইজার।
লকডাউনে দিতে হবে গুরুত্ব,
মেনে চলতে হবে সামাজিক দূরত্ব।
রাজাঃ- বাহ্! উপায় তো দেখছি খাসা
ভারি চমৎকার!
কিন্ত লকডাউনে প্রজারা
হবে যে জেরবার !
গবেষকঃ- এ ছাড়া মহারাজ
গতি আর কোথায়?
লকডাউন করাটা তাই
হবে মঙ্গলময় ।
রাজাঃ- অন্য উপায় নেই যখন
আর বাঁচিবারে,
অর্থমন্ত্রী পাঠাও অর্থ
সকল প্রজার তরে।
আমার প্রজাগণ যেন,
কেউ না থাকে অনাহারে।
ঠিক কিনা ------
মন্ত্রীঃ- ঠিক,ঠিক ,ঠিক ।
অর্থমন্ত্রীঃ- মাহারাজ,রাজকোষের
অবস্থা বিশেষ ভালো নয়,
কিছু ঋণের ব্যাবস্থা করলে
খুবই ভালো হয়।
রাজাঃ- এ দুঃসময়ে ঋণ কি
কেউ আর দেবে ?
মন্ত্রী আমলাদের না হয়
কয়েক মাস বেতন কাটা যাবে।
ঠিক কিনা---
মন্ত্রীঃ- ঠিক ,ঠিক,ঠিক ।
রাজাঃ- সভাকবি, শুনলে তো
সকল বিবরণ,
এখন শুনাও দেখি
তোমার কলমের কি লিখন ?
সভাকবিঃ- দূরত্ব বজায় রাখো
সদা সর্বজনে,
জমায়েত এড়িয়ে চল
বাজার, হাটে কিম্বা ধর্মস্থানে।
হাত ধোওয়ার অভ্যাস
কর বার বার,
অকারণে হাত না দিবে
নাকে কিম্বা মুখের উপর ।
"সুস্থ থাকো ঘরে থাকো"
মানবে এ বচন,
প্রাণপণে রাজ নির্দেশ
করবে পালন ।
ভুল তথ্য না করবে
কখনো রটনা,
হীরক রাজা পাশে আছে,
সে কথাটি যেন ভুলো না।
করোনাকে সাথে নিয়ে
চলতে হবেই যখন,
জীবনধারাতে তাই আনো পরিবর্তন।
করতে চাঙ্গা দেশের অর্থনীতি,
সহজ সরল করতে হবে
লকডাউনেরর রীতি।
অতঃপর মহামারি হবে শেষ
বাঁচবে সবার প্রাণ,
সবাই মিলে হীরক রাজার
কর জয়গান।
সকলে একসাথেঃ- করোনায় যদি
যায় প্রাণ,
তবু, হীরকের রাজা ভগবান!!
গণ ক্ষেদ
এমাজদ্দিন সেখ
উথাল পাথাল ভারত ভূমি , তবু বাঁচি ; একী মায়াজাল !
দাদা তোষে অম্বানিকে , দিদি দেয় ভিক্ষার চাল ;....
বৈতরণী পাঁচ বছরের; বোকা বাক্সে করে পার !
ঠকে মরি সারা জীবন; ভোটটা দিয়ে হায় রে হায় ! ...
মাঝে মাঝে ঢেউ খেলে যায় -- ছাত্র - শ্রমিক বা চাষীর ---
লড়াই- সংগ্রাম হুঙ্কার জুলুস ক্ষিপ্র ধারায় ....
মন্দির - মসজিদ সঞ্জীবনী , ' মন কী বাত ' এ ঘুম পাড়ায় l
কোন আশাতে , কার ভরসায় চাষী ফলায় ধান - গম- ডাল ....
শ্রমিক মরে কারখানা গেটে , রমণীর ছিন্ন ভিন্ন দেহ পথের পাশে , যুবা ধর্না মঞ্চে ....
মরণ মিছিল অনন্ত ধারা ;... চৌকিদারের টনক নড়ে না !
ধাঁধাঁয় রইলো দেড়'শো কোটি , সুদিন আজও এলো না !
মিথ্যা প্রেমের ' জুমলাবাজিই ' বেচে দিলাম প্রাণ ধন ;...
বাস্তব অন্ধ , বৃথা লোভে নষ্ট করলাম এই জীবন !
বাঁচার আকুতির আগুন জ্বালো , ছিন্ন করো এই মায়াজাল !!
কবিতা :
একদিন এসো!
বিশ্বজিৎ কর
তুমি যেদিন মুক্ত হবে -
সেদিন কাছে এসো,
তুমি যেদিন আমার হবে -
সেদিন ভালবেসো!
তোমার গন্ধ,তোমার স্পর্শ-
আমারই উষ্ণতা,
তোমাতে জড়িয়ে থাকা -
আমার কবিতা!
যেদিন আমি থাকবো না -
তোমার কুঞ্জবনে,
হৃদয় তোমার হবে অশান্ত-
বিষন্নতার দিনে!
গোলাপ রহস্য
শংকর হালদার
বয়সের সন্ধিক্ষণে,
রং -এর আলপনা আঁকে যৌবন।
বিস্তর ব্যবধান ভুলে
শব্দের মায়াজাল বুনে সমাধান খোঁজে
গোলাপের অদৃশ্য মায়ায় দুটি প্রাণ।
রচনা করে অধ্যায়ের প্রথম পর্ব আর
খাম বন্দী মায়ার অংশীদারিত্বের ভাগাভাগি।
শব্দের সেতু বন্ধনে
একমুখী ঘরবাড়ি পূর্ণতার প্রতীক্ষায়
চাতকের মতো প্রথম বসন্তে পায়চারী...
পান্ডুলিপি হয়ে থাক পিঞ্জরে।
প্রজন্মের ধারাবাহিকতায় এ যেন এক উপচানো ঢেউ
আমাকে লিখে যাও
তোমার মতো করে আসমুদ্রহিমাচল,
আর উপলব্ধি করি তোমাকে
যাবজ্জীবন বন্দী দশায়,
দুটি প্রাণ একই সত্তায় হারাতে চায়
গোলাপের মায়াজালে দিগন্ত রেখায় ।
প্রভূ দয়াময়
জুয়েল রুহানী
হে প্রভূ দয়াময়-
তুমিই মহান,
হৃদয়ে গেঁথে দাও
তোমার কোরআন।
হৃদয়ে এঁকে দাও
হাদীসের সে বাণী,
যে বাণী শুনে মোর
ভরবে এ মন জানি।
কোরআন-হাদীস নিয়ে
এ জীবন যেন যায়,
ফরিয়াদ হে প্রভূ-
হে মহান দয়াময়।
আমি মল্লিকা
গোপাল বিশ্বাস
আমি কি নষ্টা মেয়ে ?
কেউ কেউ আমাকে নষ্টাই বলে
আমার দোষ কি ?
আমি এখন থানায় যাবো
বলবো আমি বেঁচে আছি
আমি পাগলী নই --
মল্লিকা l
মেয়েরা কি শুধুই মেয়ে ?
তোমরা আমাকে ধর্ষণ করে
খুন করতে চেয়েছিলে
পারোনি
ভাবছো মরে গেছি
জল কাদায় মাথা থেতলে
কত ক্ষণ অজ্ঞান ছিলাম ?
তোমরা তো জান না --মল্লিকারা
এতো সহজে মরে না
তোমাদের ভুলেই
আমি বেঁচে গেলাম
বিশ্বাস হচ্ছে না ?
এই দেখো উরুতে রক্তের দাগ
গলায় ফাঁসের চিহ্ন
বুকে দাঁতের কামড়
পেটে নখের আঁচড়,
এ গুলোই তো রাজনীতির হট হিস্যু l ওমা ! লজ্জা কিসের ?
আমি তো মৃত
মৃত মেয়েদের স্তন উরু
দেখতে লজ্জা নেই !
আমাকে ধর্ষণ করে
খুন করেই তো তোমরা
ভোটে জিতবে
একে অন্যের দোষ দাও
মিডিয়া চাউর হয় l
সব দলের নেতারাই আমাকে মাথায়
তোলে নাচে
মজা আর কাকে বলে l
নইলে তোমরা তো
ভালো মানুষই
শুধু ভোটের জন্যই
এ সব কর l
ইলেকশন --এতো খাটাখাটনি
লাইক রিস্ক
মেয়েদের নিয়ে তো একটু আমোদ
স্ফূর্তি করতেই পারো
ভোটে জিততে কত ক্ষণ ?
আগে নিজে দাঁড়াও
নিজে খাও
নিজে বাঁচো
জনগণ --দু পয়সার কানাকড়ি l
এ পথেই আমি একটা মোমবাতি জ্বালাতে চাই
এবার বাইরে এসে দাঁড়াও
সূর্যের দিকে তাকাও l
খুব ভালো লাগলো । খুব সুন্দর আয়োজন ।
উত্তরমুছুনঅসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে এই ভাবে পাশে থাকুন
মুছুনখুব ভালো ভালো লেখা প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় সবগুলো পড়লাম।সম্পাদক মহাশয়কে অজস্র ধন্যবাদ।
উত্তরমুছুন