উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 17/10/2020
Upokontha sahitya patrika Web Megazine- 17/10/2020
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 17/10/2020 |
"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-17/10/2020, শনিবার
সময় :- সন্ধ্যা 7:25 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
উপকন্ঠ প্রাত্যহিক সাহিত্য পত্রিকা :
ধারাবাহিক প্রবন্ধ :
কবিতার রূপকল্প : পর্ব : ২৫
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
||জীবনানন্দ পরবর্তীকাল এবং আধুনিক কবিতার আন্দোলন||
"""""""'''''"""""'""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
সৌম্য ঘোষ
""""""""'"""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
পঞ্চাশ দশকের কবিদের পরবর্তী প্রজন্মে এক ঝাঁক প্রতিভাবান কবির আত্মপ্রকাশ ও সমাবেশ ঘটে বাংলা কবিতার অঙ্গনে। তাঁদের মধ্যে আছেন প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত, মণিভূষণ ভট্টাচার্য, পবিত্র মুখোপাধ্যায়, গীতা চট্টোপাধ্যায়, শামসুল হক , বিজয়া মুখোপাধ্যায়, তুষার রায়, শক্তিপদ ব্রহ্মচারী, নবনীতা দেবসেন, দেবদাস আচার্য, মঞ্জুস দাশগুপ্ত, সুব্রত চক্রবর্তী, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, কালীকৃষ্ণ গুহ, কেতকী কুশারী ডাইসন প্রভৃতির মত খ্যাতিমান কবিগন । এঁরা সকলেই প্রায় ১৯৩৫ থেকে ১৯৪০/৪২ সাল নাগাদ জন্ম গ্ৰহন করেছেন ।
প্রণবেন্দু দাশগুপ্ত
___________________
প্রণবেন্দু আত্মপ্রকাশের প্রথম থেকেই অম্লান সন্তাপহীন জীবনের কথা বলেছেন হার্দ্য নিচু স্বরে। 'হাওয়া বয়ে যায়, নিখিল আর সদারঙ্গময় এই জীবনে।' অতি সাধারণ তুচ্ছ ঘটনাও তাঁর কাছে সুশ্রী হয়ে ওঠে :
"দেয়ালে দেয়ালে
শ্যাওলার সবুজ আলো চোখের আরাম মনে হয়।
কে যেন বিশাল হাত বাড়িয়ে রেখেছে, ছুঁয়ে যায়-
চুমুর মতোন স্বাদ, ঠোঁটের ভেতরে ভরে ওঠে।"
প্রণবেন্দু দাশগুপ্তের কবিতায় একটা পেলব মেদুরতা কবিতা পাঠকদের মুগ্ধ করে :
প্রেম
""""""""
"প্রেম আসে, বুকের পাথর সরে যায়,
প্রেম যায়, বুকের পাথর ভিড় করে।
পৃথিবী যে কারাে কারাে কাছে
খুব সুন্দর জায়গা, তাতাে তুমি বুঝে উঠতে পারাে।
একটানা অন্ধকারে চোখ রেখে দিলে
মাঝে মাঝে দু’একটি আকার উঠে আসে।
একটি তরুণী আজ মাঝরাতে একলা বাড়িতে রয়েছে।
বেণী বাঁধবার ছলে, সমস্ত আয়নার দিকে তাকিয়ে রয়েছে।
কে দিয়েছে তার বুকে ঢেউ, কে তার নয়নে
আলাে জ্বেলে দিলাে ?
এ-ই প্রেম, এই শুধু আড়ালে আড়ালে
কাজ করে ; সময় ফুরােলে, খসে পড়ে।
পাথরখণ্ডগুলাে আস্তে আস্তে সরে যায়,
স্রোত পালটিয়ে গেলে ফের ফিরে আসে।।"
মণিভূষণ ভট্টাচার্য
_____________________
মণিভূষণের কবিতা প্রণবেন্দুর কবিতার ঠিক বিপরীত পথের পথিক। বন্দুক ধরতে পারেন না বলে কবিতা লেখেন এমনটা নয় । 'কবিতার শব্দ আরো বহু দূরে যায়'। নারীর মাদকতা ও প্রকৃতির উন্মাদনা নিয়ে তিনি কবিতা লিখেছেন, আবার 'নৈরাশ্যবাদী কথকতা' নিয়ে বিদ্রুপের কবিতা । সত্তর দশকের রাজনীতির অভিঘাতে তাঁর কবিতা হয়ে উঠেছে শব্দের তলোয়ার, ঘৃণার দলিল। তিনি আর 'আত্মঘাতী শব্দের মজুর' হয়ে থাকতে রাজি নন । তাঁর অভিমুখ 'দীর্ঘস্থায়ী অগ্নি সাধনার দিকে ।' শ্রীকৃষ্ণের অগ্রজ শ্রীবলরাম মণিভূষণের চোখে ভূমিহীন কৃষক নেতা :
"তাঁর দিগন্ত চিরে ফেলা লাঙ্গলের ফলায়,
সেই ক্রান্তিকালীন ইস্পাত-ফলকে ঝলসিত হতে পারে
নতুন কুরুক্ষেত্র-বিধৌত সূর্যালোক এবং
দু-এক পোঁচ কর্ষিত রক্তের দাগ ।"
অজ্ঞাতবাসের পর সশস্ত্র পান্ডবদের ফিরে আসার কথা তিনি লেখেন :
"স্বজনের হৃদপিণ্ড খেয়ে / স্বজনেরা এখন ঘুমাক--/ চেতনায় দৃপ্ত সিংহরূপে / অগ্নিপুত্র, তুই জেগে থাক্ ।"
পবিত্র মুখোপাধ্যায়
___________________
পবিত্র মুখোপাধ্যায় প্রথমদিকে অন্তর্মুখী ছিলেন। মধ্য পর্বে 'নিঃসঙ্গ অনুভবের জগতের বাসিন্দা।' তাঁর পরের দিকের কবিতা গুলি
বহির্জগৎ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল। পবিত্রর উল্লেখযোগ্য দীর্ঘ কবিতা 'ইবলিসের আত্মদর্শন' । এই কবিতায় 'ব্যক্তি চেতনাকে সামগ্রিকতার সঙ্গে একত্রে গ্রথিত' করেছেন। তাঁর আর একটি দীর্ঘ কবিতা 'অলর্কের উপাখ্যান' । 'সারাদেহ পঁচে মরণগন্ধ ওঠে,/ তবু স্বপ্নের আকাশে উড্ডীন ।'
এই সময়ের কবি গীতা চট্টোপাধ্যায়। কল্পনার বৈচিত্রে, ভাষাকে সাবলীলভাবে ব্যবহারের দক্ষতা কবিতা পাঠকদের মুগ্ধ করেন। প্রচার বিমুখ রোমান্টিক কবি পরিশীলিত আবেগস্পন্দিত কবিতা রচনা করেছেন। অবয়ব দিয়েছেন আধুনিক নাগরিক জটিলতাকে ।
সতীদাহ
"""""""""""""""
"এইখানে দাহ হবি, এবার চিতায় আরোহণ
এইখানে দাহ হবি, এবার স্মৃতিতে আরোহণ
এইখানে দাহ হবি,---- রক্তওষ্ঠ, তামরস-নাভি
মুখের কাপড় তুলে শেষ দেখা দেখ্ , তোর স্বামী!"
কবি শামসুল হকের কবিতায় গ্রামীন পরিবেশের কথা তো আছেই, আরো আছে শাণিত ক্রোধ আর বিদ্রূপ । শ্লেষদীপ্ত ভঙ্গিতে তিনি পাঠক চিত্রের চারদিকে আঘাত করেন।
"রাজপুত্র চলে যায়, তার সামনে পড়ে থাকে আত্মদগ্ধ মন।"
সহৃদয় মমত্ববোধের কবিতা লেখেন বিজয়া মুখোপাধ্যায় । মেদহীন মিতভাষী তাঁর কবিতা । তিনি উপলব্ধি করেন:
"যত নির্বাসন হোক, দীর্ঘ দীর্ঘ দিন
সব পথ হয়না আঁধার ।"
অন্য কবিতা লেখেন :
"নদীতে জলের শেষ নেই / হাওয়া চিরদিন সঞ্জীবনী।"
কবিতার রূপকল্প নিয়ে উপলব্ধি করেন কবি রত্নেশ্বর হাজরা :
"যেন কিছু পাখি কিছু পোকা কিছু
সম্পূর্ণ বিবাগী
অরণ্যে আকাশে যায় আসে দেখা যায়
সকালে বিকালে---- ধরা পড়েও পড়ে না"
রত্নেশ্বরের কবিতায় সংকট বিদ্ধ জীবনের কথা আবার পথ সন্ধানের ব্যাকুলতা দেখা যায়। তাঁর দীর্ঘ কবিতা 'তীর্থযাত্রা'য়।
কৃত্রিমতাকে ভেঙে সত্য কে খুঁজতে চেয়েছেন কবি তুষার রায় । আত্মবিদ্রুপে জর্জরিত
কবি বলেন, ' গুনে যাচ্ছি সুদ এবং শুয়োর ।"
এক কাতর অভিজ্ঞতার যন্ত্রণা কবিকে নিয়ে যায়, মৃত্যুবোধের দিকে :
"রেলরাস্তায় ফ্লাইওভারে অযুত হাজার
রননঝনন আত্মহনন সম্মেলন উদাত্তগান ।"
পশ্চিমবঙ্গের বাইরে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলেও বাংলা কবিতার যে নিবিড় চর্চা হয় তার প্রমান শক্তিপদ ব্রহ্মচারীর কবিতায় :
"হেথা নয়, হেথা নয়, অন্য কালীদহে
ডহরের ঘোর-লাগা গহণের টানে
সায়ের ঝিয়ারি যায় অনন্ত ভাসানে ।"
আধুনিক বাংলা কবিতার সার্বিক পরিসরে কলকাতা কেন্দ্রিক বাংলা কবিতার সমান্তরালে আসাম ত্রিপুরার বিপুল বাংলা সমাজকে কেন্দ্র করে বরাক তথা বৃহত্তর বাংলায় গড়ে ওঠা কবিতার একেবারে প্রথম শ্রেনীর কবি হিসেবে মান্যতা দেওয়া যায় কবি শক্তিপদ ব্রহ্মচারীকে।
নবনীতা দেবসেন (১৯৩৮--২০১৯)
_______________________________
বাঙালির সাংস্কৃতিক ও পারিবারিক ইতিহাসে নবনীতা দেব সেন কোনও বিচ্ছিন্ন, একক ধারাপাত নন। তাঁর ঐতিহ্যে কবিদম্পতি নরেন্দ্র দেব ও রাধারাণী দেবী নিত্য বহমান।
সহজিয়া স্বাভাবিকত্বকে না বুঝলে নবনীতার জীবন ও সাহিত্যকে প্রতি পদে অস্বাভাবিক ঠেকবে। যিনি দেশ ও বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যের সম্মানীয় অধ্যাপক, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাধাকৃষ্ণন স্মারক বক্তৃতা দেন, তিনিই কি সরস বাংলা গদ্যে নিজেকে নিয়ে হাসির ফুলঝুরি ছড়াতেন? নরেন্দ্র ও রাধারাণী দু’জনেই ছিলেন প্রতিভাবান, আমুদে ও আড্ডাবাজ। নবনীতা এই দুই বিখ্যাত কবির একমাত্র সন্তান।
ভালবাসা তাঁর হৃদয়ে ছিল বলেই তাঁর ভ্রমণকাহিনি কখনও নিছক অ্যাডভেঞ্চার হয়ে ওঠেনি। কেদারনাথে গিয়ে গাড়িবিভ্রাট, ঘোড়াওয়ালা অনেক কিছু। তবু তারপরও মনে হয় ‘হে পূর্ণ তব চরণের কাছে’! বাংলা ভ্রমণসাহিত্যে তিনি সৈয়দ মুজতবা আলির বৈঠকি মেজাজ বা উমাপ্রসাদীয় মুগ্ধতার বাইরে বিরল ব্যতিক্রম। তাঁর বেড়ানো অনেকটা অবুঝ বাচ্চা মেয়ের মতো। ভ্রমণসংক্রান্ত শেষ ও পঞ্চদশ বইয়ের নামেই মালুম, ‘যাবোই যাবো পেরু’।
শ্রদ্ধেয় পাঠকদের জন্য নবনীতা র একটি কবিতা:
আরোগ্য
"""""""""""""""
"শুধু তুমি সুস্থ হবে।
আমি দিয়ে দেবাে আমার কোজাগরীর চাঁদ,
শাদা দেয়ালের ময়ূরকণ্ঠী আলো,
দিয়ে দেবাে বিগত বছরের মরা পাখির মমতা,
আর আগামী বছরের কলাগাছটির স্বপ্ন।
চ’লে যেতে যেতে সবাই তাে তাই বলে গেলাে।
কুন্তী নদীর গেরুয়া জল তার সবুজ ছায়া-কাপা ঠাণ্ডা গলায়
আমাকে বলেছে,
শুকনাে সােনালি গােরুর গাড়িগুলো
ক্লান্ত কাদাটে গলায় আমাকে বলেছে,
শেষ হেমন্তের বুড়ো সবুজ পাতারা
আসন্ন মৃত্যুর খস্ খসে গলাতে বলেছে
তুমি সুস্থ হলেই ওরা আবার ফিরবে ।............"
চারিদিকে কষ্টের চিহ্নের কথা দেবদাস আচার্যের কবিতায়। মাথা উঁচু করে দেখেন "দুঃখবোধলুপ্ত মানুষেরা বেশ আছে।"
প্রেম ও প্রকৃতি মঞ্জুষ দাশগুপ্তের কবিতার প্রধান প্রসঙ্গ :
" এখন আমাকে ডেকো না তোমার কাছে
সারাটা শরীর জড়িয়েছে বল্মীক
লোভী মানুষেরা হয়ে গেছে দিনশেষ
মৃত্যুর ঘড়ি অবিরাম টিকটিক....."
কবি সুব্রত চক্রবর্তী লিখলেন :
"কবি তো সন্ন্যাসী নয়,
ওর ঘর-গৃহস্থলী আছে--"
তিনি লিখলেন :
"ধানকল থেকে
ফিরে যাচ্ছে ইঁদুরেরা , ফিরে যাচ্ছে পুষ্যা নক্ষত্রের
অবসাদ; চিমনির কালো ধোঁয়া ছবি অক্ষরের মত
ব্যাপ্ত হয় আকাশে আকাশে।
এইসব দ্যাখো, দেখে সুখী হতে থাকো।"
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত
________________
বুদ্ধদেব যান্ত্রিক পৃথিবীর কথা বলেন, যে পৃথিবীতে মেশিন হল সবকিছু । মেশিন মা বাপ, মেশিন ভাই বোন । এই যুগকে তিনি 'হিমযুগ' বলতেন । এই 'হিমযুগে' বাস করে তিনি বস্তুপৃথিবীর কথা বলতেন।
কালীকৃষ্ণ গুহ
_______________
তাঁর কবিতায় অনুভূতি দেশের আলো পাওয়া যায় । এক অন্তরঙ্গ নিরুদ্বেগ দলিল। কালীকৃষ্ণের তদ্গত উচ্চারণ :
"এবার ভ্রমণ শেষে মনে হলো মন্ত্র উচ্চারণ করি।
মনে হল বলি :
শালবন স্থায়ী হোক, উপরে আকাশ...
নারী ও কাব্য থাক যুবকের পাশে, রাত্রিগুলি
অতিক্রম করে যাক মূর্তিপূজা, পাথর- মগ্নতা, দীর্ঘশ্বাস ।"
কেতকী কুশারী ডাইসন
______________________
শোনা যায় একদা নাকি শহর কলকাতায় তাঁকে নিয়ে একটি পদ্য চালু ছিল- ‘গদ্যে পদ্যে ধোপদুরস্ত/ কেতকী কুশারী ডাইসন/ ফেমিনিস্ট তিনি জবরদস্ত/ ত্রস্ত পুরুষ বাইসন’৷ পরিহাসটি যতই লঘু হোক, এ কথা অনস্বীকার্য যে ইংরেজি ও বাংলা, উভয় ভাষাতেই তাঁর ‘ধোপদুরস্ত’ লেখনীর দৌলতে তিনি অভিবাসী বঙ্গীয় সাহিত্যের উজ্জ্বলতম এক স্বর।
তাঁর জন্ম হয়েছিল ১৯৪০ সালে, কলকাতা শহরে৷ অবনীমোহন কুশারী তাঁর বাবা, মা অমিতা কুশারী৷ এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে সব থেকে বড়ো কেতকী৷ কেতকীর পিতামহ ছিলেন সে যুগের এক খ্যাতনামা শিক্ষক৷ তাঁর পাণ্ডিত্যের খ্যাতির জন্য অনেকে তাঁকে ডাকতেন ‘শেক্সপিয়র কুশারী’ বলে।
পাঁচের দশকে কৃতী ছাত্রী হিসেবে কেতকী তখনই কলকাতা-খ্যাত৷ প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে তিনি ১৯৫৮ সালে ইংরেজি সাহিত্যে বিএ পরীক্ষায় রেকর্ড পরিমাণ নম্বর পান৷ ১৯৬০ সালে স্কলারশিপ নিয়ে পাড়ি দেন বিলেতে৷ ১৯৬৩-তে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আবার স্নাতক পর্যায়ের ডিগ্রি অর্জন করেন৷ অক্সফোর্ড থেকে ইংরেজি সাহিত্যে প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণদের মধ্যে তিনিই প্রথম ভারতীয় নারী৷ অতঃপর কলকাতায় ফেরা ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর শিক্ষকতা৷ ১৯৬৪ সালে বিয়ে করেন রবার্ট ডাইসনকে৷ তারপর কিছু সময় ইংল্যান্ডে, বছর দেড়েক ক্যানাডায়৷ ১৯৬৯-এর শেষে অক্সফোর্ডে স্নাতকোত্তর পড়াশোনা আরম্ভ করেন৷ ১৯৭৫-এ ডক্টরেট উপাধি অর্জন৷
তিনি এক বিরল দ্বিভাষিক সাহিত্য-ব্যক্তিত্ব, যিনি বাংলা ও ইংরেজি, উভয়ই নিজের মাতৃভাষা মনে করেন৷ খ্যাতনামা জীবিত বাঙালি কবিদের মধ্যে তিনিই বোধ হয় একমাত্র যিনি এই দুই ভাষাতেই সমান দক্ষতায় কবিতা লিখে চলেছেন৷ বহুপ্রজ এই সাহিত্যিক যদিও তাঁর কবি পরিচয়কেই প্রাধান্য দিতে পছন্দ করেন, কিন্তু তাঁর অনায়াস বিচরণ সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে৷ উপন্যাস, নাটক, গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ, সাহিত্য সমালোচনা ও অনুবাদ- সবেতেই তিনি সমান স্বচ্ছন্দ৷
কেতকী কুশারী বাইসনের কবিতা :
মেয়েলি
"""""""""""
"ও মেয়ে,
তোমার হাঁড়িটা বড্ড উথলে উঠছে,
আঁচটা একটু কমিয়ে দাও না।
ও মেয়ে,
তোমার আনাজের কড়াইয়ে ঢাকনা নেই কেন?
গুন-ঘ্রাণ-রস উড়ে যাবে যে।
ও মেয়ে,
তোমার মাছের এপিঠ ভাজা হয়ে গেছে,
এবার উল্টে ও পিঠ ভাজো।
নুন দিতে ভুলো না,
মসলা পুড়িও না।
তেল-ঝোল-আঁচল-বাচ্চা
সামলে সুমলে
রান্না নামাবে।
খেতে বসবে কখন ?"
দশ দিকের ছড়া
বিপ্লব গোস্বামী
পূর্ব দিকে সূর্য উঠে
পশ্চিমে যায় অন্ত,
উত্তরেতে হিমালয় পর্বত
দক্ষিণে সাগর মস্ত।
উত্তর পূর্ব কোণ মিলে
ঈশান দিক হয়,
দক্ষিণ পূর্ব কোণ অগ্নি দিক
সর্ব লোকে কয়।
র্নৈঋত দিক দক্ষিণ পশ্চিম কোণ
কম্পাস মতে হয়,
উত্তর পশ্চিম কোণ বাযু দিক
জানিও নিশ্চয়।
ঊধ্ব` মানে আকাশ
আর অধঃ মানে পাতাল,
জেনে নিলাম দশ দিকের নাম
এবার হবো আনন্দে উত্তাল।
ত্রিশ বছর পর
সাফরিদ সেখ
ত্রিশ বছর দেখা হয়নি,তোমায় হারিয়েছি।
আমি তখন ছোট্ট ছিলাম।জানতাম না মানে।
আজ ও দেখতে পাই উঠান ভর্তি লোক।
শুনতে পাই মা তোমার সেই ক্রন্দন ধ্বনি।
আজ ও তুমি বুকে পাথর রেখে ঘুমাও।
মা তুঝে সালাম।মা তুঝে সালাম।
ধূলো বিছানো পথ উঠে গেছে ।গ্রানাইট আজ দগ্ধ করে।
তোমার পরে আর কত প্রিয়রে দিয়েছি বিদায়।
আর কত জনেই না দিতে হবে বিদায়!
সেই আলয় যাতে লেগে আছে তোমার রক্তের দাগ।
মাটির প্রতিটি অনু তোমার ভালোবাসা সাক্ষ ।
তুমি শুয়ে থাকো আমাদেরই সাথে শরীরের অন্তরে।
আজ ত্রিশ বছর পর তোমায় দেখা পায়।
জনক হয়ে আজ নিজ জন্ম দাতার দেখা।
অঙ্গনে দাঁড়ালে তুমি ডাকো।আশিস ডালো ।
গাছের শিক্ষা
সুস্মিতা দে
একটি গাছ আনন্দ চাইছে আমি দিলাম তাকে তার মায়ের কাছ থেকে তুলে এই কি দয়া মায়া হীন শখ?
গাছ টি ঝিমিয়ে আমাকে
জানান দিল মানব সভ্যতার অধঃপতন দেখার আর কি বাকি রইলো?
বিধির লীলা বলে মানুষ কি অধঃপতনের দাস। বই পড়ে পরীক্ষাতে নম্বর আনে গাছেরা অক্সিজেন দেয় আমার প্রানে বাঁচি আবার। কার্বনডাইঅক্সাইড পেয়ে গাছ বাঁচে সবাই খাতায় গাদাগাদা নম্বর আনে লিখে
তবুও চলে অত্যাচার গাছের প্রানে। ভুলে যাই মাঝে মাঝে আমি একটি মা। একটি গাছ একটি প্রান ।
প্রথম প্রকাশ আমার মনে দানা বাঁধতে থাকে অক্সিজেন না পেলে বাঁচবো কেমন করে আমি? আমার সন্তানদের সুন্দর শিক্ষা মা তো দেবে আগে
শ্রাবনের ধারার মতো বৃষ্টি নামে মনটা কেমন গুমরে গুমরে ওঠে। বৃষ্টি হয়নি শেষ ।বিদ্যুতের চমক ঘন বাজের আওয়াজ আমাকে থামিয়ে দিলোনা। প্রান টানছে কচি গাছটিকে নিয়ে নীচে নামতে হবে।
ছুটে গিয়ে দেখেছি চাড়া গাছটি আরো কালো হয়ে শুকিয়ে গেছে।
ছাদ থেকে নামিয়ে রাখি দুই দিন পড়ে একটি ছোট কচি সবুজ পাতা দেখা মিলেছে
।মনে খুশি হলো অনুভব হলো আমাকে বাঁচাতে হবে টগর ফুলের গাছ টিকে । না হলে ঈশ্বর আমাকে ক্ষমা করবেন না। অপেক্ষা করি সুস্থ গাছ কে নিয়ে আমি অসুস্থ করে তুললাম। আমি কি মা ? ওকে সুস্থ করতেই হবে। অন্তত চেষ্টা করি বাঁচিয়ে রাখার ।
দায়িত্ব নিয়ে নিলাম , ওরে দুষ্টু নিজেকে পুরো , সূর্যের দিকে তাকিয়ে মুখে করে ঘুড়িয়ে নিলো । আমার মনে মনে জায়গা হলো স্নেহ, দয়া মায়া যত্ন মমত্ববোধ কিছু দিন বাদে গাছটি সাদা ধবধবে ফুলে ভরে গেছে । শান্তো ধীর প্রশান্ত সাগরের মতো গভীর চেতনার সাড়া জাগালো ঈশ্বর মনে হৃদয়ে আত্মাতে আছে।
রামকৃষ্ণ দেব ঠাকুরের উক্তিটি মনে আসে। মনের স্হান।মনেকে সুন্দর করার মাঝে মনুষ্যত্ব সব । দেহ পরিষ্কার করে মল মূত্র ত্যাগ করে।মনের পরিষ্কার হয়ে ভক্তি প্রমে যত্ন বৈরাগ্য দয়া মায়া মমত্ববোধে ।
গান
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
তুমি সুন্দর নাইবা হলে
আমার মনের কাঁখে কলসি নিয়ে
জল ভরে চলে গেলে।
আজ আবার এসেছো হেথায়
নদীর তীর ঘেঁসে
কিসের কারণে মনের বাঁধনে
চেয়ে আছো ভালোবেসে।
তার চেয়ে তুমি চলে গেছো যেথা
সেথায় যাও না ফিরে
নতুন ছন্দে সুরে
আমি আছি বেশ সুখে দুখে
শান্তিতে হেসে হেসে।
তুমি যাও না আমারে ফেলে।
সুন্দর হলে কি যে করতে
সদাই ভাবি মনে
তার চেয়ে বোধহয় ছিল ভালো
সুন্দর নাইবা তুমি হলে।।
আজ দুখের স্রোতে শুধু ভেসে ভেসে
কতই ভাবনা ভাবি
প্রিয়া সজনী তুমি তো রজনী
আলোতে নাইবা ধরা দিলে।।
স্নেহময়ী
জুয়েল রুহানী
দৃষ্টির সীমানায়
সাগরের ঢেউ খেলে,
দেখেছি সেদিন আমি
মনের দু'চোখ মেলে।
সম্মুখে দাড়িয়ে যবে
হারিয়ে দিয়েছো ভাষা,
সপেছো আমায় ভবে-
স্নেহময় ভালোবাসা!
দীর্ঘ সংকট মাঝে
মোঃআলিউল হক
কুড়ির শুরুটা কাটিয়ে উঠতেই
অণু দানব বৃহৎ হাঁ করে ধেয়ে এলো
ক্রুর ত্রাসে অকাল মৃত অগুন্তি বৃদ্ধ জোয়ান
মরি বাঁচি লড়াইয়ে নত হল ভূ-প্রতাপ
কুঁড়ে কোঠা হাট ঘাট রুদ্ধ চলাচলে।
করুণ রোদন দিন মজুর পরিযায়ীর বক্ষ জুড়ে ;
উঠোন অন্তঃপুরে।
মৃত্যু হার ক্রমবর্ধমান কালে
উপস্থিত শারদোৎসব,
ঢাকে কাঠি পড়ে ; তবু -
নতুন পোষাকের গন্ধ নেই ঘরে ;
পাঁজর ভাঙা শিরদাঁড়া উঁচিয়ে।
করোনা গ্রাসে মৃত মনোবল
আবার শাসকের কড়া দাওয়াই
মণ্ডপ বাঁধন দর্শনে, করোনা নিরসনে।
হায়েনা-দুর্বৃত্তের বেলাগাম উন্মত্ততায়
ভীত মন চৌকাঠ মাড়াতে নাহি চায়!
কি জানি এত ন্যুব্জ দেহ মন নিয়ে
এবার পূজোটা কিভাবে কাটাই
তাই ভেবে চলেছি নিশিদিন,
পূজনীয় হে মহা মহিম
কৃপা করো সংকট মোচনে।
প্রবন্ধ
' পত্রিকা বা উপন্যাসের পৃষ্ঠা সংখ্যা '
- অগ্নিমিত্র
কোনো পত্রিকার খুব বেশি পাতার সংখ্যা সেভাবে কোন আগ্রহী পাঠককে পড়তে নিরুৎসাহ করে না। তবে সেই পত্রিকায় প্রকাশিত কোনো গল্প বা উপন্যাসে যদি অত্যধিক পাতার সংখ্যা হয়, অর্থাৎ সেটি অতিদীর্ঘ হয়, তবে পাঠকের উৎসাহে সত্যিই ভাটা পড়ে । আজকাল বা আগেও অনেক পূজা সংখ্যাতেও এই রকম উপন্যাস দেখা যায় বা যেত। একেকটি বড় গল্প বা উপন্যাস পঞ্চাশ বা ষাট- সত্তর পাতার, এমনও দেখা গিয়েছে । আজকাল অনেকেরই এত বড় কোন লেখা পড়ার মতো বা পাতার পর পাতা পড়ার মতো ধৈর্য বা সময় থাকে না, যদি না সেই লেখাটি সত্যিই দুর্দান্ত হয় । পাঠক যেন বিরক্ত না হন ! তাই গল্প বা উপন্যাস অকারণে যেন দীর্ঘায়িত না হয়, সেদিকে লেখকের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে । তাছাড়া এতে গল্প বা উপন্যাসের স্বাভাবিক প্রবাহও ব্যাহত হয় ।।
নম্রতা
অলোক রায়
আমি চাই আমার আলোড়নে
হোক তোমার হৃদয় মন উদ্বেলিত,
আমি চাই বিষন্ন আবেগেরা হোক
তোমার কাছে অবহেলিত।
আমি চাই তুমি বিলীন হও তৃণসম,
কোন স্বপ্নলোকের অগোচরে হৃদয় মম।
আমি চাই তুমি জাগো আমার উদ্দীপনায়,
আমি চাই তৃষাতুর কোকিলেরা মত্ত হোক তৃণবনের কোন মণিকোঠায়।
আমি চাই অশরীরী উত্তাপে তুমি উত্তাল হও,
আমি চাই নব বসন্তে ভালোবাসার ছোঁয়া তুমি অকুণ্ঠ চিত্তে লও।
আমি চাই বিরহ অনুভূতিতে মেতে ওঠো তুমি সহাস্যে।
আমি চাই প্রিয় প্রেমিকের আলোড়নে জাগো তুমি প্রকাশ্যে।
পথ হারানো পথিক
আব্দুল রাহাজ
সময়টা ছিল চারিদিকে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি এক আতঙ্কের মধ্য দিয়ে গোটা দেশ ও জাতি বসবাস করছে শহর থেকে মফস্বলে গ্রামের মানুষেরা সেরকম কিছু বুঝতে পারেনি তবুও তারা স্বাধীন ভাবে জীবন যাপন করছে। একটা ছোট্ট গ্রামে একটা বন জঙ্গলের পাশে কয়েকদিন ধরে একজন পথিক শুয়ে পড়েছিল কারুর নজরে আসেনি। এরপর হরিমতি লালু ভুলুরা রাই বাবুর কাছে পড়তে যাওয়ার সময় সেই পথিককে দেখতে পেল বুলু বলল এই চল চল দেখি কে ওখানে কাছে যেতেই পথের পথিক বলল আমার একটু খেতে দেবে খুব খিদে পেয়েছে লালু বললো নিশ্চয়ই দেব এই হরিমতি একটু মুড়ি আনতো তোর কাছে ছিলো না হ্যাঁ হ্যাঁ দিচ্ছি দিচ্ছি ভুলু তুই জল দিবি আচ্ছা। পথিককে ওর মুড়ি আর জল খেতে দিল। খাওয়ার পর পথিক বলল তোমাদের দিকে শান্ত কেন উত্তপ্ত নেই চারিদিকে লালু ভুলু রা বলল কই না তো শহরে যুদ্ধ বেধেছে দেশের অবস্থা খারাপ যেকোনো সময় গ্রামবাংলায় চলে আসতে পারে হরিমতি বলল তোমার বাড়ি কোথায় তখন পথিক বললো আমার বাড়ি শহরে ও আচ্ছা সাতাশে আগস্ট এর রাত্রে আমার পুরো পরিবার মেরে ফেলে ওই হানাদার বাহিনী আমি অফিস থেকে বাড়ি ফিরছিলাম দেখে আমি মনের কষ্ট ও প্রাণ বাঁচাতে আমি দৌড়ে পালিয়ে যায় এসে পড়ি তোমাদের এই গ্রামে ভুলু বলল ও আচ্ছা আচ্ছা তা এখন কি করবেন পথিক বলল ভেবে পাচ্ছি না কি করব আমি যে পথ হারানো পথিক এই বলে পথিক মশাই উত্তর দিকে তালবনের দিকে চলে গেল ওরা হাত ধরাধরি করে পড়তে চলে গেল। এই পথ হারা পথিক সূর্যের আলোর মত তালেবনের সঙ্গে অদৃশ্য হয়ে গেল।
প্রেমকথা
হামিদুল ইসলাম
সপ্তসিন্ধু থেকে তুলে আনি জল
মনের মাঝে উদ্বেগ
তোমাকে সাজাবো বলে পারফিউম কিনে আনি
রাত্রি অগাধ ।।
অভ্যাগতরা বিদায় নিয়েছে
ফাঁকা আসর
দর্শক নেই
ঘুড়ির লাটাইয়ে জীবন গুণি ইতিহাস চাঁদ ।।
জীবন সংগ্রামের ফসল
নিত্য দেখা পথের সাথী
মেঘের ঘনঘটায় কিংবদন্তি
ঘরের কার্নিসে হাতছানি ।।
মৌতাত মন
ভোরের আলো গায়ে মাখে প্রতিদিন
তোমার সাথে রাত্রি যাপন
এসো কানে কানে বলি তোমার আমার প্রেমকথা ।।
নেই
আসরাফ আলী সেখ
জানি না কি যে হয়েছে আমার শুধু মনে হয় ভালো নেই;
কেন ভালো নেই কিসে ভালো নেই কোনো উত্তর নেই;
শুধু মনে হয় ঐ ভালো আছে আমি কেন নেই ;
ওর তো হাত নেই পা দুটো ই নেই চলে বেয়ে ;
ওর জনম তো এক বার , নয় বার বার ,ও চলে;
হেসে হেসে পথে পথে আমি চলি দু চাকার হাওয়া তে;
তবুও ভালো নেই ! অদেখা অধরা ধেয়ে আনে তাড়া ,
বলে কি বা হলো কি বা করলে ঐ দেখ ঐ দেখ !
ফুটফুটে গোলাপ বসে স্থির, হয়ে ধীর ছড়ায় ভালোর তীর
মেটায় ক্ষুধা বলে না কেন তুললে আমায় , ভালো নেই!
আমার যা তার ও শোভা কি কম ? আসলে বড়ো বুকের
মনের কোণে আমি ছোট অতি যতনে , কি যে ভালো নেই কোনো ভালো নেই কোনো উত্তর নেই ; শুধু ই বলে চলে
তালে তালে নেই নেই নেই ;
সেও পালাবে ছেড়ে সে কথা নেই মনে এ ভাবেই চলে
সময়ের ঢেউ , কে কোথায় হারিয়ে যায় বোঝার নেই ,
কবরে শ্মশানে পড়ে থাকে কিছু মাটি কিছু ছায়;
নেই নেই নেই ...কোথায় ...
Her ray-garland
Mom
She gifts me her ray-garland.
She lives in my heart-land.
She has no demand.
I hold her one hand.
Her name is moon light.
I meet with her at night.
We move under endless sky.
We fly fly and fly.....
With happiness.
The stars, countless,
Give us their twinkling looks from high.
We gift them, our feelings from too far.
My garland then hears my heart beats
From my chest which is gifted by her.
At this time, my dream meets
With my emotional sense of imagination.
And our life - relation,
Then becomes immortal and infinity.
Which is the love's ever endless identity.
জ্যাম্
নির্মল সরকার
আজকাল রাস্তায় গাড়ির জ্যাম্
চলা চলে বড় অশান্তি
সঠিক সময়ে কর্ম ক্ষেত্রে-
যাওয়া যায় না ।
হাসপাতালে রোগীর জ্যাম্
ডাক্তার খোঁজে পাওয়া যায় না
পাবে তবে - সেন্বারে.. ,
নয়তো বা কোয়াটারে ।
রাস্তায় বা পার্কে নেই কোন -
লাজ - লজ্জা ।
মেয়ের হাতে থাকে-
ছেলের হাত,
ছেলের মাথা মেয়ের বুকে ।
মন্ত্রী বাবার ঘরে জ্যাম্
সকাল থেকে রাতে-
যখন তখন লোকে ভরা
আসল কাজের শেষ ।
থানায় গেলে আসামী -
লকাব ভরা ,
ন্যায়,অন্যায় সবকটি
দারোগা বাবুর খবর নাই
দারোয়ান থাকে বসা ।
আয়না কেন্যে বন্ধু হবি
নদেরচাঁদ হাজরা
আয়না কেন্যে বন্ধু হবি
তুরে আকাশ দিব
শুদ্ধ বাতাস দিব
সবুজ দিব
দিব রাঙামাটি
মুনের ভিতর ভাল্যবাসা দিব
পেরেম দিব
ইকখান তাজা মুনডাও তুরে দিয়ে দিব ৷
আয়না কেন্যে বন্ধু হবি
তুরে লিয়ে যাব গেরাম মাঝে
খড়ের চালের শীতল ঘরে তুরে রাখব আদর কইরে ৷
বুকের ভিতর উইঠবে রে ঢেউ
পেরাণখানা মুগ্ধ হবে ৷
অট্টালিকার জঙ্গলেতে হাঁপাস শুধ্ধুই বারেবার ৷
শাল পিয়ালের জঙ্গলেতে তুরে মাতায় দিব আরেকবার ৷
আয়না কেন্যে বন্ধু হবি
সঙ্গী পাবি
মুনের ভিতর জইমে থাকা জটিলতা দূরে যাবে
সরলতায় দেখবি আবার হিদয়খানা ভরি যাবে ৷
পেরাণ জুইড়ে উঠবে মাতন মারাংবুরুর থানে গেলে
মুদের পরব দেইখ্যে পেরাণখানা ভরি যাবে ৷
মুদের লাচ দিখাব
গান শুনাব
চাইলি পরে মহুয়া দিব
মাতাল হবি ৷
দিখ্যে লিবি হাজার কষ্ট বুকে লিয়েও আমার কিমন সুয়খে আছি ৷
আয়না কেন্যে বন্ধু হবি ৷
উদাস মনের ভেলা
এমাজদ্দিন সেখ
...ধোঁয়াটে আকাশ তন্দ্রালু নয়ন ঝাপসা স্মৃতির কাটা ছেঁড়া গন্ধ ; মুখোমুখি গল্প করার শুধু জানালার ওপাড়ের অন্ধকার ...
... গুটি গুটি পায়ে জোনাকির মতো চুপি চুপি আসে রঙিন দিনের ছবি গুলো ... তোমার হয়তো মনে নেই ... সে- ই কাব্যে আলাপন , নাটকে পিরিত ... বাস্তবের ধোঁয়া কালি , ঝামাঘঁষা মুখ ...
...বিশ্রী অসহ্য l
জীবনের অলস দুপুরে ভেজা বাতাসের শীতল আলিঙ্গনে সেই স্মৃতি চারণেই সুখ ...
... হয়তো বা একদিন রঙধনু সত্যই ধরা দেবে !
এই ভেবে বেঁচে থাকাই জীবনের মানে ...
আসার পানে চেয়ে থাকাই সমান্তরাল প্রেমের সার্থকতা .....
খুব ভালো লাগলো । খুব সুন্দর আয়োজন
উত্তরমুছুন