"উপকণ্ঠ 03 আগষ্ট সংখ্যা "
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-03/08/2020,সোমবার
সময় :- সন্ধ্যা 5:30 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
রাখি উৎসব/বন্ধন
রাজা দেবরায়
রাখি বন্ধন বা উৎসব এলেই
ভাইকে রাখি পরায় বোন
বোনকে যদি পরায় ভাই
এ কেমন দৃষ্টিকোণ !
রাখি বন্ধন আসলে
সৌভ্রাতৃত্বের ব্যাপার
সবাই সবাইকে পরাতে পারে
উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একত্রে থাকার।
'রক্সা-বন্ধন' !
রাজা দেবরায়
সম্ভবত বছর চারেক আগে 'রক্সা-বন্ধন'এর একটি বিজ্ঞাপনে দেখেছিলাম -
এক বোন তার দুই ভাইকে রাখি পরিয়ে দিয়েছে । এক ভাই নামকরা একটি "চকলেট" কোম্পানীর প্যাকেট বোনের হাতে তুলে দিয়েছে । বোন খুব খুশি । আরেক ভাই রঙীন কাগজে মুড়ে একটি প্যাকেট বোনের হাতে দিয়েছে । বোনের মুখে হাসি নেই । পরে প্যাকেট খুলে দেখে ঐ ভাইয়ের মতই নামী "চকলেট" কোম্পানীর প্যাকেট । বোন ভীষণ খুশি ।
আসলে বিজ্ঞাপনটি খুব চতুরতার সাথে বানানো হয়েছিল । গিফ্ট দিতেই হবে এবং এটাই দিতে হবে, বাকী অন্য সব গিফ্টের কোন দাম নেই । ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো ঠিক থাকতে পারে ।
কিন্তু এই বিজ্ঞাপনটি নৈতিকতার সীমা ছাড়িয়েছে বলে আমি মনে করি । কারণ 'রক্সা-বন্ধন'এর মতো পবিত্র সম্পর্ককে গিফ্টের মাপকাঠিতে তুলনা করা মোটেই উচিত নয় ।
যেকোন সম্পর্কে গিফ্ট মূখ্য বিষয় হতে পারে না । কিন্তু বিজ্ঞাপন আমাদের বোঝাতে বাধ্য করছে সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য গিফ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
আজকাল বিভিন্ন "ডে"ও এই গিফ্ট কেনানোর জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে । আবার কি গিফ্ট দিতে হবে সেটাও পরিকল্পিতভাবে স্থির করে দেওয়া হয়েছে । যেকোন গিফ্ট দিলেই হবে না ।
আমাদের এই গিফ্ট কালচার থেকে মুক্ত হতে হবে এবং সম্পর্কটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে । সম্পর্কের মাপকাঠি যেন গিফ্ট না হয় ।।
রাখী পূর্ণিমা
অনাদি মুখার্জি
রাখী বন্ধন হল ভাই বোনের পবিত্র সম্পর্ক,
যার কাছে জাতপাত, ধর্মের নেই কোনো অন্ত।
ভাইয়ের হাতে যে সুতো বাঁধা হয়,
সেই সুতোর মূল্য অনেক বেশি হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রাথমিক বীজ বপন করে,
এই পবিত্র রাখী বন্ধনের মধ্য দিয়ে ।
বোন যখন রাখী বাঁধে ভাইয়ের হাতে,
ভাই তখন আজীবন রক্ষা করার দায়িত্ব নেয় কাঁধে।
ভাই বোনের বন্ধন হোক অন্তহীন,
মজবুত হোক এই রাখীর বাঁধন।
পবিত্র হোক এই শুভ মিলন ,
ভরে যাক সুখে সবার জীবন ।
এসো তবে আজ এই প্রতিজ্ঞা করি,
ভাই বোন সবাই মিলে একসাথে চলি।
ভ্রমণকথা
শ্রীকৃষ্ণ শরণম্
অগ্নিমিত্র
কয়েক বছর আগের কথা। দুদিনের ছুটি পাওয়া গেল । ভাবলাম, ঘুরে আসি মায়াপুর ও নবদ্বীপ । পর্যটন মানচিত্রে দুটি জায়গারই স্থান উল্লেখযোগ্য !
কলকাতা থেকে গাড়ি ভাড়া করে কৃষ্ণনগর হয়ে প্রথমেই মায়াপুর। একটু ঘিঞ্জি জায়গা । ইস্কন মন্দির ছাড়া তেমন কিছু দেখবার নেই ।
মন্দিরেই শঙ্খ ভবনে থাকলাম সেদিন। একটি চারজনের মতো আকারের বিশাল ঘর, দারুণ পরিচ্ছন্ন । ভাড়া যদিচ অনেকটাই বেশি, তাও খুব সুন্দর ব্যবস্থা! পাশেই খুব সুন্দর পুরনো মূল মন্দির; অতি সুন্দর মূর্তি ও পূজারতি! পাশেই তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক, সুবিশাল, বহুতল নতুন কৃষ্ণ মন্দির ।..
মন্দিরের ভোগ প্রসাদ দিয়েই সকাল , দুপুর ও রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া হল। পরদিন ভোরবেলা আবার মন্দির দর্শন করতে গেলাম স্ত্রীর অনুরোধে । খুব ভিড়, কীর্তন চলছে ।..মূর্তির একেবারে সামনে কেবল সংস্থার লোকজনের দাঁড়াবার অনুমতি ।
ইস্কন মন্দির প্রাঙ্গণ বিশাল, প্রায় তিনশো একর জমি নিয়ে তার অবস্থান । বাগান, গোশালা, সবই আছে। একপাশে শ্রীল প্রভুপাদের পুরনো সাধন মন্দির । খুব সুন্দর সেটি ।
এবার যাবার পালা নবদ্বীপ । মায়াপুরের লঞ্চঘাট থেকে লাইন দিয়ে লঞ্চে করে গঙ্গার ওপারে নবদ্বীপে পৌঁছলাম ।
নবদ্বীপ সুপ্রাচীন নগর ।.. শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থান নবদ্বীপ! এখানেই ' প্রাচীন মায়াপুর ' নামক স্থানে মহাপ্রভুর জন্ম হয়। অতি অনাড়ম্বর স্থান ।
এখানে একটা হোটেল বলা ছিল। এখানেও ঘর ভালো পেলাম।
জিনিস রেখেই বেরিয়ে পড়লাম নবদ্বীপের দর্শনীয় স্থানগুলি দেখতে। একে একে দেখা হলো মহাপ্রভুর জন্মস্থান, সোনার গৌরাঙ্গ মন্দির ও ষাট ফুট উঁচু গৌরাঙ্গ মূর্তি । সোনার গৌরাঙ্গ মন্দিরের মূর্তি সত্যিই সোনার। বিষ্ণুপ্রিয়ার বাড়িও দেখা হলো । খুব সুন্দর লাগলো।
নবদ্বীপের ঠাটবাট কম, আকর্ষণ বেশি । এখানের রাস উৎসব সুবিখ্যাত, যদিও আমরা একটু পরে গিয়েছিলাম ।
বিকেলে বিখ্যাত পোড়ামাতলা মন্দির দেখা হলো । একটি গাছের নীচে এই ছোট কিন্তু অতি জাগ্রত দেবীমন্দির । একবার গাছটি পুড়ে যায় বলে এমন নাম।
একরাশ ভালোলাগা নিয়ে এবার আবার গাড়ি ভাড়া করে প্রত্যাবর্তন! ..এখনো সেই স্মৃতি সমুজ্জ্বল । পারলে আবার যাবো এই জায়গাদুটিতে । অপেক্ষা কেবল সঠিক সময়ের ।।...
সৌম্য ঘোষ এর দুটি প্রবন্ধ
রাখী উৎসব -- সুরক্ষা র প্রতিশ্রুতি
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
রাখী উৎসব !
ভাই-বোনের এই চিরন্তন উৎসব বহু বছরের পুরাতন ইতিহাস। পুরাণেও এই রাখীর বিষয়ে একাধিক গল্প আছে । ভাই ও বোনের সম্পর্কের বন্ধন রাখীর সূত্রে আরো গভীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় ,পুরুষকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতীক হিসাবে মহিলারা কব্জিতে রাখীর সুতো বেঁধে দিতেন । ৩২৬ খ্রী: পূর্বে আলেকজান্ডার ও পুরুর যুদ্ধের সময় স্বামীর প্রাণ সংশয় হতে পারে এই আশঙ্কায় আলেকজান্ডারের স্ত্রী- পুরু কাছে যান এবং তাঁর হাতে রাখী বেঁধে দেন । পুরু অঙ্গীকার করেন তিনি আলেকজান্ডারের কোন ক্ষতি করবেন না ।
ইতিহাসে আরো উল্লেখযোগ্য রাখী বন্ধনের কথা কথিত আছে । চিতৌরের রানী কর্ণাবতী গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহের আক্রমণের আগাম খবর পেয়ে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন কে রাখী পাঠিয়ে সাহায্যের আবেদন করেন ।রাখী পেয়ে হুমায়ুন চিতৌরের দিকে অগ্রসর হন ।কিন্তু পৌঁছাতে একটু বিলম্বের জন্য ,সম্মান বাঁচাতে প্রথা অনুযায়ী আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দেন কর্ণবতি ও তাঁর সঙ্গিনীরা ।
পুরাণের কথা । যমরাজের অমরত্ব প্রার্থনা করে তাঁর বোন যমুনা তাঁর হাতে রাখী পরিয়ে দেন । এরপরই যমরাজ কথা দেন । তাঁর বোন যার হাতে রাখী পরিয়ে দেবে তাকে তিনিস্বয়ং রক্ষা করবেন ।
মহাভারতে উল্লেখ আছে , দ্রৌপদীর শ্রীকৃষ্ণের হাতে নিজের শাড়ি ছিঁড়ে পরিয়ে দেন এবং পরিবর্তে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন । আবার অনেকে বলেন , শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় হতদরিদ্র নারীর বেশে স্বয়ং মা লক্ষ্মীর বালীর কাছে আশ্রয় চান । বালি নিজের প্রাসাদের দরজা খুলে দেন তাঁর জন্য ।খুশি হয়ে মা লক্ষ্মী কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন
বালির হাতে ।
সুতরাং কীভাবে প্রথম রাখি উৎসবের প্রচলন হয়েছিল তার একটি মাত্র নির্দিষ্ট প্রামাণ্য তথ্য না থাকলেও , পুরাণে -রামায়ণে -মহাভারতে- ভারতবর্ষের ইতিহাসে নানা কাহিনী থাকলেও, এটা স্পষ্টত: সত্য রাখি উৎসবের মাধ্যমে ভাইবোনের সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয় ।
আসুন আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, ধর্মীয় সকল বাধা সংশয় উত্তীর্ণ করে, হিন্দু- মুসলমান -খ্রিস্টান আপামর সকলে পরস্পর পরস্পরের মঙ্গল আকাঙ্খায় ,পরস্পরকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হই , রাখি উৎসব ।।
_________________________
দ্বিতীয় প্রবন্ধ
-------------------
শীর্ষক : স্মরণে
"""""""""""""""""""""""""""
এক সন্ন্যাসী বিজ্ঞানী
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""
আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় যিনি পি সি রয় নামেও সম্যক খ্যাত , অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় ২রা আগস্ট, ১৮৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ ,শিক্ষক ,দার্শনিক ও কবি । তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালস এর প্রতিষ্ঠাতা ও মারকিউরাস নাইট্রাইট এর আবিষ্কারক । বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্র বসুর সহকর্মী । এক ভূস্বামী পরিবারে তাঁর জন্ম ।বাবা ছিলেন হরিশ চন্দ্র রায় ।এক ছোট মাপের জমিদার ।গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতায় চলে আসেন ।১৮৭০ সালে হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন ।পরে আলবার্ট স্কুলে ভর্তি হন । ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ।অতঃপর বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ( বর্তমানে বিদ্যাসাগর কলেজ ) ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮০ সালে এফ. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । প্রেসিডেন্সি থেকে গ্রিলক্রিস্ট বৃত্তি পেয়ে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে যান ।সেখান থেকে তিনি বিএসসি পাশ করেন ।পরবর্তীকালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েই ডিএসসি লাভ করেন । তাঁর গবেষণার Thesis ------ conjugated sulphates of copper magnesium group ------- A Study Of Isomorphous Mixture And Molecular Combination . এই সফল গবেষণায় তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ।এমনকি তাঁর গবেষণা পত্রটি শ্রেষ্ঠ মনোনীত হওয়ায় তাঁকে Hope Prize -- এ ভূষিত করা হয় ।
দেশে ফিরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। অধ্যাপনা কালে তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল -------- রসায়ন। তিনি নিত্যনতুন গবেষণা চালিয়ে যান । তাঁর উদ্যোগে Bengal Chemical কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১৮৯৫ সালে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট ( Hg NO2) আবিষ্কার করেন ।যা তাঁকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দেয়। তিনি তাঁর সমগ্র জীবনে মোট ১২ টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন । সমবায়ের উল্লেখযোগ্য পুরোধা পিসি রায় ১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে একটি Co-operative Bank প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯০৩ সালে পিতার নামাঙ্কিত R.K.B.K. HARRISH CHANDRA School প্রতিষ্ঠা করেন ।
১৯০২ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র তাঁর বিখ্যাত History Of Hindu Chemistry গ্রন্থটি প্রকাশ করেন ।বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯০৯ সালে বইটির দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালে তাঁকে রাজকীয় খেতাব নাইট উপাধি প্রদান করেন । ১৯১৬ সালে তিনি নবগঠিত "ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স -"- এ যোগদান করেন এবং ১৯২০ INDIAN SCIENCE CONGRESS GENERAL -- এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন । ১৯৩২ সালে তাঁর আত্মজীবনী LIFE AND EXPERIENCE OF A BENGALI CHEMIST -- এর প্রথম খন্ড এবং ১৯৩৫ সালে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ।অবসর গ্রহণের পর তিনি আমৃত্যু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ।
১৯৪৪ সালে ১৬ ই জুন , ৮২ বছর বয়সে এই সন্ন্যাসী বিজ্ঞানী সজ্ঞানে স্বর্গযাত্রা করেন ।।
রাখীবন্ধনের শপথ
বিপ্লব গোস্বামী
আজি রাখী বন্ধনের শুভক্ষণে
এসো শপথ করি ভাই ভগিনী সনে।
বনিতাগণে করব না হেলা
বিশ্বাস নিয়ে কভু করব না খেলা।
সহিব না কভু মোরা নারী অপমান
সতত গাইব মোরা নারীত্বের গান।
করতে মোরা মাতৃ ঋণ শোধ
করতে হবে কন্যা ভ্রণ হত্যা রোধ।
রাখী
আভা সরকার মন্ডল
রাখী এবার নয়তো হাতে
মুখে বাঁধার পালা,
অসুখ এসে বাঁধিয়ে দিল
এ কি বিষম জ্বালা।।
হাতে নয়তো পরব মুখেই
দিদির দেয়া রাখি,
আপদ বিপদ হতে তবু
দূরেই যেন থাকি।।
প্রোটিনযুক্ত পঞ্চ ব্যঞ্জন
বেড়ে দিয়ে পাতে ,
উপহারে দেবো যে মাস্ক
একে অন্যের হাতে।।
দিদি-ভাই এর ভালবাসায়
কু-নজর থাক দূরে,
কঠিন শপথ আজকে নিলাম
দাঁড়াবই যে ঘুরে ।।
কবিতা
রাখী বন্ধন
মিনতি গোস্বামী
আকাশে আজ পূর্ণিমা চাঁদ
টিপের মত গোল
সকাল হলে. চারিদিকেতে
হবে হৈ হট্টগোল।
বোনেরা সব. ভায়ের হাতে
বাঁধতে যাবে রাখী
আত্মজ নয় ধর্মজ নয়
কেউ থাকে না বাকী।
ভায়ের হাতে. রাখী পরিয়ে
মঙ্গলের কামনা
ভাইরা যেন নিশ্চিন্তে থাকে
সেই কবে বাসনা।
বঙ্গভঙ্গের. অশুভ ক্ষণে
রবিঠাকুর নিজে
রাখী বাঁধেন. সবার হাতে
শুভ মৈত্রীর খোঁজে।
অতিমারীর. কবলে আজ
মিলনে আছে বাধা
বোনেরা তবু. রাখীর দিনে
মানবে না তো বাধা।
ভায়ের নামে. পাঠাবে রাখী
সঙ্গে শুভ কামনা
ভাইটি হোক. অকুতোভয়
দূর হোক যন্ত্রণা।
ভার্চুয়ালেই সবার হাতে
আমি ও বাঁধি রাখী
আগামী দিনে. মঙ্গল হোক
সবাই হোক সুখী।
ঝড় বৃষ্টির রাত
আব্দুল রাহাজ
ভুবন আর সুরেশ দুই বন্ধু ওদের আজ স্কুলে পরীক্ষা শেষ হলো খুব আনন্দে হই হই করে সুজন আর ভুবন দীঘির পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছে হঠাৎ সুরেশ বললো চল আমার মামার বাড়িতে যাবো তুই কি যাবি ভুবন বললো হ্যাঁ হ্যাঁ তাহলে এখন বেলা দুইটা বাজে বোধহয় আমরা ঠিক সাড়ে তিনটায় বেরোবো এই বলে ওরা যে তার বাড়িতে চলে গেল। ভুবনের বাড়িতে বলা মাএই যাওয়ার জন্য অনুমতি দিল ওরা সাড়ে তিনটায় চার রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়ালো ওরা পূর্ব দিকের মাঠের দিকে চলে গেল ওদের গ্রামের পাঁচটা গ্রামের পর সুরেশের মামার বাড়ি খুব সুন্দর সুরেশ দের মামাদের গ্রামটা ভুবন শুনেছে সুরেশের মায়ের কাছ থেকে এই কথাটা। ওরা হাঁটতে লাগলো দুটো গ্রাম পার হলো আকাশে কালো মেঘ
সুরেশ বলল এমা এতো বৃষ্টি নামবে হালকা বাতাস বইছে ওরা পাশে দেখলে একটা পুরনো বাড়ি এদিকে ঝড় আর বৃষ্টি শুরু হল তখন বাজে সাড়ে চারটে ভুবন বলল কি করবি বাড়ি যাবি নানা বাড়ি যাব না পোড়ো বাড়ি থাকি কিছুক্ষণ যদি বৃষ্টি থামে তাহলে চলে যাব মামার বাড়ি ওরা পোড়ো বাড়িতে উঠলো তারপর আস্তে আস্তে বৃষ্টি ঝড় হচ্ছে বেশ অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এদিকে রাত হয়ে গেছে চারিদিকে সব কীটপতঙ্গের আওয়াজ আসে মাঝে মাঝে এক বিকট শব্দে যেন কেটে যাচ্ছে পুরো বাড়ি ওরা তো ভয়ে কাঁপতে শুরু করেছে হ্যাঁরে ভুবন কি করবি এখন আর কি হবে ভূতের হাতে আমাদের প্রাণটা চলে যাবে এই আর কি ভুবনের খুব সাহস সে পুরো বাড়িটা ঘুরে ছিল এদিকে পুরো বাড়ির একাংশ ভেঙে যেতে থাকলো সুরেশপ্রভুর কাছে প্রার্থনা শুরু করল এদিকে সারারাত ঝড়-বৃষ্টি হলো ওরা সেই রাতটা খুব খুব ভয়ে ভয়ে কেটেছিল তাদের ওরা ভোরবেলা উঠে দৌড় একেবারে মামার বাড়িতে গেল গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে মামার কাছে জল জল খাব সব ঘটনা মামার সাথে বলল মামা তো অবাক হয়ে গেল আরে তোরা ওই বাড়িতে ছিলিস ওখানে আমাদের গ্রামের সব মানুষদের পুড়ানো হয় সেজন্য এত বিকট আওয়াজ আসছিল ভুবন বলল যাক বাবা বেঁচে গেছি সেই ভালো আয় ভুবন হাসিখুশিতে রইল সুরেশ যেন এখনো কাঁপছে সেই ঝড়ের রাত ভুবন সুরেশ এর কাছে এক উজ্জ্বল স্মৃতি হিসেবে আজীবন থাকবে সুরেশের এই দিনটা বেশ স্মৃতিবিজড়িত হয়ে থাকবে সেই ঝড় বৃষ্টির রাত যা তাদের ভয় আরষ্ট গিয়েছিল এই ঝড় বৃষ্টির রাত গ্রামের সবার কাছে বলল ভুবন সবাই হো হো করে হেসে উঠলো কিন্তু শেষমেশ সেই পোড়ো বাড়ি সুরেশের বাবাদের তার মামারা ও জানতো না একথা সুরেশের বাবারা ওটা শ্মশানের জন্য বিলি করে দিয়েছে মানুষের কাছে তাই ওখানে এখন হানাবাড়ি রাতের বেলা শুধু বিকট শব্দ আর শব্দ তবু ঝড় বৃষ্টি রাতের ঘটনা তাদের কাছে আজীবন স্মৃতিবিজড়িত হয়ে থাকবে।
ভ্রমন
© মৌসুমী গুহ রায়
হেমন্তের পাতা ঝরা অরন্যে আমি গিয়েছি।
শুনেছি পাখির ডাক। নৈঃশব্দ অনুভূতি তে।
সবুজ মাঠ, গাছপালা ঘেরা চার্চেও গিয়েছি।
শীতের রোদে বসেছিলাম গাছের নীচে বেঞ্চিতে।
জংগল ঘেরা নির্জন পাহাড়েও গিয়েছি।
রাতে চিতা বেরয় শুনে দরজা বন্ধ করেছিলাম।
নির্জন সমুদ্র সৈকতে গিয়েছি।সফেন ঢেউ গুনেছি।
আকাশ আর সমুদ্র যেখানে মিশেছিল, তাকিয়ে থেকেছি।
ডুয়ার্সের নির্জন জংগলে, টিমটিমে আলোয় থেকেছি। ছবির মতো সাজানো কটেজ, মাঠ, রাস্তা।
রাজপুত বীর দের শহর উদয়পুরে বোটিং করেছি পিছোলা লেকে। জলমহল, হাওয়া মহল দেখে এসেছি।
" মৃত্যু আসে "
হামিদুল ইসলাম।
জলের ছায়া জলে ডুবে যায়
পড়ে থাকে জল
জীবন রুক্ষ মরুভূমি
তবু তোমার জন্যে প্রাণে রাখি বল ।।
ইতিহাস বদলায় প্রতিদিন
রাজা আসে রাজা যায়
পাখিরা ফিরে আসে সন্ধ্যার নীড়ে
মনের গভীরে ভূবন জেগে থাকে নিশ্চয় ।।
এ ভূবন শান বাঁধানো পুকুরঘাট
অথৈ জলে দাঁড়িয়ে থাকে ছায়া
বিশ্বকবি ফিরে আসে ইতিহাস হয়ে
চোখের জলে ফোঁটা ফোঁটা মায়া ।।
কদম বাড়াই সামনের পথ
ক্যাকটাস ভরা জীবন
ভীতির সমুদ্র পেরিয়ে যাই
ফিরে আসি হাতে নিয়ে মরণ ।।
ভাবি নি কোনোদিন
মৃত্যু এভাবে আসে
জীবনের গতি রুদ্ধ হয়ে আসে যখন
মৃত্যু ভাসে ফুলের সুবাসে ।।
কবিতা
আহ্লাদে
রুহুল আমিন
এতোটুকু ডুবতে চাইনি আহ্লাদে
উতলা আকাশ কাঁদে
আমার অশ্রু জল প্রবাহিত করে
তোমার ভালোবাসার উচ্ছ্বাসিত সে প্রেম
আমি ডাকিয়া নিলাম
আমার গোলাপ ফুলের টবে
পূর্ণতা নষ্ট হয়ে যায়
অপূর্ণতার শর্তবিহীন কষ্টে
আজ নষ্ট প্লাবিত বন্যায়
আমার হৃদয় পুকুরে বান আসে
জলস্রোত উপছে পড়ে
এতোটুকু ডুবতে চাইনি আহ্লাদে
টান
উমর ফারুক
আসছে গরম কাল
তাই তো ভীষন টান
গালি খেয়ে দূরে কোথা
ধরেছে কেউ গান।
আজ আকাশে টান
টনটনে রোদ
পাখিরা কেউ যায়না উড়ে
করেনা আমোদ।
রাকিবের ঘরে টান
আহার পানি নাই
স্রোত বয়ে যায় উল্টো দিকে
তাই তো নিরুপায় ।
এলো রে টানের কাল
অগ্নি সম প্রহর
হাফিয়ে পরে শ্রমিক ভায়া
নাই কোন নহর ।
এই যুগটা প্রবন টান
টনটনে ব্যথা
আমজনতা পায়না বিচার
ভাঙছে দেশের মাথা।
সফলতা
অলোক রায়
জীবন পথে আমরা কত পথ করি হাঁটাহাটি,
জেনে রেখো পরিশ্রম যে সফলতার চাবিকাঠি।
জীবনে লক্ষ্যহীন হলে ব্যর্থ মানুষ হবে তুমি,
পরিশ্রমী হলেই তবে সুখে বিরাজিত হবে হৃদয় ভূমি।
অলসেরা ব্যর্থ হলে দোহাই দেয় ভাগ্যের,
তুমি সফল হলে বলবে লোকে এ যে ফসল পরিশ্রমের।
জীবনেরই অঙ্গ হল ব্যর্থতা আর সফলতা,
জীবনে সফল হলে জানাবে শুধুই পরিশ্রমের কথা।
আজ স্মরণীয় আর বরণীয় হয়েছেন যারা ধরাধামে,
কাঙ্ক্ষিত সফলতা পেয়েছেন তাঁরা শুধু কঠোর পরিশ্রমে।
ভাগ্যের দ্বারা অসাধ্য সাধন কভু নাহি হয়,
অদম্য ইচ্ছায় কঠোর অধ্যবসায় ও প্রচেষ্টা করতে
সকল পরিশ্রমী ব্যক্তিই কয়।
অলসেরা যে শুধু সমাজে পেতে চায় করুণা,
প্রবাদে বলে অলস মস্তিষ্ক নাকি শয়তানের কারখানা।
পরিশ্রমী হলেই তবে পাবে তুমি সফলতাও,
দেরী কেন তবে লেগে পড়ো কাজে
ঝেরে ফেলো মনের সব অলসতা।
পরিশ্রমী হলে যে পাবে সমাজে কদর,
সফলতাও আসবে ঠিক পাবে বিশ্বেরও আদর।
উপস্থিতির উপহার
নন্দিনী সাহা
ভালোবাসার বদলে ভালোবাসতে হবে
এমন আবদার বা দাবি আমার নেই,
চাই না আমি কোনো দামী উপহার বা বাক্স ভর্তি ব্র্যান্ডেড চকোলেট..
আনতে হবে না সাথে করে কোনো গোলাপ,
কারণ দামী কোনো উপহারই আমার মনে আর জায়গা করে নিতে পারে না,
কিছু যদি দিতেই চাস----
আনিস সঙ্গে করে কোনো নাম না জানা জংলী ফুল,
আর পারলে আমার লিখে দিস একটি আদুরে বিকেল,
যার প্রতিটি ঘন্টা,মিনিট,সেকেন্ডে থাকবে আমার একচ্ছত্র অধিকার..
সেইদিন কোনো কফি হাউস নয়,না কোনো কেএফসি,বা বসন্ত কেবিন,
ভুলে যাবো সেইদিন কি আমাদের ধর্ম,
রাখবো না মনে,কে পড়ি গীতা,আর কে পাঠ করি কুরআন।
যাবো,শহরের ভীড় ঠেলে কোনো এক বেনামী,অখ্যাত চায়ের দোকানে,
থাকবে বেকারির কালজিরে দেওয়া নোনতা বিস্কুট,আর মাটির ভাঁড়ের চা,
তাতেই দু'জনে ঠোঁট ডুবিয়ে দেবো চুমুক।
একটা দিন না হয় আমার হয়ে থাকিস,মিটিয়ে দিস সব দূরত্ব আর ভেঙে দিস সমাজের বানানো নিয়মের ব্রীজ!
বল যাবি!
শুভেচ্ছা বার্তা 📩
রাখী বন্ধন উৎসবে সকলকে জানাই শুভেচ্ছা। সকলে সকলের সাথে দল মত জাত জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় করি আসুন এই শপথে অঙ্গীকার বদ্ধ হই।
রঞ্জন চৌধুরী
"উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-03/08/2020,সোমবার
সময় :- সন্ধ্যা 5:30 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা ফেসবুক আইডি লিঙ্কে ক্লিক করুন আর যুক্ত হন আমাদের সাথে
Click Here
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা এর হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপতে যুক্ত হন লিঙ্কে ক্লিক করে
Click Here
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
রাখি উৎসব/বন্ধন
রাজা দেবরায়
রাখি বন্ধন বা উৎসব এলেই
ভাইকে রাখি পরায় বোন
বোনকে যদি পরায় ভাই
এ কেমন দৃষ্টিকোণ !
রাখি বন্ধন আসলে
সৌভ্রাতৃত্বের ব্যাপার
সবাই সবাইকে পরাতে পারে
উদ্দেশ্য শুধুমাত্র একত্রে থাকার।
'রক্সা-বন্ধন' !
রাজা দেবরায়
সম্ভবত বছর চারেক আগে 'রক্সা-বন্ধন'এর একটি বিজ্ঞাপনে দেখেছিলাম -
এক বোন তার দুই ভাইকে রাখি পরিয়ে দিয়েছে । এক ভাই নামকরা একটি "চকলেট" কোম্পানীর প্যাকেট বোনের হাতে তুলে দিয়েছে । বোন খুব খুশি । আরেক ভাই রঙীন কাগজে মুড়ে একটি প্যাকেট বোনের হাতে দিয়েছে । বোনের মুখে হাসি নেই । পরে প্যাকেট খুলে দেখে ঐ ভাইয়ের মতই নামী "চকলেট" কোম্পানীর প্যাকেট । বোন ভীষণ খুশি ।
আসলে বিজ্ঞাপনটি খুব চতুরতার সাথে বানানো হয়েছিল । গিফ্ট দিতেই হবে এবং এটাই দিতে হবে, বাকী অন্য সব গিফ্টের কোন দাম নেই । ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গিতে হয়তো ঠিক থাকতে পারে ।
কিন্তু এই বিজ্ঞাপনটি নৈতিকতার সীমা ছাড়িয়েছে বলে আমি মনে করি । কারণ 'রক্সা-বন্ধন'এর মতো পবিত্র সম্পর্ককে গিফ্টের মাপকাঠিতে তুলনা করা মোটেই উচিত নয় ।
যেকোন সম্পর্কে গিফ্ট মূখ্য বিষয় হতে পারে না । কিন্তু বিজ্ঞাপন আমাদের বোঝাতে বাধ্য করছে সম্পর্ক অটুট রাখার জন্য গিফ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
আজকাল বিভিন্ন "ডে"ও এই গিফ্ট কেনানোর জন্যই সৃষ্টি করা হয়েছে । আবার কি গিফ্ট দিতে হবে সেটাও পরিকল্পিতভাবে স্থির করে দেওয়া হয়েছে । যেকোন গিফ্ট দিলেই হবে না ।
আমাদের এই গিফ্ট কালচার থেকে মুক্ত হতে হবে এবং সম্পর্কটাকেই প্রাধান্য দিতে হবে । সম্পর্কের মাপকাঠি যেন গিফ্ট না হয় ।।
রাখী পূর্ণিমা
অনাদি মুখার্জি
রাখী বন্ধন হল ভাই বোনের পবিত্র সম্পর্ক,
যার কাছে জাতপাত, ধর্মের নেই কোনো অন্ত।
ভাইয়ের হাতে যে সুতো বাঁধা হয়,
সেই সুতোর মূল্য অনেক বেশি হয়।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার প্রাথমিক বীজ বপন করে,
এই পবিত্র রাখী বন্ধনের মধ্য দিয়ে ।
বোন যখন রাখী বাঁধে ভাইয়ের হাতে,
ভাই তখন আজীবন রক্ষা করার দায়িত্ব নেয় কাঁধে।
ভাই বোনের বন্ধন হোক অন্তহীন,
মজবুত হোক এই রাখীর বাঁধন।
পবিত্র হোক এই শুভ মিলন ,
ভরে যাক সুখে সবার জীবন ।
এসো তবে আজ এই প্রতিজ্ঞা করি,
ভাই বোন সবাই মিলে একসাথে চলি।
ভ্রমণকথা
শ্রীকৃষ্ণ শরণম্
অগ্নিমিত্র
কয়েক বছর আগের কথা। দুদিনের ছুটি পাওয়া গেল । ভাবলাম, ঘুরে আসি মায়াপুর ও নবদ্বীপ । পর্যটন মানচিত্রে দুটি জায়গারই স্থান উল্লেখযোগ্য !
কলকাতা থেকে গাড়ি ভাড়া করে কৃষ্ণনগর হয়ে প্রথমেই মায়াপুর। একটু ঘিঞ্জি জায়গা । ইস্কন মন্দির ছাড়া তেমন কিছু দেখবার নেই ।
মন্দিরেই শঙ্খ ভবনে থাকলাম সেদিন। একটি চারজনের মতো আকারের বিশাল ঘর, দারুণ পরিচ্ছন্ন । ভাড়া যদিচ অনেকটাই বেশি, তাও খুব সুন্দর ব্যবস্থা! পাশেই খুব সুন্দর পুরনো মূল মন্দির; অতি সুন্দর মূর্তি ও পূজারতি! পাশেই তৈরী হচ্ছে অত্যাধুনিক, সুবিশাল, বহুতল নতুন কৃষ্ণ মন্দির ।..
মন্দিরের ভোগ প্রসাদ দিয়েই সকাল , দুপুর ও রাতের খাবার খেয়ে নেওয়া হল। পরদিন ভোরবেলা আবার মন্দির দর্শন করতে গেলাম স্ত্রীর অনুরোধে । খুব ভিড়, কীর্তন চলছে ।..মূর্তির একেবারে সামনে কেবল সংস্থার লোকজনের দাঁড়াবার অনুমতি ।
ইস্কন মন্দির প্রাঙ্গণ বিশাল, প্রায় তিনশো একর জমি নিয়ে তার অবস্থান । বাগান, গোশালা, সবই আছে। একপাশে শ্রীল প্রভুপাদের পুরনো সাধন মন্দির । খুব সুন্দর সেটি ।
এবার যাবার পালা নবদ্বীপ । মায়াপুরের লঞ্চঘাট থেকে লাইন দিয়ে লঞ্চে করে গঙ্গার ওপারে নবদ্বীপে পৌঁছলাম ।
নবদ্বীপ সুপ্রাচীন নগর ।.. শ্রীচৈতন্যের জন্মস্থান নবদ্বীপ! এখানেই ' প্রাচীন মায়াপুর ' নামক স্থানে মহাপ্রভুর জন্ম হয়। অতি অনাড়ম্বর স্থান ।
এখানে একটা হোটেল বলা ছিল। এখানেও ঘর ভালো পেলাম।
জিনিস রেখেই বেরিয়ে পড়লাম নবদ্বীপের দর্শনীয় স্থানগুলি দেখতে। একে একে দেখা হলো মহাপ্রভুর জন্মস্থান, সোনার গৌরাঙ্গ মন্দির ও ষাট ফুট উঁচু গৌরাঙ্গ মূর্তি । সোনার গৌরাঙ্গ মন্দিরের মূর্তি সত্যিই সোনার। বিষ্ণুপ্রিয়ার বাড়িও দেখা হলো । খুব সুন্দর লাগলো।
নবদ্বীপের ঠাটবাট কম, আকর্ষণ বেশি । এখানের রাস উৎসব সুবিখ্যাত, যদিও আমরা একটু পরে গিয়েছিলাম ।
বিকেলে বিখ্যাত পোড়ামাতলা মন্দির দেখা হলো । একটি গাছের নীচে এই ছোট কিন্তু অতি জাগ্রত দেবীমন্দির । একবার গাছটি পুড়ে যায় বলে এমন নাম।
একরাশ ভালোলাগা নিয়ে এবার আবার গাড়ি ভাড়া করে প্রত্যাবর্তন! ..এখনো সেই স্মৃতি সমুজ্জ্বল । পারলে আবার যাবো এই জায়গাদুটিতে । অপেক্ষা কেবল সঠিক সময়ের ।।...
সৌম্য ঘোষ এর দুটি প্রবন্ধ
রাখী উৎসব -- সুরক্ষা র প্রতিশ্রুতি
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
রাখী উৎসব !
ভাই-বোনের এই চিরন্তন উৎসব বহু বছরের পুরাতন ইতিহাস। পুরাণেও এই রাখীর বিষয়ে একাধিক গল্প আছে । ভাই ও বোনের সম্পর্কের বন্ধন রাখীর সূত্রে আরো গভীর বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায় ,পুরুষকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতীক হিসাবে মহিলারা কব্জিতে রাখীর সুতো বেঁধে দিতেন । ৩২৬ খ্রী: পূর্বে আলেকজান্ডার ও পুরুর যুদ্ধের সময় স্বামীর প্রাণ সংশয় হতে পারে এই আশঙ্কায় আলেকজান্ডারের স্ত্রী- পুরু কাছে যান এবং তাঁর হাতে রাখী বেঁধে দেন । পুরু অঙ্গীকার করেন তিনি আলেকজান্ডারের কোন ক্ষতি করবেন না ।
ইতিহাসে আরো উল্লেখযোগ্য রাখী বন্ধনের কথা কথিত আছে । চিতৌরের রানী কর্ণাবতী গুজরাটের সুলতান বাহাদুর শাহের আক্রমণের আগাম খবর পেয়ে মুঘল সম্রাট হুমায়ুন কে রাখী পাঠিয়ে সাহায্যের আবেদন করেন ।রাখী পেয়ে হুমায়ুন চিতৌরের দিকে অগ্রসর হন ।কিন্তু পৌঁছাতে একটু বিলম্বের জন্য ,সম্মান বাঁচাতে প্রথা অনুযায়ী আগুনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মাহুতি দেন কর্ণবতি ও তাঁর সঙ্গিনীরা ।
পুরাণের কথা । যমরাজের অমরত্ব প্রার্থনা করে তাঁর বোন যমুনা তাঁর হাতে রাখী পরিয়ে দেন । এরপরই যমরাজ কথা দেন । তাঁর বোন যার হাতে রাখী পরিয়ে দেবে তাকে তিনিস্বয়ং রক্ষা করবেন ।
মহাভারতে উল্লেখ আছে , দ্রৌপদীর শ্রীকৃষ্ণের হাতে নিজের শাড়ি ছিঁড়ে পরিয়ে দেন এবং পরিবর্তে শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন । আবার অনেকে বলেন , শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় হতদরিদ্র নারীর বেশে স্বয়ং মা লক্ষ্মীর বালীর কাছে আশ্রয় চান । বালি নিজের প্রাসাদের দরজা খুলে দেন তাঁর জন্য ।খুশি হয়ে মা লক্ষ্মী কাপড়ের টুকরো বেঁধে দেন
বালির হাতে ।
সুতরাং কীভাবে প্রথম রাখি উৎসবের প্রচলন হয়েছিল তার একটি মাত্র নির্দিষ্ট প্রামাণ্য তথ্য না থাকলেও , পুরাণে -রামায়ণে -মহাভারতে- ভারতবর্ষের ইতিহাসে নানা কাহিনী থাকলেও, এটা স্পষ্টত: সত্য রাখি উৎসবের মাধ্যমে ভাইবোনের সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয় ।
আসুন আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে, ধর্মীয় সকল বাধা সংশয় উত্তীর্ণ করে, হিন্দু- মুসলমান -খ্রিস্টান আপামর সকলে পরস্পর পরস্পরের মঙ্গল আকাঙ্খায় ,পরস্পরকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হই , রাখি উৎসব ।।
_________________________
দ্বিতীয় প্রবন্ধ
-------------------
শীর্ষক : স্মরণে
"""""""""""""""""""""""""""
এক সন্ন্যাসী বিজ্ঞানী
"""""""""""""""""""""""""""""""""""""
আচার্য স্যার প্রফুল্ল চন্দ্র রায় যিনি পি সি রয় নামেও সম্যক খ্যাত , অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় ২রা আগস্ট, ১৮৬১ সালে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ ,শিক্ষক ,দার্শনিক ও কবি । তিনি বেঙ্গল কেমিক্যালস এর প্রতিষ্ঠাতা ও মারকিউরাস নাইট্রাইট এর আবিষ্কারক । বৈজ্ঞানিক জগদীশচন্দ্র বসুর সহকর্মী । এক ভূস্বামী পরিবারে তাঁর জন্ম ।বাবা ছিলেন হরিশ চন্দ্র রায় ।এক ছোট মাপের জমিদার ।গ্রামের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে কলকাতায় চলে আসেন ।১৮৭০ সালে হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন ।পরে আলবার্ট স্কুলে ভর্তি হন । ১৮৭৮ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ।অতঃপর বিদ্যাসাগর প্রতিষ্ঠিত মেট্রোপলিটন ইনস্টিটিউশনে ( বর্তমানে বিদ্যাসাগর কলেজ ) ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৮৮০ সালে এফ. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । প্রেসিডেন্সি থেকে গ্রিলক্রিস্ট বৃত্তি পেয়ে তিনি স্কটল্যান্ডের এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনা করতে যান ।সেখান থেকে তিনি বিএসসি পাশ করেন ।পরবর্তীকালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েই ডিএসসি লাভ করেন । তাঁর গবেষণার Thesis ------ conjugated sulphates of copper magnesium group ------- A Study Of Isomorphous Mixture And Molecular Combination . এই সফল গবেষণায় তিনি এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন ।এমনকি তাঁর গবেষণা পত্রটি শ্রেষ্ঠ মনোনীত হওয়ায় তাঁকে Hope Prize -- এ ভূষিত করা হয় ।
দেশে ফিরে তিনি প্রেসিডেন্সি কলেজের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। অধ্যাপনা কালে তাঁর প্রিয় বিষয় ছিল -------- রসায়ন। তিনি নিত্যনতুন গবেষণা চালিয়ে যান । তাঁর উদ্যোগে Bengal Chemical কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ।
১৮৯৫ সালে তিনি মারকিউরাস নাইট্রাইট ( Hg NO2) আবিষ্কার করেন ।যা তাঁকে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দেয়। তিনি তাঁর সমগ্র জীবনে মোট ১২ টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন । সমবায়ের উল্লেখযোগ্য পুরোধা পিসি রায় ১৯০৯ সালে নিজ জন্মভূমিতে একটি Co-operative Bank প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯০৩ সালে পিতার নামাঙ্কিত R.K.B.K. HARRISH CHANDRA School প্রতিষ্ঠা করেন ।
১৯০২ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র তাঁর বিখ্যাত History Of Hindu Chemistry গ্রন্থটি প্রকাশ করেন ।বইটির ব্যাপক জনপ্রিয়তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ১৯০৯ সালে বইটির দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশ করেন। ব্রিটিশ সরকার ১৯১৯ সালে তাঁকে রাজকীয় খেতাব নাইট উপাধি প্রদান করেন । ১৯১৬ সালে তিনি নবগঠিত "ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স -"- এ যোগদান করেন এবং ১৯২০ INDIAN SCIENCE CONGRESS GENERAL -- এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন । ১৯৩২ সালে তাঁর আত্মজীবনী LIFE AND EXPERIENCE OF A BENGALI CHEMIST -- এর প্রথম খন্ড এবং ১৯৩৫ সালে দ্বিতীয় খন্ড প্রকাশিত হয় ।অবসর গ্রহণের পর তিনি আমৃত্যু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন ।
১৯৪৪ সালে ১৬ ই জুন , ৮২ বছর বয়সে এই সন্ন্যাসী বিজ্ঞানী সজ্ঞানে স্বর্গযাত্রা করেন ।।
রাখীবন্ধনের শপথ
বিপ্লব গোস্বামী
আজি রাখী বন্ধনের শুভক্ষণে
এসো শপথ করি ভাই ভগিনী সনে।
বনিতাগণে করব না হেলা
বিশ্বাস নিয়ে কভু করব না খেলা।
সহিব না কভু মোরা নারী অপমান
সতত গাইব মোরা নারীত্বের গান।
করতে মোরা মাতৃ ঋণ শোধ
করতে হবে কন্যা ভ্রণ হত্যা রোধ।
রাখী
আভা সরকার মন্ডল
রাখী এবার নয়তো হাতে
মুখে বাঁধার পালা,
অসুখ এসে বাঁধিয়ে দিল
এ কি বিষম জ্বালা।।
হাতে নয়তো পরব মুখেই
দিদির দেয়া রাখি,
আপদ বিপদ হতে তবু
দূরেই যেন থাকি।।
প্রোটিনযুক্ত পঞ্চ ব্যঞ্জন
বেড়ে দিয়ে পাতে ,
উপহারে দেবো যে মাস্ক
একে অন্যের হাতে।।
দিদি-ভাই এর ভালবাসায়
কু-নজর থাক দূরে,
কঠিন শপথ আজকে নিলাম
দাঁড়াবই যে ঘুরে ।।
কবিতা
রাখী বন্ধন
মিনতি গোস্বামী
আকাশে আজ পূর্ণিমা চাঁদ
টিপের মত গোল
সকাল হলে. চারিদিকেতে
হবে হৈ হট্টগোল।
বোনেরা সব. ভায়ের হাতে
বাঁধতে যাবে রাখী
আত্মজ নয় ধর্মজ নয়
কেউ থাকে না বাকী।
ভায়ের হাতে. রাখী পরিয়ে
মঙ্গলের কামনা
ভাইরা যেন নিশ্চিন্তে থাকে
সেই কবে বাসনা।
বঙ্গভঙ্গের. অশুভ ক্ষণে
রবিঠাকুর নিজে
রাখী বাঁধেন. সবার হাতে
শুভ মৈত্রীর খোঁজে।
অতিমারীর. কবলে আজ
মিলনে আছে বাধা
বোনেরা তবু. রাখীর দিনে
মানবে না তো বাধা।
ভায়ের নামে. পাঠাবে রাখী
সঙ্গে শুভ কামনা
ভাইটি হোক. অকুতোভয়
দূর হোক যন্ত্রণা।
ভার্চুয়ালেই সবার হাতে
আমি ও বাঁধি রাখী
আগামী দিনে. মঙ্গল হোক
সবাই হোক সুখী।
ঝড় বৃষ্টির রাত
আব্দুল রাহাজ
ভুবন আর সুরেশ দুই বন্ধু ওদের আজ স্কুলে পরীক্ষা শেষ হলো খুব আনন্দে হই হই করে সুজন আর ভুবন দীঘির পাশ দিয়ে বাড়ি ফিরছে হঠাৎ সুরেশ বললো চল আমার মামার বাড়িতে যাবো তুই কি যাবি ভুবন বললো হ্যাঁ হ্যাঁ তাহলে এখন বেলা দুইটা বাজে বোধহয় আমরা ঠিক সাড়ে তিনটায় বেরোবো এই বলে ওরা যে তার বাড়িতে চলে গেল। ভুবনের বাড়িতে বলা মাএই যাওয়ার জন্য অনুমতি দিল ওরা সাড়ে তিনটায় চার রাস্তার মোড়ে এসে দাঁড়ালো ওরা পূর্ব দিকের মাঠের দিকে চলে গেল ওদের গ্রামের পাঁচটা গ্রামের পর সুরেশের মামার বাড়ি খুব সুন্দর সুরেশ দের মামাদের গ্রামটা ভুবন শুনেছে সুরেশের মায়ের কাছ থেকে এই কথাটা। ওরা হাঁটতে লাগলো দুটো গ্রাম পার হলো আকাশে কালো মেঘ
সুরেশ বলল এমা এতো বৃষ্টি নামবে হালকা বাতাস বইছে ওরা পাশে দেখলে একটা পুরনো বাড়ি এদিকে ঝড় আর বৃষ্টি শুরু হল তখন বাজে সাড়ে চারটে ভুবন বলল কি করবি বাড়ি যাবি নানা বাড়ি যাব না পোড়ো বাড়ি থাকি কিছুক্ষণ যদি বৃষ্টি থামে তাহলে চলে যাব মামার বাড়ি ওরা পোড়ো বাড়িতে উঠলো তারপর আস্তে আস্তে বৃষ্টি ঝড় হচ্ছে বেশ অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে এদিকে রাত হয়ে গেছে চারিদিকে সব কীটপতঙ্গের আওয়াজ আসে মাঝে মাঝে এক বিকট শব্দে যেন কেটে যাচ্ছে পুরো বাড়ি ওরা তো ভয়ে কাঁপতে শুরু করেছে হ্যাঁরে ভুবন কি করবি এখন আর কি হবে ভূতের হাতে আমাদের প্রাণটা চলে যাবে এই আর কি ভুবনের খুব সাহস সে পুরো বাড়িটা ঘুরে ছিল এদিকে পুরো বাড়ির একাংশ ভেঙে যেতে থাকলো সুরেশপ্রভুর কাছে প্রার্থনা শুরু করল এদিকে সারারাত ঝড়-বৃষ্টি হলো ওরা সেই রাতটা খুব খুব ভয়ে ভয়ে কেটেছিল তাদের ওরা ভোরবেলা উঠে দৌড় একেবারে মামার বাড়িতে গেল গিয়ে হাঁপাতে হাঁপাতে মামার কাছে জল জল খাব সব ঘটনা মামার সাথে বলল মামা তো অবাক হয়ে গেল আরে তোরা ওই বাড়িতে ছিলিস ওখানে আমাদের গ্রামের সব মানুষদের পুড়ানো হয় সেজন্য এত বিকট আওয়াজ আসছিল ভুবন বলল যাক বাবা বেঁচে গেছি সেই ভালো আয় ভুবন হাসিখুশিতে রইল সুরেশ যেন এখনো কাঁপছে সেই ঝড়ের রাত ভুবন সুরেশ এর কাছে এক উজ্জ্বল স্মৃতি হিসেবে আজীবন থাকবে সুরেশের এই দিনটা বেশ স্মৃতিবিজড়িত হয়ে থাকবে সেই ঝড় বৃষ্টির রাত যা তাদের ভয় আরষ্ট গিয়েছিল এই ঝড় বৃষ্টির রাত গ্রামের সবার কাছে বলল ভুবন সবাই হো হো করে হেসে উঠলো কিন্তু শেষমেশ সেই পোড়ো বাড়ি সুরেশের বাবাদের তার মামারা ও জানতো না একথা সুরেশের বাবারা ওটা শ্মশানের জন্য বিলি করে দিয়েছে মানুষের কাছে তাই ওখানে এখন হানাবাড়ি রাতের বেলা শুধু বিকট শব্দ আর শব্দ তবু ঝড় বৃষ্টি রাতের ঘটনা তাদের কাছে আজীবন স্মৃতিবিজড়িত হয়ে থাকবে।
ভ্রমন
© মৌসুমী গুহ রায়
হেমন্তের পাতা ঝরা অরন্যে আমি গিয়েছি।
শুনেছি পাখির ডাক। নৈঃশব্দ অনুভূতি তে।
সবুজ মাঠ, গাছপালা ঘেরা চার্চেও গিয়েছি।
শীতের রোদে বসেছিলাম গাছের নীচে বেঞ্চিতে।
জংগল ঘেরা নির্জন পাহাড়েও গিয়েছি।
রাতে চিতা বেরয় শুনে দরজা বন্ধ করেছিলাম।
নির্জন সমুদ্র সৈকতে গিয়েছি।সফেন ঢেউ গুনেছি।
আকাশ আর সমুদ্র যেখানে মিশেছিল, তাকিয়ে থেকেছি।
ডুয়ার্সের নির্জন জংগলে, টিমটিমে আলোয় থেকেছি। ছবির মতো সাজানো কটেজ, মাঠ, রাস্তা।
রাজপুত বীর দের শহর উদয়পুরে বোটিং করেছি পিছোলা লেকে। জলমহল, হাওয়া মহল দেখে এসেছি।
" মৃত্যু আসে "
হামিদুল ইসলাম।
জলের ছায়া জলে ডুবে যায়
পড়ে থাকে জল
জীবন রুক্ষ মরুভূমি
তবু তোমার জন্যে প্রাণে রাখি বল ।।
ইতিহাস বদলায় প্রতিদিন
রাজা আসে রাজা যায়
পাখিরা ফিরে আসে সন্ধ্যার নীড়ে
মনের গভীরে ভূবন জেগে থাকে নিশ্চয় ।।
এ ভূবন শান বাঁধানো পুকুরঘাট
অথৈ জলে দাঁড়িয়ে থাকে ছায়া
বিশ্বকবি ফিরে আসে ইতিহাস হয়ে
চোখের জলে ফোঁটা ফোঁটা মায়া ।।
কদম বাড়াই সামনের পথ
ক্যাকটাস ভরা জীবন
ভীতির সমুদ্র পেরিয়ে যাই
ফিরে আসি হাতে নিয়ে মরণ ।।
ভাবি নি কোনোদিন
মৃত্যু এভাবে আসে
জীবনের গতি রুদ্ধ হয়ে আসে যখন
মৃত্যু ভাসে ফুলের সুবাসে ।।
কবিতা
আহ্লাদে
রুহুল আমিন
এতোটুকু ডুবতে চাইনি আহ্লাদে
উতলা আকাশ কাঁদে
আমার অশ্রু জল প্রবাহিত করে
তোমার ভালোবাসার উচ্ছ্বাসিত সে প্রেম
আমি ডাকিয়া নিলাম
আমার গোলাপ ফুলের টবে
পূর্ণতা নষ্ট হয়ে যায়
অপূর্ণতার শর্তবিহীন কষ্টে
আজ নষ্ট প্লাবিত বন্যায়
আমার হৃদয় পুকুরে বান আসে
জলস্রোত উপছে পড়ে
এতোটুকু ডুবতে চাইনি আহ্লাদে
টান
উমর ফারুক
আসছে গরম কাল
তাই তো ভীষন টান
গালি খেয়ে দূরে কোথা
ধরেছে কেউ গান।
আজ আকাশে টান
টনটনে রোদ
পাখিরা কেউ যায়না উড়ে
করেনা আমোদ।
রাকিবের ঘরে টান
আহার পানি নাই
স্রোত বয়ে যায় উল্টো দিকে
তাই তো নিরুপায় ।
এলো রে টানের কাল
অগ্নি সম প্রহর
হাফিয়ে পরে শ্রমিক ভায়া
নাই কোন নহর ।
এই যুগটা প্রবন টান
টনটনে ব্যথা
আমজনতা পায়না বিচার
ভাঙছে দেশের মাথা।
সফলতা
অলোক রায়
জীবন পথে আমরা কত পথ করি হাঁটাহাটি,
জেনে রেখো পরিশ্রম যে সফলতার চাবিকাঠি।
জীবনে লক্ষ্যহীন হলে ব্যর্থ মানুষ হবে তুমি,
পরিশ্রমী হলেই তবে সুখে বিরাজিত হবে হৃদয় ভূমি।
অলসেরা ব্যর্থ হলে দোহাই দেয় ভাগ্যের,
তুমি সফল হলে বলবে লোকে এ যে ফসল পরিশ্রমের।
জীবনেরই অঙ্গ হল ব্যর্থতা আর সফলতা,
জীবনে সফল হলে জানাবে শুধুই পরিশ্রমের কথা।
আজ স্মরণীয় আর বরণীয় হয়েছেন যারা ধরাধামে,
কাঙ্ক্ষিত সফলতা পেয়েছেন তাঁরা শুধু কঠোর পরিশ্রমে।
ভাগ্যের দ্বারা অসাধ্য সাধন কভু নাহি হয়,
অদম্য ইচ্ছায় কঠোর অধ্যবসায় ও প্রচেষ্টা করতে
সকল পরিশ্রমী ব্যক্তিই কয়।
অলসেরা যে শুধু সমাজে পেতে চায় করুণা,
প্রবাদে বলে অলস মস্তিষ্ক নাকি শয়তানের কারখানা।
পরিশ্রমী হলেই তবে পাবে তুমি সফলতাও,
দেরী কেন তবে লেগে পড়ো কাজে
ঝেরে ফেলো মনের সব অলসতা।
পরিশ্রমী হলে যে পাবে সমাজে কদর,
সফলতাও আসবে ঠিক পাবে বিশ্বেরও আদর।
উপস্থিতির উপহার
নন্দিনী সাহা
ভালোবাসার বদলে ভালোবাসতে হবে
এমন আবদার বা দাবি আমার নেই,
চাই না আমি কোনো দামী উপহার বা বাক্স ভর্তি ব্র্যান্ডেড চকোলেট..
আনতে হবে না সাথে করে কোনো গোলাপ,
কারণ দামী কোনো উপহারই আমার মনে আর জায়গা করে নিতে পারে না,
কিছু যদি দিতেই চাস----
আনিস সঙ্গে করে কোনো নাম না জানা জংলী ফুল,
আর পারলে আমার লিখে দিস একটি আদুরে বিকেল,
যার প্রতিটি ঘন্টা,মিনিট,সেকেন্ডে থাকবে আমার একচ্ছত্র অধিকার..
সেইদিন কোনো কফি হাউস নয়,না কোনো কেএফসি,বা বসন্ত কেবিন,
ভুলে যাবো সেইদিন কি আমাদের ধর্ম,
রাখবো না মনে,কে পড়ি গীতা,আর কে পাঠ করি কুরআন।
যাবো,শহরের ভীড় ঠেলে কোনো এক বেনামী,অখ্যাত চায়ের দোকানে,
থাকবে বেকারির কালজিরে দেওয়া নোনতা বিস্কুট,আর মাটির ভাঁড়ের চা,
তাতেই দু'জনে ঠোঁট ডুবিয়ে দেবো চুমুক।
একটা দিন না হয় আমার হয়ে থাকিস,মিটিয়ে দিস সব দূরত্ব আর ভেঙে দিস সমাজের বানানো নিয়মের ব্রীজ!
বল যাবি!
শুভেচ্ছা বার্তা 📩
রাখী বন্ধন উৎসবে সকলকে জানাই শুভেচ্ছা। সকলে সকলের সাথে দল মত জাত জাতি ধর্ম নির্বিশেষে বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় করি আসুন এই শপথে অঙ্গীকার বদ্ধ হই।
রঞ্জন চৌধুরী
0 comments: