উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/10/2020
Upokontha sahitya patrika Web Megazine- 20/10/2020
উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 20/10/2020 |
*********************************
আপনার ব্লগ ওয়েব সাইটতে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ইনকাম করতে চাইলে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
100% ইনকাম ও Real payment
"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-20/10/2020, মঙ্গলবার
সময় :- সকাল 11 টা 30 মি:
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒✒
বিভাগ- ইংরেজি কবিতা(Poetry)
Conversation
Mahitosh Gayen
Mahua flowers all over your body
Black all over the body,
'O' girl what's in your body
Lightning?
Kashflowers in your body
Light throughout the body,
'O' boy is your evening
Is the character good?
বিভাগ- গান
অন্যায় প্রতিরোধে
মোঃআলিউল হক
কন্ঠ কন্ঠ সমস্বরে করবো প্রতিবাদ
রুখে দেবো মজলুমের করুন আর্তনাদ।
একলা বসে চিন্তা মন
রইবো নারে গৃহ কোণ
অন্যায়ের প্রতিবাদে শুরু হোক সংঘাত।
দুই বাহুতে খড়্গ তুলে
সকল দ্বিধা দ্বন্দ্ব ভুলে
এক সাথে সবাই মিলে হানি ভীম আঘাত।
ঐক্য শক্তি মহা বল
রুখবো বিঘ্ন হিমাচল
চলরে চল জোয়ানের দল আমরা জল্লাদ।
শান্তি সুখে বাঁচতে হবে
ত্রুটি দোষ কেন রবে
শান্তি কামী আমরা সবে শুভ দিন আবাদ।
বিভাগ- কবিতা
মিনতি গোস্বামীর দুটি কবিতা
(১)
আয় রাত জাগি
আয়
বন্ধু আয়
আজ রাত জাগি
রাত জেগে জেগে দেখি
কোন পেঁচা কেমন ধরে শিকার
রাতের বুকে কেমন বেজে যায় হাহাকার ।
দিনের আলোয় সাজানো পৃথিবী দেখি চমৎকার
রাত হলেই. ধরা পড়ে সব বিকার
আয় রাতের কথা লিখি
লিখি কারা দাগী
সময় যায়
যায়।
(২)
এবার উৎসবে
শারদোৎসবে
এবার দেখি
সাদা মেঘেরা নেই
উঠে গেছে কাশফুলের মেলা
অদ্ভুত আঁধারে ছেয়ে গেছে চারিদিক
আদালত পর্যন্ত শেষে গড়ালো উৎসবের দোলাচল।
জামাকাপড় কিনেও বাড়ছেনা এখন কারোর মনোবল
অপু দুর্গারা হাসতে পারেনা ফিকফিক
বন্ধ এবার দুর্গাদালানে খেলা
মন ভালো নেই
চলছে লুকোলুকি
কলরবে।
ঈশ্বর
পিঙ্কু হাজরা
সেদিন আকাশটা ঢেকেছিল মেঘে
ঝরা পাতারা ঠিকানা খুঁজছিল স্রোতে।
তর্জনীর বক্ররেখা আর মৃদু পরিহাস;
পথগুলি থমকে ছিল লাল বাতি স্তম্ভে।
সন্ধ্যার আবছা আলোয় বলেছিল মা,
খোকা একটা কিছু কর, বাবার উদাসীন
চোখ বুঝিয়ে দিয়েছিল আর নয়;
এভাবে আর কতদিন!
প্রেয়সীর বাড়ানো হাত চাইছিল অবসান
................প্রতীক্ষার।
নিদারুণ সে ক্ষণ ; তুমি এলে সারথী সেজে
মেঘেদের বুক চিরে।
তুমিই তো দেখালে পথ,
পথই চেনাল নতুন পথ।
নামালে লড়াই এর ময়দানে, নিরন্তর লড়াই।
লড়াই ,লড়াই, শুধু লড়াই।
তাকিয়ো না পিছনে,দেখো সামনে গভীর খাদ।
মনে রেখো টপকে যেতে হবে সব গিরিখাত,
সব প্রাকার...
বাসা ভাঙ্গা ঝড়ের গল্প শুনেছি অনেক
বাসা গড়ার স্বপ্ন দেখালে তুমি।
লক্ষ্য স্থির, সাজালে ঘুঁটি; দশমিকে নাকি
মনসবদারী কোন পথে গড়া হবে বাহিনী।
আসবে সাফল্য।
কৌশল কি হবে, রুমি নাকি অন্য কিছু।
বলেছিলে তুমি...
মনে রেখো এ লড়াই কুরুক্ষেত্রের;
মিত্র,আত্মজ সবাই তোমার প্রতিপক্ষ।
তোমাকে জিততে হবে, জিততেই হবে
তোমাকে।
এরপর শুধুই ইতিহাস, সত্যিই ইতিহাস।
সাফল্য এসেছে আপন ছন্দে ।
ফুল ফুটেছে, পাখি ডেকেছে, ঢেও লেগেছে
কচি ধানে, পাইনের বনে বনে।
হে ঈশ্বর, ভালো থেকো তুমি
প্রণতি তোমায় বারে বারে।
আরো শত ফুল বিকশিত হোক
তোমার প্রেম মন্দিরে।
..........ভালো থেকো তুমি, ভালো থেকো।
*********************************
আপনার ব্লগ ওয়েব সাইটতে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ইনকাম করতে চাইলে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
100% ইনকাম ও Real payment
অকালবোধন
রঞ্জনা রায়
শিব ঘরনী পার্বতী মা থাকেন শিবের অন্তঃপুরে
শরত এলেই আসেন তিনি এই বাংলার ঘরে ঘরে।
সিংহ চড়ে আসেন তিনি সঙ্গে চারটি ছেলে মেয়ে
মহিষাসুরও সঙ্গে থাকে পায়ের কাছে নত হয়ে।
রামের পুজো অকালবোধন আশ্বিনের এই শুভ মাসে
সব অশুভের হবে বিনাশ মায়ের আলোয় জগৎ হাসে।
ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বোধন হল গৌরী এলো বাপের ঘরে ।
সপ্তমী অষ্টমী নবমীতে মায়ের পূজায় মনটি ভরে।
দশমীতে সবাই উদাস গৌরী যাবে কৈলাসেতে
নীলকন্ঠ পাখি ওড়ে শিবের কাছে খবর দিতে।
একশো আটটি প্রদীপ জ্বেলে সন্ধিপূজায় অসুর বিনাশ
অরূপ আলোয় মনটি ভরে শুভশক্তির হোক প্রকাশ।
চামুন্ডা তিনি শৈলপুত্রী কালী তারা ধূমাবতী
দশমহাবিদ্যা তিনি তিনি হলেন আদ্যাশক্তি।
শিউলি ফুলের মিষ্টি সুবাস হৃদয় জুড়ে আনন্দ ঢেউ
কাশের বুকে রোদের হাসি দুঃখে যেন থাকে না কেউ।
হারমোনিয়াম
পিনাকী মুখার্জী
কাঠের বাক্সে করে
সুর আনাগোনা !!
প্রাণের আবেগে ভাসে
সুর মুর্ছনা !!
আকাশ পাতাল জুড়ে
সুরের লহরী !!
দরবারে তার ঠাঁই
রাগ দরবারি !!
যেতে হবে ও আসরে ,
এ আসর ছেড়ে !!
সুরের জাদু থাকবে মিশে
সা-রে-গা-মা ভিড়ে !!
সাত সুর বুকে সেথা
কত অভিমান ,
যেথা বিরহের সুরে বাজে
মিলনের গান !!
স্মৃতি স্বপ্ন
এমাজদ্দিন সেখ
এক মুঠো রোদ্দুরের জন্য হাপিত্যিস ...
কুয়াশা ঘুট ঘুট শীতের কাকভোর ;
শুনি দরজায় খুট খুট; তুমি চলে এসেছো ; ...
এলোমেলো কিছু পথ চলবে বলে l
আনন্দের আতিসয্যে আলিঙ্গন করে ;...
পা মিলিয়ে ছিলাম কুয়াশা মোড়া শহর পরিক্রমায় l
তারপর , দুপুর রোদ্রে পুড়ে নির্জন স্টেশনটায় বসে ...
গান শুনে ছিলাম ....
কখন সন্ধ্যা ঘনায় বেখেয়ালে ...
অবশেষে ভিড়ের ট্রেনটায় ফেরা ;
দেবদারু , কৃষ্ণচূড়া ঘেরা আলো-আঁধারী পথে ঘেঁষাঘেঁষি হাঁটা ...
আজ কেমন স্বপ্ন স্বপ্ন লাগে l
একদিন কি সত্যিই বিচিত্র্য রঙে সমৃদ্ধ ছিল ?
আজ একাকিত্বের একঘেয়েমির বন্দী জীবন ...
বড্ডো বিশ্রী লাগে ---
আবার কবে আসবে তুমি ?
নিবিড় আঁধারে চুপি চুপি দিনের আলোর মতো ---
বৈচিত্র্যহীন আঁধার জীবনে ---
এই রইলাম পথ পানে চেয়ে ...
অপেক্ষা
আব্দুল রাহাজ
পৃথিবী তুমি এত সুন্দর
কেন তবে বর্তমান সময়ের ধ্বংসের মুখে।
তাহলে অপেক্ষা করো তুমি আগের মতো আবার সুন্দরভাবে বিরাজ করবে।
গ্রাম বাংলার প্রকৃতির মনোরম দৃশ্য দেখতে ভালো লাগে সবার
তবে যখন ধ্বংসের মুখে পড়ে
তখন মানুষ মুখ ফিরিয়ে নেয়।
মানবতাহীন ভাবে এগিয়ে চলে আধুনিকতার মায়া জালে পড়ে অপেক্ষা করো গ্রাম বাংলার পরিবেশ তোমার মায়াবী সৌন্দর্য আবার ফিরে আসবে।
তবে মানুষকে সচেতন হতে হবে।
মানবের ঠাই
জুয়েল রূহানী
মানব মহান মুখের কথায়
মুখের বুলিতে কারবে মন,
ভিতরে তার শয়তান রূপ-
মুখোশ না করে উন্মোচন!
বুঝা বড় দায় মানব রূপ
সাধুর ভিতরে চোর নিশ্চুপ,
কখনও বা সাধারনে-
অসাধারন গুনের স্তুপ!
মানব মনে শয়তান কভূ
বসবাস করে ছলনায়,
মানবে ফুটিয়ে তোলে-
চিত্র নানান উন্মাদনায়!
মানব মনের ঠাই ফেরেশতায়
কখনও বা ঠাই শয়তানে,
মানবের ঠাই মানব মনে-
দোযক কিংবা স্বর্গপানে।
পাল্টে যাচ্ছে
হামিদুল ইসলাম
দুঃখের পৃথিবীটা বয়ে যায়
নদীর মতো
নদীর উৎসমুখে এখন জ্বালা
শক্ত রশিতে বেঁধে রাখি মন
রশি ছিঁড়ে যায় ।
পালতোলা বাদাম জীবন
এখন ক্ষত বিক্ষত
ঝুল বারান্ধায় গিয়ে বসি
অস্থির হৃদয়
শরীরের মাস্তুলে জমে ওঠে অসাড় প্রাণ ।
কতো দিন যায়
কতো রাত যায়
কতো মানুষ চলে যায় পৃথিবীর ওপারে
নেই কোনো হিসেব
কেবল অশান্ত দুপুরের রোদ পিঠ পুড়ে দেয় ।
অথচ কতো ঝলমলে ছিলো দিনগুলি
প্রেম ছিলো কাশের মতো শাদা
ভালোবাসা কামরাঙা জীবন
সব পাল্টে গেছে
মুত্যু মিছিলের সম্যক ধাক্কায় ।
অসহায়তা!
বিশ্বজিৎ কর
অজানা এক আতঙ্ক গ্রাস করে!
সুখপাখিটা বেঁচে থাকবে তো!
কেমন যেন ছন্দহীন বাতাবরণ!
মুখোশধারী প্রিয়জনদের ষড়যন্ত্র!
ছেলেবেলার স্মৃতি ব্যঙ্গ করে,
জীবনখাতার প্রতি পাতায় দীর্ঘনিঃশ্বাসের চিত্রনাট্য!
আমার জীবনখাতার মৃত্যুর দাগ লেগেছে,
পোড়া কাঠের গন্ধ!দগ্ধ কবিতা!
হেমন্তের দিন
পলাশ পোড়েল
হেমন্ত মানেই ছাতিম- সুবাস ভাসে,
ভোরের আলোয় মুক্ত জ্বলে ঘাসে।
ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা হিমেল পরশ যেন আসে,
নদীর কূলে বাতাস নাচে কাশে কাশে।
হেমন্ত এলেই নবান্নের প্রহর মন গোনে,
খুশির দিন উঁকি দেয় সব ঘরের কোণে।
আউশের নতুন ধানে ভরবে সব গোলা,
সেসব দিনের আনন্দ যায় না কভু ভোলা।
সন্ধ্যাবেলায় আকাশপ্রদীপের সেই আলো,
উৎসব আনবে ডেকে ঘুচিয়ে দেবে কালো।
সুগন্ধা
শর্মিষ্ঠা সাহা
একটানা মনখারাপগুলো জমতে জমতে
একটা ফানেল তৈরি হয়েছে,
তাতে অনায়াস যাতায়াত অবয়বের
আর পদার্থের অবস্থা রূপান্তরে,
কখনো সুচারু নকশিকাঁটা বিছানার চাদর
কখনো জানালার বাক্সে রাখা কৃষ্ণতুলসির ফুল
কখনো দেরাজ ভর্তি শাড়ীর স্তুপ
আবার কখনো একরাশ হিমেল হাওয়া।
হওয়ারা চুপিচুপি উড়ে যায়
পাহাড় আর সংলগ্ন ঘন অরণ্যের মাঝে
আন্দোলিত হয়, প্রতিধ্বনিত হয়,
চমকে ওঠে অরণ্যের সব পাখী পাখালির দল
সবাই চুপ, নিশ্চুপ নিঝুম সকাল ।
হাওয়ারা এবার অন্তর্হিত সুড়ঙ্গে প্রবেশ করছে,
সব না বলা কথারা লালারসে দ্রবীভূত,
বিরাট কোকুম ঝুলছে অরণ্য থেকে পাহাড়ে।
হঠাৎ চাতকের ডাকে একঝাঁক প্রজাপতি
উড়ে গেল আকাশে আর
তাদের ডানা থেকে ঝরছে পরাগ,
সুমিষ্ট গন্ধ সম্মোহনকারক .......
আমি, ছাদবাগানে ল্যাভেন্ডার রোপন করেছি টবে।।
এখন দিনলিপি
তাপস কুমার বেরা
বিশ্ব জুড়ে
করোনা সন্ত্রাস প্রতিরোধে
দিশা হারা মানুষ |
চিনে সূত্রপাত হয়ে
ছড়িয়ে পড়েছে
দেশে দেশে |
করোনা আক্রান্ত
কোটি কোটি মানুষ |
লক্ষ লক্ষ মানুষ
চির ঘুমের দেশে |
মহা সংক্রামক
মারণ ব্যাধিতে
আত্মীয় স্বজন
প্রিয় জন হারা
মানুষের আর্তনাদ |
সন্দেহের চোখে দেখে |
সম্পর্ক যাচ্ছে হারিয়ে |
দূরত্ব বেড়ে চলে |
মুখোশের আড়ালে
মানুষকে চেনা কখনও
কঠিন হয়ে পড়ে |
স্কুলে অনির্দিষ্ট কালের ছুটি |
পড়ুয়াদের নেই
পড়ায় গতি |
আশ্রয় নিয়েছে চলভাষে |
চিকিৎসা বিজ্ঞান
হন্যে হয়ে
খুঁজে চলেছে
বাঁচার পথ |
হাত দুটো
স্যানিটাইজ করা
এখন দিনলিপির অংশ |
জোনাকি
গোপাল বিশ্বাস
রাতের বেলা ঘন আঁধারে
জোনাকিরা জ্বলে
এলো মেলো ঘুরে বেড়ায়
যেন ভূত পেত্নীর দলে l
কোথায় থেকে এলো বাতি
জোনাকির দেহে
জ্বলে নিভে অবিরাম
রহস্যটা কি হে ?
দিনের বেলা হারিয়ে যায়
মজার আলোক খেলা
আঁধার হলেই আঁধারে
জমে জোনাকির মেলা l
আলো আঁধারি মায়ার বন্দনে
বহে মানব জীবন
জীবন যখন ফুরিয়ে যাবে
কে হবে আপন ?
বিষণ্ণতার ঘুমের মহল
বদরুদ্দোজা শেখু
স্বপ্নগুলো কেঁচিয়ে যায়, ইচ্ছেরা সব শুকিয়ে যায়
আজকাল এই জীবনধারায় চোরাবালির পরশ পাই
খাই বা না খাই, কা'র কী-বা যায় ? শব্দজীবির শূণ্য উঠান
ঝিমিয়ে থাকে ঝরা পাতার আলিম্পনে ক্ষুণ্ণ বিরাণ
শ্মশানভূমি, গোঁয়ার্তুমির ছল-ছলনা ললনাহারা
পথের বাঁকে তাকিয়ে থাকে, বিরাত্রিকে দ্যায় পাহারা---
কোথাও কারও সাড়াশব্দ নাই, জব্দ যেন মানুষজন
দূষণ দূষণ রব্দগুলোও ঘুমিয়েছে কি অন্যমন ?
অন্যমনের অনেক কথা ভাবালুতা-রা আজ অতীত
ভূত তাড়াতে ব্যস্ত সবাই ,গ্রীষ্মকালে জ্বরের শীত
লাগছে ওরে, ভাঁড়ার ঘরে কাঁদছে অনাহারের মুখ
ভুখ-পিয়াসার থেকেও কঠিন গুমরে'-মরা বুকের অসুখ
খুক খুক খুক্ কাশির কখন্ ধরছে ঘিরে উপদ্রব--
ভাল্লাগে না কোনো কিছুই , চুঁইয়ে পড়ছে ঘোর গুজব
সব রটনা ঘটনা নয় , তবু মনে ঝিমুনি আসে
শুনতে শুনতে প্রহর গণি, যাই না কেন বনবাসে ?
পরিহাসে ভাগ্য হাসে, ভাইরাসের কী ত্রাসের রাজ---
কোথায় যাবে বাছাধনেরা ফেলে জীবনের এত্তো কাজ !
ঘিরে ধরছে বিষণ্ণতা, ঝিমোয় মনের কুঁড়িকুসুম
ঝিমোতে ঝিমোতে ঘুমিয়ে পড়ি, বস্তুতঃ তাই সোহাগ-চুম !
কঙ্কুমে সে রাঙায় আবার ঘুমের মহল শ্রমের মহল
স্বপ্নজীবির ওসরা -দাওয়ায় ঢেউ ভেঙে যায় সমুদ্রজল
কলকোলাহল উপল-নুড়ি মৎস্যপরীর মাতাল নাচ
চাগিয়ে দ্যায় জাগিয়ে দ্যায় ভালবাসার জীবন-গাছ।
শরৎ কালে জিম করবেটে
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
হাল্কা শীতের হাওয়া বয়।
বেশ গা শিরশিরে।
হিমালয় কোলে জিম করবেটে।
যদিও এখন শরৎ কাল।
আমার আমি ক্লান্ত নয়
সূর্য কিরণে পার্বত্য পথে হেঁটে।
শিরোপরে বৃহৎ বৃক্ষ ডাল।
ওরা সমৃদ্ধ বিহঙ্গ-নীড়ে।
তারপরে বান্দরের দল
লাফালাফি করে।
রাস্তার ওপরে ঝিরঝিরে
পাতলা জলধারা অবিরাম বয়।
জানি না কোথা থেকে আসছে যে নেমে।
বিশ্রামের পায় নি অবকাশ।
দিনে উন্মুক্ত গগণতল।
নিশীথে তারা ভরা অপরূপা আকাশ।
আপন স্নিগ্ধতায় ঝিকমিক করে।
চাঁদটা পর্বত শিরে,
রজত বরণ,
ঠিক যেন মুকুটাভরণ।
আঁধারে পুলকিতা জ্যোৎস্নার চরণ।
ঝোপঝাড়ে ঝিঁ ঝিঁ ডাকে না থেমে।
জঙ্গলের শান্ত প্রেমে
আমি বিহ্বল।
এতো মন কারা সুন্দরী তোরে
কে করেছে বল?
ওরে ও অরণ্য ওরে!
তোরে দেখে আমার চিত্ত যায় ভরে।
সবুজের সমারহ দিল হরণ।
কুল কুল কুল
ভেরী বিউটিফুল।
বহুৎ বরিয়া।
জয় করে মম হিয়া।
আগমণীর সুর
নদেরচাঁদ হাজরা
বাতাসে মধুর গন্ধ আগমণী" সুর
উতলা হৃদয় আজ বড় সুমধুর ৷
সবুজেরা মাঠজুড়ে দেয় হাতছানি
শিউলির গন্ধভরা সকালটা আনি ৷
এখনো অনুজীবের দাপট রয়েছে
তবুও শারদগন্ধে মনটা ভাসছে ৷
আর কটা দিন পরে উমা আসবেন
প্রকৃতি তাইতো আজ বেশী সাজছেন ৷
হাজার দুঃখেরা কটা দিন দূরে যাবে
জীবনের পার্বনে সব ভুলে থাকা যাবে ৷
বাতাসে শিশির গন্ধ এখনি লেগেছে
পদ্মকলি দিঘিজলে পাপড়ি মেলেছে ৷
অঞ্জলি দিতে প্রস্তুত আজকে সবাই
চলো এইবেলা জীবনের গান গাই ৷
বিভাগ- গল্প
সেই রাত
অনাদি মুখার্জি
আজ থেকে প্রায় ৫ বছরের আগের ঘটনা এখনো মনে পড়লে শুভ সমস্ত শরীর কাঁটা দিয়ে উঠে ,সেই রাতের বেলায় কি করে বাড়ি ফিরে এসেছিল !
সেই দিন ছিল বৈশাখ মাস ,খুব গরম পড়েছিলো সেই সময় গ্রামের কৃষকরা ধান কেটে মাড়িয়ে খড় শুকিয়ে খোলা মাঠের মধ্যেই জায়গায় জায়গায় স্তূপ করে রেখেছে ! তখন লাইট অফ ছিল বলে গ্রামের অনেক লোক রাতের বেলায় ঐ ঘড়ের মধ্যেই শুয়ে হাওয়া খেতো ! শুভ তাদের মধ্যেই ছিলো ,বেশ হাওয়া বয়ছিলো বলে শুভ একটু ঐ ঘড়ের মধ্যেই শুয়ে পড়েছিলো ,কখোন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলো মনে নেই ! যখন ঘুম ভাঙ্গলো তখন অনেক রাত ,চারপাশে তাকিয়ে দেখে পাশে কেউ নেই সেই একা আছে ! অবাক হয়ে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে তখন রাত তিনটা বাজে ! সেই খানিকটা ভয় পেল ,তখন শুনতে পেলো কে যেন খক খক করে কাশির আওয়াজ ! ভয় পেয়ে তাকিয়ে দেখে তার সামনে দিয়ে কে যেন সাদা চাদর মুড়ে একটা লোক হাঁটছে ! সেই তখন সাহস করে বললো কে ? তখন ঐ লোকটা তার কাছে এসে বলছে এত রাতে এইখানে কেনো ,চল তোকে বাড়ি দিয়ে আসি ,আওয়াজ টা শুনে চেনা চেনা মনে হল ,শুভ বললো আরে তুমি রহিম কাকা এত রাতে তুমি কি করছো ? রহিম কাকা হাসতে হাসতে বললো এখনো আমাকে মনে রেখেছিস চল বাড়ি দিয়ে আসি তোকে ! তখন খুব জোর হাওয়া বয়ছিলো ,সেই হাওয়াতে শুভ সারা শরীর এক ঠান্ডা অনুভব করলো ! যাই হোক রাস্তায় যেতে যেতে শুভ রহিম কাকা কে বললো তোমাকে তো অনেক দিন দেখিনি কোথায় থাকো ,সেই যে তোমার চিকিৎসার জন্য কলকাতা গেলে তার পর তোমার খবর নেই ! রহিম কাকা হাসতে হাসতে বললো সবাই জানে শুধুমাত্র তুই জানিস না আমার ঠিকানা ! বাড়ির সামনে এসে শুভ বললো আমি চলে এসেছি বলে পিছনে তাকাতে আর রহিম কাকা কে দেখা গেলো না ! বাড়িতে এসে কি ঠাণ্ডা লাগছে শুভর ,তাড়াতাড়ি শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো সেই ! পরের দিন সকালে উঠে সেই রহিম কাকার বাড়ি গেলো দেখা করতে ,রহিম কাকা বাড়িতে গিয়ে শুনলো যে রহিম কাকা দুই বছর আগেই ডেঙ্গুজ্বরে মারা গেছে ! কথাটা শুনে শুভ সমস্ত শরীর ঠান্ডা হয়ে গেলো ,কাল রাতের তবে কি রহিম কাকা আত্মা ছিল ,ভয়ে আর কোনো দিন রাতের বেলায় বের হয় না ,মাঝে মাঝে খক খক কাশির আওয়াজ শুনতে পায় ,আজো সেই রাতের কথা ভুলে যেতে পারেনি মন থেকে !
বিশেষ ধারাবাহিক প্রবন্ধ :
কবিতা র রূপকল্প : পর্ব : ২৮
|| স্বাধীনোত্তর বাংলা কবিতা ।|
(" কবিতার রূপকল্পে"র অন্তিম পর্ব )
সৌম্য ঘোষ
মধ্য রাত্রির পর যারা জন্মেছেন অর্থাৎ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর । এই নতুন প্রজন্মের কবিদের কয়েকজন সংগঠিত করেছিলেন উত্তরাধুনিকতার আন্দোলন । এই কবিদের মধ্যে প্রধান অমিতাভ গুপ্ত (১৯৪৭), অঞ্জন সেন (১৯৫১) ইত্যাদি। আধুনিকবাদী অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে বাংলা কবিতায় তাঁরা পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছেন মধ্যযুগ থেকে চলে আসা আবহমান দেশজ কাব্যের ধারাকে। তাঁদের লক্ষ্য , আবহমান দেশজ কাব্যের ধারা এবং দেশীয় ঐতিহ্য আত্মস্থ হওয়া।
স্বাধীনতার কালের উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে আছেন ভাস্কর চক্রবর্তী , রনজিত দাশ (১৯৫০), সব্যসাচী দেব (১৯৪৬) , জয় গোস্বামী (১৯৫৪) । বর্তমান সময়ের আর্তি , নিরালম্ব শূন্যতা, নিদ্রাহীনতা ঘুরে ফিরে এসেছে ভাস্কর চক্রবর্তীর কবিতায় :
"ছুঁয়ে যাই ব্যর্থ এ জীবন
হে জীবন তোমাকে প্রণাম।"
শহুরে 'রং ওঠা জীবনযাপনের' কথা নির্মমভাবে রূপায়িত করেন রনজিত দাশ।
নকশালপন্থী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত থেকেও কবি সব্যসাচী দেব সেই আন্দোলনের কাব্যাদর্শের মধ্যে
নিজেকে বেঁধে রাখেন নি । তিনি লেখেন ইতিহাসের কথা, কালো মানুষের গানের কথা, জমি থেকে উৎখাত ফুটপাতে আশ্রয় নেয়া কৃষক পরিবারের কথা, শহরের কাজের মেয়ের কথা। সমাজ সচেতন এই কবির কবিতায় উঠে আসে কর্ণ, দ্রৌপদী, বেহুলা, ফুল্লরার পুরাণকথা।
কবি সব্যসাচী দেবের বিখ্যাত কবিতা "কর্ণ " থেকে কিছু স্তবক :
".... অস্তমান সূর্যকে ঢেকে, আমার সামনে এসে
মাতা কুন্তী ভিক্ষা চাইলেন পঞ্চপুত্রের প্রাণ,
তাঁর চোখের মিনতি তোমারই জন্য হে অর্জুন ;
সেই মুহূর্তে জানলাম, যদি জয়ী হই সমস্তজীবন
আমাকে বহন করতে হবে অভিশাপ---আমার মাতার ;
এইবার লগ্ন এল, তৃতীয় পাণ্ডব। শেষ খেলা ;
বাজি রইল যে-কোনো জীবন, ধনুর্বাণ হাতে নাও---
এ-খেলায় পরিত্রাণ নেই কোনো, কারো নেই তোমার আমার।
আমাকে একমুহূর্তে ভিক্ষা দাও কৌন্তেয় ;
সারাশরীর ভারি হয়ে আসছে পাথরের মতো
বড়ো দীর্ঘকাল রণক্ষেত্রে আছি।
সমবেত জনতার অট্টহাসি, আচার্যের প্রত্যাখ্যান, তোমার বঙ্কিম বিদ্রুপ,
এর মাঝে তোমাকে প্রথম দেখেছিলাম আমি ক্রীড়াঙ্গনে
জানতাম আমার প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই ভারতভূমিতে তুমি ছাড়া ;
প্রবল স্পর্ধায় ছুঁড়ে দিয়েছিলাম দ্বন্দ্বের আহ্বান,
কিন্তু বিনা যুদ্ধে তুমি অর্জন করে নিলে শ্রেষ্ঠত্বের বরমাল্য ;
আরো একবার, কাঙ্ক্ষিতা নারীকেও তুমি জিতে নিয়েছিলে
আমার অবনত দৃষ্টির সামনে থেকে,
অসিতাঙ্গী অগ্নিকন্যা আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন
সুতপুত্রকে বরণ করার অনিচ্ছায় ;
তবু স্থির করি নি আমার পথ,
বারেবারে আমাকে মনে করিয়ে দেওয়ে হয়েছে আমি সুতপুত্র
বারেবারে আমি ভুলতে চেয়েছি সেই পরিচয় ;
অধিরথ দিয়েছিলেন স্নেহ ; সামান্যা নারী রাধা
আমাকে পূর্ণ করেছিলেন মাতৃত্বের অমৃতে
আর প্রতিমুহূর্তে সেই ভালোবাসা আস্বাদন করতে করতে
আমি ভেবেছি এখানে নয়, আমার স্থান পাণ্ডু-রাজ গৃহে ;"
জয় গোস্বামী
_______________
শব্দ ও ছন্দের অসামান্য কুশলতায় মুগ্ধ করেন জয় গোস্বামী । তাঁর হাতে আছে " জাদুপিদ্দিম" ।
আঙ্গিক ব্যবহারে তিনি যেমন দক্ষ, তেমনি হার্দ্য আন্তরিকতা তাঁর কবিতায়।
"রেখেছি নরম করে পাথরের খরস্রোতা ফুল
এর কোনো অর্থ নেই।"
তার কবিতায় গোড়ার দিকে অর্থের চেয়েও বড় হয়ে উঠতো কল্পজগত । পরবর্তী কালে তিনি সেই কল্পজগত থেকে নিষ্ক্রান্ত হয়েছিলেন।
"ঘুমায় আমার শব
আমি যাই জলে ।"
জয় গোস্বামীর কবিতা এসেছে নিসর্গের সঙ্গে একাত্মতা, জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা । তিনি লেখেন মেঘবালিকার কথা, দাম্পত্য জীবনের বিবাহ বিচ্ছিন্নার বেদনার কথা , কুলত্যাগিনী, কিশোরী মেয়ের প্রেমে পড়া, রিক্সাওয়ালার প্রতি প্রেমে কাজের মেয়ের মুক্তির কথা । তিনি প্রার্থনা করেন:
"আমাদের শুকনো ভাতে লবণের ব্যবস্থা হোক।"
বাংলা ভাষার উত্তর জীবনানন্দ পর্বের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হিসাবে পরিগণিত। তাঁর কবিতা চমৎকার চিত্রকল্পে, উপমা এবং উৎপ্রেক্ষায় ঋদ্ধ। তিনি দুবার আনন্দ পুরস্কার লাভ করেছেন। "বজ্র বিদ্যুৎ ভর্ত্তি খাতা" কাব্যগ্রন্থের জন্য তিনি পশ্চিমবাংলার আকাডেমী পুরস্কার অর্জন করেন। তাঁর কবিতার একটি বিখ্যাত পংক্তি:
‘‘অতল তোমার সাক্ষাৎ পেয়ে চিনতে পারিনি বলে / হৃদি ভেসে গেল অলকানন্দা জলে'’’।
মোটামুটি ভাবে বলা যায়, পঞ্চাশ দশক থেকেই বাংলা কবিতার নব্য আধুনিকতার সূত্রপাত । তখন থেকেই শুরু হয়েছিল স্বাবলম্বী বাংলা কবিতার যাত্রা । সেই যাত্রা, দেশে যে ঐতিহ্যকে স্বীকার করে, পশ্চিমী আদর্শের বালাই না রেখে, পুরোপুরি শুরু হয় সত্তর দশক থেকে । এই কবিতার ক্ষেত্রে রবীন্দ্র অনুসারী , রবীন্দ্র প্রভাবিত, রবীন্দ্র পরবর্তী, জীবনানন্দ প্রভাবিত, আধুনিক বা অতি আধুনিক বা আন্দোলনমুখী -------- এমন কোন বিশেষণ নেই এনাদের ক্ষেত্রে।
এনারা একেবারেই আত্মনির্ভর এবং স্বচ্ছ ভাবধারার । এখন যা লেখা হচ্ছে, কলকাতা বা মফঃস্বলের, ছোট-বড় সব পত্রিকায় , তা একেবারেই বাংলা কবিতা । এইসব কবির কবিতায় দেশজ জীবন , মানুষের বিচিত্র অভিজ্ঞতার উপলব্ধি , বেদনার বার্তা , নৈসর্গিক চরাচর, সংবেদনশীল পদাবলীতে স্থায়িত্ব পায়।
স্বল্প পরিসরে, সকল কবির নাম উল্লেখ করা সম্ভব নয় , এই জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী । এই সময়ের উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে অগ্রগণ্য ----------
শামসের আনোয়ার, সুব্রত রুদ্র, দেবারতি মিত্র, কৃষ্ণা বসু, পার্থপ্রতিম কাঞ্জিলাল, নিশীথ ভড় , বীতশোক ভট্টাচার্য, একরাম আলী, প্রমোদ বসু, নির্মল হালদার, গৌতম বসু, ব্রত চক্রবর্তী ।
আর্থিক দিক দিয়ে উন্নত, প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশগুলিতে কবিতার মৃত্যুর পরোয়ানা অনেক আগেই জারি হয়ে গেছে। আমাদের দেশেও পণ্য সভ্যতা মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে ভোগ, আরো ভোগের মসৃণ রেশমি সুখের অভিমুখে । এখন সঞ্চার ইন্টারনেটে , ই-মেলে , ফেসবুকে, হোয়াটসঅ্যাপে । বাংলা কবিতা তো বটেই, বাংলা ভাষাও এখন আক্রান্ত । তবুও এই দেশ, গরিব অনগ্রসর দেশ বলেই হয়তো, এখনো কবিতা বেঁচে আছে । এখনো আমরা মুগ্ধ কবিতা পাই , যাদের কবিতা থেকে ---------
মৃদুল দাশগুপ্ত, সুবোধ সরকার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় , অনুরাধা মহাপাত্র, অঞ্জলি দাশ , জয়দেব বসু, সুতপা সেনগুপ্ত, রুপা দাশগুপ্ত , মল্লিকা সেনগুপ্ত , জহর সেন মজুমদার এবং আরো আরো আরো অনেকে কাছ থেকে ।
এমন কিছু কবিতার স্তবক আপনাদের কাছে রাখছি :::
(১) "আগুনের একেবারে মাঝখানে এসে দাঁড়ালে
আর আগুন লাগে না।
আগে আশেপাশে থাকতুম ।
হাত পুড়ে যাবে, মুখ পুড়ে যাবে, বুক পুড়ে যাবে
সর্বদা ভয় ছিল।
এখন এসে দাঁড়িয়েছি আগুনের একেবারে
মাঝখানে ।" ( ব্রত চক্রবর্তী )
(২) "এভাবে ফুরোতে থাকে আমাদের স্বপ্নের সবুজ
এভাবেই বাতাসের গায়ে জমে ওঠে
আমাদের গল্পগুচ্ছ
শূন্যের ভিতর এই ঘর ও সংসার,
ছায়াহীন দেহে দীর্ঘ---
দীর্ঘ জিভ , এখন জিনের মতো আমাদেরও
উল্টো দিকে পা ।" ( অঞ্জলি দাশ )
(৩) "উন্মুক্ত স্তনের উপর এসব আমি কী
লিখেছিলাম ?
হে অলৌকিক কাঞ্চনবলয় ,
তোমাকে বারবার আমি উন্মুক্ত পাবো না।"
( সুবোধ সরকার )
(৪) " ঘাস মাটি বায়ু জল এতদিন পুরুষের ছিল
সমাজ পুরুষ ছিল, এইবার উভলিঙ্গ হোক ।"
( মল্লিকা সেনগুপ্ত )
(৫) "আমাদের এই দেহগুলির ভেতর থেকে
বার হয়ে আসছে অজস্র শালিক অজস্র চড়ুই
তারাই এই বাংলার আসল কবি,
ঘুরে ঘুরে তৃপ্ত, ঘুরে ঘুরে অতৃপ্ত,
একদিন তারাই আমাদের নিয়ে
লিখে রেখে যাবে পৃথিবীর আসল কবিতা ।"
( জহর সেন মজুমদার )
এই দীর্ঘ প্রবন্ধ "কবিতার রূপকল্প"
শেষ অংশে এসে, দাবি করতে পারি, বাংলা ভাষায় লেখা হচ্ছে পৃথিবীর আসল কিছু কবিতা। হাজার বছর আগে মেঘে , মেদুর আকাশের নিচে , খরস্রোতা নদীর তীরে, রাজসভায় বা পর্ণকুটিরে, শষ্য সবুজ বাংলার মাটিতে , শুরু হয়েছিল বাংলা কবিতার উচ্চারণ , সেই উচ্চারণ আজও শত শত কন্ঠে মুখর । কবিতা লেখা হচ্ছে কলকাতায় , কলকাতার বাইরে মফস্বল বাংলায় , পুরুলিয়া, হলদিয়া , জঙ্গিপুর, কাকদ্বীপ, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি ,মেদিনীপুর ,দিনাজপুর, বাঁকুড়া । কোথায় না ?
বাংলা ভাষার ঐতিহ্যকে মান্য করে হাজার বছরের পুরনো বাংলা কবিতা নিত্য নবীনতা দীপ্ত ও উজ্জ্বল ।।
__________________________________________
# গ্রন্থঋণ এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ::
-------------------------------------------
এই প্রবন্ধের বিষয়ে আমার কোন মৌলিকতার দাবি নেই। এই প্রবন্ধ লিখতে গিয়ে আমি দীনেশচন্দ্র সেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে বাংলা সাহিত্যের বহু ঐতিহাসিকদের শরণাপন্ন হয়েছি । বিভিন্ন বই- পত্রপত্রিকা, গুগুল ,
উইকিপিডিয়া , আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে প্রয়োজন মত ব্যবহার করেছি । কখনো নিজের পুরোনো লেখাও ব্যবহার করেছি । যেহেতু এই প্রবন্ধটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাপত্র নয় , বিশেষজ্ঞদের জন্য নয় ; কবিতা অনুরাগী সাধারণ পাঠকদের জন্য লেখা , তাই উৎস নির্দেশের প্রয়োজন বোধ করিনি ।
আমার কৃতজ্ঞতা " উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক সাহিত্য পত্রিকা" র সম্পাদক আসাদ ভাই ( সেক আসাদ আহমেদ) -র কাছে । ওনার ঐকান্তিক ইচ্ছা, প্রেরণা, উৎসাহ এবং সুযোগ না পেলে এই দীর্ঘ ধারাবাহিক প্রবন্ধ রচনা করা সম্ভব হতো না। সব লেখকই তাঁদের লেখা ছাপা অক্ষরে দেখতে চায় । আমার এই দীর্ঘ প্রবন্ধ যদি কখনো ছাপা হয় ; এই প্রবন্ধ আমি উৎসর্গ করতে চাই ------- আসাদ ভাইকে ( সেক আসাদ আহমেদ) । নমস্কার ।।
_______ অধ্যাপক সৌম্য ঘোষ। চুঁচুড়া। হুগলী ।
নবপত্রিকা দুর্গাপূজার গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ
বিপ্লব গোস্বামী
নবপত্রিকা দুর্গাপূজার একটি অন্যতম অঙ্গ।মহাসপ্তমীর সকালে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নবপত্রিকা স্থাপন করা হয়। নবপত্রিকার অন্য এক নাম কলাবউ।গণেশের পাশে এর অবস্থান।তাই অনেকে নবপত্রিকাকে গণেশের বউ বলে মনে করেন।কিন্তু তা নিতান্ত ভুল।আসলে নবপত্রিকা হচ্ছে মা দূর্গার অন্য এক রূপ।
নবপত্রিকা মানে নয়টি গাছের পাতা।কিন্তু দুর্গাপূজায় নবপত্রিকা হচ্ছে নয়টি গাছ।আর এই নয়টি গাছ বা উদ্ভিদ মা দূর্গার নয়টি বিশেষ রূপের কল্পিত প্রতিক।এই নয়টি উদ্ভিদ হলো কদলী বা কলা,কচু,হরিদ্রা বা হলুদ,জয়ন্তী,বিল্ব বা বেল, দাড়িম্ব বা ডালিম,অশোক,মান ও ধান।ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কলা রূপে দেবী ব্রহ্মাণীকে পূজা করা হয়।এই দেবী পরিবেশের অশুভ শক্তি নাশ করেন।কচু রূপে হয় দেবী কালিকার পূজা।যিনি অশুভ শক্তি বিনাশ করেন।আর হরিদ্রা রূপে দেবী উমা,জয়ন্তী রূপে কার্তিকী,বিল্ব রূপে দেবী শিবা,দাড়িম্ব রূপে রক্তদন্তিকা,অশোক রূপে শোকরহিতা,মান রূপে চামুণ্ডা ও ধান রূপে দেবী লক্ষ্মীর পূজা করা হয়।এই নব দেবীকে এক সঙ্গে নবপত্রিকা রূপে পূজা করা হয়।একটি পাতাযুক্ত কলা গাছের সঙ্গে বাকি আটটি গাছ মূল ও পাতা সহ একত্র করে সাদা অপরাজিতা গাছের লতা দিয়ে বেঁধে নবপত্রিকা তৈরি করা হয়।দুটি বেল দিয়ে করা হয় স্তন যুগল।তারপর লাল পাড় সাদা শাড়ি বা হলুদ শাড়ি।পড়িয়ে ঘোমটা দিয়ে নবপত্রিকাকে বউয়ের রূপ দেওয়া হয়।
মহাসপ্তমীর সকালে শঙ্খ,ঘন্টা,ঢাক বাজিয়ে আর উলু ধ্বনি দিয়ে স্নান করানো হয় নবপত্রিকাকে।পুরোহিত মশাই নিজ হাতে নদী বা পুকুরে গিয়ে করান এই স্নান।তারপর নতুন শাড়ি পড়িয়ে দেবী দূর্গার ডান দিকে গণেশের পাশে নবপত্রিকা স্থাপন করা হয়।নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার মূল অনুষ্ঠানের প্রথাগত সূচনা করা হয়।নবপত্রিকা স্থাপনের পর দর্পণের সাহায্যে মায়ের মহাস্নান করানো হয়।পূজোর বাকী দিন গুলিতেও সপরিবারের সঙ্গে নবপত্রিকার পূজো করা হয়।
মার্কণ্ডেয় পুরাণে নবপত্রিকার কোন উল্লেখ না থাকলেও কৃর্তিবাস বিরচিত রামায়ণে রামচন্দ্র কর্তৃক নবপত্রিকা পূজার উল্লেখ পাওয়া যায়।নবপত্রিকা নিয়ে গবেষকদের ভিন্ন ভিন্ন মত রয়েছে কিন্তু একটা কথা পষ্ট যে নবপত্রিকা স্থাপনের মধ্য দিয়ে দুর্গাপূজার প্রথাগত সূচনা করা হয় আবার নবপত্রিকা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে দেবী দূর্গার মৃন্ময়ী মূর্তির বিসর্জন দেওয়া হয়।এ সব থেকে বলা যায় যে নবপত্রিকা দুর্গাপূজার এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ।
আঁধার আমার প্রিয়
নির্মল সরকার
নির্বাক চোঁখে চেয়ে থাকি
উর্দ্ধ গগন পানে ।
সূর্যটা ছিল পথ দিশারী
মেঘ তারে ডাকে ।
তাই --,
রাতের অন্ধকারে চাঁদ!
প্রিয় ভাল লাগে ।
আকাশের তারাগুলি,
নতুন স্বপ্ন আনে ।
পাহাড়ের গায়ে রাতে যেমন
হাজার প্রদীপ জ্বলে ।
দূর হতে মনের গভীরে
বিভীষিকাময় ভাসে ।
দেখেনা তখন সিক্ত হৃদয়
দু, চোঁখ জলে ভরে ।
সুদূরে একা আমি নদী তটে,
যত কথা যেন কেউ শুনে
দীন -হীন - ঘরে কি ,
কখনো আলো জ্বলে ?
নগন্য যারে ভাবে
সেও পৃথিবী করেছে আলো ।
দশভুজা পুরুষ
গৌতম ভৌমিক
নারী যদি হয় দশভুজা
তবে পুরুষ কেন নয়!
বিশ্ব সংসারে দশভুজা পুরুষ ও হয়
আদি থেকে শুরু করে
পুরুষ সংহার কর্তা যদি হয়
পুরুষের পৌরুষে তবে সর্ব জীবের বাস হয়।
সংসারে নারীর সাথে পুরুষের দায়িত্ব কম নয়
কোন অজুহাত ছাড়া পুরুষ ও বারোমাস খাটে
সত্য একথা বলিবার কেহ নয়!
পুরুষ যদি হয় অর্ধনারীশ্বর
তবে দশভুজা কেন নয়!
*********************************
আপনার ব্লগ ওয়েব সাইটতে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে ইনকাম করতে চাইলে নীচের লিঙ্কে ক্লিক করুন
100% ইনকাম ও Real payment
খুবই সুন্দর আয়োজন । আমার লেখা প্রকাশের জন্য
উত্তরমুছুনধন্যবাদ জানাই । উপকন্ঠর জন্য নিরন্তর শুভকামনা ♥️
Thanks a lot Sir for your Comments and Support
উত্তরমুছুন