গল্প
প্ৰতারণার শিকার
অনাদি মুখার্জি
বেশ কিছুদিন যাবৎ একটা ছেলে রিয়া ও তার বান্ধবীর সোমার দিকে কেমন করে যেন তাকিয়ে থাকে ! কিন্তু রিয়া ভাবে কার দিকে তাকায় ছেলেটা ,তার দিকে না তার বান্ধবী সোমা দিকে ! কি চায় ছেলেটা ! প্রতিদিনের মতোন সেইদিন কলেজ থেকে বাড়ি ফিরছিল দুই বান্ধবী ,কিছুক্ষণ পর টের পেলো ঐ ছেলেটা তাদের পেছন পেছন আসছে ! রিয়া তার মনের ধারনা ঠিক করতে একটি মোবাইল দোকানের সামনে দাঁড়ালো ঠিক তখন ঐ ছেলেটা একটু দূরে অপেক্ষা করতে লাগলো ! সেই টা দেখে রিয়া তার বান্ধবী সোমা কে বললো দেখ ঐ ছেলেটা আমাদের পিছনে আসছে কেনো ! সোমা তখন হাসতে হাসতে বললো হুম মনে হয় তোকে ওর খুব পছন্দ হয়েছে ! রিয়া তখন আগবাড়িয়ে বললো ,চল তো দেখি বলে ছেলেটা কাছে গিয়ে জানতে চাইলো ? এই যে দাদা আপনাকে রোজ দেখি আমাদের কে লক্ষ্য করেন কেনো ? ছেলেটা বলে উঠলো আমার নাম দিপক ,আমার আপনাকে খুব ভালো লাগে তাই বন্ধুত্ব করতে চায় বলে রিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল দিপক ! এই দেখে রিয়া খানিক টা লজ্জায়
মাথা নিচু করে ওকে বলে চলে গেলো ! এই ভাবে রিয়ার সাথে দীপকের খুব ভালো বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো ,তারা মাঝেমধ্যেই বিকেলে দেখা করতো রিয়া কে নিয়ে নদীর পাড়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা গলপ করতো আর রাতের বেলায় ফেসবুকের মাধ্যমে মেসেজ হতো ! রিয়া তার বাড়িতে একদিন নিয়ে গেলো দিপক কে ,রিয়ার তার বাবা ঐ মায়ের সাথে পরিচয় করে দিল ! এই ভাবে যেতে যেতে একদিন রিয়া দিপক কে বললো তুমি কি করো ? জবাবে দিপক জানালো সেই একজন সাব ইন্সপেক্টর তার বিরাট বড়ো ফ্লাট আছে ! তখন রিয়া বললো চলো তোমাদের বাড়ি গিয়ে দেখা করে আসি ! দিপক বললো কেনো ? আমার বাবা ও মায়ের সাথে পরিচয় করে কি হবে ? আমি তো তোমাকে ভালোবাসি আমাকে কি বিশ্বাস হয় না তোমার ,রিয়া বললো তাই বলিনি আমি বলতে চাই এইভাবে আর কতোদিন চাতক পাখি হয়ে থাকবো ,এইবার আমরা বিয়ে করতে চাই, তা ছাড়া আমার বাপি খুব তাড়া দিচছে আমার বিয়ের জন্য ! এমন একটি ভালো ছেলে তুমি বুঝলে বাবু ! দিপক তখন রিয়াকে পাগলি বলে তার ঠৌটৈ একটা আলতো করে চুমু খেলো ! রিয়া তখন বললো ওয়ে কি হচছে এইসব বলে হেসে গড়িয়ে পড়লো দীপকের বুকের মধ্যেই ! এই ভাবে চলতে থাকে তাদের প্রেম ,একদিন দিপক রিয়া কে অনেক দূরে নিয়ে গেলো ,সেই খানে তাদের অনেক গলপ হলো একটা ফাঁকা জায়গায় গিয়ে বসে অনেক কিছুই হলো ,রিয়া খুব সরল মেয়ে আর তার লাস্যময়ি রূপে দিপক মোহিত হয়ে তার সাথে লিপ্ত হলো ! প্রথম প্রথম রিয়া বাধা দিতে গেসলো কিন্তু পারলো না ,দীপকের ভালোবাসা কাছে হার মেনে তারা সুখের সাগরের ভাসতে লাগলো ! হয়ে যাবার পর রিয়া খানিক লজ্জায় মুখ নিচু করে থাকলো ! তার পর তারা হাত ধরাধরি যে যার বাড়ি গেলো ! সেই রাতে রিয়া তার মোবাইলে ফেসবুক খুলে দেখে তার ফ্রেন্ড লিষ্টে দিপক তাকে ব্লক করে দিয়েছে ,তখন রিয়া দীপকের মোবাইলে ফোন করতে লাগলো ,দেখে তার সুইচ অফ ! রিয়া অবাক হয়ে ভাবতে লাগলো ,কেনো এমন হলো ,সমস্ত রাত রিয়া ঘুমাতে পারলোনা ! পরের দিন তার বনধু সোমা কে সব জানালো ,সোমা বললো দীপকের ফোটো আছে ? রিয়া বললো হুম আছে ,সোমা বললো দিপক থাকে কোথায় ? রিয়া জানালো সেই থাকে শ্যামপুরে ,চল তবে ঐখানে গিয়ে খোঁছ করি ! এইসব ঘটনা রিয়া তার বাবা ও মাকে বলেনি বকবে বলে ! এইভাবে দশদিন দীপকের ফোনে যোগাযোগ হয়নি ! তার জন্য সোমা আর রিয়া একদিন সকাল সকাল শ্যামপুর গেলো ,সেই খানে তার ফোটো দেখিয়ে অনেক লোকজন কে জিগ্যেস করাতে একজন দেখিয়ে দিল দিপকের বাড়ি ! দিপকের বাড়ির সামনে আসতে রিয়া দিপকের দেখা পায় ,রিয়াকে দেখে দিপক চমকে উঠে ,সেই তখন বলে তুমি কেনো এসেছো আমার সাথে দেখা করতে প্লিজ চলে যাও আমার সাথে সম্পর্ক রেখো না ! তখন সোমা বলে উঠলো মানে কি বলতে চাইছেন ? ভালোবেসে মিষ্টি খেলেন আর ছুড়ে ফেলে দিলে হবে শয়তান ! দিপক বললো দেখো আমি চেয়েছিলাম বনধু হয়ে থাকতে কিন্তু বিয়ে করতে নয় ,তা ছাড়া আমার বিয়ে হয়েগেছে ! তখন রিয়া রেগে দিপকের গালে ঠাস করে চড় মেরে বললো ,তা হলে তুমি অভিনয় করতে গেসলে ,বলে রিয়া কাঁন্নায় ভাসিয়ে দিল ! এই হলো পুরুষের কাজ আমাকে ঠকিয়ে তুমি সুখি হতে পারবে না ! তখন ঐ গ্রামের লোকজন ছুটে এসে সব শুনে বললো , দিপক কোন সাব ইন্সপেক্টর নয় ,আপাদের মিথ্যে কথা বলেছে ! সোমা তখন বলে উঠলো এই হারামি টা একটা শাস্তি চাই ,সহজ সরল মেয়ে কে ঠকিয়ে লজ্জা লাগে না ! তখন গ্রামের মোড়ল বললো হুম বেটা কে থানায় গিয়ে দিয়ে আসি ! কিন্তু রিয়া মনে একরাশ দুঃখ নিয়ে ঘরে এসে দিনরাত কাঁদতে লাগলো ! সেই স্বপ্নে ও ভাবতে পারেনি এই রকম বন্ধু থাকে যারা ভালো বন্ধু সেজে বিশ্বাসঘাতক করতে পারে ! একটি মেয়েকে ভালোবেসে পতুল খেলা ভেবে তার জীবন নষ্ট করতে পারে ! সমাজের কি দোষ এই রকম পুরুষ থাকলে সমাজ কোনদিন ই ভালো হবে না ! এই বিশ্বঘাতক বনধু থাকলে সমাজ অন্ধকারের থেকে যাবে !
0 comments: