শনিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২০

ডঃ রমলা মুখার্জী (Dr. Ramala Mukherjee)


ডঃ রমলা মুখার্জী ( ২৩ জানুয়ারি ১৯৫৫)  একজন ভারতীয় বাঙালি কবি, গল্পকার, নাট্যকার এবং রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত জাতীয় শিক্ষাবিদ।

Dr. Ramala Mukherjee (23 January 1955) An Indian Bengali poet, story writer, Dramatist and President's Award winning national educationist.

ডঃ রমলা মুখার্জী


নাম-                         ড. রমলা মুখার্জী /Dr.                                            Ramala Mukherjee    


জন্ম-                              23 জানুয়ারি 1955


জন্মস্থান-                   হুগলী জেলার বৈঁচীগ্রামে


অভিভাবক-          পিতা- নির্মলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতা- প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়


দাম্পত্য সঙ্গী-                    অপূর্ব মুখার্জী


পেশা ও বর্তমান জীবন-       অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা, কবি, গল্পকার, নাট্যকার, সম্পাদিকা ও বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী


জাতীয়তা-                        ভারতীয় 


ধর্ম-                                         হিন্দুু


পুরস্কার-          "জাতীয় শিক্ষিকা" মর্যাদা(2003) ও বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার




ড. রমলা মুখার্জী-র জন্ম ও শিক্ষাজীবন :-

             লেখিকার জন্ম 23.01.1955 সালে, তাঁর জন্মস্থান হুগলী জেলার বৈঁচীগ্রামে; পিতার নাম নির্মলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় ও মাতার নাম প্রতিমা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুলেখিকা ডঃ রমলা মুখার্জী বটানিতে এম এস সি ও পি এইচ ডি। তিনি বাংলায়ও এম এ করেছেন, কারণ তিনি বিজ্ঞানের শিক্ষিকা হলেও সাহিত্যচর্চা করতে খুবই ভালোবাসেন। তিনি বি. এড করেছেন ও সংগীত প্রভাকরও পাশ করেছেন। তিনি একাধারে শিক্ষিকা, কবি, ছড়াকার, গল্পকার, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। বহু পত্র-পত্রিকায় লেখিকা নিয়মিত লেখেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই লেখিকা গান,আবৃত্তি, নাটকও করেন।


লেখিকা ডঃ রমলা মুখার্জী প্রায় সারা জীবনটা ধরেই পড়াশোনা, পরীক্ষা, সংগীত, আবৃত্তি  শিক্ষা, সাহিত্যচর্চা এমনকি ছাত্রীদের শেখানোর জন্য নৃত্যশিক্ষাও গ্রহণ করেছেন।

     
 Dr. Ramala Mukherjee

ডঃ রমলা মুখার্জীর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় বাঁটিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈঁচীতে। পাশাপাশি বাবার কাছে আবৃত্তি ও গুরুর নিকট সংগীত শিক্ষাও চলতে থাকে। তারপর বাঁটিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে হায়ার সেকেন্ডারী পাশ করার পর বোটানীতে অনার্স নিয়ে 1971 সালে হুগলী মহসীন কলেজে লেখিকা ভর্তি হন এবং এই কলেজ ম্যাগাজিনেই প্রথম কোষকে নিয়ে ইংরাজীতে কবিতা লেখিকা লেখেন। কিন্তু বি. এস.সি. অনার্স ভালো ভাবে পাশ করার পর পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে গহমী শিখর বাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পদে লেখিকাকে 1975 সালে যোগদান করতে হয়। স্কুলে যোগদান করেও পড়াশোনার ইচ্ছেটা লেখিকার থেকেই যায়। তাই তিন বছর পর ছুটি নিয়ে এম এস সি পড়তে যান বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তারপর বিবাহ হয় 1981 সালে বীরভূম নিবাসী সরকারি অফিসার শ্রী অপূর্ব মুখার্জীর সাথে। কিন্তু পড়ার অদ্যম ইচ্ছে লেখিকার পিছু ছাড়ে না। এম এস সি পাশ করার বারো বছর পরে লেখিকা প্রাইভেটে বাংলায় এম এ করেন। তার আগে অবশ্য বাংলায় বি এ পাশ করতে হয়েছে। সাহিত্যকর্মও চলতে থাকে আবার বিজ্ঞানের অন্বেষণও চলে, স্কুলের ছাত্রীদের নিয়ে নানান সাংস্কৃতিক ও বিজ্ঞানের অনুষ্ঠানও  সমান তালে এগিয়ে চলে। 2002 সালে এস এস সি দিয়ে লেখিকা প্রধান শিক্ষিকার পদে বাঁটিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে যোগদান করলেন। পূর্বের স্কুলে ছাত্রীদের নিয়ে বিগত সাতাশ বছরের সমস্ত ক্রিয়াকর্ম উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শিপ্রা বানার্জী মহাশয়া ডি আই অফিসে জমা দেন ও সেগুলি নির্বাচিত হয়ে দিল্লীতে পৌঁছনোর পর লেখিকা রাষ্ট্রপতি পুরষ্কারের জন্য মনোনীতা হন এবং 2003 সালের পুরষ্কারটি 2004 সালের 5ই সেপ্টেম্বর বিজ্ঞানী রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামের হাত থেকে লেখিকা গ্রহণ করেন।
2003 সালে ছড়া, কবিতা, গান, নৃত্য, নাটক, গল্প ইত্যাদির মাধ্যমে বিজ্ঞান পাঠদান ও গবেষণা, ভেষজ উদ্ভিদের উদ্যান নির্মান, প্রদর্শণী পরিচালনা ও গবেষণা,  পরিবেশ সচেতনতা ও অন্যান্য অনেক সমাজ সচেতনমূলক কাজের জন্য লেখিকা 2003 সালে তদানিন্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম মহাশয়ের কাছ থেকে পুরষ্কার লাভ করেন ও জাতীয় শিক্ষিকার মর্যাদা পান। বিজ্ঞানের পাঠকে খুব সহজ করে ছাত্রছাত্রীদের বুঝিয়ে দিতে তিনি অনেক বিজ্ঞানের কবিতা লিখে, আবৃত্তি করে, ছবি দিয়ে ভিডিও করে অবিরত ছাত্রছাত্রীদের জন্য বতর্মানেও কাজ করে চলেছেন। অনেক মহাপুরুষের জীবনীও তিনি ঐরূপ লিখে ভিডিও করেছেন যাতে এই ছাত্রছাত্রীরা মানসিক চাপ ছাড়াই  আনন্দের সাথে পড়াশোনা করতে পারে।
 নতুন বিদ্যালয়টি প্রাত:কালে হওয়ার জন্য লেখিকার রিসার্চ করার খুবই সুবিধা হয়ে গেল। অনেক দিনের সুপ্ত বাসনা লেখিকার পুরণ হল। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখিকা বোটানী বিষয়ে গবেষণা শুরু করলেন এবং 2009 সালে ডক্টরেট  সম্পূর্ণ করলেন। লেখিকার দুটি পুত্র, শুভদীপ ও দীপ্তদীপ। বড় ছেলে বেসরকারী ও ছোট ছেলে সরকারি কর্মচারী।
   
  পরিবেশ নিয়ে ও রোগব্যধি নিয়ে নৃত্যনাট্য ও নাটক লিখে পরিবেশন করে জনসাধারণকে পরিবেশ ও রোগ সম্বন্ধে সচেতন করার চেষ্টা লেখিকা করেন ও এই নিয়ে অনেক পেপারও আন্তর্জাতিক সম্মেলনে পাঠ করেছেন।


সাহিত্য জীবন:-

কবি প্রাক্তন প্রধান শিক্ষিকা। তিনি বেশ কিছু বইও লিখেছেন। স্বরচিত ছড়া, কবিতা, শ্রুতি নাটক, গান ইত্যাদি তিনি নিয়মিত মঞ্চস্থ করে থাকেন। "ইচ্ছেপাখি" নামে একটি মুদ্রিত শিশু-কিশোর সাহিত্য পত্রিকা তিনি বিগত দশ বছর ধরে সম্পাদনা করছেন। অনেক সাহিত্য সংস্হা থেকে অনেক পুরষ্কার ও সম্বর্ধণা পেয়েছেন ডঃ রমলা মুখার্জী

প্রধান কিছু পুরস্কার, সম্বর্ধনা ও কোন কোন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করেন তা নিম্নে প্রদত্ত হল:-
বর্তমান, কিশোর জ্ঞান বিজ্ঞান, কিশোর বিজ্ঞানী, ইচ্ছেপাখি, চিরাগ, মিঠেকড়া, কলম, জোয়ার, প্রতিভাস, মুকুর, ইলশেগুঁড়ি, দুর্নিবার, আমাদের পদক্ষেপ, নব প্রভাত, প্রভাতী, উপকণ্ঠ, ছড়া বাংলা (বাংলা দেশ), আনন্দ আড়ঙ্গ, জিরো পয়েন্ট, উত্তরণ, একাঘ্নী, তৃতীয় পক্ষ, আকাশ, নতুন ছড়া ছড়াক্কা, শুধু লিমেরিক, অনুপত্রী, সাহিত্য বনানী, স্বপ্ন সঞ্চারী, অনুরণন, অগ্নিবীনা, কুসুম, তারুণ্য, মুখর, ডোডো, অংশুলা, জলার্ক, সৃজনী, তোর্ষা, সবুজ বার্তা, ছোট নদী, অনুভূতির কথায়, রোদ্দুর, বনলতা, সাহিত্য আলপনা, পরিবর্তন, ধ্রুবতারা, কবি স্মরণ, সূচনা, কচিপাতা, বার্তা, শাব্দিক, কলরব, অনন্যা, ত্রিনয়নী, সংকল্প, চার্লাইন ইত্যাদি আরও অনেক পত্রিকায় লেখিকা নিয়মিত লেখেন।


সম্বর্ধণা ও  পুরষ্কার প্রাপ্তি :-


1.2003 সালে রাষ্ট্রপতি পুরষ্কার গান,কবিতা, নাটক, নৃত্য, গল্প ইত্যাদির মাধ্যমে পাঠদান ও জন সাধারণের মধ্যে বিজ্ঞান সচেতনার জন্য।
2.প্রতিভাসের (পান্ডুয়া) গল্প প্রতিযোগিতায় ৫টি পুরষ্কার,
3.স্বপ্ন সন্ধানী শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (মেমারী)র সেরা নারীর পুরষ্কার আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে এবং সারা বাংলা স্বরচিত কবিতা প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরষ্কার।
4.সংকল্প সাহিত্য, কোলকাতা, কবিতা প্রতিযোগিতায় পুরষ্কার
5. সূচনা সাহিত্য পত্রিকার স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি প্রথম ও কবিতা রচনার ওপর 4টি পুরষ্কার ইত্যাদি।
6. রোদ্দুর সাহিত্য বাসরের ( রামপুরহাট) সারা বাংলা কবিতা প্রতিযোগিতায় দুটি পুরষ্কার।
7. জিরো পয়েন্ট -অনুগল্প প্রতিযোগিতায় ৩য় পুরষ্কার
8. "কলম" সাহিত্য -গল্প লিখনে প্রথম পুরষ্কার।
9. আমাদের পদক্ষেপ অনুগল্পে পুরষ্কার।
10. কলরব পত্রিকা - অণুকবিতায়, অনুগল্পে পুরষ্কার।
আরও অনেক পুরষ্কার লেখিকা লাভ করেছেন।


অন্যান্য সংবর্ধনা:-

1.ভদ্রেশ্বর রোটারী ক্লাব
2.হুগলী ডি আই অফিস
3.পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতি
4.পান্ডুয়া থানা
5.শঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় মেমোরিয়াল ট্রাস্ট, তেলিনিপাড়া, হুগলী
6.কবিশেখর কালিদাস রায় ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, কড়ুই, পূর্ব বর্ধমান (কবির জন্মস্হান)।
7.সুর অঙ্গন, কলকাতা
8. পশুপতি ঘোষাল স্মৃতি সম্মান ও সম্বর্ধণা, চিরাগ, পান্ডুয়া
9.স্বপ্ন সন্ধানী সাহিত্য পরিবার, মালদা
10.তোর্সা পত্রিকা, কোচবিহার
11.বৈঁচী, শিবতলা জগদ্ধাত্রী পূজা কমিটি
12.ক্ষিতীশ চন্দ্র চক্রবর্তী স্মৃতি সম্মান ও সম্বর্ধণা, সারা বাংলা রাইটার্স গিল্ড
13.অনুপত্রী কতৃক সম্বর্ধণা ও সম্মাননা,সিউড়ী, বীরভূম
14.চুঁচুড়া রবীন্দ্র শিক্ষায়তন হাইস্কুল কর্তৃক সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষে সম্বর্ধণা
15.বাঁটিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের, (বৈঁচী) সুবর্ণজয়ন্তীবর্ষে সম্বর্ধণা
16.সাহিত্য আলপনা, দুর্গাপুর
17. বৈঁচী বিবেকানন্দ স্মৃতি সংঘ
18. বৈঁচী, ইয়ংস্টার ক্লাব
19. বৈঁচী, ব্লু স্টার ক্লাব
17. জোয়ার ডিজিটাল ম্যাগ(অন লাইন)
18. কবি স্মরণ ডিজিটাল ম্যাগ(অন লাইন)
19. তুলি কলমের আকাশ পত্রিকা (অন লাইন)
20. স্বপ্ন সঞ্চারী (অন লাইন)
21.অঙ্কুর (অন লাইন)
22. তেহাটা মহাবিদ্যালয়,পূর্ব বর্ধমান
24. অনুরণন (অন লাইন)
25.বৃষ্টিচ্ছাস (অন লাইন)
26. বার্তা (অন লাইন)
27. বাঁটিকা বটতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বৈঁচী।
28. নবপ্রভাত পত্রিকা, বইচিত্র সভাঘর, কলকাতা
29.ত্রিনয়নী পত্রিকা, বাংলা একাডেমি, কলকাতা
30. তৈলকোপা প্রাথমিক  বিদ্যালয়, বৈঁচী
31. উত্তরণ পত্রিকা, পূর্বস্হলী
32. সোনার তরী আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্র, সিঙ্গারকোন, পূর্ব বর্ধমান।
ইত্যাদি ইত্যাদি.....
আরও অজস্র পত্রিকা থেকে সম্মাননা লাভ করেছেন ও করছেন।

  বতর্মানে লেখিকা বাঁটিকা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের (বৈঁচী, হুগলী ) প্রধান শিক্ষিকার পদ থেকে অবসর গ্রহণ করে পুরোপুরি   সাহিত্য, আবৃত্তি, সংগীত সাধনায় নিমগ্ন ও এইগুলির মাধ্যমে শিক্ষাদানের প্রচেষ্টা ও প্রবন্ধ, গল্প,কবিতার একক বই প্রকাশের প্রচেষ্টায় রত আছেন, তার সাথে তো বিভিন্ন পত্রিকায় লেখলেখি ও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ আছেই।
আমরা লেখিকার সুস্থ জীবন ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।




আলোচক:-  সেক আসাদ আহমেদ

   সম্পাদক, উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা

0 comments: