বুধবার, ২২ জুলাই, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 22/07/2020


          "উপকণ্ঠ 22 জুলাই সংখ্যা "
          "উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
                (ওয়েব ম্যাগাজিন)

  প্রকাশ কাল:-22/07/2020, বুধবার
               সময় :- সন্ধ্যা 7 টা


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত

মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here

উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here

👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇



Billet Doux

A poem by S. Sundar Mondal 

Who painted the girl as River ? 

A question still rises from the heaps of rosy syllables. But the question remains river.


The girl wrote the letter

Giving up all for loving you.

The girl wrote the letter 

Wanting to lose herself with you.

The girl wrote the letter 

Wishing to be showered with love forever.

The girl wrote the letter 

Wishing to create a nest.

The girl wrote the letter 

Asking to fill the nest with songs in.


Looking at the blue sky and waiting for you

How many times has the girl seen the hide-and-seek of the Sun and Moon,

Perhaps you too know.

Yet you've not come.

And,how is it possible ? You've not touched the syllables.

The girl has gone away with the river in much huff in Egypt 

Leaving her all squeezing out love being a stale flower on your courtyard.


Now,  you've made every letter a chapter.

And you've created a wholesome love offerings,wreathing one after another. 

Arranging assemblies you've cast your mournful love lines

To each and everyone in deep pain.

Yes. Will you do it as you're a real lover !






বর্ষার পদধ্বনি

                     রঞ্জনা রায়


 হারিয়ে যাচ্ছে তোমার আমার মাঝে

 কবিতার সোহাগ সাজানো রোদ্দুরবেলা।

 জীবনের অঙ্ক  খাতায় গুণিতক বাড়ে

 সতেজ ঘাসের সবুজ গন্ধ ফিকে হয়।

 অঘ্রাণ  শিশিরে  ধোয়া তোমার রূপালি চুল

 পরাবাস্তব চেতনার সমাহিত রূপকল্প।

 পশ্চিমের রোদে ভাসে নারীত্বের নব রসায়ন

 জৈবিক পর্দা সরিয়ে  খোঁজ  তুমি ইউটোপিয়া।

 প্রেম - ব্রহ্মকমল সুবাস

 শুষ্ক নারী চরাচরে বর্ষার নিঃশঙ্ক  পদধ্বনি।







অনুকবিতা

            শংকর হালদার

অনুকবিতা-০১


সমালোচনা বিশ্বাসের দৃঢ়তা বাড়ায় 

আর যে  বিশ্বাসী নিজের পথকে-

নিজে ঠিক চিনে নেয়  ।


অনুকবিতা-০২


সীমাবদ্ধতা সবকিছুর-ই পরিপূরক রূপ

অসীম স্বপ্ন বা আকাঙ্খা কল্পনার বহিঃপ্রকাশ মাত্র ।

ভূমিতে লোটানো এক অলৌকিক বাসনা বটে ।


অনুকবিতা-০৩


বে-রং কারো কাছে সহজাত প্রবৃত্তি

মুক্ত পথের প্রতিবন্ধকও বটে,

আসক্তির পথ ধরে জীবনে আঁধার নামে ।







দলছুট  এক মেয়ে 

                      শঙ্কর  ভট্টাচার্য 


খুঁটিনাটি  বিষয় গুলো এখনও ঋদ্ধি র ভুল হয় । আর প্রতিদিন  রাতে ই মেয়ে র কাছ থেকে অনুযোগ শুনতে হয় ।খুব সকালে রান্নার ভদ্রমহিলা  আসেন আর রকেট গতিতে হাত চালিয়ে সকাল ন'টার মধ্যে  রান্না শেষ।মেয়ের ব্যাগ,টিফিন,ড্রেস এ সব ঋদ্ধি  নিজের হাতেই গুছিয়ে দেয়।ওখানে  কেউ হাত দিক এটা ঋদ্ধি  পছন্দ  করেনা।সকালে রান্নার  মাসি এসে রান্না শুরু করে আর ঋদ্ধি টুকটূক করে মেয়ে র সবকিছু  তৈরী করে তবে মেয়ে র ঘুম ভাঙায়।

পৌলমী  মানে মৈমীর মা অর্থাত ঋদ্ধি র স্ত্রী  আজ থেকে সাত আট বছর আগে এখানকার এক নামকরা প্রমোটারের সাথে বিবাহ সুত্রে আবদ্ধ  হয়ে বাড়ী  থেকে চলে গেছে।তখন মৈমীর বয়স সাত কি আট।যদিও এক্ষেত্র মা এর অধিকারই বেশী তার নাবালিকা মেয়ের ক্ষেত্রে ।তবু এখানে ঋদ্ধি  এবং পৌলমী এদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে  বিচারক অনুমতি দেন নাবালিকাকে  বাবার সঙ্গে  থাকবার।

তা,রপর থেকে ঋদ্ধি র কাছে জীবনের  মানেটাই পাল্টে যায় ।সারা দুনিয়া  একদিকে  আর মৈমী আর এক দিকে।সারা দিনের হাসি দুঃখ সব ভাগ করে নেয়  ওরা দুজন।

বাবার সাথে ওর সম্পর্ক এতটাই  সহজ এবং  সাবলীল যে মৈমী প্রথম যেদিন ঋতুমতি হল সেদিন বাথরুম থেকে বেরিয়ে  ভয় পেয়ে  কাঁদতে কাঁদতে  বাবার কাছে সব কিছু বলে আর ঋদ্ধি ও ব্যাপারটা বুঝতে পেরে মেয়ে কেপাশে বসিয়ে  আদর করে সহজ সরল ভাষায়  "ইউরো জেনিটাল' সিস্টেম মেয়ে কে বুঝিয়ে  দেয়।সব শোনার পর মেয়ে  বলে "দেন ইট ইস ভেরি কমন ফর অল ফিমেল?"।

সাধারণত বাড়ী থেকে স্কুল  বাসেই মৈমী যাতায়াত করে।সাড়ে দশটায় স্কূল শুরু,ওকে পৌনে দশটায়  বাস তুলে নেয়  একেবারে বাড়ির  সামনে থেকে।আর ফের পাঁচটার সময়  নামিয়ে দেয় ।ঋদ্ধি  মেয়ে র সবকিছু  রেডি করে সাড়ে নটার মধ্যে  বেরিয়ে পড়ে।ওর ডুপ্লিকেট চাবিও থাকে সঙ্গে ।পৌনে দশটায়  মৈমী চাবি দিয়ে  বাড়ী থেকে বেরোয়।পৌলমী দ্বিতীয় বার বিয়ে করে চলে যাবার পর এটাই  ওদের দৈনন্দিন  রুটিন।

পাঁচটায়  বাড়ী  ফিরে মৈমী অপেক্ষা করে বাবার জন্য ।ঋদ্ধি  যে ভাবেই  হোক ছ'টার মধ্যে  ফিরে আসে।তারপর শুরূ হয় বাপ,মেয়ে র আড্ডা ।এরই  ফাঁকে  চা খাওয়া, টিফিন খাওয়া  তারপর মৈমী ব্যস্ত হয়ে যায় নিজের পড়াশুনা তে আর ঋদ্ধি  নিজের অফিসের কাজে।

         পঁচিশে  জানুয়ারি  ওদের স্কুলের বাৎসরিক  sports.মৈমী দুটো ইভেন্ট এ নাম দিয়েছে।ওর বায়না সেদিন বাবাকে ওর স্কুলে পৌছে দিতে হবে।আর ফেরবার সময়  ও টোটো করে নিজেই চলে আসবে ।অগত্যা  ঋদ্ধি কে মেয়ে র কথা মেনে নিতে হয়।

বাস পেতে দেরী হবার দরুণ  ওদের স্কুল পৌছতেও দেরী হয়ে  গেল।মর্নিং  এবং ডে দুটো স্কুলেরই  একসাথে sports ফলে গার্জেন দের ভীড় ভালই হয়েছে।ঋদ্ধি  আর মৈমী  একসাথে  হন্তদন্ত  হয়ে স্কুলে  ঢুকছে ঠিক এই সময়  গেটে এক ভদ্রমহিলা  ঋদ্ধি কে নাম ধরে ডাকে।ঋদ্ধি  থেমে যায় ।

পাল্টা  প্রশ্ন  করে ঋদ্ধি ' কেমন আছ?"

মহিলার  সংক্ষিপ্ত  উত্তর  "ফাইন"।

ঋদ্ধি  বলে "তোমার  ছেলেও কি এখানে  পড়ে?"

মহিলা  বলেন "হ্যাঁ  ,নার্সারি, মর্নিং ।তবে সামনেরবার ওকে ডিপি এসে ভর্তি  করব এখানে পড়ে কোন কেরিয়ার  হবেনা।"

ঋদ্ধি  একটু ঘাড়  নাড়ে।

এবার মহিলা মৈমীকে উদ্দেশ্য করে বলে "হ্যালো  বেবি হাউ আর ইউ?"

সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে মৈমী বাবার হাত ধরে টানে "বাবা,চল দেরী হয়ে যাচ্ছে  যে।"

ঋদ্ধি  মৃদূ হেসে মহিলাকে  বলে "চলি"।

মহিলা  একটু বাঁকা  হেসে বলে " স্বভাব টা একদম বাপের মত হয়েছে।"

রাতে ডাইনিং  টেবিলে আজকের sports এর পোস্টমর্টেম  করছিল বাপ ও মেয়ে ।মৈমী  দুটো ইভেন্টেই সেকেন্ড  হয়েছে।খাওয়া  যখন প্রায় শেষ

তখন হঠাৎ ই ঋদ্ধি  বলে "তুমি সকালে ঐ ভদ্রমহিলা র সাথে ঐ রকম ব্যবহার  করলে কেন?"

মুহূর্তে  মুখের ভাব পাল্টে যায় মৈমীর ।চোস্ত  ইংরেজি তে বলে "সি ডিসারভস সাচ বিহেভিয়ার ।"ঋদ্ধি  পাল্টা ধমক দেয় " উনি একছন সম্ভ্রান্ত মহিলা ।তূমি জান উনি কে"?

মুখটা আরও  কঠিন  হয় মৈমী র " আমি জানি উনি কোন কলেজের সম্মানীয় অধ্যাপিকা  নয়,

দায়িত্বশীল  ডাক্তার  নন,এমনকি সমাজের  কোন দায় ভার ওনার নেই।আর কিছু  বলবে?

ঋদ্ধি  ভ্য় পায় "না"

আবার মৈমী বলে "আনফরচুনেটলি সি ওয়াস মাই মাদার।ইয়োর ওয়াইফ।"

ঋদ্ধি  বলে "অনেক রাত হোল এবার শুতে যাও।"







বর্ষার দিনের অভিজ্ঞতা

 (ছোটগল্প)

                   আব্দুল রাহাজ

একবার সুবল আর সুজন বর্ষার দিনে স্কুলে যাচ্ছে তখন ঝিম ঝিম করে বৃষ্টি পড়ছে পশ্চিম আকাশে একটা কালো মেঘের আচ্ছাদন করে আছে বৃষ্টি নামলো বলে ওরা আস্তে আস্তে গ্ৰামের কাদা মাখা পথ দিয়ে স্কুল যাচ্ছে ওদের ছাতা বলতে কচু গাছের পাতা এই বুদ্ধিটা সুবল বার করেছে। তখন স্কুলে যেতে বেশ অনেকটা পথ বাকি পাশে হাবুলদের বড়ো বটগাছ ওরা দেখল  একজন বৃদ্ধা মানুষ কত কষ্টে আছে সুজনের চোখে পড়লো প্রথম তখন বেশ জোরে বৃষ্টি নেমেছে সুবল বললো মানুষ টিকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে মেতে হবে সুজন বললো তাহলে স্কুলে যাবিনা আরে পাগল আগে মানুষ কে বাঁচায়  তারপর স্কুল আরে আমাদের মানব সেবা কর্মী যে সুজন খারাপ হচ্ছে কিন্তু সুবল বললো  বিপদের দিনে মানুষের পাশে দাঁড়ায় পরকালে শান্তি পাওয়া যাবে সুজন মুখ খুললো আরে আমাদের মনীষী সুবল একটু রেগে বললো ধৈর্য্য হারাচ্ছে কিন্তু আমার সুজনের দিকে একটু তেড়ে গেল মুষলধারে বৃষ্টি নামলো ওরা বৃদ্ধ মানুষটিকে একটা কুটির ঘরে নিয়ে গেল সুবল নিজের জামা খুলে বৃদ্ধাকে গাঁ মুছিয়েছে আরে কী করছিস সুবল তখন সুবল বললো সুজন চুপ করে বোস থাক কোন কথা বলবিনা সুজন বাইরের দিকে তাকিয়ে থাকলো সময়ে সময়ে আড় চোখে দেখে সুজন । একটা সময় সুবলের টিফিন বৃদ্ধা দাদুর মুখে তুলে তুলে খাওয়ালো একটানা চেয়ে রইলো সুজন এরপর দেখতে অনেক সময় হলো বৃষ্টি কোন মতেই থামছে না অঝরে বৃষ্টি নামছে সুজনের কাছে ঘড়ি ছিল দেখলো চারটে বাজে স্কুল ছুটি হওয়ার সময় হয়ে গেছে সুজন বললো চল বাড়িতে সুবল বললো দাদু ঘুমাচ্ছে আরেকটু দাঁড়ায় তারপর যাবো ওরা সাড়ে চারটার সময় ওখান থেকে বাড়ির পথে রওনা দিল সুবল বার বার পিছন দিকে তাকায় সেই বৃদ্ধার দিকে সুবল আজকের দিনটা আমার কাছে একটা বিশেষ দিন হয়ে থাকবে। যদি কোনদিন স্কুলে কোন অভিজ্ঞতার কথা বলতে  বললে আজকের দিনের কথা উৎসর্গ করবো আর এবছরের বর্ষায় আমার শ্রেষ্ট অভিজ্ঞতা যা আমার সারাজীবন আমার মনের মাঝে আজীবন স্মৃতি বিজড়িত হয়ে থাকবে।






🌹🌹🌹 পুরুষ  🌹🌹🌹

                      ✍✍ শাশ্বতী দাস


        ফুটপাতে এসে অফিসের দিকে শেষবারের মতো ফিরে তাকায় শ্রেয়া। কাল থেকে আর আসবেনা এখানে। মাত্র  ছ'মাসের চাকুরী জীবন শ্রেয়ার এই অফিসে। তবু কেমন যেন একটা মায়া পরে গেছে অফিসের ওপর, তার কেবিনটার ওপর। ভাবতেই মনটা কেমন যেন হুহু করে ওঠে শ্রেয়ার। শুধু কি এইজন্যই মনটা হুহু করছে শ্রেয়ার! মূহুর্তে চোখের সামনে ভেসে ওঠে মায়ের করুন মুখটা, ছোট ভাইটার মুখটা।

             বাবা মারা যাওয়ার পর মা, ভাই, সংসারের দায়িত্ব এখন শ্রেয়ার। ভাইটা এই বছরে উচ্চমাধ‍্যমিক দেবে। তার পড়াশোনার খরচ, স্কুলের মাইনে এসব কোথা থেকে আসবে! মায়ের ওষুধ!! না, আর ভাবতে পারেনা শ্রেয়া। যা হওয়ার হবে। আবার টিউশানি শুরু করবে শ্রেয়া। টিচার হিসাবে বেশ নাম ছিল তার। স্টুডেন্টের জন্য কোনোদিন ভাবতে হয়নি তাকে। একবার যে তার কাছে পড়ত, সে আর ছাড়তে চাইতো না। চাকরি হওয়ার পরেও অনেক গার্জিয়ান তাকে অনুরোধ করেছিল। তার নিজের সুবিধামতো সময়েই তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াতে বলেছিল। হ‍্যাঁ, ঠিক আবার টিউশানি শুরু করবে শ্রেয়া। কিন্তু নিজের মান - সম্মান বিসর্জন দিয়ে এইভাবে এই অফিসে চাকরি করতে পারবে না সে। অফিসের বসের কথা মনে পড়তেই গা টা গুলিয়ে ওঠে শ্রেয়ার। ছিঃ, এতো খারাপ কোনো মানুষ হতে পারে!! এতোটা দুশ্চরিত্র, এতোটা নির্লজ্জ! বয়সে হয়তো শ্রেয়ার বাবার চেয়েও কিঞ্চিৎ বড়ই হবেন। তবু নিজের মেয়ের বয়সী একটি মেয়ের ওপরেও এতো লোভ লোকটার!! এরা কি আদৌ মানুষ!! নিজের মেয়ের বয়সী একটা মেয়েকে কু - প্রস্তাব দেওয়ার সময় এদের কি একবারও চোখের সামনে নিজের মেয়ের মুখটা মনে পরেনা!! 

            এই মানুষ গুলোকে দেখলে পুরুষ জাতিটার ওপরেই ঘৃণা হয়।

             এইসব ভাবতে ভাবতেই কখন যে অনেকটা দূর চলে এসেছে  শ্রেয়া বুঝতেই পারেনি। হঠাৎ সম্বিত ফেরে কিছু মানুষের চিৎকারে, "এই গেলো, গেলো!" চমকে ওঠে শ্রেয়া। সামনে তাকাতেই দ‍্যাখে একজন মহিলা, মনেহয় ভিখারী হবে। মাঝ রাস্তায় পরে   ছটফট করছে, রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা গা! একজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে, রাস্তা পার হচ্ছিলো অ - প্রকৃতিস্থ ভিখারী মেয়েটি। এমন সময় একটি বড় গাড়ি এসে তাকে ধাক্কা মারে। এতোটাই অমানুষ সেই গাড়ির চালক যে ধাক্কা মারার পরে একবার তাকিয়েও দ‍্যাখেনি মেয়েটা মরে গেছে না বেঁচে আছে! তাকে হাসপাতালে নেওয়ার দরকার আছে কি না! এইতো  আমাদের সমাজ!! সঙ্গে সঙ্গে শ্রেয়ার চোখের সামনে ভেসে ওঠে অফিসের বসের নোংরা মুখটা। " হায় রে পুরুষ!!" স্বগতোক্তি করে শ্রেয়া। 

                এমন সময়েই শ্রেয়া অবাক হয়ে দ‍্যাখে, রাস্তার ধারের চায়ের দোকানের বখাটে ছেলেগুলো  - যাদেরকে আমাদের সমাজ ঘৃণার চোখে দ‍্যাখে, যাদেরকে আমাদের সমাজের তথাকথিত ভদ্রলোকেরা অশিক্ষিত, অসামাজিক বলে, তারাই কয়েকজন  দৌড়ে গিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পরে একটি গাড়ি দাঁড় করিয়ে ভিখারী মেয়েটিকে পাঁজাকোলা করে তুলে গাড়ির ভেতরে  শুইয়ে দিয়ে সামনের একটি হাসপাতালে যেতে বলে। আর বাকী কয়েকজন রাস্তায় ছড়িয়ে পরে  থাকা টাকা পয়সা, জিনিসপত্র যত্ন করে গুছিয়ে এনে চায়ের দোকানে রাখে। শ্রেয়া অবাক হয়ে ভাবে, এরাওতো পুরুষ! এরাতো সমাজের নীচুতলার বাসিন্দা! অথচ কত সহ মর্মিতা এদের মনে!! এদের দেখলে মনে হয় আজও মানুষের বিবেকবোধ বেঁচে আছে, ফিরে আসে পুরুষ জাতির প্রতি হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস।।

🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁🍁






শুভ জন্মদিন রেসলার শন্ মাইকেল !

(স্মৃতিকথা)

~ রাজা দেবরায়

হিন্দী বা বাংলা সিনেমা দেখি অনেক পরে । তখন রেসলিং-এর প্রতিই অনুরাগ ছিলো । পরে যদিও জানতে পেরেছি এগুলো ফলস্ । যাই হোক শন্ মাইকেল ছিলো তখন আমার যাকে বলে হিরো, 'আদর্শ' ইত্যাদি ।


তখন বাংলাদেশের চ্যানেলে রেসলিং দেখতাম । শন্ মাইকেল আয়না নিয়ে আসতো, সাথে দুইজন অপরূপ সুন্দরী থাকতো । সুন্দরীদ্বয় বিভিন্ন ভঙ্গিমায় দাঁড়াতো । আর শন্ মাইকেল আয়নায় তার সুগঠিত দেহ দেখে দেখে বিভিন্ন ধরনের স্টাইল করতো । এগুলো পরে সেসময়ের বাচ্চা ছেলেটি নকল করতো । উফ্ একটা অন্যরকম ব্যাপার ছিলো তখন ।


অনেক পরে আনন্দমেলা বা এই জাতীয় ম্যাগাজিন পরে জানতে পারি এগুলো ফলস্ । যদিও তখনও-এখনও বিতর্ক আছে । অনেক অনুরাগী মানতেই চান না যে এগুলো আসলে নকল । আমি ম্যাগাজিনে পড়েই (এটা যে ফলস্) বিশ্বাস করেছিলাম এবং এখনও সেই বিশ্বাসেই বিশ্বাসী ।


যাই হোক একদা স্বপ্নের নায়ক শন্ মাইকেল-এর প্রতি শুভেচ্ছা রইলো ।







স্বপ্নের দেশ 

      -গণেশ দেবরায় 

স্বপ্নেরা ভাসে, ভাসে দুরে 

স্বপ্নেরা হাসে, হাসে আকাশে -

চলো যাই ভেসে সেই দেশে 

চলো যাই ভেসে স্বপ্ন সাগরে। 


সেখানে আছে সীমাহীন আকাশ 

সেখানে আছে নির্মল বাতাস, 

আকাশের সীমানায় উজ্জ্বল আভাস 

স্বপ্নের পাখিদের সেথায় বাস। 


একতারার সুর সেখানে বাঁধা 

মিলনের গান সেখানে সদা 

চলো সে দেশে আমরা ভাসি 

চলো সে দেশে জীবন গড়ি।









কবিতা--মৃত‍্যু

      মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

ওরে দেখনা ওই মরণ পানে

চিরনীদ্রা নিয়াছে যেরে

মরিয়াছে আমার দাদা রে

দেখে ভয়কি লাগছে না তোরে

আসবে সবার কপালে

শতশত কান্নায় নাইরে মাপ তোরে

পৃথিবীর মানুষ পাবেনা ছাড়।


থাকতে জীবন করো যতন

সময়কে দাও গুরুত্ব।

ফুটিয়ে তোলো করে যাও

বিশ্বের যে ইতিহাস।


 



   কবিতা 


বার বি কিউ 

মৌসুমী গুহ রায় 

গাছ খুব প্রিয় আমার। নিঃসঙ্গ এক গাছ।

রোদে, জলে মানুষ‌ও খাঁটি হয়। একলা মানুষ।

অন‍্য ভুবনের গল্প ভেসে আসে। নির্জন ভুবন।


শান্তি, অশান্তি, আনন্দ, কষ্ট মানুষের জীবনে।

রঙীন হয় মানুষ, রামধনুর মতো।

হৃদয় পোড়ে রোদে, আগুনে। সুন্দর বার বি কিউ।


ঘুম ঘুম চোখ। ওষুধ অসুখে বিসুখে।

সাতটি তারা কখন নেমে আসে পৃথিবীতে।

জীবনানন্দের অন্ধকার আমারো কি ছিল না ?


পাহাড়, সমুদ্র, নদী, মেঘ , আকাশ জীবনে ও কবিতায়।

কবিতা দিয়েছে অসুখ ও বিষণ্ণতা, কবিদের যেমন হয়।

কবিরা দিয়েছে শান্তি ও শুশ্রুষা, মানুষ কেমন হয়।

                     





প্রকৃতি উত্তাল হলে

              জগদীশ মন্ডল

মানব সভ‍্যতা বাঁচাতে

প্রকৃতি দিল কোল,

চারদিক দিল পাখপাখালি

সবুজের আঁচল।

মানুষ ছিল শান্ত স্বভাব

সুখে বসবাস,

জৈব সারে ফলতো সোনা

মিলেমিশে চাষ।

উচ্চ আশা এলো সেদিন

বিষিয়ে দিল মন,

প্রকৃতির কথা ভাবলো না সে

অর্থভাব সারাক্ষণ।

জঙ্গল কাটলো জলা ভরলো

তুলল বহুতল,

লোভী মানুষ শুষে নিলো

মাটির নীচের জল।

নিজের স্বার্থে মশগুল হলো

দুষ্টু চিন্তা মনে,

বর্ষাকালও মুখ লুকালো

এমন আচরণে।

সময় থাকতে জল সংরক্ষণ

সবুজে ঢাকো ভাই,

প্রকৃতি উত্তাল হলে যেন

বাঁচার উপায় নাই।






                        " গাছ "

              

                হামিদুল ইসলাম

গাছকে নিয়ে গর্ব করি 

গাছের জন‍্যে উৎসর্গ করি প্রাণ 

গাছ আমাদের বন্ধু বটে 

গাছকে চিনে রাখি সারা জীবন   ।


তবু জ্ঞানপাপীরা গাছ কাটে প্রতিদিন 

অরণ‍্য আজ ফাঁকা 

গাছের অমূল‍্য জীবন তারা করে শেষ 

জীবনের উপর চালায় লড়ির চাকা ।


এক একটি গাছ এক একটি জীবন 

গাছ ফুল ফলে বাড়ায় সাহায‍্যের হাত 

বিশুদ্ধ অক্সিজেন পাই আমরা

গাছে গাছে জীবন বিগলিত দিনরাত    ।


এসো গাছের জন‍্যে হাঁটি মাইল পথ 

গাছ আমাদের বন্ধু 

বন্ধুর জন‍্যে হৃদয় রাখি খোলা 

গাছ পান্থজনের সখা, অমৃত সিন্ধু । 






কবিতা : অভিজ্ঞতার আলো! 

বিশ্বজিৎ কর


আমার চেতনায় নিষ্ঠুরতা জাগে, 

অকৃতজ্ঞতার দেঁতো হাসিতে! 

সুবিধাবাদের পোশাকে ওরা সাবলীল, 

অনৈতিকতার বধ্যভূমিতে ওরা গতিময়, 

ওরা আসে সাহায্যপ্রার্থনার ঝুলি নিয়ে, 

বস্তাপচা সংলাপ মুখে! 

অকৃতজ্ঞতায় জেগে ওঠা নিষ্ঠুরতার আলোয় মানুষ চিনতে পারি! 

এমন অভিজ্ঞতার মশাল এগিয়ে চলার পথ দেখায়!






বিভাগ : গল্প

                ভিসুভিয়াস

                               কবিরুল

" ......   .....  .......


আমি বিদ্রোহী  আমি রণক্লান্ত

আমি সেই দিন হব শান্ত

  ....  .... ...   ...   "


     কবিতাটা যতবার শোনে পৌলমী ততবার শিরায় শিরায় একটা আলাদা উত্তেজনার প্লাবন অনুভব করে। কবিতাটাই ওর জীবনের সব মানে , ছন্দ  পাল্টে দিয়েছে। বদলে দিয়েছে জীবনের সব  সমীকরণ।


     রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোরে কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা জমায়েৎ হয়েছে। ওদের কিছু দাবী দাওয়া আছে। আজ আবার নজরুলের জন্মদিন। ওদের আন্দোলন একটু শক্তি পেতেই বিরোধীদের উস্কানিতে পুলিশ ও ব্যাফ বাহিনী আন্দোলনকারিদের উপর হিংস্র নেকড়ের মতন ঝাঁপিয়ে পড়ল। 


      বোমা বারুদে , ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে এল চারিদিক। যে যেদিকে পারল ছুটে পালাল।  সবাই পালালেও একজন পালায় নি। 


     চোয়াল শক্ত করে প্রতিবাদী ভাষণ দিয়ে চলল। 

     খুব ছোটতে নজরুলের ভাব আদর্শ ওর মনে গেঁথে গেছে। পরাজিত সৈনিকের মতন পালিয়ে যাবার পাত্র সে নয়।


      আচমকা বিরোধী পক্ষের লাঠির আঘাত মাথায় এসে পড়ে। মাথা ফেটে যায়। রক্তে লাল হয়ে যায় জৈষ্ঠ্যের পিচ গলা রাস্তা।

বিশাল শরীরটা ঘাম আর রক্তে ভিজে লুটিয়ে পড়ল। তবুও হাতে ধরা রয়েছে মাইক্রোফোন।


আন্দোলন থেমে যায়নি। 


  রক্তাক্ত শরীরটাকে নিয়ে ছুটে চলল হসপিটালের দিকে।

 মাথায় জোর আঘাতের ফলে ছেলেটা প্রাণে বাঁচল বটে , তবে চিরদিনের মতন স্মৃতি লোপ পেয়ে গেল। 


 কিছুদিনের মধ্যেই মস্তিষ্কের বিকার হয়। শেষ আশ্রয় হয় অ্যাসাইলামে।


পৌলমীর দিদি একদিন কলেজে ধর্ষিতা হয়। তারই প্রতিবাদে এই প্রতিবাদ সভা।


  এগারো বছর কেস চলার পর অপরাধীরা সাজা পেলেও মূল আন্দোলনকারী আজও অ্যাসাইলামের অন্ধ কুঠুরীতে মানসিক রোগীর তকমায় বন্দী।


 পৌলমী আজও নজরুল জয়ন্তীতে ছুটে আসে ওখানে। ঘরের ভিতর থেকে শোনা যায় সাম্যের গান। প্রতিবাদের ভিসুভিয়াস যেন লাভা স্রোত উগড়ে দেয়।


  চেতনার নাম , বিপ্লবের নাম - মীর তৌফিক আলম , সেকেণ্ড ইয়ার , বি এস সি ( বায়ো )


এগারো বছর পর আজ আবার নজরুল বরণের দিন। 

বিদ্রোহী মোরের কাছেই বসেছে তৌফিকের মর্মর মৃর্তি।

আকাশে বাতাসে শুধুই আজ বাণী বন্দনা। সাম্যের গান।


     পৌলমী শক্ত হাতে হারমোনিয়ামটা বাজাতেই একদল তরুণ তরুণীর  গলা তরোবারির মতন ঝলসে উঠল -


 " কারার ঐ লৌহ কপাট

      ভেঙ্গে ফেল.....

    ....    ....  .

    ...  ....   পাষাণ বেদী

    ..       ...    ...   ..."

     ভিসুভিয়াসের উন্মাদনা , লাভা স্রোত আরো একবার মানুষ টের পেল।







আমি 
রাজকুমার ঘোষ 

তখন,
আমি মুক্ত, আমি চঞ্চল… 
খুঁজেছি মায়ের আঁচল। 
ছিল না কোনো চাপ বা অনুতাপ … 
থেকেছি বাবার ভয়ে চুপচাপ। 
আমি দুরন্ত, আমি উন্মাদ… 
তবুও দাদু-ঠাম্মার সোনার চাঁদ। 

মাঝে, 
আমি প্রতিবাদী, আমি অশান্ত… 
বন্ধুরা বলেছে আমি নাকি ক্লান্ত। 
ছিল বিবেক বোধ, খানিকটা মেধাবী… 
শিক্ষকের চোখে হয়েছি বেহিসাবি। 
আমি বাচাল, আমি সাধারণ … 
তবুও তার হৃদয়ের অবলম্বন। 

এখন, 
আমি ধীর, আমি নিশ্চুপ… 
ছাত্র-ছাত্রী'র মনে বিরূপ। 
কখনো কবি, কখনো বা লেখক… 
পাঠকের মনেতে হইনি সাবালক। 
আমি মেজাজী, আমি দিই কষ্ট … 
তবুও ছেলের চোখে আমি সর্বশ্রেষ্ঠ।




1 টি মন্তব্য: