বুধবার, ৭ অক্টোবর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/10/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/10/2020
 Upokontha sahitya patrika Web Megazine- 07/10/2020
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা 
Upokontha Sahitya Patrika 

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 07/10/2020


কবিতা:-
         সমুদ্রের কাছে
                    মিনতি গোস্বামী

আজ
অনেকদিন পর
এসেছি সমুদ্রের কাছে
প্রতিবার দেখি নতুন রূপে
অনাদি অযুত আহ্বান জলের গভীরে
অনন্ত নীলিমা বুকে ওলটায় মহাকালের পৃষ্ঠা।

চোখ মেলে দেখে যাই ধ‍্যানগম্ভীর নিষ্ঠা
আত্মমগ্ন দিন রাত ঢেউয়ের ভিড়ে
মানুষ যখন নিমগ্ন কূপে
উত্তাল সমুদ্র নাচে
টানেনা ঘর
কাজ।






কবিতা
       জীবনের সাতকাহন
                  অনাদি মুখার্জি

আছে সাত সুরের বাঁধা এই জীবন,
আছে তাতে আমার তোমার  সাতকাহন !
আমার আঙিনায় এসেছো তুমি তুলসি হয়ে,
তোমার জীবনের সব সুখ টুকু আমায় দিলে !
তোমার যত অভিমান আছে বলো গো আমায় ,
ব্যাস্ততা মাঝেও তোমাক কথা ভাবি সারা ক্ষণ!
তুমি আমি আলাদা হলেও একই প্রাণ একই মন ,
এই ভাবে আমরা চলতে পারি সারাজীবন !





কবিতা 
          শিশুর  অধিকার
                   পিনাকী  মুখার্জী
  
          পিঠে  মস্ত   ব্যাগ
          পরীক্ষার  নাম  কত  !!
           ইঁদুর  দৌড়ে আজ
         ওদের  প্রাণ ওষ্ঠাগত  !!

       শাসন হরদম , হতে হবে 
       সবেতেই  ঐ  সবার  প্রথম !!
            না না  চলবে না ,
         এক  নম্বর  ও  কম  !!

          নিউক্লিয়ার  ঘরে নেই
          দাদু  ঠাকুমার  গল্প  !!
            বদ্ধ  ঘরে  মাঠের
          বদল  , কার্টুনই  বিকল্প  !!

           প্রাপ্য  তাদের  ওদের 
          দিয়ে  ,  না  করি  উদ্ধার  !!
             সুস্থ  একটা  শৈশব
          যাদের ,  সবার আগে দরকার !!




কবিতা
         ক্ষত
             শংকর হালদার

দগদগে ক্ষতগুলির যন্ত্রণা
বাহিত হয় সমাজ শিরায় উপশিরায় ও ধমনীতে
দুঃখগুলো খেলা করে লাল আভায়
মৃত্যুর মুখোমুখি-
স্বপ্ন কিংবা দুঃস্বপ্নের রাত উড়ে বেড়ায় মৃদু হাওয়ায়
শুকনো পাতার ন্যায় যখন তখন স্মৃতিপটে
স্মৃতিরা দিকভ্রষ্ট হয় চাতকের মতো
বেঁচে থাকার মায়া বাঁচার স্বপ্নকে হার মানায়
মরেও বেঁচে আছি ক্ষত নিয়ে বুকে
শুকিয়ে গেছে অশ্রু
উপশমে চৈতের তীক্ষ্ম খরা ।





ছড়া :
         Ki-চেন কথা!
               বিশ্বজিৎ কর

হেঁসেল এখন kitchen-

উনুন হয়েছে oven,

কষা মুরগীর মাংস তো-

Roasted chicken!

উনুন-আঁচে ঝক্কি ছিল,

এখন সিলিন্ডার on -

প্রেসার কুকার মারে সিটি,

কয়লা-ঘুঁটে gone!

সবজিকাটা-বাসনমাজা,

অটোমেটিক machine -

ছাইভস্মে বাসনমাজা,

Totally unseen!







কবিতাঃ
          জ্যোতিষ দাদু
                   জুয়েল রূহানী

সিরাজ গেলেন হাত দেখাতে
জ্যোতিষ দাদু কাছে,
ভালো করে বলেন দাদু-
হয় না যেন মিছে।

পড়ালেখায় বসলে আমার
ঘুমে দু'চোখ বুজে,
আড্ডাখানায় বসলে যে ঘুম
যায় না পাওয়া খুঁজে!

লেখাপড়া ভাল্লাগেনা
খেলায় যায় মন ছুটে,
খেলাধুলায় মন বসালে-
দুঃখ সকল টুটে।

সকাল-সন্ধা মায়ের ডাকে-
বসলে পড়া-লেখায়,
পড়া-লেখায় মন বসে না-
মন ছুটে যায় খেলায়।

জ্যোতিষ দাদু বলেন এবার
এসব কেন ঘটে?
পড়ালেখার কথা শুনে-
মেজেজ কেন চটে?






প্রবন্ধ:-
সাহিত্যে ভাস্কর্য ও স্থাপত্য
          অগ্নিমিত্র

   স্থাপত্য ও ভাস্কর্য সাহিত্যে এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছে । এগুলির ইতিহাস বা বর্ণনা নিয়ে গল্প বা রম্যরচনা লেখা যায় । যেমন ধরুন নারায়ণ সান্যালের 'অজন্তা অপরূপা '। অজন্তার গুহাচিত্রের অনুপম বিবৃতি ও বিশ্লেষণ  আছে এতে।  বা যেমন বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা একটি গল্প, হেলিওডোরাসের স্তম্ভ  নিয়ে। বিদিশায় অবস্থিত এই স্তম্ভের নির্মাণের  ইতিহাস নিয়ে লেখা।আবার অনেক সময়ে স্থাপত্য ও ভাস্কর্য কোন উপন্যাসের পটভূমিকা হিসেবেও থাকে। তাজমহল নিয়ে বা তাকে পটভূমি করে কতই না কবিতা, গল্প ও গান লেখা হয়েছে !  বাংলা সাহিত্যে বা বিশ্ব সাহিত্যেও তাই এগুলি বারবার চলে এসেছে। তবে আরেকটু চর্চা হতে পারে এগুলি নিয়ে ।।





বিশেষ ধারাবাহিক প্রবন্ধ :
   কবিতা র রূপকল্প : পর্ব ১৬

  || রবীন্দ্র পরবর্তী কাল এবং আধুনিক কবিতার আন্দোলন ||

              সৌম্য ঘোষ

   'কল্লোল' ও তার সহযোগ 'উত্তরা' ', কালি- কলম', 'ধূপছায়া' ,।  ঢাকা থেকে প্রকাশিত 'প্রগতি' এবং সামান্য পরে প্রকাশিত 'পরিচয়' পত্রিকা কে কেন্দ্র করে শুরু হয় রবীন্দ্র পরবর্তী আধুনিক কবিতার আন্দোলন। বিশ শতকের তৃতীয় দশকে এই আন্দোলনের সূচনা। ১৯২৪ থেকে ১৯৩০ এই কালপর্বে প্রকাশিত হয়েছিল বুদ্ধদেব বসুর 'মর্মবাণী' ও  'বন্দীর-বন্দনা',  অমিয় চক্রবর্তীর 'কবিতাবলী',  জীবনানন্দের 'ঝরা পালক' ,
সুধীন্দ্রনাথ দত্তের 'তন্বী' , অজিত দত্তের 'কুসুমের মাস' ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ । ১৯৩০ সালে প্রকাশিত হয় সুধীন্দ্রনাথ দত্তের 'কাব্যের-মুক্তি' প্রবন্ধ।
                  যদিও বোদলেয়ার থেকে পশ্চিমে আধুনিক কবিতার সূত্রপাত মনে করেন অনেকে তবু প্রথম মহাযুদ্ধের পরই ইউরোপের পোড়ো জমি তে আধুনিক কবিতার জন্ম হয় । আর তার প্রভাবে গড়ে ওঠে বাংলা আধুনিক কবিতার ধারা। এই ধারার প্রধান কবিরা প্রত্যেকেই ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন । সুধীন্দ্রনাথ আধুনিক কবিদের "মাধুকরী ব্রতনিষ্ঠ পরিব্রাজকের" সঙ্গে তুলনা করেছিলেন । যাদের দ্বারে দ্বারে ভূক্তাবশিষ্ঠ ভিক্ষা করতে হয় । অতুলচন্দ্র গুপ্ত এবং স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ, আধুনিক কবিতা কে 'পশ্চিমের প্রতিধ্বনি মাত্র' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন । প্রকৃতপক্ষে, বিশ শতকে অসহযোগ আন্দোলন বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক বিপর্যয় , বেকার সমস্যা আমাদের দেশের অনুভূতিপ্রবণ শিক্ষিত যুবকদের বিশ্ববীক্ষা কে বিচলিত করেছিল । এই বিপর্যস্ত সময়ে শিল্পীকে খুঁজতে হয় প্রকাশের নতুন প্রকরণ ভঙ্গিমা এবং শৈলী।
        ‌             আধুনিক কবিতা আন্দোলনের নেপথ্যে আরো একটি জোরালো যুক্তি ছিল, রবীন্দ্র বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদ । তৎকালীন সমাজে তীব্র অনিশ্চয়তা, অর্থনৈতিক সমস্যার মধ্যে বাস করে তরুণ কবিদের পক্ষে রবীন্দ্র ভাবনা ও নন্দনতত্ত্বে বিলাসিতা করা সম্ভব ছিল না । সেটাই ছিল সময়ের দাবী। তীব্র সমস্যাজর্জরিত যুবক সম্প্রদায়ের কাছে রবীন্দ্রনাথ 'অনাত্মীয়' ঠেকেছিল। রবীন্দ্র অনুসারী কবিকুলের রবীন্দ্র রোমন্থন অসহনীয় ঠেকেছিল । তাঁরা বুঝেছিলেন, কাব্যভাষার এই রবীন্দ্র পুনরাবৃত্তি বাংলা সাহিত্যের পক্ষে ক্ষতিকর । বুদ্ধদেব বসু লিখেছিলেন,  "বাঙালি কবির পক্ষে , বিশ শতকের তৃতীয় ও চতুর্থ দশকে, প্রধানতম সমস্যা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।" তথাপি, বুদ্ধদেব বসু, অমিয় চক্রবর্তী, সুধীন্দ্রনাথ দত্ত এনারা ছন্দে কাব্যভাষ্যে সেই রবীন্দ্রনাথকেই শিরোধার্য করতেন । প্রকৃতপক্ষে, কবি জীবনানন্দ দাশ ই সর্বপ্রথম সম্পূর্ণভাবে রবীন্দ্র প্রভাব কাটিয়ে সম্পূর্ণ নতুন শৈলী ও আঙ্গিকে আত্মপ্রকাশ করলেন । সেই হিসাবে, রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী ধারা জীবনানন্দ দাশ । অন্য কেউ নন।

                     গণতান্ত্রিক সভ্যতায় গড়ে উঠেছে মহাকায় নগর । আধুনিকতার জন্ম নগরে। আধুনিক কবিতার প্রেক্ষিত নাগরিক। আধুনিক বাংলা কবিতাও বিশেষভাবে কলকাতা শহরের কবিতা । ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে আধুনিকতার জন্ম। কিন্তু এই ব্যবস্থার উন্মার্গগামিতা, পরিবেশ বিরোধিতা, বিশৃঙ্খলা তৎকালীন তরুণ কবিরা মেনে নিতে পারেননি। এই পর্বের নাগরিক কবিরা ইতিহাস সচেতন । মনীষা তাঁদের কবিতার মৌলিক লক্ষণ । তাঁদের কবিতা স্থাপত্যের মত, স্বভাব কবি নন। পাঠকদের কাছে এই কবিতা সচেতন মনোযোগ দাবি করে । এই সব কবিতায় আছে চেতন-অবচেতন -অচেতন ,  বাস্তব-পরাবাস্তব কল্পনা, মিথ ও তীর্যক ভাষণ । তাই অমনোযোগী পাঠকের কাছে এই সকল কবিতা হয়ে উঠতে পারে দুর্বোধ্য । এই ভাবেই শুরু হল রবীন্দ্র- উত্তর আধুনিক কবিতা । যাকে রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন,  'রবীন্দ্র-ধুত্তোর' কবিতা ।

                      আধুনিক রবীন্দ্র উত্তর সাহিত্য বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ  "সাহিত্যে নবত্ম"(১৯২৭) এবং "আধুনিক কাব্য"(১৯৩৩) প্রবন্ধে তাঁর প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন। তিনি এই আধুনিকতাকে "বেআব্রুতা ও নির্বিচার অলজ্জতা" বলে মনে করতেন। আধুনিকতার বিরুদ্ধে উঠেছিল পাশ্চাত্য অনুকরণের অভিযোগ ।  " বাঁশরী" নাটকে, তিনি নায়িকার মুখ দিয়ে বলিয়েছিলেন, আধুনিক লেখকদের সাহিত্য 'বানিয়ে তোলা লেখা', 'বই পড়া লেখা' । তিনি আধুনিক সাহিত্যকে মনে করতেন,
" ক্ষণজীবী বাক্য পতঙ্গের গুঞ্জন ধ্বনি ।" আধুনিক কবিদের বাস্তবতার দোহাই রবীন্দ্রনাথ মানেননি।
তিনি মনে করতেন, "আধুনিকতা হচ্ছে দারিদ্র্যের আস্ফালন, আর লালসার অসংযম ।"আধুনিক কবিতার বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথের আরো একটি অভিযোগ ছিল, "উগ্র মেধার প্রতাপ ও বিস্ময়কর দুর্বোধ্যতা ।"

                       স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর পূর্ববর্তী কবিদের,' মধুসূদন -হেমচন্দ্র -নবীনচন্দ্রের ' কাব্য সংস্কার ভেঙে নতুন আঙ্গিক ও শৈলীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন । তৎকালীন সমালোচকেরা রবি ঠাকুরের এই কাব্য রীতিকে খোলা মনে মেনে নিতে পারেননি। তিনি নিজেও স্বীকার করেছিলেন, সাহিত্যও বাঁক নিতে পারে । তিনি নিজের "শেষের কবিতা" য় অমিত রায়ের মুখ দিয়ে বলেছিলেন,   "এখন থেকে ফেলে দাও মন ভোলাবার ছলা-কলা ছন্দোবদ্ধ ।"   "বিশ্বকে নির্বিকার তদ্গত ভাবে দেখতে চায় আধুনিক কবিতা ।" কবিতার ইতিহাস যদি সত্যিই হয় তা টেকনিকের ইতিহাস, তাহলে তারই গরজে পদ্যছন্দের  "সলজ্জ অবগুন্ঠন প্রথা"
ভেঙে গদ্যের স্বাধীন ক্ষেত্রে স্বাভাবিক সঞ্চালনের জন্য উদ্ভাবিত হয় গদ্য ছন্দ । একথা তিনি নিজেই বলেছিলেন একসময়।  রবীন্দ্র উত্তর আধুনিকতার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথ খোলা মনে আধুনিকতার সদর্থক দিককে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন ।।








কবিতা:-
        লাইনে দাঁড়িয়ে
             আসরাফ আলী সেখ

মায়ের যখন বিয়ে হবে আমার বাবার সঙ্গে লাইনে দাঁড়িয়ে
আমি বাবা কখন
আসবে ?

মা যখন বাবার কোলে দাঁড়িয়ে বড় দা
সবার শেষে পেলাম
লাইন জগতে আবার,

হাসপাতালে বেডের লাইন মা ছটফট করে,
আমি কেবল দাঁড়িয়ে আছি কখন দরজা
খোলে!!

যেতে হবে ইস্কুলে বাবা লাইনে আমি পুড়ি রোদে দাড়িয়ে
বাবার কাঁধে !

বাবার ‌এলো খবরে
লাইন দিয়ে আমি ,
শ্মশানে গিয়ে দেখি
দাঁড়িয়ে বন্ধু খানি !

চাকরির লাইন
ব্যাঙ্কের লাইন
লাইনে দাঁড়িয়ে
রেল গাড়ী ,

কখন যে আসবে
স্টেশন কেউ না
তা জানি !!






কবিতা:-
            শিশু
         আব্দুল রাহাজ

ওহে ও আজ শিশু
আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ
নতুন দেশ গড়ার কারিগর
ও যে সেই শিশু।
পরিবারের সকলের আদরের শিশু
হঠাৎ বড় হয়ে যায়
সমাজ পরিবেশের বর্তমান সময়ের বাস্তবতা দেখে বড় হয়ে ওঠে
ও যে সেই শিশু।
একটা সময় এই বৃহৎ সমাজের দায়িত্ব নেয় কাঁধে
ও যে সেই শিশু।




কবিতা:-
      স্রোত
          এমাজদ্দিন সেখ

ধর্ষক স্রষ্ঠারা  আজ পথে নেমেছে ...
ষাঁড়ের চিৎকার ! 
ধর্ষকদের  বেকসুর  খালাস  দিয়ে ...
দিতে হবে ধর্ষণের  অধিকার  ....
কুল শ্রেষ্ঠ ব্রাহ্মণ  অমানুষদের  !

কৌশলে  'এস্কেপ'  করি  পীড়িতার পক্ষ ;...
ন্যায়ের দাবীতে গুটিকয়েকের  প্রতিবাদ সভা !
ধর্ষক রক্ষা সভা দেখে   হাসি গাল ভরে !
বিবেক কে কুল শ্রেষ্ঠ মনুর পদে বলী দিয়ে ;  ব্যভিচারই লক্ষ্য  ...
ধর্ষক সত্তাকে নিই চাঙ্গা করে  !!

কিশোরী  মেয়েটি  বাড়ির বাইরে ;  ভয় হয় !
আশঙ্কায় প্রহর গুনি ,কী হয় ! কী হয় ....
আবার বেনিয়ার  কাছে মনুষ্যত্ব বেচে দিয়ে ...
নিজ ধর্ষক সত্তার চারা গাছে জল ঢালি !!
নিজের জবাই  এ নিজেই কসাই  ;
কসাই এ কসাই বাড়ায় সমাজ জুড়ে ! কতব্য  ভুলি  ...

মনুষ্যত্বকে  কবর দিয়ে কসাই সত্বাকে  লালন করি !
তবুও নিজেকে মানুষ ভাবি !!

বাবা আমি , ধর্ষক আমি , ধর্ষক স্রষ্টা  আমি ;
অদ্ভুত আমি ; ...
আমি আমার বেলায় জাস্টিস  মাগি !!

    



কবিতা:-
         চোরকাঁটা
               হামিদুল ইসলাম

যেমন বনো ওল
তেমনি বাঘা তেঁতুল
বৃষ্টিতে ভিজে একাকার মান অভিমান
আমরা নির্বিকার
তেঁতুল ছড়িয়ে আছে সারাটা বিছানায়  ।।

পারস্পারিক বন্ধনে দাঁড়িয়ে আছি
তোমার জন‍্যে তবু অপেক্ষা
সং সাজতে চাই
সংসার গড়তে চাই
তাই তোমার দরকার  ।।

তুমি ওল হলে
এবার আমি তেঁতুল হবো না
তোমার ছায়া হবো
তোমার শাড়ির ভাঁজে হবো
চোরকাঁটা  ।।





অন্য আগমনী
           শুভ্রাংশু কুম্ভকার

সুযোগ পেলে তোমাদের বাণী কপচিয়ে জনগণকে ভুলিয়ে দিয়েছি উত্তেজনা,
চারপাশ থিতু হয়ে গেলে শ‍্যেনদৃষ্টি নিয়ে আবার বেরিয়েছি,মুখোশের আড়ালে থেকে শুরু করেছি রক্তশোষণ।
তোমাদের আবক্ষ মূর্তিতে মালা দিয়ে গালভরা মুখস্থ উগরে দিই,
মিষ্টি বিলিয়ে বাচ্চা পার্টিকে দেশোদ্ধারের নামতা পড়াই,
উদ্বায়ী অ্যালকোহলের মত মাথার বুদ্ধি বায়ু নিরোধক টুপি দিয়ে ঢাকা থাকে,
আস্তিনে বন্দুক লুকিয়ে, মুখে গুটখা পান ভরে,
দেশমাতার গান গেয়ে মিছিলে তোলপাড় করি পাড়া।
শ্লা...মুখে রা কাড়বি না,শান্ত থাকবি....
ব‍্যস,সোনা ছেলে তুই, আমাদের ত্রাণ শিবিরে গিয়ে পাওনা নিয়ে আসবি।
পথগুলো বাঁকা হলেও ভিড়ে ভর্তি ,
তোমাদের দেখানো পথে লোকজন বড্ড কম।
তোমাদের পথে হেঁটে চলা বিশাল পরিশ্রম।
তবে বড় শান্তি পাওয়া যায়,সত‍্যের ছায়া ঘেরা ভালোবাসার অপার বিস্তৃতি।
আলো হাতে তোমরাই এগোলে, আমরা শুধু চেয়ে দেখলাম, অনুগামী হলাম না আজও...
ইতিহাস ঘাঁটছি,বিকৃতি জেনেছি, করেছি তথ্য যাচাই,
তবুও জেগে উঠিনি কালঘুম থেকে,মোহের বশে শুধু সব কিনে নেবার তীব্র অহংকার,শুধুই কিনছি,আর কাকে কবার কিভাবে বেচে দেবো তাই ভেবে ভেবে পুলকে নেচে উঠছি।
সত‍্য আর ন‍্যায়ের থেকে শতক্রোশ দূরে সুবিধাবাদের চাদরে মোড়া আয়েশের পালংকে শুয়ে শুয়ে পরবর্তী প্রজন্মকে জ্ঞান দিচ্ছি , "মানুষ হও"..
আরে ভাই,ওকে অন্ধ হতে বলো...
চোখ খুলে কি দেখবে?তোমাদের নারকীয় ব‍্যবহারে বিপর্যস্ত সভ‍্যতা...

বড়ো অসহায় আমাদের অঙ্কুরেরা...
জল ,হাওয়া,মাটি আর মানুষ শতভাগ দূষিত হওয়ার আগে...
হে আলোক দিশারী মণীষীগণ,অন্ধকারময় এই পরিস্থিতিতে বিপদসঙ্কুল পথে আগামী ভবিষ্যৎ রক্ষার্থে আবার তোমরা ফিরে এসো...
এই নীলাকাশ, মাঠের সবুজ, নদীপাড়ের কাশ,
অবুঝ কিছু বিশুদ্ধ হৃদয় তোমাদের পরশ পাবে..
হাপিত‍্যেশ করে বসে আছে ওরা তোমাদের আগমনের অপেক্ষায়...





কবিতা:-
           আমি
              সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

      আমি কে
      আমার পরিচয়ের আড়ালে
    হৃদয়ের গভীরতায়
     নির্জনে নিভৃতে
জানতে চাই আমার শেষ পরিণাম----

পঞ্চভূতে বিলীন হবার আগে
  মিশে যেতে চাই অহংকারহীন
    তোমার পার্থিব মহিমায়।

তুমি স্রষ্টা তুমি লয়
  তোমাকে জানাই প্রণাম।।

আমি আকৃতি অধম জ্ঞান হীন
তবু পৌরুষের সাধনায়
ম্লান হতে চাই না।
চাই না নৈরাশ্যের
  গ্লানি ভরা অবসাদ।।

অপ্রত্যাশিত কুরুক্ষেত্র যুদ্ধে
আমি তৃতীয় পাণ্ডব
অর্জুনের ন্যায়
  গান্ধীর ত্যাগ করতে চাই না
শীতল তায় শরীরকে বাঁধতে চাই না
    ব্যর্থ কামনায়।

শ্রদ্ধায় সম্মানে
  দীপ্ত প্রহরে
   শেষ করতে চাই
    অসমাপ্ত যা কিছু কাজ।

ছিন্নভিন্ন ঝড়ের দাপটে
   আমি চাই না
   হতে ছিন্ন মূল।

বন্ধুর পথে শিশির কণা র মত
   সকলের পা ধুইয়ে দিতে চাই
   সেবা যে আমার পরমব্রত
আমি সর্বগ্রাসী আগুনকেও
   ভয় পাই না----

আমি না গোবিসাহারা
   না চেরাপুঞ্জি
   আমি স্থূল অহংকার বর্জিত
তৃণের ন্যায়।
আমার ফুলের গন্ধে
   অলিরা হয় সর্বদা মুখরিত
     বাতাস হারায় স্পর্ধা।

সন্ধ্যা নামলে পাখিরা ফের নীড়ে
    রেখে যায়
     ফেরার আশ্বাস আবার
আমি তোমার পদতলে
    জানাই শতকোটি প্রণাম।

সত্য মূল্য দিতে চাই
    জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে।।






কবিতা:-
        পুরুষের লজ্জা
                  মোঃআলিউল হক

মহাপুরুষ নাই বা হলাম পুরুষ আগে হই
অন্যায় দেখে প্রতিবাদে সোচ্চার দলে রই
পুরুষ জাতের কলঙ্ক যা আগে ঘুচাই নিজে
তবেই ভালো মানুষ হয়ে রুখি মন্দ কাজে।

কাগজ খুলে দেখি কত অমঙ্গল এই দেশে
নর পশুদের আজব কান্ড বড়ই সর্বনেশে।
লজ্জা হয়না মা বোনদের ইজ্জত নষ্ট করো
এক ঘটি জলে মুখ ডুবিয়ে তোমরা মরো।

পুরুষ জাতের পৌরুষ একি?নাকি পদস্খল
সমাজ থেকে যাও বেরিয়ে পিয়ে হলাহল! 
মায়ের প্রতি ভালো বাসা যদি বুকে রয়
তাদের  প্রতি অসম্মান আর কখনো নয়।

সমাজ ভিতে জনা কয় কাজল করো মুখ
আম জনতা ক্ষিপ্ত হলে সারবে সেই অসুখ।
কোটি কন্ঠের সুপ্ত ক্রোধ প্রকাশ হবে যেই
দেখবে দেশে জঞ্জাল গুলো আর অবশেষ নেই।




কবিতা:-
        বুদ্ধি ভাজা
              অঞ্জলি দে নন্দী, মম

আমার পার্টিতে, নাইটে
          আমি পরিবেশন করি
নানান রকমের বুদ্ধি ভাজা।
      নয় তবে তা তাজা।
ডিপ ফ্রীজে রাখা, কয়েক যুগ ধরে।
বুদ্ধি সঞ্চয়ে আমি আমার দুনিয়া-ফ্রিজ ভরি।
অতিথীগণ সেই বুদ্ধি-ফ্রাই খান, ডিম লাইটে।
      এই খানা খেলেই সকলে
বশীভূত হয়ে যায়, আপন কলেবরে,
          আমার অভিনয়, নকলে।
     এমন আমার তাঁবেদারী করে-
যেন আমিই সেই সে আদ্দি কালের
                 ফের ফিরে আসা মহারাজা।
শিকার হয় নিমন্ত্রীত সকলে।
হদিশই পায় না কেউ আমার গভীর চালের।
বুদ্ধি ভাজার খুব উপকারিতা।
                বাড়ায় তা চাটুকারিতা।
তাই তো আমি পছন্দ করি।
           উদার হাতে তা দান করি।
ঠান্ডা বুদ্ধি ভাজা, গরম হয়ে প্লেটে পড়ে।
ওরা খায়, আর আমি ওদের বুদ্ধি পড়ি।
                    সেই পড়াই তো ব্যবহার করি।
     আর নিজের স্বার্থের পাক্কা ভবিষ্যত গড়ি।
ওরা ওই বুদ্ধি ভাজা খেয়ে
           আমার পায়ে করে গড়াগড়ি।
ফ্যাল ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে আমার দিকে
               অপলকভাবে থাকেই শুধু চেয়ে।
আর তখনই আমি
      ওদের আগামীর ভাগ্যলিপি দিই লিখে।
আমিই হই ওদের জীবন স্বামী।





কবিতা:-
         কোন যাই ?
                  গোপাল বিশ্বাস

এই মেয়ে তুই ওদিকে যাসনে
ওদিকে ধর্ষক, জিভ কেটে খুন
মেরু দন্ড ভেঙে দেয়
জ্বলন্ত অনল হাথরস
আগুনে পুড়ে দেহ ছাঁই  l
--তাহলে কোন দিকে যাই  ?

এই মেয়ে তুই ওদিকে যাসনে
ওদিকে বিষ সাপ
সন্ধ্যা ;
বিচার --প্রহসন  !

এই মেয়ে তুই ওদিকে যাসনে
ওদিকে ঝড় --নারীরা পণ্য 
ছলনা, প্রলয় ঢেউ
অতল ডুব সমুদ্র  l
--তাহলে কোন দিকে যাই ?

এই মেয়ে তুই ওদিকে যাসনে
ওদিকে ভাঙা সেতু
সেতুর নিচে লজ্জাহীন কামুক
কোন বাড়ি ঘর নেই
ভালোবাসা নেই
শুধুই মৃত্যু ফাঁদ  l

এই মেয়ে তুই ওদিকে যাসনে
ওদিকে মৌলবাদী ফতোয়া জারী
দলিত মেয়ের লাশ
ভাঙা পুতুল ,
ওরা শরীর জ্বালিয়ে দেয়
সীতার আত্মহত্যার অগ্নিকুন্ডে  l
--তাহলে কোন দিকে যাই ?

এসো এখন , চেতনার মঙ্গল দীপ জ্বালাই
কালোকে কালো বলি
লালকে লাল ,
চল মেয়ে এবার যুদ্ধে যাবি চল
যুদ্ধে যাবি চল  l






ছড়া:-
     মা
     যুথিকা দোলাই

তোমার কোলে জন্ম আমার
তুমি আমার মা।
আমার কাছে স্বর্গের থেকেও
তুমিই গরি মা।
তোমার কোলে কেঁদে উঠি
হাঁসি তোমার কোলে।
তাই তো আমি স্পর্শ পেলাম
বিশ্বভূবন তলে।
সব কিছুতেই শিক্ষা তোমার
নাই কিছু আর বাকি।
তাই তো কথা বলতে শিখে
তোমায় আগে ডাকি।
জন্ম থেকে সারাজীবন
তোমার কাছে ঋনী।
পারবো না শোধ দিতে
মাগো আমি চিরদিনই।



অনু কবিতা:-
         আধারে পথের দিশা
               মামনি পোড়‍্যা

আধারে বসিয়া আমি ভাবি সারাদিন
আধারে কি রাইবো আমি চিরদিন।
কবে সেই আলো আসবে আমার ঘরে
আধার কেটে পথ দেখবো আবার নতুন করে।
পথের আশায় আমার দিন কেটে যায়
আধার শেষে পথ দেখাবে কে আমায়।








জনক কন্যা

       সম্পা বৈদ্য 


জনকের কন্যা জানকি তুমি

মিথিলার কন্যা মৈথিলি,

রামের সঙ্গিনী রমা তুমি।

 শক্তিরূপা লক্ষ্মীর অবতার তুমি।

ধনসম্পদের দেবী। 

আদর্শ স্ত্রী,আদর্শ নারীর উদাহরণ তুমি।


 উৎসর্গীকরণ, আত্মবিসর্জন, সাহসিকতা এবং বিশুদ্ধতায় পরিচিত তুমি।

 স্বামীর আর্দশ স্ত্রী।


 লক্ষন তুমি আর্দশ ভ্রাতা।

রাম সীতার চিরসঙ্গী।

 স্ত্রীর কর্তব্য পালনে ঠিক কতোটা আর্দশ তুমি?


 ঊর্মিলা নিদ্রায় কতোটা ত্যাগ কখনো ভেবেছ কি  তুমি?

 ঊর্মিলা নিদ্রায় তুমি মেঘনাদ জয়ী।

 জানকি কন্যা  ঊর্মিলা তোমার সঙ্গিনী।

নেপথ্য সঙ্গিনী।

সীতা কনিষ্ঠা ঊর্মিলা তুমি আত্মবিসর্জনের প্রতিক তুমি।








1 টি মন্তব্য: