শনিবার, ২২ আগস্ট, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন-22/08/2020

 "উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক বিভাগ"
                (ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-22/08/2020,শনিবার
               সময় :- সকাল 8 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷🌷

বিশু জ্যেঠুর মেয়ে
           রাজকুমার ঘোষ

ছোট থেকেই টুবলু বিশু জ্যেঠুকে দেখে আসছে এবং ছোটবেলায় সে বিশু জ্যেঠুকে বেশ মান্য করত। কিন্তু যখন সে বুঝলো যে জ্যেঠু যা বলেন তা শুধুমাত্র ফাঁকা আওয়াজ, বরং যা বলেন তার সব বিপরীত কাজ করেন। তারপর থেকে সে আর বিশেষ পাত্তা দিত না। বিশু জ্যেঠুকে দেখলেই ওর হাসি পেত। এমনকি জ্যেঠু নিজেকে সাহিত্য দরদিও মনে করত। টুবলুর বেশ খেয়াল আছে, ও যখন ক্লাস নাইনে পড়ত, কিছু উৎসাহী বন্ধুদের নিয়ে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেছিল... তারই একটি কপি নিয়ে বিশু জ্যেঠুর কাছে গিয়েছিল। তিনি খুব উৎসাহ দিয়েছিলেন, প্রশংসাও করেছিলেন... তারপর পত্রিকা চালাতে গেলে কিভাবে অর্থ সংগ্রহ করতে হবে, গ্রাহককে কিভাবে বিক্রি করতে হবে ইত্যাদি পরমার্শ দিয়েছিলেন নিজের মত করে, কিন্তু ওনাকে যে কপিটি দেওয়া হয়েছিল তার দাম তিনি কোনোদিনই দেননি। সেই টুবলু এখন ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ায়, কাটিয়ে এসেছে জীবনের অনেকটা বছর।
বছর তিন হল টুবলু বেশ গুছিয়ে লিখছে, লেখা ফেসবুকে পোস্ট করছে, অনেকে ওর লেখার প্রশংসাও করছে... এছাড়াও কিছু কিছু পত্রিকায় প্রকাশিত হচ্ছে। এখন বিশু জ্যেঠুর মেয়ে চিন্টু ওর কাছে পড়তে আসে... চিন্টু ওর লেখা দেখে বেশ উৎসাহিত হয়, সে জানায় সেও ভীষণ সাহিত্য অনুরাগী। চিন্টু টুবলুর নতুন নতুন লেখা দেখে... বাহবা দেয়... টুবলুর আদিখ্যেতাও বেড়ে যায়। অনেক সময় টুবলু চিন্টুকে বিভিন্ন পত্রিকাও দিয়েছে, চিন্টু বিনা দ্বিধায় তা নিয়ে গেছে। পত্রিকার দাম দেবার সৌজন্য বোধও কখনই দেখায়নি। চিন্টু নাকি জানিয়েছে সে চাকরি পেলে অবশ্যই কিনবে।  
যাই হোক, চিন্টু এখন চাকরি পেয়ে গেছে। টুবলুর উদ্যোগে বেশ কয়েকটি পত্রিকাও ইতিমধ্যে প্রকাশ পেয়েছে। পত্রিকাগুলি মোটামুটি জনপ্রিয়ও হয়েছে। কোন একদিন, টুবলু চিন্টুকে একটি পত্রিকা কিনে নিতে বলে ... চিন্টু কিনে নেয় পত্রিকা, একটা নোট দেয়। টুবলু দেখে নোটটা কোণের দিকে একটু ছেঁড়া আছে, তৎক্ষনাৎ সে জানায় চিন্টুকে... চিন্টু জবাব দেয়, তাহলে ওর পক্ষে পত্রিকা নেওয়া সম্ভব নয় (যদিও ওর কাছে আরো অনেক নোট ছিল)...
অনেকদিন পর টুবলুর বিশু জ্যেঠুকে আবার মনে পড়ে গেল ............







                 তুমি থাকলে  
                  হামিদুল ইসলাম
         

এক দুই তিন করে
কতোবার গুনেছি নদীর জল
তবু তোমার হিসেব মেলাতে পারি নি আজও
এখনো তোমার প্রতীক্ষায় মুহূর্ত গুণছি
আমি কতো অসহায় ।
তুমি থাকলে আমার সাহস বাড়ে
রাস্তার দুপাওয়ালা কুকুরগুলোকে মেরে ফিট করে ফেলি
তুমি থাকলে আমি কালাপাহাড়
আমার সামনে পৌরুষ দেখাতে পারবে না কেউ
আমি একহাতে সব সামলে নিতে জানি ।
আর তুমি না থাকলে
আমি বেড়াল
মাটি আঁচড়াই সামান‍্য আড়চোখে ।





কবিতা :
        দেখতে পারো!
                     বিশ্বজিৎ কর

যদি জানতে চাও
জীবনকে -
আকাশকে দেখো!
যদি বুঝতে চাও
জীবনকে -
লড়াই করো!
যদি ধরতে চাও
জীবনকে -
স্বপ্ন দেখো!











অনুগল্প
       গৌরির বন্দীমাস‍্যা
                 মিনতি গোস্বামী

লক-আনলকের পর শহরে নতুন করে সাতদিন লকডাউন। ছোট ব‍্যবসায়ীদের অবস্থা খুব খারাপ।পীরুও এমনি ছোট ব‍্যবসায়ী।পাড়ার দাদাদের ধরে রাস্তার ধারে একটা চৌকি লাগিয়ে ব‍্যবসা করে।সিজিনের জিনিস বিক্রি করে।
কখনো ঘুড়ি-লাটাই, কখনো রাখি,কখনো রঙ, আবার ঝুলনে ছোট ছোট পুতুল ও বিক্রি করে।
পিরু মদ খায়। প্রথম প্রথম পুঁজি ভেঙে দিচ্ছিল।
তাই পীরুর সঙ্গে তার বৌ গৌরিও ব‍্যবসায় সাহায্য করতে আসে।গৌরি শক্ত হাতে হাল
ধরায় পীরুর ব‍্যবসাটা জমে উঠেছিল।
ছেলেমেয়ে স্কুলে পড়ে, ঘরের টিনের তুলে ছাদটাও ঢালাই করে।গৌরি বরের সঙ্গে কলকাতায় গিয়ে মাল নিয়ে আসে।এবারেও দোলের পনেরো দিন আগে পঞ্চাশ হাজার টাকার মাল তুলেছিল।
কিন্তু দোলের সময়েই মহামারী ঠেকাতে রঙ না খেলার আবেদনে কেউ রঙ খেলেনি।গৌরির সব মাল মজুত থেকে যায় ঘরে।তারপরেই লকডাউন,ব‍্যবসা বন্ধ।গৌরি দমবার পাত্র নয়।ডিম নিয়ে বসে পড়ে দোকানে।রেশনে চাল পায়, কোনরকমে চলে যাচ্ছিল।কিন্তু জুলাইয়ের শেষে শহরে নতুন করে লকডাউন হলে অবস্থা খুব খারাপ হয়। তার।
       আজ ডিম কিনতে গিয়ে দেখলাম, পুলিশ সব দোকান বন্ধ করে দিচ্ছে।শুধু দুএকটা সবজিওয়ালা বসে আছে রাস্তায়। আমি বেরিয়েছিলাম ডিম কিনতে, আমার ও ঘরে কিছু ছিলনা।
দেখলাম গৌরি ওর দোকানের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে আছে।কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম,"আজ ডিম পাবোনা?"
সে বললো,"  মাত্র চারটে ডিম আছে।
চৌকির তলায় ট্রেটা ঠেলে পালিয়ে এসেছি।"
ওর স্বামী বাজারে ডিম আনতে গেছে।
আমি কিছুটা এদিক ওদিক করলাম।
পুলিশ চলে গেছে।পীরু মাত্র দুপেটি ডিম পেয়েছে।
গৌরি বললো,"দিদি একপেটি নিয়ে নিন, তাহলে আমাকে আর বসে থাকতে হবেনা।বাকীটার খদ্দের পাড়াতেই পেয়ে যাবো।"
অগত্যা আমি কিনে নিলাম।
গৌরি বললো," লাভ কিছুই নাই। দুপেটি ডিম বিক্রি হলে চারটে ডিম ঘরে নিয়ে গিয়ে আজ ছেলেমেয়েদের ডিমের ঝোল ভাত করে দেব।
ওদের বাবাতো ভয়ে আসেনা।আমি লুকিয়ে লুকিয়ে খদ্দের ধরি।"







জাগো মহামানব
                বিপ্লব গোস্বামী

দয়াহীন মায়াহীন মনুষ‍্যত্বহীন এ ভবে
শান্তি দয়া মানবতার বাণী নিয়ে ,
হে মহা মানব তুমি আসিবে কবে ?
চারিদিকে আজ অধর্ম অন‍্যায় অবিচার
সাম‍্যের বাণী নিয়ে হে অগ্ৰ পথিক ,
এসো এ সমাজ মাঝে করো মানব ধর্ম প্রচার।
বঞ্চিত সমাজ মাঝে হে পতিহারী
বিলাও ন‍্যায় মন্ত্র , গুছাও লাঞ্ছনা ,
রচ নতুন বিশ্ব নীর্ভিক পদচারী।







আসল পথ
           ডা: নরেন্দ্র নাথ নস্কর

নিন্দা করে রেখ না কাহারো দুরে;
একদিন হয়ত  সেই রবে পুরোভাগে;
ভুল ক্রুটি ধরে কোরো না জর্জরিত,
ভালবাসা দিয়ে হৃদি জয় কর আগে।
অহঙ্কারের কোন স্থান নেই ভবে,
ধন, মান, যশ শুধু দুদিনের তরে;
প্রেমের মন্ত্রে যে করে চিত্ত জয়,
সেই শুধু রবে মানুষের হৃদি ঘরে।
ইতিহাস খুলে দেখ ওহে নর ও নারী,
যুগে যুগে শুধু তাহাদের বানী ভাসে,
ক্ষমা করে যীশু আজও প্রাসঙ্গিক,
বুদ্ধের বানী অহিংসায়, ভালোবেসে।
যুগে যুগে যত মহাপুরুষ আসে যায়,
সত্য পথে মানুষের সেবা ব্রতে;
জীবে প্রেমই আসল তাদের ধর্মে,
এই কথাটাই রেখ সবাই মর্মে।
ধার্মিক লোক হিংসা জানে না মনে,
হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম বা ক্রিস্টান;
জীবের সেবাই তাদের শ্রেষ্ট মত,
ভালোবেসে তারা হৃদয়ে পেয়েছে স্থান।







কবিতা
      ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধ্যা
              সত্যজিৎ মজুমদার

ভূবন জুড়ে অনেক ধর্ম,
অনেক তার প্রথা।
ধর্ম নিয়ে বড়াই বেশি,
করছে অনেক নেতা।
নিজ ধর্ম উচুই রেখে,
অন্য ধর্ম কে গালায়।
এমনি করে বিবাদ বাড়ে,
মানুষ যায় মারায়।
সব ধর্মে শ্রদ্ধ্যা রেখে,
করি মোরা সম্মান।
নিজ ধর্মের বাসনায় ভরে,
হও রে আগুয়ান।
একে অপরের পাশে থেকে,
বিপদ -আপদে দাঁড়াই।
সব বিদেষ ভুলে গিয়ে,
বলি ভাই ভাই।








ভ্রমণ কাহিনী
        দীঘা ভ্রমন
                  রুহুল আমিন
দীঘা অনেকের কাছে হাস্যকর কিন্তু আমার কাছে দীঘা রহস্যের ভান্ডার। এক এক মরসুমে দীঘার এক এক রুপের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। চলুন আজ আমার দীঘা ভ্রমনে‌র গল্প শোনাই।
২৩.০৪.২০১৯ তারিখ রাত্রে রওনা হলাম। অনেক দিন বাদে শেষ পর্যন্ত কাজের ব্যস্ততা থেকে নিজেকে টেনে বের করতে পেরে মনে মনে বেশ স্বস্তি অনুভব করতে পারছি। যখন ট্রেনটা ছাড়লো তখন রাত প্রায় নয়টা।
গরম চায়ের ভাঁড়ে সবে চুমুকটা দিয়েছি কানে ভেসে এলো ট্রেনের শব্দ। স্টেশন থেকে চায়ের ভাঁড় হাতে নিয়েই ট্রেনে উঠলাম।
ট্রেনের জানালাতে ঠেস দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধের মতো নিষ্পলোক চোখে চাঁদের সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলাম। ভাইয়ার ধাক্কায় যেনো অজ্ঞান অবস্থা থেকে জ্ঞান ফিরলো আমার। নীরবে এসেছিল ভালোবাসা মনের অজান্তে ছোট্ট মায়া ঘরে। আজ তা প্রকাশ পেলো চাঁদের মাঝের কলঙ্ক দেখে।
ট্রেন ছেড়ে দিয়েছে প্রায় আধঘন্টা হবে। টিটি এসে টিকিট চেক করেও গেছে। আশপাশের যাত্রী বলতে- আমার পাশে অরিন্দম দা, সামনে বড়ো ভাইয়া সান।এক বৃদ্ধা আর তার ছেলের বৌ।
মাসিমা কিছুটা জোর পূর্বক আমার ব্যাগে খাবার দিয়েছিল। রাতে ট্রেনে বসেই আমরা খাবার খেতে লাগলাম। যত রাত বাড়তে শুরু হলো নিস্তব্ধ হয়ে যেতে লাগলো ট্রেনের কামরা।
ট্রেনের দুলুনি আর ঝিকঝিক আওয়াজে একটা অদ্ভুত পরিবেশ সৃষ্টি হলো। অনেকে তখন ঝিমানোর ভঙ্গিতে রিতিমতো ঘুমের দেশে পাড়ি দিয়েছে। যেমন ঘুম হীন ট্রেন দ্রুত গতিতে ছুটে চলেছে তার গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। ঠিক ট্রেনের ন্যায় আমার ক্লান্ত চোখ ঘুম হীন ভাবে বাইরের অবছায়া অন্ধকার দেখে চলেছে।
হাওড়া স্টেশনে নেমে, সারা রাত স্টেশন চত্তরে কাটিয়ে দিলাম। পরের দিন সকাল ছয়টা ত্রিশ মিনিটে ট্রেনে চেপে রওনা হলাম দীঘার উদ্দেশ্যে। দীঘা স্টেশনে যখন প্রবেশ করলাম। ঘড়ির কাঁটা তখন দশটা ছুঁই ছুঁই। স্টেশন থেকে বেরিয়ে টোটো স্ট্যান্ডের দিকে এগিয়ে গেলাম। টোটোতে স্টেশন থেকে ওল্ড দীঘাতে আসতে সময় লাগলো কমবেশি ত্রিশ মিনিট।
এক কাপ চা খেয়ে হোটেল খুঁজতে বার হলাম। বেশির ভাগ হোটেল আগে থেকে বুক থাকার জন্য আমরা সমুদ্র পৃষ্ঠের নিকট প্রিতি গেষ্ট হাউজে উঠলাম। বেশ সুন্দর হোটেলের ভিতরটা। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ছিমছাম হোটেলটা ঘুরে দেখচ্ছিল ভাইয়া। ঘুরতে ঘুরতে ছাদে গিয়ে অবাক হলো। ছাদের উপর বারোটি রঙিন ভিন্ন জাতীয় গোলাপ গাছ।
রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চের পর্ব সমাপ্ত করে স্নান করতে রওনা হলাম। কমবেশি তিন ঘন্টা সমুদ্রে স্নান করলাম। ঢেউ এর তালে তালে নিজেকে ভাসিয়ে দেওয়ার মজাই আলাদা। স্নান করে ফিরে এসে রুমে একটু রেস্ট নিয়ে, আমি ক্যামেরা হাতে বেরিয়ে পড়লাম। হোটেল থেকে বেড়িয়ে একটু এগোতেই বিশ্ব বাংলা চোখে পড়লো।
রাস্তার পাশেই বিশ্ব বাংলার সিড়িতে বসে পড়লাম। এখানকার মানুষের ব্যস্ততা এক অদ্ভুত ছন্দের সাথে মিশে যায়। সবাই যে যার নিজের কাজ নিয়ে ব্যাস্ত। রাস্তার এক পাশে লাইন দিয়ে বড়ো বড়ো দোকান, দুটি এটিএম কাউন্টার। কোনো কিছুর যেনো অভাব নেই। বেশ কিছুক্ষণ ওখানে বসে থেকে হোটেলে ফিরে একটু শুয়ে পড়লাম।
বিকালে আমরা একটা অটো বুক করে গেলাম তালসারী আর উদায়পুর। তালসারী জায়গাটা খুব সুন্দর ওখানে লাল কাঁকড়া বালিকে এমন ভাবে ঢেকে রেঁখেছে দেখলে মনে হবে লাল কাঁকড়ার দেশ। কত গুলি ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে বালিচড়ের বুকে গর্ত খুড়ে লাল কাঁকড়া ধরার চেষ্টায় মেতে আছে। এই সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বন্দি করতে শুরু করে আমার চোখের লেন্স।
ক্যামেরা নিয়ে ছবি তুলতে তুলতেই ড্রাইভার আওয়াজ দিয়ে জানিয়ে দিল গাড়ি ছাড়বে। আমি পিছনের সিটে বসলাম, যেতে যেতে ছবি তোলা যাবে কিছু।
তালসারী থেকে সোজা চলেগেলাম উদায়পুর। উদায়পুর বিচটা খুব সুন্দর। কত রঙিন কাগজ ফুল, বন গোলাপের ঝাড়, রাস্তার পাশে ছোট ছোট হনুমানের দল চোখে পড়লো যেতে যেতে।
সন্ধ্যা নেমে আসার জন্য বেশিক্ষণ আমরা ওখানে থাকতে পারিনি। এরপর আমরা গেলাম নিউ দীঘা, বিচের ধারে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে নদীর তীর ধরে হাঁটতে হাঁটতে ওল্ড দীঘা বিচে এসে পৌঁছলাম।
রাস্তা আর ঝাউ গাছের বাগান পেরিয়ে এলাম। কি অপরূপ লাগছিল ঝাউ বাগানকে ওই আলো আঁধারিতে। নিউ দীঘা বিচের বাজার অপেক্ষা ওল্ড দীঘা বিচটা অনেক সাজানো গোছানো, অনেক সুন্দর। সন্ধ্যার পর অনেক লোকের আনাগোনা।
এখানে কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে ডিনার করতে গেলাম বিচেরই পাশে একটু দূরে blue view হোটেলের বিপরীত দিকে এক রেস্তুরেন্টের পাশেই। 'ফ্রেশ ফিস' নামে একটা দোকান আছে। ওখান থেকেই মাছ ভাজা খাওয়া ভালো কারন সেখানে অনেক পরিস্কার আর টাটকা মাছ পাওয়া যায়। ডিনার সেরে হোটেলে ফিরে নিজেরা একটু গল্প করে ঘুমাতে গেলাম। কিন্তু আমার ক্লান্ত চোখ চাঁদের আলো ছড়ানো দীঘাকে দেখতে চাইলো।
রাত গভীর হলো। আকাশ ঢেকে গেল হাজার তারায়। কিন্তু কেউ আমার সাথে ছাদে যেতে রাজি না হওয়ার জন্য অবশেষে গার্ডের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি একাই ছাদে গেলাম। চাঁদের আলো এক এক খন্ডতে ভেঙ্গে যেনো সমুদ্রের ঢেউয়ে এসে মিলে যাচ্ছে। কি অপূর্ব সে দৃশ্য, ভাষায় প্রকাশ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
ভোর বেলা উঠেই গেলাম বিচের ধারে সূর্যোদয় দেখতে। দীঘার সমুদ্রে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের নয়নাভিরাম দৃশ্য মন জুড়িয়ে দেয়, যেন শিল্পীর ক্যানভাসে সুন্দর ছবি আঁকার জন্য নয়নাভিরাম দৃশ্য উপহার দেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ হাঁটা হাঁটি করে চা খেয়ে হোটেলে ফিরে এলাম।
তার পর রোদ পোড়া গরমে, আমরা তিন জন বরফের গোলা চুষতে চুষতে সোজা পৌঁছালাম ব্যারিস্টার কলোনির বিচে। ভেবে ছিলাম আজ ব্যারিস্টার কলোনির বিচে স্নান করে কাল যাবো নিউ দীঘা বিচে স্নানের উদ্দেশ্য। কিন্তু ভাগ্যের উপহাস যে আমাদের পিছু ছাড়েনি।
যেনো আমাদের স্নানে নামার ব্যাপারটা সমুদ্র ভালো চোখে মেনে নেয়নি। স্নান করতে করতে ফিরে আসতে হলো কারন জোয়ার এসে পড়েছে। সিভিক পুলিশের হইচইতে প্রান ওষ্ঠাগত, তাই ফিরে এলাম।
দুপুরের খাওয়াটাও তৃপ্তি দিলো না। একটু বিশ্রাম নিয়ে রওনা হলাম মন্দারমনির উদ্দেশ্যে। ঠিক পঞ্চাশ মিনিট পর আমরা সেখানে পৌঁছালাম। প্রথম দর্শনেই খুব সুন্দর লাগলো মন্দারমনি বিচটা, মনে মনে ঠিক করলাম পরেরবারে দীঘা আসলে আগে এখানেই একদিন কাটিয়ে তারপরের দিন দীঘা যাবো।
আঃ কি সুখ! কি অপূর্ব দৃশ্য। নীল আকাশের সাবান গ্যাজার মতো মেঘ, কখন কখন সে মেঘ সূর্যকে নিজের অন্তরালে লুকিয়ে ছেলে বেলার যেনো লুকোচুরি খেলাকে মনে করিয়ে দিচ্ছে। তার সাথে ঝাউ বাগান, আর কি চাই।
দেখতে দেখতে বাঙালি মনে কবি কবি ভাব যে জন্মনেবে , সে আর নতুন কথা কি! মনে পড়ে গেলো দুটো লাইন-
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
সকল দেশের রানি সে যে – আমার জন্মভূমি।
এই পাওয়া নেহাত কম নয়, এখানে টিফিন করে আমরা গেলাম তাজপুর। প্রচুর পাখির সাথে সাক্ষাৎ হলো সেখানে। একটা গাছের নীচু ডালে চড়ে বসলাম আমি, সমুদ্রকে একটু উপর থেকে দেখার নেশায়। গাছের উপর বসে আমি ক্যামেরাটা বার করে, সময় আর সুযোগের সদ্যব্যবহার করে ফেললাম। সময় এখন আমার ক্যামেরার ফটো ফ্রেমে বন্দি।
তাড়াহুড়ো করে এগোতে গিয়ে কিছু একটাতে হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লাম। উঠে হাত পা ঝেড়ে কিসে হোঁচট খেলাম দেখার জন্য আরেকটু এগিয়ে যেতেই চোখ বড়ো বড়ো হয়ে গেলো, যে গাছের শিকড়ে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেছি তার একেবারেই পাশের মাটিতে পড়ে থাকা শুকনো পাতায় খসখস আওয়াজ করে, ফনা তুলে দাঁড়িলো গোখরো।
তাজপুরের পর শংকরপুর। তাজপুর থেকে শংকরপুর রাস্তাটা পুরো সমুদ্রের পাশ দিয়ে, খুব সুন্দর। এর পর গেলাম মোহনায়।
মোহনার পর হোটেলে ফিরে ডিনার করে আবার সমুদ্রের তীর হত্তে দিলাম। আড্ডায় বাঙালি সবাইকে হারমানায়। একটা আওয়াজ শুনে চমকে গেলো মন। মনে হলো কেউ এই অবছায়া অন্ধকারে আমাদের দিকে আসছে। জায়গাটা দুপাশে সবুজ ঘাসে মোড়া। ঝাউ গাছের ফাঁকে ফাঁকে গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রজতির গাছ।
মানুষটা আমাদের তিন জনের মাঝখান দিয়ে অগ্রসর হলো। আমাদের ওখানে অবস্থান করার কোনো ভ্রুক্ষেপ তার নেই। আমার মুখের দিকে তাকিয়ে ভাইয়া বললো পাগল হবে মানুষটা।
অন্ধকার আছে ঠিকি কিন্তু চাঁদের আলো আছে। প্রকৃতির অন্ধকার রুপ অসাধারণ। অদ্ভূত একটা পোকার টকটক আওয়াজ চারিদিকের নিস্তব্ধতাকে ভেঙ্গে দিচ্ছে। অরিন্দম দা বলল, একটু সাবধান হতে ক্ষতি কি?
রাত এগারোটা নাগাদ আমরা হোটেলে এসে কিছুক্ষন টিভি দেখে ঘুমাতে গেলাম। কাল আবার সকাল সকাল উঠে বিচে যেতে হবে সূর্যোদয় দেখতে।
সমুদ্রের জলে প্রথম রবিকিরনের লাল আভা দেখতে বরাবরি ভীষন ভালোলাগে আমার। কাল রাতে এত দেরি করে শুয়েও আজ চারটে বাজতে না বাজতে সমুদ্র তটে চলে গেলাম আমি। অগত্যা আমার পিছু পিছু আমার দুজন সঙ্গীও হাজির হলো।
বলতে পারো সমুদ্রের উপর সূর্যের কিরন ঠিকরে পড়ে এক উজ্জল সোনালী আভা বিকিরন করেছে। প্রকৃতির এই আশ্চর্য রূপ আমাকে মুগ্ধ করে। ততক্ষনেই আমার প্রকৃতি প্রেমী মন ক্যামেরার ফটো গ্যালারি প্রায় সোনালীতে ভরিয়ে ফেলেছে।
বহু লালিত স্বপ্ন জাগে মনে, ন্যাকা ন্যাকা লাজুকতার ধার পাশ দিয়েও যায়না আমার চরিত্র। সারাটা জীবন আমাকে মায়া মমতা ভালোবাসা দিয়ে আঁকড়ে রেখেছেন এই প্রকৃতি। আজ এতো বছর পরও আমরা একে অপরের বেষ্ট ফ্রেন্ড এটাই বড়ো কথা।
সমুদ্রের জল আকাশের কালারের সাথে ম্যাচিং করা। আকাশ নীল হলে জলও নীল......কালো হলে কালো। যতদূর চোখ যায় এই সোনালী বালির তটভুমিতে সারাদিন মৎসজীবিরা চলেছেন বিশাল বিশাল মাছ ধরার জাল আর নৌকা নিয়ে। বিস্তীর্ন নীল সমুদ্র গিয়ে মিশেছে দীগন্তে।মুড আসলেই চোখ বন্ধ করে চলে যাই নদীর তীরে। হেঁটে নেই কিছুক্ষণ।  সে এক অন্য রকম ফিলিংস আসে মনে।
আমি তীরে বসে গুন গুন করি আর মনের কথাগুলো জলে ভাসিয়ে দেই। কথাগুলো ঢেউয়ের সাথে ভেসে চলে যায় আর ফিরে ফিরে আসে আমার নিকট। ভাটার সময় সেই বিচে নেমে গেলে মনে হবে যেনো কেউ সোনালি কার্পেট বিছিয়ে রেখেছে সেখানে।
আসল চমকটা ছিল আজ। না! হার মানলে চলবেনা, তাই সকাল সকাল খান কয়েক কচুরি উদরস্হ করে। তাড়াতাড়ি স্নানে নামব ঠিক করেছি। আগেই বলে রাখি, ওল্ড দীঘা বিচের ধার থেকে মুখোরোচক খাদ্যে মুখ লাগাবেন অত্যান্ত সাবধানে, নাইলে আর রক্ষা নেই, বিতৃষ্ঞ জন্মাবেই।
কমবেশি ঘন্টা তিনেক সমুদ্রের নোনা জলের উপর নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখার পর ফিরে এলাম হোটেলে। গতকালের সব বিরক্তি আজ ঘুঁচে গেল। দুপুরের খাওয়াটাও জমে গেল। ক্লান্ত চোখ দুটিকে একটু শান্তনার বাক্য শুনিয়ে রওনা হলাম অমরাবতী পার্কের উদ্দেশ্য, বোটিংও করলাম।
পার্কের ভিতরে ঢুকে বাঁদিকে একটু এগিয়ে যেতেই টিলার মতো রাস্তা ধরে হাঁটুতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ হাঁটার পর চোখে পড়লো একটা বৃহৎ বকুল গাছ দেখে মনে পড়লো বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্বশুর বাড়ি পানিতর গ্রামের কথা।
মানুষের মনুষ্যত্বের কথা আর কি বলবো পার্কের ভিতরে একটা বাঁধানো চৌবাচ্চা আছে, যার অভ্যান্তরে অস্তিত্ব বজায় রাখতে লড়াই করে চলেছে তারা। আবর্জনা আজ তাদের গ্রাস করে নিয়েছে।
পার্কের এক পাশে নিরিবিলিতে কিছু মানুষ তাদের মনের মানুষের সাথে গল্পে মেতেছেন। বলতে পারেন জায়গাটার নাম লাভার্স পয়েন্ট বা লাভলী পয়েন্ট। তাদের ভালোবাসাতে ডিস্টার্ভ না করাটাই শ্রেষ্ঠ।
অমরাবতী পার্ক থেকে গেলাম দীঘার মোহনাতে সেখানে কিছু চেনা মানুষের আগমন ঘটেছে। তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে ফিরে এলাম হোটেলে। একটু ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিয়ে গেলাম ওল্ড দীঘার বিচের ধারে।
দীগন্ত আড়ালে মুখ ঢেকে নিলো, সূর্যি মামা পালাতে লাগলো তার গতি পথে। ধীরে ধীরে অন্ধকার নেমে এলো সমুদ্রের বুক চিড়ে। গোধুলির সময় গগন যেমন সাজে তার সঙ্গে যদি কাউকে কল্পনা করতে পারো তাহলে আর কথাই থাকে না।
সমুদ্রের ঢেউয়ের একটা একান্ত নিজস্ব শব্দ থাকে। যেটা হাজার শব্দের মাঝেও স্পষ্ট কানে বাজে। লবনাক্ত জলের একটা আলাদা স্বাদ বা ঘ্রান লক্ষ্য করা যায়। সমুদ্রের ঢেউ কবিতার ছন্দে যায় মিলিয়ে। অসাধারণ কম্বিনেশন থাকে সে প্রাকৃতিক কবিতার ছন্দে। এই জন্য বুঝি সবাই মুগ্ধ হয়।
নাগরের নাগরিকতার জটিলতাকে পিছনে ফেলে। সব রকমের লাল চোখের কচকচানি ভ্রুক্ষেপ না করে। জ্যোৎস্নার আলো গায়ে মেখে। প্রথম স্পর্শে শিহরন আর প্রথম চুম্বনের বিফলতা। সে অনুভুতি সর্ত্যি আবরনহীন যদিও কল্পনাতে।
আমরা তিনজন চাঁদনির সন্ধ্যায় বালুকাবেলায় বসে শান্ত স্নিগ্ধ শীতল রহস্যময়ী সমুদ্রের সৌন্দর্য উপভোগ করছি, এক গুচ্ছ মুগ্ধতা নিয়ে। প্রতিটা ঢেউ আমাদের পা স্পর্শ করে যাচ্ছে আর বালি সরিয়ে দিচ্ছে পায়ের তলা থেকে।
বিচ থেকে উঠে হোটেলে ফিরে ডিনারটা সেরে নিলাম। হোটেলেই কাছুটা সময় কাটিয়ে, রওনা দিলাম এক নাঝুম নিস্তব্ধ রাস্তার উদ্দেশ্য। রাস্তাটা ওল্ড আর নিউ দীঘা মধ্যবর্তী স্থান। শুধু আমরা তিনজন। নিজতরঙ্গ সমুদ্রকে লক্ষ্য করে হেঁটে চলেছি উদ্দেশ্য হীন ভাবে। রাত বাড়তে বাড়তে কখন যে গভীর রাত হয়ে এলো বুঝতে পারিনি। আমরা যখন হোটেলে এসে পৌঁছেছি তখন ঘড়ির কাঁটা একটা ছুঁই ছুঁই। নিজেদের মধ্যে বাক্য বিনিময় করতে করতে ঘুমিয়ে গেলাম।
পরদিন সকাল (২৭.০৮.২০১৯), আমাদের বাড়ি ফেরার পালা। বিশাল সমুদ্র, যেনো তার মনের সাথে মিশিয়ে নিয়েছে আমার মনকে। দীঘা থেকে বাড়ি ফিরতে কিছুতেই মন চাইছে না।
সমুদ্রকে উদ্দেশ্য করে আমার মন বলে উঠল "বেশ আমি তবে চললাম" ঠোঁট ফুরিয়ে অভিমানী চোখ সমুদ্রের বড়ো বড়ো ঢেউ আমার পা ছুয়ে দিয়ে গেলো।
তিন দিনের স্মৃতি মনের মধ্যে নিয়ে ট্রেন ধরার উদ্দেশ্যে স্টেশনের দিকে রওনা হলাম।









ওরা ক্ষুধার্ত
              আব্দুল রাহাজ

রফিক আনোয়ার আলী একই স্কুলে পড়ত ওরা সেবার গ্রীস্মের ছুটি তে  শহরে মামার বাড়ি গিয়েছে গিয়ে দেখল এক অদ্ভুত কাণ্ড ওরা ফুটপাতের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দেখল ছেঁড়া ময়লা কাপড় পরিহিত লোক গুলো পথের ধারে পড়ে আছে আনোয়ার বলল এই দেখ দেখ এখানেও ক্ষুধার্ত মানুষ আলি তখন বলল শুধু কি আমাদের গ্রামে কি ক্ষুধার্ত গ্রামের মানুষেরা তাও সাহায্য করে কিন্তু শহরের বাবুরা তাদের সাহায্য করে না ওদের লাঞ্ছনা-বঞ্চনা কাটে সারা জীবন। আনোয়ারের খুব মায়া লাগলো রফিকের চোখ দিয়ে অশ্রু গড়াতে লাগলো আলী বলল এই দেখে তোদের মন খারাপ আরে আমাদের গ্রামে হারু দাদাদের দেখিস নি দুবেলা-দুমুঠো খেতে পায়না তাও ওরা গ্রামের মানুষের সাহায্যে বেঁচে আছে কিন্তু এরা যে একেবারে ক্ষুধার কাঙাল চল আমরা কিছু একটা সাহায্য করি এই বলে ওটা পাশের দোকান থেকে রুটি কলা কিনে সবাইকে দিতে লাগল তাদের সেই হাসি ওদের কাছে সবচেয়ে বড় সম্পদ হয়েছিল। সত্যি সভ্যতার উন্নতির সাথে সাথে মানুষের পরিবর্তন হলেও মানুষের বিবেকের পরিবর্তন হলো না মানুষ আজও ক্ষুধার্ত আনোয়ার রফিক আলী এসব কথা বলতে বলতে সুরেন্দ্রনাথ এভিনিউতে ওদের মামার বাড়ি ওরা দেখল এক অদ্ভুত ঘটনা একটা ছোট্ট ছেলে এক ভদ্রলোকের বাড়ি বলছে কাকু কাকু একটু খাবার দাও না কাল রাত থেকে না খেয়ে আছি খুব কষ্ট হচ্ছে তখন ঐ ভদ্র লোকটি বলল এখান থেকে যা তো যা যা নইলে চাপ দিয়ে গাল ভেঙে দেবো এসব কথা শুনতে পেল ওরা । ওই বাচ্চা ছেলেটি কে ওরা কাছে ডাকল বললো তোমার খাওয়া হয়নি ছেলেটি বলল না তাহলে চলো আমরা তোমাকে  খাইয়ে দিই ছেলেটির মুখে হাসি ফুটল বেশ পেট ভরে খেলেও নিয়ে গেল বাবা মায়ের জন্য ওরা ভাবল যেসব মানুষগুলো ছেলেমেয়েরা জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে সত্যিই ওরা ক্ষুধার্ত ক্ষুধার্ত এই অবস্থা দেখে মামার বাড়ি এসে কিছু খেয়ে পরের দিন গ্রামের বাড়িতে ফিরে গেল তাদের এই দৃশ্য সত্যিই ওদের কাছে বেদনাদায়ক হয়েছিল। এই ক্ষুধার্ত মানুষ গুলো আজও সমাজের বুকে বেঁচে আছে জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। সত্যি ওরা ক্ষুধার্ত ক্ষুধার্ত।




কবি স্মরণ  
         সায়ন প্রামানিক

প্রানের ঠাকুর, রবি ঠাকুরের জন্মদিন আজ ,
মনের আনন্দে পালন করি  তাই ২৫ শে বৈশাখ।
গ্রামগঞ্জে - শহরে - মফস্বলে ,
সর্বান্তরে তাঁরস্থান ।
রবীন্দ্র রচনার মধুর সুধা প্রানভরে সদাই করে পান।

তাঁর লেখা ভীষণভাবে জাগায় মনোবল ,
কখনও বা উদাস মন হয় চঞ্চল ।
তিনি আছেন,তিনি থাকবেন ,
সকল জনের মনে ,অন্তরেরঅন্তরতম হয়ে ।
শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই তাই এই মহামানবেরে ।
  








প্রেম করা বৌ
      বিমান প্রামানিক

প্রেম করে বিয়ে করেছে ছেলেটি
শ্বশুর বাড়িতে চোখ রাঙিয়ে চলে বৌটি।
নিজের বাবা মাকে এতই ভালোবাসে
শ্বশুর শাশুড়ির বেলায় সবটাই মিছে।
প্রেম করা মেয়ে, তাই চোখে তার তেজ
সংসারে তাই চালায় নিজের আদেশ।
শ্বশুর মশাই স্নেহ করেন নিজের মেয়ের মতো
বধূটি তাঁকে কথার ঝাঁজে করে ক্ষত বিক্ষত।
শাশুড়ি মায়ের কাছে বৌমা অতি আদরের
বাড়ির বৌ তবু বিরুদ্ধ শাশুড়ি মায়ের।
এতকিছু সইতে হয় সংসারে ছেলের বাপ মাকে
বৌয়ের যাতনায় তাই মুখ বুজে থাকতে হয় পুরুষকে।
বাবা-মায়ের প্রতি দেখে বৌয়ের এমন ব্যবহার
চুপ! প্রেম করে বিয়ে তাই কিচ্ছু নেই বলার।
ননদ যেদিন আসে তার বাবা-মায়ের বাড়ি
বৌয়ের মুখটি যেন হয়ে ওঠে কালো মাটির হাড়ি।
ঠিক এই বাড়িতেই আসে যেদিন তার বাবা-মা-ভাই
আদর, যত্নে থাকা খাওয়ার কত্ত বহর বেড়ে যায়।
সাধ্যের বাইরেও তাদের আপ্যায়নের বাধ্যতা
প্রেম করা মেয়ে তাই মুখ বুজে যত কাপুরুষতা।
আত্মীয় স্বজন আসে যখন নিজের আত্মীয়তার টানে
সবাই আপন হলেও অনাত্মীয়তার ভাব বৌটির মনে।







প্রবন্ধ 

  ' বাংলায় ভুল বানান'
  -  অগ্নিমিত্র 

  বানানগত ত্রুটি একটা বড় ত্রুটি । এটি মাঝে মাঝে বড়ই চোখে পড়ে । ভালো লেখাকেও মাঝারি বা বাজে স্তরে নামিয়ে আনে বানান ভুল।
   বাংলা সাহিত্যে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকেই আধুনিক বাংলা বানানবিধির রূপকার বলা যেতে পারে । সেই বানানরীতিই সবাই মেনে চলছেন।
 কিন্তু এখন অদ্ভুত সব শব্দ আর অদ্ভুত বানান দেখছি ।.. আর শুধু সাহিত্যিক নন, সম্পাদকরাও এই ভুল করছেন অহরহ।
  যেমন: ' যতিচিহ্ন' না লিখে লিখছেন ' জ্যোতি চিহ্ন '। মানে বোঝাতে চেয়েছেন  কমা, সেমিকোলন এইসব আরকি ।  সাহিত্যিকরাও দুর্ধর্ষ সব বানান লিখছেন । লিখছেন 'ছেড়খানি ', ' পাবন্দী ', ' পাশে' না লিখে ' পাসে', ' হাসি' না লিখে ' হাঁসি '।
  অনেকে, বিশেষ করে কিছু এলাকায় ' কোথায় 'কে লেখা হচ্ছে ' কোথাই '। আমি এক জায়গায় গিয়েছিলাম, সেখানে এক দোকানে বিজ্ঞাপন দেখলাম -'বাংগালের মিষ্টী দোঈ '। আর আগে বাসে ' দায়িত্ব'-র যা বানানের বহর দেখতাম তা কহতব্য নয় ! ' দাইত্ত ', 'দায়িত্য ' ইত্যাদি নানা রকমফের । আজকাল Handicapped সীট দেখি। সেদিন এক সুসজ্জিত বাসে উঠে দেখি সীটের উপর লেখা : -'  হ্যান্ডিক্রাফট'।
 সাহিত্যিকরা আশা করি এতটা ' দাইত্ত'জ্ঞানহীন হবেন না। বানান ঠিকমতো লিখবেন। না হলে ছোটরা বা একটু বড়রাও সেই লেখা পড়ে কী শিখবে ??!






২টি মন্তব্য:

  1. উত্তরগুলি
    1. আমাদের একটি সন্মান সূচক সার্টিফিকেট দিন। খুব সাধারণ ভাবে দিন।ছবি সাথে দিন অথবা নাম প্রকাশ করে দিন ।প্রথম স্থান অধিকারী ।
      অনেকে অনুপ্রেরণা পাবে লিখবে ।এই টি নিছক বায়না ।আমি যোগ্যতা পেলাম কোন certificate নেই । আ

      মুছুন