শুক্রবার, ২ অক্টোবর, ২০২০

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 02/10/2020

 উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 02/10/2020
Upokontha sahitya patrika Web Megazine- 02/10/2020

উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 02/10/2020

"উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা"
              (ওয়েব ম্যাগাজিন)
            
প্রকাশ কাল:-02/10/2020, শুক্রবার
               সময় :- সন্ধ্যা 5 টা 

সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
                  ১) ইমরান খাঁন
                  ২) শেখ মণিরুল ইসলাম

সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577

👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇

আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস
         বিপ্লব গোস্বামী

আজ ২ অক্টোবর, আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস।ভারত সহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই আজ এই দিনটি আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসাবে পালন করা হচ্ছে।
       আজকের দিনে অর্থাৎ ১৮৬৯ খ্রিস্টাব্দের ২ রা অক্টোবর গুজরাট প্রদেশের অন্তর্গত পোরবন্দর নামক স্থানে অহিংস আন্দোলনের প্রবক্তা ও ভারতের জাতীর জনক মহাত্মা গান্ধীর জন্ম হয়।তাঁর আসল নাম মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী।তাঁর পিতার নাম কাবা গান্ধী ও মাতার নাম পুতলিবাঈ।
       উনিশ বছর বয়সে তিনি উচ্ছ শিক্ষার জন‍্য বিলেত যান এবং ব‍্যারিস্টারি পাশ করে ১৮৯১ খ্রিস্টাব্দে দেশে প্রত‍্যাবর্তন করেন।এই সময় তাঁর দাদাভাই নৌরজি ও গোপালকৃষ্ণ গোখলের সঙ্গে পরিচয় ঘটে এবং তিনি জাতীয়তার মন্ত্রে  দীক্ষিত হন।
             ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে তিনি এক জটিল মোকদ্দমার ভার নিয়ে আফ্রিকায় যান।সে সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ভারতীয়রা শ্বেতাঙ্গ সম্প্রদায়ের হাতে উৎপীড়ীত ও লাঞ্ছিত হচ্ছিল।ভারতীয়দের প্রতি এইরূপ আচরণে তাঁর মনে আত্মসম্মানবোধ ও দেশাত্মবোধ জেগে উঠে।দেশবাসীকে স্ব-মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করার জন‍্য সেখানে তিনি সত‍্যাগ্ৰহ আন্দোলন আরম্ভ করেন।এই আন্দোলনই ছিল প্রথম অহিংস সত‍্যাগ্ৰহ আন্দোলন।তাঁর অহিংস আন্দোলনে হিংসা নেই,শক্রতার স্থান নেই,আছে শত দুঃখ,কষ্ট নির্যাতন ভোগ করে অন‍্যায়কারীর মন থেকে হিংসা দূর করে অহিংসা প্রতিষ্ঠা করা।
        দক্ষিণ আফ্রিকায় ২১ বছর কাটানোর পর তিনি দেশে ফিরে আসেন।দেশে ফিরে তিনি বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে চম্পারণে তিনি ভারতে প্রথম অহিংস সত‍্যাগ্ৰহ আন্দোলন আরম্ভ করেন।তারপর শুরু করেন একের পর  একে অহিংস আন্দোলন।তাঁর এই অহিংস আন্দোলন গুলোই  ছিল ভারতের স্বাধীনতা সংগ্ৰামের মূল চালিকা শক্তি। তাঁর এই অহিংস আন্দোলন  এখন সারা বিশ্বে মানুষের স্বাধীনতা ও অধিকার পাওয়ার আন্দোলনের মূল অনুপ্রেরণায় পরিণত হয়েছে।
               তিনি ছিলেন প্রেম,সত‍্য ও অহিংসার পূজারী।তিনি অহিংসার মতবাদ ও সত‍্যাগ্ৰহ আন্দলনের প্রবক্তা।তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন অহিংসার মাধ‍্যমে জয় করা যায় সারা বিশ্ব।তিনি শুধু ভারতে নয় , বিশ্ব ব‍্যাপি নাগরিক অধিকার আন্দোলনের অন‍্যতম পদ পদর্শক।
          ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে প‍্যারিসের ইরানী নোবেল বিজয়ী শিরিন এবাদী তার একজন হিন্দী শিক্ষকের কাছ থেকে মহাত্মা গান্ধীর জন্ম দিনটির ব‍্যাপারে একটি প্রস্তাবনা গ্ৰহণ করেন।সিদ্ধান্তটি ধীরে ধীরে ভারতের  জাতীয় কংগ্ৰেসের কিছু নেতাদের আকর্ষণ করতে থাকে।পরে ২০০৭ সালে সোনিয়া গান্ধী এবং ডেসমন্ড টিটু সিদ্ধান্তটি জাতি সংঘে পেশ করেন।২০০৭ সালের ১৫ জুন জাতি সংঘের সদস‍্যবৃন্দ ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস করার ব‍্যাপারে ভোট দেন।এর পর সাধারণ পরিষদ তার সদস‍্যদের কাছে অহিংসার বার্তা দিয়ে ২ অক্টোবর দিনটি আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসাবে ঘোষণা দেয়।
      বিশ্ব থেকে হিংসা,বিদ্বেষ,হানাহানি,মারামারি,অসহিষ্ণুতা, ও রক্তপাত বন্ধে বিশ্ববাসীকে সচেতন করতে প্রতি বছর ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর জন্ম দিনটি  বিশ্ব অহিংস দিবস হিসাবে সারা বিশ্বে পালন করা হয়।এক কথায় বলতে গেলে হিংসা থেকে দূরে থাকাই এই দিবসের পালনের মূল উদ্দেশ‍্য।




কবিতা
জাতির জনক ছড়ান কনক
ডঃ রমলা মুখার্জী

জাতির জনক ছড়ান কনক মানব মনের অন্তরে-
হিংসা-দ্বেষ দূরের দেশে প্রেম-পরমার মন্তরে।
ন্যায়ের দিশারী মহাত্মাজী, মহামানব তুমি-
তোমার সত্য ন্যায়ের মন্ত্রে ধন্য ভারতভূমি।
জন্ম আঠারোশো ঊনসত্তর, দুই অক্টোবর -
জন্ম-স্হানটি তাঁর গুজরাটের পোরবন্দর।
পিতা দেওয়ান করমচাঁদ, পুতুলিবা মাতা-
মাতৃ-আদর্শে হৃদয়ে অহিংসা-বীজ পোঁতা।
ব্যারিস্টারী পড়ার জন্য লন্ডনেতে বাস-
তবু অঙ্গে ওঠেনি রঙ্গে বিলাতী বেশবাস।
শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শুরু দক্ষিণ আফ্রিকায়,
নিপীড়িত ভারতীয়দের সেথা অধিকার আদায়।
অহিংসা-আন্দোলনে পরাধীনতা করতে দূর....
ভারতবর্ষে গান্ধী ছড়ান দেশপ্রেমের সুর।
মহা-তপস্বীর দর্শনে সত্যই প্রকৃত ঈশ্বর,
প্রতি কর্মে নিজ ধর্মে সদা অবিচল, ভাস্বর।
তাঁর মননে চিন্তনে লেখা, "ভালোবাসার জয়",
প্রেম বিলিয়ে পথে হাঁটো, স্বাধীনতা নিশ্চয়।
গডসের গুলিতে বিদ্ধ হন পথসভার মাঝে-
হিংসার বলী হলেও সবার হৃদয়েতে বিরাজে।
জাতিসংঘের ইচ্ছানুসারে গান্ধী-জন্মদিবস,
ঘোষিত হল আন্তর্জাতিক অহিংসা-দিবস।
মোহনদাস করমচাঁদ সবার হৃদি-পদ্মাসনে-
চিরস্মরণীয় গান্ধী অমর  আত্মত্যাগের দানে।






আইপিএল ২০২০ : কেকেআরে উপেক্ষিত বাঙালি
                 পার্থ প্রতিম হালদার

১৯ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে এবারের আইপিএল। অনুষ্ঠিত হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। আর এই প্রতিযোগিতায় কলকাতার যে দল তার নাম কলকাতা নাইট রাইডার্স। এটি বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের দল। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, কলকাতার এই দলে কোন বাঙালি ক্রিকেটার নেই। যে দলের হয়ে বাঙালিরা চীৎকার করবে, গলা ফাটিয়ে আনন্দ করবে, সমবেত কণ্ঠে বলবে ' করব লড়ব জিতব রে' - সেই দলেই কোন বাঙালি  ক্রিকেটার নেই । তার ওপর দীর্ঘ দিন ধরে একমাত্র বাঙালি ক্রিকেটার হয়ে যিনি কেকেআর তে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন সেই সাকিব আল হাসান কেও বাদ দেওয়া হয়েছে। যদিও বাংলাদেশের ক্রিকেটার দের এবারে আসার উপায় ও নেই। কারণ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টেষ্ট খেলতে নামছে বাংলাদেশ। তাই এবারের আইপিএল তে বাংলাদেশের কোন ক্রিকেটার আসার সুযোগ পাননি। কিন্তু ভারতীয় বাঙালি ক্রিকেটার তো অনেকেই আছেন তাঁদের কেও সুযোগ দেওয়া হয়নি। মনে হয় নিলামের সময় কেকেআর বাঙালি ক্রিকেটার দের নামের তালিকা টাই কাছে রাখেন নি । এখানে কেকেআরের মালিক, বাঙালি দের কে বাদ দিয়ে তাঁর ইচ্ছে মতো  ক্রিকেটার রেখেছেন। তা ভারতের অন্য রাজ্যের থেকে হোক বা বিদেশ থেকে হোক। তাই কেকেআর টিমে এবছর বেগুনী - সোনালী জার্সি তে কোন বাঙালি ক্রিকেটার কে দেখার সৌভাগ্য আমাদের হবে না। তবে  এই প্রসেসিং অর্থাৎ বাঙালি খেদাও প্রসেসিং যে অনেক দিন আগে থেকে শুরু হয়েছিল তা ঠিক। তাই অনেক বছর ধরে কেকেআর তে উপেক্ষিত হয়ে যাচ্ছে বাঙালি ক্রিকেটার রা। যে কারণে কলকাতা নাইট রাইডার্সে বাঙালি ক্রিকেটার দের সংখ্যা কয়েক বছর আগে থেকেই কমতে শুরু করেছে। কিন্তু প্রথম তিন বছর দাদা ( সৌরভ গাঙ্গুলি ) যখন ক্যাপ্টেন ছিলেন তখন তবু বাঙালি ক্রিকেটার দের দেখতে পাওয়া যেত। তারপর থেকেই বাঙালি দের কে আস্তে আস্তে বের করে দেওয়া হয়েছে।
এমনকি এমন নির্মমতা থেকে আমাদের দাদা ও রেহাই পাননি। তবে কেকেআর তে বাঙালি ক্রিকেটার দের যে স্থান দেওয়া হচ্ছে না এটা তো শুধু বাঙালির অপমান নয় , এতে করে খুব বড় ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে তরুণ বাঙালি ক্রিকেটার দের ও।
         হ্যাঁ তবে, যদি বুঝতাম বাঙালি ক্রিকেটার দের প্রতিভার ঘাটতি আছে তাহলে অন্য কথা। কিন্তু তারা তো যথেষ্ট দক্ষ। বাংলার দল ভালো খেলেছে বলে তো শেষ রনজি ট্রফির ফাইনাল তেও তারা যেতে পেরেছে। তাছাড়া বাংলা তে যদি সত্যি প্রতিভার ঘাটতি থাকতো তাহলে মহম্মদ সামি, ঋদ্ধিমান সাহা, শ্রীবৎস গোস্বামী, শাহবাজ আহমেদরা আইপিএলের অন্য দলে সুযোগ ও পেতেন না। তাঁরা তো কেউ সানরাইজ হায়দ্রাবাদ, কেউ পাঞ্জাব,কেউ বা অন্য দলে আছেন। কিন্তু কেকেআরে কোন বাঙালি নেই। কারণ কেকেআরের কর্তৃপক্ষ অন্যান্য দলের ক্রিকেটার দের প্রতি যতটা সহনশীলতা দেখান, ততটা বাঙালি ক্রিকেটার দের প্রতি দেখান না। যে কারণে কেকেআর তে বাঙালি ক্রিকেটার নেই। আর অপরদিকে বাঙালি ক্রিকেটার অন্য দল তে পাওয়া যাবে। তাই এটা পুরো স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে , সৌরভ গাঙ্গুলির পরে কলকাতা দলে বাঙালি ক্রিকেটার দের কে ইচ্ছে খুশি আস্তে আস্তে বের করে দেওয়া হয়েছে। সৌরভের সময়  বা প্রথম আইপিএলের সময় দল তে ছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা,ঋদ্ধিমান সাহা, রোহন বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরাশিস লাহিড়ি, রণদেব বসু প্রমুখ ক্রিকেটার গন। কিন্তু এর কয়েক বছর পর থেকে বা সৌরভ গাঙ্গুলি কেও বের করে দেওয়ার পর থেকে বাংলার ক্রিকেটার রা ভালো খেললেও কেকেআর আর নিতে চায় না। যেখানে বাঙালি ক্রিকেটার রা আইপিএলের অন্যান্য দল গুলো তে আছে সেখানে কেকেআর কেন যে নিতে চায় না তা বোঝা বড়ো দায়।  তাছাড়া সব দলেই তো স্থানীয় ক্রিকেটার রা আছেন তা সত্ত্বেও বাংলা কেন ব্রাত্য তা বোঝা যায় না।
আবার কেকেআর দলে দীনেশ কার্তিক, কুলদীপ যাদব, শুভমন গিল, নীতিশ রানা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ প্রমুখ ক্রিকেটার আছেন। অর্থাৎ সারা ভারতের ক্রিকেটার কে এখানে খুঁজে পাওয়া যাবে, শুধু খুঁজে পাওয়া যাবে না বাংলার ক্রিকেটার দের কে। বাঙালির এর থেকে বড় অপমান আর কি হতে পারে  ?
                                  যদিও আইপিএল ২০২০ - র নিলামে সব থেকে বেশি দর হাঁকিয়ে প্যাট কমিন্স কে দলে নিয়েছে কেকেআর । তার ওপর আন্দ্রে রাসেল , সুনীল নারিন তো আছেন ই। সেই সঙ্গে আমেরিকার ফাস্ট বলার আলি খান কেও দলে নেওয়া হয়েছে ।  কিন্তু কথা হলো অন্য রাজ্যের লোকাল প্লেয়ার রা তারা যে যে দলে প্রতিনিধিত্ব করছেন তার থেকে তো বাংলায় অনেক ভালো ক্রিকেটার আছে। বাংলার ক্রিকেটার দের মধ্যে অনেকে তো রনজি খেলেছে, কেউ আবার টি টোয়েন্টি খুব ভালো খেলেন। কিন্তু কেকেআর এ সমস্ত ক্রিকেটার দের কোন খোঁজ ই রাখেন না, যতটা অন্য রাজ্যের ক্রিকেটার দের প্রতি রাখেন। এইভাবে কি ফুটবলে, কি ক্রিকেটে বাঙালিকে  সবসময় উপেক্ষা করা হয়েছে। যার জ্বলন্ত উদাহরণ কলকাতার ম্যাচে বাঙালি কে না রাখা। এই দলে সৌরভ গাঙ্গুলির সময় অনেক বাঙালি খেলেছেন কিন্তু তা পরপর আর স্থায়ী হয়নি - কেকেআর মালিকের নির্মম মানসিকতার কারণে। এমনকি এর হাত থেকে সৌরভ গাঙ্গুলি ও রেহাই পাননি। যদিও শুধু আইপিএল বলে নয় বা মোহনবাগান , ইস্টবেঙ্গল বলে নয়। বাঙালিকে নানান দিক থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে সবসময়। কখনও এনআরসি বা 'কা' এর ইস্যু তে বাঙালি কে 'বিদেশি' বলে চিহ্নিত করে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে , নির্যাতন চালানো হয়েছে। কখনও আবার বাঙালির মাতৃভাষা কে চক্রান্ত করে তুলে দেওয়ার চেষ্টাও চালানো হয়েছে। বড় জায়গায় যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে - ক্রিকেটের ক্ষেত্রে তো সৌরভ গাঙ্গুলি যার জ্বলন্ত উদাহরণ। আর এখন আইপিএল তেও বাঙালি কে উপেক্ষা করা শুরু হয়ে গেছে।
সমস্ত দিক থেকে এইভাবে বাঙালি কে কোণঠাসা করে দেওয়া হয়েছে । তবুও আমরা এখনও বিভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাসী হয়ে নিজেদের সঙ্গে নিজেরা মারপিট করে চলেছি। কেউ কেউ হয়তো বা কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়ার কারণে সব কিছু মুখ বুজে সহ্যও করে চলেছেন চেয়ারের লোভে । আর সেই সুযোগে বাঙালির জামার কলাড় টা ধরে শাসক দল বা পুঁজিবাদী সমাজ বাঙালির গালে একের পর এক চড় কসিয়ে চলেছেন। আর আমরা তা সহ্য করে চলেছি রাজনৈতিক মতবিরোধের কারণে।





প্রবন্ধ
বর্তমান সময়ে নারীদের অবস্থা
      আব্দুল রাহাজ

বর্তমান সময়ে নারীদের অবস্থান উচ্চ স্তরে হলেও কোথাও যেন নিরাপত্তা যে স্তর তা যেন কোথাও ছোট হয়ে আসছে। বর্তমান সময়ে আধুনিক সময় প্রাচীনকালের মত নারীরা আর ঘরে নেই তারা আজ বাইরে বেরিয়ে এসেছে নিজেদেরকে এই বিশ্বে জানান দিচ্ছে যে আমরা ও পুরুষের সমান কিন্তু কোথাও যে তারা লাঞ্চিত বঞ্চিত হচ্ছে কোথাও আবার ধর্মীয় কারণে নারীদের হতে হচ্ছে অত্যাচার। এরকম বহু ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত সারা বিশ্বের যেকোন প্রান্তে। সত্যিই অবাক করার বিষয় যে নারীরা আজ তাদেরকে নতুন করে সবার কাছে তুলে ধরলেও সেই নিরাপত্তা যে বলয় তা যেন স্বল্পপরিসর জায়গা নিয়ে রয়েছে। আমাদের দেশে নৃশংস ভাবে নারীরা অত্যাচারিত হচ্ছে। সত্যি মানবজাতির কাছে খুবই লজ্জাজনক বর্তমান সময়ে মানুষের বিবেক মানুষের মনুষ্যত্ব আর নেই হয়েছে জন্তু জানোয়ারের মত। উন্নাও কান্ড থেকে নির্ভয়া কামদুনির ঘটনা সত্যিই মনটা কে কাঁদায় সেইরকম আরেকটি ঘটনা ঘটে গেল উত্তরপ্রদেশের হাথ্রাসে মা ও মেয়ে কাজ করছিল বাজরা ক্ষেতে মেয়েটি ছিল উনিশ বছর বয়সী নাম মনীষা বাল্মিকী জাতিতে ছিল দলীত চার চারজন উচ্চবর্ণের লোক এসে গলায় ওড়না দিয়ে টানতে টানতে পাশের ঝোপে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার করে নিশংস ভাবে ধর্ষণ করে তারপর পর জিভ কেটে নেওয়া হয় খুনের চেষ্টা করা হয় সত্যিই কত কষ্টের মধ্যে দিয়ে টানা 15 দিন মৃত্যুর সাথে লড়াই করে চলে গেল চিরঘুমের দেশে কি দোষ ছিল তার নিম্নবর্ণের বলে কি মেয়েটির ওপর এত অত্যাচার করা হলো তবে কি বর্তমান সমাজে নারীদের উজ্জ্বল থাকলেও সম্মান থাকলেও ধর্মীয় কারণে কি এভাবে অত্যাচারিত হতে হয়। সত্যি এক দুঃখজনক ঘটনা সারা দেশ এখন স্তম্ভিত।
তাহলে একটা প্রশ্ন থেকে যায় ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ কিন্তু এসব ঘটনা ঘটলে ভারত কি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ থাকতে পারে। যেখানে উচ্চবর্ণের মানুষ নিম্নবর্ণের দলিত মানুষদের উপর এরকম অকথ্য অত্যাচার করতে পারে এসবের মধ্য দিয়ে নারীদের অবস্থান আজ উঁচু স্থানে হলেও কোথাও যেন সেই নিরাপত্তা নেই যা এই ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়ে গেল।







জোছনায় অমাবস্য
         সত্যেন্দ্রনাথ পাইন

   অপরের দয়া দাক্ষিণ্য পাবার জন্যই কি এটা ধার করা দুঃখ? নাকি দুঃখের তুলনাতীত রহস্য?
    হঠাৎই মনে হোলো " ইট ইজ দ্য পার্ট অব লাইফ"!
      কতজনা সান্ত্বনা দিচ্ছে। কতজনা নীতি মালা আওড়াচ্ছে। সৌমিকের মন শান্তি পাচ্ছে না।
     কীসের কষ্ট সৌম'র? কীসের অভিমান! তিনি কি কোনও কিছুর প্রেমে পড়েছেন তবে? নাঃ। কিসের এক অপ্রতিরোধ্য মানসিক টান, অসম্ভব নৈরাজ্যের মাদকতা? সৌম্য তো সকলকে ভালবাসে, স্রেফ ভালবাসার জন্যেই। শুনতে চায় মানুষের মনের জোয়ারে অসামান্য গদ্য- কবিতার উদাসীনতা।
       আচমকা কথা শেষ!!ফোনের ও- প্রান্তে থাকা নারী কন্ঠ একদম চুপচাপ। এসব নাকি বিদুষী মহিলাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। তাঁরা ঐ কালিয়া নাগিনী মতই অভিশপ্ত জীবনে শুধু "বিষ" নিয়েই জন্মেছেন। । তাই তাঁরা বিষ ঢালবেন না তো আর কী ঢালবেন?! আছে টা কী? তাই তাঁদের গলায় অহং-- নিখরচায় অপরকে মুহুর্তে প্রশস্তি এবং নিন্দা দুটোই দায়িত্ব নিয়ে প্রদান করতে সক্ষম। আর তাই আত্মপ্রচারে কম শিক্ষিত ব্যক্তির সাহায্যে সংকটমুক্ত হতে চেয়ে মেকি উচ্ছ্বাসের বিশ্বাসটাকে রেওয়াজ করে করে অপরকে বুদ্ধিহীন ছাত্রছাত্রী ভেবে ঘোলাটে চোখে মিথ্যা-
টাকে বাড়তি উৎসাহে প্রাণবন্ত করার চেষ্টা করেন।
    সৌমিক বুঝতে পারেননি। ফোন না পেয়ে পেয়ে বিব্রত হচ্ছিলেন বেশ কয়েকদিন ধরেই।কষ্ট হচ্ছিল। একটা ভ্যাপসা গন্ধ যেন নাকে আসছিল।
       মানসী বছর খানেক আগে সৌমিকের একটা লেখার ওপর কমেন্ট করে ভাব জমিয়ে ছিলেন। ইংরেজির প্রফেসর। মেয়ে ডাক্তারি পড়ে । স্বামী টিও রামকৃষ্ণ মিশনে পড়া শিশির কণা থেকে ঝরে পড়া ঝরণার বিপ্লবী রোগজীর্ণ অদ্ভুত এক মানুষ। শুধু নিজেরটা বোঝেন।
       সৌমিক অত শত জানতে চায়নি। মানসীই গলগল করে বলেছেন।
         সমস্যা হোল-- মোবাইলের মধ্যে মানসী আর সৌমিকের কোনো কথোপকথন অটো রেকর্ডিং হয়ে প্রযুক্তির তুখোড় চালে মানসীর কাছে পৌঁছে যাওয়া। তাতেই নাকি বিপত্তি। মেয়ে আর স্বামী শুনেছে।
         সৌমিক মানে সৌম শুনলেন এটা ---আর একজন প্রাইমারি শিক্ষকের কাছে বেশ ধমকের সুরেই।
          সৌম হতবাক।
     ,,     ম্লান হেসে বললেন শুধু *কোনও কৈফিয়ত দেওয়া তাঁর নীতি বিরুদ্ধ। তবু কোনটা সেন্ড হয়েছে ( অজান্তে) ওটা আমাকে রিসেন্ড করুন। "
    তাঁরা তা করেননি। বলেছেন-- অপরকে না জানিয়ে রেকর্ডিং করা অন্যায়"!
      মানসী কত বড় জন যে তাঁর কথাবার্তা রেকর্ড করলে অনুমতির প্রয়োজন?
      সৌমিকের মনে পড়লো একটা গান---
       আমার      না- বলা বানীর ঘণ যামিনীর মাঝে
                         তোমার ভাবনা তারার মতন রাজে
                           নিভৃত মনের বনের ছায়াটি ঘিরে
                          না- দেখা ফুলের গোপন গন্ধ ফিরে
                          লুকায় বেদনা অপরাধ অশ্রুনীরে-----
                             অশ্রুত বাঁশি হৃদয় গহনে বাজে।।

রবীঠাকুরের গান। মানসী একদিন ফোনে নিজ গলায় রেকর্ডিং করে শুনিয়েছেন। তোলতোলপাড় করা উচ্ছ্বাস না থাকলেও প্রেমের ক্লান্তিহীন শান্তির খোঁজ ছিল সেখানে।
      সৌমিক ও একটা পাঠিয়েছিলেন---! সেটা গান নয অবশ্য--- শিবের মন্ত্র।
    এখানে পূর্ণিমার চাঁদের আলো দুজনেই মাখামাখি করেছে।
     অথচ হঠাৎই অমাবস্যার মৃদু ঝাঁকুনিতে সমস্ত কিছুই অন্ধকার!
    নিথর সৌমিক বাকরুদ্ধ। থমকে গেল আলাপচারিতা-- ভালবাসার আদিগন্ত মোহের অন্তরালে রূঢ় বাস্তবতা।।





                      ক্ষত
             হামিদুল ইসলাম
               
মানুষ বড়ো নিষ্ঠুর
নিষ্ঠুর মানুষ
নিষ্ঠুরতার কদর্য কর্মে লিপ্ত সে
তার মনুষত্বের নেই কোনো হুঁশ  ।।

এখন প্রতিদিন মাঠেঘাটে ধর্ষেণের ছবি
এমন কি সারাটা দেশ জুড়ে
ধর্ষিতা নারী খুন হয়ে যায় প্রতিদিন
খুন হয় আগুনে পুড়ে  ।।

বলার কেউ নেই
দেদার রাস্তা পেরিয়ে যাচ্ছে সবাই
খুনিরা জানে খুনের রহস‍্য উদ্ঘাটন হবে না কোনোদিন
যদি খুনিকেও করে ফেলে জবাই   ।।

এ দেশে মা বোনেদের ইজ্জত নেই
প্রতিদিন ইজ্জত হয় লুট
তবু কখনো প্রতিবাদ হয় মিছিলে মিটিংয়ে
শাসনযন্ত্র ওদের হাতে তাই ঘাড়ে পড়ে পুলিশের বুট  ।।

নিত‍্যানন্দ জীবন
পেরিয়ে যায় নদী থেকে সাগর
রাতের আঁধারে খুন হয় আমার বোন
সূর্যের ক্ষত মুছে যায় তবু কাঙালরা হয় না জাগর  ।।






কবিতা :
    খোলামেলা কথা!
               বিশ্বজিৎ কর

ভালবাসার কবিতা লিখলেই ফিসফাস,আড়ালে মুচকি হাসি!
প্রতিবাদের কবিতায়-"দাদা,সমঝে চলুন!দিনকাল ভাল নয়"!
বিরহের কবিতায়-"কে দিল আঘাত?"
স্বপ্ন নিয়ে কবিতায় -"বলিহারি আপনার কল্পনা!"
নীরবতায় গা ভাসিয়ে দিলে -"এই যে কবিমশাই!নীরব কেন?"
কবিতাকাননে ফুল তুলতে তো বাঁধা নেই.......
চলো,তোমার আঁচলভরে ফুল তুলে আনি,কবিতার!





পরক্ষণে
       উমর ফারুক

পরক্ষনেই উদ্ভিগ্ন হল মন
শিক্ষার শিকড় গেড়ে
মাকড়শা চরিত উদ্ভাবনের জন্য।
নিমেষে সূর্যালোকে মাথা নেড়ে সায়।
নির্বিকার পাথরের মূর্তি হয়ে শান্ত।

পরক্ষণে লম্বা কালো চুলের মুঠি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ক্লান্ত হল জীবন
মুখ থেকে দূরে চাপা চিৎকার
নির্জন রাতে শকুন দের উৎপাত!
একটু জীবনের শেষ দেখা
আর থাকে আহা জারি..!
শুনশান নীরবতা ভাঙল চড়ুই
বটবৃক্ষের একপাশে হাত পা ছড়ানো

নিথর শ্রাবণ মেঘের ভেলায় ভাসে
কতক গুলো ইচ্ছে ও ভালো থাকা।






কণে দেখা
    সাফরিদ সেখ

চৌত্র মাসের পড়ন্ত বেলায়
মোরে দেখতে এলে হেলায়।
অজানা আশঙ্কা ছিলো কত
মুখে বলা সহজ ছিল না তত।

তোমাদের আগমন হয়েছে জেনে
আমি থেকে চলে গেছি নিয়ম মেনে ।
একে একে সব কাজ মিটে গেলে পরে
আমার ডাক পড়লো যাওয়ার  ঘরে।

দুরুদুরু বুকে বসেছি সভা মাঝে
যেমতি বৃক্ষ কাঁপে কালবৈশাখীর সাঁঝে।
এক সাক্ষাৎকার পঞ্চম নির্বাচক
যার যা কৌতুহল যেন দক্ষ সমালোচক।

আমি তখন অজানা এক ত্রাসে
তাঁরা তখন ফিসফিস করে হাসে ।
আনকোরা পোশাক থিতিছে খালি
তোমাদের সামনে তখন কি যে  বলি।

সব শেষ তুমি এসো মা এখন
বসেছে সবাই একসাথে যখন।






  ওরাও বাঁচুক, কলঙ্ক থেকে বাঁচি আমরাও
       ‎            সুনন্দ মন্ডল

আজ অন্তত একবার চোখ বন্ধ করতে ইচ্ছে করছে!
জানো, অন্ধ হয়ে গেলেই বোধহয় ভালো।
চোখ থাকতে যখন বিস্ফোরণেও খোলে না!

জীবনের ছন্দে চলতে পাখির ডাক নাই বা শুনলাম!
যখন ধর্ষিতা মেয়ের আর্তনাদ শুনিনি।
মুছে গেছে ক্ষত কষ্ট সয়ে!

হতাশার কী আছে?
চলো সবাই আজ বোবা হয়ে যায়!
প্রতিবাদ করতে যখন ক্লান্ত।

কেউ তো নেই, অবহেলিতদের পাশে!
শুধু শুধু মিথ্যে প্রতিশ্রুতির কী দরকার?
পাশ ফিরিয়ে মুখ ঘুরিয়ে যখন বলি ধর্ষিতা।

যতদিন সমাজের কোণার পচন বন্ধ না হচ্ছে,
ততদিন নীল নকশায় পচন হবেই।
গন্ধ ওঠার আগে চিকিৎসা ফুরসত নেই।

মেয়ের কন্ঠে সোচ্চার থাকবে কী?
ওদের তো জিভ কেটে দেয়, রডের দাঁতে চিরে ফেলে গোপনাঙ্গ,
শরীর ভিজে যায় রক্তের নদীতে।

ধর্ষক ওরা, মেয়ের সম্মানে কাদা ছেটায়।
দরকার নেই লোক দেখানো প্রতিবাদের!
তবু বিশ্বাসে এগোবে মেয়েরা, একদিন জাগবেই।

আজ অন্তত চোখ দুটো বন্ধ করতে ইচ্ছে করছে,
চোখাচুখি, কানাকানি অনেক তো হলো!
ওরাও বাঁচুক, কলঙ্ক থেকে বাঁচি আমরাও।
 






বিস্ময়
জুয়েল রুহানী

মানবেরে তুঁমি সৃজন করিয়া
পাঠিয়েছো সংসারে,
সেই মানবজাতী মত্ত আজি-
রূপের নেশা রং-বাহারে!

হীন কাজে মনে নেই লাজ,
নেই শিরে তাজ!
অন্যায়-অপকর্মে-
ছেঁয়ে গেছে এ সমাজ!

মানবের বুকে মানবের ঘাত
নেই কোন প্রতিবাদ,
ন্যায়ের পথের পথিক যিনি
তিনি যেন উন্মাদ!

অন্যায় যেন আইনের বুলি
মিথ্যার ভক্তি,
সত্য সে তো আজন্ম পাপ-
কিঞ্চিৎ নেই শক্তি!

বিচারের নামে চলে প্রহসন
সত্যের নেই জয়,
তোমার বিচার তুমিই কর-
হে প্রভূ দয়াময়!!




কবিতা

লজ্জা
-  অগ্নিমিত্র

এদের মানুষ বলতে লজ্জা করে
তবে এদের এমনিতে লজ্জা নেই..
মেয়ে বৌদের ইজ্জত নিয়ে খেলা করে..
ধর্ষণ করে জিভ ছিঁড়ে দেয়,
তারপর বলে -'ওর পোশাকেরই যত দোষ'!
বলে বুক চিতিয়ে ঘোরে সমাজে ;
যে সমাজে লোকে এসব সহ্য করে
সে সমাজ চুলোয় যাক ।
সে সমাজের কোন দরকার নেই ..
বিকৃত মনের সেই নরপিশাচদের জন্য
একটাই শব্দ নির্গত হচ্ছে: - ' ছিঃ '!!






আনন্দ নিতে জানতে হয়
      মম

আজ দোসরা অক্টোবর। ছুটি। আমরা আজ সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে নিলুম। এরপর হোয়াটস'পে - চ্যাট করছি। এরপর ভিডিও কল। সবাই একসাথে গপ্পো চলল......মনেই হল না আমরা সবাই সবার কাছে নেই। মোবাইলে একসঙ্গে সকলেই সকলকে দেখছি, কথা বলছি, হাসছি। আমি দিল্লীর। সীমা হায়দ্রাবাদের। আর দুজন কলকাতার। নিজেদের মধ্যে কথা মজা আর হাসি। আমরা বিয়ে করেই বরেদের সঙ্গে প্রথম আসি হিন্দন, উত্তর প্রদেশের এয়ারফোর্স কোয়ার্টার্স - এ। তখন অল্প বয়সী। এখন পৌঢ়ত্ব। কারোর সাথে কারোর দেখা নাই। সব স্বামীই এয়ারফোর্স ছেড়েছে। অন্য জব করছে। মাঝে প্রায় আঠাশ বছরের অদেখা। শরীরে সবাই বিরাট পরিবর্তীত হয়েছি। তবে আড্ডায় সেই সে ঠিক আগের মতই। হয় তো একেই বলে সম্পর্ক রাখার জন্য সত্যিকারের দিলের জরূঢ়ত হয়। আত্মহংকার ও আত্মস্বার্থপরতা কখনোই আনন্দ দিতে পারে না। পারস্পরিক সম্বন্ধে যদি নিজের সম্বন্ধে অহংকার ও স্বার্থপরতা থাকে তবে তা ঠিক থাকে না। অচিরেই সে সম্বন্ধ শেষ হয়। জীবনের দুঃখ ও কষ্টকে দূর করতে এই ভালোবাসার সম্বন্ধ জরুরী। আর এই টুকরো টুকরো টুকরো আনন্দ তো জীবনে সুখে বাঁচার চাবিকাঠি। এখানে পার্থিব লাভ নাই তবে মানসিক শান্তি আছে।





দিবাস্বপ্নের দেশে
     আসরাফ আলী সেখ

সূর্য ওঠে রক্ত মেখে
বাতাস বয় মিথ্যা চার
অবিশ্বাসী চেখে !

জ্যোৎস্না চাঁদ ঘোলা
হয়ে প্রিয়ার বক্ষ দেশ
হাতড়ায়, সমুদ্রসৈকত
দমবন্ধ করতে চাই ,

পরীক্ষা চলে জীবনে,
অনলাইনে , কচি কচি
মুখ জানালার ধারে ,
জুলজুল নয়নে ,

অবসরে বৃদ্ধ বৃদ্ধা
কারাগারে বৃদ্ধাশ্রমে,
মোল্লা পুরোহিত সাজ
সমাজ পতির গায়ে ,

ধর্ম বিশ্বাস কাঁচামাল
টাটকা বিক্রি হচ্ছে ,
হাতে হাতে , নগদে,
ধর্ম দোকানে ,

আইন আদালত সাজানো থিয়েটার ,
গ্ৰিন রুমে কলকাঠি
নাড়ে , আলো আঁধার

ট্যাবাটেবি বোকা বক্স
ফেরি করে স্বপ্ন সব ,
লাল চুল সাদা করে
সাদা রঙ কালো দাগ

ঠিক করে যত সব ,
দিবানিশি হাঁক ডাক
গুটিয়ে নে লুটপাট ,
ঘুম আসে হঠাৎ ,

বোল ওঠে, হরি বোল
হরি বোল , চল গো
চলো গো চলো ,
কবর খানা কোথায় গো



জীবনের হিসাব
        অনাদি মুখার্জি

জীবনের খাতায়  প্রতি
পাতায় ,,যতোই লেখো হিসাব নিকাশ,!
জীবনের শুরু সেই শূণ্য আর ফেরা হবে সেই শূণ্যতা নিয়ে !
দিন যায় দিন আসে কেউ চলে যায় ,
সময় যেন ডাকে যেন পিছু ইশারায়!
মাঝে মাঝে কারোও সাথে হয় পরিচয় ,
বালুর চরে মতোন কেউ বা হারায় !
জীবনের চলার পথে কি করি কাজ ,
কাউকে দেওয়া নেওয়া রাখি আমরা হিসাব !
ভালো মন্দ সেই কাজ বুঝি না বাপু ,
কাজ করে নিজেকে ভাবি বড়ো সাধু !
কখনো বা  স্মৃতি দিয়ে অতিত কে হারায় ,
কালের শ্রোতের তালে সব কিছু হারিয়ে যায় !
কত আশা ভালো বাসা  প্রাণের থেকে যায় ,
জীবনের সব কাজের হিসাব খাতায় লিখে যায় !
এই ভাবনাই আমার জীবন শেষ হয়ে যায় ,
সব হিসাভ লেখা আছে ঐ বিধাতার খাতায় !
তাই আমি ভাবি এক মনে,
আমাদের জীবন টা খেলাঘর যে !






গণতন্ত্রে গুলির আওয়াজ
          গোপাল বিশ্বাস

ভোট আসে ভোট যায়
ভিটে পুড়ে ছাঁই
দশটা বিশটা মামুলি খুন
গণতন্ত্রে  লড়াই  !

কার ভিটে জবর দখল ?
উদোম নদীর বাঁক
দলিত মেয়ের গণ ধর্ষণ
ওরা বাজায় শাখ  l

বোমা ফাটাও বুলেট ছুড়ো
রাস্তায় পড়ুক লাশ
ভোটে জিতে গদি পেলেই
কাঙালীর সর্বনাশ   l

সীমান্তে জ্বলে নীল চোখ
কিং কোবরার ছোবল
দেশের ভেতর দেশ জ্বলে
ভোটের দিনেও নকল  !

গণতন্ত্র কোথায় থাকে  ?
ঠিকানা খুঁজে মরি
ভেঙে ভেঙে টুকরো হচ্ছে
গণতন্ত্রের  তরী  l

মাথার বদল মাথা চাই
হোলির বদল গুলি
শিব ঠাকুরের ত্রিশূল ফণায়
নাচে মাথার খুলি  l











   বিশেষ ধারাবাহিক প্রবন্ধ :

    || কবিতা র রূপকল্প - পর্ব ১১ ||

       রবীন্দ্র সমসাময়িক কবি  ২

               সৌম্য ঘোষ

            
               _______________________
               ||   বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর  ||
            ----------------------------------------

বলেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রধানত প্রেমের কবি , গৌণত প্রকৃতির।  কিন্তু তাঁর প্রেমের কবিতায় ব্যক্তিগত অনুভূতির গভীরতা ও আকুল তৃষ্ণা দুর্লভ । সৌন্দর্যতৃষ্ণা এই গৌণকবির কবিতার প্রধান বৈশিষ্ট্য । সংস্কৃত সাহিত্যের সঙ্গে বলেন্দ্রনাথের গভীর পরিচয়ের প্রমাণ তাঁর শব্দ নির্বাচনে,  তাঁর কবিতার গঠন সৌকর্যে । রবীন্দ্র প্রভাবিত এই কবির ভাষাগত সংহতির প্রমাণ বিশেষ করে আছে তাঁর চতুর্দশপদীতে ;  যেগুলি পয়ারের মালা। তাঁর কবিতার কয়েকটি চরণ তুলে ধরলাম :

  " হে বধু , তোমারই নদী , তুমিও নদীর
    অন্তরে -অন্তরে দোঁহে মিলন গভীর।
    তুমি না আসিলে ঘাটে সকাল-সন্ধ্যায়
    কপোলে ছলকি উঠি জানাবে সে কায়
   হৃদয়-বেদনা যতো?"
            _________________________
             ||  দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ ||
            ----------------------------------------

চিত্তরঞ্জন দাশের প্রথম কাব্য "মালঞ্চ"এর প্রধান প্রসঙ্গ নিরীশ্বরবাদ আর ব্যক্তিচেতনার তীব্রতা সঞ্জাত প্রেমতৃষ্ণা । এই চিত্তরঞ্জন পরবর্তীকালে ভক্ত চিত্তরঞ্জনে  রূপান্তরিত হন ।" সাগর -সঙ্গীত" তাঁর  সবচেয়ে পরিণত কাব্য । বিভিন্ন সময়ের সমুদ্রের বিভিন্ন রূপ নিয়ে এই কাব্য ঊনচল্লিশ টি কবিতা আছে  । এই কাব্যে সমুদ্র বর্ণনার মধ্যে ফুটে উঠেছে কবিরই অন্তরঙ্গ সত্তা ।

                       প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে, সামাজিক স্থিতিশীলতা দরুন গার্হস্থ্য পারিবারিক জীবনের সম্পর্ক -বন্ধন ছিল  দৃঢ় । সেই বাঙালি গার্হস্থ্য জীবনের ছবি পুরুষ-কবিদের রচনায় সেভাবে ফুঁটে ওঠেনি কিন্তু গৃহবধূ মহিলা কবিদের রচনাতেই তা বেশি পরিস্ফুট ফুঁটে উঠেছে । সংসারের ছবি,  সন্তান-জননীর সম্পর্কের কথা, শিশুর জগৎ আর নারী হৃদয়ের অচরিতার্থতার বেদনা । মহিলা কবিদের কবিতায় বিষাদের সুরটাই প্রধান ।  আবার এই বিষাদের মানচিত্র স্পষ্ট ভাবে আঁকা নয়  । ইঙ্গিতে অর্ধস্ফুট  তার প্রকাশ  । রূপদক্ষতার পরিচয় তারা তত দিতে না পারলেও , আন্তরিকতায় তাঁরা অনেক সময় মর্মস্পর্শী ।
কবি কামিনী রায়ের   কাব্যেও হৃদয়ের অকৃত্রিম অকপট প্রকাশ পেয়েছে । তাঁর কাব্যে অভিমান, অনুযোগ ,আত্মবিলাপ এর সুর ঝংকৃত হয়েছে। তাঁর কবিতায় ইন্দ্রজাল নেই কিন্তু আন্তরিকতা স্পষ্ট ।
কবি প্রিয়ংবদা দেবীর কবিতা :

   "পূর্ণা তরঙ্গিনী ধায় দূর পারাবারে
     মিলন-ব্যাকুল;  রুদ্ধ ঘরে একা বসি
     অশ্রু আঁখি, প্রাণে জাগে তব মুখশশী !
      তবু একবার এস নয়ন-সম্মুখে
     বাহুবন্ধে তনুখানি গাঁথি লহ বুকে !"

কবি কুসুমকুমারী দাশ লিখেছিলেন কিছু ভালো কবিতা :

     "রূপসিন্ধু মাঝে হেরি অরূপ তোমায়,
      হৃদয় ভরিয়া গেল সুধার ধারায় !
      কোন্ মৃত্তিকায় খুঁজি, কোন্  তীর্থনীরে,
      স্বপ্রকাশ , বিরাজিত বিশ্বের মন্দিরে...... ।

কবি কুসুমকুমারী দাশের  ( কবি জীবনানন্দ দাশের মা ) একটি অতি জনপ্রিয় উল্লেখযোগ্য কবিতা :

            " আদর্শ ছেলে "
             """"""""""""""""""""
"আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে
কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে ?"

                      ————







২টি মন্তব্য:

  1. খুব ভালো লাগলো । বাস্তবমুখী নান্দনিক লেখার ডালি ।
    সুন্দর আয়োজন ।

    উত্তরমুছুন
  2. আপনার সুন্দর মতামতে আমরা আপ্লুত হলাম স্যার লেখা পাঠান

    উত্তরমুছুন