শুক্রবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/12/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/12/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 25/12/2020

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:- 25/12/2020, শুক্রবার
               সময় :- রাত 09 টা. 30 মি:


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


*বড়ো দিনের সান্তাক্লজ ও যীশুজন্ম উৎসবের বাঙালিয়ানা*

      রাজীব কুমার নন্দী

"ক্রিসমাস বড়দিন ভারি ধূম হয়,
গীর্জা ঘরে ঘণ্টা বাজে প্রভাত সময়।
যীশুর প্রার্থনা হয় প্রথমে প্রভাতে,
প্রার্থনা সঙ্গীত সবে গাহে একসাথে।"
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারীর কথায় আজ বড়দিনের রঙ্গীন উৎসব প্রাসঙ্গিকতা খুঁজে পায়।কে এই শান্তা?রয়েছে হাজার প্রশ্ন।ইংল্যান্ডে নিকোলাসের গল্পকে ভিত্তি করেই ক্রিসমাসে শিশুদের উপহার দেওয়ার চল তৈরি করা। ফাদার ক্রিসমাস এবং ওল্ড ম্যান ক্রিসমাস নামও দেওয়া হয়।
শহরের পাড়া-মহল্লার বর্ণিল সাজসজ্জা, গিফট কেনা আর বাহারি সব পোশাকের সঙ্গে চমৎকার চোঙা আকৃতির টুপি আমাদের প্রতিবছরের ২৫ ডিসেম্বর রঙিন ক্রিসমাসের কথাই মনে করিয়ে দেয়। ২৫ ডিসেম্বর খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব বড়দিন বা ক্রিসমাস ডে। এই দিনটি মূলত যিশুর জন্মদিন হিসেবে পালন করা হয়। খ্রিস্টানরা বিশ্বাস করে, এই দিনই যিশু জন্মগ্রহণ করেন। তাঁরা মনে করেন, ঈশ্বরের পুত্ররূপে যিশু এসেছিলেন এই মর্ত্যে।

বড়দিনের অন্যতম বড় আকর্ষণ হলো সান্তা ক্লজ। সান্তা ক্লজ বলতে আমরা যাকে চিনি, তিনি লাল রঙের পোশাক, চোঙা আকৃতির লম্বা টুপি পরা সাদা চুল-দাড়িওয়ালা এক বৃদ্ধ লোক। কিন্তু রহস্য  হলো কে এই সান্তা? কোথা থেকে এলেন, কেমন করে তাঁর আবির্ভাব, কেনই বা ঘুরে ঘুরে বাচ্চাদের  মাঝে উপহার বিতরণ করেন? ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, আজ যাকে আমরা সান্তা ক্লজ নামে চিনি, তার পেছনে রয়েছে লম্বা কাহিনী। ঊনবিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের দিকে লাল জামা, টুপি ও সাদা চুল-দাড়িওয়ালা লোকটির ইতিহাসের সন্ধান মেলে।

পাশ্চাত্য সংস্কৃতির কিংবদন্তি চরিত্রটি আসলে ছিলেন সেন্ট নিকোলাস নামের একজন ধর্মযাজক। এশিয়ার মাইনর বর্তমান তুরস্কের পাতারা নামক অঞ্চলে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিনি খুবই মহৎ ও দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। দান-দক্ষিণায় তাঁর বেশ সুনাম ছিল চারদিকে। তিনি তাঁর সম্পদ অসহায় গরিব মানুষের সাহায্যে ব্যয় করতেন। তাঁর এই মহানুভবতার জন্য তিনি মানুষের কাছে অতিপ্রিয় ছিলেন। ধারণা করা হয়, একবার দাসী হিসেবে বিক্রি হওয়া তিনটি মেয়েকে রক্ষা করে তাদের বিয়ে ও যৌতুক বাবদ সব খরচ তিনি বহন করেন। তাঁর এই মানবতার জন্য তিনি মানবরক্ষক হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন। শুধু তাই নয়, প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী নিকোলাস ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ও মধ্যরাতে ছেলেমেয়েদের বাড়ি ঘুরে ঘুরে উপহার দিতেন। কিন্তু এখন আমরা রঙিন পোশাক পরা যে সান্তা ক্লজকে দেখি, তিনি তেমন কোনো পোশাক পরিধান করেননি।

১৮২৩ সালে ক্রিসমাস ডে উপলক্ষে আমেরিকার বিখ্যাত লেখক ক্লেমেন্ট ক্লার্ক মুরের লেখা ‘A visit from St. Nicholas’ কবিতায় এই পোশাকের উদ্ভাবন হয়। আজকের সান্তা ক্লজের রঙিন পোশাকের সূচনা হয় এই কবিতা থেকেই, যা বিভিন্ন পরিক্রমায় আজকের এই রূপ লাভ করেছে। এক সন্ত আটটি হরিণটানা গাড়িতে করে উড়ে উড়ে বাচ্চাদের উপহার দিচ্ছেন—এমন চিত্রই ফুটে ওঠে এই কবিতায়।

১৮৮১ সালে থমাস ন্যাসট নামক একজন আমেরিকান কার্টুনিস্টের আঁকা ছবি পত্রিকায় প্রকাশিত হলে সান্তা ক্লজের এই সাজ ব্যাপক খ্যাতি পায়। সেখানে সান্তা হরিণটানা গাড়িতে চড়ে কাঁধে উপহারভর্তি ঝোলা নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বাচ্চাদের উপহার দেওয়ার চিত্র ফুটে ওঠে, এই ছবিটি গোটা বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়তা পায়। এভাবেই সারা বিশ্বে ক্রিসমাস ডের আগের রাতে বাচ্চাদের বাসায় বাসায় উপহার দেওয়ার প্রচলন শুরু হয়। আর বাচ্চারা বিশ্বাস করে, সান্তা ক্লজ জাদু জানেন। জাদু দিয়ে উড়ে এসে তাদের নানা রকম উপহার দিয়ে যায়।
এখানেই বুঝি সান্তার স্বার্থকতা।বড়দিন মানেই কেক,বড়ো দিন মানেই এক আনন্দ উৎসব।বাঙালীর আবেগ ও জড়িয়ে আছে এই খ্রিস্টীয় উৎসব এর সাথে।
উত্তম চক্রবর্তীর কথায় বলা যায়
"এই দিনে এলো ভবে প্রভু যীশুখ্রিস্ট,
ধরাধাম পূর্ণ হলো মহামানব সৃষ্ট।
মানব রূপেই জন্ম নিলো পৃথিবীতে।,
ধরণীর বেথেলহেমে জীর্ণ গোশালাতে।"



মাতা  মেরীর  কোলে  যীশু.....
চিত্তরঞ্জন  দেবভূতি

যুগে  যুগে  পৃথিবীতে  মহামানব  আসেন,
জীবন  দিয়ে  তাঁরা  এই  মানব  জাতিকে  ভালোবাসেন৷
এই  ২০২০ বছর  ধরে  যীশুর  নামে  বন্দনা  চলে,
তিনি  আজও  সমান  প্রাসঙ্গিক,
বিশ্বের  কোটি  কোটি  নরনারী  প্রভু  যীশুর  কথা  বলে৷
শয়তান  চিরকাল  থাকে  সব  দেশে,
তাঁদের  নাম    জানে  না অনেকে,
যাঁরা   সেদিন  হত্যা  করেছিল  প্রভু  যীশুকে৷
কত রোগ  নিরাময়  থেকে  শুরু  করে,
মৃতদেহে  প্রাণ  দান,
করতে  পারতেন মহান  যীশু,
তাই  বুঝি  সারা  বিশ্বের  মানুষ  গাইছেন  আজও মহামানব  প্রভুর  জয়গান৷
হিংসায়  জ্বলে  উঠেছিল  যাঁরা  সাফল্য  যীশুর  দেখে,
শেষে  মেরে  প্রভুকে  তোমরা  অমর  করে  দিলে,
প্রশ্ন  উঠেছে  তার  বিনিময়ে  তোমরা  কি  আর  পেলে?
প্রভু  যীশু  ছিলেন,আছেন  থাকবেন  বেঁচে,
লক্ষ  লক্ষ মানুষের  মনে,
প্রভুর  স্মরণে  সমবেত  প্রার্থনা  চলে  এখানে   ওখানে৷
ক্ষমা  করো  আর  ভালোবাসো...
তোমার  অমর বাণী,
মেনে  চলতে   পারলে  সুন্দর   হবে  আমাদের  ক্ষুদ্র   জীবন  খানি৷





মেরি  ক্রিসমাস
        পিনাকী   মুখার্জী
  
             মুক্তো  ধারা  ঝরবে  সকল
               খোকা  খুকুর  ঠোঁট  বেয়ে  !!
            সেই  হাসিরই  জোয়ার  তোড়ে 
                নাব্য  খুশির  গাঙ  ধুয়ে  !!
           
                      আয়  না  ছুটে ,  রং -
             বেরঙের , স্বপ্নগুলো  ধরবি  আয়  !!
               কেক  লজেন্স  , খেলনা পুতুল ,
                 কেমন  রামধনুতে  রং  ছড়ায়  !!

                 বড়দিনে  বুড়োর  বেশে ,  ঐ
                   পাকা  দাড়ি  পক্ক  কেশ  !!
               ওর  ঝোলায়  ভরা  হাসিখুশি ,
             আর  ইচ্ছেপূরণ  এক  নিমেষ  !!
    
                      গল্প দাদু , ঠাকুমা  আর ,
                  চাঁদের  বুড়ির মজার দেশ  !!
               সেই  তেপান্তরের  মাঠ  হতেই
               আজ  সান্টা  দাদুর  সমাবেশ  !!




Very Happy Christmas
           Mom

I celebrate Christmas.
I pray,
Hey!
Bless us!
Bless, bless, bless!!!....
At this night
You Son of God, yes, yes, yes,
Gift us your bliss-light!
Which is endless.
On your holy feet
Kindly give me place!
In my every heart beat,
You stay as my response, always.
On my all ways,
You become my life-guide as my soul-rays.
You become my mind's fragments with spirituality.
In my activity you become my reality.


  বিভাগ :    কবিতা

  বিলম্বিত
সৌম্য ঘোষ

আমার পৌঁছুতে শুধু দেরি হয়ে যায়
দরজা খুললেই আলোকের বারান্দা,
ইশারায় ডাকে রূপালী হাহাকার,
সারি সারি ঘর উজালা উঠান,
বেদীতে বাঁধানো হর্ষ চারুলতা।
সবকিছু জুড়ে কোথায় যেন এক মানবিক ঘ্রাণ।
উৎপল নেশায় রাঙা কামনা,
রূপের কাছে মিনতি শুধু,
অগ্নি শুভ্রতায় দুপায়ে জড়ানো শৃঙ্খল,
লক্ষ বছরের চুম্বনের হতাশায়
দাঁড়ানো ভালোবাসা,
পায়রা ওড়ানো হারানো বিকেল,
কিশোরীর নাভিমূলে দূরত্বে ঝড়।
আমার পৌছুতে শুধু দেরি হয়ে যায়।।।



মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা

১।. তোমার ইচ্ছা

ইহলোকে
আমি থাকি
তুমি আর চাওনা,
ক্রমশ তাই অসুস্থ হচ্ছি
চোখের সামনে নামছে কালো পর্দা
ক্ষীণ একটা ডাক নীরবে কর্ণগোচর হচ্ছে।

কে যেন অজান্তেই পাততাড়ি গুটিয়ে দিচ্ছে
ছুঁড়ে ফেলেছি পানের বাটা জর্দা
নিজেই নিজেকে অবিরত বলছি
এই ঘরে আরনা
নিজেকে রাখি
পরলোকে।

২।. হঠাৎ একদিন

টিকটিক
করতে করতে
একদিন হঠাৎ থামে
ঘড়ির কাঁটা,স্তব্ধ চরাচর
জিভ আগ্ৰহ হারায় কথা বলার
চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যায় চিরতরে।

চিকন  শরীর আগ্ৰহ হারায় নিজের ঘরে
চিতার আগুন পেরিয়ে শুরু চলা
অসীম অনন্ত নক্ষত্রের ঘর
শান্ত সমাহিত ধামে
হয় চলতে
ঠিকঠিক।




উমর ফারুক এর দুটি কবিতা
কিছু চাওয়া
উমর ফারুক

শিশিরের বিন্দু তে
ভিজে পা ,সন্ধ্যার চাপা ঘুমে।
রক্তিম সূর্য থেকে রক্তিম আলো
নিয়ে বেঁচে থাকা এই মরশুমে।
চিৎকার করি
চিত্কার করে উঠলো মন
তীক্ষ্ণ বাতাস বয়ে নিয়ে আনে ওরা
অজানা অচেনা এক গুঞ্জন।
বোঝে না সে শুধু
আমার পথ চেয়ে দেখে থাকা
কারা যোগায় না আহার
করে নিদ্রা হারাম কিছু চাওয়া
কি আমার অপরাধ?

একটি খুনের গল্প
উমর ফারুক

দুপুরে সূর্য টা মাথাতে দেই রোদ
আমি হয় নির্বাক অন্ধ
কোন পথে ছুটে যায় মানুষের জন্য
রাখিনা পথ কভু বন্ধ।
পৃথিবীটা তেতে উঠে সূর্যের আলো তে
ডুবে যায় কারো ভরা নৌকা
হিসেবের খাতা লেখা নিয়ে  ফর্দ
বয়ে যায় বিকাশের নৌকো।
একদিন রাত ভারী বিষ্মিত মে মাস
হাত জোড়া এক করে দাঁড়াল
'বাবু সাব, শুনে নিল তার যত কাকুতি
ব্রেন ছিল তার খুব ধারালো।
সংক্ষেপে বলা হয় চাহিদা কত তার
নির্জন রাতে কত হুমকি
প্রতিকূল না থাকায় বজ্র তার কন্ঠ
ফেঁপে ওঠে রাগ তার কম কী!
টুটি চেপে ধরে আছে খুব জোড়ে
ঠ্যাং দুটো ফাঁক হল কিছুটা
ভাষাতে ফুটে উঠে জীবনের শেষ গান
খুনী তো মানুষ নয় কিছুটা।
চাঁদ তুই ডুবে গেলি কেন আজ এ রাতে
সুর তার টুটি থেকে হলো বের
সব কিছু মিলিয়ে যাবে আজ এই ক্ষণে
শেষ সুর ছেয়ে গেল মত ঝড়ের!
ততক্ষণ নির্জন পথ চেয়ে দেখা তার
হতাশার শেষ সুর যদিও
পুব দিকে ফাঁকা মাঠ ঝিঝিদের ডাক পড়ে
আছে এক নিষ্পাপ নদিও।
দেখেছে সে পাপ কার কেবা করে খুন
সেইদিন বিচারের দণ্ডে
কষ্টের চাপা ঘুম শেষ শ্বাস নিতে হয়
ধরা খাবে এই খুন কাণ্ডে।





হামিদুল ইসলাম এর কবিতা গুচ্ছ
                 প্রিয়তমা
          হামিদুল ইসলাম

            

ফিরে আসি সামুদ্রিক বন্দর
অযাচিত জীবন
ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ যামিনী
কুয়াশায় ঢাকা মেঘের আস্তরণ
তবু পথ চলি সুদূর স্বপ্নভূমি ।।

যেখানে দাঁড়িয়ে আছে
আমার স্বপনচারিনী
উন্মত্ত হয়ে ওঠে মন
আরশিনগর ডুবে যায় বরাবর
আমার স্বপ্নস্রোতে ।।

সহচরী
হাতে হাত রাখো
এখন ছায়ারা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে
জানালার শার্সিতে রোদ
কার্নিসে আটকে আছে আমার প্রিয়তমার মুখ ।।




                    লড়াই
             হামিদুল ইসলাম
                

কৃষক উঠেছে জেগে
হাতের ঝাণ্ডা লাল
শাসক দলের এখন পৌষ মাস
কৃষকের আকাল  ।।

কাস্তে শানানো কৃষক
নিজ দাবী আদায়ে অটল
জীবন যায় যাক
তবু সংগ্রাম করে তোলে সফল  ।।

লাখো লাখো কৃষক আজ
দিল্লির ময়দানে
তাদের দাবী কৃষি আইন বাতিল করো
লাখো কণ্ঠ কথা বলে একই কলতানে  ।।

ইতোমধ‍্যেই শহীদ হয়েছেন একচল্লিশ জন
কী নিষ্ঠুর শাসক দল !
জোর করে আইন করে
দেখায় রক্তের বল  ।।

তোদের রক্ত একদিন নিঃশেষ হবে
পারবে না নিজেদের বাঁচাতে
জীবন মৃত‍্যু জীবনের সাথী
প্রমান হবে সেদিন দিল্লির সভাতে  ।।




                     তুমি
            হামিদুল ইসলাম
              

এখন যতোবার দরজায় কড়া নড়ে
মনে হয় তুমি এসে দাঁড়িয়ে আছো
আমার দরজায়  ।।

দরজা খুলি
লোক নেই
কেবল কুকুরের চিৎকার   ।।

কিন্তু চেনা ছন্দগুলো হারালেও বুঝতে পারি
তুমি এসেছিলে
অভিমানে দাঁড়িয়েছিলে দরজায়  ।।

আমি দরজা খুলতেই
তুমি অদৃশ‍্য হয়ে গেলে
তবে কেনো এসেছিলে  ??

প্রাণের গভীরে তোমার প্রতিচ্ছবি আঁকি
প্রাণের টানে
নিতান্ত ভালোবাসায়  ।।





                  সমুদ্র
          হামিদুল ইসলাম
            

ধলেশ্বরী নদীতে যখন স্নান করি
আমার একটা হাত টেনে ধরেছিলো
স্রোত
কষ্ট করে ফিরে এসেছিলাম তীরে ।।

আজ সমুদ্র দেখে ভয় হচ্ছে
কতো অগোছালো সমুদ্র
সমুদ্র প্রাণ কাড়ে
ভালোবাসা কাড়ে প্রতিদিন  ।।

অগাধ জলরাশি ! তোমাকে প্রণাম
আর স্নান করতে সমুদ্রে নামবো না
কোনোদিন
সমুদ্র মানুষ টানে পিশাচের মতো ।।



হারা শব্দ নেই
সুস্মিতা দে

অস্ত্র ছাড়া সফলতা অর্জন সীতা রাম রাজত্ব কে রক্ষা করেছিলেন তবে  আমার সেতু মা সব পারে। সেতু মাথা তোল । তোর ভাবনা খাতায় লিখে রাখবি মাথা তোল সেতু।

মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে মাথা তোল সেপটিক হবে সময় নাই।সফলতায় চেয়ে দেখ তোর শিরে মার করুনার আশীবার্দ তোর শক্তিতে ঘুমেে অচেতন মানুষের আঁধার কাটে আজ। তুমি ঠিক দেখেছো মা ? 

পরিবর্তন হয়েছে মেয়েদের  লেখাপড়ার হার অনেক বাড়ছে।  চিন্ত ধারা কল্পনা শক্তি স্বাধীনতার মানে  মানুষের মন সুন্দর হলে ঈশ্বর আশীর্বাদ আছে । তোর সুন্দর স্বপ্ন  সফল হবে । সমাজের অসহায় নারী আজ নয়। তারা সহায় দিতে জানে বল সেই  লাইন টা  জননী জন্ম ভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সি মা ।

লোকে ভাবে তার স্বাধীন মতো ।নারী অবলা মেয়েছেলে নয়।  মেয়েরা রাতে ঘুমাতে মাথায় চিন্তা থাকে। সহ্য শক্তি বেশি । সীতার কথা ।সুবর্ণলতা সত্যবতী  তারা সমাজের জন্য মানুষ ছিলো। তুই পারবি ।সুন্দর  মানুষের মতো বুদ্ধিমতী মেয়ে হৃদয়ে শান্ত ধীর স্থির নম্রতা আছে উদরতা আছে আর কি?

তেজস্বিনীর চোখে জ্বলে আগুন ,অস্ত্র সুসজ্জিতা মা দিদিরা তোকে পাশে চায়, একটি ধর্ম সভ্যতার আলোকে বর্বরতার ধ্বংস চাই ,অন্নপূর্ণাআশীর্বাদে কৃষক কে প্রাপ্ত সন্মান মর্যাদা দিতে হবে। তা না হলে কৃষিকাজ বন্ধ হোক।

ধনী শ্রেনীর বুদ্ধি তে বুদ্ধি কোথায় থাকে আজ কেউ জানেনা। উদাহরণ হীরক রাজা ।।চলো চলো আর একবার  সিনেমা দেখি?। 




শান্তি দাস এর কবিতা গুচ্ছ
উত্তরণ
শান্তি_দাস

জীবনের যত ঘাত প্রতিঘাত
   পেরিয়ে যাবার আশায়,
আসে মোদের অনেক আঘাত
    কেউ থাকে না নিরাশায়।
জীবনে পেরিয়ে যেতে হবে সাগর
   পাহাড় নদী মনে ভাবনা,
সময় বহমান স্রোতের গতিতে
   তবুও মনে জাগে সাধনা।
কামনা বাসনা জীবনের দোড়ে
    সুখকে করি আহরণ,
জীবন যাত্রায় হাবুডুবু খেতে হয়
   যদি না জানে কেউ সন্তরণ।
হতাশাকে চিরসাথী করে রাখলে
   সময় তো পেরিয়ে যাবে,
জীবনের সব আশা আকাঙ্খা
  পূর্ণ হবে না কোন কালে।
চাই মোদের আশা হোক পূর্ণ
   করতে চাই উত্তোরণ,
তাই তো জীবন পথে চলতে
সুখটুকু করতে হবে আহরণ।


আমার জন্মভূমি
      শান্তি দাস
    

"জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি 
গরিয়সী "
যে ভূমিতে জন্ম আমার,মোদের জন্মভূমি,
জন্মেছি মা তোমার কোলে সুন্দর ভুবন জুড়ে,
শষ্য শ্যামলা প্রকৃতির সৌন্দর্যে মোদের বসুন্ধরা

মায়ের কোলে জন্ম আমার এই মাটিতে,
তাই তো এই জন্মভূমিকে এতো ভালোবাসি।
মাগো এই দেশে জন্ম আমার এই দেশকেই ভালাবাসি,
এই দেশের মাটির স্পর্শ মোদের ভালোবাসা।

এই দেশের নদী নালা মাঠ ঘাট সবই মোদের প্রাণ,
ফসলে ফসলে ভরে উঠে মোদের দেশের মাটি।
ধন ধান্য  ফলে ফুলে প্রকৃতিকে বড় সুন্দর দেখায়,
স্বপ্নে ঘেরা মোদের দেশ মোদের ভালোবাসা।

সকালের সুর্যোদয় আর বিকেলে সূর্যাস্তের সৌন্দর্য,
কোন অপরূপ রূপ মোদের এই জন্মভূমি।
প্রভাতের সূর্যের কিরন আর পাখিদের কোলাহল,
মোদের ঘুম ভাঙানো,স্বপ্ন বয়ে যায় কত স্মৃতি।

এই মাটিতে জন্ম মোদের এই মাটিতে প্রাণ,
বিকেলের সূর্যাস্ত যেন মনে বিষাদ জাগায়।
এই মাটিতে জন্ম এই মাটিতে যেন হয় মৃত্যু,
সকল দেশের উপরে যেন মা মোদের জন্মভূমি।




মায়ার বাঁধন
    শান্তি দাস

এই সংসার মায়ার বাঁধন জীবনের সব কিছু,
ভালোলাগা ভালোবাসার এই আমার পৃথিবী তাই তার পিছু।
সন্তান গর্ভে ধারণ করে জন্ম হয় মায়ের কোলে,
তার মায়া ভরা চোখ আর হাসিতে মন যায় ভুলে।

এই মায়ার বাঁধন থেকে জীবনে শুরু সন্তানের মুখপানে চেয়ে,
বাঁধন ছেড়ে কেউ পারেনা  সমস্ত ব্যথা বেদনা নিয়ে।
সন্তান আস্তে আস্তে বড় হয় মায়ের আঁচল ধরে,
আদো আদো বুলিতে যখন মা বলে ডাকে মনটি যায় ভরে।

মিষ্টি হাসিতে মা ডাকলে নিমেষে মায়ের প্রাণটা জুড়ায়,
এই মায়ার বাঁধন ছিন্ন করতে পারবে না কেউ এই ধরায়।
মায়ার বাঁধন ছিঁড়ে যেতে সাধ্য একমাত্র সাধু সন্ন্যাসীরা,
সংসারের মায়াজাল থাকতে আমার আমার করা।

এই সংসারে মায়ার বাঁধন রাখতে কত না মিথ্যা আচরণ,
সংসার পালনে সারাজীবন ধরে কত কিছুই করে গোপন।
দিনরাত খেঁটে যায় একটু চায় সুখের ছায়া,
শুধু নিজের করে গড়তে সন্তান যার জন্য এতো মায়া।

যতদিন পৃথিবীর বুকে ততদিন শুধু মায়াজালে থাকতে হয়,
আসলে তো যাহা আছে জগৎ সংসারে নিজের কিছু নয়,
ভগবান আছেন বিপদ আসলেই নেই  তার নাম,
মরন নিশ্চিত জেনে ও মায়ার বাঁধনে রাখে এই ধরাধাম।



সত্যেন্দ্রনাথ পাইন এর দুটি কবিতা

কে ওখানে
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

তোমার দখিন হাতের পরশে
  স্তব্ধ হোক আসামির তবলা
শীত বাষ্প সৃষ্টির কান্ডারি
    বিলকুল রুদ্ধ কন্ঠ
গিরি শীর্ষে  ছায়াপথ
   স্রোতের প্রসাদ কোনো মতে

ভীরু বাসনার অঞ্জলির আয়োজন
গবেষণার অবিশ্রাম অহংকার
  আনন্দ চঞ্চলতা
   বল্গাহীন
প্রতি ধ্বনি নিষ্ঠুর ভাবে
   স্ত্রীবুদ্ধির জোরে
শ্লেষ বাক্যে হানে দূরন্ত ছায়া

ঐ যে দূরে, বহুদূরে স্পর্শময়ী
     সূক্ষ্ম সংকোচে
বেঁধে আনে অনুরোধ উপরোধ
অনবধানের অপবাদ

সেখানে  প্রশ্ন ওঠে--
     "কে ওখানে"!!!


ঘুম ঢাকা রোদ্দুর
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

    হলুদ হয়েছে ঘাস
লাবণ্য হারিয়েছে শিশুর হাসি
ছড়া কাটে না আর ঠাম্মা
ঘুম আসে না চোখে

হারিয়ে যাওয়া সোনালী রোদ
মুখ লুকিয়েছে সজীব স্বপ্নে

ভাবনাগুলো যেন বাজপাখি
জানলার গরাদ ভেঙে ঢুকেছে বিছানায়
   ঠিক দুপ্পুর বেলায়

পুতুলের বিয়েতে শিরীষের গুঞ্জন
প্রাণের গভীরে আনে সংকোচ-  পীড়িত নিরেট রোদ

স্পষ্টভাবে দেখা যায়
ঘুম ঢাকা রোদ্দুরের বিক্ষত দেহ
  
বাধাহীনভাবে পরিহাসে পরিহাসে
গড়ে তোলে এক অত্যাশ্চর্য
সুন্দরী নারী শরীর....





রাজপথে উদ্বাস্তুর গোধুলি-স্বপ্ন
বদরুদ্দোজা শেখু

ঝকঝকে তকতকে রাজপথে হাঁটছি এখন আমি, হাঃ হাঃ !
ঘোলা ময়লা পুকুরের পাতিহাঁস ঠিক যেন  সরোবরে
কাটছি সাঁতার আমি , হাঃ হাঃ !
দু'ধারে দালান-বাড়ি  । ফুল্ল লন বারান্দায় নামছি সটান আমি,হাঃ হাঃ !
সুখটান জীবনের ভোজবাজি ভাবছি হঠাৎ আমি ,হাঃ হাঃ!

কী ক'রে এমন হলো ? কী ক'রে হঠাৎ
নগরীটা হ'য়ে গেল যানহীন ? গোধুলির রাত
নৈঃশব্দ্যে পড়লো ঢাকা ? রাতচরা নাগরিক-কুলোততত
হারালো কি উত্তেজনা ? অহংকারী কামনার ফুল
ওড়ানো প্রতিমাগুলো হারালো কোথায় ?অবাঞ্ছিত
আগন্তুক খেদানো পুলিশ কই ? কই নিয়ন্ত্রিত
লাল নীল হলদে সবুজ ট্রাফিক সিগন্যাল ?নাকি ওরা
ব'নে গেছে হঠাৎ উদার ? অথবা নাকি চালাচ্ছে কোনো গোপন মহড়া ?

হ'তে পারে  । যা ইচ্ছে করুক  ।
দু'ধারের রকমারি রহস্যের তীব্র স্বপ্নভুক
হাঁটছি এখন আমি অবারিত রাজপথে ,হাঃ হাঃ !
ছাঁটছি এখন আমি দুরাশার বনবীথি,হাঃ হাঃ !
ধুকপুকে বুকে সুখ শুঁকছি এখন আমি হাঃ হাঃ !
খিঁচ-লাগা জীবনকে পিচঢালা রাজপথে টুকছি এখন আমি  , হাঃ হাঃ!

অন্ততঃ পেতাম যদি একটা এমন তকতকে
করিডর রাত্তিরে নিশ্চিন্তে ঘুমোবার , জিরোবার
পেতাম প্রশ্রয় বৌ বাচ্চা নিয়ে হাত পা ছড়িয়ে
পরিচ্ছন্ন পরিসরে দিন কাটানোর প্রসন্ন
সৌভাগ্যে ,জীবনটা ধন্য হ'য়ে যেত তবে ,
ঝুপড়ি-পট্টির পিলপিলে ঠাসাঠাসি যক্ষ্মাকাশিতে
ধুঁকে ধুঁকে অনর্থক মরতে হতো না ,একটি গোলাপ
অথবা যুঁই কি বেলী লাগাতাম করিডর ঘেষেঁ, প্রত্যহ দিতাম জল ,
ভোরে কি সন্ধ্যায়
ব'সে থাকতাম ঘাসের সবুজে প্রেয়সীর সাথে
মুখোমুখি পাশাপাশি কিংবা বাচ্চা নিয়ে
পাখি আর প্রজাপতি ফড়িং ফিঙের প্রাকৃতিক সাহচর্যে আহা ,জীবনের
ফুরফুরে উজানী নৌকায় ।
নগরীর উদ্বাস্তু বাসিন্দা ব'লে কেউ
তাড়িয়ে দিত না ঝুপড়ি ভাগাড়ে নিত্য ,সৌভ্রাতৃত্ত্ব ,মুক্ত চিত্ত ,
জন্মসূত্রহীন  ঘটনা নিমিত্ত ইত্যাদি বিষয়
বাগ্মিতার পরিভাষা বলেই হতো না মনে ,
পৃথিবীটা হতো একান্তই মানুষের ,সব মানুষের ।

তবু ধ'রে নিচ্ছি এখন আমি -----এই রাজপথ নিজস্ব আমার,
যেহেতু আর কেউ নাই এই রাজপথে এখন
যেহেতু কোনো যান নাই এই রাজপথে এখন
যেহেতু পুলিশরা নাই এই রাজপথে এখন
যেহেতু সদিচ্ছার প্রতিদ্বন্দ্বী নাই এই রাজপথে এখন ,

তাই এই নিরঙ্কুশ এই
ছিমছাম রাজপথে ঝিমোচ্ছি এখন আমি  হাঃ হাঃ!
আকাঙ্ক্ষার করিডরে ঘুমোচ্ছি এখন আমি  হাঃ হাঃ !
বৌ বাচ্চা বাস্তুভিটা গুছোচ্ছি শহরে আমি   হাঃ হাঃ !
স্বপ্নের মোহর দিয়ে সাজাচ্ছি প্রহর আমি   হাঃ হাঃ !
হাঃ হাঃ ! হাঃ হাঃ! হাঃ হাঃ ! হাঃ হাঃ ! হাঃ হাঃ ! - - - - -







কবিতার সার্থকতা
নরেন্দ্রনাথ নস্কর

বাংলার সাহিত্য আকাশে এখন কবিতার ছড়াছড়ি।

এত কবিতার ভীড়ে কটা কবিতা পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছায়?

এই নিয়ে কোন সত্যকারের তথ্যের বড় অভাব। আরো গবেষণা দরকার এই নিয়ে।

পাঠক যথেষ্ট বুদ্ধিমান বা বুদ্ধিমতী।

দেখা দরকার একশটা কবিতার মধ্যে  কটা কবিতা পাঠক মন দিয়ে পড়েন?
আর পড়লেও কটা কবিতার তারা মানে বুঝতে পারেন?

সবার থেকে বড় হল কটা কবিতা পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছায়?

যে কবিতা পড়ে পাঠককূল মানে বুঝতে পারেন, সেগুলি কিছুটা সার্থক।
যে কবিতা সমূহ পড়ে শুধু মানে বুঝা নয়, সেই কবিতা একেবারে পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছায় সেই কবিতা গুলি হল আসল সার্থক কবিতা।

কবির ভাব ও ভাষা যেন মোটামুটি অবিকৃত ভাবে পাঠকের মনে পৌঁছায়।

অর্থাৎ যাহা কবি বলিতে চান সেই একই অর্থ যেন পাঠক বুঝিতে পারেন।
তখনই কবি ও তার কবিতা সার্থক হয়।

লেখক লিখলেন এক, আর পাঠক বুঝলেন আর এক। এটা যেন না হয়।
বিখ্যাত রম্য রচয়িতা শিবরাম চক্রবর্তী একবার বলে ছিলেন আধুনিক বাংলা কবিতার বেশির ভাগ দুর্বোধ্য, যদি কেউ বাংলা অনুবাদ করে দেয় তবে বুঝতে পারি।

এখনকার অনেক কবিতা কেমন যেন সত্যিই মানে বুঝা খুব কষ্টকর।

লেখক লিখলেন এক ভেবে, আর পাঠক পড়ে বুঝতে না পেরে অন্য মানে করলেন।

এতে কবিতার ভাব ও ভাষা দুইই ঠিক ভাবে পাঠকের মনের কাছে  পৌঁছায় না, বা অন্য মানে নিয়ে পৌঁছায়।

মনে হয় কবিতার ভাষা সাবলীল ও অর্থবহ হলে এই সমস্যা এড়ানো যায়।

অসংখ্য নরনারী কবিতা ভালোবাসেন। কিন্তু ভাষার জটিলতা তারা বুঝতে পারেন না।

অনেক দিন আগে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য এস মুখোপাধ্যায়  একবার বলেছিলেন যে কমবেশি প্রায় সবার মধ্যে লেখকের বা কবিত্বের ভাব আছে।
কেউ প্রকাশ করতে সক্ষম। কেউবা ঠিকমত ভাষায় প্রকাশ করতে পারে না।

কবিতার ভাষা যদি সাবলীল, সোজা, অর্থবহ ও হৃদয়ে গ্রহণ যোগ্য হয় তবে খুব সহজে সাধারণ কবিতা প্রেমিক পাঠকগণ পড়ে বুঝতে পারেন ও  কবিতার ভাব হৃদয়ঙ্গম করে থাকেন।

কবিতার ভাষা জটিল ও দুর্বোধ্য হলে পাঠক গণ সেই কবিতা পড়েও মনে ঠাঁই দেন না বা এড়িয়ে চলেন।

তাদের কথা ভেবে লেখার ভাষা  যদি একটু সাবলীল ও প্রাঞ্জল হয় তবে পাঠকও বুঝতে পারেন ও লেখাও সার্থক হয়।

লেখক বা কবি  যাহা বলতে চান, পাঠক যদি ঠিক সেই ভাব ও মানে  অনুধাবন করতে পারেন, তাহলে সেই কবিতা বা লেখা কালের সময় অতিক্রম করে দীর্ঘস্থায়ী হয়ে থাকে। এই সমস্ত লেখা বা কবিতা সার্থক বলা যায়।

*মতামত লেখকের নিজস্ব।
অন্য যুক্তিগ্রাহ্য বাঞ্চনিয় মতও গ্রহণযোগ্য






প্রবন্ধ

সময়, সমাজ ও মহাপুরুষের আবির্ভাব
  -  অগ্নিমিত্র

সব সময়ে সব দেশেই মহাপুরুষরা আসেন। সমাজের বক্রতা, পঙ্কিলতা দূর করতে তাঁরা আবির্ভূত হন। আমাদের শাস্ত্রেই বলা আছে -' যদা যদা হি ধর্মস্য গ্লানির্ভবতি ভারতঃ, অভ্যুত্থানম্ অধর্মস্য, তদাত্মানং শ্রীযাম্যহম, পরিত্রাণায় সাধুনাং , বিনাশায় চ দুষ্কৃতাং; ধর্মসংস্থাপনাস্থায় সম্ভবামি যুগে যুগে ।'  তাই যুগে যুগে মহাপুরুষরা আসেন, মানুষকে সঠিক পথ দেখাতে, প্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করতে । শ্রীচৈতন্য, গুরু নানক, কবীর, সাধক রামপ্রসাদ, রাজা রামমোহন রায়, রাণী রাসমণি , ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ, স্বামী বিবেকানন্দ, নেতাজি প্রভৃতি মহামানবেরা  এভাবেই বারে বারে এসে সমাজকে সঠিক মার্গ দেখিয়েছেন, অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন। তাঁদের উত্থানের পিছনে তাই সমাজের এবং সেই সময়ের একটা বিরাট ভূমিকা ছিল। অবক্ষয়িত সমাজের সংস্কার করতেই তাঁরা এসেছিলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু জাতপাত, ছুত অচ্ছুত ভুলে কৃষ্ণপ্রেমের সাগরে মানুষকে ভাসতে শিখিয়েছিলেন।  সতীদাহের মতো নারকীয় প্রথা রদ করতে সচেষ্ট হন রাজা রামমোহন, যার জন্য তাঁকে সমাজের মাথাদের বিরাগভাজন হতে হয়েছিল। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শত বাধা উপেক্ষা করে বিধবা বিবাহের প্রবর্তন করান ও বহুবিবাহ ও বাল্যবিবাহ রোধে বিশেষ সক্রিয় ভূমিকা নেন। স্ত্রীশিক্ষা বিস্তার ও বাংলা গদ্যের প্রসারে তাঁর কাজ সর্বাগ্রগণ্য । এসব কাজ করতে গিয়ে তাঁকে বহু কটূক্তি শুনতে হয়েছে।  পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ ধর্মের সঠিক অর্থ সবাইকে বোঝালেন, যত মত তত পথের বাণী শোনালেন । আর স্বামী বিবেকানন্দের মতো মহতী প্রতিভাকে আমরা আজও নব নব রূপে আবিষ্কার করে চলেছি।
  এঁদের সবারই পথ বন্ধুর ছিল। তবে সমাজের পঙ্কিলতা এঁদের পথ রূদ্ধ করতে পারেনি। তবে ঘুড়ি যেমন বিপরীত হাওয়ায় আরো ভালো করে ওড়ে, তেমনি এঁরাও বাধা পেয়ে আরো সফল হয়েছেন । তাই সমাজের ও সময়ের ভূমিকা তো ছিলই।।




কে বলেছে তুমি নেই
   বিপ্লব গোস্বামী

কে বলেছে তুমি নেই
আছ জগৎ জুড়ে।
যে বলে তুমি নেই
থাকো তার হতে বহু দূরে।
কাছে পেয়েও তোমায়
চিনেনি যে ,তার তো কপাল মন্দ।
যে চিনেছে সে পেয়েছে
দেখেনি যে ,সেতো অন্ধ।
আছো তুমি জগৎ জুড়ে
আছ প্রতি জীবের মাঝে।
তোমায় আমি খুঁজে পাই
ভবের প্রতি শুভ কাজে।
সর্বত্র তুমি বিরাজমান
আছো সবার মাঝে তুমি।
বিপদ কালে বন্ধু বেশে
সদা কাছে আসো তুমি।






ছবি আঁকে
ডাঃ তারক মজুমদার

একবার ফিরে তাকাও
পৌষের হিমেল হাওয়ায়
নরম রোদের উষ্ণ ছোঁওয়ায়---- ।

মানুষ বধির হলে,বিষন্ন সময়
উদবিগ্ধের পথে হাটে---।
বৃষ্টিস্নাত সকাল ভিজলে
মিটে রোদ অঝোর প্লাবনে
ভালোবাসার ছবি আঁকে-----।





সময় কথা বলে
আব্দুল হান্নান

এক সময় এই গ্রাম সাদা মাঠা
শহরের থেকে ছিল বেশ নামি
হোক না হোক খাওয়া তাদের
চরিত্রে ছিল সব থেকে দামি।

ঝড়ের মত রাজনীতি টা এসে
মুছে দিল সেসব সাদা বুলি
লোভ লালসায় ডুবিয়ে দিয়ে তাদের
মাখিয়ে দিল ইন্দ্রজালের কালি।

হারিয়ে গেল গাছের ছায়া য় বসা
গরম কালের তপ্ত সেই দুপুর
শুরু হলো নতুন পথে চলা
আত্মসাতের রঙিন আলোয় সুর।

বুদ্ধি শক্তি পেশির বলী যারা
নিরীহের জুলুম করে প্রচুর
অভিযোগর আঙুল যেথায় ওঠে
শক্তি পূজারী তারা সাজা অসুর।

মিথ্যে বুলিই গ্রাম শুদ্ধ শান্তি
দূরে থেকে ল্যাপে কথার মালায়
অরাজকতার নিপুণ এখন গ্রাম
সত্য ঢাকে মিথ্যার কঠিন ছায়ায়।।






লোভী
শুকদেব পাল

অনেকদিন মনে পরে না তোমাকে , অনেক দিন.......
তুমি চলে যাওয়ার পর পৃথিবীও নিজের চারপাশটা ঘুরে দেখে নিয়েছে বেশ কয়েক বার,
এখনও ঘুরছে এ চলা অন্তহীন ।
শ্মশানে সব দেহ পুড়ছে ,সেই আগুনের শিখা মনেও ছড়িয়ে পড়েছে ।
যে মাছ স্বচ্ছ নদীর জলে খেলে বেড়ায় নিরন্তর --
সর্বনাশী দৃষ্টি অনেক আগে থেকেই প্রতীক্ষা করে,কিন্তু সে তো উদাসীন !
দূরের ঈগলের ধারালো নখগুলো প্রস্তুত হয়ে আছে ।
ঝোঁপ বুঝে কোপ পরে ব্যর্থ নীরব চিৎকার ।
তুমি যদিও আগের মতো নও , অনেক বেশি মলিন ...।

তীক্ষ্ম নখে বুকটি বিঁধে ,
অন্য প্রাণের মিটলো খিদে
ভেবেছিলে গভীর জলে ঠাই পাবে কে আবার ?
ডুবেও তুমি ভাসলে আবার ব্যর্থ তুমি ,
জীবন তোমার ...
অন্ধকারে সুখের ভাবনা ছিল শুধুই অর্থহীন ।
চঞ্চলতা কাল হলো ছিল না যার প্রতিকার
যেই মোহতে ডুব দিয়েছিলে অভিশাপ সেই জলাভূমি ।
তোমার করুন চোখের জলের আশার আলো ক্ষীণ ।





ওরা সবাই
আব্দুল রাহাজ

ছোট্ট একটা পাহাড়ি অঞ্চলে কয়েকটা ঘরের বসতি ওরা এসেছে পূর্ববঙ্গ থেকে কাজের সন্ধানে‌। দিনটা সেরকম ভাল যাচ্ছে না ওদের বেশ কয়েক বছর ওখানে আছে ওরা স্থানীয় চা বাগানে ওদের রুটিরুজি নির্ভর করে কাজ করে এখন  যা উপার্জন হয় তা দিয়ে কোনরকমে দিন চলে যায় । ওদের ঐক্য ছিল বেশ ভালো একবার শহর কলকাতা এসেছিল ওরা সে সময় উৎসব-পার্বণ চলছে শহরে জীবন দেখে অবাক একদল ছেলে ওদের দেখে ওদের মায়া লেগে গিয়েছিল ওই পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষদের নিজেদের উদ্যোগে কিছু বস্ত্র কিছু খাবার তুলে দেয়। সেই থেকে ওরা উৎসব-পার্বণে শহরের বড় বড় বাবুদের বাড়ি বাড়ি ঘোরে যা পাই তাই দিয়ে বছরখানেক কাটিয়ে ফেলে ওরা । কিন্তু ওদের ঐক্যবদ্ধ সঙ্ঘবদ্ধ বসবাস কেউ অক্ষুন্ন করতে পারিনি এখনো ‌। ওদের মধ্যে শান্তি নিরলস কষ্ট দুঃখ বেদনা সবার মাঝে ভাগ করে নেই এইভাবে ওদের জীবন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একতাবদ্ধভাবে বসবাস করে আসছে সুন্দর পাহাড়ি  অঞ্চলের মনোরম পরিবেশের মধ্যে।








1 টি মন্তব্য: