উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 09/12/2020
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 09/12/2020
"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:- 09/12/2020, বুধবার
সময় :- রাত 9 টা. 30 মি:
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒
দাগ
আব্দুল হান্নান
যখন শরীরের কোনো জায়গায়
আঘাত বা ক্ষত হয় -- তা
চিকিৎসার পরিচর্চায় সেরে যায়
অল্প বা বেশ কিছু দাগ থাকে
সে দাগে ব্যথা বা যন্ত্রণা
অনুভব হয় না..অনুভব হয়।
মনে যখন আঘাত লাগে
সে আঘাত চিকিৎসার কোনো
পরিচর্চার মধ্যে সারে না..
সাময়িক কিছু সমস্যা হলেও
বাস্তবে চির দিন থাকে না...থাকে
মনের মনিকোঠায় সে দাগ চির দিন...যা
সময়ে সময়ে গলে
বরফের মত কোনো জনসমুদ্রে
অথবা নিভৃতে নির্জনে শুধুই
নিমর্ম উপহাস নিয়ে....।।
জীবন অভিব্যক্তি-৩
ডাঃ তারক মজুমদার
স্বার্থসিদ্ধি হলে তোমার
নাও ফিরিয়ে মুখ
নানা অছিলায়---।
আবেগ এখন মূল্যহীন জানি
বেঁচে থাকাটাই আশ্চর্য
কৃত্রিম মুখোশ দৌরাত্মে---।
শুধু স্বার্থ ,শুধু স্বার্থ
মুঠোভরা জীবন আর প্রতারক মন
পারেনা করতে স্পর্শ
সাগরের গভীরতা----।
অবহেলা
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ
চক্ষুর সম্মুখে দেখেছি ট্রেনে
প্রতিবন্ধী ভিক্ষুককে ভিক্ষা করতে।
গায়ছে গান মধুমাখা সুরে
কতক মানুষ দিচ্ছে দু-এক টাকা করে।
খোদা এ তোমার কেমন লীলাখেলা
মানুষ হয়েও অন্যের থেকে কেন আলাদা।
বুট শুট পরা বাবুর কাছে হাত পাতিলো
টাকা দিলই না তাকে ঠেলে ফেলে দিল।
ভিক্ষুকটি মাটিতে পড়ে কাঁদদে লাগলো
একজন ফেরিওয়ালা ট্রেনে তুললো।
আহারে বেচারা কতইনা দুঃখ কষ্ট পেল।
এই গোটা দৃশ্য দেখতে দেখতে
ট্রেন এসে থামলো ক্যানিং স্ট্রেশনে।
যাইবার সময় ভিক্ষুক উচ্চসরে বললেন
বুঝলেন বাবু,বুঝবে সেদিন,আসিবে যেদিন
আমারই জায়গাই যে।
খোদার খেলা খোদায় জানে
কখন কি করিবেন তিনি।
এই বলে অদৃশ্য হলো ট্রেন থেকে
আর সজাগ করলেন মানবজাতির মনকে।
রজনী অতীত হলে..
শান্তি দাস
সকালের সূর্য উদিত হয় রজনী অতীত হলে,
পাখির ডাকে জাগে সবাই ভোর হয়েছে বলে।
ভোরের সূর্যোদয় জানান দেয় নতুন প্রভাতের আলো,
রজনী অতীত হলো দুর হলো আঁধার রাতের কালো।
কুয়াশার আবরন ভেদ করে উঁকি দেয় প্রভাত রবি হাসে,
রোদের মাঝে মুক্তা শিশির বিন্দু গেলো এবা মিশে।
জনমানবহীন জনপথে শুরু হয় মানুষের পদচারণা,
নতুন দিনের নতুন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে্য নামে জনতা।
নতুন স্বপ্নের বাস্তবায়নে পথচলা শুরু করে স্বপ্নচারী,
নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবার স্বপ্ন নিয়ে যাত্রা শুরু করে অভিযাত্রী।
এইভাবেই তো শুরু রজনী অতীত হয়ে সুন্দর সকালের,
দিনের পর দিন চলছে এমনভাবে একটি নতুন সকালে।
রাতের নিরবতা ভেদ করে কুয়াশার চাদরে ঢাকা কৃষকদের আঙ্গিনায়,
পুর্ব দিগন্তে এখনো আসেনি প্রভাতের আলো কৃষক চলছে নিজ ভঙ্গিমায়।
কৃষকেরা ছুটছে মাঠে নতুন ফসল বুনবে আশায়,
রজনী অতীত হলো যে যার কাজে লাগে নিজ ভালোবাসায়।
মিছিলে হাঁটুন
হামিদুল ইসলাম
মিছিলে হাঁটুন
দাবী সনদটা হাতে নিন
আসুন প্রতিবাদ করি ।।
মিছিলে হাঁটুন
কৃষি বিল বাতিল করুন
আসুন এই স্লোগান তুলি ।।
মিছিলে হাঁটুন
আজ অবরুদ্ধ নগরী
এগিয়ে চলুন ।।
মিছিলে হাঁটুন
পুলিশের বুটে ভয় কি সে
পুলিশের বুট ভাঙছি, ভাঙবোই ।।
মিছিলে হাঁটুন
ওদের টিয়ার গ্যাস আর জল কামান
আজ গুড়িয়ে দেবো, দেবোই ।।
মিছিলে হাঁটুন
আসুন দাবীগুলো উসুল করে নিই
কৃষিবিল আগুন জ্বালিয়ে পুড়ুন ।।
মিছিলে হাঁটুন
রাষ্ট্রশক্তিকে হুঁশিয়ারি দিন
কৃষিবিল প্রত্যাহার করুন ।।
গ্রহণ করুন
সুস্মিতা দে
আজ নব আনন্দে হবে
যাত্রাপালা ? মায়েরা শিশু
কোল বসে আছে কবিদের
পানে চেয়ে ।শুরু হলো কবির
লড়াই হাসছে সবাই জীবন
সুন্দর আঁকেন গ্রামের মানুষ ।
কবির লড়াই তুঙ্গে যখন সরল
গ্রামবাসী ভয়ে ঈশ্বর কে প্রার্থনা
করে তর্ক নহে পেয়েছি তোমার
কৃপা হে জগন্নাথ । যেমন রাখো
থাকি খুশি শুধু বড় ভয় রোগে
কে কেন এতো করে কৃপা
করো নাথ।
জ্বালা যন্ত্রণা তোমার কৃপাতে
হোক নীরোগ। সকলের জীবন
বড় দুসঃহ আজ মানব জন্মে
কেন এতো রোগের শিকার?
কাঁদে অহরহ রাতদিন ।
আনন্দ মনে যা দিয়েছো প্রভু
নিয়েছি ভালোবাসে সব ।
রোগ ছাড়া নেই কোন তর্কের
অবকাশ ?
প্রবন্ধ
ভক্তি আন্দোলন ও সুরদাস
- অগ্নিমিত্র
ভক্তি আন্দোলন পঞ্চদশ ও ষোড়শ শতকের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সমাজ ব্যবস্থা , জীবনযাত্রা ও সাহিত্যে আমূল রদবদল ঘটল এই আন্দোলনের মাধ্যমে। এলেন মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য, নিত্যানন্দ, গুরু নানক, কবীর প্রমুখ। বাংলায় এলেন অনেক মহাকবি । অন্ধ কুসংস্কারের বেড়াজাল ভেঙে মানুষ মানুষ হতে শিখলো। সহজিয়া ধর্ম জনপ্রিয় হলো। ভেদাভেদ , ছুঁতমার্গ ভুলে, ধর্মের বাধা ভুলে গিয়ে ভক্তি ও প্রেমই হলো মুখ্য উপজীব্য!..বৈষ্ণব ধর্মের প্রসার ঘটলো। আউল- বাউল সবাই এলেন। প্রচলিত হলো সব ধর্মের মিলনস্বরূপ সত্যনারায়ণ ও সত্যপীরের পূজা। সবাই বুঝলো, মানুষকে প্রেম করলেই ঈশ্বরের অধিক নিকট পৌঁছনো যায়। ঘৃণা করে লাভ নেই।
এই প্রেক্ষাপটে আবির্ভাব ঘটল মহাকবি ও গায়ক সুরদাসের। সহজ ব্রজভাষা ও অবধী ভাষায় তিনি ভক্তি ও প্রেমের কবিতা বাঁধতেন ও গাইতেন। জন্মান্ধ, তাও এত প্রতিভাধর ও প্রেমরসে বিলীন অদ্ভুত এক ব্যক্তিত্ব এই সুরদাস।
আগ্রার কাছে এক গ্রামে ষোড়শ শতকে জন্মগ্রহণ করেন সুরদাস । পিতার নাম রামদাস। জন্মান্ধ হবার কারণে পরিবারের সবার অপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাই তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। যমুনা নদীর তীরে গান গেয়ে ভিক্ষা করে কোনরকমে তিনি দিনাতিপাত করতে থাকেন। পরে সাধু বল্লভাচার্যের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন । সুরদাস রচনা করেন সুরসাগর ও সুর সারাবলীর মতো গ্রন্থ । মূলতঃ শ্রীকৃষ্ণ- রাধার প্রেম ও কৃষ্ণ ও গোপিকাদের লীলা নিয়ে কাব্য রচনা করতেন তিনি। তাঁর কবিতা ও গান যুগের পর যুগ ধরে হিন্দি ভক্তি সাহিত্যকে প্রভাবিত করে। এমনকি গুরু গ্রন্থ সাহেবেও তাঁর লেখা উদ্ধৃত আছে।।
ভুবন দের গ্রামে শীতের মেলা
আব্দুল রাহাজ
চারিদিকে বেশ শীতের আমেজ সকাল হলেই কুয়াশায় মোড়া এক পরিবেশ দেখতে পায় প্রকৃতি মা সেরকম ভুবন দের গ্রামে শীতের আমেজ এবার বেশ পড়েছে । ওদের গ্রামে তেপান্তরের মাঠে শীতের মেলা হয় গ্রামের মানুষেরা শীতের বিভিন্ন সবজি নিয়ে বসেন আরো নানারকম মুখরোচক খাবার অনুষ্ঠান হয় আশেপাশের গ্রামের লোকও আসে দেখতে গ্রামের মানুষগুলো প্রান্তিক হলেও ওরা বেশ সুখে শান্তিতে বসবাস করে। এবারের মেলায় বেশ ভিড় চোখে পড়েছে শীতের খাবার থেকে শুরু করে নানা রকমের খাবার ভরপুর হয়ে ওঠা ভুবনের গ্রামের মেলা আমোদপ্রমোদ হয়েছিল এবারের শীতের আমেজে। এক সপ্তাহ ধরে চলে ওদের এই গ্রামের মেলা মাত্র কুড়ি বছরে পড়ল ভুবনের গ্রামের এই মেলা শোনা যায় ভুবন দের গ্রামের জমিদার জগৎশেঠ তিনি এই মেলার উদ্বোধন করেন যা হোক ভুবন রা এবার কয়েকজন বন্ধু মিলে সবজি নিয়ে বসেছে যা বিক্রি হবে তা দিয়ে লাস্টে দিনরাত জিলাপি পাপড় ভাজা খাবে ও তাদের কি আনন্দ আস্তে আস্তে মেলার সেই দিন এসে গেল কুয়াশায় মোড়া শীতের আমেজে শীতের মেলায় ভুবনের তার বন্ধুরা কথামতো জিলাপি পাপড় ভাজা নিয়ে ওরা বসে গেল যাত্রাপালার মাঠে হো হো করে হেসে উঠছে যাত্রা দেখে মাঝে মাঝে জিলাপি আর পাপড় ভাজা স্বাদ নিচ্ছে এভাবে উপভোগ করেছিল সে বছর। এবছর একটা ঘটনা ঘটেছিল মেলার তৃতীয় দিনে ঠান্ডা পড়েছে সেদিন সবাই রংবে রঙের পোশাক পড়ে এসেছে রাত বাড়তেই মানুষের চোখ ভীড় চোখে পড়ল বেশ একটা ছেলে তার বাবাকে বলছে বাবা বাবা আমি ওই খেলনা গাড়িটা কিনব কিন্তু প্রান্তিক দরিদ্র মানুষ বলে কিছু কিনে দিতে পারেনি তাকে সামান্য পাঁচ টাকার জিলাপি কিনে তাড়াতাড়ি করে বাড়ি নিয়ে গেল ভুবন এসব দেখে খুব মায়া লাগলো পরের দিন মেলা থেকে একটা গাড়ি নিয়ে গিয়ে ছেলেটির হাতে দিয়ে বলল যাও খেলা করো এই ঘটনাটা ভুবন স্বচক্ষে দেখে তার এই কাজ নিজে চোখে করে মেলাকে এক অন্যরকম চোখে দেখত ভুবন। এইভাবে ভুবন দের গ্রামের মেলা শীতের দিনে বেশ জমে উঠতো।
তোর অপেক্ষায়
সমীরণ বেরা
এখন শরীর পোড়ে না আর
মন বরাবর।
অস্তাচলের সূর্য কখনো ভালো করে দেখেছ কি?
জ্বালাময়ী সূর্য নিস্তেজ হয়ে পড়লে
লাল আভার মাঝে একটা কালো বিন্দু
তুই চলে গেলেও থাকবি ওই বিন্দুর মত।
তোকে কিছুতেই মুছতে পারছি না
ভালো আছিস তো তুই?
আমি এখন যাযাবরের মত
বোহেমিয়ান তো চিরকালের তাই,
তোর এখন ভরা গৃহস্থালি
আমার চারপাশে অনেক সবুজ
তুই একটু সবুজ ছোঁয়া নিতে পারিস?
গণ্ডীবদ্ধ জীবনের প্রান্তসীমা পেরিয়ে
নতুন নতুন দিগ্বলয়; কোন এক অজানা দেশের মত
সেখানকার রাতের অন্ধকারে তোর চুলের ভিতর
আমার চেতনায় জোনাকিরা আলো দেয়।
এক রহস্য ভরা অন্য পৃথিবী যেখানে তুই আর আমি।
নেভা আলো বার বার জ্বলে ওঠে সৌদামিনীর মত
তুই আর নিজে থেকে জাগবি কবে?
আমি পূর্ণিমা চাঁদের অপেক্ষায় বসে আছি।
বৃষ্টিপতন
মহীতোষ গায়েন
সব আগুন নিভিয়ে দেবে বৃষ্টি
বৃষ্টি তুমি আগুন চিনে নাও,
জলের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়
ঘুমহীন রাত বৃষ্টি এনে দাও।
ভোরের আকাশ হাত বাড়ায়
হাতছানিতে হৃদয় দিশাহীন,
সূর্য ওঠে পাখিরা গান গায়
মনের নদী আজও গতিদীন।
দুপুর গড়ায় বিকেল চলে আসে
গোধূলি বেলায় বিষাদ সুর ভাসে,
মনের আগুন জ্বলছে দাউদাউ
বৃষ্টি কোথায়,আনলো না তো কেউ।
রাত এসে যায় চাঁদের আলো পড়ে
একলা বাউল হারিয়ে ফেলে পথ...
দেহ মনে অস্থিরতা হঠাৎ আসে বৃষ্টি
আগুন নেভে,নেভে বিষাদ এবং অনাসৃষ্টি।
আমার নাজানা উপকথা
অঞ্জলি দেনন্দী, মম
আমার জীবনের কথা,
কইতে পাই ব্যাথা।
জীবনটা কেটে গেল অযথা।
সবই কী হল বৃথা?
পর্বত - ঢালে পুঁতে দিলাম,
প্রেমের ঝুনো-নারকোল।
অঙ্কুরই বের হল না,
তার থেকে!
কতকাল যে অপেক্ষায় ছিলাম, ...
ধৈর্য্যকে আঁকড়ে রেখে!
গাছই যখন হল না,
তার ফল কী করে পাবো, আর?
প্রেমের অসফল অভিজ্ঞতাকে চিনে নিলাম।
ভালোবাসার তুফানে, আবার,
পেতে চাইলাম, মহাসাগরের ঢেউয়ের দোল।
বাঁধলো গোল।
ডুবে, তলিয়ে গেলাম, অতলে।
প্রবল ভালোবাসার উথাল পাথাল বলে।
প্রেম, ভালোবাসা,
বারবার,
শেষ করল মোর আশা।
অবশেষে, আমার প্রেম, ভালোবাসা,
কবিতায় পেলো, চিরসফল ভাষা...
বাঁধলো সেথায় অশেষ বাসা.......
এখন মোর সফল প্রেম, ভালোবাসা,
শুধুই অদম্য অনন্ত হাঁসা.......
চমৎকার আয়োজন । যথেষ্ট বৈচিত্র্যময়
উত্তরমুছুনবাহ!অসাধারন লেখার কিছু অনুভূতি পেলাম লেখায়।সাহিত্যের কলম সবসময় সত্যের পথে বিরাজমান।এবং এই পএিকার সকল বিচারকমন্ডলীদের জানাই আমার হৃদয় গহীন থেকে অফুরন্ত ধন্যবাদ।পরের পাতার অপেক্ষায় রইলাম।শুভ সকাল।
উত্তরমুছুন