বুধবার, ২১ অক্টোবর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/10/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/10/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 21/10/2020


*********************************

আপনার ব্লগ ওয়েব সাইটতে  বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ইনকাম করতে চাইলে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন 

100% ইনকাম ও  Real payment 

**********************************

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
                 (ওয়েব ম্যাগাজিন)     

প্রকাশ কাল:-21/10/2020, বুধবার
               সময় :- সন্ধ্যা 6 টা 


সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ

সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ

যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম


সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒


    শুভ   মহাপঞ্চমী
         পিনাকী মুখার্জী
  
          ষষ্ঠী  থেকে  ক'দিন  বাকি
              এবার  দিন  গোনা  !!
           বাহির উদাস , বাহির সাথে
               উদাসী ঘরের কোনা !!

            আনন্দ  রথ থমকে গিয়েছে
              বাড়িতে আমরা ক'জন !!
            পূজার স্বাদের বদলে এবার
                 ঘ্রাণেই  অর্ধ  ভোজন  !!

              মা  আসবেন  মনের  ঘরে
                 আর  কিবা প্রয়োজন  !!
                  থাক না  দূরে  বাঁচার
               তরে  ,  বাইরের  আয়োজন  !!

                  সুস্থ  থাকুক  খুশির  সাথে
                       সবাই   বাইরে  ঘরে  !!
                  অভয়া  সারদা  অভয়  নিয়ে
                      আসবে  বারে -বারে  !!



মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা
(১)
বোঝান

বোঝান
আরো বোঝান
অবুঝ মানুষকে বোঝান
প‍্যান্ডেলে দশজনের সংক্রমণ হলে
অন‍্য প‍্যান্ডেলে সংখ‍্যাটা হবে কুড়িজন
সেখান থেকে সংখ‍্যাটা হয়ে যাবে দুশোজন ।

নিজের অজান্তেই আমরা হয়ে যাবো দুষমন
সংক্রামিতদের বিচ্ছিন্ন করবে সব প্রিয়জন
চিহ্নিত করবে অবুঝ বলে
হাসপাতালে বেডের টান
হবেনা সংকুলান
সংকুলান।

(২)

ভালো থাকুন

সবাই
ভালো থাকুন
সবাই আনন্দ করুন
ঘরে বসেই আনন্দে মাতুন
প্রিয়জনদের নিয়ে ঘরে হোক মস্করা
দূরদর্শনে দেখুন বসে পুজোর আদ‍্যন্ত মহড়া।

বিশেষজ্ঞরা​ বলেছেন উৎসব যেন নাহয় লাগামছাড়া
সংক্রমণের পারদ রোজ দেখছি চড়া
নতুন পদ রান্না করুন
ঘরে বসেই সাজুন
ফেসবুকে আসুন
তাকাই।







আমি ও একদিন হারিয়ে যাবো
         অনাদি মুখার্জি

হয়তো আমি ও একদিন হারিয়ে যাবো ,
এই মহামারী দেশে!
কোনো মারণ রোগে ছবলে শেষ হবো ,
কোন এক কাক ভোরে সকালে !
আমি তো জীবনের পথে চলেছিলাম,
একটু খানি ভালো  বাঁচবো বলে !
লকডাউন মেনে আমি তো সামাজিক দূরবর্তী মেনেছিলাম ,
মার্ক্স পরে এই রাজপথে ,
প্রাণ ভরে নিতাম।বাতাস !
হঠাৎ কি যে হলো আমার ,
ঐ বিষ বাতাস আমার নিলো যে  প্রাণ !
পড়ে থাকলাম ও প্যাকেট মোড়া একটা লাশ ,
তাকে পোড়ানো জন্য এলো এই মানুষ সমাজ !
এই ভাবে যদি আমি একদিন হারিয়ে যায় ,
শুধু এইটুকু বলে যায় তোর  হৃদয়ে রাখিস আমায় ঠাঁই !





মাটির  ‌ডাকে
        আসরাফ আলী সেখ

মাটি ডাকে আয় রে আয়,
কত দিন দেখি নি
তোমায়,
শহরের বাবু হয়েছি! আমার কথা ভুলে গেছি !
কত্তো বড়ো হয়ে গেছি 
ছিলি তুই একটু খানি;

কত্তো আসতি মোষ চড়াতে ,
মাছ ধরতে পলো হাতে,
ঐ সব কথা ভুলে গিয়ে,
কেমন করে আছি
ওরে ,
তোর কথা মনে পড়ে,
আমায় ভুলে থাকলি কি করে?
অনেক চুল তোর পেকে গেছে,
কলমি লতার শাক তুলবি নে?
ঐ দেখ ডাকে তোকে লক লক করে আলের পাশে,
যা খোকা একবার হাতে ছো বার বার,
ধানের শীষে ডাকে
তোরে একটু যা কাছে
ওরে ,
ঢেলা গুলো উপুড় হয়ে ,
ডাকে তোকে বারে বারে
অনেক অনেক বড়ো
হয়ে
শহরের বাবু হয়েছি
ওরে,
বড়ো সেই পাকুড় গাছ
বুড়ো হয়ে গেছে
আজ ,
কাছে যেতে ই বলে
ওরে
এলি তুই এতো
পরে!
তুলে নিয়ে আয় যা
কলমির শাক টা
পায়ে দে রেখে মোর
ছোটো বেলা খোঁজ
তোর ,
তুলে আন শৈশব
ঘ্রান ,
পানা পতি তে লেগে
অম্লান ,
ফাঁকা মাঠের নিরবতা
কোথায় ছিলি এত দিন খোকা ,
চেনা চেনা মানুষ ‌গুলো হয়ে গেছে আধবুড়ো,
কোথায় থাকো?
কেমন আছো?
গাড়িতে এসো বসো ,
মনে পড়ে গরুর গাড়ি ধান
বোঝাই করে যাচ্ছে বাড়ি ,
এখনো পরশ লেগে আছে শৈশবের ছেঁড়া কাপড়ের,
পাগলা কাণ্ডু দেখি পথে,
দেখলে আমাকে বলতো আগে কটা বাজে?
আজ ও তার মনে আছে,
বাবু কটা বাজে ওরে,
আবার যদি জনম থাকে ফিরে আসবো এই গায়ে ,
লেজ ঝোলা আর কলমি কচুর দেশে,
মায়ের মাটি নিয়ে বুকে ,
মরতে চাই এই গায়ে,
ভালো বাসায়  মায়ায়
ভরা
আমার মাটির ডাকে।






ঠাকুরের ডাকে চল
       অঞ্জলি দে নন্দী, মম

বঙ্গের, হুগলীর, কামারপুকুর ঐ ডাকে।
চল দেখে আসি
শ্রী দুগ্গা মাকে!
এই মহা অষ্টমীর দিনে।
অঞ্জলি দিই সেথা হাসি হাসি হাসি...
নিজেকে নিই নতুন করে চিনে।
পায়ে হেঁটে হেঁটে হেঁটে...
উন্মুক্ত রোদে,
যাই দোকানে;
খাই নিজের পেটে
ঠাকুরের প্রিয় সেই সে
চির ধন্য সাদা বোঁদে,
ভালোবেসে,
তীর্থ ক্ষেত্রে, ওখানে।
চল চল চল
ওরে ও ভক্তের দল!
দেহ ও মনে পাবি অনন্ত বল।
স্নানের জন্য ডাকে
ও সে পুকুরের জল;
ভক্তি যার অতল।
ফুল, ফল আহ্বান জানায়
পত্র ভরা শাখে শাখে শাখে...
সময় মূল্য পায়
আধ্যাত্মিক পরম হংসের ডানায়।
সবিতা জ্ঞানের দৃষ্টিতে সদাই চায়।
ঠাকুরের জন্মস্থল।
পুণ্য সে ভূমি দেখে
কয়েকটা দিন সেথায় থেকে,
করি যে মনুষ্য জীবন সফল।





       প্রেম শ্রেষ্ঠ‍ কী?
মোহাম্মাদ আবুহোসেন সেখ

গো দড়ির লয়ে খোঁটার প্রেম
সন্ধ্যার লয়ে চাঁদ তারার প্রেম
সূর্যের লয়ে গাছ-পালার প্রেম
নারীর তরে পুরুষের প্রেম
অন্ধের লয়ে লাইটের প্রেম
প্রেমতো সবে করে
শ্রেষ্ঠ‍ প্রেম কি ক'জন জানে
যতই প্রেম থাকুক না পৃথিবীতে
সব প্রেমের শ্রেষ্ঠ প্রেম
মানবের সাথে মানবজাতির প্রেম।






হাঁটতে হাঁটতে
         উমর ফারুক

হাটতে হাঁটতে দু চোখের মাঝ বরাবর
তিমির রাতরি যাপন স্বপ্ন!
হাটতে হাঁটতে দুধারে
ফসল কাটা ব্দ্ধ ভূমি সাড়া দেয়।
আশ্বিনের হাওয়া বইতে বইতে
দিগন্তের দিকে তাকায়।
মেহগিনি ও শিমুলের আদিখ্যেতা !
অতঃপর ক্লান্ত-বিচলিত দেহ
শুকনো ছায়ায় মুচলেকা দিলে
আগুনের পোড়ার মত তাপ!
লুয়ের মত বাতাসে বাতাসে দৌড়ে
ফসল বিচরণ আর
আমি মোমবাতি নিয়ে
রাতের সূর্য থেকে অগ্রবর্তী হব!
দিনের উদ্বিগ্ন দুপুরে শান্তি আসুক!!






শীতের ভোর
       আব্দুল রাহাজ

আসছে শীত আসছে শীত
তারই আগমনী বার্তা পাওয়া যাচ্ছে
সবার মনে এক আনন্দের উৎফুল্ল চোখে পড়ছে
হু হু হু কি ঠান্ডা কি ঠান্ডা
এই ভুলু এই নরেন তোরা চলতো ভোর রাতে যাব তেপান্তরের মাঠে
কুয়াশা ভেদ করে আমরা আগুনের তাপ নেব
হ্যাঁ হ্যাঁ তাই হবে চল চল
এইতো শীতের ভোর ফিরে পেয়েছি আমরা ‌।




আহ্বান
     সুশান্ত মজুমদার

শারদ প্রাতে শঙ্খনাদে
এলে মাতা মণি,
অমল মূর্তি গগন পানে
শুনি পদ ধ্বনি।

তব নয়ন ভোলা রূপে
চিত্ত করে হরণ,
জীর্ণ পরাণ জুড়ায় ত্বরা
দেখে পরম শোভন।

মৃণ্ময়ী নয়  চিণ্ময়ী তে
ধরা ধামে আসো,
ঘোচাও আঁধার মোছাও কলঙ্ক
খুশির নদে ভাসো।

প্রণাম তব পদে মাগো
সকল দৈন হরো,
অন্ন হীনে দিয়ে অন্ন
ক্ষুধা বিনাশ করো।

মহিষাসুর নয়তো শুধু
মনের অসুর  হঠাও,
দুষ্টের দমন সৃষ্টির পালন
করে জগৎ বাঁচাও।






   অন্তহীন ভালোবাসা
         হামিদুল ইসলাম
                     

আপ্তবাক‍্য ব‍্যয় করি প্রতিদিন
গাছের শেকড়ে রাখি জল
অসম্ভব নৈতিকতায় বেড়ে ওঠে তাবৎ জীবন
জীবন এখন অসবর্ণ আস্তাবল ।

ভোরের আকাশ
দখল নেয় হাজারো শুকসারি
পৌরুষের দাবানলে পুড়ে যায় ইতিহাস
আত্মজাদের হাহাকার ঘুরপাক খায় এবাড়ি সেবাড়ি ।

পোড়া মন্দিরখানা ফেলে আসি
হাত বাড়াই আশায়
নৈঃশব্দের চোরাবালিতে হারিয়ে যায় মন
তবু তারে কাছে টানি অন্তহীন ভালোবাসায়  ।





জুয়েল রূহানী
      মনোহরণী চৈতী,

একদিন দুইদিন করিয়া বারোটি দিনের অবসান হইলো, তবুও তোমার দর্শন লাভ হইলো না! এতটা কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও নিয়তীর নির্দয়ে দু'জনার সম্মুখ ভাগে বাঁধার দেয়াল গড়িয়া উঠিয়াছে! আশা করি দু'জনার ভালোবাসার মর্যাদায় অতি শীঘ্রই তাহা ভাঙ্গিয়া যাইবে।

পরকথা,
চৈতী,
আমার মনের অসুখ করিয়াছে, দিন যতই অতিবাহিত হইতেছে মনের অসুখ ততই বাড়িতেছে! কোন ঔষধেই মনের অসুখ সারিবার লক্ষনমাত্র দেখি না! তুমি একটি মুহুর্তের জন্য যদি কাছে আসিতে তাহা হইলে আমার মনের অসুখ সারিতে আর কোন বাঁধা থাকিত না। দেখিয়াছ? স্বর্থবাদীর মত শুধু নিজের কথাই বলিয়া যাইতেছি! তোমার অবস্থা জানিবার মনে নাই!
যাই হোক, চৈতী, তোমার মনের অবস্থা কি? জানাইয়া পত্র লিখিও। তুমি যে কেমন করিয়া তোমার হরিণী নয়নে আমার মন কারিয়াছো তাহা আজো বুঝিয়া উঠিতে পারি নাই। যাহা বুঝিয়াছি, তাহা হইলো; তুমি চিরচেনার পরিচয় বহন করিয়া আমার দৃষ্টি লুটিয়াছো!
চৈতী, তোমায় না দেখার আর্তনাদে আমার হৃদয় ব্যাকুল হইয়া উঠিয়াছে। তোমার পানে বারবার মন ছুটিয়া যাইতেছে। পাসে থাকিলে তোমার হস্তযুগল ধরিয়া মনের তৃষ্ণা মিটাইতাম স্বর্গরাজ্যে বিচরনের মধ্য দিয়া। না জানি সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থাকিবে কি না?
চৈতী তোমার কি ইচ্ছা হয় না সম্মুখে দাড়াইয়া এক দন্ড দর্শন দিতে? মন কি চায় না প্রাণ খুলিয়া কথা বলিতে? হৃদয়ে কি উঁকি দেয় না, না বলা কথার মালা গলায় জড়াইয়া দিতে? তোমার কোমল হস্তযুগল দ্বারা আমার হস্তযুগল আবৃত করিয়া একটু স্বস্থির নিঃস্বাস ফেলিতে কি তোমার মন এতটুকু ব্যাকুল হইয়া উঠে না?
চৈতী, এত কথার মাঝে হয়ত তুমি এতক্ষণে ভুলিয়াই গিয়াছো যে, আমার মনের অসুখ করিয়াছে। ভূলিবারই কথা যত কথা লিখিলাম। কিন্তু কিই বা করার আছে? কেননা তোমার কাছে যখন পত্র লিখি তখন কলমের কালি যেন সমুদ্র হইয়া যায়, আর আমি স্বর্গরাজ্যে হারাইয়া যাই তোমার মায়াময়ী রুপ উপমায়-

"তোমার দু'টি কাজল রেখায়
কালো মেঘের ছবি,
তাই দেখে ভাই এই জগতে-
হলেম বুঝি কবি"

চৈতী, তুমি আমার মনে যেন মায়ার দংশনে দংশিয়াছো। আর সেই দংশনের বিষ আমার সমস্ত অঙ্গে ছড়াইয়া গিয়াছে। তাহার যে অসহ্য যন্ত্রনা, বর্ণনার ভাষা আমার জানা নাই। চৈতী এই অসহ্য যন্ত্রনা আমি যে আর সইতে পারি না!

পত্রের ইতি টানিবো তাহার পূর্বে একটি কথা না বলিয়া পারিলাম না; " আমার মনের যে অসুখ করিয়াছে তাহা সরাইতে তোমার বিশেষ প্রয়োজন। তুমি ছাড়া পৃথিবীর কোন চিকিৎসকের সাধ্য নাই এই অসুখ সড়াইবার। আশা করি শীঘ্রই আমার সন্নিকটে আসিয়া মনের অসুখ নির্মূল করিবে।  শরীরের যত্ন লইবে, আমার জন্য কোন দুশ্চিন্তা করিবে না। তোমার পত্রের অপেক্ষায় রইলাম। পত্র দিও।

---------- তোমার দৃষ্টিতে,




সামাজিক
        দেবব্রত পাল

বিদ্যালয়ের গন্ডী পেরিয়ে যখন
ছেলেটি রাজপথে এলো, বয়স তার সতেরো।
চোখে অনেক স্বপ্ন, মানুষ হওয়ার।
দ্বায়িত্ব সমাজকে শেকল মুক্ত করার।
ভূত নেইতো ভূতে ধরবে কি?
চলো অসুস্থকে সঠিক চিকিৎসা করাই।
তাবিজ-কবজে নেইকো কাজ,
অদৃষ্ট মুক্ত চাই সমাজ।
কুড়িতে আজও জাতপাত?
চাই-ই চাই, বৈষম্যহীন সমাজ।
কুসংস্কার সমাজ পেলে,
জীবন-যাপনে আলো পড়ে।
সামাজিক হওয়ার দাবী নিয়ে।







সংস্কৃতির তফাত
            সুস্মিতা দে

প্রতিমা তে মা আছে আর আমার  ঘরে মা থাকে  আত্মাতে মা থাকে সবাই  তো সেই  একজন মা,জননী জন্ম ভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সি মা ।
শিশু প্রথম কথা শেখে মা শব্দ দিয়ে । বিদেশে মম মাম্মা।
আকাশে মেঘ ,কোথায় মেঘ? সন্ধ্যা হয়েছে  ? বুঝতে পারিনি ? আজ তৃতীয়া না? আসলে মাথায় অনেক কিছু  রাখতে পারিনা, আমার কি তোর মতো  অল্প বয়স ?
মাথায় সব রাখতে হবে, না তার নেই কোনো প্রয়োজন ।
মোবাইল টা তে রাখো না।
বেড়াতে যাবে ? না আজ স্কুলে  যায় নি কেন?  মানুষের  কি সব  দিন  সময় সমান  যায়? না যায় না তো এই কথাটা  বোঝাতে চাই  মনে হয় কোন একটি ঝড় উঠেছে আজ একটু  বিশ্রাম নাও , জানি আমি, ছেড়ে গেছেন,
মনে পড়ে আমাদের গ্রামের বাড়ি জয় দূর্গা পূজা ষষ্ঠী  সপ্তমীতে  অষ্টমীতে  নবমী দশমীতে  পূজো সেড়ে কোলকাতার ঠাকুরের
ভাসান দেখতে ছুটে
আসতাম কলকাতায়, মন টি হতো খুবই  খারাপ শুরু হতো বিজয়া দশমীর প্রনাম এক এক করে।

সেই রাতে আলো নিভে যেতো
মনে স্বান্তনা দিতাম ,রামকৃষ্ণ ঠাকুরের কথা,  মা তোর মনে আছে  তিন দিন তোরা বাড়ির বারান্দায় প্যান্ডেল আলোক সজ্জায় , মাকে নিজের মতো  সাজিয়ে রাখলি, আনন্দ করলি  হোল কোথায় ভাসান?
মা তোর মনের মাঝে আবার জায়গা করে নিলেন ? সত্যি কথা ।মা তোর মনে হৃদয়ে আত্মাতে ঠিক আছেন তো বল ? তোর মায়ের মতো মন হালকা হলো তবে, ঠান্ডা
তবু মন মানে না, ঠাকুরের কথা সত্য চিরন্তন বলি আমি, মাগো সামনের বছর আবার এসো অপেক্ষা থাকবো মা।
অভিশপ্ত এই বছর শেষ হোক

 
      


রম্যরচনা
কলকেতার কড়চা
  -  অগ্নিমিত্র

  বাইরে ব্যাপক ভিড়।
সবাই থুতনিতে বা টাকে মাস্ক পরেছে। মাস্ক কিন্তু সবাই পরছে; তবে সঠিক ভাবে তেমন কেউই পরছে না । থুতনি কুমারদের রমরমা ।..
ওদিকে কোটি টাকায় দশ টাকার লটারির বিজ্ঞাপন।
ভাবখানা এমন, যেন কিনলেই জিতবে সবাই ! নাও, সব কাজ ছেড়ে লটারির টিকিট কেনো !
  ওদিকে আবার পুজো হচ্চে, দারুণ সব মন্ডপ ও প্রতিমা। তবে কেউ ভিতরে আসতে পারবে না। এ অধমের বিনীত প্রশ্ন: তবে এত ঘটা করে পুজো করছেন কেন ?! পরশু থেকে লোকে ঘুরে ঘুরে ঠাকুর দেখছে মন্ডপে মন্ডপে । অতিমারী?! সে আবার কী বস্তু !? দূর মশাই, রাখুন তো। পুজো তো একবারই আসে ! হাসপাতালে বিছানা ফাঁকা নেই তো তাতে আমার কী ?!
সত্য সেলুকাস, কী বিচিত্র এ দেশ !!






করোনা কালের বইপড়া-৭
       প্রশান্ত ভৌমিক

১)
হুমায়ূন আহমেদের উত্তরাধিকারী নির্ধারণ
    ফরিদ আহমেদ

বইটি পড়ার কারণ হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের মধ্যে যে ভাগাভাগি আছে, সেটা সম্পর্কে জানা। কিন্তু বইটির শুরু থেকে এক অন্তরঙ্গ হুমায়ূনের সন্ধান পাই। এর আগে একই লেখকের হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে অন্য বইটি পড়েও মুগ্ধ হয়েছিলাম। ফরিদ আহমেদ মূলত লেখক না হলেও, তার লেখনি আমায় মুগ্ধ করেছে। বিভিন্ন জায়গায় নেশা করার ব্যাপারটিকে সূক্ষ্ণ কৌশলে এড়িয়ে গেছেন। রসবোধ প্রবল। সুখপাঠ্য বই। এর ঠিক আগে পড়া হুমায়ূন আহমেদ বিষয়ক বইটির তুলনায় অনেক ভাল। বইয়ের একদম শেষ অধ্যায় হুমায়ূন আহমেদের উত্তরাধিকারী নির্ধারণ ও রয়েলটি প্রদান জটিলতা-নিরসণ। এই অধ্যায় পড়াই আমার মূল লক্ষ্য ছিল। এখানে সমস্যাটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করলেও এই সমস্যার সমাধান কীভাবে হল তার ব্যাখ্যা করেননি। সেটা হয়ত হুমায়ূনের পরিবারের কোন বিধি নিষেধের কারণেই। যাই হোক, বইটি ভাল লেগেছে খুব। 

২) আশ্চর্য উল্কাউল্কা
             হার্জ

একটি তারার হঠাৎ বড় হয়ে যাওয়া এবং উল্কা পিন্ডের একটা টুকরো উত্তর মহাসাগরে এসে পড়া- এই হল সংক্ষেপে এই কমিকসের কাহিনি। হার্জকে আমি বলব অতি আধুনিক একজন সাহিত্যিক। আজ থেকে প্রায় নব্বই বছর আগে এই কমিকসগুলো তৈরি করেছেন তিনি। কিন্তু কাহিনি বিন্যাসে, বিজ্ঞানের ব্যবহারে, প্রযুক্তির উৎকর্ষে কোথাও গিয়ে আজকেও সমসাময়িকই মনে হয়। ভিলেন বোলউইংকেলের করার কিছুই ছিল না। টিনটিনের দুঃসাহসের কাছে সবকিছুই ম্লান হয়ে যায়। ক্যাপ্টেন হ্যাডক এবং বিজ্ঞানীদের যতোপযুক্ত মনে হয়েছে। আর হার্জের পরিমিতিবোধ ব্যাপারটাও আমার কাছে খুব ভাল লাগে। এই কাহিনিতে জনসন-রনসনকে আনাই যেত, হয়ত ব্যাপারটা চাপানো মনে হত। লেখক সজ্ঞানে ব্যাপারটিকে এড়িয়েই গেছেন। একটা লেখার জন্য টিনটিনের সবগুলো বই-ই পড়তে হবে। আরেকবার টিনটিনের জগতে হারানোর অপেক্ষায়।

৩) ম্যাচের আগের দিনদিন
           মোস্তফা মামুন

উপন্যাসের বিষয় যদি হয় ক্রিকেট, আর লেখক যদি হন মোস্তফা মামুন- তবে ব্যাপারটি পু্রো জমে ক্ষীর হয়ে যায়। একটা ক্রিকেট ম্যাচের আগের দিনের রাজনীতি নিয়ে উপন্যাসটি। একজন ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে মোস্তফা মামুনের ব্যাপারগুলোর ভেতরের দিক অজানা থাকার কথা নয়। যদিও একজন ঔপন্যাসিক হিসেবে তিনি উপন্যাসই লিখছেন, তাও কিছুটা সত্য এর ভিতর না থেকে যায় না। আর ফেসবুকের এই জমানায় ব্যাপারগুলো পুরোপুরি ওপেন সিক্রেটও বটে। সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার, যেই উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু ক্রিকেট, সেই বইতে ক্রিকেট তেমন নেই। আছে রাজনীতি। ভেতরের, বাইরের রাজনীতি। লেখায় রাজনীতি খুব ভালভাবে প্রকাশিত হয়েছে। লেখক পুরো ব্যাপারটার একদম ভেতরে ঢুকে বের করে এনেছেন। বইটি সুখপাঠ্য। 

৪) স্টোরিলাইন
      সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়

সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিকসে সেন্স অফ হিউমার খুব ভাল লাগে। রাপ্পা রায় সিরিজের কমিকস আমার খুব প্রিয়। ‘স্টোরিলাইন’ও ভাল লেগেছে। কিন্তু একটা কথা উল্লেখ না করলেই নয়, সেটা হচ্ছে রাপ্পা রায় ক্রমশ একই রকম হয়ে যাচ্ছে। মানে অপরাধ, কিংবা অপরাধের পরবর্তী অংশ সবগুলো কাহিনিতে প্রায় একই রকম। তবে এই গল্পে সিনেমার শ্যুটিংয়ে যাওয়া, তারপরে ঘটা ঘটনাগুলো আরেকটু অন্যরকম হতেই পারত। সবকিছু যেন খুব দ্রুত শেষ হয়ে গেছে। হয়ত যুগের চাহিদাই এটা। দ্রুত এগোনো। কিন্তু একজন সাবেকী ধরনের পাঠক হিসেবে আমার কাছে সবটাতেই বড্ড তাড়াহুড়ো মনে হয়েছে। চরিত্র খুব বেশি নেই, সেটা একদিকে ভালই হয়েছে। সবগুলো চরিত্রকে ঠিকভাবে দেখাতে পেরেছেন। সব মিলিয়ে খারাপ নয়। কিন্তু রাপ্পা রায় বিষয়ে সুযোগ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমাদের আরেকটু বেশি আশা ছিল।

৫) বৃষ্টির ঘ্রাণ
       সিজার বাগচী

উপন্যাসের শুরুতে আকর্ষণের কারণ ছিল নায়কের নাম প্রশান্ত। আর শেষে এসে সেটাই গলার কাঁটা হয়ে বিঁধছিল! প্রশান্তর স্ত্রী শাওনের সঙ্গে বিয়ের আগে কারো প্রেম ছিল। বিয়ের পর থেকে প্রশান্ত ভাবছিল সে ঠকেছে। ঠকার প্রতিশোধ নিতে সে বিভিন্ন মেয়েদের সাথে সম্পর্ক করা শুরু করে। সে খবর কোন না কোনভাবে পাচ্ছিল শাওন। সেও এবার প্রতিশোধ নিতে মেশে রণজয়ের সাথে। প্রতিশোধ, পালটা প্রতিশোধের এই খেলায় কে জেতে? বোধহয় জীবনের খেলা এমন, ঠিক যেন বৃষ্টির ঘ্রাণের মত। সিজার বাগচীর উপন্যাসের পথ সবসময়েই একটু ঘোরানো, সেখানে সোজাসুজি হাঁটার ব্যাপার থাকে না। তবে পরকীয়া বোধহয় কমন হয়ে যাচ্ছে। ঝরঝরে গদ্য বলে একটা ব্যাপার সিজার বাগচীর বৈশিষ্ট্য। সেটা আরেকবার অনুভব করতে পারলাম। সব মিলিয়ে উপভোগ্য। পুজো সংখ্যার উপন্যাস হিসেবে তো অনবদ্য।





৪টি মন্তব্য:

  1. শুভ মহাপঞ্চমী । উপকন্ঠর জন্য একরাশ শুভেচ্ছা ।
    বৈচিত্র্যময় খুব সুন্দর আয়োজন ।

    উত্তরমুছুন
  2. আজকের যারা এই পত্রিকায় কলম ধরল তাদের জন‍্য শুভকামনা রইল।এবং এই পত্রিকাকে জানাই অসংখ্য কৃকৃতজ্ঞ

    উত্তরমুছুন