শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 17/07/2020

           "উপকণ্ঠ 17 জুলাই সংখ্যা "
               "উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
                    (ওয়েব ম্যাগাজিন)

        প্রকাশ কাল:-17/07/2020, শুক্রবার
                    সময় :- সন্ধ্যা 7 টা


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত

মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here

👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇

আজকের উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিনে যারা কলম ধরেছেন ✒✒✒✒
ধারাবাহিক প্রবন্ধ:-
            রাজা দেবরায়
কবিতা:-
       • বিপ্লব গোস্বামী
       • বাপন দেব লাড়ু 
       • চিরশ্রী  কুন্ডু
ছোটোগল্প:-
         আব্দুল রাহাজ
গল্প:- 
        কবিরুল
কবিতা:-
          • হামিদুল ইসলাম
          • মৌসুমী গুহ রায়
          • বিশ্বজিৎ কর
          • অগ্নিমিত্র
          • নরেন্দ্র নাথ নস্কর



🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳

ধারাবাহিক প্রবন্ধ

        প্রাথমিকে ব্যাকরণে লিঙ্গ অধ্যায়
    বাদ দেওয়া উচিত ?
       (দ্বিতীয় পর্ব)
                রাজা দেবরায়

আবার কোনো 'পুরুষ' বা 'মহিলা' যদি অপারেশনের মাধ্যমে 'লিঙ্গ' পরিবর্তন করেন তখন অনেক সময় বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায় না । সেক্ষেত্রে তাহলে কিভাবে 'লিঙ্গ' নির্ধারণ করা হবে ?
ফলে একটা বা একাধিক সমস্যা থেকেই যায় । তাই 'পুরুষ' বা 'মহিলা'-এর সমস্ত চিহ্ন বা লক্ষণগুলোকেই 'পুংলিঙ্গ' অথবা 'স্ত্রীলিঙ্গ' হিসেবে আখ্যায়িত করা উচিত । 'গোটা' 'পুরুষ' বা 'মহিলা'কে নয় । অর্থাৎ দাড়ি, গোঁফ (ছোট ক্লাসে - ষষ্ঠ থেকে নবম/দশম), (বড় ক্লাসে - একাদশ ও দ্বাদশ) সুগঠিত স্তন, যোনি, শিশ্ন ইত্যাদিকেই 'পুংলিঙ্গ' এবং 'স্ত্রীলিঙ্গ' হিসেবে বলা উচিত ।
২) আমরা জানি, শিক্ষাদানের মহান ব্রত যার কাজ তাকেই শিক্ষক বলা হয় । শিক্ষক মানে পুরো শিক্ষক সমাজ ।
কিন্তু বলা হয় শিক্ষক হলো 'পুংলিঙ্গ' এবং শিক্ষিকা হলো 'স্ত্রীলিঙ্গ' । কথা হলো শিক্ষক (সমাজ) মানে তো পুরুষ শিক্ষক এবং মহিলা শিক্ষক উভয়কেই বোঝায় এবং তাদের কাজও একই ।
ঠিক সেরকম ডাক্তারের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার ।
তাহলে শিক্ষক, ডাক্তার ইত্যাদি লিঙ্গ অধ্যায়ে বা 'লিঙ্গ পরিবর্তন'-এ ঢোকানোর কী সার্থকতা ?
(চলবে)





                  কবিতা

রামধনু
বিপ্লব গোস্বামী

বৃষ্টি শেষে পূর্ব গগনে
রামধনু উদয় হয়,
কেউ বলে তারে রংধনু
কেউ অর্ধবৃত্ত কয়।
বিকেল বেলা পূর্ব দিকে
নয়তো সকালে পশ্চিমেতে,
রামধনু দেখা যায় সদা
সূর্যের ঠিক বিপরীতে।
কোন কারিগরে গড়েন তা
বুঝার সাধ‍্য কার ?
অতি যত্নে গড়েন তিনি
সপ্ত রঙের সমাহার।
বেগুনী,নীল,আকাশী আর
হলুদ,সবুজ,কমলা,
আরো আছে রং লাল
সংক্ষেপে বলে 'বেনীআহসকলা'।







      সময়ের দাবী
                 বাপন দেব লাড়ু
মাত্রার মিছিলে আজ মুক্ত  অক্ষর,
ছন্দবদ্ধ শরীরে অতি পর্বের প্রাচীর।,
অনিয়ম গুলো আজ নিয়ম হয়ে উঠছে।,
যার প্রভাবেই সৃষ্টি হয়েছিল সমাজ সংস্কার।
ভালো বাসায় ও আজ কমেছে রোমান্টিকতা,
নীরস দৈনন্দিনে তাই মানবতা রুষ্ট।
স্বাধীনতা যাদের ভোগ্যপণ্য
রোজ রাতে তারাই মেতে ওঠে
আমলাতান্ত্রিক বিলাসে।
কাকও আজ ময়ুর হতে চায়,
দালালী করলেই যোগ্য।
পর্দা তুলে মুখোশ নিয়ে খেলে,
সত্য ভূলে ক্ষমতা লোভী হয়েছে নপুংসক।
স্বরমাত্রা, অক্ষরবৃত্ত ভেঙে  হয়েছে আধুনিক।
নতুন মোড়কে তাই পুরাতনের দাবী,
অবহেলায় ভেসে গেছে পরাধীনতা,
স্বচেতনায় অপর কে বাতিল করে
কন্ঠে প্রতিধ্বনিত হয় সময়ের দাবী।।






গভীরতা
                  -চিরশ্রী কুণ্ডু ( অবন্তিকা)

হতাশার আঘাত আজ
                     মাপ কাঠির আড়ালে,
ভেঙ্গে গেছে এক একটু বালুচর 
                                  কাটাকুটির শান্ত ভিড়ে ,
মেঘ বৃষ্টির আড়াল করে
                               আলতো রবির নতুন রঙ ,
ছায়া পথ হারিয়ে গেছে
                          ভিজে রাস্তার পথের কিনারে ,
লুকোচুরি খেলার মাঝে
                              জল টুপটুপ পায়ের ছোঁয়া,
পশ্চিমে আজ ডাকছে মেঘ
                         ডানা ঝাপটে জড়িয়ে আসর ,
গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে
                            ঝরা পাতার উকির খেলায় ,
বিদ্যুতের চমক আপ্লুত আজ
                              মেঘ বাতাসের সূক্ষ্ম চালে ,
হারিয়ে গেছে কোথায় হঠাৎ
                        ছন্দ জীবনের সেই প্রথম রেশ ,
গভীর রাতে গুমরে কাঁদে
                     উদাসীনতার কালের মধুর সুরে ।





              ছোটোগল্প

ও পাড়ার মধুবাবু
(ছোট গল্প )
          আব্দুল রাহাজ

একটা উপকূলবর্তী অঞ্চলের ছোট্ট একটি সবুজ ঘেরা গ্ৰাম সেখানে প্রায় পঞ্চাশ ঘর মানুষ বসবাস করে এখানে হিন্দু মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বসবাস করতো সুখে শান্তিতে ভেদাভেদ ভুলে এক অনন্য মেলবন্ধন পারস্পারিক সম্পর্ক তৈরি করে বসবাস করে ওরা। হরি রহিম চাচারা সব এক থালাই ভাত খায় একজায়গায় ঘুমায় খুব আনন্দে দিন কাটে ওদের। মজার ব্যাপার হলো এখানে মসজিদ আর মন্দির পাশাপাশি সবাই একসাথে নামাজ পড়তে যায় মন্দিরে প্রার্থনা করতে যায় এই দৃশ্য সবার ভালো লাগতো। লিয়াকত চাচা মিহির দাদু খুবই প্রবীন এসব দেখে ওদের মনটা ভরে যেত গ্ৰামে সবই আছে কিন্তু ছেলেমেয়েরা পড়াশোনার স্কুল নেই তাই নিয়ে সবার চিন্তা ওদিকে নিশান ইব্রাহিম খালেদ হাসান তানজিম নরেন সরেন রামরা এখন এক দাদুর কাছে অল্প অল্প পড়া শুরু করেছে। একবার তানজিমের বাবা দূর দেশে নৌকা নিয়ে  পাড়ি দেয় মাঝ পথে দেখে এক দেশে অনাহারে   মানুষ ছোটাছুটি করছে কেউ ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে বাঁচানোর মতো লোক নেই তানজিম এর বাবা এই দৃশ্য দেখে নৌকা যেই ঘুরিয়েছে একজন পিছন দিক দিয়ে ডাক দিয়ে বললো মাঝি মাঝি মাঝি দাঁড়াও তানজিম এর বাবা একপলকে দেখে বললো আরে মধু তাড়াতাড়ি আয় দৌড়ে এসে নৌকায় উঠলো তানজিমের বাবা জিজ্ঞাসা করলো মধু তুই এই দেশে কী করছিলি এতবছর এই তো পড়াশোনার জন্য এসেছিলাম একটা স্কুলে পড়াতাম কিন্তু সবশেষ তখন মধু বললো বাবা মা ভালো আছে তো হ্যাঁ হ্যাঁ আমরা আগলে রেখেছি। তা তো খুব ভালো কথা তানজিমের বাবা বললো গ্ৰামের ছেলেমেয়েরা কেউ পড়াশোনা করতে পারছেনা জানোতো আমরা অশিক্ষিত ওদের আর কী করে পড়াবো তুমি বাবা গ্ৰামে ফিরে যাচ্ছো এবার ছেলেমেয়েরা একটু প্রানভরে গ্ৰামে হাওয়া বাতাসে পড়বে মধু একটু হো হো হো করে হেসে বললো তাই হবে আর সব ঠিকঠাক আছে তো তানজিমের বাবা বললো হ্যাঁ হ্যাঁ সব ঠিক এই কথা বলতে বলতে ওরা ওদের নদীর ধারে এসে পৌঁছলো তখন অনেক রাত নদীর ধারে বসে তখন মধু দের সমবয়সি আফান আর পবিত্র বসে গল্প বলছে তখন ওদের দেখে তানজিমের বাবা ডাক দিলো আফান পবিত্র এদিকে আয় ওরা দৌড়ে এসে বললো কী হয়েছে দেখ আমাদের মধুবাবু এসেছে আরে বন্ধু তুমি এতদিন পর অন্ধকারে মুখ দেখা যায়না তখন তানজিমের বাবা বললো আমি চলি তোরা ওর বাড়িতে পৌঁছে দিস আচ্ছা হারু কাকা এই বলে চলে গেল এই পাড়াতে মধুরা থাকে ওই পাড়ায় থাকে তানজিমরা এইবার আফান আর পবিত্র মধুর বাড়িতে পৌঁছে দিলো আলোয় মুখ দেখতেই আফান আর পবিত্র কে বললো আরে চুনো পুঁটি এই নাম গুলো ওদের ছোটবেলা র নাম ওরা বললো আরে ভম্বল অনেক দিন পর দেখা ওদের সাথে অনেক গল্প হলো বাড়ির  সামনে মাচার উপর বসে তখন অনেক রাত হয়ে গেছে ওরা চলে গেল। এবার মধু বাড়িতে ঢুকে কড়া নাড়তেই হরিহর বলে উঠলো এতো রাতে কে আবার দেখ আমার মধু আসিনি তো তারপর দরজার বাইরে থেকে বলে উঠলো আমি মধু  ও বাবা আমার ছেলে তাড়াতাড়ি দরজা খুললো হরিহর বলে উঠলো এতদিন পর মনে পড়লো বাবা আমাদের কথা  তার পর সব কথা খুলে বললো  ওর বাব মা বললো ও আচ্ছা তারপর খই মুড়ি খেয়ে শুয়ে পড়লো সকালে উঠে তানজিমের বাড়িতে গিয়ে ডাক দিলো ও হারু কাকা ও হারু কাকা আরে মধু বোস বোস ও খুকির মা তাড়াতাড়ি সরবত জল করো আমাদের মধু এসেছে মধুকে দেখে গ্ৰামের ছেলেমেয়েরা সবাই এসেছে  সরবত খেতে খেতে হারু কাকা বললো আজ থেকে তোমাদের মধু কাকা পড়াবে ওরা সবাই বললো বা ভালোই হবে এবার মধু পড়াতে লাগলো  শুধু পড়াতোনা প্রতি সপ্তাহে গ্ৰাম পরিস্কার করা ব্যায়াম খেলাধুলা  বনভোজনের আয়োজন করতো খুব আনন্দে দিন কাটতো ওদের তারপর আস্তে আস্তে পরিবর্তন হতে থাকলো সবকিছু গ্ৰামের ছেলেমেয়েরা অল্প অল্প ইংরেজি পড়তে শুরু করলো  বলতে লাগলো দিনের পর দিন বছরের পর বছর এই ভাবে মধু বাবুর এই তত্ত্বাবধানে অনেক কিছু শিখতে পারলো ও পাড়ার মধু সবার কাছে মধ্যমনি আজীবন চির বন্দিত নায়ক হিসেবে তাদের মধ্যে বসবাস করছিলো। চারিদিকে শান্তিময় পরিবেশে সুখে শান্তিতে মধু তানজিমরা বসবাস করতে লাগলো মায়াময় সুন্দর উপকূলবর্তী অঞ্চলে।






বিভাগ : গল্প
                    স্যাণ্ড উইচ
                                    কবিরুল

             চিকেন স্যাণ্ডউইচটা খুব যত্ন সহকারে তৈরী করে রোহিনী মালতিকুঞ্জ ফ্ল্যাটবাড়ির দিকে এগোতে থাকে। আর কদিন পরেই এই শহর চলে যেতে হবে তাকে। বিদায়বেলাতে একটু মন খারাপ করছে। সবচেয়ে বেশী খারাপ লাগছে তাথৈ এর কথা ভেবে। একটা মিষ্টি মেয়ে।
            গোটা সমাজ ঝাঁটা লাথি মারলেও ঐ একটি বাড়ি আছে যেখানে একটা ছোট্ট হৃদয় তার জন্যে  অপেক্ষা করে থাকে। আর চিকেন স্যাণ্ডউইচের জন্যে বায়না ধরে।
          " দাদু , মামনি এসে গেছে। আমার চিকেন স্যাণ্ড উইচ এনেছ ? " তাথৈ রোহিনীর গলা জ্ড়িয়ে ধরে বলে।
         " আজ আমার  শরীর খারাপ তাই বানাতে পারিনি। অন্যদিন এনে দেব। " রোহিনী মিথ্যে কথা বলে তাথৈয়ের মন পরীক্ষা করে।
       " দাদু মামনির শরীর খারাপ। এক্ষুণি ডাক্তার ডাকতে হবে। আমার চাইনা স্যাণ্ড উইচ। আগে তোমার শরীর। তুমি অসুস্থ হলে কে আমাকে আদর করে খাওয়াবে। তুমি তো আমার মা। দাদু সেটাই বলে। " পুচকে তাথৈয়ের চোখে জল।
      " ওরে আমার পাকা বুড়ি ! দাড়াও তোমায় মজা দেখাচ্ছি। " এই কথা বলেই রোহিনী একটা হামি খায় তাথৈয়ের নরম মোলায়েম গালে। আর ব্যাগ থেকে বের করে চিকেন স্যাণ্ড উইচ।
           ছোট্ট তাথৈ জন্ম থেকেই মা হারা। একদিন রোহিনী ওদের পাড়াতে বাচ্চা নাচাতে এসেই তাথৈয়ের প্রেমে পড়ে যায়। কদিনের আলাপেই তাথৈ রোহিনীকে " মা " বলে ডেকে ওঠে। আর বেচারা রোহিনী ওই ডাক শুনে আর স্থির থাকতে পারেনি। রোজ ওই ডাক শুনে চলে আসে। আর আসার সময় ওর পচ্ছন্দের খাবার নিয়ে আসে।
          তাথৈ জানে না তার  নতুন  "  মা " রোহিনী সমাজ থেকে অনেক দূরে। মায়ের পেশা সম্বন্ধে তার কোন ধারণা নেই। তাথৈ  তৃতীয় লিঙ্গ বা থার্ড জেণ্ডার সম্বন্ধে একেবারেই অনভিজ্ঞ। তবু দুজনের একটা নিবিড় বণ্ডিং তৈরী হয়ে গেছে।
          রোহিনী নিজেও জানে একটা সময় আসবে যখন তাথৈ বুঝতে শিখবে তখন ও হয়ত সেভাবে আর এগোবে না।  তখন রোহিনীর দুঃখের সীমা থাকবে না। রোহিনী জানে বাস্তব ভীষণ রুক্ষ। তাই আর মায়ায় জড়াতে চাই না।
                      ***************
             আঠাশ বছর আগে সেই রকম কিছু একটা ঘটেছিল রোহিনীর জীবনে। যেটার সাথে তাথৈ আর ওর জীবনের অনেক মিল রয়েছে। তাই তো মন না চাইলেও কোথাও যেন একটা ডাক শুনতে পাই। কে যেন অজান্তেই ডেকে ওঠে।
              একটা ছোট্ট পুচকে আদরের ধন খূব ছোটতেই মা হারিয়ে ছিল। কোন বন্ধু নেই। তাই  সারাদিন বারান্দাতে বসে থাকে আর লোকদের সাথে ডেকে ডেকে গল্প করে। একদিন সেই মেয়েই একদল হিজড়ের সাথে বন্ধুত্ব করে ফেলল।
            ওরাও পুচকেটাকে  ভালবেসে অনেক কিছু উপহার দিত। বাড়ি থেকে খাবার এনে খাওয়াত। পুচকেটাও স্যাণ্ড উইচ  ফ্রিশফ্রাই খেতে ভালবাসত। পূচকেটার সাথে ওদের বন্ধুত্ব আরো নিবিড় হল।
             কদিনের আলাপেই ওরা বুঝেছিল পুচকেটা ওদের গোত্রীয়। থার্ড জেণ্ডার। তাই আর দেরী করেনি। বাড়ির লোকের সাথে কথা বলে পুচকে মেয়েটাকে বাড়ির লোকের কাছ থেকে ছিনিয়ে এনেছিল। ওরা জানত সমাজ ওকে মেনে নেবে না। একদিন ওকে ওর সম গোত্রীয় মানুষের কাছে ফিরে আসতেই হবে। বাস্তব ভীষণ রুক্ষ যে।
           সেদিনের সেই পূচকে মেয়েই আজকের রোহিনী। রোহিনী সেদিন পরিবারের সকলের চোখে জল দেখেছিল। তবু হিজড়ে আন্টিদের সাথে আসতে কোন কষ্ট পায়নি। কারণ ওরা ছিল ওর বন্ধু।
           ধীরে ধীরে রোহিনী ওদেরই একজন হয়ে গেল।
            আজ বহু বছর পরে রোহিনী সেই ভয়টাই পাচ্ছে। তাথৈকে না সেই রকম কিছু করতে হয়।
            দূজনের সম্পর্ক মা আর মেয়ের।
             রোহিনীর মনে সংশয় দানা বাঁধছে। ভয়টা অন্য জায়গাতে। বাস্তব কখন যে কোন দিকে মোড় নেই কে জানে।
               এক সপ্তাহ কেটে গেছে।
            আজ রোহিনীর তাথৈয়ের সাথে শেষ দিন। রোহিনী বুঝতে পেরেছে তাথৈয়েরও ওদের মতন অনেক লক্ষণ আছে। যেটা সুপ্ত। একদিন সেই সূপ্ত ভাব বাস্তবের কর্কশ আঘাতে  জেগে উঠবে। তখন সেটা মারাত্মক আকার ধারণ করবে।
            রোহিনী আর দেরী করে না। তাথৈয়ের সাথে দেখা না করেই স্যাণ্ড উইচ এর বাক্সটা রেখেই  চলে আসে। তারপর সোজা খড়গপুরের ট্রেন ধরে  চলে আসে মেদিনীপুর শহরে। সঙ্গী বলতে একটা ছোট লাগেজ আর চোখের জল।
               পনেরো বছর পরে....
                ঘাটালের এক মেলাতে রোহিনীকে দূর থেকে কে যেন মা বলে ডেকে ওঠে। রোহিনী ঘাড় ঘোরাতেই দেখে ওদেরই সমগোত্রীয় একজন ওর গলা জড়িয়ে ধরে আছে।
          স্পর্শটা গায়ের গন্ধটা বহুকালের চেনা।
          " তাথৈ ! " রোহিনী ঠিক চিনতে পেরেছে।
            জীবনটা কঠিন বাস্তব। রুক্ষ মরূভূমির মতন।
            তাথৈকে  সমাজ ফিরিয়ে দিয়েছে। ও তাই চলে এসেছে। যেখানে ওর আশার কথা।
           তাথৈয়ের  মা ওকে ফিরিয়ে দেবে না। রৌহিনী ঠিক ওকে বুকে আগলে রাখবে।
              তাথৈ ব্যাগ থেকে চিকেন স্যাণ্ড উইচ বের করে মার হাতে দেয়।
               রোহিনীর ছল ছল চোখে তাথৈকে বুকে জড়িয়ে ধরে।






                কবিতা


                       " মন "
               হামিদুল ইসলাম
          

____________________________________
এখন শ্রাবণ সন্ধ‍্যা
জলে জলে জলময় পৃথিবী
কাদা কাদা মাটি, জীবন বিভ্রাট
তবু আজ যেনো নেই প্রাণে বাঁচার দাবী  ।।
মৃত‍্যু ঘনায় চোখের জলে
মৃত‍্যু আজ কেবলই আতঙ্কের ছায়া
বাড়িময় যন্ত্রণার অনুরণন
মনের গভীরে একতাল মায়া  ।।
কী করে সরাই মায়া
মায়াবিনী রাত
শঙ্খচূড়ায় বেজে ওঠে ঘণ্টা
হাত বাড়ালেই ছুঁয়ে যায় আর এক মৃত হাত ।।
লম্বা লম্বা সে হাতের রেখা
গুণে গুণে বলে ভবিষ‍্যৎ
আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে আছি জানি নে
জানি নে কবে লিখে দিতে হবে মৃত‍্যুখত  ।।
একদিন তোমাকে পেয়ে যাই ঈশ্বর
তুমি তোলো মুষ্টিবদ্ধ হাত
তোমার ছোঁয়া মৃত‍্যুকে দূরে সরিয়ে রাখে
মন থেকে আতঙ্ক করে উৎখাত ।।
____________________________________








উপকন্ঠ প্রাত‍্যহিক বিভাগ
সচ্চিদানন্দ আকাশ
                 মৌসুমী গুহ রায়

যন্ত্রনায়, যন্ত্রনায় লীন বহুদিন,
যন্ত্রনার ছায়াও রক্ত ঝরায়।
হে ঈশ্বর, মুছে দাও যন্ত্রনা,
দাও আনন্দ,
সবুজ মরুদ‍্যান যেন হৃদয়।
আর একটিও নয় যন্ত্রনার কথা।
দুঃখময় পৃথিবীতে হতে চাই আনন্দের আধার,
অতীত হোক বিস্মৃত,
নতুন জীবন, নতুন পৃথিবী, নতুন দিগন্ত
যেন একটি সচ্চিদানন্দ আকাশ।
        



          
কবিতা : কথোপকথন!
                            বিশ্বজিৎ কর

আকাশ সেদিন বলল-
আমার দিকে দেখো,
বললাম আমি অকপটে -
আগে প্রেয়সীর মুখ ঢাকো,
তোমার দিকে চাইলে -
সময় যাবে চলে,
এরই মাঝে যদি কেউ,
প্রেয়সীকে দেখে ফেলে!
আকাশ বলল হাসিমুখে -
প্রেম হল চিরন্তন,
ভালবাসার মধুরতায় -
সার্থক হোক জীবন!







'আনন্দ '
  - অগ্নিমিত্র ( ডঃ সায়ন ভট্টাচার্য)

ধিক তান ধিক তান   
মন গেয়ে ওঠে গান...
পাখিদের কলতান
ধিক তান ধিক তান ।
ধিক তান ধিক তান ,
মনে যত অভিমান 
হোক তার অবসান;
ধিক তান ধিক তান!
ধিক তান ধিক তান...
জীবন প্রভুর দান,
দুঃখের নেই স্থান 
ধিক তান ধিক তান ।।







                 উপলব্ধি
                        নরেন্দ্র নাথ নস্কর

যেতে তো সবাইকে হবে, আগে বা পিছে;
পৃথিবীতে বড়াই করার কিছু নেই, সবই মিছে।

যে যত আগে উপলব্ধি করে তাদের দু:খ তত কম হয়;
বিনম্রতা, ভগবানে নিজেকে সমর্পণ,মানুষের নি:স্বার্থ সেবাই মনে হয় শান্তির শ্রেষ্ট উপায়।

বিজ্ঞানের অবদান অনস্বীকার্য মানুষের জীবনে;
কিন্তু মনের শান্তি, নির্ভীক মন পাওয়া যায় একমাত্র ভগবানে সত্য সমর্পণে।
.................
দোষ ক্রুটি যত ক্ষমা কর প্রভূ, দৃষ্টতা কর মাপ;
অজ্ঞাতে যদি আঘাত পায় কেহ হয় যেন অনুতাপ।

নত মস্তকে প্রণাম করি তোমার চরণে প্রভূ;
জীবের সেবাই শ্রেষ্ট কর্ম একথা না ভুলি কভূ।

অহঙ্কার না যেন আসে এই জীবনের পথে;
তুমি চালাও আমার সত্তা, চলি যেন তব পথে।



🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳🇮🇳


© সেক আসাদ আহমেদ 
       সম্পাদক , উপকণ্ঠ
 গাংপুরা সাগরেশ্বর রামনগর পূর্ব মেদিনীপুর
তাং- 17/07/2020, শুক্রবার







0 comments: