উপকণ্ঠ প্রাত্যহিক ওয়েব ম্যাগাজিন- 06/10/2020
Upokontha Sahitya Patrika Web Megazine- 06/10/2020
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা
উপকণ্ঠ সাহিত্য পত্রিকা - 06/10/2020 |
(ওয়েব ম্যাগাজিন)
প্রকাশ কাল:-06/10/2020, মঙ্গলবার
সময় :- সন্ধ্যা 5 টা
সভাপতি:- অরুণ কুমার ঘড়াই
সহঃ সভাপতি:- সেক আব্দুল মজিদ
সম্পাদক এবং
প্রকাশক:- সেক আসাদ আহমেদ
যুগ্ম সহঃ সম্পাদক :-
১) ইমরান খাঁন
২) শেখ মণিরুল ইসলাম
সম্পাদকীয় দপ্তর ::-
গ্রাম:- গাংপুরা ডাকঘর:- সাগরেশ্বর
থানা:- রামনগর জেলা:- পূর্ব মেদিনীপুর
সূচক-৭২১৪৪৬ পশ্চিমবঙ্গ ভারত
মুঠোফোন:- 9593043577
👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇👇
বিশেষ ধারাবাহিক প্রবন্ধ :
|| কবিতা র রূপকল্প - পর্ব ১৫ ||
|| কাজী নজরুল ইসলাম ||
(এই পর্বের শেষ অংশ)
সৌম্য ঘোষ
নজরুলের কবিতায় উচ্চারিত প্রযুক্ত শব্দ বরাবরইসাম্যের, দারিদ্র্যের,উৎপীড়নের এবং দলিত ও ব্রাত্যজনের পক্ষে ।কবির অাপোষহীন অবস্থান নিশ্চিত করে।তাই সাম্যবাদী কবির কণ্ঠে নির্দ্বিধতায় শব্দিত হয়
” গাহি সাম্যের গান–
যেখানে আসিয়া এক হ‘য়ে গেছে
সব বাধা–ব্যবধান,
যেখানে মিশেছে হিন্দু–বৌদ্ধ–মুসলিম–ক্রিশ্চান।”
(‘সাম্যবাদী‘১৯২৪)
কবির এসকল অন্তর্ভেদী প্রসঙ্গ প্রান্তিক গণমানুষেরএবং নিরন্ন জনগোষ্ঠীর চিরদুঃখের পাণ্ডুলিপি সফল উৎকর্ষজাত শৈল্পিক বিভায় উদ্ভাসিত। ‘ আমারকৈফিয়ত‘এ তাঁর বিদগ্ধ বিজ্ঞাপনে সেই অবিনাশী সুরই প্রতিধ্বনিত হতে দেখা যায় ;
“পরোয়া করি না,বাঁচি বা না–বাঁচি
যুগের হুজুগ কেটে গেলে।
মাথার উপর জ্বলিছেন রবি,
রয়েছে সোনার শত ছেলে।
প্রার্থনা ক‘রো–যারা কেড়ে খায়
তেত্রিশ কোটি মুখের গ্রাস।
যেন লেখা হয় আমার রক্ত–লেখায় তাদের সর্বনাশ।
(‘সর্বহারা‘-১৯২৬)
এ ধারায় নজরুলের দ্রোহী সত্তা এবং তাঁর নৈর্ব্যক্তিকচেতনা; স্বাতন্ত্র্য কবিস্বভাবের ব্যক্ত বিমূর্ত শক্তি,সমকালে দৃশ্যমান ধারায় উৎপীড়ক,
জুলুমবাজের বিপক্ষে অবস্থান নেয়–এবং তাদের সর্বোচ্চ ধ্বংস কামনা করে।এ প্রসঙ্গে সমালোচক সঞ্জয় ভট্টাচার্য বলেন;
‘যুদ্ধোত্তর পৃথিবীতে কবি–সৈনিকের যা স্বাভাবিক পরিণতি,নজরুল ইসলামেরতাই হয়েছিল।
…কবি সৈনিক নজরুল ইসলামের তাই কবি– বিদ্রোহী হয়ে ওঠা তাঁর জীবনেরই একটি যুক্তিযুক্ত পরিণতি।‘
(শ্রী সঞ্জয় ভট্টাচার্য, ‘কবি নজরুল‘-১৯৫৭,পৃ.২৯)
নজরুল চির তারুণ্যকে আবাহন করেছেন নিষ্ঠতায় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতে। তাঁর ‘জঞ্জির‘(১৩৩৫) এর‘অগ্রপথিক‘ কবিতায় সেই প্রত্যয়ী সুর স্পন্দিত হয়েছে দক্ষতায় ;
“নাগিনী–দশনা রণরঙ্গিণী শস্ত্রকর
তোর দেশ–মাতা,তাহারি পতাকা তুলিয়া ধর। “
বস্তুত ‘কৃষ্ণকণ্ঠ‘ কবি নজরুল তাঁর মন্থিত বিষ থেকে নিজেকে উৎসর্জন করতে চেয়েছেন স্বদেশ, মানুষ আর মানবতার জন্য। এরই ধারাবাহিক ক্রমায়ত–বিদ্যমান সমাজ বাস্তবতায় চির আবেগের অন্তঃপুরে চিরউদ্দাম, চিরচঞ্চল অনুধ্যানগুলো দেশপ্রেম, দ্রোহএবং পাশাপাশি মানুষের প্রতি চির প্রেমের কোমলোজ্জ্বল অনুভূতি উদ্ভাসিত হতে দেখা যায়।
এভাবেই তাঁর ‘উচ্ছ্বসিত সৌন্দর্যপিপাসু কবিমনের‘
নন্দিত উদ্ভাস স্পষ্টীকৃত হয় কবিতার গীতিময় পঙক্তিতে। (শ্রী ভূদেব, ‘বাংলাসাহিত্যের সংক্ষিপ্তইতিহাস‘,পৃ. ৩০৯) 'উচ্ছল‘ কবি–নজরুলের আবেগ থেকেই তাঁর হাতধরে বেরিয়ে আসলো চিত্তরঞ্জনের জন্য ‘'চিত্তনামা‘!
এর অব্যবহিত পরে, অসামান্য দক্ষতায়,অনায়াসঅনবদ্যতার ছোঁয়া য়
কালজয়ী অমর কাব্যগ্রন্থ‘অগ্নিবীণা‘(১৯২২); যা তাঁর দ্রোহের সন্দীপিত সত্তার অনন্য দ্যোতক। বলা যায় আবেগের নৈর্ব্যক্তিকতায়
কবিস্বভাবের অন্যতম এক দীপ্ত অভিব্যক্তি।অতঃপর তাঁর কবিচেতনার ক্রমোৎকর্ষ– কবিতার অন্তঃপুরেঅবাধ –অবিরাম জীবন ও বাস্তবতার নিরীক্ষিত আলেখ্যকে তুলে ধরে। রচনায় তুলে আনেন সময়ের
দৃশ্যমান চিত্র! অনুভবের ধারাবাহিকতায় কবি
সমকালের ‘খিলাফত আন্দোলনের‘(১৯২০)সম কালীন সমাজবাস্তবতায় বিদ্যমান অনুষঙ্গগুলো তুলে ধরতেউপস্থাপন করেন ‘কামাল পাশা ‘(১৯২১)’শাত–ইলআরব‘(১৯২১)এর মতো অজর কবিতা; যেখানেনিষ্ঠারসঙ্গে উপস্থাপিত হয়েছে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানবিক চিত্র।এখানে নজরুল হিন্দু–মুসলিমের মৈত্রীসাধনের চিত্রকে তুলে এনেছেন বিমূর্ত আবেগের নিত্য সত্যোপলব্ধির ভেতর এবং তা–অকৃপণ প্রকাশ করেছেন অসম্ভব দৃঢ়তার সাথে।বস্তুত নজরুলের‘আবেগের আবেদনই তাঁর প্রধান বৈশিষ্ট্য।(‘ হরপ্রসাদ, ‘কবিতার বিচিত্র কথা‘ পৃ.৩৬৫)।
"উপকন্ঠ সাহিত্য পত্রিকা" কে- নিবেদিত ছড়া------- "উপকন্ঠ"
জুয়েল রূহানী
স্বপ্ন গুলো নিয়ে যখন-
কাব্য লিখি মনের আশে,
"উপকন্ঠ" নিয়ে তখন-
আসাদ ভাই এলেন পাশে।
মুক্ত মনের ভাব প্রকাশে-
উপকন্ঠ'র যথার্থতা,
আসাদ আহমেদ ভাইয়ের হাতে
উপকন্ঠ'র সার্থকতা।
উপকন্ঠ'র অঙ্কিত রুপ-
সংগোপনে যায় না ভোলা,
উপকন্ঠ'র মনের দুয়ার
লেখার তরে সদাই খোলা!
উপকন্ঠ'র আত্মপ্রকাশ-
আসাদ ভাইয়ের সম্পাদনায়,
আনন্দে মন নেচে উঠে-
কাব্য লেখার উন্মাদনায়!
উপকন্ঠ'র উঠোন জুড়ে-
কাব্য মুঠো ছড়িয়ে দিব,
হৃদয় দিয়ে কাব্য লিখে-
স্বপ্ন গুলো খুঁজে নিব।
আমি অধিকারের কাছে হেরে গেছি
অরুণ কুমার ঘড়াই
চাকরিটা দরকার ছিল খুব
বিবেককে বিকোতে পারিনি বলে,
মেধা কাঁদছে...
শিক্ষা ধুঁকছে -
মানব সম্পদ পোকার যন্ত্রনায় অস্থির
দুঃস্থ মেধা বড় অসহায়, শিক্ষা বিকোচ্ছে ;
শিক্ষিত ক্রীতদাস...
বিবর্তন উন্নয়নে বেসামাল, অসুস্থ
মোরাই ভরা ফসল, ইঁদুরের উৎপাত
তবুও উৎসব নবান্ন, বাংলা হাসে...
দু'হাত তুলে আছি -
চূড়ান্ত অবক্ষয় একশো চুয়াল্লিশ
চুপ কোনো কথা হবে না;
দেশ এগোচ্ছে...
বুদ্ধিজীবী মনুষ্যত্ব বিক্রি করে, এমন কাঙাল
সভ্যতা পুড়ছে ; অস্তিত্ব সংকট
হরপ্পা এখনই নেমে আসুক :
দেশ বিপন্ন...
আমরা অন্ধ আর বোবার মতো বেঁচে আছি
দুঃসাহস দুঃস্বপ্নে বিকল, প্রতিবাদ ভুলের
শুধু নিজেকে বিক্রি হতে বাকি...
বেকারত্ব তুমি কী চাও!
চাকরি না আত্মহত্যা
আমিতো মানুষ, আমার খিদে আছে...
আমি এক মুঠো ভাত চাই ;
বেশ।
ধাঁধার মজা
জাহাঙ্গীর দেওয়ান
এমন কিছু শব্দ-ই থাকে ধাঁধা,
উত্তর না জানলে জানবে গাধা।
মানে বল 'হোয়াট ইফ ইজ বাট'
যে বলতে পারবে আটেই আট।
সহজ ভাষায় কি যদি হয় কিন্তু
এখনোও না পারলে তোরা জন্তু।
প্রশ্নঃ "আই ডোন্ট নো" বল মানে
আমি জানিনা, বলা-বলি কানে।
স্যার বলেন "গুড" সঙ্গে যাবি
দশটি টাকা দেব টিফিন খাবি।
প্রশ্নঃ 'হু নোজ, হি ডিড নট কাম,
জানি এবার এদের বেরুবে ঘাম।
ননী বলে যে জানে, সে আসেনি
ভাবে সেই বেঁচে গেছে ফাসে নি।
স্যার বলেন 'অলরাইট ভেরি গুড,
কালু বলে ভেলিগুড় খুব ভালো।
হারানো আংটিটি পেয়ে
অঞ্জলি দে নন্দী, মম
দামোদরে সাঁতরাতে গিয়ে হারাবে হীরের আংটিটিও ভাবেনি। নব বিবাহিতা সে। অষ্ট মঙ্গলায় বাবার বাড়ি এসেছে। নব পতিও সাথে সাঁতরাচ্ছে। সে-ই বলল, " তোমার আংটি কোথায়? " ও দেখলো। সত্যই তো বাঁ-রিং ফিঙ্গার তো খালি! ফুলশয্যার রাতে ওকে ওর বর দিয়েছে। প্ল্যাটিনামের। তারা দুজনেই খুঁজল। পেলো না। বাড়ি ফিরে এসে মাকে বলল। এবার ও বরের সঙ্গে শ্বশুর বাড়িতে এলো। কেটে গেল দেখতে দেখতে এক বছর। বিবাহ বার্ষিকীর রাতে অবিকল একই রকম আর একটি আংটি ওর বর ওকে উপহার দিল। তার পরের দিন ও বাবার বাড়ি এলো। দুজনে মিলে নদে সাঁতরে এপার ওপার করছে। ডুবছে, উঠছে ও হাসছে। হঠাৎ আগের বছরের হারানো আংটিটি ওর পায়ে ঠেকলো। ডুবে তুলল। পড়লো ডান রিং ফিঙ্গারটিতে। বরকে দেখালো। বাড়ি ফিরে মাকেও দেখালো। এবার ও শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসছে বরের সঙ্গে। রাস্তায় এক্সিডেন্ট। বর ওখানেই শেষ। ও আহত। হাসপাতালে ভর্তি। পরে বেঁচে ফিরল শ্বশুরবাড়ি। ওরা ওকে ঠাঁই দিল না। বিধবা হয়ে বাবার বাড়ি রইল। রোজ নদে স্নান করে আর আংটি দুটি কপালে ছোঁয়ায় এখন ও। হয় তো অলক্ষে ওর বরও তখন ওর সাথে স্নান করে, আত্মারূপে! কে জানে? তবে ও সেরকমই বলে স্নান সেরে এসে ওর মাকে। রোজ ও রাতে শোবার আগে একটি করে চিঠি লেখে ওর বরের উদ্দেশ্যে। আর পরেরদিন স্নান করার সময় ওটি ঢেউয়ে ভাসিয়ে দিয়ে বলে, " ফের ফিরে এসো, প্রিও! " কিন্তু যে ঢেউ চলে যায় সে কী আর ফিরে আসে? তাই ওর চিঠিও আর ফেরে না। আর না ফেরে ওর হারিয়ে যাওয়া স্বামী। তবুও ও বিশ্বাস করে যে হারানো আংটির মত ওর পতিও একদিন ওর কাছে ফিরবেই........
অটুট বন্ধন
বিপ্লব গোস্বামী
বিধাতার অপরূপ সৃজন
ভাই বোনের অটুট বন্ধন।
এ সম্পর্কের নেই কোন তুলনা
একের কষ্টে অন্যের হয় অন্তর্বেদনা।
ভাই বোনের অটুট বন্ধন
বড় অমূল্য আদি চিরন্তন।
এ বন্ধন ঈশ্বরের দান
এ অতি পবিত্র মহান।
এ বন্ধন আত্মা অন্তরের
এ বন্ধন জন্ম জন্মান্তরের।
এ বন্ধন অমূল্য উপহার
এমন ভাগ্য হয় না সবার।
সনেট
দুঁহু-মিলন
ডঃ রমলা মুখার্জী
বরষার ঘনধারা সবুজ বনানী,
জলপরি নেচে চলে বাজায়ে নূপুর
এলায়েছে মেঘকেশ, নিঝুম দুপুর।
বাজাইছে পরিবেশ বেতারে রাগিণী।
বৃক্ষকুল বড় সুখে করে কানাকানি,
বীজ হতে নবীনেরা মেলেছে আঁকুর,
দিঘিজল টলমল কাঁচের মুকুর,
মুকুলিত তরুরাজি সাজে রাজরাণী।
প্রিয়তম আসিয়াছে আমার দুয়ারে,
আনমনে ছিনু বসে লয়ে ফুলদলে।
স্রোতোস্বিনী নদী মোর প্লাবিল জোয়ারে।
সাজাইল কেশদাম লয়ে ফুলদলে,
বহুদিন পরে হল মিলন দোঁহারে।
রতিসুখ লাগি অঙ্গ শিহরণে দোলে।
ওরা পথ শিশু
আব্দুল রাহাজ
ভুবন আর সুমন গরমের ছুটিতে পিসির বাড়ি কলকাতায় গিয়েছে বেশ আনন্দ হচ্ছিল ওদের অনেকদিন পরে ইট কাঠ পাথরের সাজানো শহরটাকে ওরা বেশ উপভোগ করছিল ওদের গাড়ি যেতে যেতে দেখল একদল ছেঁড়া জামা গায়ে কিছু ছোট ছেলে মেয়ে পথের ধারে শুয়ে আছে ভুবন বলল আরে ওদের কি কোনো ঘর নেই ওদের কি কষ্ট এই কষ্ট দেখে সুমনের মায়া হল পিসির বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার আগে গাড়ি থেকে নামল এবার এইসব পথশিশুদের ওরা দেখতে দেখতে যাচ্ছিল চলতো কিছু একটা করা যাক সুমন বললো তুই কত এনেছিস রে আমি এনেছিস ছয় সাতশো টাকা আমিও এনেছি এরকম আমি একশো টাকা দিই তুই একশো টাকা দিই ওদের জন্য কিছুটা খাবার কিনে দিয়ে আসি বেশ ভালো লাগবে আমাদের দিনটা তাই করলে ওরা রুটি কলা আর মুড়ি কিনে জলের বোতল কিনে ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের দিল ওরা পিসির বাড়িতে গেল তারপর কদিন থেকে গ্রামে ফিরে এলো ওরা ভাবল পথশিশুদের কতজালা কত দিন না খেয়ে থাকে ওরা কে জানে এইভাবে ওরা স্কুলের স্যারের সাথে সব কথা বলল নদীর ধারে বসে বিকাল বেলায় ভাবতে থাকলে ওদের কথা ভুবন সুমনের মনে তখন থেকে গেঁথেছিল পথ শিশুদের সাহায্য করার চিন্তাভাবনা তা ওরা সাফল্য করতে এগিয়ে আসে এইভাবে সুমন ভুবন ওই পথ শিশুদের সাহায্য করতে থাকে আজীবন। ওদের কাছে একটাই মূলমন্ত্র থাকে যে ওরা পথশিশু ওদের সাহায্য করা দরকার। এ বিষয়ে ওরা মানুষকে এগিয়ে আসতে বলে এরপর পথ শিশুদের নিয়ে সুমন ভুবনের চিন্তাভাবনা পূর্ণমাত্রা পেয়েছিল।
দুর্বার আসক্তি
সাফরিদ সেখ
পাওনা দারের বীভৎস মুখমন্ড
সংসারের দায়িত্ব নিয়ত আগুনের
মতো দুর্বার ধাওয়া করা।
এর চেয়ে অপঘাতে মৃত্যু!
চাই না কেহ তবু একবার
নিশ্চুপ ঘুমের দেশে যদি যায়!
অন্তত একটু নিজের অন্য আমির সন্ধান।
প্রতি রাতে ঘুমের পিল চুম্বন!
এই চেয়ে একবার মৃত্যুকে জড়িয়ে
অনন্ত কালের ঘুম!
যে আজ আপন করে ডাকে
সে তখন চোখের জলে করবে বিদায়।
অশ্রু বুকে নিয়ে বাঁচবো হাজার বছর।
দুজন দুপাড়ে তবু দেখা হবে।
কথা নাই বা হলো।
অশ্রু সিক্ত নয়ন কেবলই থাকবে চেয়ে।
অজানা এক পথ চেয়ে।
জন্যে
হামিদুল ইসলাম
জলের জন্যে
খুলে রাখি প্রাণ
প্রাণের গভীরে চাঁদ
চাঁদ আজ জোছনাময়
জোছনায় ফুটে ওঠে শুভ্র কাশ ।
জোছনায় ডুবে যায় জীবন
আকাশে শারদ মেঘ
তোমার হাতে আমার হাত
আমরা দুজন দুর্বার দুর্জয়
আমরা দুরন্ত আকাশ ।
আলোয় ভরা আকাশ
স্বপ্নগুলো একে একে সাজাই
তোমার হাতে তুলে দিই তাজমহল
ব্যথাগুলো ভুলে যেতে চাই
নৈঃশব্দ্য বরাবর ।
ইতিহাসে ফিরে আসি
নিত্য চরাচর
জীবন জীবনের জন্যে
ভালোবাসা পরস্পর আমরা কৃষ্ণ রাই
আমাদের দেখা বারবার ।
শূন্য
শংকর হালদার
মাপকাঠি জীবন
শূন্য'র গুণফল আঁকড়ে বেঁচে বর্তে থাকা মাত্র
আলোর করূণ সহায়তা আঁকড়ে
দীর্ঘায়ু হয় আকর্ষিত জীবন ।
মূক তমসার স্বার্থপরতার অভিমান
ছবি হয়ে থাকে জীবনের এক এক পর্বে ।
পথ হারিয়ে মুক্তির পথ আঁকা ...
তখন নিজস্বতা বলে কিছু থাকে না,
বিষময় হয়ে ওঠে আদুরে জীবন
আর জীবন জুড়ে পালিত সংসার ।
শুরু হয় শূন্য'র পর নতুন এক অধ্যায় ।
দামোদর নদের তীরে
সত্যেন্দ্রনাথ পাইন
দামোদরের পশ্চিম তীরে
আমার জন্ম
খরস্রোতা যে নদীর বুক চিরে
সাঁতরে পার হয়েছিলেন
স্বয়ং বিদ্যাসাগর
মাতৃ আদেশ রক্ষায়।
সে হেন মাতার
আজ এ কী দশা
আঘাতে আঘাতে ক্ষত বিক্ষত
যে মা সত্য পথে চলতে
সর্বদা মাতা গান্ধারী
যে মা অনুভবে অনুরাগে
সন্তানের কল্যাণ কামনায় নিযুক্ত সৈনিক
সেই মাতার একীভূত দুর্দশা তবে
কেন গুরুগুরু গর্জন
সন্তানের মুখে
যে মা খিড়কি দরজায় সন্তানের জন্য প্রতীক্ষারত
সর্বদা মন্দ্রিত মহামন্ত্র
ধ্বনি উচ্চারিত হয়
যে মায়ের মুখে
তার দেনা শোধ না করে
কেন বেদী মূলে ওঠে
দুর্যোগের স্রোত
কেন দিনরাত্রি হয়না মধুর
পরিপূর্ণ গুন্ গুন্ স্বরে??
ধারাবাহিক
এক মুঠো সমুদ্র
গোপাল বিশ্বাস
(তিন )
তার পর আমি ক্ষণিক নীরব থেকে
তোমার দিকে অনন্ত দৃষ্টি --
এক সময় নিজেকেই দিয়ে ফেলি
তোমার উষ্ণ দুই হাতে
যুদ্ধ পরাজিত সৈনিকের মতো
নদীর পাড় ভাঙা শব্দের মতো l
তক্ষুনি তোমার রহস্যময় মুখে
ফুটে ওঠে হাসি
আমাকে নিয়ে কোথায় চলে গেলে?
এখন , আমি কোথায় আছি
বুঝতে পারি না তো ,
হয়তো অন্য পৃথিবীর কোনো নির্জন শহরে
ঘমন্ত ঘরে ;
প্রশ্ন করলে এড়িয়ে চলে যাও
অন্য চরাচরে --অচেনা হয়ে
অচেনা হাসি হেসে l
মৃত্যুঞ্জয়
পিনাকী মুখার্জী
স্মৃতির বেদীতে ওরা
ঝরে ঝরে পড়ে !!
যার হাতে ঠাঁই
হল এই সুখনীড়ে !!
ভিড়ে নয় নিভৃতে
দেয় অঞ্জলি !!
শিশির অশ্রু ধোয়
তব পদধূলি !!
ফেলে আসা সুখস্মৃতি
দুজনায় মিলে !!
তোমার স্নেহই ফুল
হয়ে ঢলে !!
যারে তুমি স্নেহভরে
দিলে আশ্রয় !!
তার ফুলে সুবাসে
তুমি মৃত্যুঞ্জয় !!
কাশ বনে বাঁশ বনে
উমর ফারুক
কাশ বনে ফুটে ফুল
বাঁশ বনে ফোঁটেনা
চাঁদের আলোয় ঝুঁকে
ঐ পেঁচা ডাকেনা।
মুগ্ধতার ছায়া মেখে
দুই বন শান্ত
নদী তীরে থাকে যারা
মন পাখি জানত!
কাশ বনে বাঁশ বনে
বিছিয়ে দুই ডানা
শ্রাবণের মেঘ গুলো
এক জোটে দেয় হানা
মন ওড়ে পাখি হয়ে
বাতাসের শুনশান..
বাঁশ বনে বাঁশ পড়ে
ঝিঁঝিঁরা গায় গান।
কাশ বনে নির্জনে
তুলো হয়ে ভাসে ফুল
গায় গান পাখিরাও
নাচে মন দোদুল দুল!
শব্দে রবীন্দ্রনাথ
সেক আসাদ আহমেদ
শূন্যতার গভীরে শব্দের অবাধ বিচরণ
অভাব শুধুই উপসর্গ
লজ্জায় চোখ তুলে দেখি
ধাতু আর প্রত্যয় , হাতে সন্ধি অনুসর্গ
অভিমানী কন্ঠে বাক্য উচ্চারণ ।
মেঘবালিকার কোলে
আবছা যেন শব্দ ভেসে চলে
ক্ষনিকের রামধনুর মাঝে অদৃশ্য !
কুয়াশার চাদর গায়ে একই শব্দের অবয়ব
নিমিষেই হ্যালির ধূমকেতু মতো,
সময়ের অন্তরালে
মোড়কের হাতছানি
অস্পষ্ট জানালার কাচ দিয়ে
সেই শব্দের অবচ্ছায়া।
শরীর জুড়ে জেসমিন গন্ধে
চাঁদের স্নিগ্ধ আলোয়
জলের উপর প্রতিচ্ছবিতে
স্পষ্ট সেই শব্দ
রবীন্দ্রনাথ ।
একটু আধুনিক হও
আসরাফ আলী সেখ
সকাল হলেই সূর্য দেখি আগের মতো ই ওঠে
আধুনিক হলে কি দোষ একটু হাফপ্যান্ট পরলে ,
জ্যোৎস্না রাতে চাঁদের কোলে মায়ের কোলে রবি দোলে
কি ক্ষতি হয় একটু আধুনিক হয়ে প্রিয়ার বুকে ঝুল লে ,
সাগর বুকে পাহাড় ডুবে জানেনা সে পাতার দিতে
কি দোষ হয় একটু আধুনিক হয়ে বিকিনি পড়তে সৈকতে ?
শরৎ এলে জানে কাশ ফুটতে হবে নদীর দুপাশ হেলে দুলে,
কি দোষ হয় একটু আধুনিক হয়ে মারা নেড়া হয়ে ফুটতে ?
বসন্তের ডালে ডালে ফুল ফোটে গোছা ভরে রঙ বে রঙের,
কি দোষ হয় একটু আধুনিক হয়ে কোকিল কে কাকের স্বরে ডাকতে,
যা কিছু সুন্দর ময় বয়ে চলে শাশ্বত স্বপন সুধায় ,
যা কিছু বাধা সুন্দর মননের তা কখন অ_আধুনিক নয়।।
Khub Sundor ajker lekha guli
উত্তরমুছুনArun babur lekha kobita ta hridoy chuye gelo
খুবই সুন্দর আজকের পত্রিকা । সুন্দর আয়োজন ।
উত্তরমুছুন