"উপকণ্ঠ 15 জুলাই সংখ্যা "
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-15/07/2020, বুধবার
সময় :- সন্ধ্যা 7 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
As I have arrived
Siddhartha Singha
I shall never go out meassuring my steps carefully
I shall never go marketing that tallys with my wife's forced list
I shall never lose myself in research with heaps of notes
I shall never walk to find out the lapislazuli mixed up with stones
I shall never go out meassuring my steps carefully
as I have arrived, I shall
The Memoirs of My Childhood
By pen Sabir Ahmed
Tears you are too naughty.
Scale off to the eyes,
From the aesthetic feelings of heart,
Through the blood flow of veins,
When I call up about my childhood;
Free from the burden of pressure!
Hiding in the hem of mother's sari,
I'd play hide and seek with father.
Her caress,her warm touch of love,
Or affection,soft titillating,rolling upon dust,
Babbling over my naughtiness and behind me her pursuing;
Are that creep into the courtyard of my reminiscence,
That chases me ever like a walking shadow.
I'd fall asleep listening to mother's lullabies
My heart weeps,my throat becomes half-choked;
When I remember that angelic childhood !
Riding behind on my father's bicycle;
Or sitting upon his shoulder,by holding his ears;
I'd sway a chock-a-block way.
We would go to see the fair,
On that hustle bustle path through the green vast field;
Beside the Ganga is a holy water container;
The folklores of boatmen,even today are heard;
From the heart of non-stopping water of river;
What I heard twenty four years ago.
I was taught to walk the path by holding fingers.
His dusty and rusty,old and stationary bicycle,
Lying in the useless lane,
Call me frequently like the pole star,
As such it calls to the misguided mariners on seas.
His footprints on the paddles are still,till now alive.
His words are played on in my ears like a flute-tune.
I remember…...
The merriment of aquatic taste,
The drench in the rains and jump
From the summit Of the neem tree,
Into the water of the pond.
How I'd catch puti-fish with friends,
With fish sticks at Natunpukur,
From the bush of the fig trees.
My pal and I would play the mud throwing game,
During cats and dogs.
The pseudostem box of banana tree tying on back;
We dived like a diver bird,
Beneath the water of Dighi to catch shrimps and crabs;
And to find the flitters for the ducks and ducklings.
Mango picking during storm,
The sadness of the doll's marriage breaking up,
The joy of flying a kite in the midday sun
In the Belibhui field,
All have lost in the red and blue planets of time.
That huge gigantic banyan tree,
In the compound of my elementary school,
And the shadow of its canopy;
Under which we'd be reading tables loudly,
Our head teacher who was Prasanta Pramanik
Is no more today,
But his teaching,canon and advice,
Love,lapping and gently patted on head;
With his blissful hand I remember too much !
Those friends and their sweet words-
Everything seems to be lost somewhere.
Those are all past but alive in the corner of anamnesis.
এখনও
শংকর হালদার
এখনও গোধূলি নামলে,
ফিকে হয়ে আসে তোর দেখানো পথে
জন্ম নেওয়া নতুন জীবনের মানে ।
আঁধারের হাত ধরে ফিরে আসা মন
অপেক্ষার প্রহর গোনে গোধূলি আলোয়
তোর দেখানো পথে ।
যেখানে হিয়ার উচ্ছ্বসিত উত্তাল তরঙ্গ
স্বপন বোনে চোখের গোপন আলাপচারিতায় ।
বাস্তবতার অবুঝ নিরব প্রেম-
সবকিছু ফিরিয়ে দিয়েছে
পিঞ্জরে জলীয় চিহ্ন রেখে
তোর চলে যাওয়া দিনগুলি ।
ঝরে পড়া পাতার মতো তোকে
খুঁজে ফিরি মাটির বুকে
এখনও...
ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি !
রাজা দেবরায়
অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল (যদিও শিক্ষালাভের ক্ষেত্রে অর্থাৎ বোঝার ক্ষেত্রে অথবা জ্ঞান লাভ করার ক্ষেত্রে অর্থের সাথে কোনোরকম যোগাযোগ নেই । অর্থের যোগাযোগ আছে প্রাইভেট পড়ানোর ক্ষেত্রে, বই কেনার ক্ষেত্রে, প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে) পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে সবথেকে বড় ব্যাপার হলো, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের কৃতিত্বের জন্য তাদের স্কুল পুরোপুরি ক্রেডিট নিতে পারে । অন্যরা যারা মেধা তালিকায় আছে বা নেই (কিন্তু অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল), তাদের কৃতিত্বের অংশীদার সর্বাঙ্গীণভাবে স্কুল হতে পারে কিনা মনে প্রশ্ন জাগে । কারণ তারা তো ৫, ৬, ৭ বা ৮ জন অথবা হয়তো আরো বেশি প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়েছে !
আবার অন্য দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে, মেধা তালিকায় যারা স্থান করে নিতে পেরেছে, এটা তো তাদের ব্যক্তিগত সাফল্য । রাজ্য বা দেশ তাতে কিভাবে উপকৃত হলো ? ভবিষ্যতে হবে তাই হয়তো উৎসাহ প্রদান করা হয় ! কিন্তু এরকম তো নাও তো হতে পারে ! তার চেয়ে উচ্চশিক্ষায় কৃতীদের রাজ্য বা দেশের সেবা করার সুযোগ আরো বেশী থাকার কথা । তখন এরকমভাবে প্রচার করা হয় না কেনো ? তখন কর্মসংস্থানের প্রশ্ন চলে আসবে বলে ? কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়া থেকে এড়িয়ে যেতে ?
যাই হোক ভবিষ্যতেও অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মেধাবীরা মেধা তালিকায় আরো আসুক, ভালো ফলাফল করুক এবং জীবনে প্রতিষ্ঠিত হোক । সবার জন্যই শিক্ষা হোক ।।
এলোমেলো
গণেশ দেবরায়
জীবনটা আজ ভীষণ এলোমেলো
ঠিক যেমন আবর্জনার স্তূপ
কখনো ইঁদুর কুকুরের উৎপাতে আরো বিভৎসময় হয়ে উঠে,
কখনো কীট পতঙ্গ বিশ্রী গন্ধ ছড়ায়।
কখনো সূর্যের আলো পড়বে কি তাতে?
বিচিত্র সুন্দরবন
ছোট গল্প
আব্দুল রাহাজ
সুন্দরবনের একটা ছোট্ট দ্বীপ সেখানে থাকত আরিন মহেশ আর সরেন ওদের দিন কাটতো সুন্দরবনের কাঠ ফল-মূল বনের মধু সংগ্রহ করে আর নদীর মাছ ধরে দ্বীপের একটা জায়গায় ছোট্ট বাজার ছিল সেখান থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতো
বিক্রয় করতো। সেখানকার জীবনযাত্রা ছিল সহজ সরল সুন্দরী গরান গেওয়া হোগলা পাতার বনের মধ্য দিয়ে বয়ে চলেছে নদী তার চারিদিকে শান্ত পরিবেশ সবুজে রাঙানো সব দিকে যেন মনোরম পরিবেশ নিয়ে ফুটে উঠেছে আমাদের সুন্দরবন।দ্বীপের মানুষেরা শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে খড়কুটো আর গোল পাতায় ঘেরা ছাউনি আর মাটির দেয়ালে তৈরি ঘর তার ভিতরে থাকতো ওরা ছোট্ট ছেলে মেয়েরা এই বিচিত্র সাধ এর পরিবেশ নিয়ে বেড়ে ওঠে সারা জীবন মনে প্রাণে চোখের সামনে সবুজ ঘন পরিবেশ ও তার মহামায়া রূপে নিয়ে ফুটে ওঠে । একটা ছোট্ট পরিবার ছিল ঐদিকে সবচেয়ে প্রাচীন বসতি সেই পরিবারের কর্তা হারাধন একসময়কার সুন্দরবনের বন জঙ্গলের অলিগলি সবই তার চেনা এই সবুজ প্রকৃতি যেন তার দু চোখের নখদর্পণে ভেসে ওঠে হারাধন ছেলেরা এখন গভীর বনে গিয়ে মধু সংগ্রহ করে যা হয় দ্বীপের শেষে ছোট্ট একটা বাজারে সেখানে ওই মধু বিক্রি করে যা অর্জন করে তা দিয়ে সংসার চালান। এই বিচিত্র সবুজে ভরা গাছপালা নদী-নালা প্রকৃতি যেন তাদের কাছে মায়ের মত। এই দ্বীপে বছরে একটা দিন তাদের উৎসব হতো সবাই এক অপরূপ মেলবন্ধন আনন্দে মেতে উঠতো প্রকৃতির সবুজ মা যেন মেলে ধরেছিল এক অন্য রূপে তার মধ্য দিয়ে এই উৎসব এক অন্যরকম পরিবেশ নিয়ে ফুটে উঠত।সুন্দরবনের বিভিন্ন দ্বীপের মানুষ যেন এই মায়াময় পরিবেশ কে আগলে ধরে রেখেছে দিনের পর দিন বছরের পর বছর ফলে তার এই বিচিত্র সাধ বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেছে। মহেশের আরিন আজ নদীতে মাছ ধরতে যাবে সাথে আছে মাছ ধরার উপকরণ ওরা আজ গভীর জঙ্গলের পাশ দিয়ে যাবে শোনা যায় ওখানে নাকি বাঘের পায়ের ছাপ দেখা যায় ওখানেই নাকি বাঘের আস্থানা মহেশ একটু ভয় ভয় এ নৌকার হাল চালাতে লাগলো কোথায় একটা শব্দ হলো ওরা মনে করে বাঘের গর্জন নৌকা থেকে লাফ মেরে জলে ডুব দিলো একটু পর আরিন জল থেকে মাথা উঁচু করে দেখে ও পাড়ার খগেন মুর্মুরা নদীর পাড়ে কাঠ কাটছে আরিন বলল আরে মহেশ ওঠ ওঠ বাঘের গর্জন না গাছ কাটার আওয়াজ জল থেকে উঠে মহেশ হাঁপ ছাড়লো। এরপর নৌকা আবার চলতে শুরু করলো খাড়ির কাছে বেশ অনেকটা মাছ ধরল ওরা বেলা গড়িয়ে এসেছে ক্ষীন আলোয় প্রকৃতি তার অপরূপ মায়া দৃশ্য যেন অপরূপ বৈচিত্র্য নিয়ে ফুটে উঠেছে এরপর ওরা হাটে এসে মজুমদারদের আড়ৎ এ মাছ বেঁচে যা অর্থ পেল দুজন ভাগাভাগি করে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দিল ফিরে আসার পথে বউ ছেলে মেয়ের জন্য খাবার চাল ডাল আলু তেল কিনে ওরা গল্প করতে করতে বাড়ি এলো আরিন বাড়ি চলে গেল এদিকে মহেশ বাড়িতে এসে বলল ও খোকার মা এইগুলো তোলো নদীতে একটা ডুব দিয়ে আসি এসে ভাত খাইবো একটু ঘুম দিব তারপর গল্প করব। এইভাবে মহেশ আর আরিনদের মতো দ্বীপের মানুষ গুলো দৈনন্দিন জীবনযাপন করতো এইভাবে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশ এক বৈচিত্র্য রূপে ফুটে ওঠে এক অন্যরকম পরিবেশকে সৃষ্টি হতো। সবুজ গাছপালায় আবৃত জীব বৈচিত্র্যের সমাহার এখানকারজীবনযাত্রা ও তাদের সংস্কৃতি সরলতা মন এক বিচিত্র সমাহারে আমাদের বিচিত্র সুন্দরবন হয়ে উঠেছে প্রকৃতির বিশ্বে মায়ের কোলে এক অনন্য রূপে ফুটে উঠছে।
অবুঝ তুমি
সোহিনী শবনম
দূরত্ব অনেকটাই ছিল,
তোমায় দেখার সুযোগ পাই নি তাই;
অজস্রবার কল করেছি,
শুনতে শুধু গলার স্বরটাই।
বোঝোনি তুমি আমার অনুভূতি,
শুধু বুঝলে ভুলটা।
আমি নাকি তোমায় ভালোবাসিনি!
যেহেতু ছিল না দামী উপহারের দাবিদাওয়া।
সিগারেট খেতে বারণ করিনি,
ভাবলে ভালো চাই না তোমার।
আসলে আমি গুরুত্ব দিয়েছিলাম,
তোমার নিজস্ব পূর্ব বদ-অভ্যাসটার।
কৃত্রিম ভালোবাসায় মজলে তুমি,
উপহারে ভরালে তাকে।
এক কথাতেই বুকের কাপড়,
সে তোমার হাতে রাখে।
অতীত হয়েছ এখন তুমি,
কষ্ট পাই না মোটে।
ভালোবাসার যোগ্য মানুষ ভেবে,
ভুলটা আমিই করেছিলাম বটে।
ফেমাস ট্রৈন্ডিং প্রেমের মতো,
লোক দেখিয়ে ভালোবাসতে পারিনি।
অচেনা অজানা প্রকৃত ভালোবাসার গুরুত্ব,
বোঝার ক্ষমতা তোমার আজও হয়নি।
রবি-ভাবনায়!
বিশ্বজিৎ কর
তোমার খোলা হাওয়ায় -
মন মোর মেঘের সঙ্গী হয়ে উড়ে যেতে চায়!
তোমার মল্লিকাবনে প্রথম ফোটা কলি-
আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে সত্যসুন্দর হয়ে বিরাজ করুক,
নেচে উঠবে আমার হৃদয় ময়ুরের মতো!
আমি দুখজাগানিয়া রাতে তোমায় গান শোনাব!
ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনায়,
দুলতে থাকব জীবনভর!
কোন রাতে যদি ভালবাসার দুয়ার যায় ভেঙ্গে -
নিভৃতে-যতনে,অবশ্যই ভালবেসে, আমার নাম তোমার মনের মন্দিরে লিখে রেখো!
মেয়েটি যখন
মৌসুমী গুহ রায়
সন্ধ্যার আবছায়া। মেয়েটি উঠোনে দাঁড়িয়ে
গান গায় একা একা। "দিনের শেষে, ঘুমের দেশে"।
মেয়েটি নিঃসঙ্গতা বোধ করে।
মেয়েটি এখন মধ্যবয়সী। কবিতা লেখে সে - "নারী ও কিশোরী"।
সে মুখোমুখি দাঁড়ায় কিশোরী বেলার সাথে।
মেয়েটি এখন প্রৌঢ়া। কবিতা লেখে সে।
কৈশোর, যৌবনের স্মৃতি রোমন্থন করে সে।
তার প্রৌঢ়ত্ব অতীত জীবনের মুখোমুখি।
মেয়েটি যখন বৃদ্ধা। কবিতা লিখবে কি সে ?
অতীত জীবনের স্মৃতি রোমন্থন করবে কি ?
তার বার্ধক্য সমগ্র জীবনের মুখোমুখি হবে কি ?
আমরা
হামিদুল ইসলাম
____________________________________
এখানে দুঃখ দারিদ্রে
ভরে ওঠে জীবন
জীবন মানে সংগ্রাম
সংগ্রামী জীবন চিরকাল সংগ্রামে জানায় অভিনন্দন ।।
সংগ্রাম করো
করতে শেখাও সংগ্রাম
সংগ্রাম হোক জীবনাদর্শ
সংগ্রাম হোক জীবনের আর এক নাম ।।
তোমার নাম সংগ্রাম
আমার নাম লড়াই
লড়াই করেই এ জীবন টিকিয়ে রাখবো
লড়াইয়ে চিরদিন অম্লান থাকবো সবাই ।।
আমরা লড়াই করি জীবনের জন্যে
লড়াই আমাদের নাম
যেখানে অধিকার কেড়ে খায় স্বৈরশক্তি
সেখানেই আমরা হয়ে যাই জীবনের সংগ্রাম ।।
আমরা জীবন
আমরা মুখরিত দাবানল
আমরা পুড়িয়ে দিই যতো অনাচার
আমরা উন্মত্ত আমাদের হৃদয়ে সংগ্রামী মনোবল ।।
___________________________________
অনু কবিতা
ভালবাসা
অশোক কুমার রায়
ভাল থাকরে জুঁই--
জীবন ভরে তোকেই তো ছুঁই !
মিষ্টি
রাহাত জামিল
হটাৎ চেনা পথে,
শতাব্দীর গোধূলি লগ্নে
আবারও একবার...
যদি ফিরে আসো এ তটে,
যদি ফিরে তাকাও
আমারো আখিঁপাতে,
যদি মিশে যাও চেনা গন্ধে,
যদি হারিয়ে যাও চেনা ছন্দে,
যদি আবারো নিভৃতে নিশীতে
জাগো আমারি জন্যে।
তবে আবারও বরণ করে নেব
প্রিয় 'মিষ্টি' নামে।
সুবর্ণা
শঙ্কর ভট্টাচার্য
"আর একটা হোক দিদিভাই আর একটা"
সমবেত সোল্লাসধ্বনিকে নীরব করে দিয়ে সুবর্ণা বলে "না,আজ এই পর্যন্তই থাক।কালকে দুটো নজরুলগীতি শোনাব,প্রমিস।"
আবাসিকদের সকলে নিতান্ত অনাগ্রহের সাথে উঠে দাঁড়ায় ।
কথাটুকু বলে সুবর্ণা আর দাঁড়ায় না।নীচে নেমে নিজের ঘরে ঢুকে বন্ধ করে দেয় ।এখন ন'টা বাজতে পাঁচ,সাড়ে ন'টায় ডিনার।
বৃদ্ধ কিঙ্কর বাবু তখনও আবেশ মুক্ত হতে পারেন নি।তখনও মাথা নাড়ছেন আর গুন গুন করে গাইছেন- আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার,পরান সখা বন্ধু যে আমার।
কি অপূর্ব কথা আর তেমনই সুন্দর সুবর্ণা দেবীর গায়কী।
এক্স মিলিটারি ম্যান তীর্থবাবু,যিনি বউএর মৃত্যুর পর স্বেচ্ছা নির্বাসন নিয়েছেন এই বৃদ্ধাবাসে,তিনিই এখানকার ক্যাপ্টেন ।হাঁক পেড়ে ডাকেন "কালীপদ,এই কালীপদ আমাদের আসর শেষ।এই চা এর কাপ টাপগুলো সব নিয়ে যা।আর কিঙ্কর বাবু উঠে পড়ুন এবার।নিজের ঘরে যান।আপনার তো একগুচ্ছ ওষুধ খাবার আছে।খেয়ে টেয়ে নিন।একটু পরেই তো কালীপদ ভাত দেবে"।
এই 'ছায়ানীড়' বৃদ্ধাবাস যেন গত একবছরে অনেক বদলে গেছে। আগে প্রতিবেশীরা রসিকতা করে বলত 'ওটা তুলসীপাতার আশ্রম।সবাই নাকি ওখানে তুলসীপাতা চোখে দিয়েই আসে।শুধু ডাক আসার অপেক্ষা ।
এখন সারা দিনই ওখানে গান,আবৃত্তি ।গল্প বলা নিছক হাসি ঠাট্টা সবই হচ্ছে ।আবাসিকরা নিজেরাই বাজার করছে,দোকান করছে,বাগান করছে।সেই বাগানে কত রকম সবজী ,ফুল,ফল সবই হচ্ছে ।দিনে ও রাতে আলো জ্বলছে,হুল্লোড় হচ্ছে ।এখন আর কেউ সন্ধ্যা হতে না হতেই ঘরের আলো নিভিয়ে দরজা বন্ধ করে দিচ্ছেনা।সকলেরই যেন পুনর্জন্ম হয়েছে।
আর এই আনন্দনীড়ের যিনি কারিগর সুবর্ণা সে যেন কাউকেই গোমড়া মুখে থাকতে দেবেনা।প্রতিদিন আনন্দ করবার নতুন নতুন পরিকল্পনা ওর মাথায় ।অপূর্ব সুরেলা গলা।নিজের ঘরে বসে যখন একা একা গান করে তখন যদি কেউ ওর ঘরের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায়, সেও দাঁড়িয়ে পড়বে কয়েকটা মুহূর্তের জন্য ।
অনেক অল্প বয়সেই এই বৃদ্ধাবাসে এসেছে সুবর্ণা ।সেই অর্থে এখনও সে বৃদ্ধা নয়।মাত্র বাহান্ন ।আজ একবছর হল সে এই বৃদ্ধাবাসে আছে।স্বামী পথ দুঃঘটনায় মারা গেছে তার ছয়মাস আগে।তখন তার স্বামী মানে অর্ণব বাবুর বয়স ছিল ষাট বছর।এই ঘটনার পরেই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন গৃহত্যাগের, তবু সব শিঁকড় গুলো উপড়ে ফেলতে ছয়মাস লেগে গেল।ছেলে,ছেলের বউ,মেয়ে, জামাই, নাতি সবাইকে একসাথে ডেকে একদিন বলে "দ্যাখ বাপু আমি স্বেচ্ছায় নির্বাসন নিচ্ছি ।তোমাদের ভাল লাগবে কি না জানিনা তবে তোমাদের আচার আচরনের সাথে,জীবন যাত্রার সাথে আমার বড় একটা মেলেনা। আর এটাই স্বাভাবিক কারন তোমাদের সাথে আমার বয়সের দুরত্ব পঁচিশ থেকে তিরিশ বছর।আর এই সময়ের মধ্যে এই পৃথিবীটা অনেক পালটে গেছে।আর একটা অনুরোধ, আমার কোন খোঁজ তোমরা কেউ কোরনা এমনকি যদি মৃত্যু সংবাদ পাও তাও নয় কারন আমার দেহ দান করা আছে।ভাল থেকো,সুখে থেকো।তবে মরতে আমি চাইনা।আমি আমার মত করে বাঁচতে চাই।"
শুধু মেয়ে একবার প্রশ্ন করেছিল "কোথায় যাবে মা? কাশী না বৃন্দাবন?
মুখটা কুঁচকে উত্তর দিয়েছিল সুবর্ণা "ছ্যা ,তোমরা তো জান ওসব বুজরুকির বাতিক আমার নেই।আমি বৃদ্ধাবাসে যাব।টাকীতে।নাম 'ছায়ানীড়'।সব কথা হয়ে গেছে,সামনের শনিবার দুপুর বারোটায় ওদের গাড়ী আসবে আমাকে নিয়ে যেতে।
এই সব গল্প ও এখানে দু একজনের সাথেই করেছে।তবু সবাই বোঝে ওর কোথাও একটা যন্ত্রণা আছে।
ওর একটা অদ্ভুত বাতিক বাতিক আছে ।রাত্রি নটার আগে ও যেখানেই থাকুক ওর নিজের ঘরে ফিরে আসবেই।তারপর কারও সাথে ফোনে গল্প করে অনেকক্ষন।কি বলে আড়ি পেতে দু একজন শোনার চেষ্টা করেছে কিন্তু এত নীচুস্বরে বলে বুঝতে পারেনি।
রবিবার ওদের স্পেশাল মেনু হয়।এই রবিবার ঠিক হয়েছে ফ্রায়েড রাইস আর চিলি চিকেন।সুবর্ণা নিজেই রান্নার দায়িত্ব নিয়েছে।
অপুমাসি আবার বিধবা হবার পর থেকে আমিষ খাননা,তার জন্য পনির রান্না করতে হবে।
ওখানে আবাসিকদের মধ্যে সতেরজন পুরুষ আর তিনজন মহিলা, আর তিনজন স্টাফ।এছাড়া একজন আছে পার্মানেন্ট ইনভাইটি ,দাশুদা।ইছামতির নৌকার মাঝি।এখন যদিও আর
সওয়ারী হয়না।কখনও ইচ্ছা হলে নদীতে জাল ফেলে।মাছ ওঠে কি না ঠিক নেই।তবে উঠলে পরে চুপি চূপি রাঁধুনি বলাই এর কাছে পৌঁছে দেয় ।আর বাগান সামলানো ওর কাজ।গানের গলা অপূর্ব ।কোথা থেকে এমন গান ও শিখল ঈশ্বর জানেন-
ডুব ডুব ডুব ,ডুব দিল মন ডুব দিলরে
দুর যে দেখিস ঝাপসা
চলবি যে রে সাধ্যটা কই
হয়নি আকাশ ফরসা।
ওকে খুব ভালবাসে সুবর্ণা ।ওর আবেদন এই সাড়া দিয়ে দাশুর থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা সবাই করেছে এখানে।প্রথম প্রথম এসে সুবর্ণা দেখেছে কোলাপসিবল গেটটা বন্ধ হয়ে গেলে ওখানে রোয়াকেই শুয়ে পড়ত দাশু।ওদের নিজেদের মিটিং এ সুবর্ণা বলেছিল " মানুষটা শীত,গ্রীস্ম,বর্ষা ঐ খানেই শুয়ে থাকে।খাবার খায় কি খায়না কে জানে।ওকে কি আমরা রাতে দু মুঠো ভাত দিতে পারিনা?রাতে শোবার জন্য আমাদের এই বৈঠক খানাতেই অনেক জায়গা।ঐ সোফাটার এক কোনে মানুষটার ঠিক ব্যবস্থা হয়ে যাবে।"
সবার আগে তীর্থবাবুই হাত তুলে বলেছিল "অতি উত্তম প্রস্তাব ।আমি সম্পূর্ণ সহমত।একে একে সবাই সম্মতি দেবার পর দাশুর রাতের খাওয়া ও শোয়ার ব্যবস্থা এখানেই হয়ে যায় ।
"হ্যালো কে বলছেন?,হ্যালো বলুন না?কেন ফোন করে নীরব থাকেন ?কেন কোন কথা বলেন না? কিছুই কি বলবার নেই আপনার ?অনেক দিন তৌ হয়ে গেল তবু কেন মুখ খুলছেন না? আচ্ছা আমার যদি কিছু বলার থাকে তাও কি শুনবেন না আপনি?
এতখানি কথা একসাথে বলে একটু দম নেয় সুবর্ণা ।বাইরে কান খাড়া করে কিঙ্কর বাবু উদগ্রীব হয়ে আছেন যদি কিছু শোনা যায় ।দুপুরের খাবার হজম হয়নি বলে কার্তিক বাবু রাতের খাবারের আগে পায়চারি করছেন আর মাঝে মাঝে হাত নেড়ে কিঙ্কর বাবুকে চলে যেতে ইশারা করছেন।
আবার কথা বলে সুবর্ণা "এমন পাগল দেখিনি বাপু,নিজের পয়সা খরচা করে কানে লাগিয়ে আর মুখে কাপড় খুঁজে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করছে।
এমন সময় হাঁক পাড়ে কালীপদ "চলেন গো দাদামনিরা,দিদিমনিরা খেতি চলেন।রান্না তো কখন হোয়েই গেছে।এবারে আসেন খাবার ঘরে আসেন।"নিমেষে সকলের দরজা খোলার শব্দ হয়।
" দেখুন আমাদের খাবার সময় হয়ে গেছে
হাঁক ডাকও শুরূ হয়ে গেছে।আজকেও কোন কথা বলবেন না আপনি তাইতো? আশ্চর্য বড্ড জেদী মানুষ তো আপনি,কথা বলবেন না বলবেনই না।জান বলতে হবেনা আপনাকে। আমি এখন খেতে চললাম ।"
অপর প্রান্ত থেকে ফোনের লাইনটা কেটে যায় ।মোবাইলে র দিকে তাকিয়ে সুবর্ণা ভাবে অপর প্রান্তের লোকটাকে ভাললোক ভেবে এত কথা বলছে ও।লোকটা সত্যি ই ভালত।আর তা না হলেও পরোয়া করেনা সুবর্ণা ।জীবনের এই সায়াহ্নে এসে অচেনা,অজানা একটা লোক রোজ রাত নটার সময় ফোন করে কানে ফোন লাগিয়ে নীরব থাকবে,তাকেও ভয় পেতে হবে নাকি।মরুকগে যাক।আবার পরক্ষণেই ভাবে,আজকাল যা দিনকাল পড়েছে কার কি বদ মতলব আছে কে জানে।ও মনে ভনে চিন্তা করতে থাকে এতদিন ফোনে ঐ অনাহূত মানুষটিকে বলেছে তাতে বেফাঁস কিছু বলেছে কিনা।মনে করতে পারেনা।ইতিমধ্যে কালীপদ আবার দরজায় টোকা দেয় "দিদিমনি সব্বাই তো না খেয়ি চুপ করে বসি আছে আপনার জন্যি।"
লজ্জা পেয়ে যায় সুবর্ণা ।দরজা খুলে তাড়াতাড়ি বাইরে বেরিয়ে দ্যাখে কাঁচুমাচু মুখ করে বেচারা কালীপদ দাঁড়িয়ে আছে।বলে "হ্যাঁ হ্যাঁ চলো।"
খাবার ঘরে ঢকতেই তীর্থবাবু বলেন "বুঝলেন ম্যাডাম ইছামতী তে যা ইলিশ উঠছে না একঘর।দেখে চোখ জুড়িয়ে যায় রূপালী রাণী"।
থামিয়ে দিয়ে সুবর্ণা বলে "মানে কি বলতে চান খুলে বলুন তো।"
তীর্থবাবু এবার মুখ কাচুমাচু করৈ বলে "না মানে আপনি অনুমতি করলে কালকে আনতে পারি।"
সুবর্ণা কপট বিস্ময় দেখিয়ে বলে " কেন আমার অনুমতি কেন? সবাই চায় তো আনতেই পারেন।ঠাকুরকে যা বলবেন ও রান্না করে দেবে।"
এবার একটু ঢোক গিলে তীর্থ বলে "না ওখানেই তো গোল বেঁধেছে।সকলেরই ইচ্ছা রান্নাটা রাতে আপনি করুন।ইলিশ ভাপে আর ভাত।সিমপিল মেনু।"
সকলেই কিছু বলতে যায়, থামিয়ে দিয়ে সুবর্ণা বলে "আচ্ছা অনেক হয়েছে রান্না আমিই করব।"
পরের দিন সকাল থেকেই বাজার করবার তৎপরতা।বিকেলের মধ্যে দাশুদার নজরদারিতে হোমে হাজির হল কেজি খানেক টাটকা ইলিশ মাছ।
এরমধ্যে আবার অম্বলের রুগী সাধনা মাসীমার সকাল থেকেই পেটটা ভাল নেই।গন্ধ ওয়ালা ঢেকুর উঠছে। হোমের স্বঘোষিত ডাক্তার নারানদা তাকে ঘনঘন ওষুধ দিচ্ছে আর দশ মিনিট অন্তর তার সুস্হতার খবর নিচ্ছে।দুপুরের আগেই মাসি সুস্থ হয়ে বললেন "এখন আমি পুরো ফিট।"
পাশ থেকে তীর্থবাবু বলে "ইলিশের নাম শুনে।"
সন্ধ্যা হতেই সুবর্ণা রান্নাঘরে ঢুকেছে ।কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে রাখার পরামর্শ দিয়েছে ঠাকুরকে।বলেছে "এগুলো করে রাখ আমি সাড়ে আটটার মধ্যে রান্নাঘরে ঢুকব,আর সাড়ে নটার আগেই নামিয়ে দেব সবাই কে খাবার দিয়ে দেবে।"
নিজের ঘরে ঢুকে দু চারটে সেলাই এর কাজ করতে করতে চোখ যায় মোবাইলের দিকে।ন'টায় ফোন আসবে তখন ও ব্যস্ত থাকবে রান্নাঘরে ।ফোনটা হাতে নিয়ে কিছু একটা ভাবে তারপর ঐ নাম্বার টায় ডায়াল করে।
ও প্রান্ত থেকে কল রিসিভের শব্দ পায় কিন্তু কোন কথা নেই। নিজেই বলে "দেখুন আজ ন'টাতে আমি আমি আপনার ফোন রিসিভ করতে পারব না।একটু ব্যস্ত থাকব। আমি আপনাকে ঠিক দশটাতে ফোন করব।জেগে থাকবেন কিন্তু ।"বলেই লাইনটা কেটে দেয় ।
ঠিক সাড়ে আটটায় রান্নাঘরে ঢুকে সোয়া নটার মধ্যে রান্নাশেষ।কালীপদকে বলে "সবাই কে খেতে ডাক।"
কাউকেই ডাকতে হয়না।সবাই ধারে কাছে ছিল হুল্লোড় করে সবাই রান্নাঘরে ঢুকে পড়ল।সুবর্ণা সবাইকে বলে "আপনারা খাওয়া শুরু করুন আমি একটু ঘর থেকে চোখে মুখে জল দিয়ে আসছি।"
ঘরে ঢুকেই সুবর্ণার চোখ যায় মোবাইলের দিকে।একবার লোভ হয় ফোন করবার ,নিজেকে সংযত করে।চোখে,মুখে,ঘাড়ে জল দিয়ে খাবার ঘরে যায় ।ঘরে ঢুকতেই তীর্থবাবুর গলা "কালীপদ, আর এক হাড়ি ভাত বসা।"
নিজের খাওয়া সেরে ঘরে ফেরে সুবর্ণা ।বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে নাম্বারটা ডায়াল করে।ও প্রান্ত থেকে উত্তর আসে "নিজের জরুরি কাজটা সারা হল?"
অবাক হয় সুবর্ণা ।"হ্যাঁ হল।এওদিন পর তবু কথা বলা গেল।পরিচয় টা দেবেন কি?"
ও প্রান্তের উত্তর "থাকনা,এই তো ভাল ।বিনা পরিচয়েই বাক্যালাপ ।"
সুবর্ণা একটু শ্লাঘা দেখিয়ে বলে "না ভালনা।মোটেই ভালনা।আমি একজন মহিলা আর তারপর এই বৃদ্ধাবাসই আমার আশ্রয়স্হল।"
পুরুষ কন্ঠ বলে "যদি আপত্তি করেন আর কোনদিনই ফোন করব না।"
তড়িৎাহতের মতন সুবর্ণা বলে "না না আমি মোটেই তা বলিনি।"
পুরুষ কন্ঠ একটু হেসে বলে " আসলে নিজের নিঃসঙ্গতা কাটাতে ফোন করি।কথা বলি সাহস হয়না।"
সুবর্ণার পাল্টা প্রশ্ন "কেন আপনার পরিবার নেই?"
" হ্যাঁ সবাই আছে,সবই আছে তবু আমি বড় একা,কারন তাদের কক্ষপথ আলাদা।আমার সাথে যার কোন মিল নেই।" পুরুষ কন্ঠ বলে।
সুবর্ণার প্রশ্ন "আপনি আমার মোবাইল নং পেলেন কোথা থেকে?"
পুরুষ কন্ঠের উত্তর "থাকনা রহস্য টা চিরকালই অন্তরালে। তবে আপনার স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে আপনার গৃহত্যাগ সব খবরই আমি রাখি।যাক অনেক রাত হল এবার ছাড়ি। যদি কখনও সত্যিই কোন প্রয়োজন হ্য় জানবেন একজন কেউ আপনার বন্ধু আছে।"
সুবর্ণার কাতর আবেদন " না ছাড়বেন না।দয়া করে ছাড়বেন না।"
ও প্রান্তের ফোনটা তখন সংযোগ কেটে দিয়েছে।
সুবর্ণা ভাবে আবার ফোন করবে।নিজেকে সামলে নেয় ।বিছানায় দেহটা এলিয়ে দেয় ।
বাইরে রাত পাহারাদারের বাঁশীর আওয়াজ শোনা যায় ।
Copyright reserved
গল্প
হাসিরাশি
অগ্নিমিত্র
একদিন অফিসে ডাব্বায় টিফিন খেতে গিয়ে অবাক হলাম। ..সব্বাই অবাক হল, কারণ সবাই একই জায়গা থেকে দুপুরের খাবারটা আনায়।
মুলোর ছেঁচকি ও কাঁচকলার পরোটা দিয়েছে, সঙ্গে বরবটির রোস্ট! ..সহকর্মী সুব্বারাও বলল, টিফিনওলা একটু আনকোরা । মুম্বাইয়া ভাষায় এদের ' নিব্বা' বলে। ও কাঁচা বয়সে নাকি প্রেমে দাগা খেয়েছে সম্প্রতি! ..তাই এমন খাওয়া দাওয়া । আগে প্রথম প্রথম তো জব্বর রান্না করতো, এখন খুব বাজে অবস্থা । সিং সাহেব তো খেয়ে মাতৃভাষায় ' রব্বা' বলে ভগবানকেই ডেকে ফেললেন!
এদিকে শিব্বা বলে আমার আরেক সহকর্মী বন্ধু একমনে ওই খাবারই খেয়ে চলেছে, যেন হুঁশ নেই। ..বলল যে মুঠোফোনেতে খেলা দেখছে ; ' গাব্বা' বলে একটা মাঠে খেলা হচ্ছে । খেলা নিয়ে মগ্ন, এই খাওয়াতেও আপত্তি নেই ।
তার পরে এখন এমন দিন এল! আর বাইরে খাওয়া দাওয়া করা বা খাবার আনানো ভুলেই গিয়েছি । তালাবন্ধ অবস্থায় কী যে করি ! এক ভয়ানক বিষাণু গব্বর সিংয়ের মতো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে! সবাই নাজেহাল ।..
একটু তাই পুরনো দিনের কথা মনে করি । মনের দাগধাব্বা ধুয়ে যায় ।..আর তাতেই একটু মুখে হাসি ফোটে !!
কবিতা
মেঠোপথের টানে
মিনতি গোস্বামী
নীলিমায় ভেসে যায় চোখের কাজল
নগ্নদেহ ঢেকে রাখে গাছের বাকল।
হয়ে গেছি আমি আজ মেঠোপথ সাধা
মানবোনা কোনদিন আর কোন বাধা।
কুঁড়েঘরে দূরে দূরে জ্বলছে পিদিম
আষাঢ়ের ধারাপাত রিম ঝিম ঝিম।
দূর গাঁয়ে চলে যাবো আলপথ ধরে
নদী হয়ে বয়ে যাবো সাগরের ঘরে।
পাথরের শ্যাওলায় খুঁজে নেব গান
শিশিরের ঘাসে ঘাসে খুঁজে নেব মান ।
ইমারত খেলাঘর কেড়ে নিল সুখ
দুমড়িয়ে মুচড়িয়ে রেখে গেছে বুক।
কুঁড়েঘর মাধুকরী পিদিমের আলো
রাখালের বাঁশি শুনে মন হবে ভালো।
পাথরে হৃদয়
জুয়েল রূহানী
হৃদয় গড়ো না পাথরের ন্যায়
ভেঙ্গে হবে চুরমার,
কোমল হৃদয় গড়ো যদি ভাই
করবে না হাহাকার।
পাথরের'পরে করলে আঘাত
ভেঙ্গে যায় গড়ে না,
কোমল হৃদয়ে হানলে অাঘাত
পায় শুধু বেদনা!
নিথর দেহে পাথরেরও ন্যায়-
পরে থাকা অন্যায়,
গড়ে যদি কেউ কোমল হৃদয়-
সুখে রবে নিশ্চয়।
🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳
© Sk Asad Ahamed
Editor, Upokontha
0 comments: