বৃহস্পতিবার, ১৬ জুলাই, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 16/07/2020

           "উপকণ্ঠ 16 জুলাই সংখ্যা "
               "উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
                    (ওয়েব ম্যাগাজিন)

        প্রকাশ কাল:-16/07/2020, বৃহস্পতিবার
                    সময় :- সন্ধ্যা 7 টা


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত

মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here

👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇





প্রাথমিকে ব্যাকরণে লিঙ্গ অধ্যায় বাদ দেওয়া উচিত ?
           রাজা দেবরায়


১) প্রাথমিকে বাংলা ব্যাকরণে (ইংরেজি বা অন্যান্য ব্যাকরণেও হতে পারে) 'লিঙ্গ' অধ্যায় বা 'লিঙ্গ পরিবর্তন' খুবই ছোট হওয়া উচিত বা বাদ দেওয়া উচিত !

'লিঙ্গ' শব্দের অর্থ চিহ্ন বা লক্ষণ বা নিদর্শন ।

তাহলে চিহ্ন বা লক্ষণ বা নিদর্শনগুলো 'লিঙ্গ' অধ্যায় বা 'লিঙ্গ পরিবর্তন'-এ আসার কথা । কিন্তু আমরা দেখি চিহ্ন বা লক্ষণ বা নিদর্শনগুলো না এসে গোটা বিষয়টা বা ব্যাপারটা চলে আসে । উদাহরণ দিলে হয়তো সুবিধে হবে ।

যেমন 'পুরুষ' বলা হচ্ছে 'পুংলিঙ্গ' । যদি প্রশ্ন করি কেনো ? এর উত্তরে বলা হবে 'পুরুষ'-এর এমন কতগুলো চিহ্ন বা লক্ষণ বা নিদর্শন আছে যা থেকে বোঝা যাবে সে 'পুরুষ' । যেমন - দাড়ি, গোঁফ ইত্যাদি ।

এবার যদি বলি কোন 'পুরুষ'-এর দাড়ি, গোঁফ ইত্যাদি না দেখতে পেলে কি তাকে 'পুরুষ' বলবো না বা তখন কি 'পুংলিঙ্গ' বলা হবে না ? অথবা 'পুরুষ' যদি 'মহিলা'র পোশাক পরেন তখন কি 'পুংলিঙ্গ' বলা যাবে না ? অথবা 'পুরুষ' যদি 'মহিলা'র মতো লম্বা চুল রাখেন তখন কি 'পুংলিঙ্গ' বলা যাবে না ? উত্তরে হয়তো বলা হবে দাড়ি, গোঁফ, পোশাক, চুল ছাড়াও বিশেষ চিহ্ন বা লক্ষণের মাধ্যমে 'পুরুষ' বা 'পুংলিঙ্গ' চিহ্নিতকরণ করা সম্ভব । কিন্তু বাস্তব চিন্তায় এগুলো প্রকাশ্যে চিহ্নিতকরণ সম্ভব নয় । যেমন, বাচ্চা জন্মানোর সময় যা দেখে যে চিহ্ন দেখে বোঝা যায় ছেলে হয়েছে নাকি মেয়ে হয়েছে ! কিন্তু এগুলো কি বইয়ে লেখা সম্ভব বা 'পুংলিঙ্গ' নির্ধারণের জন্য দেখা সম্ভব ? বাস্তবে কোনোভাবেই সম্ভব নয় ।

(চলবে)



ভুল নিশানার দিকে
বাপন দেব লাড়ু 

ভুল নিশানার দিকে এক পা - দু পা ম'ন, 
বুঝলাম বড্ড দেরী হয়ে গেছে। 
এখন কল্পনায় আসে উষ্ণতা,
এক দৃষ্টিতে শরীর মিশে যেতে চায় মাটিতে। 
যদি ছুঁয়ে দাও আঙুল, 
শরীর গড়বে জলে ;

ডাকলে আজও হঠাৎই, 
ফুরিয়ে যায় সব ব্যস্ততা,
উষ্ণতায় নিজেকে পোড়াই
মেঘলা আকাশ দূরে থাকে
রাতের হয় না অবসান 
শুধুই কালো শুধুই কালো। 
আরও সহস্রাব্দের পরে 
আমরা বাঁচবোনা আর।
শুধু কবিতারা আর এই লেখা ছাড়া।




প্রান্তিক মানুষের জীবনযাএা 
(ছোট গল্প)
             আব্দুল রাহাজ

ওরা কোথাও যেন অসহায় ক্ষুধার্ত জরাজীর্ণ সমাজের মানুষের চোখে এক বোঝা হিসেবে উঠে আসছে দুবেলা দুমুঠো ভাতের আশায় সারাদিন এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ছুটে বেড়ায় কেউ আবার মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘোরে কিন্তু সেই আশা তাদের পূরন হয়না দুবেলা দুমুঠো ভাত পেট পুরে খেতে পায় না বরং জোটে অপমান লাঞ্চনা অপমান তবুও তারা এই যন্ত্রনাকে উপশম করে বেঁচে আছে সমাজের বুকে। একটা ছোট্ট গ্ৰামে বসবাস করে হরিহর আর তার বউ ছেলেমেয়ের তাদের দিন কাটে খুবই কষ্টে হরিহর দিন মজুরের কাজ করে বাড়িতে তিন ছেলে মেয়ে তাদের মুখে অন্ন তুলে দিতে বেশ পরিশ্রম করতে হয় কিন্তু সেবার চাটুজ্যে বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ওপরের ছাদ থেকে পড়ে এখন বিছানা শয্যা তাদের দিন গুলো কাটে খুবই কষ্টে হরিহরের বড়ো ছেলে হরিশ সে পাশের বনে কাঠ কাটতে যায় ও পাড়ার সুরেশের সঙ্গে যা অর্থ উপার্জন হয় তা দিয়ে সংসার চালান একদিন রাতে ঘটে মহাবিপদ তার মা দুই ভাই বোন সেদিন খেতে না পেয়ে চলে গেল চির ঘুমের দেশে আহা কী কষ্ট এইসব মানুষগুলোর সেদিন সুরেশ বনের বাঘের কবলে পড়ে আটকে পড়ে যায় বনের ভিতর বাড়িতে এসে দেখে এই অবস্থা শোকে দুঃখে সুরেশ আর তার বাবা দিক হারা হয়ে যায় বেশ কয়েকদিন তার পর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরলেও যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে তাদের তা প্রতি পদে পদে স্মরন করিয়ে দেয় দিন আনা দিন খায় হরিহরের পরিবার প্রকৃতির মায়ের উপর ভরসা করে খুব কষ্টে জীবনযাপন করে দিনের পর দিন বছরের পর বছর । এরকম হরিহর এর মতো বহু অসহায় মানুষ খুবই কষ্টে জীবনযাপন করে ‌। তাদের জীবনযাত্রা কোথাও যেন অসহায় বঞ্চনায় কাটে ওদের খুব কষ্ট কিন্তু প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রত্যক্ষ করলেও সাহায্য করার মানসিকতা তাদের নেই হয়ে গেছে পাষান নিকৃষ্টতম মন। তবুও মানুষ গুলো কষ্টে জীবনযাপন করে একরাশ শান্তি নিয়ে।





বদলে গেছে
বিপ্লব গোস্বামী

ব্লক করেছিস আমার ফেসবুক প্রোফাইল
ভেঙ্গে ফেলেছিস আমার দেওয়া মোবাইল।

ব্লেক লিস্টে রেখেছিস আমার মোবাইল নং
আস্তে আস্তে বদলে দিলে কথা বলার ঢং।

বদলে দিলে চিন্তা ভাবনা বদলে দিলে মত
অবশেষে বদলে দিলে বাড়ি ফিরার পথ।

বুক ভরা আশা তোর বড় হওয়ার স্বপন
সরাতে চাস পথের কাঁটা আমি পুরাতন।

জানতাম যদি তোর বদলে যাওয়ার কারণ
হাসি মুখে দিতাম বিদায় করতাম না বারণ।






পাড়ভাঙা শুজনি বউয়ের লজ্জা 
            শ্যামসুন্দর মন্ডল 


মাঝে মাঝে তীব্র আলো ও দিনে খুনী হয়ে উঠে। 
তখন আলো নয়,ছায়ায় ভাসিয়ে দিতে হয় বাঁচার তাগিদটা। 

পশ্চিমে লবনধারার ধারাপাত ছুঁতেই নিভে যায়
সারাদিন জ্বলতে থাকা অত্যাচারী আকাশ উনুনটা।
পুকুরের পাড় ভেঙে অত্যাচারিত জলের পাশে
সমানুভূতিতে ফিরে পায় শুজনি তার লজ্জা। 
নাৎসী হিটলারের ও রক্তসোহাগ পেরিয়ে টিকে থাকে
কিছু কিছু ঘামঝরানো আবর্জনামুক্ত রক্তপ্রবাহ।


সারাদিন বন্ধ্যা ক্ষেতকে মাতৃময়ী করতে 
রক্তঝরায় ঘামের বেশে শুজনি নামের চাষা বউটি,
বাঁচিয়ে রেখে লজ্জা এগারো হাত শাড়ীর ভাঁজে।
দিনের শেষে পুকুরধারে গুগলি খোঁজে পাথর কেটে
যদি বা বন্ধ হয় হাহাকার, ভাতহীন হাংরা পেটে।

এরপর ও শুজনি বউ লজ্জা বাঁচিয়ে রাখে
আর একটা সোহাগী সূর্যের স্বপ্ন দেখে।







প্রতিদিনের পৃথিবী 
        মৌসুমী গুহ রায় 

প্রতিদিনের পৃথিবী ঘুরে চলে।
সূর্য প্রতিদিন আলো ছড়ায়।
মানুষ এবং প্রতিটি জীব তার
দৈনন্দিন বৃত্ত সম্পূর্ন করে।

উদাস উদাস পথিক ঘুরে বেড়ায়।
পথ, ঘর যেন শামুকের মতো।
মহুল ফুলের নেশা, কী আসক্তি।
বৃন্দাবনের কথা প্রায়‌ই বলত মহিলা।

বৃষ্টি পড়ে। মেঘলা, স‍্যাঁতসেঁতে দিন।
ঘরে থাকা মানুষের বেশবাস, বিছানার চাদর, সংসার অবিন‍্যস্ত, রোঁয়া ওঠা জীবন।
কখনো রোদ ওঠে, কবির ঝলমলে দিন অনুভব।






                " ভালোবাসা "
             
              হামিদুল ইসলাম
                 
ভালোবাসা হাতে রাখি 
তবু হাত থেকে পড়ে যায় ভালোবাসা 
ভালোবাসায় পুড়ে যায় মন 
যখন হৃদয়ে ভরে ওঠে অপূর্ণ আশা ।।

তোমাকে ভালোবাসি
প্রতিদিন একবুক 
তোমার ভালোবাসা কখনো দুঃখ নিয়ে আসে 
মুছে দেয় হৃদয়ের যতো সুখ ।।

তবু তোমার ভালোবাসায় উন্মত্ত আমি
উন্মত্ত আমার মন 
প্রতিদিন হৃদয়ে ধরে রাখি ভালোবাসা 
যখন হৃদয় সুখের আশায় পূর্ণ সারাক্ষণ ।।

ভালোবাসা আমার হৃদয়ে 
ভালোবাসা তোমার হৃদয়ে 
ভালোবাসা প্রতিদিন ছুঁয়ে যায় মন 
ভালোবাসা অমর। ভালোবাসা কখনো ভাঙে না বিরহে ।।

কবিতার ছন্দ ভাঙি ভালোবাসা দিয়ে 
ভালোবাসা হৃদয়ের ছন্দ 
তুমি আছো আমি আছি 
আমরা দুজন একই অঙ্গে তবু নেই কোনো দ্বন্দ্ব ।।
____________________________________
          




      কবিতা :
                না,কাল্পনিক নয়! 
                              বিশ্বজিৎ কর

পা রাখব কোথায়? 
চারিদিকে কাদা-
প্রতিহিংসা,দায়িত্বজ্ঞানহীনতা,নির্লজ্জতার.......
এত কাদার সাথে দুর্নীতির পাঁক! 
কি আর বলব?
চারিদিকে ফিসফাস-লেনদেনের! 
ষড়যন্ত্রের ছক তৈরীর চিত্রনাট্যর রিহার্সাল! 
লিখবটা কি? 
কতরকমের অস্বস্তি-রাষ্ট্রযন্ত্রের লাল চোখ! 
শান্ দেওয়া ধারালো সেন্সর-কাঁচি!






কাঙ্খিত প্রেম
          শংকর হালদার

আমার চোখে তুমি শান্তি দায়িনী কিংবা মুক্তির...
গুম হয়ে বসে এক ঋতু...
বিরহের না... পালা বদলের ।

মাটির বুকে নেমে আসা আষাঢ়-শ্রাবণ 
সবুজ শিরায় শিরায় গড়ে তোলে নির্বাক আন্দোলন।
চাতকের মৌনতা তার তৃপ্তির কারণ,
কিষাণের ব্যস্ততা...
সোঁদা মাটির গন্ধ...
রচনা করে মূল্যবোধের গল্প
মুখে মুখে আলাপ জমায় চেনা গল্পরসে ।

চিন্তার জটাধারী মেঘ
স্বস্তির ছবি আঁকে জনতার ভীরু চোখে
এ এক অনাবিল কাঙ্খিত প্রেম-
তোমাকে নিয়ে হাজারও মানুষের ।



কবিতা
         তুমি কি পারবে
                          রুহুল আমিন

তুমি কি পারবে সর্বদাই ভালোবাসতে?
এক গুচ্ছ রঙিন স্বপ্ন ঝেড়ে ফেলে
পিঞ্জর খুলে দেও হে সখী
মুহ মুহ ফুটন্ত তোমার ভালোবাসা
তুমি ছাড়া জীবন মিছে
অমূল্য তোমার হাসির ভাষা
প্রত্যাশায় গাঁথা মায়াবী সন্ধ্যায়
তুমি কি পারবে ভালোবাসতে আমায়?
আচ্ছা ধরো,
আমার লাবান্যময়ী রুপে যদি
অ্যাসিড বৃষ্টির ঝর্না নামে
তখনও কি পারবে ভালোবাসতে আমায়?
যদি পঙ্গু হয়ে বিছানাতে থাকি পড়ে
বাকিটা জীবন চলতে হবে পরনির্ভরশীল হয়ে
তখনও কি পারবে ভালোবাসতে আমায়?
উন্মোচক হক পুরানো ভালোবাসা
ফুটন্ত হক পাঁচ বছর আগের স্মৃতি
এসো আত্মার সাথে সম্পর্ক বাঁধি
হিসাব রাখি চাওয়া-পাওয়ার
যদি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে
নব জন্মে হই কৃষ্নচূড়া
তখনও কি পারবে ভালোবাসতে আমায়?






করোনাকালের বইপড়া-৩
প্রশান্ত ভৌমিক
সাম্প্রতিক সময়ে পড়া আরো পাঁচটি বই নিয়ে আলোচনা করলাম আজ। গৃহবন্দীত্বে পাঠ সুখ-এ ভাল লাগার পাশাপাশি তেমন ভাল না লাগা বইয়ের ব্যাপারেও লিখেছি আজ।
১। হুমায়ূন আহমেদ, হাসান আজিজুল হক এবং অন্যরা। মমিনুল ইসলাম
মূলত হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে স্মৃতিগদ্য। সাথে হাসান আজিজুল হক এবং কিছু লেখকের গল্প। পাশাপাশি লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের মিডিয়া ও লেখালেখি সংক্রান্ত নানান চড়াই উৎরাই রয়েছে এই বইতে। হুমায়ূন আহমেদকে নির্মোহ বিশ্লেষণ করেছেন লেখক। কোথাও দেবতার আসনে বসিয়ে দেন নি, আবার একেবারে ছুঁড়ে ফেলেও দেন নি। ফলতঃ ব্যক্তি হুমায়ূনের জীবনের অনেকগুলো দিক, তাঁর ভাবনা চিন্তা ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে আমরা খুব সুন্দরভাবে জানতে পারি। হুমায়ূনের নাটকের প্রোডাকশনে কাজ করার যে বর্ণনা লেখক দিয়েছেন, তাতে করে ব্যক্তি হুমায়ূন কিংবা নির্মাতা হুমায়ূনের পরিচয় আরো সুন্দরভাবে পাওয়া যায়। অন্যদিকে হাসান আজিজুল হকের ব্যাপারেও লেখকের বর্ণনাও যথেষ্ঠ নৈর্বক্তিক। ঝরঝরে গদ্যে লেখা বইটি সুখপাঠ্য।
২। জনপ্রিয় লেখকদের অদ্ভুত কান্ডকাহিনি। জনি হোসেন কাব্য
এই বইটি কেনার কারণ দুটি। (১) প্রচ্ছদে হুমায়ূন আহমেদের ছবি, (২) জনি হোসেন কাব্যর ফেসবুক পোস্ট। দু’টি ব্যাপারেই যথেষ্ঠ শিক্ষা হয়ে গেছে। প্রচ্ছদে হুমায়ূন আহমেদের ছবি ব্যবহার করে বই বিক্রি করার পুরনো কৌশলে প্রকাশনী সম্পূর্ণ সফল। কারণ, এরকম ফালতু টাইপের অসম্পাদিত বই অনেকদিন যাবত পড়িনি। আগে সিনেমা হলের গেটে এই ধরনের বই বিক্রি হত পাঁচ টাকা করে। বইতে ব্যবহৃত ভাষা এবং ভাষার প্রয়োগ- সব মিলিয়ে শুধুমাত্র টাকা নষ্ট হয়েছে বললে অনেক কম বলা হবে। বানান ভুল কিংবা খারাপ প্রোডাকশনের কারণে দাড়িকমা প্রকাশনীর উপর থেকে সম্পূর্ণভাবে আস্থা হারিয়ে ফেলেছি। ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, এই লেখকের সম্পাদিত যেকোন বই এড়িয়ে চলা উচিত।  
৩। ব্রিজ টু কানাডা। হুমায়ূন কবীর ঢালী
বইটির বেশকিছু অংশ আগেই ফেসবুকে পড়া। সেকারণে যথেষ্ঠ আগ্রহ জন্মেছিল বইটির ব্যাপারে। হুমায়ূন কবীর ঢালীর গদ্য খুব সরল, প্রাঞ্জল। বইটি সুখপাঠ্য। আমেরিকা ও কানাডা ভ্রমণে লেখকের সাথে পাঠকও যেন পথ চলতে পারেন নির্দ্বিধায়। তবে, বেশ কিছু জায়গায় অতিরিক্ত তথ্যের সন্নিবেশ বাহুল্য মনে হয়েছে। এটুকু না থাকলেও বোধহয় তেমন ক্ষতি বৃদ্ধি হত না। বিশেষ করে, মার্ক টোয়েন-এর গল্পটি না থাকলেই বোধহয় ভাল হত। তাতে লেখকের স্বাদু গদ্য আরো তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করা যেত। বইমেলায় অংশগ্রহণ করতে যাওয়া থেকে শুরু করে কাজের খোঁজ করা কিংবা কাজের অভিজ্ঞতা, সব মিলিয়ে লেখকের এক অন্য জীবনের খোঁজই আমরা পাই ‘ব্রিজ টু কানাডা’য়।
৪। বাক্সরহস্য। সত্যজিৎ রায়
বইটি আগের পড়া ছিল। তাও আবার পড়লাম। সত্যজিতের থ্রিলার লেখার তুলনা সত্যজিৎ নিজেই। তবে আমার মনে হয়, বাংলা সাহিত্যের আরো অনেক পাওনা ছিল সত্যজিতের কাছে। তিনি ঠিক ততটুকু সুবিচার করেননি নিজের নামের প্রতি। যেমন, এই ‘বাক্সরহস্য’ গল্পটাতেও পাঠকের সংযোগ ঘটার কোন সুযোগ ছিল না। যদিও থ্রিলারে মূল ঘটনা আগে থেকে বোঝা না যাওয়াই স্বার্থকতা। তাতে একদম শেষ পর্যন্ত গল্পের সাসপেন্স বজায় থাকে। কিন্তু সামান্যতম ইঙ্গিতও না মেলাটা পাঠক হিসেবে গল্পটাকে বহু দূরের বস্তু হিসেবেই ভাবায়। আরেকটা কথা হচ্ছে ছোটবেলা থেকেই (দু-একটি ব্যতিক্রম ছাড়া) যেকোন ফেলুদা কাহিনিতেই ফেলুদা চরিত্রে সব্যসাচী চক্রবর্তীকে দেখার কারণে এখন ফেলুদা পড়তে বসলেই চোখের সামনে সব্যসাচী চক্রবর্তীর চেহারা ভেসে ওঠে।
৫। ঝিলের ধারে বাড়ি। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়
শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘অদ্ভুতুড়ে’ লেখাগুলোর আলাদা একটা ব্যাপার আছে। পড়লেই যেন মনে হয় সেটা অন্য এক জগৎ। সেখানে সাধারণ যুক্তি কিংবা বুদ্ধি মেলেনা। পড়তে শুরু করলেই যেন হারিয়ে যাই অজানা কোন এক দেশে। যে দেশের ভূতগুলো হয় পরোপকারী। দিনের শেষে যেখানে সত্যের জয়, সুন্দরের জয়। মিথ্যার পরাজয় তো অবশ্যম্ভাবী। অদ্ভুতুড়ে সিরিজ পড়তে পড়তে বারবার মনে হয়, এই জগৎ তো মন্দ নয়! ‘ঝিলের ধারে বাড়ি’ ঠিক সেরকমই একটি বই। একটি ঝিলকে কেন্দ্র করে ডাকাতদের উত্তরপুরুষদের রেষারেষি, সেখান থেকে কত কিছু! শেষে গিয়ে ভালোর জয়, আর মন্দর পরাজয়।
এই সপ্তাহে পড়া বইগুলোর মধ্যে চারটি বই খুব ভাল লাগলেও বাকিটা আমার বিরক্তির উদ্রেগ করেছে খুব। সব মিলিয়ে মিশ্র অনুভূতি।





0 comments: