"উপকণ্ঠ 21 জুলাই সংখ্যা "
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-21/07/2020, মঙ্গলবার
সময় :- সন্ধ্যা 7 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
চলচ্চিত্র
রঞ্জনা রায়
কাশফুল বুকে সোনালী রোদ শুয়ে আছে
এভাবেই একটা কাহিনী শুরু হয়
একটা চলচ্চিত্র -
নগ্নতা পাপড়ি মেলে অনায়াসে
শূন্যতার ফ্রিজ শটে রূপকল্পের মেঘলা মায়া
সূর্য ধোয়া উষ্ণতায় হৃদয়ের গহন অরণ্যে
শ্রাবণ বেজে ওঠে
প্রেম ঝরে অবগাহনের সঙ্গম শিখরে
নিজেকে পূর্ণ করে তন্বী শিলাবতী
ধারাবাহিক প্রবন্ধ
প্রাথমিকে ব্যাকরণে লিঙ্গ অধ্যায়
বাদ দেওয়া উচিত ?
(অন্তিম পর্ব)
রাজা দেবরায় (আগরতলা, ত্রিপুরা)
এখন আরেকটা প্রশ্ন হলো শিশু কাদের বলবো ?
শিশুর প্রকৃত সংজ্ঞা পাওয়া মুশকিল । কখনো ১৮ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । কখনো ৭ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । আবার কখনো ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছরের নীচে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । আবার কখনো ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছরের নীচে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে ।
ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নং ধারা অনুযায়ী ১৪ বছরের নীচে সকলকে শিশু বলে । শিক্ষার অধিকারের ক্ষেত্রেও এটাই । তাই আমরা এক্ষেত্রে ১৪ বছরের নীচে সকলকে শিশু হিসেবে ধরবো ।
এখন ব্যাকরণে শিশু ধরছি উভলিঙ্গ বা উভয়লিঙ্গ । কিন্তু বিদ্যালয়ে (১৪ বছরের নীচে) শিশু মূলত পড়ছে বা পড়ানো হচ্ছে 'পুংলিঙ্গ' এবং 'স্ত্রীলিঙ্গ' ! উভলিঙ্গ বা উভয়লিঙ্গ এবং ক্লীবলিঙ্গ খুব একটা পড়ানো হয় না । আবার বিদ্যালয়ের পোশাকের মাধ্যমেও আমরা (১৪ বছরের নীচে) শিশুকে 'পুংলিঙ্গ' এবং 'স্ত্রীলিঙ্গ' বুঝিয়ে দিচ্ছি, যেখানে ব্যাকরণে শিশু উভলিঙ্গ অথবা উভয়লিঙ্গ পড়ানো হচ্ছে ! তাহলে ১৪ বছর বয়স হবার পরেই পুংলিঙ্গ এবং স্ত্রীলিঙ্গ পড়ানো উচিত নয় কি ?
পঞ্চাননের মাঠ
(ছোট গল্প)
আব্দুল রাহাজ
ভ্যাপসা গরম বাতাস নেই বললেই চলে গ্রামের মানুষ সব যেন হাঁসফাঁস করছে গ্রামের পুকুর গুলোতে ছেলে মেয়েরা মজা করে স্নান করছে নরেনের ছেলে গোপালকে সারাদিন আর গ্রামে খুঁজে পায়না গোপাল গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে তার কথা হয় না একাকী থাকতে খুব ভালোবাসে নরেন ছেলেকে নিয়ে সেজন্য বেশ চিন্তায়। গ্রামের পাঠশালায় এখন গোপাল পড়ে পড়াশুনায় বেশ ভালো গোপালের বয়স দশ চুল গুলো খাড়া খাড়া ছিপছিপে শরীর গায়ের রং বেশ কালো গোপাল প্রতিদিন কোথায় যায় সেদিকে গ্রামের ছেলেদের একটু নজর পরলো। সেদিন রবিবার ছিল সকালবেলা গোপালের বাড়িতে এলো রহিম করিম আর তাতাই রা ওদের দেখে নরেনের বাবা-মা খুব খুশি হলো কিরে তোদের আজকে গোপালের সাথে কি দরকার একসাথে সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ কাকু গোপাল কি বাড়িতে আছে আছে আছে ভিতরে যাও দরজায় একটু টোকা মারতেই গোপাল বলল কেরে রহিম করিম তাতাইরা বললো আমরা গোপাল তোর কি খবর ভালোই চলছে গোপাল জিজ্ঞেস করল তোরা কেমন আছিস ওরা বলল বেশ ভাল আছি। শেষমেষ তোরা আমার বন্ধু হলি গোপাল ছেলেটা একটু লাজুক প্রকৃতির ও কারোর সাথে কথা বলতো না একা একা থাকতে এমনকি একা একা পঞ্চাননের মাঠে যেত সেখানে সবাই জানতো রাতে দিনে কারা যেন থাকে ওরা আসার কারণে গোপাল বেশ খুশি হলো ওরা দেখল গোপাল ইতিহাস পড়া করছে তখন ঘড়িতে দশটা বাজে এতক্ষণ বই পড়িস আরে হ্যাঁ কি করবো বসে থেকে এরপর এগারোটায় খেয়ে পঞ্চাননের মাঠে যাব সেখানে কত খেলা সেই বিকালে বাড়িতে আসবো তোরা কি যাবি রহিম করিম তাতাই ওরা বলল চল যাই তাহলে দাঁড়া কিছু খেয়ে নেই গোপালের মা ওদের নাড়ু খেতে দিলেন তারপর এগারোটার সময় ওরা বেরিয়ে পড়ল ওদের একসাথে দেখে নরেনের বাবা মা খুব খুশি হলো। গ্রামের বড় মোড়লের পুকুরের ধার দিয়ে পুরো মুখার্জীবাবুর আমবাগান পার হয়ে পঞ্চানন এর মাঠে পৌঁছলো সূর্য তখন মধ্যগগনে এসে আলোর স্ফূলিঙ্গ বৈচিত্র্য ছড়াতে থাকে চারিদিকে ফুরফুরে বাতাস বইছিল পঞ্চাননের মাঠে এসে রহিম-করিমদের ও তাতাইদের ওর বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল পঞ্চানন মাটির বৈশিষ্ট্য ছিল নানা ধরনের পাখির বাসা সেখানে ওদের খেলাধুলা সবই চলে নীল দিগন্তের আকাশ ফুরফুরে বাতাস ছিল গোপাল এসব দেখতে দেখতে বিকাল হয়ে যেত রহিম করিম তাতাইরা আসার ফলে ওদের সঙ্গে বেশ মজা হয়েছিল এদিকে রহিম বললো স্কুলের শেষ দিন তারপর আমরা কে কোথায় ওদিকে গোপালা তাতাই কালো জাম নিয়ে এলো পাশের বাগান থেকে তখন প্রায় পড়ন্ত বিকেল ওরা জাম খেয়ে এবার বাড়ির পথে রওনা দিল ওরা তখন সবাই গল্পে ব্যস্ত এরমধ্যে রহিম বলে উঠল কাল আমাদের শেষ পাঠশালা এরপর কে কোথায় গোপাল বললো তাই তাহলে পঞ্চাননের মাঠ কি হবে সে তো একা হয়ে যাবে করিম বললো না না হবে না দেখ তোর কথাগুলো পঞ্চাননের মাঠ খুব ভালো মনে রাখবে।তারপর পরের দিন কাক ভোরে উঠে এক ছুট দিয়ে পৌঁছানোর মাঠে গিয়ে উপস্থিত হল আপন মনে বলতে লাগলো আজ আমি চলে যাব হে পাখি গন হে পঞ্চানন মাঠ তোমরা কি কিছু বলবে প্রকৃতির কি লীলাখেলা তারা বলতে লাগল যাও গোপাল তুমি যাও বড় হও ওখান থেকে একছুট দিয়ে বাড়িতে এসে কিছু খেয়ে স্নান করে স্কুলের পথে রওনা দিল একটু দেরি হয়েছে স্কুলের এক ঘরে বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া শুরু হয়েছে এদিকে গোপালের নাম প্রথম ডাকা হয় কিন্তু সে আসেনি এদিকে ইতিহাসের স্যার বলল স্যার আসছে ও দৌড়ে রেজাল্ট ও পাশ করার দরুন কিছু অর্থ দিলো স্কুল থেকে রহিম করিম তাতাইএরাও ভালোভাবে পাস করে কিছু অর্থ পেয়েছে গ্রামের মানুষ সেদিন খুব খুশি। সন্ধ্যাবেলা গ্রামের মোড়ল হারাধন মশাই রহিম করিম ও তাতাই গোপালকে ডাক পড়লো সঙ্গে তার বাবারাও এলেন প্রথমে মিষ্টিমুখ হল তারপর মোড়ল জানায় এরা শহরে পড়াশোনা করবে ওখানে আমার আদি বাড়িতে থাকবে আমি চলে যাব ওখানে ওদের পড়াশুনা করাব ভালো স্কুলে ভর্তি করাবো কি মত তোমাদের ওরা বলল বেশ ভালো তাহলে কাকভোরে চলে আসবে আমাদের বাড়িতে একসাথে যাওয়া হবে সেই কথা মত ওরা বাড়ি আসার পথে আর সেই সময় মোড়ল বলল গোপালের পঞ্চাননের মাঠ তার বাবার দায়িত্ব দেওয়া হল তিনি সংরক্ষণ করে রাখবেন ভবিষ্যতের পঞ্চাননের মাঠ কি বলো সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ হ্যাঁ। তারপরের দিন কাকভোরে পঞ্চাননের মাঠ গোপালের কাছেও তার মনের মাঝে স্মৃতি বিচারক হিসেবে হয়ে থাকবে। প্রকৃতির মায়ের কোলে পঞ্চানন মাঠ গোপালের আশায় থাকবে এটাই জানান দেয় গোপালের কাছে সেটাই আশা-ভরসা হয়েছিল। এইভাবে পঞ্চাননের মাঠ ওগোপালের বন্ধন অটুট ছিলো আজীবন।
অন্তহীন প্রতিক্ষা
রাহাত জামিল
আমি আপাদমস্তক ডুবে আছি তোমাতে।
যদিও দীর্ঘ নীরাবতায়,
তোমার পদধূলির বিচরণ নেই আজ এখানে।
তোমার উদাসীন দীর্ঘশ্বাসে,
তুমি কি অন্য কিছু ভাবছো?
নাকি প্রচন্ড এড়িয়ে চলার নিত্য অভ্যাসে,
অসময়ে লুকোচুরি খেলছো।
নাকি, কোন এক অপরাহ্ন বেলায়--
সিন্ধুবক্ষ হতে;
সমুদ্রতটে বারংবার ফিরে আসা,
দুরন্ত উচ্ছ্বাসিত ঢেওয়ের মতো;
আঘাত হানবে আমার গৃহের দরজায়।
নাকি এসব আমার ভাবনার বাড়-বাড়ন্ত!
তবুও,
চৈত্রের দমফাটা ঝাঁঝালো রোদে,
একফোটা শীতল সলিলের অপেক্ষায়...
নিদারুণ তৃষ্ণার্ত পথিকের মতো,
অন্তহীন পথ চেয়ে থাকবো তোমার প্রতীক্ষায়।
কবিতা
সরীসৃপ
কৌস্তভ ঘোষ
যাচ্ছিলাম সেদিন ফুটপাত ধরে
খেয়ালে ছিল না মন,
কখন যে ঠনঠনিয়া পেড়িয়ে গিয়েছি
বুঝিনি,কেবল কানে
আসছিল ট্রামের গর্জন।
দৃষ্টি গেল নীচের দিকে
পরনে নেই কাপড়!
শৈশবের শরীর শৈবাল ময়
ধুঁকছে ঠিক যেন কামার শালার হাপড়।
কে ওরা পরে আছে ফুটপাতে
হেঁচড়ে চলছে বুকে,
'অমৃতের পুত্র মানুষ'?
একটু দেখতে হল ঝুঁকে;
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছি, মানুষই বটে
তবে এ দশা কেন?
অনিশ্চয়তায় দিন কাটানো
আকাশ থেকে পড়লাম যেন!
কয়েকটি কথা মাথায় এল করছি তারই প্রকাশ-
প্রযুক্তি, ডিজিটাল ভারত
ঘটেছে দেশের বিকাশ।
তবুও কেন এরা আজও
ফুটপাতে শুয়ে কাটিয়ে চলছে শৈশব,
বিশ্ব সভায় স্বার্থক হবে কি আধুনিক ভারতের বৈভব।।
অংক
বাপন দেব লাড়ু
তুমি কি ভালোবেসে ছিলে
পাতা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা
যত সরল-তির্যক রেখা আর পিথাগোরাস?
ভেবে দেখেছিলে কি, মানবিকতার কৌনিক সম্পর্ক?
পেন্সিল কম্পাসে এঁকেছিলে কখনও আত্মীয়তার সম্পাদ্য?
মিলিয়েও দেখো নি চাহিদার উপপাদ্য!
তবুও 'ইনফিনিটি' ছুঁয়ে যায় জন্মান্তরবাদ ;
জীবন গোনে ধারাপাত ;
উত্তর মেলাতে পারিনা কোনো কিছুর মৃত্যুর এককে,
বুঝতে পারিনা
ভীষণ কঠিন এই অংকের সিলেবাস...
জ্ঞানামৃৃৃৃত
সমিত বিশ্বাস
অনন্তকাল জ্ঞান সমুদ্রের জলে
কাটিব সাঁতার জ্ঞান লভিনুর ছলে ৷
ঢেউ এর তালে তালে
জ্ঞান বালুকণা তুলে ৷
শিখিবো আমি ,মানুষ কাকে বলে ?
শিখিবো আমি,মানুষ হবো কোন পথে গেলে ৷
রাখিয়া সৎ দৃৃৃৃষ্টি ,না রাখিয়া লোভ
তবুও কেন মানুষের এর আমার প্রতি ক্ষোভ৷
এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজিবো আমি
তাই জ্ঞান সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছি আমি ৷
করিবো না মরণ ভয়
করিবো আমি জ্ঞান কে জয় ৷
তার ফলে করিবো জ্ঞান পারাবার
জ্ঞানামৃৃৃৃত আমি করিবো আহার ৷
অনুকবিতাগুচ্ছ
শংকর হালদার
অনুকবিতা-০১
স্মৃতির কোনো রং নেই
আগলে রাখার চেয়ে সুপ্ত চেতনাকে
বিকশিত করাই শ্রেয়
কিংবা স্মৃতি হয়ে রেখা টানো
তার-ই পাতায় ।
অনুকবিতা-০২।
মন পাখি এক যাযাবর
আলোক তরঙ্গে তার উৎফুল্ল হাসি
এবং তিমির খাতে সে ফকির।
অনুকবিতা-০৩
তোমার পুনর্জন্মের কথা ভেবে
আমারও জন্ম নিতে ইচ্ছে করে ,
তোমার সাথে একই বাসর রাতে
অস্তিত্ব অক্ষুন্ন রেখে ।
অনুকবিতা-০৪
অন্তর উপলব্ধির আয়না
পদার্থ বা বস্তুর মাপকাঠিতে
বোঝা যায় না ।
অনুকবিতা-০৫
ছন্দে ভরা গদ্যময় জীবন
পদ্য হয়ে ঝোরে পড়ে আজীবন ।
" মন "
হামিদুল ইসলাম
জলে জলে একাকার
একাকার মন
বাইরে একটানা বৃষ্টি এখন
ভেতরে মন উচাটন ।
কী করে শান্ত করি
এই মন
মনের মাঝে পাশা খেলে আর এক মন
কোথায় সে থাকে পাই না যে এখন ।
মন এখন হৃদয়পুর
মনকে রাখতে পারি না ধরে
খাঁচায় আটকে থাকা পাখি
পিঞ্জর ভাঙে বারেবার ।
পিঞ্জরে আটকানো যায় না মন
মনের মাঝে খরা
সে মন থাকে আকাশের উপর
এ মনকে যায় না ধরা ।
তবু ধরে আনি অশান্ত মন
বালিশের তলায়
কাছে আসে প্রিয়তমা
অশান্ত মন শান্ত করে তার বুকের জ্বালা।
কবিতা
এক পৃথিবী পর্যটন
মৌসুমী গুহ রায়
আজ দুপুরে আকাশ দেখলাম।
নীল, সাদা তুলো মেঘ ভেসে আছে।
শরতের আকাশের মতো, পুজো পুজো গন্ধ।
অনুভব করলাম পুরানো দিন গুলোকে।
দেওয়ালে একটা ছবি। আমার ও আমার স্বামীর।
সোনার বাংলা হোটেলে তোলা। সেদিন ডিনার পার্টি ছিল।
তারপর কেটে গেছে আঠারোটা বছর। জলের মতো।
আজ সেসব দিন বড় প্রিয়। মায়াময়।
এখন রাত্রি সাড়ে আটটা। স্ট্রিট লাইট গুলো জ্বলছে।
গাড়ীর হেড লাইটের আলো রাস্তায়। উজ্জ্বল।
অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা এক পৃথিবী পর্যটন।
আলো থেকে অন্ধকারে, মহাকাশ ভ্রমন।
কবিতা :
সময়ের কথা!
বিশ্বজিৎ কর
যদি সময় হয়,
খবর দিও সময় করে-
আমি ঠিক সময়মতো যাব,তোমার কাছে!
তোমার সময় অক্ষত থাকুক-
আপন সুখে,আপন স্বস্তিতে,নতুন বন্ধুত্বে!
আমি নীরবতার ছবি আঁকব,
তোমার অবজ্ঞার ক্যানভাসে!
সময় যদি হয়,ডাকবে আমায়,
কথা দিলাম,সাড়া দেবই!
তোমার সময় হবে তো?
দেখা যাক,সময় কি বলে!
বিভাগ -কবিতা
কবি মানে মিথ্যাবাদী
আব্দুল রহিম
এসো এসো এগিয়ে এসো যুদ্ধ থামাই
লিখি নতুন ইতিহাস পাতায় পাতায়
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোন জাতি ধর্মের বড়াই
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোন রক্তের যুদ্ধ লড়াই
যে ইতিহাসে বলবে শুধু মনুষ্যত্ব ধর্মের কথা
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোনো নগ্ন নৃত্যতা
কিন্তু কবির সব ভাবনাতো মিথ্যা আর মিথ্যা
কেননা কবিরা সবাই মিথ্যাবাদী ।।
কিন্তু কেন!কেউ কি জানো ?
যেখানে তাজা রক্ত
সেখানে কবির কলম
যেখানে নগ্ন মৃতলাশ
সেখানে কবির কলম
যেখানে জাতির পতাকার অস্তাচলগামী
সেখানে কবির কলম
যেখানে নারীর ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি
সেখানে কবির কলম
যেখানে শ্মশানের পড়ে থাকা কালো ছাই
সেখানে কবির কলম ।।
তাই সমস্ত কবি মানে মিথ্যাবাদী
তবে কি জগৎ সত্যবাদী
তবে কেন আজ
যারা দিন আনে দিন খাই
তাদের হাঁড়িতে চোখের জল ফোটে
তবে কেন আজ
তোমার মা বোনের ইজ্জত বাজারে নিলামে উঠে..
মানুষ আজও কেন কামড় দেয় শিশু নারীর ঠোঁটে
তবে কেন আজ
জাতির পতাকা রক্তে ভাসে
মানুষের হাতে গড়া সভ্য এ দেশে ।।
হ্যাঁ কবিরাতো সব মিথ্যাবাদী
কেননা তার মিথ্যা স্বপ্ন দেখে দু চোখে
কলমের কালি নিংড়ে দেয় সমাজের বুকে
আজ মিথ্যারা ফুল হয়ে ফোটে
সত্যরা কাঠগড়ায় মাথা ঠোকে
তবু বলি এসো এসো এগিয়ে এসো যুদ্ধ থামাই
লিখি দিই নতুন ইতিহাস বইয়ের পাতায় পাতায়।।
অনু কবিতা
বিস্তর ব্যবধান
সোহিনী মুখার্জী
যদি কখনো হারিয়ে যাই হঠাৎ সন্ধেবেলায়!
ভালোবাসার নামটি ধরে ডেকো অবহেলায়,
হারিয়ে যাওয়া কথার ভিতর আবছা মানে দাঁড়াক
তুমি আমি পাশাপাশি তবু মাঝে বিস্তর এক ফারাক।।
কবিতা প্রতিঘাত
ডঃ রমলা মুখার্জী
শুধুই কেবল আঘাত নামে
তোমায় ভালবেসে
শ্রাবণ ধারার সাথে আমার
অশ্রু-ধারাও মেশে।
অশুভ খরা কাল বোশেখে
পেয়েছিলাম দেখা-
ছলনায় ভুলিয়ে আমায়
সীমন্তে আঁকলে রেখা।
জৈষ্ঠ্য দুপুরে হৃদয় নূপুরে
বেজেছিল রিনিঝিনি....
ভেবেছিলাম তোমাকে যেন
জনমে জনমে চিনি।
আষাঢ়ে হলাম আশা-হত
পেলাম গভীর শোক....
আমার ঘরে দিলে ভরে
নিত্য নতুন লোক।
বৃষ্টি ঝরুক বাজ পড়ুক
লুকিয়ে যাব থানায়
তোমার মত কাপুরুষকে
জেলখানাতেই মানায়।
কবিতা
বন্ধু
মিনতি গোস্বামী
বন্ধু বলে হয় পরিচয় বৃক্ষতলে
সযতনে হাতে হাত নিয়েছিলে তুলে
চোখের পরে চোখ রেখে পাই ভরসা
বন্ধু হলেই পূরণ হয় জানি আশা
দুঃখটুকু নিঙরে নিয়ে চুপিসারে
সুখের ভেলা ভাসিয়ে দি সাগরপাড়ে
ভাসো বন্ধু ইচ্ছেমত সুখের সাগরে
আমি না হয় দাঁড়িয়ে থাকি জীর্ণতীরে
ইচ্ছে হলে ঘুরেই এসো অচিনপুরে
ভেবো শুধু বন্ধু আছে অপেক্ষায় দূরে
ফিরে যদি আসো আবার এই উঠোনে
দেখবে আমি ঠিক আছি শরীরে, মনে
হাত ধরে বন্ধুর পথ হবোই পার
খোলা থাকে যদি হৃদয়পুরের দ্বার।
*মানুষ*
উমর ফারুক
মানুষ বড়ই বিচিত্র।
দেখছি রুপ সচিত্র
পাড়াময় ।
রক্তস্নাত হাজারটা।
দিবানিশি করে খুনটা
তারা নির্দয়।
রক্তদানে নিষ্ক্রিয়
রক্ত পানে স্বক্রিয়
ডাকে বিপর্যোয়।
কালের খেয়া বায়
ভুলের খেয়া খায়
তবু নির্ভয়।
করেনা প্রতিরোধ
করে সে কন্ঠরোধ
ভাবে দূর্জয়।
😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁
© সেক আসাদ আহমেদ
সম্পাদক উপকণ্ঠ
গাংপুরা সাগরেশ্বর রামনগর পূর্ব মেদিনীপুর
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-21/07/2020, মঙ্গলবার
সময় :- সন্ধ্যা 7 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
চলচ্চিত্র
রঞ্জনা রায়
কাশফুল বুকে সোনালী রোদ শুয়ে আছে
এভাবেই একটা কাহিনী শুরু হয়
একটা চলচ্চিত্র -
নগ্নতা পাপড়ি মেলে অনায়াসে
শূন্যতার ফ্রিজ শটে রূপকল্পের মেঘলা মায়া
সূর্য ধোয়া উষ্ণতায় হৃদয়ের গহন অরণ্যে
শ্রাবণ বেজে ওঠে
প্রেম ঝরে অবগাহনের সঙ্গম শিখরে
নিজেকে পূর্ণ করে তন্বী শিলাবতী
ধারাবাহিক প্রবন্ধ
প্রাথমিকে ব্যাকরণে লিঙ্গ অধ্যায়
বাদ দেওয়া উচিত ?
(অন্তিম পর্ব)
রাজা দেবরায় (আগরতলা, ত্রিপুরা)
এখন আরেকটা প্রশ্ন হলো শিশু কাদের বলবো ?
শিশুর প্রকৃত সংজ্ঞা পাওয়া মুশকিল । কখনো ১৮ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । কখনো ৭ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । আবার কখনো ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছরের নীচে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৬ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে । আবার কখনো ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছরের নীচে এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নীচে হলে শিশু বলা হচ্ছে ।
ভারতীয় সংবিধানের ৪৫ নং ধারা অনুযায়ী ১৪ বছরের নীচে সকলকে শিশু বলে । শিক্ষার অধিকারের ক্ষেত্রেও এটাই । তাই আমরা এক্ষেত্রে ১৪ বছরের নীচে সকলকে শিশু হিসেবে ধরবো ।
এখন ব্যাকরণে শিশু ধরছি উভলিঙ্গ বা উভয়লিঙ্গ । কিন্তু বিদ্যালয়ে (১৪ বছরের নীচে) শিশু মূলত পড়ছে বা পড়ানো হচ্ছে 'পুংলিঙ্গ' এবং 'স্ত্রীলিঙ্গ' ! উভলিঙ্গ বা উভয়লিঙ্গ এবং ক্লীবলিঙ্গ খুব একটা পড়ানো হয় না । আবার বিদ্যালয়ের পোশাকের মাধ্যমেও আমরা (১৪ বছরের নীচে) শিশুকে 'পুংলিঙ্গ' এবং 'স্ত্রীলিঙ্গ' বুঝিয়ে দিচ্ছি, যেখানে ব্যাকরণে শিশু উভলিঙ্গ অথবা উভয়লিঙ্গ পড়ানো হচ্ছে ! তাহলে ১৪ বছর বয়স হবার পরেই পুংলিঙ্গ এবং স্ত্রীলিঙ্গ পড়ানো উচিত নয় কি ?
পঞ্চাননের মাঠ
(ছোট গল্প)
আব্দুল রাহাজ
ভ্যাপসা গরম বাতাস নেই বললেই চলে গ্রামের মানুষ সব যেন হাঁসফাঁস করছে গ্রামের পুকুর গুলোতে ছেলে মেয়েরা মজা করে স্নান করছে নরেনের ছেলে গোপালকে সারাদিন আর গ্রামে খুঁজে পায়না গোপাল গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে তার কথা হয় না একাকী থাকতে খুব ভালোবাসে নরেন ছেলেকে নিয়ে সেজন্য বেশ চিন্তায়। গ্রামের পাঠশালায় এখন গোপাল পড়ে পড়াশুনায় বেশ ভালো গোপালের বয়স দশ চুল গুলো খাড়া খাড়া ছিপছিপে শরীর গায়ের রং বেশ কালো গোপাল প্রতিদিন কোথায় যায় সেদিকে গ্রামের ছেলেদের একটু নজর পরলো। সেদিন রবিবার ছিল সকালবেলা গোপালের বাড়িতে এলো রহিম করিম আর তাতাই রা ওদের দেখে নরেনের বাবা-মা খুব খুশি হলো কিরে তোদের আজকে গোপালের সাথে কি দরকার একসাথে সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ কাকু গোপাল কি বাড়িতে আছে আছে আছে ভিতরে যাও দরজায় একটু টোকা মারতেই গোপাল বলল কেরে রহিম করিম তাতাইরা বললো আমরা গোপাল তোর কি খবর ভালোই চলছে গোপাল জিজ্ঞেস করল তোরা কেমন আছিস ওরা বলল বেশ ভাল আছি। শেষমেষ তোরা আমার বন্ধু হলি গোপাল ছেলেটা একটু লাজুক প্রকৃতির ও কারোর সাথে কথা বলতো না একা একা থাকতে এমনকি একা একা পঞ্চাননের মাঠে যেত সেখানে সবাই জানতো রাতে দিনে কারা যেন থাকে ওরা আসার কারণে গোপাল বেশ খুশি হলো ওরা দেখল গোপাল ইতিহাস পড়া করছে তখন ঘড়িতে দশটা বাজে এতক্ষণ বই পড়িস আরে হ্যাঁ কি করবো বসে থেকে এরপর এগারোটায় খেয়ে পঞ্চাননের মাঠে যাব সেখানে কত খেলা সেই বিকালে বাড়িতে আসবো তোরা কি যাবি রহিম করিম তাতাই ওরা বলল চল যাই তাহলে দাঁড়া কিছু খেয়ে নেই গোপালের মা ওদের নাড়ু খেতে দিলেন তারপর এগারোটার সময় ওরা বেরিয়ে পড়ল ওদের একসাথে দেখে নরেনের বাবা মা খুব খুশি হলো। গ্রামের বড় মোড়লের পুকুরের ধার দিয়ে পুরো মুখার্জীবাবুর আমবাগান পার হয়ে পঞ্চানন এর মাঠে পৌঁছলো সূর্য তখন মধ্যগগনে এসে আলোর স্ফূলিঙ্গ বৈচিত্র্য ছড়াতে থাকে চারিদিকে ফুরফুরে বাতাস বইছিল পঞ্চাননের মাঠে এসে রহিম-করিমদের ও তাতাইদের ওর বন্ধুদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিল পঞ্চানন মাটির বৈশিষ্ট্য ছিল নানা ধরনের পাখির বাসা সেখানে ওদের খেলাধুলা সবই চলে নীল দিগন্তের আকাশ ফুরফুরে বাতাস ছিল গোপাল এসব দেখতে দেখতে বিকাল হয়ে যেত রহিম করিম তাতাইরা আসার ফলে ওদের সঙ্গে বেশ মজা হয়েছিল এদিকে রহিম বললো স্কুলের শেষ দিন তারপর আমরা কে কোথায় ওদিকে গোপালা তাতাই কালো জাম নিয়ে এলো পাশের বাগান থেকে তখন প্রায় পড়ন্ত বিকেল ওরা জাম খেয়ে এবার বাড়ির পথে রওনা দিল ওরা তখন সবাই গল্পে ব্যস্ত এরমধ্যে রহিম বলে উঠল কাল আমাদের শেষ পাঠশালা এরপর কে কোথায় গোপাল বললো তাই তাহলে পঞ্চাননের মাঠ কি হবে সে তো একা হয়ে যাবে করিম বললো না না হবে না দেখ তোর কথাগুলো পঞ্চাননের মাঠ খুব ভালো মনে রাখবে।তারপর পরের দিন কাক ভোরে উঠে এক ছুট দিয়ে পৌঁছানোর মাঠে গিয়ে উপস্থিত হল আপন মনে বলতে লাগলো আজ আমি চলে যাব হে পাখি গন হে পঞ্চানন মাঠ তোমরা কি কিছু বলবে প্রকৃতির কি লীলাখেলা তারা বলতে লাগল যাও গোপাল তুমি যাও বড় হও ওখান থেকে একছুট দিয়ে বাড়িতে এসে কিছু খেয়ে স্নান করে স্কুলের পথে রওনা দিল একটু দেরি হয়েছে স্কুলের এক ঘরে বৃত্তি পরীক্ষার রেজাল্ট দেওয়া শুরু হয়েছে এদিকে গোপালের নাম প্রথম ডাকা হয় কিন্তু সে আসেনি এদিকে ইতিহাসের স্যার বলল স্যার আসছে ও দৌড়ে রেজাল্ট ও পাশ করার দরুন কিছু অর্থ দিলো স্কুল থেকে রহিম করিম তাতাইএরাও ভালোভাবে পাস করে কিছু অর্থ পেয়েছে গ্রামের মানুষ সেদিন খুব খুশি। সন্ধ্যাবেলা গ্রামের মোড়ল হারাধন মশাই রহিম করিম ও তাতাই গোপালকে ডাক পড়লো সঙ্গে তার বাবারাও এলেন প্রথমে মিষ্টিমুখ হল তারপর মোড়ল জানায় এরা শহরে পড়াশোনা করবে ওখানে আমার আদি বাড়িতে থাকবে আমি চলে যাব ওখানে ওদের পড়াশুনা করাব ভালো স্কুলে ভর্তি করাবো কি মত তোমাদের ওরা বলল বেশ ভালো তাহলে কাকভোরে চলে আসবে আমাদের বাড়িতে একসাথে যাওয়া হবে সেই কথা মত ওরা বাড়ি আসার পথে আর সেই সময় মোড়ল বলল গোপালের পঞ্চাননের মাঠ তার বাবার দায়িত্ব দেওয়া হল তিনি সংরক্ষণ করে রাখবেন ভবিষ্যতের পঞ্চাননের মাঠ কি বলো সবাই বলে উঠলো হ্যাঁ হ্যাঁ। তারপরের দিন কাকভোরে পঞ্চাননের মাঠ গোপালের কাছেও তার মনের মাঝে স্মৃতি বিচারক হিসেবে হয়ে থাকবে। প্রকৃতির মায়ের কোলে পঞ্চানন মাঠ গোপালের আশায় থাকবে এটাই জানান দেয় গোপালের কাছে সেটাই আশা-ভরসা হয়েছিল। এইভাবে পঞ্চাননের মাঠ ওগোপালের বন্ধন অটুট ছিলো আজীবন।
অন্তহীন প্রতিক্ষা
রাহাত জামিল
আমি আপাদমস্তক ডুবে আছি তোমাতে।
যদিও দীর্ঘ নীরাবতায়,
তোমার পদধূলির বিচরণ নেই আজ এখানে।
তোমার উদাসীন দীর্ঘশ্বাসে,
তুমি কি অন্য কিছু ভাবছো?
নাকি প্রচন্ড এড়িয়ে চলার নিত্য অভ্যাসে,
অসময়ে লুকোচুরি খেলছো।
নাকি, কোন এক অপরাহ্ন বেলায়--
সিন্ধুবক্ষ হতে;
সমুদ্রতটে বারংবার ফিরে আসা,
দুরন্ত উচ্ছ্বাসিত ঢেওয়ের মতো;
আঘাত হানবে আমার গৃহের দরজায়।
নাকি এসব আমার ভাবনার বাড়-বাড়ন্ত!
তবুও,
চৈত্রের দমফাটা ঝাঁঝালো রোদে,
একফোটা শীতল সলিলের অপেক্ষায়...
নিদারুণ তৃষ্ণার্ত পথিকের মতো,
অন্তহীন পথ চেয়ে থাকবো তোমার প্রতীক্ষায়।
কবিতা
সরীসৃপ
কৌস্তভ ঘোষ
যাচ্ছিলাম সেদিন ফুটপাত ধরে
খেয়ালে ছিল না মন,
কখন যে ঠনঠনিয়া পেড়িয়ে গিয়েছি
বুঝিনি,কেবল কানে
আসছিল ট্রামের গর্জন।
দৃষ্টি গেল নীচের দিকে
পরনে নেই কাপড়!
শৈশবের শরীর শৈবাল ময়
ধুঁকছে ঠিক যেন কামার শালার হাপড়।
কে ওরা পরে আছে ফুটপাতে
হেঁচড়ে চলছে বুকে,
'অমৃতের পুত্র মানুষ'?
একটু দেখতে হল ঝুঁকে;
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছি, মানুষই বটে
তবে এ দশা কেন?
অনিশ্চয়তায় দিন কাটানো
আকাশ থেকে পড়লাম যেন!
কয়েকটি কথা মাথায় এল করছি তারই প্রকাশ-
প্রযুক্তি, ডিজিটাল ভারত
ঘটেছে দেশের বিকাশ।
তবুও কেন এরা আজও
ফুটপাতে শুয়ে কাটিয়ে চলছে শৈশব,
বিশ্ব সভায় স্বার্থক হবে কি আধুনিক ভারতের বৈভব।।
অংক
বাপন দেব লাড়ু
তুমি কি ভালোবেসে ছিলে
পাতা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা
যত সরল-তির্যক রেখা আর পিথাগোরাস?
ভেবে দেখেছিলে কি, মানবিকতার কৌনিক সম্পর্ক?
পেন্সিল কম্পাসে এঁকেছিলে কখনও আত্মীয়তার সম্পাদ্য?
মিলিয়েও দেখো নি চাহিদার উপপাদ্য!
তবুও 'ইনফিনিটি' ছুঁয়ে যায় জন্মান্তরবাদ ;
জীবন গোনে ধারাপাত ;
উত্তর মেলাতে পারিনা কোনো কিছুর মৃত্যুর এককে,
বুঝতে পারিনা
ভীষণ কঠিন এই অংকের সিলেবাস...
জ্ঞানামৃৃৃৃত
সমিত বিশ্বাস
অনন্তকাল জ্ঞান সমুদ্রের জলে
কাটিব সাঁতার জ্ঞান লভিনুর ছলে ৷
ঢেউ এর তালে তালে
জ্ঞান বালুকণা তুলে ৷
শিখিবো আমি ,মানুষ কাকে বলে ?
শিখিবো আমি,মানুষ হবো কোন পথে গেলে ৷
রাখিয়া সৎ দৃৃৃৃষ্টি ,না রাখিয়া লোভ
তবুও কেন মানুষের এর আমার প্রতি ক্ষোভ৷
এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজিবো আমি
তাই জ্ঞান সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়েছি আমি ৷
করিবো না মরণ ভয়
করিবো আমি জ্ঞান কে জয় ৷
তার ফলে করিবো জ্ঞান পারাবার
জ্ঞানামৃৃৃৃত আমি করিবো আহার ৷
অনুকবিতাগুচ্ছ
শংকর হালদার
অনুকবিতা-০১
স্মৃতির কোনো রং নেই
আগলে রাখার চেয়ে সুপ্ত চেতনাকে
বিকশিত করাই শ্রেয়
কিংবা স্মৃতি হয়ে রেখা টানো
তার-ই পাতায় ।
অনুকবিতা-০২।
মন পাখি এক যাযাবর
আলোক তরঙ্গে তার উৎফুল্ল হাসি
এবং তিমির খাতে সে ফকির।
অনুকবিতা-০৩
তোমার পুনর্জন্মের কথা ভেবে
আমারও জন্ম নিতে ইচ্ছে করে ,
তোমার সাথে একই বাসর রাতে
অস্তিত্ব অক্ষুন্ন রেখে ।
অনুকবিতা-০৪
অন্তর উপলব্ধির আয়না
পদার্থ বা বস্তুর মাপকাঠিতে
বোঝা যায় না ।
অনুকবিতা-০৫
ছন্দে ভরা গদ্যময় জীবন
পদ্য হয়ে ঝোরে পড়ে আজীবন ।
" মন "
হামিদুল ইসলাম
জলে জলে একাকার
একাকার মন
বাইরে একটানা বৃষ্টি এখন
ভেতরে মন উচাটন ।
কী করে শান্ত করি
এই মন
মনের মাঝে পাশা খেলে আর এক মন
কোথায় সে থাকে পাই না যে এখন ।
মন এখন হৃদয়পুর
মনকে রাখতে পারি না ধরে
খাঁচায় আটকে থাকা পাখি
পিঞ্জর ভাঙে বারেবার ।
পিঞ্জরে আটকানো যায় না মন
মনের মাঝে খরা
সে মন থাকে আকাশের উপর
এ মনকে যায় না ধরা ।
তবু ধরে আনি অশান্ত মন
বালিশের তলায়
কাছে আসে প্রিয়তমা
অশান্ত মন শান্ত করে তার বুকের জ্বালা।
কবিতা
এক পৃথিবী পর্যটন
মৌসুমী গুহ রায়
আজ দুপুরে আকাশ দেখলাম।
নীল, সাদা তুলো মেঘ ভেসে আছে।
শরতের আকাশের মতো, পুজো পুজো গন্ধ।
অনুভব করলাম পুরানো দিন গুলোকে।
দেওয়ালে একটা ছবি। আমার ও আমার স্বামীর।
সোনার বাংলা হোটেলে তোলা। সেদিন ডিনার পার্টি ছিল।
তারপর কেটে গেছে আঠারোটা বছর। জলের মতো।
আজ সেসব দিন বড় প্রিয়। মায়াময়।
এখন রাত্রি সাড়ে আটটা। স্ট্রিট লাইট গুলো জ্বলছে।
গাড়ীর হেড লাইটের আলো রাস্তায়। উজ্জ্বল।
অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরা এক পৃথিবী পর্যটন।
আলো থেকে অন্ধকারে, মহাকাশ ভ্রমন।
কবিতা :
সময়ের কথা!
বিশ্বজিৎ কর
যদি সময় হয়,
খবর দিও সময় করে-
আমি ঠিক সময়মতো যাব,তোমার কাছে!
তোমার সময় অক্ষত থাকুক-
আপন সুখে,আপন স্বস্তিতে,নতুন বন্ধুত্বে!
আমি নীরবতার ছবি আঁকব,
তোমার অবজ্ঞার ক্যানভাসে!
সময় যদি হয়,ডাকবে আমায়,
কথা দিলাম,সাড়া দেবই!
তোমার সময় হবে তো?
দেখা যাক,সময় কি বলে!
বিভাগ -কবিতা
কবি মানে মিথ্যাবাদী
আব্দুল রহিম
এসো এসো এগিয়ে এসো যুদ্ধ থামাই
লিখি নতুন ইতিহাস পাতায় পাতায়
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোন জাতি ধর্মের বড়াই
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোন রক্তের যুদ্ধ লড়াই
যে ইতিহাসে বলবে শুধু মনুষ্যত্ব ধর্মের কথা
যে ইতিহাসে থাকবেনা কোনো নগ্ন নৃত্যতা
কিন্তু কবির সব ভাবনাতো মিথ্যা আর মিথ্যা
কেননা কবিরা সবাই মিথ্যাবাদী ।।
কিন্তু কেন!কেউ কি জানো ?
যেখানে তাজা রক্ত
সেখানে কবির কলম
যেখানে নগ্ন মৃতলাশ
সেখানে কবির কলম
যেখানে জাতির পতাকার অস্তাচলগামী
সেখানে কবির কলম
যেখানে নারীর ইজ্জত নিয়ে ছিনিমিনি
সেখানে কবির কলম
যেখানে শ্মশানের পড়ে থাকা কালো ছাই
সেখানে কবির কলম ।।
তাই সমস্ত কবি মানে মিথ্যাবাদী
তবে কি জগৎ সত্যবাদী
তবে কেন আজ
যারা দিন আনে দিন খাই
তাদের হাঁড়িতে চোখের জল ফোটে
তবে কেন আজ
তোমার মা বোনের ইজ্জত বাজারে নিলামে উঠে..
মানুষ আজও কেন কামড় দেয় শিশু নারীর ঠোঁটে
তবে কেন আজ
জাতির পতাকা রক্তে ভাসে
মানুষের হাতে গড়া সভ্য এ দেশে ।।
হ্যাঁ কবিরাতো সব মিথ্যাবাদী
কেননা তার মিথ্যা স্বপ্ন দেখে দু চোখে
কলমের কালি নিংড়ে দেয় সমাজের বুকে
আজ মিথ্যারা ফুল হয়ে ফোটে
সত্যরা কাঠগড়ায় মাথা ঠোকে
তবু বলি এসো এসো এগিয়ে এসো যুদ্ধ থামাই
লিখি দিই নতুন ইতিহাস বইয়ের পাতায় পাতায়।।
অনু কবিতা
বিস্তর ব্যবধান
সোহিনী মুখার্জী
যদি কখনো হারিয়ে যাই হঠাৎ সন্ধেবেলায়!
ভালোবাসার নামটি ধরে ডেকো অবহেলায়,
হারিয়ে যাওয়া কথার ভিতর আবছা মানে দাঁড়াক
তুমি আমি পাশাপাশি তবু মাঝে বিস্তর এক ফারাক।।
কবিতা প্রতিঘাত
ডঃ রমলা মুখার্জী
শুধুই কেবল আঘাত নামে
তোমায় ভালবেসে
শ্রাবণ ধারার সাথে আমার
অশ্রু-ধারাও মেশে।
অশুভ খরা কাল বোশেখে
পেয়েছিলাম দেখা-
ছলনায় ভুলিয়ে আমায়
সীমন্তে আঁকলে রেখা।
জৈষ্ঠ্য দুপুরে হৃদয় নূপুরে
বেজেছিল রিনিঝিনি....
ভেবেছিলাম তোমাকে যেন
জনমে জনমে চিনি।
আষাঢ়ে হলাম আশা-হত
পেলাম গভীর শোক....
আমার ঘরে দিলে ভরে
নিত্য নতুন লোক।
বৃষ্টি ঝরুক বাজ পড়ুক
লুকিয়ে যাব থানায়
তোমার মত কাপুরুষকে
জেলখানাতেই মানায়।
কবিতা
বন্ধু
মিনতি গোস্বামী
বন্ধু বলে হয় পরিচয় বৃক্ষতলে
সযতনে হাতে হাত নিয়েছিলে তুলে
চোখের পরে চোখ রেখে পাই ভরসা
বন্ধু হলেই পূরণ হয় জানি আশা
দুঃখটুকু নিঙরে নিয়ে চুপিসারে
সুখের ভেলা ভাসিয়ে দি সাগরপাড়ে
ভাসো বন্ধু ইচ্ছেমত সুখের সাগরে
আমি না হয় দাঁড়িয়ে থাকি জীর্ণতীরে
ইচ্ছে হলে ঘুরেই এসো অচিনপুরে
ভেবো শুধু বন্ধু আছে অপেক্ষায় দূরে
ফিরে যদি আসো আবার এই উঠোনে
দেখবে আমি ঠিক আছি শরীরে, মনে
হাত ধরে বন্ধুর পথ হবোই পার
খোলা থাকে যদি হৃদয়পুরের দ্বার।
*মানুষ*
উমর ফারুক
মানুষ বড়ই বিচিত্র।
দেখছি রুপ সচিত্র
পাড়াময় ।
রক্তস্নাত হাজারটা।
দিবানিশি করে খুনটা
তারা নির্দয়।
রক্তদানে নিষ্ক্রিয়
রক্ত পানে স্বক্রিয়
ডাকে বিপর্যোয়।
কালের খেয়া বায়
ভুলের খেয়া খায়
তবু নির্ভয়।
করেনা প্রতিরোধ
করে সে কন্ঠরোধ
ভাবে দূর্জয়।
😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁😁
© সেক আসাদ আহমেদ
সম্পাদক উপকণ্ঠ
গাংপুরা সাগরেশ্বর রামনগর পূর্ব মেদিনীপুর
0 comments: